ভয়ংকর সে পর্ব-০১

0
623

#ভয়ংকর_সে #পর্ব_১
#M_Sonali

“ওরে তোরা কে কোথায় আছিস রে, জলদি বের হ সব্বনাশ হয়ে গেছে।”

কথাটি বলে চিৎকার করতে করতেই ভরা বিয়ে বাড়ির অনুষ্ঠানের মাঝে দৌড়ে এলেন বৃদ্ধা রত্না বেগম। বাড়ির উঠানের মাঝখানে বসে প্রলাপ বকতে বকতে চিৎকার করে বলতে লাগলেন,

“সব্বনাশ হয়ে গেল গো। সব্বনাশ হয়ে গেল। আমার রতনের মেয়েটার আবারো কপাল পুড়লো। গতবারের মতো এবারও তার আর শশুর ঘরে যাওয়া হলো না গো। সব শেষ হয়ে গেলো।”

ওনাকে এমন প্রলাপ করতে দেখে পুরো অনুষ্ঠানের মানুষগুলো যেন নীরব নিস্তব্ধ হয়ে গেল। মুহূর্তের মাঝে সকল আয়োজন থমকে গিয়ে পরিণত হল বিষন্নতায়। রতন মিঞা দৌড়ে এসে তার সামনে দাঁড়ালেন। কিছুটা ধমকের সুরে বললেন,

“কি হয়েছে কি মা? এভাবে পাগলের মত প্রলাপ করছো কেন? কোথা থেকে দৌড়ে এলে তুমি? আর কি এমন সব্বনাশ হয়েছে শুনি?”

উনার কথার উত্তরে রত্না বেগম আরো বেশি চিৎকার করে উঠোনে মাটির ওপর হাত দিয়ে আঘাত করতে করতে বললেন,

“রতন বাবারে আমার নাতনীর কপালটা আবারও পুড়েছে। বর যাত্রিকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। রাস্তার মাঝখান থেকে হঠাৎ করে উধাও হয়ে গেছে তারা। আমি জানতাম এমন কিছুই হবে। পই পই করে তোদের নিষেধ করেছিলাম রাত করে বিয়ের অনুষ্ঠান না করতে। দেখলি তো গতবারের মতো এবারও নিজের মেয়ের মুখ পুড়ালি। এখন কি হবে, পাড়া-প্রতিবেশীর কাছে মুখ দেখাবো কি করে আমরা? সবাই তো তোর মেয়েকে অপয়া বলবে।”

ওনার এমন কথায় মুহূর্তেই থমকে গেলেন রতন মিঞা। প্রচন্ড রকমের ঘাবড়ে গেলেন তিনি। তবে কি গতবারের মতো এবারও বরযাত্রী কে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না? আবারও কি সকালে সূর্য দয়ের পরে কোথাও মিলবে তাদের রক্তশূন্য লাশ!

কথাগুলো ভেবেই যেন ভয়ে শিউরে উঠলেন তিনি। মা মরা মেয়েটার কথা চিন্তা করে বুকে ব্যথা শুরু হলো তার।

সিলেট বিভাগের এক পাহাড়ি অঞ্চলের প্রত্যন্ত গ্রামে বসবাস করেন রতন মিঞা ও তার পরিবার। তার একমাত্র মেয়ে চাঁদনীর যখন সাত বছর বয়স। তখন তার মা হূদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। তখন থেকে মা মরা মেয়েটিকে অনেক ভালবেসে আদরে বড় করেছেন তিনি। মেয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে দ্বিতীয় বিয়েটাও করেন নি। পরিবারে তার মেয়ে চাঁদনী এবং মা রত্না বেগম ছাড়া আর কেউ নেই। এলাকায় রতন মিঞার বেশ ভালো নাম ডাক রয়েছে। সবাই বেশ ভালই জানেন তাকে। পরিবারও অনেক সচ্ছল। রতন মিঞা একজন অবসর প্রাপ্ত সরকারি চাকরিজীবী।

