ভয়ংকর সে পর্ব-২+৩

0
345

#ভয়ংকর_সে
#M_Sonali
#পর্ব_২_৩
চাঁদনী কে অজ্ঞান অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে না চাওয়া সত্ত্বেও তাকে কোলে তুলে নিল সামনে থাকা অবয়বটা। কোলে নিয়ে যখন’ই পিছন দিকে ঘুরতে যাবে, তখন’ই বুঝতে পারে তার পিছনে অনেকগুলো মানুষ এসে দাঁড়িয়েছে। এটা দেখে ভীষণ অস্বস্তিতে পড়ে গেল অবয়বটা। সে চুপচাপ দাড়িয়ে রইলো একটুও নড়াচড়া করলো না। অবয়বটার গায়ে একটি হুডিওয়ালা জ্যাকেট পরা। হুডি দিয়ে মাথা এবং মুখ ঢেকে আছে সে। চাঁদনীকে কোলে তুলে নিয়ে তাকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে রতন মিঞা এবং এলাকার বেশ কয়েকজন লোক এগিয়ে আসলো তার কাছে। সবাই টর্চের আলো ফেললো অবয়বটার মুখে। কিন্তু সে হুডিটা এতটাই নিচে নামিয়ে রেখেছে যে মুখটা স্পষ্ট দেখা গেল না।

এবার সবাই তার মুখের উপর থেকে আলো সরিয়ে চাঁদনীর মুখের ওপর টর্চের আলো ফেললো। দেখল চাঁদনী অজ্ঞান হয়ে তার কোলের মাঝে পরে রয়েছে। চাঁদনীর হাতার কাছের জামা অনেকটা ছেড়া। গায়ে কোন ওড়না নেই। তাকে এ অবস্থায় দেখে যার যা বোঝার বুঝে নিল। সবাই ভুল বুঝে একে অপরের সাথে কানাঘুষা করতে লাগল। রতন মিঞা দেরি না করে দ্রুত নিজের গায়ের শার্টটা খুলে চাঁদনীর গায়ে পড়িয়ে দিলো। তারপর চিৎকার করে রাগি গলায় জিজ্ঞেস করল,

“এই ছেলে কে তুমি? আর আমার মেয়েকে এ অবস্থায় এখানে নিয়ে কি করছো? কোথায় নিয়ে যাচ্ছো ওকে? ওর কি হয়েছে?”

উনার এমন ধমক খেয়েও ছেলেটা কিছুই বলল না। চুপচাপ দাড়িয়ে রইল। যেন ভীষণ রকম ভাবনার মাঝে আছে সে। রতন মিঞা এবার দু পা এগিয়ে গেল তার দিকে। তারপর ছেলেটির মুখের উপরের হুডিটা ফেলে দেওয়ার জন্য উদ্যত হল। তখনই ছেলেটি দ্রুত বলে উঠলো,

“দেখুন আপনারা ভুল ভাবছেন। আমি ওনাকে অজ্ঞান অবস্থায় পরে থাকতে দেখে কোলে নিয়েছি। এর বেশি কিছু না।”

রতন মিঞা থেমে গেল। কিছুটা ঝাঝালো গলায় আবারো বলে উঠল,

“ফাজলামি করো আমাদের সাথে? এত রাতে আমার মেয়ে এখানে কেন আসতে যাবে? আর অজ্ঞান’ই বা হবে কেন? সত্যি করে বল কে তুমি, তোমাকে এর আগে এই এলাকায় দেখেছি বলে তো মনে হয় না!”

কথাটি বলেই রতন মিঞা আবারো ছেলেটার হুডি সরানোর জন্য হাত এগিয়ে দিল। সাথে সাথে ছেলেটি দু পা পিছিয়ে গিয়ে দাঁড়ালো। তারপর গম্ভীর গলায় বলে উঠলো,

“আমি এখান দিয়েই যাচ্ছিলাম। যাওয়ার পথে দেখলাম এই মেয়েটি জঙ্গলের মধ্যে একা একা ঘুর ঘুর করছিলো। হয়তো কিছু দেখে ভয় পেয়ে দৌড়াতে গিয়ে পড়ে যায় সে। পড়ে গিয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। তাই তাকে সাহায্যের জন্য আমি এখানে এসেছিলাম। বুঝতে পারিনি এটা নিয়ে আপনারা এত সিন ক্রিয়েট করবেন। আপনারা মেয়েটিকে রাখুন আমি চলে যাচ্ছি।”

কথাটি বলে চাঁদনীকে নিচে শুইয়ে দিতে চাইলে পাশ থেকে একটি লোক দ্রুত দিয়ে ছেলেটির কলার চেপে ধরলো। তারপর রাগি গলায় বললো,

“এই ছেলে কি ভাবো তুমি হ্যা! যা বলবে তাই আমরা বিশ্বাস করে নেবো। আমাদের আর কিছু বোঝা বাকি নেই। নিশ্চয় চাঁদনীর সাথে তোমার কোন সম্পর্ক আছে। আর তোমরা সেজন্য দেখা করতে এসেছিলে। কিন্তু চাঁদনী অজ্ঞান হলো কিভাবে? আর ওর এ অবস্থাই বা কেনো? সত্যি করে বলো কি করেছো তুমি ওর সাথে?”

