Divorce Part-12+13

0
3831

💔#Divorce💔
Writer: Tahmina Toma
Part:12

নিলাঃ হোয়াট,,, সামান্য এক কাপ কফি চেয়েছি বলে কথা শুনতে হবে,,,,

ঠাসসসসস,,,,

(নিলা কফির কাপটা ছুঁড়ে ফেলে দিলো। তিথি অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে ভাঙা কাপটার দিকে,,,)

নিলাঃ আরিয়ান,,,,,,

আরিয়ানঃ কী হয়েছে,,,,,,??

নিলাঃ এক কাপ কফি চেয়েছি বলে তোমার বোন আমাকে কতগুলো কথা শুনালো,,,, নিজে বানিয়ে খেতে বলছে,,,,

আরিয়ানঃ নিলা আস্তে কথা বলো,,,,, বাড়ি ভর্তি মেহমান,,,, চেঁচামেচি করলে সবাই কী বলবে,,,??

নিলাঃ এখন আমার কথা তোমার কাছে চেঁচামেচি মনে হচ্ছে,,,,,,??

মাঃ কী হয়েছে এখানে,,,,?? এত চেঁচামেচি কেন,,,??

আরিয়ানঃ কিছু না,,,,।

বিথীঃ এত চেঁচামেচি করছো কেন তোমরা,,,,। বাড়িতে মেহমান ভর্তি,,, সবাই কানাঘুঁষা করছে,,,,।

তিথিঃ দেখ না আপু,,, আমি শুধু,,,,

বিথীঃ চুপ কর,,,,তোরা যেমন তোদের সাথে তেমনি করা উচিত,,,, খুব নেচেছিলি না এবার বুঝবি কী হারিয়েছিস তোরা,,,, আজকেই শেষ,,,, এ বাড়িতে আর কখনো পা রাখবো না আমি,,,,

(বিথী বের হয়ে যেতেই তিথি আর আরিয়ানের মাও তাদের সাথে বের হয়ে গেলো,,,)

আরিয়ানঃ প্রথম দিনই এমন সিনক্রিয়েট না করে হচ্ছিল না তোমার,,,,।

নিলাঃ আরিয়ান,,,,,, এখানে আমার দোষ কোথায়??

আরিয়ানঃ কারো কোন দোষ নেই সব দোষ আমার,,,

(আরিয়ান হনহনিয়ে বের হয়ে গেলো রুম থেকে,,,)

নিলাঃ যা বাবা,,, আমি কী করলাম,,,??
,,,,,

অন্তরাঃ মা আমি আসছি,,,,

মাঃ ঠিক আছে,,,দেখেশুনে যাস,,,

অন্তরাঃ হুম,,,,

(বাড়ি থেকে বের হতেই জ্যোতির সাথে দেখা হয়ে গেলো,,,।)

অন্তরাঃ কী রে তোর মুখটা এমন পেঁচার মতো করে রেখেছিস কেন,,,??

জ্যোতিঃ ভালো লাগছে না,,,, পরীক্ষার পরই বিয়ে,,,।

অন্তরাঃ গুড নিউজ,,,, এখানে মন খারাপ করার কী আছে,,,??? আমার জানা মতে তোর কারো সাথে রিলেশন নেই,,,,, তাহলে প্রবলেম কোথায়,,,??

জ্যোতিঃ কিছু না,,, এমনি,,,,,,

(অন্তরা আর জ্যোতি রিকশায় ওঠে গেলো,,, জ্যোতি একদম চুপচাপ,,,)

অন্তরাঃ তুই কী কাউকে ভালোবাসিস জ্যোতি,,,??

জ্যোতিঃ ন,,না,, তুই তো জানতি তাহলে,,,,।

অন্তরাঃ আমার কিন্তু সেটা মনে হচ্ছে না,,, আমাকেও কী বলা যায় না,,,

জ্যোতিঃ তেমন কিছু না,,,

অন্তরাঃ বলবি না,,,??