এলাকায় সবকিছু বেশ ভালই চলছিল। কিন্তু হঠাৎ করে কেমন একটা আতঙ্ক চলে এসেছে সবার মাঝে। গত ছয় মাস হল সূর্যাস্তর পর কেউ একা বাইরে বের হলেই পরের দিন তার রক্তশূন্য লাশ পাওয়া যায়। কে বা কারা তাদের এভাবে হত্যা করে সেটা কারো জানা নেই। ছয় মাস আগে যখন প্রথম চাঁদনীর বিয়ে ঠিক হয় শহরের একটি স্বনামধন্য পরিবারে। তখনই ঘটনার প্রথম সূত্রপাত হয়। বিয়ের দিন সব অনুষ্ঠান ভাল ভাবেই চলছিল। হঠাৎ বরযাত্রী মাঝ রাস্তা থেকে উধাও হয়ে যায়। সকলে অনেক খোঁজাখুঁজির পরেও তাদের কোথাও খুঁজে পায়না। পরের দিন সকালে ১৭ টা লাশ খুঁজে পাওয়া যায় জঙ্গলের মধ্যে। সকলের শরীর’ই ছিল সাদা ধবধবে। যেন কেউ তাদের রক্ত চুষে নিয়েছে। বরযাত্রীর বাকি যে কজন বেঁচে ফিরে ছিল। তাদের কাউকেই আর ত্রিসীমানায় দেখা যায়নি। সবাই এতটাই ভয় পেয়েছিল যে এই এলাকায় আর কখনো আসার সাহস করেনি। পরবর্তীতে রতন মিঞা খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন তারা যখন নিরিবিলি রাস্তা ধরে আসছিলো, তখনই কয়েকটা অদ্ভুত প্রানী তাদের সামনে এসে পরে। আর মুহুর্তের মাঝে তাদের ওপর আক্রমণ করে।

তাদের ভাষ্যমতে প্রাণীগুলো এতটাই দ্রুত গতির ছিল যে ঠিকভাবে তারা বুঝে উঠতে পারেনি সেগুলো আসলে কি ছিল। তবে মারাত্মক রকমের ভয় পেয়েছে তারা। সেদিনের পর থেকেই এলাকায় আতংক ছড়িয়ে পড়ে। আর প্রতিদিন একটা না একটা দূর্ঘটনা ঘটতে থাকে। কেউ না কেউ স্বীকার হয় সেই প্রাণীগুলোর। পুলিশ অনেক চেষ্টা করেও তাদের কোন সন্ধান খুঁজে পায়নি। বরং প্রানীগুলোর সন্ধান বের করার জন্য রাতে ডিউটি করতে গিয়ে প্রানীগুলোর হাতে প্রাণ গেছে অনেক পুলিশের। সেই থেকে পুলিশও ভয়ে আর কাজ করছে না। এটা নিয়েই বেশ আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে পুরো এলাকার মাঝে। এরই মাঝে চাঁদনীর আবার বিয়ে ঠিক হয়। ঢাকার একটি স্বনামধন্য পরিবারে। তাদেরকে সবকিছু খুলে বলার পরেও তারা এক রকম জেদ ধরে রাতে বিয়ের কথা ঠিক করে। আর তার পরিণাম হল এটা।

প্রতিবারের মত এবারেও পরদিন সকালে পুরো পঁচিশ টা লাশ খুঁজে পাওয়া যায় জঙ্গলের মধ্যে। সকলের শরীর’ই রক্তশূন্য। দেখে মনে হচ্ছে যেন সূক্ষভাবে কেউ তাদের শরীরের সব রক্ত চুষে নিয়েছে। কিন্তু কারো শরীরে কোন আচরের বা কোন কিছুর দাগ নেই। শুধুমাত্র গলায় দুটো গভীর গর্ত ছাড়া। দেখে মনে হয় যেন কোন প্রাণী কামড় দিয়ে রক্ত চুষে নিয়েছে গলা থেকে। ঠিক যেনো সাপের কামড়ের দাগের মত।

গতবার চাঁদনীর বিয়ে ভেঙে যাওয়ার পর সবাই কিছুটা চুপচাপ থাকলেও। এবার আর কেউ চুপ থাকে না। পুরো এলাকাবাসী কানাঘুষা শুরু করে দেয়। যে রতন মিঞার মেয়ে চাঁদনী অপায়া। তার কারণেই এলাকায় এত বেশি মৃত্যু ঘটছে। দুই দুইবার বিয়ে ভেঙে গেল তার। বরযাত্রী ঘরের দোরগোড়ায় এসেও যেনো পৌছে গেলো মৃত্যুর দুয়ারে। বাতাসের মতো ছড়িয়ে পড়ল ঘটনাটা চারিদিকে। রতন মিঞার আড়ালে সবাই বলতে শুরু করল ওদের একঘরে করে দিবে। কোনোভাবেই এই অপয়া পরিবারকে এলাকায় রাখা যাবে না। তাদের জন্যই হয়ত এত মৃত্যু ঘটছে চারিদিকে। যদিও তাদের কথার কোন ভিত্তি নেই। বিষয়টা রতন মিঞার কানে এসে পৌঁছালো। এতে ভীষণ রকম ভেঙে পড়লেন তিনি। নিজের একমাত্র মেয়ের নামে এমন বাজে কথা শোনার জন্য যেন কখনো কল্পনাও করেননি তিনি।

