9+10part
first love….
Samira Afrin Samia
Part: 9
জান্নাতঃ কিরে কি হয়ছে? কাকে এত বকাবকি করতেছিস।
আমিঃ পুরো মহাভারত শেষ আর ওনি এখন এসে জানতে চায় কি হয়ছে। এতক্ষনে আসার নাম হলো।
সব কয়টা এক সমান।
সকাল সকাল ওই কুত্তাটা মুড অফ করে দিছে।
ধ্যাৎ আজ আর ক্লাসই করব না।…..
বাসায় চলে আসলাম। বাসায় এসে ফ্রেশ হয়ে দুপুরে না খেয়ে ঘুমিয়ে গেলাম।
আম্মু অনেক বার খাবার জন্য ডাকছে।
বিকেলে জান্নাত আমাদের বাসায় আসলো।
জান্নাতঃ আন্টি সামিহা কোথায়?
আম্মুঃ ওর রুমে আছে। কলেজ থেকে এসে না খেয়ে ঘুমিয়ে গেল।এখনও উঠেনি।
জান্নাতঃ আচ্ছা তুমি থাকো। আমি সামিহাকে ডাকতে গেলাম।
কুম্ভকর্ণের ঘুম ভেঙ্গে যাবে পরেও তোমার মেয়ের ঘুম ভাঙ্গবে না
আম্মুঃ কি আর করবো বল।একেতো এক মাএ মেয়ে তার ওপর বাবার আদর পেয়ে বাদর হয়ে গেছে।
কিছু বলতে ও পারি না।
জান্নাতঃ সামিহা ওঠ বলছি। ওই কুত্তি অনেক ঘুমাইছস। আর লাগবে না এখন ওঠ।
আমিঃ ঘুম ঘুম চোখে কি হয়ছে রে এভাবে ডাকতেছিস কেন। তর ঐ চিকনা বফটা অন্য কোন মেয়েকে নিয়ে পালাইছে নাকি?
নিশিঃওই আমার বফ কে নিয়ে কোন কথা বলবি না।
আমিঃ আচ্ছা যা কিছু বলবো না। এখন বল তুই আমার বাসায় কেন?
নিশিঃ কেন মানে? কুত্তি তুই না বলছিলি আজ বিকালে সবাই ফুচকা খেতে যাব।তাই তো সবাই ওখানে গিয়ে আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে।
আমিঃইস দোস্ত একে বারে ভুলে গেছিলাম। তুই পাঁচ মিনিট দাড়া আমি ফ্রেস হয়ে আসি।
জান্নাতঃ হুম ঠিক পাঁচ মিনিট মনে থাকে যেনো।
বিকালে রাস্তার পাশে একটা ফুচকার দোকানে।
আমরা ফ্রেন্ডরা প্রায়ই এখানে এসে ফুচকা খায়। আজও আসলাম।
আমি আর জান্নাত এসে দেখি কনিকা আখি স্বর্না নিশি আগে থেকেই দাড়িয়ে আছে।
কাকু পাঁচ প্লেট ফুচকা দেও তো স্পেশাল করে।
কাকুঃ হুম মামনি তুমি আসার আগেই বানিয়ে রাখছি।
তোমার বন্ধুদের দেখেই ফুচকা বানিয়ে রাখছি।
আমিঃ কাকু তুমিও না পুরাই গুলু গুলু………..
স্বর্নাঃ কিরে জানু তুই তো বলছিলি এখানে নাকি তর বফ আসবে। কই এখনও তো আসল না।
আমিঃআরে দেখ হয়তো ওকে রেখে অন্য মেয়েকে নিয়ে পার্কে বসে লুতু পুতু প্রেম করছে।
জান্নাতঃ একদম বাজে কথা বলবি না।ওই দেখ এসে গেছে।
আমিঃ হুম ভালো। পিছন ফিরে যা দেখলাম তা দেখে আমার চোখ হাঁসের ডিমের মত বড় হয়ে গেল।
তর বফের সাথে উল্লুকটা কেন আসছে। লাল বান্দরটা কে এখানে আসতে কে বলছে?