(জ্যোতি অন্তরার দিকে তাকাতেই চোখ থেকে টপ করে পানি গড়িয়ে পড়লো)

অন্তরাঃ কী হয়েছে জ্যোতি,,,,,?? বল আমাকে,,,।

জ্যোতিঃ কী করবো আমি,,,, বুঝতে পারছি না,,, যাকে ভালোবাসি সে হয়তো আমার নামও মনে রাখেনি,,,, তাকে কোনদিন বলতেও পারবো না,,, কিন্তু ভুলতে পারছি না আমি,,,,।

অন্তরাঃ কার কথা বলছিস তুই,,,??

জ্যোতিঃ প্রিন্সিপাল ম্যামের বড় ছেলে রিয়াদ,,,,,

অন্তরাঃ সিয়ামের বাবা,,,,???

জ্যোতিঃ হুম,,,,

অন্তরাঃ কী বলবো বুঝতে পারছি না,,,, তোর বাবা-মা মেনে নেবে না,,,। আর সেটা পরের বিষয় রিয়াদ ভাইয়াই কিছু জানে না,,,, এখানে আর কী করার আছে,,,??

জ্যোতিঃ সবই বুঝতে পারছি,,,, কিন্তু মনকে বুঝাতে পারছি না,,,, কী করবো বল,,,??

অন্তরাঃ কিছু দরকার হলে বলিস,,,, হেল্প করার চেষ্টা করবো,,,?? কিন্তু দেখ আমার মনে হয় এটা তোর ভুলে যাওয়া উচিত,,,।

জ্যোতিঃ চেষ্টা করবো,,,চলে এসেছি নাম,,,

অন্তরাঃ হুম,,

(জ্যোতি আর অন্তরা রিকশা থেকে নেমে ভার্সিটির ভেতরে যেতে লাগলো,,,, সিয়াম খেলছে সাথে রুপা,,, অন্তরাকে দেখে দৌড়ে অন্তরার কাছে চলে এলো,,,)

সিয়ামঃ মা,,,,

অন্তরাঃ কেমন আছে আমার সিয়াম বাবাটা,,,।

সিয়ামঃ বালো,,, তোমাল থাতে আমাল আলি (তোমার সাথে আমার আড়ি)

অন্তরাঃ কেন বাবা,,,,?? কী করেছি আমি,,,??

সিয়ামঃ তুমি আমাল থাতে বালি যাওনা তেন,,, লাতে আমাল থাতে ঘুমাও না তেন,,,??(তুমি আমার সাথে বাড়ি যাওনা কেন,,, রাতে আমার সাথে ঘুমাও না কেন,,,??)

অন্তরাঃ যাবো তো,,,,এখন আমি যাই,,,, আমার তো পড়াশোনা করতে হবে,,,

সিয়ামঃ থিক আতে,,,আদকে আমাল সাতে দাবে তো,,,(ঠিক আছে,,,,আজকে আমার সাথে যাবে তো,,,)

অন্তরাঃ হুম,,,(সিয়ামের কপালে একটা কিস করে চলে এলাম,,,,। ছেলেটা একটু ভালোবাসা পাওয়ার জন্য পাগল,,)

হৃদয়ঃ অন্তরা,,,,

অন্তরাঃ (ক্লাসে যাওয়ার সময় পেছন থেকে হৃদয় ভাইয়া ডাক দিলো) জী ভাইয়া,,,

হৃদয়ঃ তোমার সাথে আমার একটু কথা ছিলো,,,,

অন্তরাঃ জী ভাইয়া বলুন,,,,,

হৃদয়ঃ এখানে না আমার সাথে এসো,,,,।

অন্তরাঃ কিন্তু আমার ক্লাস শুরু হয়ে যাবে,,,,

হৃদয়ঃ বেশিক্ষণ লাগবে না,,,, জ্যোতি তুমি বরং ক্লাসে যাও আর অন্তরা আমার সাথে একটু এসো,,,

অন্তরাঃ জ্যোতি আসুক,,,,

হৃদয়ঃ তুমি কী আমার সাথে আসতে ভয় পাচ্ছো,,,??

