ভয়ংকর সে পর্ব-০৪

0
258

#ভয়ংকর_সে #পর্ব_৪
#M_Sonali

প্রচন্ড ক্ষুধা লেগেছে চাঁদনীর। কিন্তু ডাইনিং টেবিলের উপর শুধুমাত্র ফল ছাড়া অন্য কিছু না পেয়ে বেশ বিরক্ত হলো সে। খালি পেটে ফল খেলে তার বমি বমি লাগে। কিন্তু এখন ফল ছাড়া এখানে অন্য কিছুই নেই। যে সেটা খেয়ে নিজের ক্ষুধা নিবারণ করবে। তাই বাধ্য হয়েই একটি কলা খেয়ে নিল সে। তারপর একটি আপেল হাতে নিয়ে চলে গেল জানালার কাছে। সে বুঝতে পারছে না সকাল হওয়া সত্বেও বাড়ির বাইরে সবকিছু অন্ধকার অন্ধকার লাগছে কেনো? তাই জানালার কাছে গিয়ে এদিক-ওদিক তাকিয়ে দেখতে লাগলো ব্যাপারটা। ভালোভাবে খেয়াল হতেই সে দেখল দিন হলেও বাড়ির চারিপাশে বিশাল বিশাল বটগাছ লাগানো। যার কারণে বাইরে এমনভাবে ঢেকে আছে যে মনে হচ্ছে এখন সন্ধ্যা।

চাঁদনী আবারো বেশ বিরক্ত হলো। এটা আবার কেমন বাড়ি! চারি পাশে এতো বড় বড় বটগাছ কে লাগাতে বলেছে? কেমন একটা গা ছমছমে পরিবেশ। দূরদূরান্ত অব্দি শুধু গাছ ছাড়া আর কিছুই দেখা যাচ্ছে না। সে ভাবল সে হয়তো বাড়ির পিছন দিকে দেখছে। তাই ওই পাশ থেকে সরে বাড়ির অন্যপাশের জানালাটা খুলে দিল। কিন্তু সেখানেও একই অবস্থা। গাছপালা ছাড়া অন্য কিছুই দেখা যাচ্ছে না। দিনের বেলায়ও মনে হচ্ছে যেন অন্ধকার হয়ে আছে চারপাশটা। হঠাৎ চাঁদনী খেয়াল করলো গাছের ডালের সাথে বেশ কয়েকটা বাদুর ঝুলে আছে।

বাঁদুর গুলোকে দেখে সে বেশ অবাক হল। হাতে থাকা অপেলটাতে একটা কামড় দিয়ে তীক্ষ্ণ নজরে তাকালো বাঁদুর গুলোর দিকে। বাঁদুরগুলো স্বাভাবিকের তুলনায় অনেকটা বড়। চোখ বন্ধ করে চুপচাপ গাছের ডালে ঝুলে আছে তারা। মুখের দুপাশে দুটো চকচকে সরু দাঁত বেরিয়ে আছে। বেশ ভয়ংকর লাগছে দেখতে। এমন বাদুর সে এর আগে কখনোই দেখেনি। কিছুটা ভয় পেয়ে জানালার কাছ থেকে সরে এলো সে। বেশ ভয় লাগছে তার। একেতে অচেনা জায়গা। তার ওপর এমন গা ছমছমে পরিবেশে একা একা এতো বিশাল একটা বাড়িতে থাকতে যে কারোর’ই ভয় লাগার কথা। চাঁদনী আপেলটা খেতে খেতেই পুরো বাড়িটা ঘুরে দেখার সিদ্ধান্ত নিল। সে আপেলে এক কামড় করে দিচ্ছে আর হেঁটে হেঁটে এদিক-ওদিক যাচ্ছে। এবং চারিদিকে সুক্ষ্ম নজরে তাকিয়ে দেখছে। পুরো বাসাটাই এত সুন্দর করে সাজানো গোছানো পরিপাটি যে, চাঁদনী বিশ্বাস করতে পারছে না এ বাড়িতে শ্রাবণ একা থাকে। মনে হচ্ছে যেন দশ-বারোজন কাজের লোক যদি সব সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখে, তবেই যেন এরকম চারিদিকে সব সাজানো গোছানো থাকার কথা।

