স্নিগ্ধ প্রেমের সম্মোহন পর্ব-৫৩

0
1208

#স্নিগ্ধ_প্রেমের_সম্মোহন
#সাদিয়া_মেহরুজ_দোলা
|পর্ব-৫৩|

সায়ান ভাইয়ার পাশে দাঁড়িয়ে আছে আরিশা আপু। ভাইয়ার গার্লফ্রেন্ড! যিনি কিনা ১ বছর আগে মারা গিয়েছিলেন। কিন্তু আজ হটাৎ ভাইয়ার পাশে বঁধু বেশে দাড়িয়ে ব্যাপারটা ঠিক হজম হলোনা আমার। ভয়ে ছোটখাটো চিৎকার মেরে পূর্বের পিছে লুকিয়ে পড়ি।

পূর্ব চট জলদি পিছে ঘুরে দাঁড়িয়ে আমায় আগলে নেন। চিন্তিত কন্ঠে বললেন,

-‘ কি হয়েছে? চিৎকার দিচ্ছো কেনো?’

-‘(….)’

-‘ ভয় পাচ্ছো কেনো তুমি?হোয়াট হ্যাপেন্ড? ‘

পূর্ব অস্থির হয়ে উঠলেন। তার কথার উত্তর দেয়ার মতো ভাবান্তর আমার মাঝে নেই। আমি আরিশা আপুর দিকে তাকিয়ে আছি। মৃত্য মানুষ জীবিত হয় কি করে?হাউ ক্যান ইট পসিবল?

আরিশা আপু এগিয়ে আসলেন। আমি পূর্বের শার্টের শেষাংশ চেপে ধরে তার সাথে মিশে দাঁড়াই। আপু এগিয়ে এসে আমাদের দুজনের সামনে দাঁড়িয়ে আলত হেঁসে বললেন,

-‘ দোলা আমাকে দেখে ভয় পাচ্ছে। ‘

ভ্রু যুগল কুঁচকে যায় পূর্বের।তিনি সন্দিহান কন্ঠে বললেন,

-‘ আপনাকে দেখে ভয় পাওয়ার কি আছে?’

-‘ কারণ আমি মারা গিয়েছি। এটা জানে দোলা। আচানক আমায় সামনে দেখে ভয় পাচ্ছে হয়তো। তাছাড়া প্রেগ্ন্যাসিরর টাইমে সবকিছু একটু অতিরিক্ত হয়। ভয়, রাগ, কৌতূহল! তবে হরমোন ভেদে।’

মাথা তুলে নেই পূর্বের বক্ষপিঞ্জর থেকে। তার দিকে চেয়ে দেখি শত কৌতূহলের ছাপ এঁটে সেঁটে আছে পূর্বের মুখশ্রীতে। আরিশা আপু আলত হাত আমার গালে রাখলেন। ধীর কন্ঠে বললেন,

-‘ ভয় পেয়ো না দোল। আমি মারা যাইনি। আব্বু আম্মু মিথ্যা কথা বলেছে তোমাদের। রিজনটা ছিলো তারা চাননা আমি সায়ানকে বিয়ে করি। ওর সাথে কোনো সম্পর্ক রাখি। আব্বু আম্মুর সায়ানকে পছন্দ ছিলোনা। কিন্তু আমি! আমি ভালোবাসতাম সায়ানকে। মানিনি তাদের কথা। তাই তারা আমায় নিয়ে সিলেট চলে যান। যাওয়ার আগে এমন একটা নাটক সাজিয়ে রেখে যান যাতে সবাই মনে করে আমি মারা গিয়েছি। আর সবাই তা মনেও করেছে। সিলেটে আমায় আব্বু আম্মু ঘর থেকে বের হতে দিতো না। আস্তে আস্তে আমার পাগলামি আচরণ বেড়ে যায়। আমি সায়ানের ফ্রেন্ড আরান ভাইয়ার থেকে ঠিকানা যোগাড় করে কাজিনের সাহায্যে কানাডা আসি। তারপর এই বিয়ে। আমাট কাজিন এখানেই থাকতো তাই আসা সম্ভব হয়েছিলো। ‘

আরিশা আপুর গলা ধরে এসেছে। তিনি যে কান্না দমন করার প্রয়াস চালাচ্ছে তা স্পষ্টত বুঝতে পারছি। ভাইয়া এগিয়ে আসে। আরিশা আপুর এক হাত সবার অগোচরে আকড়ে ধরে ইশারায় কাঁদতে নিষেধ করে।

আমি পূর্বের থেকে কিছুটা দূরে সরে দাঁড়িয়ে আরিশা আপুকে বলি,

-‘ বাসা থেকে পালিয়ে এসেছো আপু?’