অন্তরাঃ না না তেমন কিছু না,,,,।

হৃদয়ঃ তাহলে এসো,,, আর জ্যোতি ক্লাসে যাও,,,

জ্যোতিঃ ঠিক আছে,,,, অন্তরা তাড়াতাড়ি চলে আছিস,,,

অন্তরাঃ হুম,,,,

(হৃদয় আগে আগে যাচ্ছে আর অন্তরা তার পিছু পিছু যাচ্ছে,,,,)

অন্তরাঃ(কোথায় নিয়ে যাচ্ছে,,,?? কেনই বা নিয়ে যাচ্ছে,,,)

হৃদয়ঃ(কী করে বলবো জানি না,,,,,কিন্তু আজ বলতেই হবে,,,, এভাবে কষ্ট পাওয়ার চাইতে বলে দেওয়াই ভালো,,,)

(হৃদয় ভার্সিটির লেকের পারে নিয়ে এলো অন্তরাকে,,,, অনেকক্ষণ চুপ করে আছে হৃদয়,,,)

অন্তরাঃ ভাইয়া আপনি কিছু বলতে চাইছিলেন,,,, আমার ক্লাসে দেরি হয়ে যাচ্ছে,,,।

হৃদয়ঃ কী করে বলবো বুঝতে পারছি না,,,?? কোনদিন কোন মেয়েকে দেখে এমন ফিল করিনি,,,,। কখনো এমন পরিস্থিতিতে পড়তে হবে তাও ভাবিনি,,,,।

অন্তরাঃ মানে,,,।

হৃদয়ঃ তোমাকে প্রথম দেখেছিলাম ফুসকা স্টলের সামনে,,,, ধাক্কা লেগেছিলো তোমার সাথে,,,, কান্নাভেজা চোখে তাকিয়েছিলে আমার দিকে,,,, সেই চোখ এখনো ভুলতে পারিনি আমি,,,, কিছু ছিলো সেই দৃষ্টিতে,,,, অনেক কথা লুকানো ছিলো,,,, সেই কথাগুলো বুঝতে চাই আমি,,,, জানতে চাই চোখের গভীরে লুকানো কথাগুলো,,,,

অন্তরাঃ কী বলছেন এসব আপনি,,,??

হৃদয়ঃ আমি কী বলতে চাইছি তুমি খুব ভালো করেই বুঝতে পারছো,,, আর সেই জন্যই আমাকে প্রতিনিয়ত এড়িয়ে চলছো,,, কিন্তু সেটা আমাকে কষ্ট দিচ্ছে,,,,। ভালোবাসি অন্তরা,,,কীভাবে প্রপোজ করতে হয় তা আমি জানি না,,, তাই সোজা কথা সোজা ভাবেই বললাম,,,,

অন্তরাঃ আপনি পাগল হয়ে গেছেন,,,, বাজে বকছেন,,,।

হৃদয়ঃ তুমি যা ইচ্ছে বলতে পারো,,, হ্যা সত্যি আমি পাগল হয়ে গেছি,,,, আমার জন্য সারা ভার্সিটির মেয়ে পাগল আর আমি এমন একজনের জন্য পাগল হয়ে গেছি যার মুখটা পর্যন্ত দেখিনি এখনো,, কী করবো বলো,,,??

অন্তরাঃ কতটুকু জানেন আপনি আমার সম্পর্কে,,,, যে ভালোবাসা আপনি আজ ভুলতে পারছেন না,,, আমার সম্পর্কে জানলে আপনার এই ভালোবাসা খোঁজেও পাবেন না আপনি,,,, (তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে)

হৃদয়ঃ আমি কিছু জানতে চাই না,,,,,

অন্তরাঃ আমিও কিছু বলতে চাই না আপনাকে,,, দয়া করে আমার সামনে আর আসবেন না,,,

হৃদয়ঃ কিন্তু কেন অন্তরা,,,?? আমি কী তোমার যোগ্য নই,,,,,??

