যদি আমার হতে🌹
পর্ব – ২৩
লেখিকা : সৈয়দা প্রীতি নাহার
সন্ধ্যের দিকে রিসেপশন! তাই বিকেল থেকেই সাজগোজ শুরু হয়ে গেছে। মুগ্ধ আর আদ্রিশার সারাদিনে তেমন কথা হয় নি। সকালে মুগ্ধর খাপছাড়া কথা বার্তার পর একদফা ঝগড়া হয়েছে তাদের। তারপর থেকে আত্মীয় স্বজন আর অথিতিদের জন্য মুগ্ধ আদ্রিশা সামনা সামনি হয় নি। মুগ্ধ তার বন্ধু বান্ধবদের সাথে ঘুরোঘুরি করেছে, আর আদ্রিশা পুতুলের মতো বসে ছিলো ড্রয়িং রুমে। এখন তাকে ঘরেই সাজানো হচ্ছে। বেগুনি রঙের গর্জিয়াস শাড়ি, গয়না, আর ভারি মেক আপে তাকে অপরুপা লাগছে! সাজানোর মুহুর্তে আদ্রিশা খেয়াল করলো, মুগ্ধর কাজিনদের মধ্যে অনেকেই তাকে এভোয়েড করছে, তাকাচ্ছে না ঠিকমতো! এতে আদ্রিশা মনে মনে কষ্ট পায়। অনেক্ষন ধরে চুপ থেকেও এবার কথা না বলে পারলো না। মুগ্ধর খালাতো বোন তানহাকে বললো,
“আপু, আপনারা আমায় মেনে নিতে পারেন নি না? আমি জানি আপনারা কি ভাবছেন আমাকে!কিন্তু কাউকে কষ্ট দেয়ার কোনো ইনটেনসন ছিলো না আমার!”
তানহা হাতের ফুলের ডালা নিচে রেখে বললো, “আদ্রিশা, আমাদের মানা, না মানা কিছুই প্রয়োজনিয় নয় এখানে। তোমায় আমাদের সাথে নয় থাকতে হবে এই পরিবারের সাথে। আমরা তো অতিথি মাত্র। বছরে হাতেগুনা দু এক বার আসা যাওয়া হবে, বাকি তো দেখা সাক্ষাতও হবে না! আমাদের চিন্তা ভাবনা নিয়ে ভাবার কোনো কথা নয়!”
আদ্রিশা মাথা নুয়ালো। উপস্থিত বাকি বোনেরাও মাথা নিচু করে তানহাকে দেখছে। নতুন বউ এর কথার উত্তরে এভাবে তানহা কথা গুলো বলতে পারে তা তাদের ধারনার বাইরে ছিলো।বরাবরই সান্ত স্বভাবের মেয়ে হয়ে, বয়সে বড় ভাইয়ের বউকে গম্ভীর মুখে কথা শুনিয়ে অনেকটা লজ্জা পেলো তানহা । আদ্রিশার পাশে বসে অন্যদিকে তাকিয়ে ধীর আওয়াজে বললো,
“জানোতো , আমারও প্রেমের বিয়ে! কিন্তু ভালোবাসার কথা ভেবে পরিবারকে ছাড়ার চিন্তাও করতে পারি নি! বাবা মাকে ভিষন ভয় পেতাম, তাই আমার সম্পর্কের কথা মুগ্ধ ভাইকে বলেছিলাম। খালাতো ভাই হলে কি হবে, আপন বোনের মতোই খেয়াল রাখতো, ভালোবাসতো আমায়। তাই আমার পরিবারের সাথে কথা বলেই, রমিলের সাথে বিয়েটা হয়েছে! তুমিও তো এমন কিছু করতে পারতে! মানছি, ভাইকে বলার পরও সাহায্য পাও নি, কিন্তু তোমার নিজের ভাই! তাকেও কি ভরসা করতে পারো নি?”
আদ্রিশা তানহার দিকে তাকিয়ে বললো, “ভরসা! তুমি তো ভালোবাসার মানেটা জানো, বলোতো , ভালোবাসার মানুষকে ছেড়ে থাকার যন্ত্রণা, ভয় তোমায় গ্রাস করে নি? আশেপাশের ঘটে যাওয়া সবকিছুই তখন অদৃশ্য! শুধু ঐ একটা মানুষই মন, অন্তর সবকিছুতে ছেয়ে থাকে! ওর বলা প্রতিটি কাজ, কথাকে সত্যি ভাবা কি ভুল? হুম, তবু আমি বলবো, আমি ভুল করেছি! নিজের দোষ স্বীকার করার সাহস আমার আছে। কিন্তু তোমাদের সবার আমার থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়া, নতুন পরিবেশে প্রত্যেক পদে নিজেকে অসহায় মনে হওয়ার পরও স্বাভাবিক থাকা অসম্ভব!”