লোকটির কথার উত্তরে ছেলেটি কিছু বললো না। তবে তাকে দেখে বোঝা যাচ্ছে সে ভীষণ রেগে গিয়েছে। তার কলার চেপে ধরার জন্য। রাগে জোরে জোরে নিঃশ্বাস নিচ্ছে সে। হাতের মুঠো শক্ত করে দাঁড়িয়ে আছে। সে কিছু বলবে তার আগেই রতন মিঞা সেখানে এগিয়ে গেল। তারপর লোকটিকে সরিয়ে দিয়ে বলল,

“আচ্ছা তোমরা থামো। যা কথা বলার বাড়িতে গিয়ে বলবে। এত রাতে এখানে দাঁড়িয়ে থাকা মোটেও নিরাপদ নয়। জানো তো এলাকার কী অবস্থা। এই ছেলে ওকে নিয়ে চলো আমাদের সাথে। তোমার সাথে বাড়িতে গিয়ে কথা হবে।”

এবারও ছেলেটি কোন উত্তর দিল না। চুপচাপ দাড়িয়ে রইলো। তারপর মনে মনে বেশ কিছুক্ষণ কিছু একটা ভেবে নিল। কোনরকম কথা না বলে রতন মিঞার সাথে রওনা হলো তার বাড়ির দিকে।
,
,
,
চাঁদনী কে বিছানায় শুইয়ে দিয়ে ওর পাশেই একটি চেয়ারের উপর বসে আছে ছেলেটা। তাকে ঘিরে ধরে উৎসুক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে সবাই। বিশেষ করে চাঁদনীর দাদি যেন চোখ দিয়ে গিলে খাচ্ছে ছেলেটাকে। যদিও ছেলেটা এখনো নিজের হুডি সরায়নি। বেশ কিছুক্ষণ নিরব হয়ে রইলো সবাই। তারপর নিরাবতা কাটিয়ে রতন মিঞা গম্ভীর গলায় বলে উঠলো,

“অনেক হয়েছে আর নয়। এবার সত্যি করে বলো তোমার পরিচয় কি? কোথা থেকে এসেছো তুমি? আর এত রাতে এখানেই বা কি করছিলে? আমার মেয়ে তোমার কাছে কেনো গিয়েছিল? খবরদার কোন মিথ্যা বলার চেষ্টা করবে না। যা বলার সত্যি করে বলবে। নইলে কাল সকালেই পুলিশের হাতে তুলে দেবো আমি তোমাকে।”

ছেলেটি কিছুক্ষন চুপ করে রইলো। কোন উত্তর দিল না। তারপর নিজেই নিজের মুখের উপরের হুডিটা সরিয়ে দিলো। ওর চেহারা দেখা মাত্রই সবাই যেন হা করে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল। ধবধবে ফর্সা গায়ের রঙের অসম্ভব মিষ্টি চেহারার একটি ছেলে বসে আছে সবার সামনে। হাইট ৬ ফুটেরও বেশি। চোখ দুটো ভিষন মায়াবি। চোখের মনিগুলো গাঢ় বাদামি রঙের। ছেলেটি যেমন উচা লম্বা তেমনি তার চেহারা এবং সৌন্দর্য। চাঁদনীর সৌন্দর্য যেন তার কাছে কিছুই নয়। এর আগে এত সুন্দর কোন ছেলে কেউ দেখেছে বলে মনে হয় না।

সবাইকে হা করে নিজের দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে বেশ বিরক্ত হয় ছেলেটি। তারপর গম্ভীর গলায় বলে ওঠে,

“দেখুন আপনারা যেটা ভাবছেন তেমন কিছুই নয়। আসলে আমি জঙ্গল এবং পাহাড়ি এলাকা ভীষণ পছন্দ করি। তাই বন্ধুদের সাথে দুদিন আগে ঘুরতে এসেছিলাম এখানে। আজকে আমাদের বাসায় ফেরার কথা ছিল। যাওয়ার পথে হঠাৎ আমার বাথরুম পেলে আমি ওদের পাশেই এক জায়গায় দাঁড় করিয়ে রেখে বাথরুম করার জন্য জঙ্গলের একটু গভীরে যাই। কিন্তু ফিরে এসে তাদের কাউকেই আর পাইনি। ওদের খুঁজতে খুঁজতেই এত রাত হয়ে গেছে। এখান দিয়ে যাচ্ছিলাম তখনই মেয়েটিকে ওখানে কিছু দেখে ভয় পেয়ে অজ্ঞান হয়ে যেতে দেখে তাকে সাহায্য করার জন্য এখানে এসেছি। কিন্তু ভাবতে পারিনি আপনারা এ ব্যাপারটা এতদূর নিয়ে যাবেন।”