জান্নাতঃ আরে দাড়া না দেখি ওর সাথে ওই ছেলেটা কেন আসছে।
জান্নাতের বফ সিয়াতঃ হাই।।।তুমরা সবাই কেমন আছ?
এ হলো তানভীর আমার বেস্ট ফ্রেন্ড। কিছু দিন হলো দেশে ফিরছে। ও আসতে চাই ছিল না। আমি অনেক বার বলাতে আসছে। ভাবলাম সবাই এক সাথে ফুচকা খাবো।
আমিঃ উল্লুকরাও ফুচকা খায় নাকি?দেখ চান্দু এবার তোমাকে বুঝাবো মজা আমার সাথে পাঙ্গা নেওয়া। আজ তোমার চৌদ্দ গোষ্ঠীর নাম যদি না ভুলায়…. আরে চৌদ্দ গোষ্ঠী কেন তুমি তোমার নিজের নামটাও ভুলে যাবে। আর তা যদি না পারি তাহলে আমার নাম ও সামিহা না।
কাকু তুমি আমার জন্য যে ভাবে ফুচকা বানাও ঠিক সে ভাবেই আর এক প্লেট ফুচকা দেও তো।
কাকুঃ কি বলছ মামনি তোমার মত ঝাল কেউ খায় না।
আমিঃ আরে এত কথা না বলে তোমাকে যা বলছি তা করো।আর কোন প্রশ্ন না কিন্তু।
কাকুঃ আচ্ছা ঠিক আছে মামনি।
কাকু আমাকে অনেক ভালবাসে। আগে প্রায়ই কাকুর দোকানে ফুচকা খেতে আসতাম। একদিন কাকুকে না পেয়ে কাকুর খোঁজ করার জন্য ওনার বাসায় গিয়ে দেখি কাকুর ছেলে অনেক অসুস্থ কিন্তু টাকার জন্য চিকিৎসা করতে পারছে না।আমি বাবাইকে বলে কাকুর ছেলের চিকিৎসার ব্যবস্তা করে দেওয়ার পর থেকে কাকু আমাকে নিজের মেয়ের মত দেখে।
চলবে………
first love…..
Samira Afrin Samia
Part:10
সবাই খাচ্ছে শুধু ওই উল্লুকটা খাচ্ছে না। উল্লুকটা না খেলে আম সব প্লেন মাটি হয়ে যাবে। কিছু একটা করে খাওয়াতে হবে। কি করা যায়?
আখিঃকিরে তর আজ কি হলো অন্য দিন তো নিজেরটা খেয়ে আমাদেরটা নিয়ে টানাটানি শুরু করে দিতি।
আমিঃ আরে ওই উল্লুকটা খাচ্ছে না কেন?
আখিঃ ওনি নাকি এসব খায় না।
আমিঃ ও খাবে সাথে ওর বাবা ও খাবে।
সিয়াত ভাইয়া আমরা সবাই খাচ্ছি তোমার ফ্রেন্ড তো খাচ্ছে না। আমাদের যদি চোখ লেগে যায়। ওনি আমাদের দিকে কেমন হা করে তাকিয়ে আছে।
তানভীরঃ ফাজিল মেয়েটা কি বলল। আমি ওদের খাবারে চোখ দিব আর আমি হা করে তাকিয়ে আছি।
আমি কিছু মানুষের মত বাহিরের এসব ফালতু খাবার খায় না।
আমিঃএগুলো ফালতু খাবার। আচ্ছা আজ তকে এই ফালতু খাবারই খাওয়াবো।
খাবে কি করে সবাই তো সব কিছু খেতে পারে না। থাক খাওয়া লাগবে না। পরে আবার পেট নিয়ে টানাটানি শুরু হয়ে যাবে।
তানভীরঃ আর কিছু বললাম না। এক প্লেট ফুচকা নিয়ে খেতে লাগলাম। একটা ফুচকা মুখে দিতেই আমার অবস্থা খারাপ হয়ে গেল। এত ঝাল আমি জীবনে ও খায়নি।
আমিঃমুখ দেখেই বুঝা যাচ্ছে ওনার কতটা ঝাল লাগছে।
কি হলো একটা খেয়েই শেষ আর পারবেন না। না পারলে থাক আর খেতে হবে না।
তানভীরঃ ওর কথা শুনে আর কিছু না ভেবে সব গুলো ফুচকা খেয়ে নিলাম। আর ও আমার দিকে তাকিয়ে মিট মিট করে হাসছে। আমার আর বুঝতে বাকি রইলো না। এই কাজটা ওরই।
