স্নিগ্ধ প্রেমের সম্মোহন পর্ব-৫২

0
1129

#স্নিগ্ধ_প্রেমের_সম্মোহন
#সাদিয়া_মেহরুজ_দোলা
|পর্ব-৫২|

হসপিটালে গালে হাত দিয়ে বসে আছি চুপচাপ। দৃষ্টি ফ্লোরে নিবদ্ধ! রাগে রীতিমত গা কাঁপছে। তবে পাশের ব্যাক্তির আমার যেনো কোনো খেয়ালই নেই। সে দিন দুনিয়া ভুলে মোবাইলে কথা বলে যাচ্ছে। দেখেই বোঝা যাচ্ছে কতটা সিরিয়াস। তাই আর পূর্বকে ডিস্টার্ব করতে ইচ্ছে হলোনা।

হসপিটালে আসার মূল কারণটা পূর্ব। সে আমায় এবং বেবিকে নিয়ে কোনো রকম রিস্ক নিতে রাজি না। তাই হসপিটালে এসেছে চেকাপ করাতে। ডাক্তার যা বলবে তা পাইপাই করে মানতে হবে এমন কঠোর উপদেশ দিয়েছেন তিনি। তবে আধা ঘন্টার বেশি সময় পার হয়ে গিয়েছে ডাক্তার আসার কোনো হেলদোল নেই। এক জায়গায় এতো সময় নিয়ে স্থির হয়ে বসে থাকা আমার পক্ষে সম্ভব না। পাগল পাগল লাগে! অস্থির মনোভাব জন্মে মনে।

ধৈর্যের বাঁধ ভেঙ্গে পূর্বের হাতে চিমটি দেই। তিনি চট- জলদি কান থেকে ইয়ারফোন খুলে ব্যাস্ত ভঙ্গিতে বললেন,

-‘ কি হয়েছে? কিছু বলবে?খারাপ লাগছে পানি দিবো? ‘

পূর্বের কথায় ঠোঁট উল্টে নেই। কাল রাতে তাকে আমি এই বিশেষ অনুরোধটাই করেছিলাম। আমায় ‘তুমি ‘ বলে সম্মোধন করতে হবে। হুটহাট মুড বলতে গিয়ে এমন ইচ্ছেটা আবার জেগেছে আমার।

পূর্বের শার্টের কর্ণার চেপে ধরে নরম কন্ঠে বলি,

-‘ পূর্ব প্লিজ চলুন বাসায় যাই? আমার এখানে বসে থাকতে আর ভালো লাগছেনা! কতক্ষণ যাবৎ বসে রয়েছি। অস্থির অস্থির লাগছে। ‘

পূর্ব হন্তদন্ত হয়ে বললেন,

-‘ শিট! মিটিং এর যন্ত্রনায় ডাক্তারের কথা মাথা থেকে বেড়িয়ে গেছে। আর একটু বসো। আমি একজন কে কল দিচ্ছি ডাক্তার এখনি এসে পড়বে।’

পূর্ব মিটিং থেকে বিদায় নিয়ে ভিডিও কল কেটে দেয়। দুই তিন মিনিট কাওকে ফোন করে হুমকি স্বরুপ বলল, ‘ ডাক্তার যদি আর দুই মিনিট লেট করে তাহলে তোর চাকরি মেয়াদ রেখা আজই শেষ আসিফ! ‘

অতঃপর ফোন কেটে দিয়ে তিনি আমার সন্নিকটে এসে বসেন। ওয়েটিং রুমে অন্য কোনো পেশেন্ট নেই। পূর্ব আমাদের দু’জনের জন্য আলাদা একটা রুম কিছু সময়ের জন্য বুক করেছে!

-‘ সরি, খেয়ালই ছিলো না! বেশি খারাপ লাগছে?’

-‘ অতোটা না। ‘

পূর্ব ছোট্ট শ্বাস ফেললেন। আমার মাথার পিছে হাত দিয়ে তিনি আমায় নিজের বুকের সাথে চেপে ধরেন। ঠিক বাম দিকটায়! ধুকধুক আওয়াজ হচ্ছে সেখানটায়। দিন – দুনিয়া ভুলে সেই আওয়াজটা মনোযোগ দিয়ে শুনতে থাকি। এতো মধুর শুনতে লাগছে কেনো?

