হৃদমাঝারে তুমি ছিলে পর্ব-১৭+১৮

0
506

#হৃদমাঝারে_তুমি_ছিলে ❤️
পর্ব১৭+১৮
#কায়ানাত_আফরিন❤️

বাড়িটির নাম “শঙ্খনীল কারাগার”। বনশ্রীর এক প্রান্তে দুতল বিশিষ্ট বেশ বড়সড় এই বাড়ি। অবাক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে মাইশা এই বাড়ির দিকে তাকিয়ে আছে। মাইশার পিছু পিছু গাড়ি থেকে নেমে পড়লো নুহাশ, শারমিন বেগম আর সেই মহিলাটি। একটি বাড়ির নাম যে কখনও এমন হতে পারে মাইশার তা ছিল অজানা। হুমায়ূন আহমেদের একটি উপন্যাসের নাম ছিল এই “শঙ্খনীল কারাগার”। এটা ভাবতেই অজানা একটি উত্তেজনা গ্রাস করে নিলো মাইশাকে। তখনই পেছন থেকে সেই মহিলাটি বলে উঠলো,

–ভেতরে চলো সবাই!

মাইশা সেই মহিলাটির দিকে পুনরায় তাকালো। নুহাশের কথামতো এই সুমিষ্ট মনের মহিলাটি নাকি ওর আম্মুর বড় বোন অর্থাৎ খালামণি। কিন্ত মাইশার এ কথাটি কোনোক্রমে বিশ্বাসযোগ্য মনে হলো না। নাহলে এত বছরে কেন ওর অজানা রইলো যে ওর আম্মুর আপন কোনো বোন আছে?

ধীর পায়ে বাড়িতে প্রবেশ করলো সবাই। কেমন যেন ছিলছাম একটি ভাব রয়েছে। বসার ঘরের উত্তর দিকের আঙিনায়। পাতাবাহারের ঝোপ। রাতের আঁধারে এ সৌন্দর্য তখন অনন্য মনে হয়। বসার ঘরে একজন লোক বসে আছে। বয়স ৫৫ পার হয়ে গিয়েছে হয়তো। লোকটি আনমনে বইয়ের পাতায় ডুবে যেতে মগ্ন। মাইশা বিস্ময়ের সাথে সেদিকে তাকিয়ে থাকলো। লোকটার দিকে নয়, তার পেছনের দৃশ্যপটের দিকে। এ তো যেন বাড়ি নয় আস্ত এক লাইব্রেরি। পেছনের পুরোটা দেয়াল জুড়েই রয়েছে দেশি-বিদেশি নানা ধরনের বই। যার এক বিরাট অংশ হুমায়ূন আহমেদ আর শরৎচন্দ্রের বই দিয়ে আবৃত।

মাইশা আন্দাজ করে নিলো এই লোকটি হয়তো হুমায়ূন আহমেদের বড় এক ভক্ত। মাইশার পাশ কেটে শারমিন বেগম অশ্রুসিক্ত কন্ঠে বলে ওঠলেন,

” ভাইজান! ভালো আছেন।”

খুব পরিচিত একটি আওয়াজ পেয়ে সেই লোকটি চট করে বইয়ের পাতা থেকে চোখ সরিয়ে শারমিন বেগমের দিকে তাকালো। হয়তো বেশ অবাকও হয়ে গিয়েছে। নিজের উত্তেজনাটিকে নিয়ন্ত্রণ করে লোকটি মুচকি হেসে বললো,

–শারমিন! তুমি?”