আমি ও তানভীর চৌধুরী এর বধলা তো আমি নিবই।
রাতে পানি খেতে খেতে আমি শেষ। এখনও ঝাল কমেনি। তুহি অনেক বার জিঙ্গেস করছে কি হয়ছে। কিন্তু আমি কিছু বলিনি। তুহিকে বললে ও এখন এটা নিয়ে হাসাহাসি করবে।
আমি রাতে বেডে শুয়ে…….. কি আনন্দ আকাশে বাতাসে। আজ উল্লুকটাকে উচিত শিক্ষা দিছি। আর কোন দিন ও আমরা সাথে লাগতে আসবে না।
ইচ্ছে হচ্ছে এখন লুঙ্গি ডান্স দেই।
আমার আবার যখন যা ইচ্ছে হয় তখন তাই করি।
তাই কিছুক্ষণ লুঙ্গি ডান্স দিয়ে শুয়ে গেলাম।
সকালে…………
খলিল চৌধুরীঃ তানভীর আজ অফিস থেকে একটু তারাতারি চলে আসবে।
তানভীরঃ কিন্তু বাবা আজ তো অফিসে প্রথম দিন। আজ কি করে?
খলিল চৌধুরীঃ আমি তোমার রফিক আঙ্কেল কে ফোন দিয়ে বলে দিব ওনি সব দেখে নিবে। তোমার কোন প্রবলেম হবে না।
তানভীরঃ আচ্ছা বাবা।
আমি কোন দিন ও দশটার আগে ঘুম থেকে উঠতে পারি নি কলেজে কি করে ঠিক টাইমে যাব।
প্রতি দিনের মত আজ ও লেইট লতিফের মতো লেইট করে বাসা থেকে বের হবো।
বাবাইঃ মামনি আজ তোমার কলেজে যেতে হবে না।
আমিঃবাবাইয়ের দিকে তাকিয়ে। কেন বাবাই?
বাবাইঃ আজ তোমার খলিল আঙ্কেল ওনার ফেমিলি নিয়ে আমাদের বাসায় আসবে।তাই আজ তুমি বাসায় থাকো।
আমিঃ তার মানে ওই উল্লুকটা ও আসবে। তাহলে তো আমি আজ কলেজে যাবোই।
না বাবাই আমিতো বাসায় কোনো কাজ করি না। সব কাজ আম্মু করে। তাহলে আমার বাসায় থাকা আর না থাকা একই তো হলো।
তাই আমি কলেজে চলে যায়।
বাবাইঃ মামনি তুমি জানো আমি এক কথা দুই বার বলতে পছন্দ করি না।
আমিঃ বাবাইয়ের নাকি অনেক রাগ। কোন দিন ও আমার সাথে রাগ দেখায় নি। কিন্তু আম্মু বলতো কেউ যদি বাবাইয়ের কথা না শুনে তাহলে বাবাই অনেক রেগে যায়।
আমি ও আর কিছু না বলে রুমে চলে গেলাম।
বাবাইঃ এই যাত্রায় তো বেঁচে গেলাম। কিন্তু ঘুমকুমারী যখন সব জানবে তখন কি করবে তা আল্লাহইজানে।
তানভীরঃদুপুরে বাসায় এসে দেখি মামনি বাবা তুহি সবাই রেডি হয়ে কোথাও যাচ্ছে।
কোথায় যাচ্ছ তোমরা?তোমরা বের হবে তাহলে আমাকে কেন অফিস থেকে আসতে বলছ।
খলিল চৌধুরীঃআমরা তোমার সাব্বির আঙ্কেলের বাসায় যাচ্ছি। আর তুমি ও আমাদের সাথে যাবে।
তানভীরঃ আমি কোথাও যাব না তোমরা যাও।
তুহিঃ চল না ভাইয়া আমাদের সাথে। আমরা তো আগে কোন দিন ও সামিহা আপুদের বাসায় যায়নি। আজ যাচ্ছি তাহলে তুই ও চল আমাদের সাথে।
তানভীরঃ তর ইচ্ছে হলে তুই যা। আমি বাসায় থাকবো কোথাও যাব না।
খলিল চৌধুরীঃ তুমি আমাদের সাথে যাচ্ছ মানে যাচ্ছই এর বেশি কোন কথা আমি বলতে চায় না।
বিকালে……..
