LoVe Effect part-31+32

0
531

#LoVe_Effect
#writer : Sintiha Eva
#part : 31 ( Wending special)

🍁🍁🍁

চারদিকে আহত চোখ বুলিয়ে শ্রাবনী অস্পষ্ট সুরে বলে উঠে

” কবুল ”

চারদিকে সবাই একসাথে আলহামদুলিল্লাহ বলে নবজীবনের জন্য সবাই দোয়া করে কাজি হাস্যজ্জ্বল মুখে বলে উঠে

কাজিঃ বিবাহ সম্পূর্ণ আজ থেকে তোমরা দুইজন একে অপরের পরিপূরক

শ্রাবনী মাথা নিচু করে নিঃশব্দে চোখে পানি ফেলছে বুক টা কষ্টে ফেটে যাচ্ছে যেই বাড়িতে এতোদিন বড় হলো সেই বাড়ি টা এখন ওর নিজেই বাড়ি না ভাবতেই বুক ফেটে কান্না আসছে সায়ন শ্রাবনী কবুল বলার পরপরই অন্যদিকে চলে যায় অভি আয়াত ও সায়নের পেছন পেছন চলে যায় আদরের বোনের কান্না দেখার সাধ্য ওদের কারোরই নেই।

নীর চোখের পানি মুছে মুখের হাসি টেনে শ্রাবনীর পাশে গিয়ে বসে

নীরঃ এই পাগলি কাঁদছিস কেনো তুই জানিস না তোর কান্না আমরা কেউ সহ্য করতে পারি না

শ্রাবনী নীরকে ঝাপটে ধরে কেঁদে দেয়

শ্রাবনীঃ বেস্টু ভাইয়া’রা কোথায় ওরা চলে গেলো কেনো

পাশ থেকে এশা শ্রাবনীর মাথায় হাত বুলিয়ে ধরা গলায় বলে

এশাঃ তাদের আদরের বোনের কান্না দেখার ক্ষমতা নেই এই দেখো তুমি কাঁদছো তোমরা ভাই’রা কষ্ট পাচ্ছে তো তাই না

এশা’র কথায় শ্রাবণী ডুকরে কেঁদে উঠে।

বিদায় তিন বর্ণের এই ওয়ার্ড টা একজন মেয়ের কাছে পাহাড় সমান যন্ত্রণা একটা মেয়েই বুঝে নিজের পরিবার ছেড়ে যাবার কষ্ট কতটা ভয়াবহ নিজের জন্মস্থান নিজের মা-বাবা ভাই – বোন ছেড়ে অপরিচিত একটা ছেলের হাত ধরে বাকি জীবন পাড় করা কতটা যন্ত্রণা দায়ক বিয়ের আগে একজন মেয়ে যেমন যা চাইলে নিজের বাড়ি হিসেবে সেটাই করতে পারে কিন্তু বিয়ের পর সেই অধিকার সাহস কোনোটাই পায় না। শ্রাবনীর বাবা মাহিরের হাতে শ্রাবণীর হাত দিয়ে অশ্রুসিক্ত চোখে বলে

শ্রাবনীর বাবাঃ আমার বাগানের গোলাপ টা আমি তোমার হাতে তুলে দিলাম বাবা কখনো আমার বাগানের গোলাপ টা কে শুকিয়ে যেতে দিও না ফুলে পচন ধরে কিন্তু ফুল পুনরায় আবার গজায় আমার কলিজা টা কে তুমি কখনো কষ্ট দিও না

মাহিরঃ আপনার গোলাপ অক্ষতই থাকবে আঙ্কেল ওর গায়ে কোনো দাগ আমি লাগতে দেবো না ( স্মিত হেসে)

রাত হওয়ায় ছেলেপক্ষ তাড়া দিতে শুরু করে শ্রাবনী ওর বাবাকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে দেয়

শ্রাবনীঃ পাপা আ আমি তোমাদের ছেড়ে যাবো না

শ্রাবনীর বাবাঃ এসব বললে হয় না মামনি সব মেয়েকেই যেতে হয় তোমার যখন মন চাইবে তখনই চলে আসবে কেউ মানা করবে না

অভি আয়াত সায়ন তিনজন আসতেই শ্রাবণী ওদের ধরে শব্দ করে কেঁদে দেয় অভিরা অশ্রুসিক্ত নয়নে শ্রাবনীর দিকে তাকায়

শ্রাবনীঃ ছোড়দা আমি যাবো না তোরা তো জানিস আমি তোদের হাতে না খেলে আমার পেট ভরে না তোরা আমাকে না খাইয়ে দিলে আমি নিজ হাতে খেতে পারি না আমি ওখানে গেলে আমাকে কে খাইয়ে দেবে ভাইয়া ওদের চলে যেতে বল প্লিজ আমি কোথাও যাবো