-‘ স্নিগ্ধপরী চল, ডাক্তার এসেছে। ‘

আমি পূর্বের বুক থেকে মাথা তুলে চোখ গোল গোল করে বলি,

-‘ এতো জলদি?’

-‘হু, আয়..’

-‘ এই ফোনটা আগে দিলে কি হতো?কতক্ষন অযথা বসে ছিলাম। আমার একটা ক্লাসও মিস হয়ে গেলো।’

পূর্ব তার দুহাত দিয়ে নিজের কান চেপে ধরে ইনোসেন্ট ভঙ্গিতে ‘সরি’ বললেন। আমি তা দেখে গম্ভীর মুখ বানিয়ে বসে থাকলেপ ভিতরে ভিতরে হেঁসে লুটোপুটি খেয়েছি। সরি বলার মূর্হতটায় তাকে দেখে মনে হচ্ছিলো তিনি কোনো কারণে পড়া মার দিয়ে টিচারের কাছে সরি বলছেন।

ডাক্তারের থেকে একগাদা উপদেশ সাথে কিছু ভিটামিন ঔষধ নিয়ে বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দেই। ক্লান্তমাখা শরীর নিয়ে দুই চোখের পাতা কখন একত্র হয়ে গিয়েছে সেই খেয়ালটা একদমই আমার মাঝে নেই! যখন কড়া ঘুমটা পাতলা হতে শুরু করে তখন অনুভব হয় আমি শূন্যে ভাসছি। চোখদুটো টেনে খুলে দৃশ্যমান হয় পূর্বের চেহারা! সে সামনের দিকে তাকিয়ে। আমি যে তার কোলে তা বুঝতে সময় লাগলো দুই সেকেন্ড। সামনে তাকাতে নিবো তখনি কানে ভেসে আসে আমার নীরবের কন্ঠস্বর।

-‘ তোর কি পা ভাঙ্গছে দোল?পূর্ব ভাইয়ের কোলে উঠে এমন ঝুলতেছিস ক্যান?’

দৃষ্টি আবদ্ধ করি নীরবের ওপর। ওর পাশে অরিন, আদ্রাফ, অভ্র ভাইয়া আর জান্নাত বসে। জান্নাতকে দেখে কিছুটা অবাক চাহনিতে তাকিয়ে থাকি। তবে আপাতত আমার নীরবের কথায় জবাব দিতে হবে।
আমি গলা ঝেড়ে বলি,

-‘ চোখের যে সমস্যা আছে তা তো জানি। ডাক্তার দেখাস না কেন? নিজেকে অন্ধ প্রমানিত করতে ভালো লাগে? ‘

-‘ অন্ধ কইলি ক্যান হারামি?’

-‘ তো আমি পূর্বের কোলে ঝুলতেছি কোথায় আজব?’

-‘ ঐ একই কথা। বেচারা আমার ভাই এতো ভালোবাসে দেখে তোকে এতো কদর করে। অন্য জন হলে ঠাস ঠাস থাপ্পড় লাগাইতো। ‘

ঘাড় বাকিয়ে পূর্বের দিকে তাকাই। তার চাহনি স্বাভাবিক। আমি তাকাতেই তিনি ভ্রু নাচিয়ে জিজ্ঞেস করলেন , ‘ কি?’

আমি চিবিয়ে চিবিয়ে বলি,

-‘ নামিয়ে দিন আমাকে এক্ষুনি! ‘

পূর্ব হেঁটে সামনে গিয়ে আমায় সোফায় নামিয়ে দেয়। অভ্র ভাইয়া বললেন,

-‘ ডাক্তার কি বললো পূর্ব? সবকিছু ঠিক আছে?’