আরিশা আপু মাথা নাড়িয়ে আমার কথার সাথে সম্মতি জানায়।তৎক্ষনাৎ আম্মুর গম্ভীর কন্ঠস্বর কানে এসে বাড়ি খায় আমার। আম্মু বলল,

-‘ যাই করুক তোমার বাবা মা আরিশা এরজন্য বাসা থেকে পালিয়ে আসবে তুমি? বাবা মা যা করে ভালোর জন্যই করে। সায়ান হয়তো উনাদের তোমার জন্য পছন্দ হয়নি বলে এমন পদক্ষেপ নিয়েছে। তাই বলে তুমি তাদের কিছু না জানিয়ে তাদের এতো বছরের ভালোবাসা পায়ে ঠেলে এভাবে পালিয়ে আসবে? সায়ান আর তোমার সংসারে কখনো সুখ আসবেনা যতক্ষণ পর্যন্ত তুমি তোমার বাবা মার থেকে মাফ না চাচ্ছো। তারা তোমাদের দুজনকে দোয়া না দিচ্ছেন। ‘

আম্মুর মুখে থমথমে ভাব। সে যে এই বিয়েটা মানতে পারছে না তা একদম সিয়র আমি। ভাইয়া বলল,

-‘ আম্মু ও এখন বাংলাদেশে কিভাবে যাবে? ওখানে গেলে ওর বাবা মা আবার কোনো নতুন নাটক করবে। আমি আরিশাকে কোথাও যেতে দিবোনা। ‘

-‘ যা করার করুক। তবুও আরিশাকে ফিরে যেতে হবে সায়ান। আমি মানবো না এই বিয়ে যত দিন পর্যন্ত না, না মানছে আরিশার বাবা মা। ‘

আম্মু ওপরে চলে যায়। রেগে গিয়েছেন তিনি। ভাইয়া অসহায় চোখে বাবার দিকে তাকালে তিনি ইশারায় জানান দেন তার কিছু করার নেই! ভাইয়া দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছাড়লেন। পূর্ব এগিয়ে যায় তার দিকে। কাঁধে হাত রেখে বললেন,

-‘ চাচি যা বলছে তা তো মিথ্যা নয়! আরিশার বাবা মাকে জানানো উচিত। তারপর তারা যে ডিসিশন নিবে তা মেনে নিবি। ‘

-‘ ওনারা এই বিয়ে মানবে না! ‘

-‘ ট্রাই তো কর গাধা। এর উল্টোটাও তো হতে পারে।’

ভাইয়া মাথা নাড়লেন। পূর্ব পিছে ঘুরে আমার কাছে এগিয়ে এসে হাত আঁকড়ে ধরে বললেন,

-‘ রুমে চলো। তোমায় কলেজে নামিয়ে দিয়ে আমি অফিসে যাবো। ‘

-‘ যান আসছি! ‘

-‘ তাড়াতাড়ি এসো। ‘

পূর্ব ওপরে চলে যায়। একে একে সবাই আরিশা আপুর সাথে টুকটাক কথা বলে চলে যায়। আমি আপুর কাছে গিয়ে বলি,

-‘ আপু আসো। তোমায় রুম দেখিয়ে দেই। রেষ্ট দরকার তোমার। ‘

আরিশা আপু স্মিত হাসলেন। তার মনে যে কি ঝড় চলছে তা যেনো একটু আধটু বুঝতে পারলাম। আপুকে নিয়ে দোতলার ডান দিকের ভাইয়ার রুমে বসিয়ে দিয়ে নিজের রুমের দিকে চলে আসি।
________________

ড্রেসিং টেবিল থেকে শেষবারের মতো নিজেকে পর্যবেক্ষন করে হাতে মোবাইল নিয়ে নেই। সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টা বাজে। আজ আরিশা আপু এবং সায়ান ভাইয়ার রিসিপশন! এক সপ্তাহের ব্যাবধানে আরিশা আপুর বাবা মা সহ পুরো পরিবারকে অতি কষ্টে রাজি করিয়েছে ভাইয়া সাথে বাবা মা এবং চাচুরাও হেল্প করেছেন এতে। আরিশা আপুর বাবা মা সহ তার পরিবারের সবাই এখন কানাডায় আমাদের বাসায়। এখান থেকেই তাদের বিয়ে সম্পূর্ণ হবে সাদামাটা ভাবে। অতঃপর আমরা সবাই যখন ভ্যাকেশনে বাংলাদেশ এ যাবো তখন পুরো সমাজকে জানানোর জন্য বড় করে বিয়ের অনুষ্ঠান করা হবে। আপাতত কানাডার কয়েকজনকে ইনভাইটা করা হয়েছে ভাইয়া আপুর রিসিপশনে।