শ্রাবনীর প্রত্যেক টা কথা অভিদের বুকে গিয়ে বিঁধছে উপায় থাকলে ওরা কখনো শ্রাবণী কে যেতে দিতো না কিন্তু এই ক্ষেত্রে প্রতি টা ভাই নিরুপায় অভি নিজেকে ধাতস্থ করে শ্রাবণী কে ধরে বলে

অভিঃ লক্ষ্মী বোন আমার কাঁদে না তোমার যখন আমাদের কথা খুউব বেশি মনে পড়বে তখন চলে আসবে নয়তো আমাদের একটা ফোন দিও আমরা চলে যাবো তোমাকে না খাইয়ে দিলে কি আমাদের খাওয়া হবে সোনা বোন চোখের পানি মুছো আমাদের তো কষ্ট হচ্ছে তাই না

অভির কথায় শ্রাবণী ডুকরে কেঁদে দেয় আয়াত শ্রাবনীকে জড়িয়ে ধরে চোখের পানি মুছে স্মিত হেসে কপালে একটা চুমু খেয়ে বলে

আয়াতঃ আমাদের ছুটকি আজ কতটা বড় হয়ে গেছে সেদিনের গুটিগুটি পায়ে হাঁটা মেয়েটা আজ শ্বশুর বাড়ি যাচ্ছে এতো বড় মেয়ের কান্না মনায় পাগলি আমরা সবসময় তোমার সাথে আছি চোখের সামনে থাকলেই কি পাশে থাকা হয় আমরা সবসময় তোমার মনে আছি তুমি খুব সুখী হবে এখন কান্না অফ করো

শ্রাবনী সায়নের দিকে তাকায় সায়ন একদৃষ্টিতে ফ্লোরের দিকে তাকিয়ে আছে হয়তো চোখের জল আড়াল করার বৃথা চেষ্টা তিন ভাইদের আদরের বোন হওয়ায়র সত্বেও শ্রাবণীর কাছে সায়ন অলওয়েজ স্পেশাল ছিলো সবাইকে ভালোবাসলেও সায়নকে একটু বেশিই ভালোবাসতো তেমনি সায়ন যেমন আদর করতো তেমনি শাসন ও করতো শ্রাবনীর সব আবদারের ভান্ডার ছিলো নীর আর সব বাঁদরামি সাক্ষী ও নীর কিন্তু সব বাঁদরামি ধামাচাপা দেওয়ার সঙ্গী ছিলো সায়ন। শ্রাবনী গুটিগুটি পায়ে সায়নের কাছে যায় সায়ন শ্রাবনীর দিকে তাকায় শ্রাবণী সায়নের কাছে গিয়ে বলে

শ্রাবনীঃ ছোড়দা আমাকে তুই প্রতিদিন চকলেট খাওয়াবি না এখন থেকে

শ্রাবনীর কথায় সায়ন জোরপূর্বক হেসে বলে

সায়নঃ আমার বনুকে না খাওয়ালে কাকে খাওয়াবো আমার দুনিয়া তুই তোর বিয়ে হয়ে গেছে বলে কি তুই পর হয়ে গেছিস মোটেও না তুই সবসময় আমার কাছে আগে যেমন ছিলি তেমনিই থাকবি ভাববি না ছোড়দা তো এখন আর কিছু করলে বকবে না আলবার্ট বকবো আগের মতোই তোকে শাসন করবো মাহির শ্রাবনী কোনো বাঁদরামি করলে সাথে সাথে আমাকে ইনফর্ম করবে তারপর ওকে গিয়ে আমি বকে আসবো

চার ভাই-বোনের ভালোবাসা দেখে উপস্থিত সবাই মুগ্ধ না হয়ে পারলো না এখনকার ভাই- বোনের সম্পর্ক এতো ভালোবাসাময় এটা ও পসিবল এখন তো সম্পত্তির জন্য ভাইয়েরা বোনেরা যুদ্ধ করে আইন-আদালত এসব করে বেড়ায় আর কোথাায় এদের ভালোবাসা। ভাই-বোনের সম্পর্ক তো এমনই হওয়ায় উচিত