একনাগাড়ে এতোটুকু বলে থামল ছেলেটি। এবার সবাই একটু নরম হলো। কিন্তু রতন মিঞা তখন মনে মনে অনেক কিছুই ভেবে ফেলেছেন ছেলেটিকে নিয়ে। তার মনে একটা নতুন আশার আলো দেখা দিল। সে এবার ছেলেটার দিকে দু পা এগিয়ে গেল। মুখোমুখি বসে আদুরে গলায় বলল,

“তোমার নাম কি বাবা? আর তুমি কোথায় থাকো? তোমার বাবা কি করেন?”

একসাথে এতগুলো প্রশ্ন করে থামল রতন মিঞা। ছেলেটি বেশ বিব্রত হলো। কিন্তু তবুও কিছু একটা ভেবে উত্তর দিতে লাগল,

“আমি রাজা। সবাই আমাকে রাজ বলে ডাকে। পৃথিবীতে আমার আপন বলে কেউ নেই।”

এতোটুকু বলে থামল রাজ। ওকে থামতে দেখে কেউ কিছু বলার আগে এবার চাঁদনীর দাদি তার পাশে গিয়ে বসল। ছেলেটির হাত ধরে বলল,

“কে বলেছে তোমার কেউ নেই? তুমি আমার নাতনিকে বিয়ে করে নাও দাদুভাই। আমার নাতনি কত মিষ্টি দেখেছো। তোমার সাথে অনেক ভালো মানাবে। তুমি চলে গেলে আমার নাতনির বদনাম হবে। এলাকার মানুষ ওকে নানা রকম কথা শোনাবে। কেউ তো আর বুঝবে না তুমি সত্য কথা বলছো। আমার নাতনির জীবনটা নষ্ট হবে। তোমাকে আমাদের ভীষণ পছন্দ হয়েছে। তুমি আমার নাতনিকে বিয়ে করে নাও। আর সারা জীবন এখানেই থেকে যাও। কোন অসুবিধা হবে না।”

রাজের হাতটা ধরা মাত্রই বুঝতে পারল ওর হাতটা প্রচন্ড রকমের ঠান্ডা। যেন ফ্রিজের মধ্যে থেকে এইমাত্র বের করে নিয়ে আসা হয়েছে। কিন্তু সেদিকে এখন দাদির কোন খেয়াল নেই। সে তো নিজের নাতনির বিয়ে দেবে বলে ব্যস্ত। রাজ দ্রুত উনার হাতের মধ্যে থেকে নিজের হাতটা ছাড়িয়ে নিল। তারপর গম্ভীর গলায় বলল,

“এটা সম্ভব নয়। আমাকে ক্ষমা করবেন। আমি কোন মানুষকে বিয়ে করতে পারবোনা।”

ওর এমন কথা তেও কারো যেন এখনো হুঁশ ফিরল না। এবার রতন মিঞা কিছুটা রাগী গলায় বলে উঠলেন,

“তোমার এসব কথা আমরা শুনতে চাই না। এখন তুমি এখান থেকে চলে গেলে আমার মেয়ের বদনাম হয়ে যাবে। আগে থেকেই আমার মেয়ের কম বদনাম হয়নি এখানে। তোমাকে এখানে থাকতে হবে, আর আমার মেয়েকে বিয়ে করতে হবে। নইলে এখান থেকে এক পাও বাইরে বের হতে দিব না তোমাকে আমরা। দরকার হলে সকালে পুলিশ নিয়ে এসে তার হাতে তুলে দেবো তোমাকে।”

রাজ এবার চুপ হয়ে গেল। কিছু বললো না। কিছুক্ষণ মাথা নিচু করে রেখে চোখ বন্ধ করে কিছু একটা ভাবল। তারপর মাথা উঁচু করে বলে উঠলো,

“আচ্ছা ঠিক আছে আমি আপনার মেয়েকে বিয়ে করতে রাজি। কিন্তু আমার একটা শর্ত আছে।”

ওকে রাজী হতে দেখে সকলের মুখে যেন হাসি ফুটে উঠল। রতন মিঞা দ্রুত বলে উঠল,

“বল কি শর্ত আছে তোমার। আমি সব শর্ত মানতে রাজী। শুধু আমার মেয়েটাকে সুখী দেখতে চাই।”

“আমি ওকে বিয়ে করবো ঠিকই। কিন্তু বিয়ে করার পর এক মুহূর্তও এখানে দাঁড়াবো না। রাতেই ওকে নিয়ে চলে যাব নিজ গন্তব্যে।”