–হ্যাঁ ভাইজান। হয়তো আল্লাহ তায়ালা চেয়েছে আবার আমাদের দেখা হোক।

–এভাবে দাঁড়িয়ে আছো কেনো? বসো, বসো তোমরা সবাই।

মিজান সাহেবের কথামতো মাইশা, শারমিন বেগম, নুহাশ সবাই সোফায় বসলো। মাইশার সবকিছু কেমন যেন মাথার ওপর দিয়ে যাচ্ছে। নুহাশও এসব বিষয়ে আবছা আবছা মনে আছে তাই ওর কাছেও পরিবেশটি অন্যরকম লাগছে। মিজান সাহেব নুহাশের দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বললো

” কি রে? নুহাশ নাকি? মাশাল্লাহ! এই ছেলেটা তো কত বড় হয়ে গিয়েছে। ক’দিন পর ব্যাটায় বউ নিয়ে ঘুরঘুর করবে।”

লজ্জা পেয়ে গেলো নুহাশ। যা দেখে মাইশা মিটমিটিয়ে হাসছে। লোকটার কথায় যদি রাগী নুহাশও লজ্জায় লাল হয়ে যায় তবে বুঝতে হবে এই লোকটি হয়তো বড্ড রসিক মানুষ হবে।

মিজান সাহেবে মাইশাকে ঠিক চিনতে পারলেন না। তাই অবাকপ্রসন্ন গলায় বললেন,

” মেয়েটা কে শারমিন?”

শারমিন বেগম ইতস্তত করে বললেন,

” আ-আমার মেয়ে ভাইজান।”

“নুহাশের পরে তোমার মেয়ে হয়েছিল আর এ কথাটি একবারও জানানোর প্রয়োজন মনে করলে না?”

শারমিন বেগম মাথা নিচু করে ফেললেন। মিজান সাহেব মাইশার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বললেন,

” আমাকে চিনো মা?”

লোকটার কথায় অন্যরকম এক মায়া আছে। এই ২০ বছরে আজই প্রথম দেখলো মাইশা এই লোকটিকে। তবুও কথাবার্তা শুনে মনে হয় কত গভীরতা আছে এই সম্পর্কে। মাইশা সবিনয়ে বললো,

” না আঙ্কেল!! ”

” আমি তোমার খালু হই। তোমার আম্মুর পাশে যেই বুড়ী মহিলাটি বসে আছে না, সেই বুড়ী মহিলার সুদর্শন স্বামী। চুল পেকেছে তো কি হয়েছে? আজও আমি ১০-১৫ টা বিয়ে করতে পারবো।”

খালুজানের কথায় মাইশা ঠোঁট কামড়ে হাসলো। মিজান সাহেব বললেন,

” কোথায় পড়ো তুমি?”

“নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি। ডিপার্টমেন্ট অফ অ্যাকাউন্টিং।”

মিজান সাহেব নীরবে হাসলেন। মেয়েটা দেখতে পুরোপুরি ওর বাবার মতই হয়েছে। সেই বড়বড় চোখ। গালে টোল পড়া হাসি। হলদে ফর্সা গায়ের রং এককথায় অসাধারণ। শারমিন বেগমের উদ্দেশ্য করে তিনি বললেন,

“রহমান কি এখনও আমার ওপর রেগে আছে?”

“না রেগে থাকলে কি মাইশাকে আর বলতো যে ওর কোনো খালামণি নেই?”

মিজান সাহেব নীরব হয়ে গেলেন। মাইশার একটু জানতে ইচ্ছে হয়েছিল যে কি এমন হয়েছে যার জন্য বাবা এত বড় সত্য ওর কাছে লুকালো? মিজান সাহেব হয়তো মাইশার ভাবভঙ্গি বুঝতে পেরেছিলেন। তাই তিনি বললেন,

“আমার একটি ভুলের জন্যই তোমার বাবা আমাদের সাথে সম্পর্ক নষ্ট করেছে। ভুলটা আমার জীবনের মারাত্মক একটি ভুল ছিলো। এর মাসুলে যে আমায় এত বছর সম্পর্কহীন হয়ে থাকতে হবে তা আমি ভাবতেও পারিনি।”

” কি ভুল খালুজান?”
মাইশা জানতে চাইলো। মিজান সাহেব দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললেন,