তানহা একটু নড়ে চড়ে বসলো। আদ্রিশার হাতের উপর হাত রেখে বললো, ” তোমার বিশ্বাস ভুল ছিলো না শুধু যাকে বিশ্বাস করেছিলে সে ভুল ছিলো!” কিছুক্ষন থেমে আবারও বললো,” ওসব বাদ দাও। যা হওয়ার হয়ে গেছে! এখন চেষ্টা করো এই পরিবারকে, মুগ্ধ ভাইকে আপন করার। সুখে থাকার চেষ্টা করো যেনো কেউ তোমার সেই ভুলটা না খুজে! কারো চোখে যেনো অপরাধ টা না ভাসে! যেমন তোমার সময় লাগবে সব কিছু মানিয়ে নিতে তেমনি আমাদেরও সময়ের প্রয়োজন আদ্রিশা! এই যে দেখো না, বয়সে আমার থেকে ছোট তুমি তাই নাম ধরেই ডাকছি, অথচ সম্পর্কের দিক থেকে কিন্তু তোমায় ভাবি বলে ডাকা উচিত। তা না করে আমিও চেষ্টা করছি তোমার সাথে সম্পর্ক গড়তে!” আদ্রিশার ঠোঁটে হাসি ফুটলো! স্নেহা, মালিহা, রিয়া, মাইশা ওরাও সবাই খানিক হাসলো। কঠিন হলেও সবাই আদ্রিশার সাথে সখ্যতা করার চেষ্টা করছে!
_____________
রিসেপশনের ভ্যানু মুগ্ধর বাড়িতেই হয়েছে। অনেক অতিথি দের ভীড়ে আদ্রিশা তার পরিবারকে খুঁজছে! স্টেজে হাজারও পোজ দিয়ে বর বউকে ছবি তুলতে হচ্ছে! ইচ্ছে না থাকা সত্ত্বেও সবার সামনে স্বামী-স্ত্রীর নাটক করতে হচ্ছে তাদের । বিয়ের রাতেই আদ্রিশা কথা দিয়েছিলো মুগ্ধকে, নিজের সম্পর্ক বাঁচাতে পারে নি তবে মুগ্ধকে তার ভালোবাসা পেতে সাহায্য করবে। ঠিক যেমন মুগ্ধ ভেবেছিলো তেমনি হবে সব। তফাত শুধু এতোটুকুই যে, মুগ্ধ তিথিকে পাবে আর আদ্রিশা একা হয়ে যাবে! স্টেজে দাড়িয়ে দরজার দিকে তাকাচ্ছে আদ্রিশা। মুখ ভার করে সচেতন চোখে এদিক ওদিক তাকাতেই আদ্রদের দেখা পেলো আদ্রিশা। স্টেজের দিকে এগুচ্ছেন, বাবা ,মা ,আদ্র, জেসমিন, আরিয়া আর আদ্রিশার প্রানের বন্ধুরা। এক প্রকার ছুটেই ওদের জাপটে ধরে কান্নায় ভেঙে পরে আদ্রিশা। আদ্র তার মাথায় হাত বুলিয়ে বলে, “আদু, কাঁদিস না প্লীজ! এমনিতেই এই সাজে তোকে পেত্নীর মতো লাগছে, কাঁদলে পেত্নী মেক্স প্রো লাগবে!” আদ্রর কথা শুনে আদ্রিশা ফিক করে হেসে দিলো।
অনুষ্ঠান শেষের আগেই আদ্ররা বাড়ি ফিরে গেছে। আদ্রিশা আর মুগ্ধ অনুষ্ঠান শেষের পর ভ্যানু থেকেই আদ্রিশাদের বাড়ি যাবে। বাড়িতে তাদের জন্য আপ্যায়ন করার আয়োজন চলছে । দু দিন ধরে আদ্রিশার মুখে হাসি ফুটে নি। এখন বাবার বাড়ি যাওয়ার আনন্দে খুশি যেনো ধরছেই না তার। গাড়িতে উঠেই বার বার সামনের দিকে দেখছে সে। প্রতিক্ষার শেষ নেই তার! বাড়ির কাছে গাড়ি আসতেই মুগ্ধকে ঝাকিয়ে বাচ্চাদের মতো বলতে লাগলো ,
“বাড়ি এসে গেছি! ঐ যে ঐ রাস্তাটাই তো! আর একটু সময় লাগবে বেশি না!”