লেহেঙ্গার সাদা ওড়নাটা গায়ে জরীয়ে সেফটি পিন লাগিয়ে নেই। ড্রেসিং টেবিলের আয়না দিয়ে দৃষ্টি স্থাপন করি পূর্বের ওপর। সে ল্যাপটপের কিবোর্ড এর ওপর হন্তদন্ত হয়ে টাইপিং করছেন। ব্যাস্ততা তার মুখে জানান দিচ্ছে। ভ্রু কুচকানো দৃষ্টি তার ল্যাপটপ স্ক্রিনে!

পূর্বকে দেখতেই চেহারা মলিন হয়ে ওঠে। লম্বা লম্বা পা ফেলে এগিয়ে যাই তার সন্নিকটে। আশপাশ না দেখে পূর্বের কোলে বসে পড়ি। হকচকিয়ে যায় সে। হয়তো এমনটা আশা করেননি। নিজেকে ধাতস্থ করে তিনি আমার গালে হাত রেখে আদুরে কন্ঠে বললেন,

-‘ কি হয়েছে? মুখ ফুলিয়ে আছে কেন স্নিগ্ধপরী?’

আমি আমার সরু দৃষ্টি দ্বারা তার পাঞ্জাবি ইশারা করি। পূর্বের চেহারা বদলে যায়। সে আমার কোমড় ধরে তার কাছে টেনে নিয়ে বললেন,

-‘ আর না জান! আর কত পাঞ্জাবি চেঞ্জ করাবে? এই নিয়ে দশ বারোটার মতো পাঞ্জাবি পড়ে ফেলেছি আমি এখন টায়ার্ড! কাজ আছে তো। ‘

পূর্বের কলারে হাত রেখে ছোট্ট করে শ্বাস ফেলি আমি। বিকেল থেকে পূর্বকে দিয়ে কমপক্ষে ১৪ টা পাঞ্জাবি চেঞ্জ করিয়েছি। কারণটা প্রতেকটা পাঞ্জাবি তে তাকে অতীব সুর্দশন লাগে। এভাবে সবার সামনে গেলে এক একটা মেয়ে নিশ্চিত তাকে চোখ দিয়ে গিলে খাবে! এটা একজন স্ত্রী হিসেবে আমার পক্ষে মেনে নেয়া বা সহ্য করা অসম্ভব। তবে প্রতেকটা পাঞ্জাবিতে তাকে মারাত্মক লাগে তাই আর কিছু করার ছিলো না।

বেশ কিছুক্ষণ পর আমি থমথমে কন্ঠে বলি,

-‘ আপনাকে এত সুন্দর কে হতে বলেছিলো? এখন যে নিচে গেলে সব মেয়েগুলো ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে থেকে নজর দিবে তখন আমার কষ্ট হবেনা? মাঝেমধ্যে ইচ্ছে হয় আপনার চেহারায় কালি মেখে রাখতে। তাহলে আর কেও ফিরেও তাকাতোনা হুহ্! ‘

পূর্ব হেঁসে দেয় শব্দ করে। আমি মুখ ফুলিয়ে অন্য দিকে তাকাই। পূর্ব তার একহাত আমার গালে রেখে গাল ধরে টেনে এনে তার দিকে ফিরিয়ে নেন। তার অধরের ছোঁয়া একে দেন একে একে আমার গালে। কিছু সময় কেটে গেলে তিনি ফিচেল কন্ঠ বললেন,

-‘ তাহলে তোমায় এতো সুন্দর কে হতে বলেছিলো?ছেলেগুলো যখন আঁড়চোখে তোমার দিকে তাকিয়ে বিভিন্ন জল্পনা কল্পনা করে তখন আমার ভিতর দিয়ে কত বড় ঝড় বইয়ে যায় ইউ নো? কতটা কষ্টে নিজেকে কন্ট্রোল করি আমি। আদার’স টাইম হলে প্রতেকটা ছেলের চোখ তুলে নিতাম আমি। ‘

আমি ব্যাঙ্গ করে বলি,

-‘ কম তো করেননা এর থেকে। সেদিন যে এক ছেলে প্রপোজ করলো। বেচারার হাত পা ভেঙ্গে হসপিটালের বেডে পাঠিয়ে দিলেন। ‘

-‘ হাত পা ভেঙ্গেছি শুধু। এটা জাষ্ট নরমাল আমার কাছে স্নিগ্ধপরী।’

আমি উঠে দাঁড়িয়ে বলি,

-‘ ফাইন! চলুন বাহিরে। সবাই ওয়েট করছে না?’