হাঁটতে হাঁটতে নিচতলা পেরিয়ে উপরতলায় চলে গেল চাঁদনী। উপর তলাও একই ভাবে সাজানো গোছানো এবং পরিপাটি। তবে নিচের রুমগুলোর চাইতে উপরের রুমগুলো ভিন্ন টাইপের। প্রতিটা রুমের দরজার সামনে একটি করে বাদুরের ছবি আঁকা। ছবিগুলো দেখে চাঁদনী আপেলে শেষ কামড়টা দিয়ে মনে মনে বলে উঠল,

“এখানে এত বাদুরের ছবি কেন? এই বাসার মানুষ কি বাদুর খুব ভালোবাসে নাকি? যে গাছের ডালে ডালে বাদুর ঝুলে আছে। আবার দরজার সামনে বাঁদুরের ছবি! আজব তো। উনি আসলে জিজ্ঞেস করতে হবে। দরজায় লাগানোর জন্য আর কোনো ছবি পাননি, যে বাদুড় ঝুলিয়ে রেখেছেন। আজব মানুষ!”

কথাটা ভেবেই ভেংচি কেটে আবার সামনে এগিয়ে যেতে লাগল চাঁদনী। বেশ কয়েক পা হেঁটে যেতেই একটা দরজার সামনে গিয়ে থমকে দাড়ালো সে। প্রতিটা দরজা খোলা থাকলেও এই দরজাটা চাপিয়ে রাখা। তাই চাঁদনীর মনে কৌতুহল জাগলো। সে এবার এই রুমে ঢুকে ভিতরটা দেখার জন্য উদ্যত হল। যে ভাবা সেই কাজ। দরজা ঠেলে ভেতরে উঁকি দিল সে। কিন্তু ভিতরটা একদম ঘুটঘুটে অন্ধকার। কিছুই দেখা যাচ্ছে না। মনে সাহস যুগিয়ে অন্ধকার হাতরে হাতরে লাইটের সুইচ অন করল সে। অন করতেই পুরো রূমটা চোখের সামনে একদম দিনের মতো আলোকিত হয়ে গেল।

সে পুরো রুমটায় চোখ বুলিয়ে দেখে নিলো। দেখল রুমের একপাশ দিয়ে ছাঁদে ওঠার সিঁড়ি উঠে গেছে। এটা দেখে সে বেশ অবাক হল। এটা আবার কেমন বাড়ি? যেখানে ছাদে উঠার জন্যে একটি রুম সিলেক্ট করে রাখা হয়েছে। যে রুমের মধ্যে দিয়ে ছাদে উঠতে হয়। কথাগুলো মনে মনে ভাবতে ভাবতেই সিঁড়ির দিকে এগিয়ে গেল সে। আর একপা দু পা করে উঠতে উঠতে ছাদের দরজায় পৌছে গেলো।

ছাদের দরজায় পৌঁছে আরেকদফা অবাক হলো সে। কারণ ছাদের দরজার সাথেও বিশাল এক বাদুরের ছবি আঁকা। বেশ বিরক্ত হলো সে। ছাদে ওঠার জন্য আর তর সইছে না তার। তাই ছবিটা নিয়ে কোনো কিছু না ভেবেই ছাদের দরজা খুলে সামনে তাকাল। সাথে সাথে যেন অবাক এর শীর্ষে পৌঁছে গেল সে। ছাদের ওপর টা একদম ঘুটঘুটে অন্ধকার। দেখে মনে হচ্ছে যেন রাত হয়ে গেছে। কিন্তু তার জানামতে এখন সকাল ১০ থেকে ১১ টা বাজে হয়তো। চাঁদনীর শরীর ছম ছম করে উঠলো। ভীষণ রকম ভয় পেতে লাগলো সে। হঠাৎ অন্ধকারের মধ্যে কিছু একটা দেখে আঁতকে উঠল সে। ভয়টা যেনো আরো দিগুন ভাবে বেড়ে গেলো তার। দেখল সামনে অন্ধকারের মাঝে অসংখ্য লাল রঙের চোখ দেখা যাচ্ছে। যেটা অন্ধকারে কিসের চোখ তা বোঝা যাচ্ছে না।