_____________________

নিষক কৃষ্ণ রজনী শব্দহীন মেদিনী বর্তমানে গভীর আধারে নিমজ্জিত প্রবাহিত বাতাসে মিশে আছে সুমিষ্ট বাহারি ফুলের গন্ধ অন্তরীক্ষ আঁধার মেঘহীন। ছোট ছোট ক্যান্ডেল গোলাপে সাজানো রুমে বউ সাজে বসে আছে শ্রাবনী চোখ দুটো ঘুমে ঢুলুঢুলু শরীর পুরো অবশ হয়ে আসছে সারাদিন ক্লান্তি তার উপর কান্নাকাটি করায় অবস্থা এখন নাজেহাল তার মধ্যে শরীরের ৪০ কেজি বস্তা শাড়ি গহনা ঘুমুঘুমু ভাবের একপর্যায়ে শ্রাবনী বেডের মধ্যে আধশোয়া হয়ে মাথা হেলিয়ে দেয়। বেশকিছু ক্ষণ পর হঠাৎ খট করে দরজা খোলার আওয়াজে শ্রাবনী সদ্য ঘুম উবে যায় শ্রাবনী নিজের অবস্থান উপলব্ধি করে ছট করে উঠে বসে পুনরায় দরজা লাগানোর শব্দে শ্রাবনী ঘাড় বাঁকিয়ে পেছনে তাকিয়ে নীল পাঞ্জা বি পরিহিত মাহির কে দেখতে পাই। শ্রাবনী ঘাড় ঘুরিয়ে নেয় মাহির হাতের ঘড়ি খুলতে খুলতে শ্রাবনীর সম্মুখে এসে দাঁড়ায় ঘড়ি টা বেড সাইড টেবিলে রেখে শ্রাবনীর দিকে প্রশ্ন ছুঁড়ে মারে

মাহিরঃ ঘুমাওনি এখনো

শ্রাবনীঃ ঘুমিয়েই তো পড়েছিলাম দরজা খোলার শব্দে উঠে পড়েছি ( মিনমিনিয়ে)

মাহিরঃ ব্যাপার কি এতো মিনমিনিয়ে কথা বলছো তুমি তো মিনমিনিয়ে কথা বলার মেয়ে না ( ভ্রু কুঁচকে)

মাহিরের কথার উল্টো পিঠে শ্রাবনী কিছু বলার আগেই দরজায় কেউ খট খট করে উঠে মাহির বিরক্তি নিয়ে দরজার কাছে গিয়ে দরজা খুলতেই শুভ আদিত্যসমেত আরো কয়েকজনের ফেস ভেসে আসে এতোজনকে দেখে মাহির ভরাট কন্ঠে বলে

মাহিরঃ আর কি এডভাইস দিবি

আদিত্য ঠোঁট চেপে হেসে রসাত্মক কন্ঠে বলে

আদিত্যঃ বেস্ট অব লাক ব্রো প্রথম রাতেই বিড়াল মেরে নাও আর সাবধানে ধানী লঙ্কা বিয়ে করেছিস তো

আদিত্যর কথায় মাহির বিরক্তি নিয়ে ওদের মুখের উপর শব্দ করে দরজা লাগিয়ে দেয় এদিকে শ্রাবনী ভ্যাবলার মতো তাকিয়ে আছে ওদের কথার আগামাথা কিছুই বুঝতে পারেনি শ্রাবনীকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে মাহির ব’লে

মাহিরঃ এভাবে তাকিয়ে আছো কেনো

শ্রাবনীঃ ওরা কি বললো কিসের বিড়াল মারার কথা বলেছে এই রুমে বিড়াল আছে

মাহিরঃ নাহ কিছু বলেনি বাদ দাও গিয়ে চেঞ্জ করে আসো

শ্রাবনী কি এক কথার মেয়ে পুনরায় নাছোড়বান্দা হয়ে জিজ্ঞেস করলো

শ্রাবনীঃ না কি যেনো বললো বলুন বলছি নয়তো আমি চেঁচাবো

শ্রাবনীর কথায় মাহির কপালে আঙ্গুল দিয়ে স্লাইড করতে করতে বিড়বিড়িয়ে বলে

মাহিরঃ কি এক জ্বালায় পড়লাম এখন যদি চেঁচায় বাইরের মানুষ উল্টাপাল্টা কিছু ভেবে বসবে

শ্রাবনীঃ কি হলো চুপ করে আছেন কেনো বলুন বলছি ( চেঁচিয়ে)

আচমকা শ্রাবনীর চেঁচানো তে মাহির ভয় পেয়ে শ্রাবনীর মুখ চেপে ধরে

মাহিরঃ চুপ আর একবার চেঁচালে বেলকনি থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেবো

শ্রাবনীঃ উহুমমমমমম

মাহিরঃ ওপস সরি চেচাচ্ছো কেনো লোকে কি ভাববে

শ্রাবনীঃ কি ভাববে

মাহিরঃ ভাববে আমি তোমার সাথে কিছু করেছি

শ্রাবনীঃ কি করেছেন

মাহিরঃ উফসস কিচ্ছু না যাও ফ্রেশ হয়ে আসো

শ্রাবনীঃ কিন্তু

মাহিরঃ যাও বলছি ( ধমকে)

হঠাৎ মাহিরের ধমকে শ্রাবনী ভয় পেয়ে যায় শ্রাবণী ঠোঁট উল্টে ছলছল চোখে একটা ট্রি-শার্ট নিয়ে ওয়াশরুম চলে যায় মাহির ভেতরে চেঞ্জ করে নেয় হঠাৎ শ্রাবনীর সাথে মিস বিহেভ করায় নিজের মধ্যে কেমন অনুশোচনা বোধ জাগ্রত হয় মেয়েটার সাথে প্রথম দিন এমন টা না করলেই পারতো ওয়াশরুম থেকে শ্রাবনী বের হতেই মাহির শ্রাবনীর কাছে গিয়ে বলে

