শ্রাবন মেঘের বর্ষন পর্ব-০৫

0
348

#শ্রাবন_মেঘের_বর্ষন🍁
#লেখনীতে:#তানজিল_মীম
#পর্ব:০৫

“অবাক চোখে তাকিয়ে আছি আমি সামনের ছেলেটির দিকে’!!একদমই নতুন মনে হচ্ছে তাকে’!!এর আগে কখনো ভার্সিটিতে দেখেছি বলে মনে পরছে না আমার’!!তার ওপর এমন ভাবে মুখটা ঢাকা সাথে ব্লাক চশমা যাতে কিছুই বুঝতে পারছি না আমি এই মুহুর্তে’!!আমার ভাবনাগুলোর মাঝখানে বলে উঠল ছেলেটিঃ

—–“আর ইউ অলরাইট মিস…..

“এদিকে আমি এতটাই অবাক চোখে তাকিয়ে আছি ছেলেটির দিকে যে ছেলেটি কি বলছে আমার কান পর্যন্ত পৌঁছাচ্ছে না’!!ছেলেটি কিছুটা বিষ্ময় নিয়ে তাকালো আমার দিকে’!!তারপর আমার চোখের সামনে হাত নাড়িয়ে বলে উঠল সেঃ

—–“হ্যালো মিস….

“সঙ্গে সঙ্গে নিজের ভাবনাগুলো থেকে বেরিয়ে আসলাম আমি’!!লজ্জায় মাথা কাটা যাচ্ছে আমার’!!কেমন নির্লজ্জের মতো তাকিয়ে ছিলাম ছেলেটির দিকে’!!না জানি কি ভাবলো আমার সম্পর্কে’!!ছেলেটি আবারো বলে উঠলঃ

—–“আর ইউ অলরাইট মিস….

——“ইয়েস, থ্যাংকু ইউ….

——“ম্যানশন নট মিস এন্ড বি কেয়ারফুল…

“বলেই ছেলেটি চলে গেল’!!আর আমি এখনো হা হয়ে তাকিয়ে রইলাম ছেলেটির দিকে’!!যেন এই মাএ কি হলো সব মাথার উপর দিয়ে গেল আমার…

“হর্ঠাৎই কাঁধে হাত দিয়ে বলে উঠল রাএীঃ

——“ওই কোন দেশে হারিয়ে গেলি…..

——“হ্যাঁ না কই কোথাও না তো….

——“হুম চল ভাইয়াকে খুঁজে পেয়েছি….

——“পেয়েছিস…

——-“হুম ভাইয়া ক্যান্টিনে ভিতর বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিচ্ছে….

——“ওহ চল তাহলে….

________________________

“ক্যান্টিনের সামনে দাঁড়িয়ে আছি আমি’!!এখনও কিছুক্ষণ আগে হয়ে যাওয়া ঘটনাটা মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে না’!!শুধু একটা প্রশ্নই মাথায় ঘুরছেঃ

——-“আমি কি এর আগে কোথাও দেখেছি ওনাকে,কেমন একটু লাগলো যেন….

..

——-“তোরা এখানে কি করছিস….

“একটু রেগে বলে উঠল তিহান রাএীদের’!!
তিহানের কথা শুনে রাএী মিনমিন কন্ঠে বলে উঠলঃ

——“আসলে ভাইয়া….

——“কি এতো মিনমিন করছিস বলতো ক্যান্টিনটা কি ওনাদের একার নাকি আশ্চর্য কথা বার্তা…(নাফিয়া)

——-“কি বলতে চাইছিস তুই…

——-“এটা বলতে চাইছি আপনার জন্য এখানে আসি নি আমরা…

“কার জন্য আসছিস তা তো ভালোই বুঝতে পারছি(মনে মনে)!তিহান তার চুলগুলোতে হাত বুলিয়ে বলে উঠলঃ

——-“ওহ এই ব্যাপার…

——-“হুম এই ব্যাপার সরুন তো আমাদের ভিতরে ঢুকতে দিন’!!

