যদি আমার হতে পর্ব-১+২

0
1685

যদি আমার হতে🌹
পর্ব – ১
লেখিকা: সৈয়দা প্রীতি নাহার

সেই সকাল থেকে বাড়িতে হুলুস্থুল কান্ড চলছে। এমন এক অবস্থা যেনো আজই বিয়ে। ৯ টার দিকে ঘুম থেকে উঠে বিছানার ঠিক মাঝখানটায় বসেই আধঘন্টা পার করলো আদ্রিশা। মায়ের বকুনিতে বিছানা অগোছালো রেখেই ফ্রেশ হয়ে ব্রেকফাস্ট করতে বসেছে। অনেক্ষন চেয়ারে বসে থেকেও কারো কোনো হেলদোল না পাওয়ায় মেজাজ খারাপ হচ্ছে তার। পাত্র পক্ষ দেখতে আসছে! এতেই যদি বাড়ির এই হাল হয় বিয়েতে না জানি কি হবে! চেয়ার ছেড়ে দাঁড়িয়েই আচমকা চিৎকার করে বলতে লাগলো আদ্রিশা, ” কি হচ্ছে এসব মা!? আমাকে জোড় করে টেবিলে বসিয়ে তোমরা নিজেদের কাজ নিয়ে ব্যাস্ত! ব্রেকফাস্ট কি আজ পাবো না !?”

আদ্রিশার মা রুমানা আহমেদ ড্রয়িং রুমের সোফার কুশন কভার চেন্জ করছিলেন। মেয়ের কথায় একবার তার দিকে তাকিয়ে গম্ভীর কন্ঠে বললেন,” এতো বড় মেয়ে হয়েছো, এখনো নিজের খাবার নিজে নিতে শেখোনি? আজ যে ওরা তোমায় দেখতে আসছে কি বলবো আমি ওদের!? মেয়ে আমার কিচ্ছুটি করতে পারে না, দুপুরে ঘুম থেকে উঠে, রান্না করা তো দূর নিজের হাতে এক গ্লাস পানিও নেয় না! এসব বলবো বুঝি?”

আদ্রিশা বুঝলো মা খুব রেগে আছেন। রেগে গেলেই একমাত্র তিনি আদ্রিশার সাথে ‘তুমি’ করে কথা বলেন। এখন আর রাগ দেখানো মোটেও চলবে না তার। তাই একটা গ্লাসে পানি ঢেলে মায়ের সামনে গিয়ে দাড়ালো। রুমানা আহমেদ ভ্রু কুঁচকে মেয়েকে দেখছেন আর ভাবছেন কি করতে চলেছে ও। আদ্রিশা পানির গ্লাস মুখের সামনে নিয়ে বললো,” ওদের বলো তোমার মেয়ে নিজ হাতে এক গ্লাস পানি ভরে খেয়েছে!” কথাটা বলেই ঢকঢক করে গ্লাসভর্তি পানি খেয়ে খালি গ্লাস টেবিলে রাখলো। পেছন ফিরে মায়ের দিকে তাকেয়ে আবারও বললো, “ও হ্যাঁ, ওদের এটাও বলো যে আমি দুপুরে নয় বরং বিকেলে ঘুম থেকে উঠি। এতে দুটো জিনিস ভালো হবে।”

রুমানা আহমেদ জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে রয়েছেন। আদ্রিশা মায়ের দিকে এগিয়ে এসে দুষ্টু হেসে বললো, ” এক হলো পাত্রপক্ষ আমায় পছন্দ করবে না , বিয়েটাও হবে না। আর দুই আমায় কোনো কাঠ খড়ও পোড়াতে হবে না!” রুমানা আহমেদ অত্যন্ত রাগী চেহারা নিয়ে মেয়েকে কিছু বলার আগেই সে এক দৌড়ে নিজের ঘরে ঢুকে দরজা লাগিয়ে দিলো। কারন সে ভালো করেই জানে মা এখন ভাষণ শুরু করবে। মায়ের ভাষণ বড় বড় নেতাদেরও হার মানায় আর ওতো ছোট্ট একটা মেয়ে! এখন দরজা খোলা মানে প্রতিপক্ষের কাছে হেরে গিয়ে আত্মসমর্পণ করা, যা আদ্রিশা কখনোই করবে না। এই একটা বিষয়ে মায়ের কাছে সবসময় জিতে যায় আদ্রিশা। যখনই উনি ভাষণ তথা মেয়ের উপর রাগ ঝাড়তে চান তখনই ওনার গুণধর মেয়ে নিজের ঘরে দরজা দেয়। কিছুক্ষন একা একা বক বক করে শেষে নিজের হার শিকার করে চুপ করে যান রুমানা আহমেদ। কিন্তু আজকে মা একটু বেশিই উপদেশ দেয়ার মোডে আছেন বলেই মনে হচ্ছে আদ্রিশার। যা আজ সারাদিন চলবে। তাই বিকেলের আগে দরজা খোলার সাহস বা ইচ্ছে কোনোটাই তার নেই। কিন্তু খিদে তো এখনি পেয়ে গেলো। এখন অব্দি একগ্লাস পানি ছাড়া কিছুই জোটে নি তার। সারাদিনে কিছু জোটবে বলে মনে হচ্ছে না। মুখ ফুলিয়ে কাঁথা জরিয়ে বিছানায় শুয়ে পরলো আবার। মায়ের জন্য ঘুমটাও পুরো হয়নি তার। ঘুমিয়ে পরলে খিদেও পাবে না হয়তো।