মাহিরঃ সরি শ্রাবনী তখন ওভারে ধমক দেওয়া উচিত হয়নি আম রিয়েলি সরি

মাহিরকে সরি বলতে শুনে শ্রাবণী মুচকি হেসে দেয় প্রতিত্তোরে মাহির ও স্বস্তির নিশ্বাস ছাড়ে।

শ্রাবনীঃ আচ্ছা এই রুম টা কি আপনার

মাহিরঃ হুমম কেনো কোনো সন্দেহ আছে

শ্রাবনীঃ না কত গোছানো আমার রুম ককনো গুছিয়ে রাখতে পারি না

মাহিরঃ হুমম এবার থেকে আমার টা ও এমন থাকবে কি না সন্দেহ ( মিনমিনিয়ে)

শ্রাবনীঃ কিছু বললেন

মাহিরঃ কক কই না তো

শ্রাবনীঃ ওহ আচ্ছা রুম টা এভাবে ফুল দিয়ে সাজানো কেনো

মাহিরঃ আজ আমাদের বাসর তাই

শ্রাবনীঃ বাসরে কি হয়

শ্রাবনীর বোকার মতো প্রশ্ন শুনে মাহির বিষম খায় নিজেকে ধাতস্থ করে বলে

মাহিরঃ কিছু না

শ্রাবনীঃ ওহ আচ্ছা তাহলে আমি ঘুমাই

মাহিরঃ হুমম

শ্রাবনী গিয়ে বেডে শুয়ে পড়ে শ্রাবনী কে বেডে ঘুমাতে দেখে মাহির হালকা চেঁচিয়ে বলে

মাহিরঃ এই তুমি ওখানে ঘুমাচ্ছো কেনো

আচমকা মাহিরের চেঁচানো শুনে শ্রাবণী ধপ করে উঠে বসে মাহিরের কথা কর্ণকুহরে পৌছাতেই শ্রাবনী ভ্রু কুঁচকে বলে

শ্রাবনীঃ তো কোথায় ঘুমাবো

মাহির গম্ভীর মুডে ভরাট কন্ঠে বলে

মাহিরঃ আমি এ বিয়ে টা মানি না শ্রাবণী জাস্ট আব্বু-আম্মুর চাপে পড়ে বিয়ে টা করেছি তাই বলে আমার কাছ থেকে স্বামীর অধিকার আদায় করার কথা ভেবো না আমি কখনোই তোমাকে মানতে পারবো কি না জানি না তবে এক বেডে এই মুহুর্তে ঘুমাতে পারবো না তুমি হয় সোফায় ঘুমাও নয়তো অন্য রুমে যাও

মাহিরের প্রতিটা কথা শ্রাবনী মনযোগ দিয়ে শুনে শ্রাবণীকে চুপ থাকতে দেখে মাহির বেশ অবাক হয় মাহির পুনরায় গম্ভীর হয়ে বলে

মাহিরঃ আমি তোমাকে আগেই বলেছিলাম বিয়ে তে আমি রাজি না

শ্রাবনী বিনাশব্দে বেড থেকে উঠে শ্রাবনীকে উঠতে দেখে মাহির ভাবে হয়তো শ্রাবনী মেনে নিয়েছে কিন্তু শ্রাবনী মাহিরের ধারণা কে ভুল প্রমাণ করে হুট করে মাহিরের কলার ধরে বলে

শ্রাবনীঃ তুই মানবি না তোর ঘাড় মানবে আর আমাকে কি তোর অবলা নারী মনে হয় বর এসে বলবে সে আমাকে মানে না আর আমি বাংলা সিনেমার সাবানার মতো চোখের পানি ফেলতে ফেলতে নিচে গিয়ে শুয়ে পড়বো নো ওয়ে আমি এসব কিছুই করবো না আর তুই আমার সাথে এক বেডে থাকবি মানে এক বেডেই থাকবি কি ভাবিস কি নিজেকে এতোক্ষণ অনেক পটরপটর করছেন কিছু বলছি না বলে ভাবছেন আমি সরল-সহজ হয়ে গেছি বিয়ের পর সো সরি আমি যেমন তেমন ক্ষণে ক্ষণে গিরগিটি হওয়া আমার পক্ষে পসিবল না সহ্য করতে পারলে থাকেন নয়তো ভাগেন

শ্রাবনীর রণচণ্ডী রূপ দেখে মাহির ঘাবড়ে যায় নিজেকে ধাতস্থ করে জিভ দিয়ে ঠোঁট ভিজিয়ে বলে

