মায়ার জালে পর্ব-১২

0
304

#গল্প::#মায়ার_জালে
#writer_পাপন
#পর্ব::১২

সকাল বেলা সূর্যের প্রখর আলো চোখে পড়তেই আয়ানের ঘুম ভেঙে যায় । মিটিমিটি ভাবে তাকায় সূর্যের দিকে। সূর্যের আলোর দিকে তাকাতে না পেরে আবার চোখ বুঝে নেয় । ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে আটটা বাজতে চলেছে। আয়ান আস্তে আস্তে ওয়াশ রুমে যায় । অসুস্থ থাকার কারনে অফিসে যেতে পারেনি কিছুদিন । তাই আজকে অফিসে যাওয়ার জন্য তৈরি হচ্ছে । এদিকে অনু তো বেঘোরে ঘুমোচ্ছে । আয়ান ফ্রেশ হয়ে এসে দেখে অনু ঘুমিয়ে আছে এখনও । আয়ান নিচে যায় নাস্তা করতে। নাস্তা করে অফিসে চলে যায় ।

/

আকাশও কোথাও যাওয়ার জন্য তৈরি হচ্ছে । তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে নাস্তার টেবিলে বসে । নাস্তা করে বের হতে যাবে তখনই পেছন থেকে ডাক পড়লো,,,,

রিতু— আকাশ ভাইয়া ।

আকাশ— কি হলো। পেছন থেকে ডাকছো কেন।

রিতু— ওও সরি । দাড়াও সামনে থেকে ডাকছি।

আকাশ— ফাজলামু না করে বলো কেন ডাকলে।

রিতু— আমার চকলেটের কথা মনে আছে তো।

আকাশ— হ্যাঁ মনে আছে । এনে দিবো।

রিতু— গুড।

আকাশ চলে যায় । এদিকে ঘুম ভাঙলো অনুর। ঘুম থেকে উঠে দেখে আয়ান পাশে নেই। ভাবলো ওয়াশরুমে গেছে। কিন্তু দেখলো সেখানে নেই। অনু নিচে এসে দেখলো কাজের লোকগুলো এসেছে। অনু কাজের লোককে বললো ,,,,

অনু— আয়ানকে দেখেছো।

লোকটি— ছোট সাহেব তো অফিসে চলে গেছেন।

অনু— ওওও।

অনু রুমে চলে যায় । তারপর ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করে বিছানায় বসে পড়ে। অনু মনে মনে ভাবছে আজ তো আয়ান বাড়িতে নেই। তাহলে আজ আয়ান অফিস থেকে আসার পর একটা সারপ্রাইজ দিলে কেমন হয় । যেই ভাবা সেই কাজ। অনু কাজের লোককে দিয়ে লুকিয়ে কিছু জিনিস কিনে আনে। তারপর সুন্দর করে রুমকে সাজায়। তারপর অনু সাওয়ার নিয়ে নিচে নামে। আজ অনুকে ভীষণ ফুরফুরে লাগছে। মুখে সবসময় হাসি লেগেই আছে। অনু একবার সুফায় বসছে তো একবার রান্না ঘরে যাচ্ছে। সময় যেন কাটছেই না। কখন আয়ান আসবে । অনু তাকে প্রপোজ করবে। এই সময়টাও না যেন যেতেই চাইছে না। আসলে অপেক্ষার সময় যেন কাটে না। এই অপেক্ষার সময় নানা চিন্তা মাথায় ঘুরপাক খায়। একজন মানুষ যখন তার ভালোবাসার মানুষটিকে প্রপোজ করতে যায় তখন তার মনে নানা ধরনের উত্তেজনা কাজ করে। আর সেই ভালোবাসার মানুষটি যখন নিজের স্বামী হয় তখন উত্তেজনাটা দ্বিগুণ হয়ে যায় । অনুও যে ব্যতিক্রম নয়।

/

এসব কথা ভাবতে ভাবতেই সন্ধ্যা হয়ে যায় । অনু নিজের রুমে গিয়ে দরজা লাগিয়ে রাখে। এমন ভাবে লাগিয়ে রেখেছে যেন হালকা ধাক্কা দিলেই খুলে যায় । অনু বারবার ঘড়ির কাঁটার দিকে তাকাচ্ছে । সময় যত এগুচ্ছে অনুর মনে উত্তেজনা যেন বেড়েই চলেছে । হঠাৎ দরজার আওয়াজ শুনে অনুর মনটা ধুকধুক করে ওঠে। আয়ান দরজা খুলে ভিতরে ঢুকলো সাথে সাথে উপর থেকে কিছু ফুল আয়ানের মাথায় পড়লো। আয়ান তো অবাকের চরম সিমানায় পৌছালো । অনু আয়ানের সামনে হাঁটু গেড়ে বসে। কাঁপা কাঁপা হাতে ফুল দিয়ে প্রপোজ করতে যাবে তখনই লোডশেডিং হলো।🙄🙄। অনুর উত্তেজনা পূর্ণ মুখটা মুহুর্তেই রাগে পরিণত হলো। অনু রাগে বলতে লাগলো,,,,,,,