পূর্ব আমার দিকে কড়া দৃষ্টি দেয়। আমি অন্যদিকে তাকাই চট জলদি। পূর্ব বললেন,

-‘ ডক্টর বলেছে পর্যাপ্ত পরিমাণ খাবার খাওয়া লাগবে। নয়তো দূর্বল হয়ে যাবে ও! ‘

কথার মাঝে এবার অরিন ফোড়ন কেটে বলল,

-‘ পর্যাপ্ত পরিমাণ খাবার খাবে আর ও? নাইস জোক্স! ওরে পিটাইয়া খাওয়ানো লাগবে পূর্ব ভাই। নয়তো ও কিছুই মুখে তুলবে না। সপ্তাহে একবার দুইবার ভাত খায়। ‘

পূর্ব আঁড়চোখে আমার দিকে তাকিয়ে বললেন,

-‘ দরকার পড়লে সেটাই করবো। দিনদিন বহু পাঁজি হয়ে যাচ্ছে। ‘

অভ্র ভাইয়া উঠে দাঁড়ালেন। টেবিল থেকে ল্যাপটপ তুলে নিয়ে বাসা থেকে বের হতে হতে বললেন,

-‘ তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে অফিসে আয়। আজ কাজ আছে অনেক। ‘

পূর্ব প্রথমে যেতে চাইছিলেন না মনে হলো তবে অভ্র ভাইয়া তাড়া দেয়ায় বাধ্য হয়। পূর্ব ওপরে চলে যায় ফ্রেশ হতে। আমি উঠে দাঁড়াতে নীরব হন্তদন্ত হয়ে বলল,

-‘ আরে কই যাস?তোর সাথেই তো কথা বলার জন্য আসছি। ‘

-‘ ওয়েট কর, আসছি একটু! ‘

বলে চট – জলদি ওপরে চলে যাই। রুম খালি দেখে বুঝতে বাকি নেই তিনি ওয়াশরুমে গিয়েছেন। মনটা বিষন্ন রূপ ধারণ করেছে। পূর্বের ওপর আজকাল কাজের অতিরিক্ত চাপ দেখে কান্না পায়। রাত দিন নেই সারাটা দিন কাজের মধ্য দিয়েই অতিবাহিত হয় তার সময়। যদিও কাজের থেকে অতিরিক্ত টাইম তিনি আমায় দেন।এতে রেষ্ট নেয়ার সময়টুকু পান না।

কাউচে বসে কথাগুলো ভাবছি আর ক্ষনে ক্ষনে কান্নার জোয়ার মনে ভেসে আসছে। তার এতো এতো ভালোবাসার কাছে আমার ভালোবাসা অতি তুচ্ছ! অতি তুচ্ছ!

দরজা খোলার খটখট শব্দে অশ্রুসিক্ত নয়নে ওয়াশরুম এর দিকে দৃষ্টিপাত নিবদ্ধ করি।পূর্ব ব্রাউন কালারের শার্টের বোতাম একে একে লাগাতে লাগাতে রুমে আসছেন। চুল থেকে টপটপ করে পানি পড়ছে অনবরত। তিনটা বোতাম লাগানো বাকি রেখে টাওয়ালের ছোঁয়া চুলে লাগাতে নিলেই তার সাথে আমার দৃষ্টি আবদ্ধ হয়! এক প্রকার ছুটে আসেন তিনি। অস্থিরতা ভাবটা তার মুখশ্রীতে উপচে পড়ছে যেনো।

পূর্ব অস্থির হয়ে বললেন,

-‘ কি হয়েছে কাঁদছো কেনো?খারাপ লাগছে? ‘

আমি ফুপিয়ে কেঁদে দিয়ে তার শার্টের কলার আঁকড়ে ধরে বুকে মাথা রাখি। পরম আবেশে পূর্ব আগলে ধরেন আমায়। তার হাতটা কাঁপছে। তিনি যখন আমায় বিধ্বস্ত অবস্থায় দেখেন তখনই তার হাত পা কাঁপা কাপিঁ শুরু হয়। আমি ক্রন্দনরত কন্ঠে বলি,

-‘ আপনি পুরোটা দিন কতো পরিশ্রম করেন। অফিস থেকে শুরু করে বাসা, পরিবার এবং আমি সবাইকে সামলান। কখনো আপনার রেষ্টের সময়টা ও হয়না। আপনার খুব কষ্ট হয় তাইনা?একজন স্ত্রী হয়েও আমি ‘স্ত্রীর’ সঠিক দায়িত্ব পালন করতে পারিনি পূর্ব! আ’ম সরি। ‘