এদিকে চাঁদনীর এসব বিষয় নিয়ে কোন মাথাব্যাথা নেই। সে তো তার মত বিন্দাস আছে। চাঁদনীর বয়স ২২ বছর। লম্বায় ৫*৫ ইঞ্চি। গায়ের রঙ ধবধবে ফর্সা। চোখগুলো ভিষন মায়াবি। কিন্তু তাকে দেখতে যেমন সুন্দরী তেমনি দুষ্টু ও চনচল প্রকৃতির সে। বয়সে এত বড় হয়ে গেলেও যেন তার মাঝের ছেলেমানুষি এখনো যায়নি। সব সময় হাসিখুশি থাকতে ভালোবাসে সে। সারাক্ষণ পুরো বাড়িটাকে মাতিয়ে রাখে। চারিদিকের এমন পরিস্থিতিতেও যেন তার মধ্যে কোনরকম ভাবান্তর নেই। সে শুধু একটা কথাই ভেবে যাচ্ছে। কী সে জিনিষ যে কিনা এভাবে সবাইকে হত্যা করছে?

চাঁদনী গল্প পড়তে ভীষন ভালবাসে। বিশেষ করে সে ভূত প্রেত ও ভ্যাম্পায়ার এর গল্প ভীষণ ভালোবাসে। আর এসব কাল্পনিক গল্প পড়ার কারণে তার মনের মাঝে সব সময় বলে এই কাজগুলো নিশ্চয়ই কোন ভূত বা ভ্যাম্পায়ার করছে। তাই তো গল্পের ভ্যাম্পায়ার এর মত মানুষের রক্ত চুষে তাদের মেরে ফেলছে।

চাঁদনী মনে মনে ঠিক করে আজ রাতে সবাই যখন ঘুমিয়ে পরবে তখন’ই সে বের হবে নিরিবিলি রাস্তায়। আর খুঁজে বের করবে আসলে কী সে জিনিষ যে এভাবে মানুষদের রক্ত চুষে হত্যা করছে। এটা নিয়ে বেশ উত্তেজনা কাজ করছে তার মাঝে। সে রাতের জন্য প্রস্তুত হতে থাকে। যেভাবেই হোক এ ঘটনার রহস্য বের করতে হবেই তাকে। তার মাঝে কৌতূহলটা ভীষণ রকম কাজ করে। তাই নিজের কৌতুহল টা কে ধরে রাখতে না পেরেই এমন পরিকল্পনা তার।

রাতের খাওয়া দাওয়া শেষে সবাই যখন যে যার রুমে চলে যায়। তখন চাঁদনী প্রস্তুতি নিতে থাকে বাইরে বের হওয়ার জন্য। তখনই দরজায় টোকা পরে তার। বেশ বিরক্তি নিয়েই এগিয়ে যায় দরজার কাছে। দরজা খুলতেই দেখে রতন মিঞা দাঁড়িয়ে আছে। সে চাঁদনীকে দেখে করুন দৃষ্টিতে তার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকে। তারপর রুমের মাঝে প্রবেশ করে বিছানার উপর বসে। তাকে এমন ভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে চাঁদনীর ভিষণ মায়া হয়। সে তার বাবার পাশে গিয়ে বসে জিজ্ঞেস করে,

“কি হয়েছে বাবা! তোমাকে এমন দেখাচ্ছে কেন?”