ওর কথা শুনে এবার রতন মিঞার মুখটা কালো হয়ে গেল। সে কি বলবে বুঝে উঠতে পারছে না। তাকে চুপ করে থাকতে দেখে চাঁদনীর দাদি এবার তার কানের কাছে মুখ নিয়ে আস্তে করে বলল,

“রতন ওর কথা মেনে নে বাবা। নইলে ও চলে গেলে তোর মেয়েটার বদনাম হয়ে যাবে। এ মেয়েকে আর কোথাও বিয়ে দিতে পারবিনা। দেখছিস তো মেয়েটার অবস্থা। আর ছেলেটিকে দেখে মনে হচ্ছে সে কোন সম্ভ্রান্ত পরিবারের ছেলে। আমাদের চাঁদনীকে সে সুখেই রাখবে। আর কিছু ভাবিস না।”

রতন নিয়ে চিন্তায় পড়ে গেল। কি করবেন কিছুই বুঝে উঠতে পারছেন না তিনি। কিছুক্ষণ গম্ভীর মেরে চুপ করে রইলেন। কি করা চায় তা ভাবতে লাগলেন। তখন’ই খেয়াল করলেন পিছনে সবাই কানাঘুষা শুরু করেছে। আর সবাই চাঁদনীকে দোষারোপ করছে। তিনি আর কোন কিছু না ভেবে উত্তর দিলেন,

“ঠিক আছে আমি তোমার শর্তে রাজী। কিন্তু তোমাকে কথা দিতে হবে, তুমি আমার মেয়েকে কখনো কষ্ট দিবে না। তাকে সব সময় আগলে রাখবে। সুখে রাখবে। তোমাকে আমি চিনিনা জানিনা এমন অচেনা একটি ছেলের হাতে নিজের মেয়েকে তুলে দিতে একজন বাবা হিসেবে প্রচুর কষ্ট হবে আমার। তবুও তোমার চেহারা দেখে তোমাকে বিশ্বাস করে আমার মেয়েটিকে তুলে দিব। আশা করি তুমি সে বিশ্বাসের অমর্যাদা করবে না বাবা।”

রাজ কিছু একটা ভেবে বাঁকা হাসল। তারপর শান্ত গলায় উত্তর দিলো,

“আপনার মেয়ের কোন ক্ষতি হবে না। সে সুখে থাকবে কথা দিচ্ছি। এখন সময় নষ্ট না করে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিয়ের ব্যবস্থা করুন। আমি এখানে বেশিক্ষণ থাকতে পারব না। ওকে নিয়ে রাতেই চলে যাব।”

রতন মিঞা আর দেরি না করে দ্রুত পাশের বাড়ি থেকে একজন ইমামকে ডেকে এনে বিয়ের ব্যবস্থা করতে লাগলেন। এদিকে চাঁদনীর জ্ঞান ফেরানো হলো। চারিদিকে সবার বিয়ের আয়োজন দেখে সে কিছুই বুঝতে পারলো না। রাজ অন্য রুমে চলে যাওয়ায় রাজকে সে এখনো দেখেনি। কি হচ্ছে কিছুই মাথায় ঢুকছেনা তার। সবাই তাকে সাজাতে ব্যস্ত। একঘন্টা সময় এর মাঝে সবকিছু কমপ্লিট হয়ে গেল। রাতেই দুজনের বিয়ে পড়ানো হলো। চাঁদনী না চাওয়া সত্ত্বেও বিয়ে করতে বাধ্য হল। যদিও সে জানেনা কার সাথে বিয়ে হল তার। আর হঠাৎ কি থেকে কি হয়ে গেল সে কোন কিছু বলার সুযোগ টাও পেল না। কেউ তাঁকে কিছু জিজ্ঞেসও করল না।

বিয়ে পড়ানো শেষে যখন দুজনকে একসাথে করা হল। তখন রাজের দিকে ফিরে তাকাল চাঁদনী। নিজের স্বামীকে দেখে যেন এক নজরে প্রেমে পড়ে গেলো তার। এত সুন্দর কোন ছেলেকে যেন সে এর আগে কখনো দেখেনি। বেশরমের মতন এক নজরে তাকিয়ে রইল তার দিকে। রাজ একবার তার দিকে তাকিয়ে চোখ সরিয়ে নিল। তারপর বলে উঠল,

“মধ্য রাত পার হয়ে যাচ্ছে। আমি আর দেরি করতে পারব না। এখন আমাদের বিদায় দিন। ওকে নিয়ে চলে যেতে চাই।”

“না জামাই বাবা। এমনটা বলো না। এত রাতে আমি কোনভাবেই তোমাদের যেতে দিতে পারি না। আর তাছাড়া এই এলাকার খবর তুমি জানো না। এখানে সন্ধ্যার পর কেউ বাইরে বের হলেই তাকে আর জীবিত পাওয়া যায় না। পরের দিন তার লাশ খুঁজে পাওয়া যায়। তোমরা বের হলে যদি তোমাদের তেমন কিছু হয়। তুমি বরং কাল সকালে চলে যেও।”