অনু— বালের কারেন্ট । সকাল থেকে তো একবারও লোডশেডিং হলো না। এখন মনে পড়লো লোডশেডিং করার। আমি তর কোন পাকা ধানে মই দিয়েছি বাবা। কতো রোমান্টিক উয়েদার ছিল। আমার স্বামীকে প্রপোজ করতে যাচ্ছিলাম । সবটা দিলো নষ্ট করে।

আয়ান অনুর এসব কথায় হাসবে না কাঁদবে বুঝতে পারছে না। তবে এটা ভেবে খুব খুশি হয়েছে যে অনু তাকে প্রপোজ করতে যাচ্ছিল । তারমানে অনুও তাকে ভালোবাসে। আয়ান তার ফোনের ফ্লাশ লাইট অন করে অনুকে বললো,,,,,,,

আয়ান— এবার করো।

অনু— কি।

আয়ান—- প্রপোজ।

অনু— আমি আর করতে পারবো না। আমি এখন মোডে নেই। এখন আপনি আমাকে প্রপোজ করবেন।

আয়ান—- না তুমিই করো। আমি ভালো মুডে আছি। একসেপ্ট করে ফেলবো। পরে যদি আমার মুড ঘুরে যায় ।(শয়তানি হেসে)

অনু— না। আপনি করবেন।that’s it.

আয়ান—- না। তুমি

অনু রাগে চলে যেতে নিলেই আয়ান অনুর হাত ধরে টান দিয়ে নিজের বুকের সাথে মিশিয়ে নেয় । আয়ান বলে,,,,

আয়ান—- কোথা থেকে শুরু করবো অনু বুঝতে পারছি না। আমি জীবনে কারো প্রেমে পড়িনি। সবসময়ই এসব এড়িয়ে চলতাম । কিন্তু হুট করে তোমার সাথে আমার বিয়েটা হয়ে যায় । বিয়েটা accidentally হলে ধীরে ধীরে তোমার প্রতি যেন দুর্বল হয়ে পড়লাম । একটা মায়া কাজ করতো। এই মায়া থেকে ভালোবাসার জন্ম নেয় । তোমার পাশে থাকা হুটহাট কিস করা আমায় যেন পাগল করে দিয়েছে। আমি তোমাকে সত্যিই ভালোবাসি অনু। তুমি কি জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত আমার পাশে থাকবে।

অনু—- আমি যে আপনাতেই পরিপূর্ণ মি: আয়ান। আপনি ছাড়া আমি নিজেকে কল্পনাও করতে পারি না। আমি আপনার পাশে সারা জীবন থাকতে চাই।

অনু আয়ানের বুকে মাথা রাখে। এ যেন সবচাইতে আনন্দঘন মুহুর্ত । ভালোবাসার মানুষকে ভালোবাসি বলতে পারার মধ্যে যে কতটুকু সুখ রয়েছে তা শুধু পরিপূর্ণ ভালোবাসা পাওয়া মানুষ গুলোই জানে। অনু আয়ানের বুক থেকে মাথা তুলে আয়ানের দিকে তাকায়। আয়ান অনুর ঠোঁটে আলতো ভাবে স্পর্শ করলো।সাথে সাথে কারেন্টের এন্ট্রি । অনু যেন লজ্জায় পড়ে যায় । অনু আয়ানের থেকে ছাড়িয়ে বলে,,,,

অনু— ফ্রেশ হয়ে আসুন আমি খাবার নিয়ে আসছি।

আয়ান— হুম ।

তারপর আয়ান যায় ফ্রেশ হতে যায় । অনু নিচে যায় আয়ানের জন্য খাবার আনতে। নিচে নামতেই অনু দেখলো আকাশ খুব চিন্তিত ভাবে বাড়িতে ঢুকেছে। আকাশকে দেখে মনে হচ্ছে খুব ঘাবড়ে আছে। অনু দেখলো আকাশ ফোনে যেন কাকে কি বলছে । অনু আকাশের পিছু নেয়। অনু শুনতে পায়,,,

আকাশ—- পুলিশ জেনে গেছে এসব।

অপাশ—;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;

আকাশ— আমি দেখছি। তরা সাবধানে থাকিস ।

অপাশ— ;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;

আকাশ— বাই।

অনু তাড়াতাড়ি করে এখান থেকে চলে আসে। অনু বুঝতে পারছে না বিষয়টি কি। অনু আয়ানের জন্য খাবার নিয়ে রুমে যায় । রুমে ঢুকে,,,,,,,,,,

চলবে,,,,,,,,,,,,,,