মাহিরঃ কি করছো তুই-তুকারি করছো কেনো আর কলার ছাড়ো

শ্রাবনীঃ নো ওয়ে আজ তো আমাদের বাসর চলো বাসর করি

মাহিরঃ কিহহ বাসর

শ্রাবনীঃ হুম বাসর চলো আসো বাবু বাসল কলি

মাহিরঃ কিসের বাসর কোনো বাসর হবে না আর তুমি জানো বাসর কাকে বলে

শ্রাবনীঃ জানি না তাই তো জানতে চাইছি লি হয় বাসরে তুমি আর আমি সেটাই করবো বর টাহ আমার

মাহির ভ্যাবলার মতো শ্রাবনীর দিকে তাকিয়ে থাকে আচমকা ধাক্কা অনুভুত হওয়ায় মাহির টাল সামলাতে না পেরে বেডে পরে যায় কিছু বুঝে উঠার আগেই শ্রাবনী মাহিরের পেটের উপর উঠে বসে গলায় একটা ছু/ড়ি ধরে শ্রাবনীর অতর্কিত হামলায় মাহির ভয় পেয়ে যায় শ্রাবণী টেডি স্মাইল দিয়ে বলে

শ্রাবনীঃ বিয়ে যখন করছো টলারেট করতে তোমাকে হবে জানপাখি আর একদম তেড়ি বেড়ি করবা না তাহলে আমি কি জিনিস হারে হারে টের পাইবা লেটস স্টার্ট চলো বাসর করি

মাহিরঃ কি কর করছো গলায় লাগবে তো

শ্রাবনীঃ লাগার জন্য ই তো দিচ্ছি বাই ূ্যা ওয়ে আর একটা কথা বললে খবর আছে আমার কথা শুনুন প্ড়থমত বিয়ে করেছেন যখন মনতেই হবে আর না মানলে আমি মানতে বাধ্য করবো দ্বিতীয়ত আমরা একই বেডে ঘুমাবো তৃতীয়ত আমার সাথে মিসবিহেভ করলে প্রচন্ড খারাপ হবে মাইন্ড ইট এখন আমার মাথায় হাল বুলিয়ে দেন আমি ঘুমাবো

মাহিরঃ কিহহ

শ্রাবনীঃ জিহ বাড়িতে ছোড়দা নয়তো বেস্টু দিতো বাট ওরা তো এখানে নেই তাই আপনাকেই দিতে হবে আর একদম আমার চুলের উপর কোনো অত্যাচার করবেন না মাইন্ড ইট

মাহির বেচারা ভয়ে মাথা নেড়ে সায় দেয় শ্রাবনী মাহিরের উপর থেকে নেমে পড়ে মাহির উঠে বসে শ্রাবনী মাহিরের কোলে মাথা রাখতেই মাহির মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে শুরু করে শ্রাবণী একগাল হেসে বলে

শ্রাবনীঃ দ্যাটস লাইক এ গুড বয়

চলবে,,,,,

(ভুলক্রটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন, লেটুসপাতা )

#LoVe_Effect
#writer : Sintiha Eva
#part : 32

🍁🍁🍁

” মেয়ে দেখতে ভালো না কালো নাক বোঁচা মোটা আরেকটু লম্বা হলে আমাদের মাহিরের সাথে বেশ মানাতো এর থেকে আমার ভাইঝির মেয়ে সুবর্ণা দেখতে যেমন সুন্দর তেমনি লম্বা দিয়ে মাহিরের সাথে একদম পারফেক্ট মানাতো ”

প্রতিবেশীরা বউ দেখতে এসে শ্রাবণী কে দেখে এমন নানান কথা বলছে শ্রাবনী মাথা নিচু করে শুনছে আশেপাশে বাড়ির কেউই নেই শুভ আর আদিত্য বাদে সবাই পাড়াপ্রতিবেশি সবার এমন এমন মন্তব্য শুনে শুভ’রা পছন্দ রেগে যায় তবুও বড় বলে ভদ্রতা বজায় রেখে চুপ করে আছে। হঠাৎ তাদের মধ্যে একজন শ্রাবনী কে উদ্দেশ্য করে বলে উঠে

” দেখি তোমার পা দুটো কেমন সাইজের মাথার চুল গুলো দেখি তো ”

অন্যজন ব্যঙ্গ সুরে বলে উঠে

_ কি আর দেখবে আপা চেহারার সুরত ভালো হলেই কি হয় গায়ের রং ফর্সা লাগে খাটো মেয়ে দিয়া কি করবো এহনের যুগে তো সবাই লম্বা ফর্সা মেয়ে চাই এই মেয়ে তো কালো

মাহির সাওয়ার নিয়ে নিচের উদ্দেশ্য নামছিলো হঠাৎ কারো এমন কুৎসিত মন্তব্য কানে আসতেই মাহির সিঁড়িতেই দাঁড়িয়ে যায় চোখ তুলে সামনে তাকিয়ে শ্রাবনীকে সবার মাঝে দেখে আর মহিলাদের কথা শুনে মুহুর্তেই নেত্রপল্লব লাল বর্ণ ধারণ করে মাহির রাগে হাতের মুঠো মুষ্টিবদ্ধ করে নেয় তখনি ওখানে মাহিরের মা এসে হাস্যজ্জ্বল মুখে বলে