পূর্ব ল্যাপটপ অফ করে নিজে উঠে দাঁড়ালেন। আমার এক হাত নিজের বলিষ্ঠ হাতের মুঠোয় নিয়ে নেন। খানিকটা ঝুঁকে ফিসফিস করে কানের কাছে কিছু বলাতে আমি লজ্জায় লাল নীল হয়ে যাই। হাত দিয়ে তাকে ঠেলে দূরে সরিয়ে বলি,

-‘ অসভ্য, অশ্লীল লোক! ‘

পূর্ব ফিক করে হেঁসে দেন। আমার হাত ধরে বেড়িয়ে যেতে যেতে বললেন,

-‘ দেখো স্নিগ্ধপরী জাষ্ট তোমার জেদের কারণে এই ফাংশনে তোমায় যেতে দিচ্ছি। ভুলেও আমার চোখের আড়াল হওয়ার চেষ্টা করবেনা। বেশি ছটফট, লাফালাফি করবেনা…’

পূর্বকে মাঝেপথে থামিয়ে দিয়ে বলি,

-‘ আমি লাফালাফি করি?’

পূর্ব নিজের বাম ভ্রু টা উঁচু করে বললেন,

-‘ তো আমি করি নাকি?’

-‘ কখন করলাম লাফালাফি? ‘

-‘ ফ্রেন্ড সার্কেলের সাথে থাকলে তো পুরো দুনিয়া ভুলে যাও। তখন লাফালাফি কেনো?নাচানাচি ও শুরু করো। কানাডায় যখন প্রথম আসি তার দুদিন পরে ছাঁদে উঠে অরিনের সাথে নাচানাচি কে করছিলো?’

আমি লজ্জার সাগরে ডুব দেই আপাতত। ইশ! লোকটা দেখে ফেলেছে?ছিহ্, কি লজ্জা! বৃষ্টি ছিলো হালকা সেদিন তাই তো একটু লাফালাফি করা। তার জন্য এভাবে লজ্জা দিতে হবে? বদ লোক!

-‘ মনে মনে আমাকে বকা দেয়া শেষ? তাহলে থামো এবার! আমি কিন্তু তোমায় লজ্জা দিচ্ছিনা। সেদিন যেভাবে নাচ ছিলে আমার সামনে তো একদিনও করোনি। হোয়াটএভার, মনে থাকবে কি বলেছি? নিচে গিয়ে চুপচাপ বসে থাকবে।’

বিষ্ফোরিত নয়নে তার দিকে দৃষ্টিপাত স্থাপন করি। ইনি কি অন্তর্যামী হয়ে গেলো নাকি?মাই গড! সর্বনাশ তাহলে! বিশাল সর্বনাশ।

হাতের মুঠো শক্ত হলো। ঝুঁকে নিচু হলেন ফের পূর্ব। ফিসফিস করে কানের কাছে তার অধর যুগল এনে বললেন,

-‘ আমি অন্তর্যামী না স্নিগ্ধপরী। তোমার চেহারা রিয়াকশনই বলে দিচ্ছিলো আমায় তুমি মনে মনে কি বলছিলে? তাছাড়া তোমার মনের কথা বেশিরভাগই আমি বুঝতে পারি। এখন আস্ক করবেনা কিভাবে। আই ওন্ট( Won’t) টেল ইউ। ‘

পূর্ব হাঁটা শুরু করলেন। তার পাশাপাশি গুটিগুটি পায়ে আমি হাঁটছি। সিঁড়ির কাছে আসতেই আমি থেমে যাই। এতে পূর্ব ঘাড় বাকিয়ে আমার দিকে চাহনি দিয়ে বললেন,

-‘ কি হয়েছে? থামলে কেনো?’