ওর কথার উত্তরে ওর দিকে করুন দৃষ্টিতে তাকায় রতন মিঞা। মাথায় হাত বুলিয়ে করুন গলায় বলে,

“মারে আমাকে ক্ষমা করে দিস। তোর নামে এত বাজে বাজে কথা শুনা সত্ত্বেও আমি কাউকে কিছু বলতে পারছিনা। জানিনা এলাকার মানুষ গুলো হঠাৎ এমন হয়ে গেল কেন। কিন্তু তুই কারো কথায় কান দিয়ে কষ্ট পাবি না বুঝেছিস। আর কেউ জানুক আর না জানুক, আমি জানি। আমার চাঁদনী মা কোন অপয়া নয়। তার মত লক্ষী এবং ভালো একটি মেয়ে এলাকায় দুটি নেই। যে যাই বলুক কখনো মন খারাপ করবি না। আমি তোর জন্য আরো ভালো পাত্র খুঁজে আনবো। তোকে একটি ভালো ছেলের হাতে তুলে দিতে পারলেই আমার শান্তি।”

উনার কথার উত্তরে চাঁদনী বিছানা থেকে নিচে এসে ফ্লোরে হাঁটু গেড়ে বসলো। তারপর বাবার হাতটা দুইহাতে জড়িয়ে ধরে বলতে লাগলো,

“তুমি এসব ভেবে কেনো কষ্ট পাচ্ছ বাবা? তুমি কি তোমার চাঁদনী কে চেনো না! আমাকে দেখো। আমাকে দেখে কি একটুও মনে হচ্ছে যে আমি এসব নিয়ে ভাবছি, বা কষ্ট পাচ্ছি? আমি জানি আমি কি। আর তাছাড়া অন্য কারো কথায় আমার কিছু যায় আসে না। আমার শুধু তোমাকে আর দাদিকে চাই। আর কিছু না। তুমি এসব ভেবোনা তো। ঘরে গিয়ে নিশ্চিন্তে ঘুমাও। দেখো আমি একদম বিন্দাস আছি। আমার কোন কিছু হয়নি।”

ওর কথার উত্তরে রতন মিঞা কিছু বলে না। মৃদু হেসে ওর মাথায় হাত বুলিয়ে কপালে একটি চুমু দিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে যায়। উনি চলে যেতেই চাঁদনী দরজা লাগিয়ে দেয়। তারপর আবারো নিজের কাজে লেগে পরে। যেভাবেই হোক আজ রাতে তাকে এ রহস্য খুঁজে বের করতেই হবে। কারা এভাবে লোকগুলোকে হত্যা করছে প্রতিদিন। সেটা তার জানতেই হবে। এতে তার জীবন গেলে যাবে। তবে যতটা সম্ভব সাবধানতা বজায় রাখবে সে।
,
,
,
রাত প্রায় ১২:৫৬ মিনিট,
চারিদিকে নীরব নিস্তব্ধ তা ছড়িয়ে আছে। গ্রামের সবাই ঘুমে বিভোর। এখন বাড়ি থেকে বের হলে কেউ জানতেও পারবেনা। চাঁদনী ঘরের লাইট অফ করে দিয়ে আস্তে করে দরজা খোলে। তারপর কালো একটি ওড়না মুড়ি দিয়ে হাতে একটি টর্চ লাইট নিয়ে পা টিপে টিপে রুম থেকে বের হয় সে। বাইরে থেকে আস্তে করে দরজাটা লাগিয়ে দিয়ে এদিক ওদিক তাকিয়ে দ্রুত বেরিয়ে যায়। যদিও মনের মাঝে এক অজানা ভয় কাজ করছে তার। তবুও সেটা কে দূরে সরিয়ে নিজের উত্তেজনাকে বজায় রেখে এগিয়ে যায় সামনের দিকে। প্রায় ১৫ মিনিট হাঁটার পর নিরিবিলি জনশূন্য একটি জায়গায় এসে পৌঁছায় সে। চারিদিকে ঝোপঝাড়ে ভরা। দূর-দূরান্তে শিয়ালের ডাক এবং ঝিঁঝিঁ পোকার ডাক ছাড়া আর কিছুই শোনা যাচ্ছে না। অসম্ভব ঘুটঘুটে অন্ধকার। কোন দিকে বিন্দুমাত্র আলোর চিহ্নটুকুও নেই। এবার বেশ ভয় পেতে লাগে চাঁদনী। কিন্তু তবুও সে ফিরে যাওয়ার পাত্রী নয়। এতদূর যখন এসেছে সে দেখেই ছাড়বে কী সে জিনিষ যা এভাবে মানুষকে হত্যা করছে। সে আবারও সামনে এগিয়ে যেতে থাকে। এবার দু-তিনপা এগিয়ে যেতেই মাথার উপর দিয়ে খুব দ্রুতগতিতে কিছু একটা উড়ে যাওয়ার শব্দ পায় সে। সাথে সাথে চমকে ওঠে হাতে থাকা টর্চ লাইটটা উপরে ধরে। কিন্তু না সেখানে কিছুই নেই। সবকিছুই একদম নিরব নিস্তব্ধ হয়ে আছে। চাঁদনী এবার একটি শুকনো ঢোক গেলে। ভয়ে হাত পা মৃদু ভাবে কাঁপতে থাকে তার।