অন্তরাঃ আমার সম্পর্কে আগে জেনে নিয়েন,,,,। এরপর এই ভালোবাসা আমার জন্য খোঁজে পেলে তারপর নাহয় আমার সামনে এসে দাঁড়ানোর কথা ভাববেন,,, আপনি কেন পৃথিবীর কোন ছেলেই আমার মতো মেয়েকে নিজের জীবনসঙ্গী করার কথা ভাবতে পারবে না,,,,।(কথাটা বলতেই চোখ পানিতে ভরে ওঠলো)

হৃদয়ঃ মানে,,,,,।

অন্তরাঃ আমি আপনাকে কিছু বলতে পারবো না,,,

হৃদয়ঃ অন্তরা আমার কথা শুনো,,,

(হৃদয়ের কথা না শুনেই দৌড়ে চলে গেলো অন্তরা,,,)

অন্তরাঃ(স্বপ্ন দেখতে চাই না আমি,,,, ভালোবাসা,,, যখন জানবেন আমি একটা ডিভোর্সি মেয়ে,,, যে কোনদিন মা হতে পারবে না,,,, ভালোবাসা তো দূর আমাকে দেখতেও চাইবেন না,,,, ভালোবাসা বলে কিছু নেই আমার জীবনে,,,,)

জ্যোতিঃ ভাইয়া,,,,

হৃদয়ঃ জ্যোতি তুমি,,,,

জ্যোতিঃ অন্তরা আমার ব্যাগ নিয়ে চলে এসেছিলো সেটাই নিতে এসেছিলাম আর এসে দেখি,,,,

হৃদয়ঃ ওহ্

জ্যোতিঃ ভালোবাসেন,,,,

হৃদয়ঃ,,,,,,,,,

জ্যোতিঃ অন্তরা ঠিকই বলেছে,,,, ওর অতীত জানলে আপনি কেন,,, হয়তো কোন ছেলেই ওকে ভালোবাসতে পারবে না,,,,,

হৃদয়ঃ But why,,,, আমি যতটুকু বুঝেছি ওর মতো মেয়ে হয়তো হাজারে একটা পাওয়া যাবে,,,,

জ্যোতিঃ হুম,,,, ঠিকই বুঝেছেন,,,। হাজারে নয় লাক্ষে একটা পাওয়া যাবে,,,,

হৃদয়ঃ তাহলে প্রবলেম কোথায়,,,??

জ্যোতিঃ She is divorced,,,,,

হৃদয়ঃ What,,,,,,???

চলবে,,,

💔#Divorce💔
Writer: Tahmina Toma
Part: 13

জ্যোতিঃ She is divorced,,,,,

হৃদয়ঃ What,,,,,,???

জ্যোতিঃ হুম,,,, আপনি ঠিক শুনেছেন,,,, অন্তরা ডিভোর্সি,,,,, আর ডিভোর্সের এখনো একমাসও হয়নি,,,, শুধু তাই নয় অন্তরা কোনদিন মা হতে পারবে না,,,,,

(হৃদয় ধুপ করে বসে পড়লো পাশের বেঞ্চে,,,,)

হৃদয়ঃ প্লিজ জ্যোতি,,,, আমার সাথে মজা করো না,,,।

জ্যোতিঃ ভাইয়া আমি মজা করছি না,,,,,,এটাই কঠিন সত্য,,,,

হৃদয়ঃ ওর বয়স কেবল ২০,,,, আর বিয়ে,,, ডিভোর্স এসব কী করে হতে পারে,,,,??

