সেদিন ছিল পূর্ণিমা পর্ব-০৪ এবং বাকি অংশ

0
312

| সেদিন ছিল পূর্ণিমা |
| পর্ব:- ০৪ এর বাকি অংশ |

” আপনি কীভাবে জানলেন যে টগর ভাই মারা গেছে! সত্যিই কি তাই? ” কাপা কাঁপা গলায় জিজ্ঞেস করলো অবন্তী।

” হ্যাঁ, ওর সঙ্গে যেসব ছেলেরা চলাফেরা করে তারাই বলেছে। নিচে আমার হাসবেন্ড শুনে এসে আমাকে জানালো। ”

” আমি সেদিন থেকে তার নাম্বার বন্ধ পাচ্ছি। তিনি কোনো যোগাযোগ করেননি। ”

” সবসময় বাজে মানুষের সঙ্গে আড্ডা, খারাপ খারাপ বদভ্যাস ছিল। হয়তো নিজেদের মধ্যে কেউ শত্রুতার সূত্রপাত ধরে কাজটা করেছে। ”

তামান্না বললো,
” লাশ যদি পাওয়া যায় তাহলে তো আমরা সেই লাশ দেখতে পারবো তাই না? ”

” কি জানি, ওর লাশ কে দাফন করবে? পুলিশের মাধ্যমে হয়তো দাফন হতে পারে। ”

” তার নাকি একটা বোন আছে রংপুরে? ” করুন দৃষ্টিতে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলো অবন্তী।

” আমিও শুনেছি আছে। জানি না সত্যি কোনটা আর মিথ্যা কোনটা। ”

মালিকের স্ত্রী মিলি চলে গেল। তামান্না তখন অবন্তীর কাছে গিয়ে বললো,

” মন খারাপ করো না, সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে। ”

” আমাকেই কিছু একটা করতে হবে আপা। ”

” কি করবা তুমি? ”

” সময় হলেই জানতে পারবেন। ”

” সাজু ভাইকে জানানো দরকার। ”

” ঠিকই বলেছ। ”

★★★

এতো রাতে অপরিচিত কাউকে দরজার সামনে দেখে অবাক হয়ে গেল রাবুর শশুর। দারোয়ান একটু আগে ইন্টারকমে কল দিয়ে বলেছে এক গোয়েন্দা এসেছে দেখা করতে। তারপর থেকেই অস্বস্তিতে ছিলেন তিনি।

সাজু ও কিবরিয়া বসে আছে ড্রইং রুমে। সুন্দর করে সাজানো গোছানো পরিবেশ, বাহিরের যে কেউ প্রথম দেখে মুগ্ধ হবে নিশ্চিত।

নীরবতা ভেঙ্গে সাজু বললো,
” আমি আপনার পুত্রবধূর সঙ্গে কথা বলতে চাই। রাবেয়াকে ডাকুন। ”

” কি বিষয় জানতে চান আগে বলেন। আপনারা হুট করে বাড়িতে প্রবেশ করেছেন, থানা থেকে কেউ নেই, তাছাড়া এতো রাতে। ”

” আপনি ভয় পাবেন না। আমি তার কাছে শুধু দুটো প্রশ্ন করতে এসেছি। আপনার সামনেই তাকে জিজ্ঞেস করা হবে, তাকে ডাকুন। ”

রাবেয়া ড্রইং রুমে এলো, সাজু ভাই রাবেয়ার দিকে তাকিয়ে বললো,

” অবন্তী গ্রামের বাড়ির ঠিকানা ও তার স্বামীর সব পরিচয় অজ্ঞাত কাউকে জানানো হয়েছে। কাজটা করেছেন কবে? ”

রাবুর শশুর বললো,
” বৌমা এসব জানবে কীভাবে? ”

” আমি যাকে প্রশ্ন করেছি সে জবাব দেবে। ”

রাবু বললো,
” আমি কাউকে পরিচয় দেইনি। ”

” পরিচয় দিয়েছেন কিনা সেটা জিজ্ঞেস করিনি। কাকে দিয়েছেন আর কবে দিয়েছেন সেটা জানতে চাই। সুতরাং বুঝতেই পারছেন যে আমি সম্পুর্ণ নিশ্চিত যে কাজটা আপনারা করেছেন। ”

রাবু চুপ করে রইল। তার শশুর বললো,
” কেন জোরাজোরি করছেন? আমরা কেন আরেক মেয়ের পরিচয় অন্যের কাউকে দেবো। ”

” আপনি যত তাড়াতাড়ি বলবেন আমি ততই তাড়াতাড়ি এ বাসা থেকে বের হয়ে যাবো। ”
রাবেয়ার দিকে তাকিয়ে বললেন সাজু ভাই।

রাবু আস্তে আস্তে বললো,

” টগর ভাইয়ের সঙ্গে যেদিন সন্ধ্যার পরে অবন্তীর দেখা করাই সেদিন দুজন লোক এসেছিল। ”

এতটুকু বলে রাবু থেমে গেল। সাজু ভাই রাবেয়ার মুখের দিকে তাকিয়ে রইল কিছুক্ষণ। রাবেয়ার দৃষ্টি ছিল অন্য দিকে। সাজু সেদিকে তাকিয়ে দেখল রাবেয়ার শাশুড়ী রুমের দরজা ধরে দাঁড়িয়ে আছে। মাথা নেড়ে ইশারা দিয়ে তিনি রাবেয়াকে কথা বলতে নিষেধ করতেছেন।

সাজু সেদিকে তাকানোর সঙ্গে সঙ্গে ভদ্রমহিলা ভিতরে চলে গেল। সাজু মুচকি হেসে বললো,

” সবটা না শুনে আমি যাবো না রাবেয়া। ”

চলবে….

~~ মো:- সাইফুল ইসলাম