সবাই এক সাথে লাঞ্চ করে হলরুমে বসে যে যার মত গল্প করছে। আম্মু রাবেয়া আন্টি বাবাই খলিল আঙ্কেল।
আমি তুহিকে নিয়ে ছাদে চলে গেলাম।
আমিঃ তুহি তুমি কোন ক্লাস এ পড়?
তুহিঃ এই তো আপু এবার এস.এস.সি এক্সাম দিব।
আমিঃ তুমি আমাকে আপু না ডেকে নাম ধরেই ডাকতে পারো। আমি তোমার থেকে বয়সে বেশি বড় হব না। আর তুমি আমার নাম ধরে ডাকলে আমার শুনতে ও ভালো লাগবে।
তুহিঃ আচ্ছা ঠিক আছে আর আপু ডাকবো না।
রাতে সবাই চলে গেলে বাবাই আমার রুমে আসে।
বাবাইঃ ঘুমকুমারী ঘুমিয়ে গেলা নাকি?
আমিঃ না বাবাই এখনও ঘুমায় নি। কেন বাবাই কিছু বলবে?
বাবাইঃ হুম মামনি তোমার সাথে কিছু কথা ছিল।
আমিঃ কি কথা বলো বাবাই।
বাবাইঃ মামনি তুমি তো সব সময় চাইবে তোমার বাবাই যেন তার দেওয়া কথা রাখতে পারে।চাইবে না?
আমিঃ হুম বাবাই আমি সব সময় তাই চাইবো।
বাবাইঃ কিন্তু মামনি তোমার বাবাইয়ের একটা ওয়াদা শুধু তুমিই রাখতে পারবে।
আমিঃ কি ওয়াদা বাবাই?
বাবাইঃ তুমি ছোট থাকতে আমরা যখন গ্রামে ছিলাম তখন আমি তোমার খলিল আঙ্কেলকে কথা দিয়েছিলাম।ওর ছেলে তানভীরের সাথে তোমার বিয়ে দিব।
একথা শুনে আমি বাবাইকে কি বলবো। কিছুই বুঝতে পারছি না।
বাবাই তো সব কিছু জানে। আমি কেনো বিয়ে করতে চাই না। সব জেনেও বাবাই এসব বলছে।
বাবাই কি করতে পারে। বাবাই তো আর ছোট বেলা জানত না আমার সাথে এমন কিছু হবে।
বাবাইঃ দেখ মামনি আমি তোমাকে জোর করছি না।
তুমি যা সিধান্ত নিবে তাই হবে। কিন্তু একটা কথা মনে রেখো তোমার বাবাইয়ের সম্মান তোমার হাতে।
কথা গুলো বলেই বাবাই চলে গেল। আমার সাথে যা হয়েছ তাতে বাবাইয়ের কোন হাত নেই। বাবাই তো সব কিছু মেনে নিছিল।কিন্তু কিছুই তো আমার চাওয়ার মত হলো না। এখন আমার ওপর নির্ভর করে বাবাইয়ের সম্মান। আমি বাবাইয়ের ওয়াদা ভঙ্গ হতে দিব না।
বাবাই যা বলবে আমি তাই করবো।
চলবে………