“তোমার মার আর রহমানের বিয়ের পর থেকে সকল কাজে তোমার বাবার পাশে একজন বন্ধু হয়ে দাঁড়িয়েছিলাম আমি। ব্যাবসায়িক ক্ষেত্রে বা টাকার প্রয়োজনেও আমি ওকে সাহায্য করেছি। তাই রহমান আমাকে নিজের বড় ভাইয়ের মতই মানতো। আমার কোনো কথাই সে অমান্য করতো না।
একটা জিনিস কি জানো? আমি ছিলাম হুমায়ুন আহমেদের বড় এক ভক্ত। তার উপন্যাসের নামে নিজের বাড়ির নাম রেখেছিলাম ” শঙ্খনীল কারাগার”। আমাদের বড় মেয়ে হওয়ার পর মেয়ের নাম লীলাবতী রাখতে চেয়েছিলাম কিন্ত তোমার খালামণির জন্য তা পারিনি। তখন আমার আগ্রহের কারনে তোমার বড় ভাইয়ের নাম আমি রেখেছিলাম নুহাশ! তোমার বাবা এতেও সায় দিয়েছিলো। নুহাশ তখন অনেক ছোট তাই আমাদের সেই স্মৃতিগুলো ওর হয়তো ভালোমত মনেও নেই। কিন্ত এক দুর্যোগে আমাদের সব সম্পর্ক লন্ডভন্ড হয়ে যায়। ”

এতটুকু বলেই থেমে গেলেন তিনি। চশমাটি খুলে সন্তর্পণে রাখলেন সামনের টি টেবিলে। পুরো ঘরটিতে বিরাজমান একপ্রকার মৌনতা। মাইশা উচ্ছ্বসিত চোখে খালুর দিকে তাকিয়ে আছে। অপেক্ষায় আছে তার কথাগুলো শোনার। মিজান সাহেব মিহি কন্ঠে আবার বলা শুরু করলেন,

“ঘটনাগুলো অনেক আগের। নুহাশ আর আরিয়া ( মিজান সাহেবের বর মেয়ে), দুজনের বয়সই প্রায় ৮-৯ বছর হবে। আমি আমার ব্যবসায়িক এক কাজের জন্য কাতারে গিয়েছিলাম। সেখানে হুট করেই আমার বিশাল অঙ্কের টাকার প্রয়োজন হয়ে পড়ে। আশপাশের বিশ্বাসহীন মানুষের ভীড়ে তোমার বাবা আমায় টাকা পাঠিয়ে দেয় নিজের ব্যাংক একাউন্ট থেকে। একবারও জিজ্ঞেস করেনি যে টাকা দিয়ে আমি কি করবো। হয়তো আমায় বড় ভাই বলে মানত তাই। আমি বলেছিলাম ১ বছরের মধ্যেই টাকাগুলো আমি ফেরত দিয়ে দেবো যা রহমান মেনে নিলো।

কিন্ত ১ বছর হওয়ার আগেই রহমান হটাৎ করে আমার কাছে টাকা চেয়ে বসলো। আমি বলেছিলাম যে কেন। রহমান বললো, জরুরি দরকার। পুরোটা এখন না দিলেও আপাতত ৫০% দিতে বলেছিলো। কিন্ত আমি এ বিষয়ে হেলফেল করে বসি। আর এটাই ছিলো আমার চরম ভুল।

রহমান তোমার দাদির চিকিৎসার জন্য ইমার্জেন্সি টাকা চেয়েছিলো যা আমায় বলা সত্বেও ব্যাস্ততার চাপে একপ্রকার ভুলে বসি। আর আমার কাছেও তেমন একটা ক্যাশ টাকা ছিলো না তাই আমাকে সাফ মানা করে দিতে হয়। তখনই ভেঙে পড়েছিলো রহমান। আমার প্রতি ওর যেই বিশ্বাস টা ছিলো চিকিৎসার অভাবে তোমার দাদির মৃত্যুতে মুহূর্তেই তা ধুলিস্যাৎ হয়ে যায়।
যেদিন আমি টাকা নিয়ে তোমাদের বাড়িতে গিয়েছিলাম সেদিন রহমান একটা প্রশ্নই করেছিলো যে এই টাকার বিনিময়ে আমি কি পারবে কারও জীবন ফিরিয়ে আনতে?