“বলেই তিহান ভাইয়াকে টপকে চলে আসলাম আমরা’!!এদিকে তিহানও আর বেশি কিছু না ভেবে বেরিয়ে গেল ক্যান্টিন থেকে….

“এদিকে তিহান ভাইয়া যেতেই জোরে জোরে শ্বাস ফেললাম আমি’!!বাবা আর একটু হলেই বুঝে যেত ওনারে দেখতেই এখানে এসেছি…

——–“ভালোই তো কথা বললি রে…(রাএী)

——–“আমার তো প্রথমে বিশ্বাসই হচ্ছিল না তুই বলছিলি(মিতু)

——” 😁😁😁

“তারপর তিনজন মিলে গল্প শুরু করে দিলাম!

||

“ভার্সিটি শেষে আনমনে রাস্তার কিনারা দিয়ে হাঁটছি আমি’!!রাএী আর মিতু অনেক আগেই চলে গেছে’!!এমনি সময় রিকশা করে বাড়ি ফিরলেও আজকে একদমই ইচ্ছে করছে না’!!তাই আনমনে হেঁটে চলেছি আমি’!!সাথে তখনকার সেই ছেলেটার কথা ভাবছি’!!কিছুতেই মাথা থেকে বের হচ্ছে না তখনকার মুহূর্তটা’!!হর্ঠাৎই আকাশে মেঘ ডাকতে শুরু করল,সাথে পরিবেশটাও ঘন কালো অন্ধকারে ডাকতে শুরু করল,চারপাশে ধুলো মিশ্রিত বাতাসও বয়ে আসতে লাগলো খুব’!!কিছুটা বিরক্তি আর অনেকটা ভালো লাগা নিয়ে হেঁটে চলেছি আমি’!!বৃষ্টি বরাবরই পছন্দ আমার’!!আর বৃষ্টি পড়লে বৃষ্টিতে ভিজতে তো ভালোবাসি আমি’!!হর্ঠাৎই খুব জোরে একটা বাতাস আসলো যার ফলে চোখে ঢুকে পরলো কিছু ধুলো’!!আমি চোখ ঢলতে ঢলতে কখন যে রাস্তার মাঝখানে চলে এসেছি বুঝতেই পারি নি’!!

.

“এদিকে এমন সময় উল্টোদিক দিয়ে একটা গাড়ি আসতে লাগলো’!!নাফিয়া চোখে হাত রেখেই একদম গাড়ির সামনে চলে আসলো’!!এমন সময় হুট করে একটা ছেলে এসে তার হাত ধরে দিল টান’!!

.

“আচমকা কেউ হাত ধরে টান দেওয়াতে আমি তাল সামলাতে না পেরে এসে পরলাম একদম তার বুকের কাছে’!!তার হার্টবিটের শব্দ বাজছে আমার কানে’!!হুট করে কি হলো কিছুই বুঝলাম না আমি’!!হর্ঠাৎই বলে উঠল কেউঃ

——“আর ইউ ম্যাড আর একটু হলেই কি হতে যাচ্ছিল বুঝতে পারছো…(হতভম্ব হয়ে)

“মানুষটার কথা শুনে আস্তে আস্তে তাকালাম আমি তার দিকে’!!আবারো সেই মাস্ক সাথে ব্লাক চশমা পরিধিত ছেলেটিকে দেখে চমকে উঠলাম আমি’!!মুখ থেকে অটোমেটিক বেরিয়ে আসলো আমারঃ

——“আপনি….

“ছেলেটি কিছুটা অবাক হয়ে বললোঃ

—–“ইউ নো, হু আই এম…

“ছেলেটির কথা শুনে কিছুটা অপ্রস্তুতী ফিল করলাম আমি’!!কয়েক ঘন্টা আগের কাহিনী এরই ভিতর ভুলে গেল সে’!!কিছুটা হতভম্ব হয়ে বলে উঠলাম আমিঃ

—–“না মানে তখন সিঁড়ি উপর আপনি বাঁচিয়েছিলেন না আমায় তাই আর কি…

—–“ওহ আই সি,একদমই মনে ছিল না আমার…

“মুখে মাস্ক থাকায় খুব ভালোভাবে বোঝা যাচ্ছে না ভয়েস টা’!!এই মুহূর্তে ইচ্ছে করছে টান মেরে মাস্কটা খুলে ফেলি’!!মনে ভিতর এক অজানা ক্ষোভ এসে ভীর করলো আমার ছেলেটির মুখটা দেখার জন্য’!!এরই ভিতর মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হয়ে গেল’!!বৃষ্টিতে ভিজে যাচ্ছে দুজনই’!!ছেলেটা বলে উঠলঃ

—–“ভিজে যাচ্ছেন তো….