(জ্যোতি আস্তে করে হৃদয়ের থেকে একটু দূরে বসে পড়লো,,,, তারপর একে একে সব খোলে বললো)

হৃদয়ঃ I can’t believe how any human being can be so inferior,,,, সত্যি আমি এটা বিশ্বাস করতে পারছি না,,, একটা মানুষ এতটা নিকৃষ্ট সত্যি হতে পারে,,,,??? নিজের সন্তানকে মেরে দিলো,,,, আর একটা মেয়ের জীবনের সবচেয়ে বড় অহংকার নষ্ট করে দিলো,,,,,

জ্যোতিঃ ৪ টা বছর নরক যন্ত্রণা ভোগ করেছে অন্তরা,,,,

হৃদয়ঃ এরপরও ঐ রাস্কেলটা মুক্ত আকাশের নিচে ঘুরে বেড়াচ্ছে,,,,??

জ্যোতিঃ শুধু ঘুরে বেড়াচ্ছে না,,,, গতকাল আবার বিয়েও করেছে,,,,

হৃদয়ঃ Whatt,,,,??

জ্যোতিঃ হুম,,,, আমার এক কাজিনও একই অফিসে জব করে,,,, সে অন্তরা আর আরিয়ানের সম্পর্কে সব জানতো,,,, তাই আরিয়ানের আবার বিয়ের খবর আমাকে জানিয়েছে,,,,

হৃদয়ঃ অন্তরা কোনো একশান নেয় নি,,,,??

জ্যোতিঃ না,,,,

হৃদয়ঃ But way,,,,???

জ্যোতিঃ হয়তো আরিয়ানের সাথে পেরে ওঠবে না বা আরিয়ানের সাথে আর মুখোমুখি হতে চায় না তাই,,, প্রথমদিন আপনি জিজ্ঞেস করেছিলেন না,,,, মেয়েটা কান্না করতে করতে চলে গেলো কেন,,,??

হৃদয়ঃ হুম,,,

জ্যোতিঃ কোন মেয়ে যদি তার চোখের সামনে দেখে তার স্বামী অন্য একটা মেয়ে কে নিজ হাতে খাইয়ে দিচ্ছে,,,, তখন কী করবে সে,,,??

হৃদয়ঃ জানোয়ারটাকে হাতের কাছে পেলে খুন করে ফেলতাম,,,,

জ্যোতিঃ এই ভয়েই অন্তরা তার ভাইয়াকেও কিছু জানায়নি,,,, এতকিছু জানলে আরাভ ভাইয়াও হয়তো খুনী হয়ে জেলে থাকতো,,,,।

হৃদয়ঃ লোকটার পরিচয় আর ঠিকানা পাওয়া যাবে,,,??

জ্যোতিঃ কেন ভাইয়া,,,??

হৃদয়ঃ এমন মহান একজন অমানুষকে দেখার অনেক ইচ্ছে হচ্ছে,,,,,,

জ্যোতিঃ প্লিজ কোন প্রবলেম করবেন না ভাইয়া,,,, অন্তরা আর কোন ঝামেলা চায় না,,,, আমি জানি আপনি অন্যায় সয্য করতে পারেন না,,,, কিন্তু আমাদের সমাজে এখন এটা খুব কমন বিষয়,,, কয়টার প্রতিবাদ করবেন আপনি,,,,।

হৃদয়ঃ যে কয়টা করার সুযোগ হবে,,,,,,

জ্যোতিঃ কিন্তু,,,,,

অন্তরাঃ জ্যোতি,,,,,

জ্যোতিঃ হ,,,হ্যা,,, তুই এখানে,,,।

অন্তরাঃ তোকে খোঁজছিলাম,,,, দূর থেকে এখানে বসে থাকতে দেখলাম,,,,, এখানে কী করছিস,,,??

জ্যোতিঃ কিছু না,,,,,

অন্তরাঃ চল,,,,,

জ্যোতিঃ তুই এগো,,,, আমি আসছি,,,,

অন্তরাঃ তাড়াতাড়ি আয়,,,,

(অন্তরা চলে গেলো,,,, হৃদয় এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে অন্তরার যাওয়ার দিকে,,,,)

হৃদয়ঃ(কতটা কষ্ট লুকিয়ে রেখেছো বুঝতেই পারিনি আমি,,,,,,,)

জ্যোতিঃ আসছি ভাইয়া,,,,।

হৃদয়ঃ আরিয়ানের পরিচয়টা,,,,??