আদ্রিশার এমন বাচ্চামো তে হেসে ফেলে মুগ্ধ। মাথা হেলিয়ে বলে, “আমি তো আপনার বাড়ি চিনি আদ্রিশা!”
ততক্ষনাত আদ্রিশা মুগ্ধর হাত ছেড়ে ভেঙচি কেটে মুখ ফুলিয়ে অন্যদিকে ফিরে গেলো। কিন্তু তার এই মুখ ফুলানো বেশিক্ষনের জন্য ছিলো না। ব্রেক কষতেই, লাফিয়ে উঠলো সে। মুগ্ধ খানিক চমকালো আদ্রিশার কান্ডে। আদ্রিশা সেসব খেয়াল না করেই মুগ্ধকে ঠেলে বাইরে বের করতে উদ্যোত হলো। মুগ্ধ আদ্রিশার হাত ধরে বললো, “আস্তে! এসেই তো পরেছেন । এতো লাফাচ্ছেন কেনো?”
আদ্রিশা মুগ্ধর কথার জবাবে বললো, “নামবো তো! সরুন!”
মুগ্ধ দরজা খুলে বাইরে এলো। আদ্রিশাও চটপট নেমে গেলো। দৌড় দিতে চাইলেই মুগ্ধ হাত ধরে কাছে টেনে আনলো তাকে। হাসার চেষ্টা করে স্লো ভয়েজে কানে কানে বললো, “আপনার বিয়ে হয়ে গেছে আদ্রিশা! নতুন বউ এভাবে লাফালাফি করে না কি? শ্বশুড় বাড়ি হোক কি বাপের বাড়ি, সংযত করুন নিজেকে। আপনার পরিবার পরিজন ছাড়াও অনেকে আছেন! আমার বাড়িতে যেভাবে প্রবেশ করেছেন সেভাবেই নিজের বাড়িতে প্রবেশ করুন। গট ইট!?”
আদ্রিশার রাগ লাগলো মুগ্ধর কথায়। নিজের বাড়িতে আপনজনদের সামনেও এখন নাটক করতে হবে নাকি? বিয়ে হয়েছে বলেই কি , সব অভ্যাস ছেড়ে স্টার জলসার নায়িকাদের মতো পারফেক্ট বধু সাজতে হবে? শ্বশুড় বাড়ি নাহয় মানা যায়, অপরিচিত জায়গা! কিন্তু নিজের ঘরেও এখন বুঝে শুনে চলতে হবে? এখন কি আর বাবার মেয়ে, ভাইয়ার বোন নয়? শুধুই কি মুগ্ধর স্ত্রী? ডিভোর্স হওয়ার পরও কি এভাবে সংযত করতে হবে নিজেকে? আদ্রিশা ভাবলো, পরে সময় করে মুগ্ধকে জিগ্যেস করতে হবে!
চলবে,,,,,,,
যদি আমার হতে🌹
পর্ব – ২৪
লেখিকা : সৈয়দা প্রীতি নাহার
নিজের বাড়িতে আসার পর থেকেই বেশ খুশি আছে আদ্রিশা। শুধু একটা দিনের ব্যবধানে মনে হচ্ছে কত বছর দূরে ছিলো তার পরিবার থেকে! যদিও মা রুমানা আহমেদ কিছুটা রাগান্বিত ছিলেন, তবে আদ্রিশার বাচ্চামো আর চোখের পানি তার মন গলিয়ে দিলো। মুগ্ধ অবাক চোখে আদ্রিশাকে দেখছে। প্রথম দিন আদ্রিশাকে দেখার পর আর কখনোই তাকে এতোটা খুশি দেখেনি মুগ্ধ! মুগ্ধর কথায় লাফালাফি করা বন্ধ করলেও, নতুন বউয়ের মতো থাকছে না সে। আগের আদ্রিশার মতোই হেসে খেলে চলেছে! হুটহাট সোফায় বসে টিভি ছেড়ে দিচ্ছে, তো আরিয়ার সাথে দৌড়াদৌড়ি করছে! আদ্রর সাথে মারামারিও লেগে গেছে এই কিছু সময়ের মধ্যে। তারপর আবার খিলখিল করে হেসে উঠছে। সানা বেগম মুগ ভেঙিয়ে চলেছেন! তার এসব আদিখ্যেতা সহ্য হচ্ছে না। কাল বিয়ে হওয়া মেয়ে আজ খুশিতে আটখানা হচ্ছে। আর তার পরিবারের কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই! গত দিনের করা কাজ এক নিমিষেই কেউ ভুলে যায় না কি? রুমানা আহমেদের তো উচিত ছিলো মেয়েকে কিছু কড়া কথা শুনানো। আর খালা, তিনিও বা মেনে নিলেন সব! অসহ্য লাগছে তার কাছে এসব!!