মাহিরের মাঃ কি আপা বউ কেমন দেখলেন পছন্দ হয়েছে তো হবারই কথা এমন মায়াবতী রূপবতী মেয়ে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাবে না এখন মেয়েটা আমার ভারী লক্ষ্মী

মাহিরের মায়ের কথা শুনে একজন মুখ ভেংচি কেটে বলে

_ ভুল বুঝবেন না আপা আমার ভাইয়ের ছেলের বউ টা দেখেছেন কি সুন্দর সেই তুলনায় এই মেয়ে কিছুই না কালো খাটো আমাদের মাহির কি কম সুন্দর ছেলে ওর জন্য মেয়ের দরকার হলে আমাদের বলতেন আমরা আরো সুন্দর মেয়ে খুঁজে দিতাম এই মেয়ে আমাদের মাহিরের যোগ্য না

শ্রাবনী এবার শাড়ির আঁচল কোমড়ে গুঁজে রণচণ্ডী রূপ নিয়ে হালকা চেঁচিয়ে বলে

শ্রাবনীঃ ওই মুটকি ওই আপনার আমাকে পছন্দ না হলে কি আমার গরম ভাতে পানি দেওয়া লাগবে আর নিজেকে কখন আয়নায় দেখেছেন যেই না চেহারা নিজের আবার অন্যের ভুলক্রটি দেখতে আসেন আপনি নিজেকে কি বিশ্ব সুন্দরী ভাবেন আর নিজের নাক দেখেছেন বাঁশের মতো খাঁড়া নাক কাপড় মেলার জন্য দড়ি/তারের দরকার নেই আপনার নাকই যথেষ্ট আর কি বললেন কালো তাই না তা আপনার চুল ও তো কালো চোখের মণি কালো তাহলে তো আপনি ও কালো এক কাজ করুন এগুলো সাদা রং করে ফেলুন তাহলে গায়ের রঙের সাথে পারফেক্ট ম্যাচ করে আর কার সাথে তুলনা করেছেন আমি তো জানি না জানতে ও চাই না তবে সে আমার যোগ্য কিভাবে হবে একটা কথা মাথায় রাখবেন আকাশে’তে লক্ষ্য তাঁরা চাঁদ কিন্তু একটাই পৃথিবীতে দুইটা চাঁদ যেমন নেই তেমন আমার মতো বা আমার কার্বন কপি কেউ নেই সো আপনার সেই ভাইয়ের বউয়ের দুর্ভাগ্য সে সবার মতো তাঁরা যাদের কিনা বছর বছর সময় লাগে দুনিয়ায় আলো পৌছে দিতে আর চাঁদ তার কিরণ সবসময়ই পৃথিবীর মানুষকে দেয় আমরা কালোরা আছি বলেই আপনাদের মতো ধলা বান্দর দের এতো কদর নয়তো থাকতো না বুঝলেন আমরা ন্যাচরাল সুন্দর আপনাদের মতো ময়দা সুন্দরী না প্রতি মাসে মাসে এই ক্রিম ওই ক্রিম মাখি সো আমাকে নিয়ে আর একটা বাজে মন্তব্য করলে আমি ভুলে যাবো আপনি আমার গুরুজন

কথাগুলো বলে শ্রাবনী জোরে জোরে শ্বাস নেয় উপরে মাহির শ্রাবনীর কথা শুনে হাসতে হাসতে শেষ নিচেও সেইম শুভ আদিত্য দাঁত কেলিয়ে হাসছে মাহিরের মা মিটিমিটি হাসছে। একজন তেজি গলায় বলে

_ দেখেছো তোমরা বিয়ে করে আাতে না আসতেই কি নিজের খোলস দেখানো শুরু করছে এই তোমার লক্ষ্মী বউমা মুখে মুখে তর্ক করে বেয়াদব মেয়ে কোনো আদবকায়দা নেই

মাহিরঃ গেট লস্ট ( চেচিয়ে)

আচমকা মাহিরের চেঁচানো তে সবাই ভয় পেয়ে যায় শুভ’রা সিড়ি’র দিকে তাকিয়ে দেখে মাহির রাগে বোম হয়ে আছে মহিলাগুলোর দিকে রক্তচক্ষু নিয়ে তাকিয়ে আছে মহিলারা অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে মাহির সিড়ি দিয়ে নেমে শ্রাবনীর পাশে এসে দাঁড়ায় পুনরায় ভরাট কন্ঠে বলে