জ্যোতিঃ আর অন্তরা,,,,,

হৃদয়ঃ,,,,,,,,,,

জ্যোতিঃ আগেই বলেছিলাম অন্তরার অতীত জানলে এই ভালোবাসা আর থাকবে না,,,,,(তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে,,,) আপনার দোষ নেই,,,, কোন ছেলেই এটা মেনে নিতে পারবে না,,,, আসছি,,

(হৃদয় কিছুই বললো না,,, চুপচাপ বসে রইলো,,, জ্যোতি চলে গেলো অন্তরার দিকে,,,)

★ছয় মাস পর★

(আজ জ্যোতির বিয়ে ভেঙে গেছে। জ্যোতি নিজেই ভেঙে দিয়েছে,,, নিজের সাথে পেড়ে ওঠেনি সে,,,, জ্যোতির বাবা অনেক রেগে গেছে,,, এত ভালো ছেলে হাতছাড়া হয়ে গেলো,,, সাথে মানসম্মানও নষ্ট হয়েছে,,, বিয়ের আয়োজন কমপ্লিট হয়ে গিয়েছিলো,,,, অনেক মেহমান এসেও পড়েছিলো,, আত্নীয় স্বজনের সামনে নাক কাটা গেলো,,,, জ্যোতিকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে রাগের মাথায়,,,,অন্তরা সাথে করে বাড়ি নিয়ে গেছে জ্যোতিকে,,, ছয় মাস হয়ে গেলো হৃদয় আর অন্তরার সামনে আসেনি,,,, অন্তরা হয়তো ভুলে যেতো হৃদয় নামে কেউ আছে,,, শুধু সিয়ামের জন্য হৃদয়কে অন্তরার মনে আছে,,,, মাঝে মাঝে অন্তরার হাসি পায় হৃদয়ের কথা ভেবে,,, বেচারা প্রথম ভালোবাসায় ভুল সিলেকশন করে ফেলেছে,,,,,। অন্তরাকে বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে আবার,,, অন্তরার মা আর ভাবীর জন্য বাধ্য হয়েছে আরাভ,,,। কিন্তু যতগুলো প্রপোজাল এসেছে সবারই অনেক বেশী বয়স আর বড় বড় ছেলেমেয়ে আছে,,,, কেউ ডিভোর্সি আবার কারো বউ মারা গেছে,,,। ভালো কোন প্রপোজাল এলে তারাই আবার না করে দেয়,,,, কোনোটা ঠিক হয়ে আসছে না,,, আর অন্তরাও বিয়ে করতে রাজি না,,,, কিন্তু ওরই বা কী করার আছে,,,?? নিজেকে বোঝা মনে হয় এই পরিবারে,,,,জ্যোতিকে নিজের রুমে নিয়ে বসালো অন্তরা)

অন্তরাঃ কেন এমন করলি জ্যোতি,,,?? এটা ছেলেমানুষী ছাড়া আর কিছু নয়,,,।

জ্যোতিঃ কী করবো বল,,,?? আমি কিছুতেই মেনে নিতে পারছি না অন্যকাউকে,,,,,

অন্তরাঃ কিন্তু এটা কখনো সম্ভব না,,,সেটা তুইও জানিস আর আমিও

জ্যোতিঃ আমি পাগল হয়ে যাবো মনে হচ্ছে,,,

অন্তরাঃ তোর সাথে রিয়াদ ভাইয়ার কোন যোগাযোগ আছে,,,,,??

জ্যোতিঃ না,,,,

অন্তরাঃ সত্যি কী নেই,,,??