__________

দুপুর গরিয়ে বিকেল হতে চললো এদিকে আদ্রিশা এখনো দরজা খোলে নি। একেতো সারাদিন কিছু খায় নি তার উপর পাত্রপক্ষ আর কিছুক্ষনের মধ্যে চলে আসবে। রুমানা আহমেদ বেশ কয়েকবার মেয়ের দরজায় কড়া নাড়লেন কিন্তু মেয়ের কোনো আওয়াজ পেলেন না। আদ্রিশা ঠিক আছে কি না, কি করছে, খিদে পাচ্ছে এসব ভেবে ভেবেই অস্থির হচ্ছেন বাবা হামিদুর আহমেদ। বড় ছেলে আদ্র আহমেদের স্ত্রী জেসমিন কে ডেকে বললেন যেনো তারাতারি আদ্রিশার দরজা খোলা হয়। দরজা লক করা থাকলে অবশ্য এতোক্ষনে খোলা যেতো কিন্তু মেয়ে তো তার দরজার ছিটখিনি আটকে বসে আছে। পাত্রপক্ষ এসে গেলে মেয়েকে কি বেসে ওদের সামনে নেবেন, ওদের কি বলবেন, এসব ভাবনার অন্ত নেই মায়ের। এপাশ থেকে অপাশে ছুটোছুটি করে চলেছেন রীতিমতো। গৃহ পরিচারিকাকে সেই কখন বলেছিলেন বাজার থেকে গাজর আনতে। এখনো আসার নাম নেই তার। সব কাজ সামলে হঠাৎই খেয়াল হলো সালাদের জন্য রাখা গাজর উধাও। অথচ তিনি এক কেজি গাজর আনিয়েছিলেন। রান্নায় ব্যবহারের পরও কয়েকটা রয়ে গেছিলো কিন্তু এখন নেই। কি ঝামেলা। হামিদুর আহমেদ বেশ কয়েকবার ধমকালেন রুমানা আহমেদ কে এভাবে ছুটোছুটি করার জন্য। কিন্তু তিনি খান্ত হন নি।

সহ্যের সীমা অতিক্রম হওয়ার আগেই আদ্রিশা দরজা খোলে বেরিয়ে সোজা ড্রয়িং রুমে গিয়ে টিভি ছেড়ে সোফায় বসে পরলো। এমন ভাব করছে যেনো সব স্বাভাবিক, কিছুই হয় নি। আর এদিকে যে বাবা, মা, ভাই, ভাবি সবাই দরজা ধাক্কাতে ধাক্কাতে ক্লান্ত তার সেদিকে কোনো হুশই নেই।।

মা দৌড়ে ওর ঘরে উকি দিয়েই অসহায় মুখ করে স্বামীকে বললেন, ” সেই সকাল থেকে তোমার মেয়ে দোর দিয়ে বসে ছিলো! বলি ঘর গোছাতে পারলো না। বিছানা এখনো অগছালো। পাত্র যদি মেয়ের সাথে আলাদা কথা বলতে চায় কোথায় গিয়ে কথা বলবে শুনি!” আদ্রিশা পরিপূর্ণ গোছালো না হলেও অগোছালো নয়। বরং নিজের ঘর আর পছন্দের জিনিস সব সময় নিজেই গোছায়। কিন্তু যখনই কেউ ওকে দেখতে আসে তখনই এরকম অগোছালো করে রাখে। বিয়ে করাতে কোনো সমস্যা নেই ওর। যতো সমস্যা তা হলো একদল লোকের সামনে সং সেজে বসে থাকা। এই বিষয়টাতেই ঘোর আপত্তি তার। যেনো পাত্র পক্ষ নিজেই বিয়ে ভেঙে দেয় তাই তার এতো প্রচেষ্টা। কখনো নিজেকে বাঁচাল প্রমাণ করে তো কখনো বেয়াদবের খাতায় নাম খেলায়।।