পূর্ব নিবিড় ভাবে জরীয়ে ধরলেন আমায়। ঘন কালো কেশে দু- তিনটে পরাপর চুমু খেয়ে শীতল কন্ঠে বললেন,

-‘ আমি কি কখনো বলেছি আমার কষ্ট হয়? ‘

-‘ উঁহু বাট আমি বুঝতে পারি তো…! একজন মানুষ এতদিক হ্যান্ডেল করলে তার তো কষ্ট হওয়াটা স্বাভাবিক। তাছাড়া দিনশেষে আপনাকে আমার খেয়াল রাখতে হয়। বাবু আসাতে আরো বেশি সময় দিতে হয়। এতে আপনার কাজের চাপ আরো বেশি বেড়ে গিয়েছে। বাবু না নিলে ভালো হতো.. ‘

পূর্ব মাথা নিচু করে ছোট্ট করে কপালে চুমু একে দেন। অত্যান্ত মিহি কন্ঠে বললেন,

-‘ আমার একটুও কষ্ট হয়না স্নিগ্ধপরী! একটুও না। আমি যা করি তা করা তো আমার দায়িত্ব। দায়িত্ব পালন করলে কেও ক্লান্ত হয়না। কষ্ট পায়না! তাছাড়া পুরোদিনে কাজ শেষে যখন তোমার স্নিগ্ধ রূপ দেখি তখন আমার সব ক্লান্তি ভ্যানিশ হয়ে যায়। যতোটা সময় তোমার কেয়ার করি ততটা সময়ই আমার রেষ্ট! তোমার কোমল কন্ঠ আমায় আমার সকল ক্লান্তি দূর করে দেয়। শীতল চাহনি সর্বাঙ্গে এনে দেয় প্রশান্তি, মধুমাখা হাসি, স্পর্শ, ছোট খাটো আবদার সবকিছু আমার রেষ্টের মাঝেই পড়ে! জানো যখন আমি বাবা হবো প্রথম জানতে পারি তৎক্ষনাৎ ঠিক করে নিয়েছি আমি প্রতেকটা মূর্হত তোমার সাথে থাকবো। অনাগত জন আসার আগ মূর্হতগুলে হৃদয় মহলে সৃতি হিসেবে রেখে দিবো! ‘

মনো মুগ্ধকর হয়ে পূর্বের প্রতেকটা কথা মনে গেঁথে রেখে দেই! প্রতিটা কথা আমার কানে এখনো সুরেলা কন্ঠে বাজছে যেনো। এই লোকটা এতো কেনো ভালোবাসে আমায়? পূর্বের শার্টের কলারটা খামচে ধরে নিচু কন্ঠে বলি,

-‘ ভালোবাসি! ‘

.

তীক্ষ্ণ চাহনি দিয়ে জান্নাত আর আদ্রাফের দিকে তাকিয়ে আছি।মনে মনে ক্ষত বিক্ষত আমি! তবুও নিজেকে সামলে নিয়ে বলি,

-‘ কতদিন ধরে তোদের দুজনের রিলেশন ছিলো?’

জান্নাত গমগম সুরে বলল,

-‘ দেড় বছর। ‘

-‘ অহ! ‘

ছোট্ট করে জান্নাতকে জবাব দিয়ে আদ্রাফের দিকে চাহনি মেলে দেই। ওর চোখমুখে অপরাধী ভাবটা উপচে পড়ছে। আমি তা দেখে তাচ্ছিল্যের হাসি দেই। তাচ্ছিল্য ভরা কন্ঠে বলি,

-‘ তা মি.আয়ুশ মেহমেত আদ্রাফ এটা বললেও কি আমি টেনশনে থাকতাম?হুহ্? আর কি কি লুকিয়েছেনে আমার থেকে?’

আদ্রাফ মাথা তুলে ধরা কন্ঠে বলল,

-‘ আপনি আপনি করে বলছিস কেনো দোল?’

-‘ তো আর কি বলবো অপরিচিত মানুষকে?’