কথাটা বলেই থামলেন রতন মিঞা। এবার রাজ কিছুটা রাগি গলায় বলে উঠল,

“দেখুন আমি আপনাদের আগেই বলেছি। আমি রাতেই চলে যাব। আর চিন্তা করবেন না ওর বা আমার কিছুই হবে না।”

এভাবে বলার পরেও সবাই জোর করতে লাগল রাজকে। এবার রাজের মুখটা যেন রাগে লাল হয়ে গেল। সে সকলের দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে রাগী গলায় বলল,

“ওকে আপনারা রাখুন আমি চলে যাচ্ছি। এখানে সকাল অব্দি থাকা পসিবল নয় আমার।”

কথাটি বলেই বাইরে যাওয়ার জন্য উদ্যত হলো রাজ। সাথে সাথে চাঁদনী গিয়ে তার সামনে দাঁড়ালো। তারপর বললো,

“দাঁড়ান কোথায় যাচ্ছেন আপনি? আমি আপনার সাথে যাব। জানিনা আপনি কে, আর কি থেকে কি হয়ে গেল। সে বিষয়েও আমার কিছু জানা নেই। কিন্তু যেহেতু আপনার সাথে আমার বিয়ে হয়ে গেছে। সেজন্য আমি আর এখানে থাকতে চাই না। বাবা দাদি তোমরা আমাকে বিদায় দাও। আমি ওনার সাথে চলে যাবো। বেঁচে থাকলে আবার দেখা হবে ইনশাআল্লাহ।”

এবার চাঁদনীর কথায় সবাই চুপ মেরে গেল। বেশ কিছুক্ষণ একে অপরের সাথে কথা বলে সবকিছু মিটমাট হল। তারপর চাঁদনীর হাত ধরে নিয়ে বাইরে বেরিয়ে গেল রাজ। রতন মিয়া পিছু পিছু যেতে চাইলে তাকে বাধা দিয়ে রাজ বলল,

“আপনারা কেউ জঙ্গলে আসবেন না। সবাই ঘরে গিয়ে দরজা লাগিয়ে দিন। এই জঙ্গলটা ভালো নয়। তবে আমাদের জন্য চিন্তা করবেন না আমাদের কিছু হবেনা। আমি বাসায় পৌছেই আপনাদের খবর দিয়ে দিব।”

কথাটা বলে চাঁদনীর হাত ধরে দ্রুত পায়ে অন্ধকারের মধ্যে মিলিয়ে গেল রাজ। সবকিছু এত দ্রুত হয়ে গেল যে কারো আর কিছু বোঝার উপায় থাকল না। সবাই যেন মন্ত্রমুগ্ধের মতো সব কিছুতেই রাজি হতে বাধ্য হল।

চাঁদনী কে নিয়ে অন্ধকারে কিছুদুর গিয়েই রাজ আশেপাশে তাকিয়ে ওর মাথায় হাত রাখল। চাঁদনী কিছু বুঝে ওঠার আগেই ঘুমে ঢুলে পরলো রাজের ওপর। রাজ তাকে কোলে তুলে নিয়ে হাওয়ার বেগে কোথাও একটা ছুটে চলল।
,
,
,
চলবে,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,

লেখার পর রি-চেক করা হয়নি। বানানে ভুলত্রুটি হলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন সবাই।

#ভয়ংকর_সে #পর্ব_৩
#M_Sonali

(অনেক পাঠক পাঠিকার অনুরোধে এই পর্ব থেকে নায়ক এর নামটা চেঞ্জ করে রাজ থেকে শ্রাবণ নামটা দেওয়া হল।)

ঘুম ভাঙতেই নিজেকে একটি অন্ধকার রুমে বিছানার ওপর আবিষ্কার করে চাঁদনী। সে কিছুক্ষণ চুপচাপ শুয়ে থেকে এদিক ওদিক তাকিয়ে বোঝার চেষ্টা করে সে ঠিক কোথায় আছে। তখন’ই রাতের কথাগুলো মনে পড়ে যায় তার। মনে পড়ে তার বিয়ে হয়ে গেছে। একজন অচেনা ছেলের সাথে। হঠাৎ করেই বিয়ে হয়ে গেছে তার। কথাগুলো মনে পড়তেই ধড়ফড়িয়ে উঠে বসে চাঁদনী। চারিদিকে তাকিয়ে ঘুটঘুটে অন্ধকার দেখতে পেয়ে ভীষণ রকম ভয় পেয়ে যায় সে। বুকের মাঝে অজানা ভয় বাসা বাঁধে তার।

সে শুকনো ঢোক গেলে। তারপর কাঁদো কাঁদো গলায় এদিক ওদিক তাকাতে তাকাতে চিৎকার করে বলে,