তখন থেকেই আলাদা হয়ে গেলাম আমরা। ছিন্ন করে ফেলে রহমান আমাদের সাথে সব সম্পর্ক। তাইতো তোমার জন্মের কথাও আমাদের অজানা৷ আমাদের ছেলে হওয়ার পর তোমার বাবাকে চিঠিতে এ বিষয়ে জানিয়েছিলাম কিন্ত আমার মনে হয়না যে রহমান এ বিষয়ে তোমাদের কিছু বলেছে।”

কথার ইতি টানলেন মিজান সাহেব। টেবিল থেকে গ্লাসটি নিয়ে ঢকঢক করে পানিটুকু খেয়ে ফেললেন তিনি। পুরোনো সেই তিক্ত স্মৃতিগুলো মনে করলে আজও বিভৎস লাগে সেগুলো। নুহাশ নির্বিকার ভাবে বসে আছে। মাইশা উদাসীন ভাবে ওর আম্মুর দিকে তাকালো। উনার চোখ অশ্রুসিক্ত। এমনকি খালামণিরও। মিজান সাহেব শারমিনকে জিজ্ঞেস করলেন,

” রহমান জানে যে তোমরা এখানে আছো?”

” না। উনি কিছুই জানেন না।”

“তবে তোমাদের এখানে বেশিক্ষণ থাকাটা ঠিক হবে না। আমি চাই না আমাদের জন্য তোমার আর রহমানের মধ্যে কোনো ঝামেলা হোক।”

“বছরখানেক তো আপনাদের অভাবে ধুকে ধুকে জীবন পার করেছি। আর কত? ছেলে-মেয়েদের তো বলতেই পারলাম না আপনাদের কথা। (কিছুক্ষণ থেমে) আরিয়া কেমন আছে? ”

“কি আর হবে? বিয়ের বয়স পার হয়ে গিয়েছে। ”
মলিন গলায় বললো মাইশার খালামণি।

“মানে?”

“বয়স তো আর কম হয়নি। ভার্সিটির লেকচারার হিসেবে ৫ বছর ধরে চাকরি করছে। এর মধ্য এক ছেলেকে পছন্দ হয়েছিল। বিয়ের বিষয়টাও পাকাপাকি। কিন্ত এক দুর্ঘটনায় ওই ছেলে মারা যাওয়ার পর পুরোপুরি ভেঙে গেলো আরিয়া। আজও তাই বিয়ে করতে চায়নি। আর আমরাও তেমন জোর করিনি। ”
মিজান সাহেব বললেন।

“আর ছোটসাহেব? ওর সম্পর্কে তো কিছুই জানলাম না। ” (শারমিন বেগম)

“ওই ছেলের কথা আর বলো না। এখনও বাপের টাকায় ফূর্তি করে দেশ ঘুরে বেড়ায়।কিছুদিন পর মাস্টার্সের পরীক্ষা দিবে তাই ঘরে পড়ে আছে। নয়লে তো আমার ভবঘুরে বদমাইশ ছেলে ব্যাগপত্র নিয়ে কোন প্রান্তে চলে যেত তার কোনো ঠিকানা নেই। আরিয়াকে সাথে নিয়ে বাইরে গিয়েছে ওই লাটসাহেব। আসার সময় প্রায় হয়ে এসেছে। ”

থমথমে গলায় বললো রাহেলা বেগম। বোঝা যাচ্ছে ছেলের এসব আচরণে তেমন সন্তুষ্ট নন তিনি। মিজান সাহেব হালকা হেসে বললেন,

“জোয়ান ছেলেদের এত সামলে রাখা ঠিক না রাহেলা। একটু ঘুরুক। বিয়ের পর তো বউ বাচ্চা নিয়েই থাকতে হবে।”

“তোমার আস্কারায় ছেলে বিগড়েছে আমার। তুমি আর কথাই বলো না।”