মায়ের কথায় বাবা হামিদুর আহমেদ কোনো ভ্রুক্ষেপ না করে বৌমা জেসমিনকে বললেন টেবিলে খাবার সাজাতে। মেয়ের জন্য কারোরই খাওয়া হয় নি। মেহমান আসার আগেই খেয়ে মেয়েকে তৈরি করাতে হবে। জেসমিন টেবিলে খাবার সাজিয়ে সবাইকে বসতে বলতেই আদ্রিশা বললো ওর খিদে নেই। জেসমিন বললো, ” আদু , খাবারের উপর কেনো রাগ ঝাড়ছো! দেখি এসো তো খেয়ে নাও।” আদ্রিশা টিভি বন্ধ করে উঠে দাড়িয়ে বললো, ” ভাবি আমার সত্যিই খিধে নেই। এত্তোগুলো গাজর খেলে কি কারো খিধে থাকে বলো।”

মেয়ের কথা শুনে রুমানা আহমেদের চোখ বেড়িয়ে আসার উপক্রম। তার মানে ওতোগুলো গাজর আদ্রিশাই খেয়েছে! কিন্তু দরজা তো ও নিজেই বন্ধ করেছিলো খুললো কখন!সবাই তো দরজার বাইরেই ছিলো। দরজা লাগানোর আগে সাথে নেয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই কারন ও ঘরে ঢুকার পরই উনি রান্না করতে লেগেছেন আর তখনও গাজর ছিলো। তাহলে ওকে গাজর দিলো কে??

চলবে,,,,,,,

যদি আমার হতে🌹
পর্ব – ২
লেখিকা : সৈয়দা প্রীতি নাহার

আদ্রিশার বাবাও বেশ ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেছেন। এতোক্ষন স্ত্রীকে কথা শুনাচ্ছিলেন মেয়ে কিছু খায় নি বলে আর এখন জানতে পারলেন মেয়ে তার খেয়েদেয়ে নিশ্চিন্ত। রুমানা আহমেদ আদ্রিশার দিকে তাকিয়ে বললেন, ” কখন খেলি তুই? রান্নাঘরে তো তোকে যেতে দেখিনি! দরজাও তো খুলতে দেখলাম না!”
আদ্রিশা বললো, ” কাম অন মা! খাবার আনার জন্য আমাকেই কি রান্নাঘরে যেতে হবে বলো!?” রুমানা আহমেদ জেসমিনের দিকে দৃষ্টি দিলেন। বেচারি চোখ বড় বড় করে আদ্রিশাকে বললো, ” আদু, আমি কখন তোকে খাবার দিলাম! সারাক্ষন তো ঘরের কাজেই বিজি ছিলাম। ” সবার দিকে তাকিয়ে আবার বললো, ” কিছুক্ষন আগেই না আপনাদের সাথে এসে দাড়ালাম বাবা। আমি তো জানতাম ও না যে আদু নিজেকে ঘরে বন্ধ করে রেখেছে। কি গো তুমি ই তো আমায় ডেকেছো বলছো না যে কিছু!” আদ্র বউয়ের দিকে তাকিয়ে চোখের ইশারায় শান্ত হতে বললো।