“শুনছেন, কেউ আছেন এখানে? প্লিজ কেউ থাকলে কথা বলুন। আমার ভীষণ ভয় করছে। আমি এখানে কিভাবে এলাম। এটা কোন জায়গা।”

তখনই রুমের মাঝে আলো জ্বলে ওঠে। চারিদিকে হঠাৎ করে আলো জ্বলে ওঠায় দ্রুত চোখ বন্ধ করে নেয় চাঁদনী। তারপর টিপটিপ করে ধীরে ধীরে চারি দিকে তাকায় সে। তাকিয়ে যেন ভীষণ রকম অবাক হয়ে যায়। বিশাল বড় একটি রুমের মাঝে পালঙ্কের উপর শুয়ে আছে সে। রুমটা দেখে মনে হচ্ছে যেন কোন রাজার রুম। অসম্ভব সুন্দর করে সাজানো গোছানো এবং পরিপাটি। প্রতিটা জিনিসে লেগে আছে আভিজাত্যের ছোঁয়া। চারিদিকে একবার ভালো করে দেখে নেয় সে। তার পরেই তার চোখ পড়ে দরজার কাছে দাঁড়িয়ে থাকা ছেলেটির দিকে। যে কিনা দুই হাত পকেটে গুঁজে দেওয়ালের সাথে হেলান দিয়ে তার দিকেই তাকিয়ে আছে।

চাঁদনী লজ্জা পেয়ে দ্রুত নিজের চোখ সরিয়ে নেয়। কিছুক্ষণ এদিক ওদিক তাকিয়ে নিজের দিকে লক্ষ করে দেখে। তার গায়ে কোন ওড়না নেই। এলোমেলো ভাবে বিছানায় শুয়ে ছিল সে। ব্যাপারটা খেয়াল হতেই দ্রুত এদিক ওদিক তাকিয়ে পাশে পরে থাকা ওড়নাটা নিজের গায়ে জড়িয়ে নেয়। তারপর আমতা আমতা করে বলে,

“আমি এটা কোথায়? এটা কোন জায়গা? আমি তো কিছুই বুঝতে পারছিনা।”

ওর কথার উত্তরে ছেলেটি এবার পকেটের মধ্যে থেকে হাত বের করে ধীর পায়ে হেটে হেটে ওর পাশে এসে দাঁড়ায়। পা থেকে মাথা পর্যন্ত ভাল করে তীক্ষ্ণ নজরে দেখে নেয় ওকে। চাঁদনী একবার মাথা তুলে ছেলেটার দিকে তাকিয়ে নতুন করে প্রেমে পড়ে যায়। গতকাল রাতে যেমন দেখেছিল তার চাইতেও যেন আরো বেশী সুন্দর লাগছে দেখতে এখন তাকে। মাথায় কোনো হুডি নেই। গায়ে সিম্পল একটা কালো রঙের টি-শার্ট পরা। অনেক বেশি কিউট লাগছে দেখতে। ধবধবে সাদা গায়ের রঙের সাথে কালো রঙের টি-শার্ট টা যেন আরো বেশি ফুটে উঠেছে। ওকে এভাবে হা করে নিজের দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে শ্রাবণ ওর পাশে এসে দাঁড়ায়। গম্ভীর গলায় বলে,

“এটা আমার বাড়ি। এখানে শুধু আমি থাকি। আর আজ থেকে তুমিও এখানেই থাকবে আমার সাথে। আমাকে ভুলে যাওনি নিশ্চই? গতকাল রাতে আমার সাথে বিয়ে হয়েছে তোমার। সে হিসেবে আমি তোমার স্বামী।”

চাঁদনী মাথা এদিক ওদিক নাড়িয়ে বলে ওঠে,

“জ্বি আমার মনে আছে। কিন্তু আপনি আসলে কে? আর বাবা কেন হঠাৎ করে আপনার সাথে এভাবে বিয়ে দিল আমায়? আমিতো এর আগে আপনাকে কখনো দেখিনি।”

“প্রথমত আমি যাই হই না কেন, এখন আমি তোমার বর। আর তুমি আমার বউ। তাই এ পরিচয়টুকু যথেষ্ট। আর যদি আমার নাম জানতে চাও। তাহলে শোনো, আমার নাম শ্রাবণ। পৃথিবীতে আমার আপন বলে কেউ নেই। আজ থেকে শুধু তুমি আছো। গতকাল রাতে তুমি যখন ভয় পেয়ে অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিলে। তোমাকে বাঁচিয়ে বাসায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য তুলে নেওয়ার সাথে সাথে এলাকাবাসী এসে পরে। আর তোমাকে নিয়ে আমাকে জড়িয়ে ভুল বুঝে। যে কারণে বাধ্য হয়ে বিয়ে করতে হয়েছে তোমাকে আমার।”

এতোটুকু বলে থামল শ্রাবণ। ওকে থামাতে দেখে চাঁদনী এবার ওর দিকে মুখ তুলে করুন চোখে তাকাল। তারপর মৃদু গলায় বলল,

“তাহলে কি আপনি আমাকে নিজ ইচ্ছায় বিয়ে করেননি? জোর করে বাবা আপনার সাথে আমাকে বিয়ে দিয়েছে বলে আপনি আমাকে বিয়ে করেছেন?”