জ্যোতিঃ প্রতিদিন ঠিক বিকেল ৪টায় উনি একটা পার্কে এসে এক ঘন্টা একটা বেঞ্চে বসে থাকে,,, টিউশনের কথা বলে তার একটু দূরে আমিও রোজ বসে উনাকে দেখি,,,, একটা নাম্বার থেকে কল দেই শুধু উনার গলাটা একবার শুনবার জন্য,,,, হ্যালো,,, কে বলছেন,,,?? এই কথাই বলে শুধু,, কিছুদিন গেলে নাম্বার ব্লক করে দেয় আমি আবার নতুন নাম্বার নেই,,,

অন্তরাঃ তুই সত্যি পাগল হয়ে গেছিস,,,, কেন এমন করছিস,,,।

জ্যোতিঃ কাউকে ভালোবাসা কী অন্যায়,, তুই বল,,?

অন্তরাঃ ভালোবাসা অন্যায় নয়,,, কিন্তু যে ভালোবাসার বিনিময়ে শুধু কষ্ট পেতে হয় সেই ভালোবাসা অন্যায়,,,। তুই শুধু নিজে কষ্ট পাচ্ছিস না,,, সাথে বাবা-মাকে কষ্ট দিচ্ছিস,,,

জ্যোতিঃ বুঝতে পারছি আমি,,, কিন্তু কী করবো,,,??

অন্তরাঃ এখন কী করবি,,,, আঙ্কেল অনেক রেগে আছে,,,,

জ্যোতিঃ আমি বিয়ে করতে পারবো না এখন,,, যদি কখনো মনটাকে বুঝাতে পারি তাহলে ভেবে দেখবো,,,।

অন্তরাঃ আঙ্কেল মনে হচ্ছে বাসায় ঢুকতে দেবে না,,,,।

জ্যোতিঃ একটা জবের ব্যবস্থা করতে হবে আর ভার্সিটি হস্টেলে থাকার ব্যবস্থা করতে হবে,,,

অন্তরাঃ কী করে করবি এসব,,,,??

জ্যোতিঃ সেটা নিয়ে আমার কোন চিন্তা নেই,,,।

অন্তরাঃ কেন,,,,??

জ্যোতিঃ আমি একটা কল করে আসছি,,,

অন্তরাঃ হুম,,,

(জ্যোতি ফোন নিয়ে বেলকনিতে চলে গেলো আর অন্তরা গেলো জ্যোতির জন্য খাবার আনতে,,,)

ক্রিংক্রিংক্রিং

জ্যোতিঃ কেমন আছেন ভাইয়া,,,??

হৃদয়ঃ আলহামদুলিল্লাহ,,,, তুমি,,,আর অন্তরা,, কেমন আছো,,??

জ্যোতিঃ আলহামদুলিল্লাহ,,,, ভাইয়া আমাকে একটা হেল্প করতে হবে,,,।

হৃদয়ঃ কী হেল্প,,,??

জ্যোতিঃ ভাইয়া আমাকে একটা জবের ব্যবস্থা করে দিতে হবে আর ভার্সিটির হস্টেলে থাকার ব্যবস্থা করে দিতে হবে,,,

হৃদয়ঃ জবের ব্যবস্থা আমি এখনই করে দিতে পারবো কিন্তু হস্টেলের ব্যবস্থা,,,??

জ্যোতিঃ কিন্তু থাকার ব্যবস্থা করে দিতেই হবে ভাইয়া,,,,

হৃদয়ঃ কোন প্রবলেম হয়েছে,,,??

জ্যোতিঃ আমার বিয়ে ভেঙে দিয়েছি,,, বাবা বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে,,,,

হৃদয়ঃ What,,,?? কিন্তু কেন,,,,??

জ্যোতিঃ,,,,,,,,

হৃদয়ঃ ঠিক আছে,,, আমি তোমার সাথে দেখা করছি,,,, তারপর সব শুনবো,,,,। আর কয়েকদিন পর আমি কানাডা চলে যাচ্ছি,,,,, তার আগেই তোমার সব প্রবলেম সলভ করার চেষ্টা করবো,,,।

জ্যোতিঃ কানাডা,,,,,???

হৃদয়ঃ হুম,,,

চলবে,,,,