চাঁদনী ভয়ে দুই হাত দিয়ে নিজের মুখ ঢেকে জোরে একটা চিৎকার দিলো। মুহুর্তের মাঝে ওর মনে হলো ঝড়ের বেগে কিছু একটা এসে সামনে থাকা দরজাটা লাগিয়ে দিল। তারপর ওকে সেখান থেকে নিয়ে হাওয়ায় উড়ে যাবার মত করে অন্য কোথাও নিয়ে গেল। অবাক হয়ে দ্রুত নিজের মুখের সামনে থেকে হাতটা সরিয়ে নিল সে। আর সামনে তাকাতেই দেখলো শ্রাবণের কোলে আছে সে। কোন কিছু না ভেবে ওকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে হু হু করে কাঁদতে লাগল চাঁদনী। শ্রাবণ কিছু বলল না। নিজের হাতের মুঠো শক্ত করে চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইলো। এভাবে কিছুক্ষণ কান্না করে নিজেকে সামলে নিলো চাঁদনী। ওর বুক থেকে নিজেকে সরিয়ে নিল সে। দুপা পিছিয়ে গিয়ে চারিদিকে চোখ বুলিয়ে নিল। দেখল সে নিজের রুমে আছে। যে রুমে সকালবেলা ঘুম থেকে উঠেছিল সে। বেশ অবাক হলো সে। কিন্তু সেদিকে গুরুত্ব না দিয়ে অভিমানি গলায় বললো,

“এই লোক এই, কোথায় ছিলেন আপনি? আমাকে একা একা এই ভয়ঙ্কর বিচ্ছিরি বাড়িতে রেখে কোথায় হারিয়ে গিয়েছিলেন? আমাকে কি বিয়ে করে এখানে মেরে ফেলতে নিয়ে এসেছেন? আর ওইসব কিসের ছবি টাঙিয়ে রেখেছেন দরজার সামনে। বাইরে এতো অন্ধকার কেন? দিনের বেলাতেও চারিদিকে এত অন্ধকার এবং গা ছমছমে পরিবেশ কেন এই বাড়ির? আশেপাশে আর কোন বাড়ি নেই কেনো? ছাদের উপর টা এতো ভয়ংকর কেন? কি ছিল ছাদের উপর ওগুলো? এমন ভয়ঙ্কর ভাবে আমার দিকে তাকিয়ে ছিলো! বিশ্বাস করুন আমি বড্ড ভয় পেয়েছি। আর একটু হলে হয়তো হার্ট অ্যাটাক করে মরে যেতাম। ভাগ্যিস আপনি ঠিক সময় এসেছেন। কিন্তু কোথায় গিয়েছিলেন? আপনার বাড়িটা এতো রহস্যময় কেন? আমাকে এত তাড়াতাড়ি ছাদের দরজা থেকে এখানে কিভাবে নিয়ে আসলেন? আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না। আসলে কে আপনি?”

একনাগাড়ে এতগুলো প্রশ্ন একসাথে করে তারপর চুপ করল চাঁদনী। জোরে জোরে হাঁপাতে লাগলো সে। এতগুলো কথা একসাথে বলায় বেশ হাপিয়ে গেছে সে। ওকে হাঁপাতে দেখে এক গ্লাস পানি এনে ওর সামনে ধরল শ্রাবণ। ইশারা করে বললো খেয়ে নিতে। চাঁদনী কোন কথা না বলে গ্লাসটা হাতে নিয়ে ঢকঢক করে পুরোটাই খেয়ে নিল। তারপর ওর দিকে তাকিয়ে রইলো সন্দেহের দৃষ্টিতে। শ্রাবণ কোনো কিছু না বলে ওর সামনে থেকে সরে গেল। ফ্রিজ থেকে লিকুইড এর মত কিছু একটা বের করে সেটা গ্লাসে ঢেলে খেতে খেতে ওর সামনে এসে বলল,

“তোমরা মানুষরা এত বেশি প্রশ্ন করো কেন? আর এত কৌতুহল কেন তোমাদের? এই কৌতুহল এর জন্যই তোমাদের সব সময় বিপদে পড়তে হয়। তোমরা কি একটু কৌতূহল ব্যতীত স্বাভাবিক ভাবে থাকতে পারো না?”