ওর কথার উত্তরে শ্রাবণ জানালার কাছে যেতে যেতে বলল,

“আমাকে জোর করে কিছু করানোর মতো ক্ষমতা পৃথিবীতে কারো নেই। তোমার বাবা তো সাধারণ একজন মানুষ। আমি ইচ্ছা করেই তোমাকে বিয়ে করেছি। এখন কথা না বাড়িয়ে যাও ফ্রেশ হয়ে আসো।”

চাঁদনী ওর কথার উত্তরে আর কিছু বলে না। মাথা নিচু করে বিছানা থেকে উঠে দাঁড়ায়। এদিক ওদিক তাকিয়ে খোঁজার চেষ্টা করে ওয়াশরুম কোনদিকে। তখনই শ্রাবণ জানালার ঐ দিকে তাকিয়ে থেকেই বলে উঠে,

“হাতের বাম পাশে যে দরজাটা দেখতে পাচ্ছ! সেই দরজার ওপাশেই ওয়াশরুম। ওখানে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আসো। আমি এখানেই আছি।”

চাঁদনী আর কথা না বাড়িয়ে ওয়াশ রুমের দিকে হাঁটা দেয়। দরজার কাছে গিয়ে আবার পিছন দিকে ঘুরে দাঁড়িয়ে বলে,

“শুনছেন, আমি ফ্রেশ হয়ে কি পরবো? আমার তো আর কোন জামাকাপড় আনা হয়নি। শুধু এটা ছাড়া।”

” কিছু পড়ার কি দরকার? না পড়েও তো থাকতে পারবে। এখানে তো আমি ছাড়া আর কেউ নেই।”

জানালার বাইরের দিকে তাকিয়ে থেকেই উত্তর দেয় শ্রাবণ। ওর মুখে এমন উত্তর শুনে বেশ ইতস্ততায় পড়ে যায় চাঁদনী। থতমত খেয়ে বলে,

“মা মানে কি বলছেন আপনি এসব?”

শ্রাবণ ওর দিকে ঘুরে দাঁড়ায়। গম্ভীর গলায় বলে,

“কিছু না, মজা করছিলাম। তুমি ওয়াশরুমে যাও আমি তোমার পোশাকের ব্যবস্থা করছি।”

চাঁদনী আর কথা বারিয়ে চুপচাপ ওয়াশ রুমের মধ্যে ঢুকে পরে। দরজা লাগাতে যেতেই হঠাৎ দরজায় টোকা দেওয়ার শব্দ পায়। সে দরজা খুলে বাইরে তাকিয়ে দেখে শ্রাবণ হাতে একটি পোশাক নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ও বেশ অবাক হয়। বড় বড় করে তাকিয়ে প্রশ্ন করে,

“আপনি এত তাড়াতাড়ি এটা কোথা থেকে নিয়ে আসলেন? ৩০ সেকেন্ডও তো হয়নি। এত টুকু সময়ের মাঝে আপ,,,!”

এতোটুকু বলতেই ওকে থামিয়ে দিয়ে শ্রাবন বলে উঠলো,

“আমি অলসতার কাজ একদম পছন্দ করি না। সবকিছু তাড়াতাড়ি করা চাই। তাই কথা না বাড়িয়ে কাপড়টা নাও আর ফ্রেশ হয়ে এটা পড়ে বেরিয়ে আসো। বেশি সময় নেই। আমাকে এক জায়গায় যেতে হবে।”

চাঁদনী আর কথা বাড়ায় না। ছো মেরে ওর হাত থেকে কাপড় টা নিয়ে ভেতর থেকে দরজা লাগিয়ে দেয়। ওয়াশরুমটা অনেক বড়। অনেক সুন্দর করে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করা ও পরিপাটি করে সাজানো। চাঁদনী চোখ বুলিয়ে পুরো ওয়াশরুম টা একবার দেখে নেয়। সত্যিই ও জীবনে কল্পনাও করেনি এত সুন্দর একটি বাড়িতে থাকবে। সবকিছু যেন স্বপ্নের মত লাগছে। যেন রাজকীয় কোন পরিবেশে চলে এসেছে সে। মনের মাঝে বাকবাকুম পায়রা উড়তে শুরু করেছে তার। একে তো নিজের স্বামীকে দেখে প্রথম দেখাতেই প্রেমে পড়ে গেছে সে। এতো সুন্দর পুরুষ জীবনে আর কখনো দেখেনি সে। তার ওপর বাড়ির প্রতিটা জিনিস দেখে যেন আরও আনন্দে মেতে উঠছে তার মনটা।