আমি চটপট আমার অন্যহাতে থাকা মাস্ক বের করে পূর্বের হাতে দেই। মিনমিন সুরে বলি,

-‘ এটা পড়ুন! ‘

পূর্ব বিনাবাক্যে পড়ে নিলো মাস্কটা। পরিশেষে শীতল কন্ঠে বললেন,

-‘ হয়েছে? আর কিছু? ‘

-‘উঁহু, চলুন।’

নিচে আসতেই দেখি শত মানুষের আনাগোনা। অল্প মানুষ ইনভাইট করা হলেও কিভাবে যেনো জনসংখ্যা ১০০০ পেরিয়েছে। শুভ্র ভাইয়া এগিয়ে আসলেন আমাদের দিকে।

শুভ্র ভাই এগিয়ে এসে ভ্রু কুঁচকে বললেন,

-‘ কিরে পূর্ব? এইসব কি?ভাইরাস ছড়াইছে নাকি চারপাশে? মাস্ক পড়ে আছোস কেন?’

পূর্ব আড়চোখে আমার দিকে তাকিয়ে বললেন,

-‘ জেলাসি ভাইরাস ছড়িয়েছে। তাই মাস্ক পড়েছি।’

শুভ্র ভাইয়া হতভম্ব হয়ে বললেন,

-‘ কি? কি কস এসব?জেলাসি ভাইরাস আবার কি জিনিস, পাগল হয়ে গেছোস?’

পূর্ব জবাব দিতে নিবেন তৎক্ষনাৎ আমি আম্মুর কাছে যাবো বলে কেটে পড়ি তাদের দুজনের মধ্য হতে। জেলাসি ভাইরাস, লাইক সিরিয়াসলি! হাসি পাচ্ছে প্রচুর তবে আশপাশে মানুষ অনেক। এভাবে হুট করে হেসে দিলে তারা নিশ্চিত আমায় পাগল ট্যাগ দিতে এক মিনিট ও লেট করবেন না।

. (দ্র: পড়বেন 🤧)

স্টেজ বসে আছি আরিশা আপুর সাথে। আপুর সাথে অনেক আগে থেকেই একটা স্ট্রং রিলেশন আছে। তাকে আমি নিজের ভাইয়ের বউ থেকে বেশিরভাগ বোন হিসেবে দেখি!

অদূরে পূর্ব দাঁড়িয়ে আছেন। অভ্র ভাইয়া, শুভ্র ভাইয়া এবং তার বন্ধু মহলের সাথে কথা বলছেন। আড়চোখেঁ কত হাজার বার আমার দিকে তাকিয়ে ছিলেন তার হিসাব আমি করতে পারিনি। যখনি আশপাশে তাকাতাম তখনি পূর্বের দৃষ্টি আমার ওপর থাকতো।

হটাৎ তিনি এগিয়ে আসলেন আমার দিকে দ্রুত গতীতে। কাছে দাঁড়িয়ে নিচু হয়ে ঝুঁকে বললেন,

-‘ আমি একটু বাহিরে যাচ্ছি স্নিগ্ধপরী। নিজের খেয়াল রেখো। একটু পর রুমে চলে যাবে। আমি যাবো আর আসবো! ‘

-‘ কই যাচ্ছেন?’

-‘ একটু কাজ আছে। অফিসে যাবো। ‘

-‘ আচ্ছা। তাড়াতাড়ি ফিরবেন। ‘

পূর্ব সবার দৃষ্টি এড়িয়ে আমার মাথায় শব্দ করে চুমু খেয়ে চলে যান। লজ্জায় নতজানু হয়ক বসে আছি আমি। ইশ!লোকটা এতো নিলজ্জ কেনো?

কিছু সময় বাদে একটা ছোট বাচ্চা এসে বলল,

-‘ আপু তোমায় ছাঁদে কেও ডাকছে!’

-‘ কে ডাকছে বাবু?’

-‘ জানিনা। তোমায় যেতে বলেছে তাড়াতাড়ি। ‘

আরিশা আপুকে বলে চলে আসি ছাঁদে। কে ডাকছে?তাও আবার ছাঁদে এসময়ে। ছাঁদে আসতে দেখি রেলিঙ ধরে কেও দাঁড়ানো। পিছন থেকে অবয়ব দেখে বোঝা যাচ্ছে সে একজন ছেলে। আমি উঁচু কন্ঠে বলি,

-‘ এক্সকিউজ মি?কে আপনি?’

পিছে ঘুরলো সে। আঁতকে উঠে দু- কদম পিছে চলে যাই। আমি কাঁপা কন্ঠে বলি,

-‘ অ..অদ্রিন? ‘

চলবে….