ওর এমন প্রশ্নে বেশ বিরক্ত হলো চাঁদনী। কোমরে হাত দিয়ে ঝগড়াটির মত ঝাঁঝালো গলায় বললো,

“এখানে আপনি কৌতূহলের কি পেলেন? কোথায় আমি প্রশ্ন করেছি তার উত্তর দেবেন! তা নয় আপনি’ই আমাকে উল্টো প্রশ্ন করছেন? আচ্ছা আসলে কে আপনি? এতো রহস্যময় কেন লাগছে আপনাকে? আর এই বাড়িটা কোথায়? আপনি আমাকে কোথায় নিয়ে এসেছেন?”

“আমি একজন ভূত আর আমি মানুষ খাই। তোমাকে খাব বলে এখানে নিয়ে এসেছি। আর কিছু জানতে চাও?”

কথাটি বলেই ওকে পাশ কাটিয়ে অন্যদিকে চলে গেল শ্রাবন। ওর এমন কথায় চাঁদনীর যেন গা পিত্তি জ্বলে উঠলো। ভীষণরকম রাগ হতে লাগলো। মনে মনে বললো,

“কত্ত বড় সাহস এই ব্যাটার। চাঁদনীকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করে!”

সে কোমরে হাত দিয়ে আবারও তার কাছে এগিয়ে গেল। ঝাঁঝালো গলায় বলল,

“এই যে কি বলছেন কি আপনি এসব? আপনি কি ভাবছেন আপনাকে দেখে আমি ভয় পাব? মোটেও না। এই চাঁদনী ভয় পাওয়ার মেয়ে নয়। কিন্তু তার পরেও আমি জানতে চাই এটা কোন জায়গা? আর বাইরে এমন কেন দিনের বেলায়ও এত অন্ধকার! ওগুলো কি ছিল বাইরে? প্লিজ আমাকে বলুন। এই কৌতুহল মনে নিয়ে থাকা বড্ড মুশকিল আমার জন্য।”

ওর কথার কোন উত্তর দিল না শ্রাবণ। হাতে থাকা গ্লাসের তরল জিনিস টুকু পুরোটাই এক চুমুকে খেয়ে নিলো সে। তারপর ঠোঁটটা চেটেপুটে খেয়ে উঠে দাঁড়ানো। একদম ওর কাছাকাছি এসে ওর দিকে তীব্র দৃষ্টিতে তাকালো সে। ওকে এভাবে কাছে এসে তাকাতে দেখে বেশ লজ্জা পেল চাঁদনী। মুহূর্তেই চোখ নিচের দিকে নামিয়ে নিল সে। শ্রাবণ কোনো কথা না বলে ওকে পাশ কাটিয়ে অন্যদিকে চলে গেল। এবার বেশ রাগ হলো চাঁদনীর।

চাঁদনী ওর পিছু পিছু দৌড়ে সামনে গিয়ে দাঁড়াল। কোমরে হাত দিয়ে বলল,

“আপনি এভাবে আমাকে এড়িয়ে চলে যাচ্ছেন কেন? এভাবে যদি দূরে দূরেই থাকবেন তাহলে বিয়ে করেছেন কেনো আমায়? আমাকে আমার বাবার বাড়ি নিয়ে রেখে আসুন। এখানে থাকতে পারছি না, ভীষণ অস্বস্তি লাগছে আমার এখানে। কেন জানি মনে হচ্ছে চারিদিকে বিপদ আছে আমার জন্য।”

শ্রাবণ ওর মুখের দিকে শান্ত নজরে তাকাল। নিজের মুখটা ওর মুখোমুখি এনে রহস্যময় হাসি দিয়ে বলল,

“আমার চাইতে বড় বিপদ তোমার জন্য আর কি থাকতে পারে? আমি থাকতে আর কোনো বিপদের ভয় করো না। কারণ তোমার জন্য সবচাইতে বড় বিপদ তো আমি নিজেই।”

কথাটা বলেই বাঁকা হেসে ওকে পাশ কাটিয়ে আবারো চলে গেল ডাইনিং টেবিলের কাছে। এবার যেন রাগে ধৈর্যের সীমা অতিক্রম করল চাঁদনীর। সে সামনে গিয়ে দাঁড়াল। রাগী গলায় বলল,

“আপনার এমন হেয়ালিপনা কথা শুনতে আমার মোটেও ভালো লাগছে না। আমার কেন জানি কোন কিছু ভাল লাগছে না। সবকিছু অসহ্য লাগছে। প্লিজ আমাকে এখান থেকে নিয়ে চলুন। আমি এখানে আর থাকতে চাই না। বাবার কাছে রেখে আসুন।”