এদিকে, মুগ্ধ আর আদ্রিশার সাথে ফিরা যাত্রায় স্নিগ্ধও এসেছিলো! তবে এখন তার নিজেকে অসহায় লাগছে! এখানে আসার মূল কারন ছিলো রুহি! স্নিগ্ধ ভেবেছিলো আদ্রিশার জন্য হয়তো রুহিও থাকবে এ বাড়িতে। কিন্তু হলো তার উল্টো। বিয়ের দিন রুহির সাথে খুনশুটি তো দূর ঠিকমতো কথাও বলতে পারে নি। যার জন্য এতো সাজগোজ করেছিলো সে তাকে লক্ষ করেছে কি না তাও জানে স্নিগ্ধ! রুহির থেকে নাম্বারটাও তো নিতে পারতো! কিন্তু তার তো মনেও ছিলো না! ইশশ,,, আজও কথা বলতে পারে নি স্নিগ্ধ। যতবার রুহির সাথে চোখাচোখি হচ্ছিলো ততবারই খেপাচ্ছিলো স্নিগ্ধ! আর রুহি এমন ভাব করছিলো যেনো এই পৃথিবীতে স্নিগ্ধ বলে কেউ নেই, কিছুই নেই! দেখেও না দেখার ভান করছিলো রুহি! এ নিয়ে আক্ষেপের শেষ নেই স্নিগ্ধর! ও ভাবছে, রুহি কি কিছু ফিল করে তাকে নিয়ে? না কি এসব ফিলিংস তার একার? আবার, ভাবছে কোন ফিলিংসের কথা বলছে! ও তো শুধু রুহির সাথে মজা করে! বেয়ানের সাথে তো এসব একটু আধটু চলেই। আচ্ছা, ও কি কোনোভাবে ভালোবেসে ফেলেছে রুহিকে!? না কি, সবই ভালোলাগা!? নিজের মনের তাড়নায় করা কিছু দুষ্টুমি! আর ভাবতে পারে না স্নিগ্ধ। শুধু জানে, রুহির সাথে কথা বলা চাই তার! যেভাবেই হোক, একটু খানি কথা বলা চাই!
________________
ডিনার শেষে আদ্রিশার শোবার ঘরে এসেছে আদ্রিশা আর মুগ্ধ। বিপত্তি বাধলো, কে কোথায় ঘুমোবে তা নিয়ে। মুগ্ধর দাবি, বিয়ের রাতে আদ্রিশাকে খাটে শুতে দিয়ে, মহান কাজ করেছে সে। বিধায় এখন সে আদ্রিশার খাটে শোবে। অন্যদিকে আদ্রিশার দাবি, নিজে থেকে বিছানায় ঘুমোতে চায় নি সে। বরং মুগ্ধ জোড় করেই সোফায় শুয়ে তার জন্য বিছানা বরাদ্য করেছিলো! অনেক বিচার বিবেচনা করেও সমস্যার হাল পাওয়া গেলো না! শেষমেষ সিদ্ধান্ত হলো, দুজনই খাটে ঘুমাবে। মাঝখানে বর্ডার হিসাবে থাকবে আদ্রিশার কোল বালিশ। দুজন বিছানার দু পাশে শুয়েছে, আর শর্ত মোতাবেক কোলবালিশ দিয়ে বর্ডার বানিয়েছে। বেড সাইড ল্যাম শেড বন্ধ করার কিছুক্ষন পরই লাইট জ্বলে উঠলো। আদ্রিশা হকচকিয়ে উঠে বসে দেখলো মুগ্ধ পা ভাজ করে বসে আছে। কৌতুহল নিয়ে আদ্রিশা বললো,
“কি ব্যাপার, জেগে গেলেন যে? খাটে অসুবিধা হচ্ছে বুঝি?”
মুগ্ধ চোখ কটমট করে বললো, “আজ্ঞে না! যত্ত সমস্যা সব আপনি!”
আদ্রিশা মুখ হা করে বললো, “আমি!? আমি আবার কি করলাম?”