সে তাড়াতাড়ি টর্চ লাইটের আলো টা বন্ধ করে এদিক ওদিক ঘুরে ঘুরে তাকায়। কিন্তু অন্ধকারে কোন কিছুই চোখে পড়ে না তার। তখন তার মনে হয় দূর থেকে কিছু একটা লোভাতুর দৃষ্টিতে তার দিকে তাকিয়ে আছে। চাঁদনী বুঝতে পারে উত্তেজনার বশে এভাবে একা একা এসে কত বড় ভুল করে ফেলেছে সে। এমনটা করা তার মোটেও উচিত হয়নি। সে এবার এদিক ওদিক না তাকিয়ে দ্রুত টর্চ লাইটের আলো সামনে ফেলে দৌড়াতে থাকে বাড়ির উদ্দেশ্যে। তখনই সে অনুভব করে তার পিছনে দ্রুতগতিতে কিছু একটা ছুটে আসছে তাকে ধরতে। চাঁদনী থমকে দাঁড়ায়। পিছন দিকে ঘুরে দাঁড়ানোর আগেই অন্যপাশ থেকে কিছু একটা এসে পিছনে থাকা জিনিসটাকে খুব দ্রুতগতিতে সেখান থেকে সরিয়ে নিয়ে যায়। চাঁদনী লাইট ধরে আর কিছুই দেখতে পায় না। কিন্তু এতটা ভয় পেয়ে যায় যে দুচোখ বেয়ে ঝরঝরিয়ে পানি পড়তে থাকে তার। মনে মনে দোয়া দরুদ পড়তে পড়তে আবারো দৌড়াতে থাকে বাড়ির উদ্দেশ্যে।

কিন্তু বেশি দূর যেতে পারেনা। কিছু একটার সাথে পা বেজে মুখ থুবড়ে আছড়ে পড়ে মাটির উপর। হাতে এবং পায়ের হাটুতে বেশ ব্যথা পায় সে। সেই সাথে একটি কুঞ্চীর সাথে আটকে গিয়ে তার জামার হাতার কাছের কিছুটা অংশ ছিড়ে যায়।

চাঁদনী সেদিকে গুরুত্ব না দিয়ে ওড়না ও টর্চ লাইটটা নিচে ফেলেই উঠে দাঁড়িয়ে আবারো দৌড়াতে থাকে বাড়ির উদ্দেশ্যে। তখন’ই তার মনে হয় তাকে চারিদিক থেকে কিছু ঘিরে ধরে রয়েছে। যেন এখনই তার ওপর আক্রমণ করে তার রক্ত চুষে খেয়ে ফেলবে।

সে এবার ভয়ে দুই চোখ বন্ধ করে জোরে একটি চিৎকার দেয় বাবা বলে। তখনই সে অনুভব করে তার সামনে কেউ একজন দাঁড়িয়ে আছে। সে চোখ খুলে তাকাতেই দেখে একটি লম্বা অবয়ব দাঁড়িয়ে আছে তার দিকেই তাকিয়ে। অন্ধকারে তার চেহারার কিছুই দেখা যাচ্ছে না। ঘটনার আকস্মিকতায় সে এতটাই ভয় পেয়ে যায় যে জ্ঞান হারিয়ে সেখানেই লুটিয়ে পড়ে।

চলবে,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,

গল্পটা একদমই ভিন্নধর্মী একটা গল্প হবে আশা করি। আমার আগের কোন গল্পের সাথে এটার কোন মিল থাকবে না। গল্পটাতে ভৌতিক, ইমোশন, ফানি এবং পিওর লাভ সবকিছু মিলিয়ে একটি সুন্দর কাহিনি থাকবে। প্রথম পর্ব সকলের কাছে কেমন লাগলো অবশ্যই জানাবেন।