জেসমিনের এই এক সমস্যা। যখন কিছু অযাচিত হয় তখনই সে হাইপার হয়ে যায়। নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে উঠে পরে লাগে। আদ্র তার মাকে বউয়ের হয়ে কিছু বলবে তার আগেই মা বললেন, ” আহ,,,,জেসমিন! আমি কি বলেছি তুমি তোমার ননদকে সাহায্য করছো বা তোমাকে কি কিছু খারাপ করেছো? আর দিলেই বা কি। এতো হাইপার হয়ো না। আর আদু , তুই আমাদের এতো চিন্তায় রেখে খেয়েদেয়ে আরাম করছিলি!! ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে কথা না বলে সোজা সাপ্টা বল কে দিলো খাবার নিয়ে!” আদ্রিশা কিছু বলতে নিলেই আদ্র আর জেসমিনের ঘরের দরজা খুলে গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে এলো তাদের একমাত্র মেয়ে আরিয়া। প্রায় দু ঘন্টা আগে মেয়েকে গোসল করিয়ে খাবার খাইয়ে বিছানায় শুইয়ে দিয়ে এসেছিলো জেসমিন। ঘুম থেকে জেগেই মা কে না পেয়ে হয়তো বেরিয়েছে ঘর থেকে। জেসমিন এগিয়ে মেয়েকে কোলে নিয়ে জিগ্যেস করলো, ” কি হয়েছে মা! উঠে পরলে যে? রাতেও তো ঠিকমতো ঘুমাও নি।” রুমানা আহমেদ বললেন, ” ওর হয়তো খিদে পেয়েছে। আরু এদিকে আসো তো দাদির কাছে! আমি খাইয়ে দিচ্ছি!” আরিয়া মায়ের কোল থেকে নেমে তার দাদির কাছে দাড়িয়ে বললো, ” আমার খিদে পায় নি তো। ঘুম চলে গেছে।” মুখ ঘুরিয়ে আদ্রিশা কে বললো, ” ফুপ্পি আমি তোমার ল্যাপটপে গেইমস খেলবো চলো না। তুমি তো প্রমিজ করে ছিলে ।” আদ্র মেয়ের কথা শুনে খাবার রেখে আদ্রিশা কে জিগ্যস করলো, ” কিসের প্রমিজ আদু। আরু তোর ল্যাপটপে কেনো গেইমস খেলতে চাইছে!? এই এক মিনিট এক মিনিট তুই কি আমার মেয়েকে দিয়েই রান্নাঘর থেকে গাজর আনিয়েছিস না কি! গেইমস এর লোভ দেখিয়ে!” আদ্রিশা মাথা নেড়ে সম্মতি জানাতেই আদ্র পানিতে চুমুক দিয়ে বললো, ” কি সাংঘাতিক!? আমার ঐ টুকুন নিরীহ বাচ্চা মেয়েটাকে দিয়ে কুকর্ম করাচ্ছিস তুই! ”

আদ্রিশা ভাইজি কে কোলে তুলে বললো, ” আজব! কুকর্ম কেনো হতে যাবে? আর আমি কি তোর মেয়েকে জোড় করেছি না কি? শুধু বললাম আমার খিদে পেয়েছে রান্নাঘর থেকে খাওয়ার জন্য কিছু নিয়ে আয়। তোর মেয়ে তো আমার থেকেও এক কাঠি ওপরে বলে কি না কিছু না দিলে ও আমায় সাহায্য করবে না। ভাবতে পারছিস! কি চালাক! তারপর ল্যাপটপের ঐ কেকের গেইমস খেলার ঘোষ নিয়ে গাজর এনেছে আমার জন্য। বাধ্য হয়ে শেষ মেষ ঐ গাজর খেয়েই পেট ভরলাম। তোদের কি আর আমার জন্য সময় আছে!?”
হামিদুর আহমেদ নাতনির দিকে তাকিয়ে বললেন, ” আরু, তুমি রান্নাঘরে কখন গেছিলে?” আরিয়া হেসে বললো, ” ঐতো বাবাই যখন মাম কে রুমে নিয়ে গেছিলো আর দাদি নামাজ পড়ছিলো তখনই তো গেছিলাম!” আদ্র ভিষম খেয়ে তারাহুরো করে চেয়ার থেকে উঠে নিজের ঘরের দিকে গেলো। আর এদিকে জেসমিন আবারও হাইপার হয়ে দৌড়ে রান্নাঘরে ছুটলো। আদ্রিজা খানিক হেসে আরিয়া কে নিয়ে নিজের ঘরে এলো। হামিদুর আহমেদ আর রুমানা আহমেদ একে অপরের দিকে তাকিয়ে খাওয়ায় মনোযোগ দিলেন।
___________