শ্রাবণ কোন উত্তর দিল না। চুপচাপ বসে কিছু একটা ভাবলো। তারপর উঠে দাঁড়িয়ে নিজের হাতটা চাঁদনীর মাথার উপরে স্পর্শ করলো। সাথে সাথে ঘুমে ঢুলে পরলো চাঁদনী। শ্রাবণ ওকে কোলে তুলে নিয়ে বিছানায় শুইয়ে দিল। রহস্যময় হাসি দিয়ে মনে মনে বলল,

“তোমাকে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য তো এখানে নিয়ে আসেনি চাঁদপাখি। তোমায় দিয়ে যে অনেক বড় কাজ করবো আমি। নাহলে কি এতক্ষণ সময় ধরে একটা মানুষের তরতাজা রক্তে ভরা শরীর দেখেও নিজেকে সামলে রাখি?”

কথাটা মনে মনে ভেবেই রহস্যময় হাসি দিয়ে চোখের পলকে সেখান থেকে কোথায় যেন চলে গেল শ্রাবণ।
,
,
,
বড় একটি জঙ্গলের ঠিক মাঝখানে বিশাল বড় এক প্রাসাদ। যার চারপাশটা ঘুটঘুটে অন্ধকার। ভিতরটাও একইরকম। এই প্রাসাদের মাঝে চারিদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে নানা রকম মানুষের মতো দেখতে ভ্যাম্পায়ারের দল। তাদের সকলের চোখগুলোই টকটকে লাল রঙের। হাতে বেশ লম্বা লম্বা নখ। মুখের দুই পাশ দিয়ে বেরিয়ে আছে সরু দুটি দাঁত। দেখতেই ভীষণ ভয়ঙ্কর লাগছে। সকলের পরনেই রয়েছে কালো কুচকুচে রঙের পোশাক।

প্রাসাদের দরজা খুলে সকল ভ্যাম্পায়ারের মধ্য দিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে লাগল ভ্যাম্পায়ার রুপি শ্রাবণ। তার চেহারায় যেন এখন পুরোপুরি পরিবর্তন চলে এসেছে। চোখ দুটো হয়ে উঠেছে টকটকে রক্ত লাল। হাতে লম্বা লম্বা নখ। মুখের দুই পাশ দিয়ে বেরিয়ে আছে সরু লম্বা দাঁত। চুল গুলো একদম উপর দিকে খাড়া হয়ে রয়েছে। গায়ে কালো রঙের লম্বা পোশাক। ভিষন ভয়ংকর দেখতে লাগছে তাকে। সে সামনের দিকে দাপটের সাথে এগিয়ে যাচ্ছে। আশেপাশে থাকা ভ্যাম্পায়ার গুলো তাকে দেখেই মাথা নত করে দাঁড়িয়ে রইল। শ্রাবণ সোজা হেঁটে সামনে গিয়ে দাঁড়ালো। সামনে বড় একটি সিংহাসন এর মত বিছানায় আধা শোয়া অবস্থায় বসে আছেন একজন ভ্যাম্পায়ার। যার মাথায় রয়েছে কালো রঙের একটি মুকুট। শ্রাবনকে দেখতে পেয়েই মুখে হাসি ফুটে উঠল তার।

সে বসা থেকে উঠে দাঁড়ালো। শ্রাবণের সামনে এগিয়ে এসে উত্তেজিত গলায় বলল,

“শুনেছি তুমি নাকি কাজটা করে ফেলেছ। ওই মেয়েটিকে খুঁজে বের করেছো তুমি। যার জন্য আমরা এতদিন হলো অপেক্ষা করছি।”

উনার কথার উত্তরে শ্রাবণ বাঁকা হাসলো। তারপর বললো,

“ভ্যাম্পায়ার রাজপুত্র শ্রাবণ পারেনা এমন কোন কাজ নেই। সেটা আপনি ভাল করে জানেন। আমি তাকে খুজে পেয়েছি। এবং সব রকম পরীক্ষা করে দেখেও নিয়েছি তাকে। সে আমার কাছেই সুরক্ষিত আছে। সময়মতো তাকে আপনার কাছে নিয়ে আসব। তার রক্ত পান করে আমাদের হাড়ানো শক্তি ফিরে পাবো আমরা।”

চলবে,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,