মুগ্ধ আদ্রিশার থেকে কোলবালিশ ছিনিয়ে নিয়ে বললো, “বালিশ টা কোথায় থাকার কথা ছিলো, আর আপনি কোথায় রেখেছেন?”
আদ্রিশা বালিশের দিকে তাকিয়ে বললো, “আমার কাছে কোথায়? ওটা তো আপনার হাতে!!”
মুগ্ধ স্থীর চোখে তাকিয়ে বললো, “এটা এখন আমার হাতে। একটু আগে আপনার কাছে ছিলো।”
আদ্রিশা ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে বললো, “তো? আমার ঘর, আমার বিছানা , আমার বালিশ আমার কাছে থাকলেই বা কি?”
মুগ্ধ বিরক্তি নিয়ে বালিশে ঘুষি মেরে বললো, “থাকলে কিছু না, কিন্তু শর্তানুযায়ি বালিশ মধ্যেখানটায় থাকবে! আর আপনি টানাহিছড়া করে নিজের কাছে রাখছেন! আমার অসুবিধা হচ্ছে।”
আদ্রিশা জিবে কামর দিয়ে চুল কানের পাশে গুজে বললো, “আমি বালিশ ছাড়া ঘুমোতে পারি না! আর বাই দ্যা ওয়ে, বালিশ মাঝখানে না থাকলে আমার সমস্যা হচ্ছে না আপনার কেনো হবে? আমি মেয়ে রিস্ক নিয়ে আপনার সাথে পাশাপাশি ঘুমোচ্ছি আর আপনি ধামরা ছেলে হয়ে মেয়েদের মতো বিহেভ করছেন!”
মুগ্ধ তেড়ে উঠে বললো, “হোয়াট? ধামরা ছেলে? আপনি কখন কোথায় কি বলেন, সেটা জানেন? বুঝেন? আর এই যে, আপনার সমস্যা না হলেও আমার আছে! আই ডোন্ট ট্রাস্ট ইউ!”
আদ্রিশা চোখ ছোট ছোট করে বললো, “মানে? কি বলতে চাইছেন আপনি?”
মুগ্ধ কলার তোলে গা ঝাড়া দিয়ে হাত দিয়ে চুল পেছনে ঠেলে দিলো। ভাব নিয়ে বললো, “বলতে চাইলাম যে, আমার মতো ইনোসেন্ট, ড্যাশিং , কিউট, হ্যান্ডসাম ছেলে আপনার পাশে শুয়েছে বলে যদি আপনার আসল রুপ বেরিয়ে আসে! না মানে, যদি আমার মতো নিষ্পাপ ভদ্র ছেলের উপর আপনি কখন হামলা করে বসেন কে জানে। আমার ওতো ইজ্জত আছে না কি!”
আদ্রিশা চোখ বড় বড় করে দাড়িয়ে গেলো। হাত মুঠো করে রাগ নিয়ন্ত্রণের বৃথা চেষ্টা করে মুগ্ধর কলার ধরে বললো, “কিহ!! হাও ডেয়ার ইউ? আপনার নিজের কর্মকান্ড আমার উপর চালাচ্ছেন কেনো? সত্যিটা তো এই যে, আমাকে একা পেয়ে আপনার পুরুষত্ব না বেরিয়ে আসে!হুহহ!”
মুগ্ধ পিছিয়ে গিয়ে ন্যাকা কান্না করে বললো, “আস্তাগফিরুল্লাহ!! দেখুন, আমার এখনো বয়স হয় নি! দয়া করে আমার ভার্জিনিটি নষ্ট করবেন না, আদ্রিশা! প্লিজ! আপনার পায়ে পরি! আমার তিথির কি হবে??”
আদ্রিশা ভ্যাবাচেকা খেয়ে কিছুক্ষন তাকিয়ে রইলো। মুগ্ধর কলার ছেড়ে দিয়ে বললো, “আনবিলিভেবল! ইউ আর যাস্ট ইম্পসিবল!” তারপর বিছানা থেকে বালিশ নিয়ে সোফায় শুয়ে পরলো। মুগ্ধ দাঁত কেলিয়ে হেসে বিছানায় শুয়ে পরলো। হাত বারিয়ে কোলবালিশ টা নিজের কাছে নিয়ে জড়িয়ে ধরে শুয়ে পরলো। মনে মনে এখনো হাসছে সে। আর যাই হোক, আদ্রিশাকে জ্বালাতে বেশ লাগে তার! কেমন জানি প্রশান্তি পায়!!
চলবে,,,,,,,,