আদ্রিশাকে নীল রঙের শাড়ি পড়িয়ে ঘরে বসিয়ে এসেছে জেসমিন। পাত্রপক্ষ এসেছে একটু আগেই। আদ্রিশা কি করে বিয়েটা ভাঙবে সেই ফন্দি আটছে। জেসমিন আদ্রিশাকে নিতে এসে দেখে সে গভীর ভাবনায় মগ্ন । জেসমিন আদ্রিশার কাধে হাত দিয়ে বললো, ” প্লীজ আদু, এবার আর কিছু উল্টো পাল্টা করিস না। ওদের অপমান যেনো না হয়। বাবা মায়ের সম্মানের কথাটা একটু ভাব! তোর পছন্দ না হলে তো বিয়েটা এমনিতেও হবে না বল! আর ওরা তো আজ আমাদের গেস্ট এমন কিছু করিস না যাতে ওদের কাছে বাবা মায়ের মাথা নিচু হয়।” এসবের বলার কারনটা আদ্রিশা জানে। এর আগের বার যারা দেখতে এসেছিলো তাদের কি অপমানটাই না সে করেছিলো! বাবা মার মুখটাও ছোট হয়ে গেছিলো সেদিন। যে মেয়ে কখনো মা বাবার অবাধ্য হয় নি সেই মেয়েই কি না নিজের পরিবারের সম্মান মাটিতে মিশিয়েছে পাত্রপক্ষের সামনে। রুমানা আহমেদ বেশ অবাকই হয়েছিলেন মেয়ের কর্মকান্ডে। তবে এবার আদ্রিশা এমন কিছু করবে না যাতে তার বাবা মায়ের কষ্ট হয়, ওর মাথায় অন্য প্ল্যান চলছে। যার ফলে বিয়েও হবে না আর মান সম্মান ও বেঁচে যাবে।।

শওকত শাহ, স্ত্রী মালিহা ইয়াসমিন আর একমাত্র পুত্র মাহবুব শাহ বসে আছেন ড্রয়িং রুমের সোফায়। মাহবুবের ডাক নাম মুগ্ধ । ফর্সা, লম্বা, হ্যান্ডসাম , ভদ্র ছেলেদের আওতায় পরে সে। নিজেদের বিজন্যাস এর হাল ধরেছে মুগ্ধ।কোম্পানিতে জয়েন করেছে কয়েকদিন আগেই। ছেলেকে খুব পছন্দ হলো আদ্রিশার বাবা মায়ের। জেসমিন আদ্রিশাকে নিয়ে পাত্রপক্ষের সামনে আসতেই মালিহা ইয়াসমিন অবাক চোখে তাকিয়ে রইলেন। মেয়েকে বেশ মনে ধরেছে তার। অবশ্য এখন অব্দি দেখা সকল মেয়েকেই তার পছন্দ হয়েছে কিন্তু বাধ সাধল মুগ্ধ নিজে। প্রত্যেকবার মেয়েদের রিজেক্ট করে চলেছে সে। যার কারন এখনো অজানা মালিহা ইয়াসমিন আর শওকত শাহের কাছে। তবে এবার মালিহা মনে মনে দোয়া করছেন যেনো ছেলেটাও বিয়ের জন্য রাজি হয়ে যায়। এবার আর পাত্রী হাত ছারা করতে রাজি নন তিনি। ওনার মনে হচ্ছে এই মেয়ের সাথে বিয়ে না হলে আর কারো সাথে বিয়ে হওয়ার কোনো আশংকাই নেই।

আদ্রিশা ওখানে উপস্থিত মানুষদের দেখে বেশ অবাক হলো। মাত্র তিনজন এসেছে! এর আগের বার যারা এসেছিলো ওরা তো পুরো পল্টন সাথে এনেছিলো বোধ হয়। ছেলে, তার বাবা মা, ভাই, ফুফু, চাচা, চাচি আরও কে কে যেনো এসেছিলো! তবে এবার শুধু পাত্র আর তার বাবা মা। কিছুটা সস্তির নিশ্বাস ফেললো আদ্রিশা। মনে হচ্ছে এদের তাড়াতে বেশি বেগ পেতে হবে না। জেসমিনের খোঁচায় নিজের ভাবনার জগত থেকে বেরিয়ে এলো আদ্রিশা। মায়ের ইশারায় ঝটপট সালাম করে নিলো সবাইকে। মালিহা ইয়াসমিন আদ্রিশা কে বসতে বললেন। রুমানা আহমেদ ভাবছেন এবার না মেয়েটা আবার কিছু করে বসে। মনে মনে আল্লাহ্ কে ডাকছেন তিনি। আর মনে প্রাণে চাইছেন যেনো ভালোয় ভালোয় সব মিটে যায়।।

চলবে,,,,,,,