-‘ অপরিচিত? দশ বছরের ফ্রেন্ডশীপ আমাদের। ‘

আমি ফের তাচ্ছিল্যকর কন্ঠে বলি,

-‘ তোহ্? এই দশ বছরে তোকে অন্ধের মতো বিশ্বাস করেছি।ছোট বড় সবকিছু শেয়ার করেছি। আর তুই কিনা তোর জীবনের সবথেকে জরুরি দুটি বিষয় আমায় জানালি না?’

-‘আসলে…’

আমি দাঁড়িয়ে গিয়ে কাটকাট কন্ঠে বলি,

-‘ নো এক্সকিউজ, আমি তোর সাথে আর কথা বলতে চাইনা। যোগাযোগ করবিনা আমার সাথে আর! ‘

এক মূর্হত না দাঁড়িয়ে উপরে চলে আসি। পিছন থেকে নীরব, অরিন সবাই ডাকছিলো তবে আমি এক সেকেন্ড এর জন্যও দাঁড়াইনি। আদ্রাফ এমন কেনো?কেনো করলো?নিজ জীবনের এত বড় দুটি বিষয় আমায় জানালে না?কিসের এতো সঙ্কোচ? কিসের?

.

রুমে বসে বই নিয়ে চুপচাপ ছিলাম। দৃষ্টি বইয়ের মাঝে থাকলেও পড়াতে মন নেই! আসছে না। টানা পড়ার ফলে মাথা ঝিম ধরে আছে। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি ১২ টা বেজে ১০ মিনিট। পূর্ব এখনো আসেনি। এতো দেরী হয়ে গেলো। লোকটার কাজের চাপ আজকাল বড্ড বেশি। এসবে দীর্ঘ নিঃশ্বাস ত্যাগ করা ছাড়া আমার আর কিছু করার নেই। ফোন হাতে নিয়ে কিছুক্ষন গুঁতোগুতি করে ছুঁড়ে মারি কাউচে।

সোফা থেকে নেমে সিঁড়ি বেয়ে নিচে চলে আসি। বাসার সবাই এখনো জাগ্রত! বড় চাচু আর বাবা দুজনে ড্রইং রুমের সোফায় বসে কথা বলছেন। মেঝ চাচু পাশে বসে ল্যাপটপে টাইপিং করছেন। মামনি আম্মু চাচিরা নিশ্চিত ইবা, লিয়া তিরাকে সামলাতে ব্যাস্ত। মেইন ডোরের দিকে তাকাতে দেখি পূর্ব আসছেন। আমায় দেখে মৃদু হাসি দেন। বড় চাচু সহ সবার সাথে টুকটাক কথা বিনিময় করে ওপরে চলে আসলেন তিনি! আমায় বড় চাচু বা বাবা কেও দেখেনি। তাদের উল্টোদিকে আমি।

পূর্ব আমার কাছে এসে দুই বাহু টেনে ধরে কপালে গভীর চুমু খেলেন!আমার গালে আলত হার রেখে বললেন,

-‘ বেশি লেট করে ফেলেছি?’

-‘উঁহু, ‘

-‘ রাতে খেয়েছো?’

-‘ হ্যা। মামনি খাইয়ে দিয়ে গিয়েছিলো। আপনি খেয়েছেন?’

-‘ হ্যা বাহির থেকে। রুমে চলো?সিঁড়িতে এভাবে কখনো দাঁড়িয়ে থাকবে না। ‘

আমি মাথা নাড়িয়ে ওপরে যেতে নিতেই কর্ণপাত হয় বাবার কন্ঠস্বর। পূর্ব আমি দুজন মুখ চাওয়া চাওয়ি করি নিচে নেমে যাই। দরজার দিকে দৃষ্টি দিতে চোখ ছানাবড়া! সায়ান ভাইয়া বড় বেশে দাড়ানো তার পাশে বঁধু বেশে দাঁড়িয়ে থাকা মেয়েটাকে দেখে চমকে গিয়ে চিৎকার দেই। ভীতিগ্রস্ত নয়নে চেয়ে আছি মেয়েটার দিকে। চট জলদি পূর্বের পিছে লুকিয়ে পড়ি। ভয়ে কাঁপছি প্রায় আমি!

চলবে…