—–“ইট’স ওকে,বৃষ্টিতে ভিজতে ভালো লাগে আমার’!!আর আবারো অসংখ্য ধন্যবাদ দু’বার আমার কোমড় আর আমাকে বাঁচানোর জন্য…

—–“ইট’স ওকে মিস…

——“ওকে বাই…

—–“ওকে বাই এন্ড বি কেয়ারফুল ঠিক আছে…

“হাল্কা হাসলাম আমি’!!তারপর বৃষ্টির মাঝেই হেঁটে চলেছি আমি’!!সাথে টপ টপ করে বৃষ্টির ফোঁটা এসে পড়ছে গায়ে!

“এদিকে ছেলেটি আনমনেই মুচকি হেঁসে বলে উঠলঃ

——–“আমার মিষ্টি মায়াবিনী…🌸

_________________

“ভেজালো শরীর নিয়ে দরজার কলিং বেল টিপ দিলো তিহান’!!আজকে বৃষ্টিতে ভিজেছে সে’!!খুব একটা বৃষ্টিতে ভেজা হয় না তার’!!কিন্তু আজ অসম্ভব ভালো লাগছে তিহানের’!!অন্যদিকে রাএী দরজা খুলে ভাইকে এইভাবে ভেজালো দেখে অবাক হয়ে বলে উঠল সেঃ

—–“ভাইয়া তুমি বৃষ্টিতে ভিজেছো…

“তিহান রাএীর গাল টেনে বললোঃ

—–“হুম!

“তিহানের কাজে অবাক রাএী’!!তিহান রাএীকে পাশ কাটিয়ে চলে গেল তার রুমে’!!আর রাএী হা হয়ে বললোঃ

—–“এটা কি হলো?ভাইয়া বৃষ্টিতে ভিজেছে কিন্তু কেন?😳

,

“অন্যদিকে আরেকজন কলিং বেল টিপ দিতেই আম্মাজান এসে দরজা খুলে দিল’!!আমার দিকেই তাকাতেই কর্কশ কন্ঠে বলে উঠলঃ

—–“তুই বৃষ্টিতে ভিজেছিস কেন?

—–“আসলে আম্মু হয়েছে কি….

“আর কিছু বলার আগেই আমার কান ধরে দিল টান’!!আম্মুর কাজে আমি বলে উঠলামঃ

—–“আহ্ আম্মু লাগছে তো…

—–“লাগে লাগুক তোকে বারন করেছি না বৃষ্টিতে ভিজতে, এখন ঠান্ডা লেগে গেলে কি হবে তখন?

—–“আরে আম্মু কিছু হবে না….

“এদিকে আম্মুর কাজে রুহান নাচতে নাচতে বলে উঠলঃ

—–“একদম ঠিক হইছে আপু মার খাচ্ছে আম্মুর কাছে….

—–“রুহাইনা থামবি তুই,একবার আম্মুর কাছ থেকে ছাড়া পাই তারপর তোর একদিন কি আমার একদিন…

—–“আগে আম্মুর কাছ থেকে ছাড়া তো পাও তারপর….

—–“এখন কোনো ছাড়াছাড়ি নেই এখন সোজা তুই গোসল করতে ঢুকবি তা না হলে আমিও দেখিয়ে দিবো কতধানে কত চাল…

—–“ঠিক আছে আম্মু রুহানকে তো আমি পরে দেখে নিবো হুহ…

“বলেই হন হন করে হেঁটে চলে গেলাম আমি’!!