সে এবার তাড়াতাড়ি গোসল করে জামা কাপড় ছাড়ে। তারপর শ্রাবনের দেওয়া জামাটা পরতে নেয়। তখনই দেখে জামাটা একদমই ছোট। আর জামার গলাটা বেশ বড়। লম্বায় হাটু পর্যন্ত হবে হয়তো। কালো কুচকুচে রঙের একটি সফট কাপড়ের জামা। এটা পড়ার পর চাঁদনীর মনেই হচ্ছে না সে কিছু পড়েছে।

চাঁদনী ভেবে পাচ্ছেনা সে এটা পড়ে কিভাবে বের হবে। ভীষণরকম অস্বস্তি লাগছে তার। জামাটা এদিক ওদিক থেকে টানতে শুরু করেছে সে। তখন এই দরজায় টোকা পড়ে। ও পাশ থেকে শ্রাবন বলে ওঠে,

“কি হলো আর কতক্ষণ লাগাবে? জলদি এসো আমাকে যেতে হবে।”

চাঁদনী কোন উপায় না পেয়ে আগের জামার সাথে রেখে দেওয়া ওড়নাটা কোনমতে নিজের গায়ে জড়িয়ে নেয়। তারপর দরজা খুলে কাপড় এদিক-ওদিক টানতে টানতে বাইরে বেরিয়ে আসে। ওকে পা থেকে মাথা পর্যন্ত একবার দেখে নেয় শ্রাবণ। তারপর আচমকা ওড়নাটা ধরে এক ঝটকা মারে। সাথে সাথে ঘুরতে ঘুরতে পড়ে যেতে নিলে চাঁদনী। তখনই ওর হাত ধরে ফেলে শ্রাবন। তারপর গম্ভীর গলায় বলে,

“আমার সামনে এভাবে আসার কোনো প্রয়োজন নেই। তুমি ভেবো না এটা পরে আমার সামনে আসলে আমি ভুলভাল কিছু করে বসবো। তুমি ততটাও সুন্দর নও। আমার কাছে এর চাইতে ভাল কোন পোশাক নেই। তাই এটাই পড়ে থাকতে হবে তোমায়। এখন চুপচাপ আমার কথা শোনো। আমি বাইরে যাচ্ছি। ভুল করেও এই বাড়ি থেকে বাইরে বের হবেনা। আমার আসতে হয়তো কিছুক্ষণ সময় লাগবে। বাসা থেকে কোনমতেই বাইরে বের হবে না। যে কেউ এসে ডাকুক না কেন।”

কথাগুলো বলেই চলে যেতে নেয় শ্রাবন। তারপর কিছু একটা ভেবে আবারো ফিরে আসে। পকেট থেকে একটা কিছু বের করে সেটা চাঁদনীর হাত ধরে ওর হাতে বেঁধে দিতে দিতে বলে,

“এটা তোমার হাতে সব সময় বেঁধে রাখবে। এক মিনিটের জন্যও এটি খুলবেনা। ধরে নাও তোমার বরের দেওয়া প্রথম গিফট এটা।”

চাঁদনী ভ্রু কুঁচকে হাতের দিকে তাকায়। দেখে সেখানে একটি পালক বেঁধে দেওয়া। পালক টা দেখে ঠিক বোঝা যাচ্ছে না এটা কিসের পালক। তবে পালক টা একদম কুচকুচে কালো রঙের। যেন শাইন করছে সেটা। চাঁদনী কিছু বলবে তার আগেই ওকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে বাসা থেকে দ্রুত বেরিয়ে যায় শ্রাবণ। চোখের পলকে যেন উধাও হয়ে যায় সে। এতে চাঁদনী ভীষণ অবাক হয়। সাথে রাগও হয় প্রচুর।

“সে কিভাবে বলল চাঁদনী ততো টাও সুন্দর নয়। নিজের রূপের বড্ড বেশি অহংকার লোকটার। এতই যখন অহংকার তাহলে ওকে বিয়ে করতে বলেছিল কে?”

কথাগুলো ভেবে মনে মনে ভীষণ অভিমান হয় তার। কিন্তু সে অভিমানকে দূরে রেখে খাবার খুঁজতে থাকে। সে বুঝতে পারে তার ভীষণ ক্ষুধা লেগেছে। এদিকে শ্রাবণ চলে গেছে কি খাবে কিছুই বুঝতে পারে না। তাই ধীরে পায়ে নিজের রুম থেকে বাইরে বের হয়। দেখে বাইরে বিশাল বড় আর একটি রুম। সেখানে একটি বিশাল ডাইনিং টেবিল রাখা। সেই টেবিলের ওপর অনেকগুলো বাসনের মাঝে শুধু নানা রকমের ফল রাখা। তা ছাড়া অন্য কোন খাবার নেই।
,
,
,
চলবে,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,