মাহিরঃ আপনাদের আমি যেনো আমি বা আমার বাড়ির দুইটার আশেপাশে না দেখি আপনাদের মতো মেয়ে মানুষ সমাজে থাকলে সমাজ এমনিতেই নষ্ট হয়ে যাবে আসলে কি বলুন তো আপনাদের কাজই এটা কারো বাড়িতে বিয়ের দাওয়াত পেলেই দুই টাকার গিফট দিয়ে হাজার টাকা খেয়ে যাবেন আবার বউয়ের দুর্নাম করবেন আপনারা মেয়ে হয়ে মেয়েকে সম্মান না করলে আমরা পুরুষরা কি করবো আর আদব-কায়দা আমার বউ জানে কি না সেটার প্রমাণ আপনাদের দিতে আমি বা আমার ফ্যামিলির কেউই বাধ্য না সো আমাদের আদবকায়দা দেখাতে আসবেন না নাউ ইউ ক্যান গেট আউট ফ্রম হেয়ার আমার বাড়ির ত্রিসীমানায় আপনাদের মতে নিচু মানসিকতার লোকদের ছায়া ও যেনো না দেখি আই মিন ইট

মহিলারা রাগে অপমানে গজগজ করতে করতে চলে যায় শ্রাবণী গাল ফুলিয়ে ওদের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকে মাহিরের মা অনুশোচনার সুরে শ্রাবণীর কাছে এসে বলে

মাহিরের মাঃ আমাদের মাফ করে দে মা আমার তোকে এভাবে এই শকুনি দের সামনে রেখে যাওয়া উচিত হয়নি

শ্রাবনীঃ ইট’স ওকে আন্টি আমি কিছু মনে করিনি

মাহিরের মাঃ মা’র খাবি আমি তোর শ্বাশুড়ি হয় আন্টি কিসের আর তুই আমার বউ মা না মেয়ে হয়ে থাকবি ছোট থেকে আমার মেয়ে’র খুব শখ ছিলো কিন্তু উপরওয়ালার ইচ্ছের বিরুদ্ধে কিছু হয় না তাই ভেবে রেখেছিলাম আমার ছেলের বউ কে বউ নয় নিজের মেয়ে’র মতো দেখবো বুঝলি তাই আজ থেকে এসব আন্টি ফান্টি বাদ মা বলে ডাকবি

শ্রাবনী হেসে মাথা নাড়িয়ে সায় দেয়।

________________________________

রাতের আঁধার কাটিয়ে পৃথিবীতে আগমন হলো আরেক সকালের রাতের শেষের দিকে বৃষ্টি হওয়ায় প্রকৃতি তে এখন নিদারুণ শীতলতা বিরাজমান তার সাথে শীতল বাতাস সূর্যের আলো পৃথিবীতে পৌছাতেই দূর থেকে নাম না-জানা পাখির ডাক কর্ণকুহরে ভেসে আসলো শ্রাবনী আড়মোড়া দিয়ে ঘুম থেকে উঠে কিছুক্ষণ থুম ধরে বসে থাকে অতঃপর একটা ঝাড়া দিয়ে উঠে পড়ে পাশে চোখ যেতেই মাহিরের গুটিশুটি ঘুমন্ত অবস্থা নেত্রে ভেসে উঠে শ্রাবনী মাহিরের বিয়ের আজ এক সপ্তাহ পূর্ণ হয়েছে আজ থেকে শ্রাবনী আবার ভার্সিটি যাওয়া শুরু করবে সামনেই ফাইনাল ইয়ের এক্সাম বিয়ের তালে পড়ালেখা সব তালগোল পাকিয়ে গেছে আজ থেকে আবার মন দিয়ে পড়া শুরু করবে। শ্রাবনী মাহিরের দিকে তাকিয়ে কিছু একটা ভেবে শয়তানি হাসি দেয়

শ্রাবনীঃ দাঁড়াও বাবু কাল রাতে বহুত জ্বালিয়েছো কারেন্ট ছিলো না সেই সুযোগে ইচ্ছে মতো চিমটি দিছো তুমি ভাবছো আমি এতোটাই বোকা মশার কামড় আর চিমটির অনুভূতি বুঝবো না এবার বুঝবা এই শ্রাবনী কি জিনিস হাহাহা ( মনে মনে)

শ্রাবনী পা টিপে টিপে ড্রেসিং টেবিলের সামনে যায় অতঃপর আবার পা টিপে টিপে মাহিরের পাশে নিঃশব্দে বসে পড়ে প্রায় বেশকিছু ক্ষণ পর নিজের কার্য হাসিল করে শ্রাবণী নাচতে নাচতে উঠে ড্রেস নিয়ে ওয়াশরুম চলে যায়।

প্রায় এক ঘন্টা পর মাহির ঘুম থেকে উঠে আশেপাশে শ্রাবনীকে না পেয়ে ততটা মাথা না ঘামিয়ে ওয়াশরুম চলে যায় ওয়াশরুমের আয়নায় চোখ দিতেই মাহির আহহহহহহহহহহ করে চেঁচিয়ে উঠে রুম সাউন্ড প্রুভ হওয়ায় কেউই শুনলো না শ্রাবনী বেলকনি থেকে দৌড়ে রুমে আসে মাহিরকে বেডে না পেয়ে মিনমিনে গলায় বলে