__________________________________________

______________________

➪ ’’তুমি আমার “শ্রাবন মেঘের বর্ষন” মায়াবিনী….
যার প্রতিটি ফোঁটায় রয়েছে ভালোবাসার শীতল ছোঁয়া!’

➪ ”তুমি আমার “শ্রাবন মেঘের বর্ষন” মায়াবিনী….
তাই তো আজ বর্ষনের টানে বারে বারে যাই আমি ছুটে তোমার তরে…

➪ ”তুমি আমার ”শ্রাবন মেঘের বর্ষন” দিনের সেই মেঘলা আকাশ, যার দিকে তাকালেই হৃদয়ের স্পন্দন বেড়ে ওঠে কয়েকশো বার…

➪ ”তুমি আমার “শ্রাবন মেঘের বর্ষন” দিনের সেই সাদা রঙের ফুটন্ত বেলিফুল যার প্রতিটি ফুলের গন্ধে রয়েছে এক অন্যরকম ভালোলাগা!’

“তাই তো কোনো এক ”শ্রাবন মেঘের বর্ষন” দিনে হাতে হাত রেখে বলে উঠবো তোমায় মায়াবিনী তোমায় যে বড্ড ভালোবাসি আমি!’🌸

-“লেখনীতে:তানজিল_মীম”✍︎

– “কথাগুলো একটা ডাইরির পাতায় লিখে আনমনে ডাইরিটা বুকে জড়িয়ে ধরে মুচকি হেঁসে বলে উঠল কেউঃ

—–“তোমায় বড্ড ভালোবেসে ফেলেছি মায়াবিনী…

“বলেই চোখ দুটো বন্ধ করে নিলো সে’!!বাহিরে মুসলধারে বৃষ্টি হচ্ছে’!!সাথে বৃষ্টির ঝুমঝুম শব্দ কানে বাজছে খুব,রাতের অন্ধকারে ঢাকা পড়েছে বৃষ্টির প্রতিটি ফোঁটা,সাথে ঢাকা পড়েছে একটা ছেলের আর মায়াবিনীকে নিয়ে লেখা প্রতিটি ছন্দ, প্রতিটি অনুভূতি,একরাশ ভালোলাগা সাথে অফুরন্ত ভালোবাসা!’🌸

☔︎☔︎☔︎

||

“mera kismat o ko mila hat tera fir sa lakira dakna lagi…

“dakha tumha to asa laga hya jasa ai akha Dharak naa lagi…

“Rahu umro bar main teri Tu mera….

“jab maan badal ban jayu Tum vi baarish ban jana jo kam par jaya sas a tum mera dil bangana..

“Rimjim saban kya bunda Tu Thar mosam bar sana….

“Jo kam par jaya sas a Tum mera dil ban jana…

… .

“Tum Haa Baarish Bara ayad karti haa
aj vi mujsa Teri baat karti ha..
Tum haa Baarish bara ayad karti haa.. (2)

.
.
.

– “রাতের ভেজালো বৃষ্টির মাঝে বেলকনিতে দাঁড়িয়ে গানটা গাইছে নাফিয়া’!!
“ঘড়ির কাঁটায় কম হলেও রাত ১০ঃ০০টা বাজে!বাহিরে সেই কখন থেকে মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে’!!আর বৃষ্টি বরাবরই ভালো লাগে তার’!!তাই তো যখনই বৃষ্টি হয় তখনই বেলকনিতে দাঁড়িয়ে বাহিরে হাত রেখে হাত ভিজাতে তার সাথে গান গাইতে অসম্ভব ভালো লাগে তার’!!যেমনটা এখন লাগছে’!!আকাশে মেঘ ডাকছে খুব,সাথে ঝুমঝুম করে বৃষ্টি হচ্ছে খুব,বৃষ্টির মাঝে ঠান্ডা শীতল মেশানো বাতাসে চুলগুলো উড়ছে খুব নাফিয়ার, তাই তো তার মাঝে এই মুহুর্তে বয়ে চলছে একরাশ ভালোলাগা সাথে একরাশ মুগ্ধতা………
!
!
!
!
!
!
!
!
!
!
!
#চলবে………