মাইশা, নুহাশ, শারমিন বেগম ফ্যালফ্যাল নয়নে ওদের কথা শুনছিলো। পুরো পরিবারটাই আগের মত প্রাণোচ্ছল আছে শুধু কয়েকটি অধ্যায়ে কিছু কাছের মানুষ নেই। ওদের কথায় মাঝেই পেছন থেকে কেউ গলা উঁচিয়ে বললো,

“বাবা-মা! আমরা এসে পড়েছি।”

পরিচিত একটি কন্ঠ শুনে সাথে সাথে পেছনে ঘুরলো মাইশা। দু-জনের চোখাচোখি হতেই যেন বিস্ময়ের এক চরম পর্যায়ে চলে গিয়েছে ওরা। মাইশা চোখের পলক ফেললো বারকয়েক ভুল দেখছে না কি না তা স্থির করার জন্য। অবশেষে মনস্থির করতে বাধ্য হলো যে ও যা দেখছে সবই সত্যি। আয়াত দাঁড়িয়ে আছে ওর উল্টোপাশে।চুলগুলো এলোমেলো। গরমের দাপটে খানিকটা ঘেমে গিয়েছে। হাতে পেপসির ছোট একটি বোতল। ওর পাশেই দাঁড়ানো সালোয়ার কামিজ পরিহিত অতীব সুন্দরী একটি মেয়ে। এটাই হয়তো খালামনির বড় মেয়ে আরিয়া। তবে কি এই ছেলেটা…..? আর ভাবতে চাইলো না মাইশা। কেননা এর থেকে বেশি ভাবলে হয়তো অজ্ঞান হয়ে মরেই যাবে।

মিজান আলতো হেসে বললো,
“ওয়েলকাম হোম মাই ডায়মন্ডস। দেখো, কে এসেছে!”

“কে বাবা?”

“তোমাদের খালামনি।”

আরিয়া আর আয়াতের কিছু বুঝতে আর বাকি রইলো না যে এরা কারা। রহমান যেমন মাইশা থেকে এ সত্য লুকিয়ে রেখেছিলো মিজান এমন কিছুই করেনি। শারমিন বেগম অবাক স্বরে বললেন,

“মাশাল্লাহ আপা। তোমার ছেলে দেখি বেশ বড় হয়ে গিয়েছে। নুহাশের থেকে বেশ ছোট হলেও ছেলের তো বিয়ের বয়স হয়ে গিয়েছে।”

“এমন আকাইম্মা পোলারে কে বিয়ে করবে?”

রাহেলা বেগম বলে ফেললেন। আলতো হাতে মাথা চুলকালো আয়াত। মাইশাকে দেখে সামন্য হকচকিয়ে গেলেও কোনো প্রতিক্রিয়া দেখালো না। শারমিন বেগম এবার বললেন,

“অনেক সময় ধরে কথা বললাম আপনাদের সাথে। এখন বেশি দেরি করা যাবে না। আমরা তাহলে আসলাম ভাইজান।”

মিজান সাহেব মুচকি হেসে সম্মতি জানালেন। সেই কথামতো সোফা থেকে উঠে বাইরে বেরোনোর জন্য উদ্যত হলো নুহাশ আর মাইশা। দরজা পর্যন্ত ওদের এগিয়ে দিলো বাকি সবাই। এরই মধ্যে আয়াত মাইশার কাছে সরু কন্ঠে বললো,

“কাল দেখা হচ্ছে ম্যাম ভার্সিটির ইভেন্টে। এবার কোনো ছাড়াছাড়ি নেই কাজিন সিস্টার। জমপেশ প্রেম হবে!”

আয়াতের এমন কথায় মাইশা যেন অবাক না হয়ে পারলো না। তবুও নুহাশের পাশ ঘেঁষে আপনমনে হেটে চলছে। আয়াতের দিকে আড়চোখে তাকিয়ে দেখলো সে দাঁত কেলিয়ে হাসছে। মাইশা এই ছেলের বেহায়াপনা না দেখে মুখ না বাকিয়ে যেন পারলো না। বিড়বিড় করে বললো,

“নির্লজ্জ কোথাকার! ”

~চলবে