শ্রাবনীঃ মিশন সাকসেস ওহহহহ শ্রাবণী ইউ’র জিনিয়াস

চোখ দুটো কাজল দিয়ে ইয়া বড় করে আর্ট করা পুরো মুখে সাদা পাউডার ঠোঁটের দুই সাইডে লাল রং দিয়ে লম্বা করে টান দেওয়া কপালে ইয়া বড় লাল টিপ নাকের দগা লাল ঠোঁট মোটা করে লাল লিপস্টিক দিয়ে আকা আয়নায় নিজেকে দেখে মাহির নিজেই ভয় পেয়ে যায় পরক্ষনেই শ্রাবনীর কাজ বুঝতে পেরে মাহিরের চোখ-মুখ লাল হয়ে যায় মাহির দ্রু সাওয়ার অন করে দেয় মাথার তালু দিয়ে গরম ধোঁয়া বের হচ্ছে অন্যদিকে শ্রাবণী বাইরে হাসতে হাসতে অবস্থা কাহিল।

সায়নঃ দিন দিন তুমি অনেক বেশি কিউট হচ্ছো ব্যাপার কি বলোতো

হঠাৎ সায়নের মুখে নিজের সম্পর্কে এমন কমপ্লিমেন্ট শুনে নীর থতমত খেয়ে যায় নীর একচুয়েলি বুঝতে পারছে না সায়ন ওর প্রশংসা করছে না পরিহাস করছে নীর ভ্রু কুঁচকে সায়নের দিকে তাকায় সায়ন চুল আছড়াতে আছড়াতে পুনরায় বলো

সায়নঃ লোকে বলে মেয়েরা নাকি বাচ্চা জন্ম দেওয়ার আগে কিউট সুন্দর হয় কিন্তু তোমার সাথে তো আমার কিছুই হয়নি তাহলে বাচ্চা হাউ পসিবল ব্যাপার কি বলো তো আমার ঘুমের মধ্যে আবার ফায়দা নাওনি তো ( ভ্রু নাচিয়ে)

সায়নের কথায় নীর সাত আসমান উপর থেকে লাফ দিয়ে পড়ে মানে একটা মানুষের চিন্তাভাবনা কতদূর নীর রুক্ষ কন্ঠে বলে

নীরঃ আপনার মতো সবাই না ওকে সুযোগ পেলেই ফায়দা নেয় কি ভাবেন নিজেকে

সায়নঃ অন্যের স্বামী তো আর ভাবতে পারি না তোমারই স্বামী

নীরঃ জাস্ট বিরক্তি

নীর রাগে গজগজ করতে করতে নিচে চলে যায়

মাহির শ্রাবনীর দিকে রক্তলাল দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে সামনে শ্রাবনী অবুঝ বাচ্চার মতো মুখ করে দাঁড়িয়ে আছে মাহিরের চুল থেকে টপটপ করে পানি পড়ছে মাহিরে রেগে বলে

মাহিরঃ আমাকে তোমার জোকার মনে হয়

শ্রাবনীঃ কেনো

মাহিরঃ নাটক করো না তুমি আমার ঘুমের মধ্যে এই হাল করলে কেনো আমি কি মেয়ে মানুষ

শ্রাবনীঃ কি করেছি

মাহিরঃ এক থাপ্পর পড়লে আপনাআপনি বুঝবে কি করেছো

শ্রাবনীঃ মারবেন মারুন আমিও দেখি আপনি কেমন কাপুরুষ স্ত্রীর গায়ে হাত তুলেন

মাহিরঃ ধেৎ তোমাকে আমি ওয়ার্ন করলাম নেক্সট বার এমন কিছু করলে ছাড় নেই মাইন্ড ইট

শ্রাবনীঃ আগে তো ঊরে দেখান পরে ছাড়া ছাড়ি নাও চলুন ভার্সিটির লেট হয়ে যাচ্ছে

মাহিরঃ হুমম বাট শুনো একটা কথা বলছি এটার খেলাপি করলে খুব খারাপ হবে বুঝলে

শ্রাবনীঃ হুমমম

মাহিরঃ ভার্সিটির কেউ যেনো না জানে তুমি আমার ওয়াইফ ওকে

মাহিরের কথায় শ্রাবণী ঠোঁট কামড়ে মাহিরের দিকে তাকায় অতঃপর কিছু একটা ভেবে সায় জানিয়ে দেয়

মাহির কিছু না বলে রেডি হয়ে নেয়।

দুজন একসাথে এসে কলেজ মাঠে পৌছায় সায়নের সাথে কিছুক্ষণ কথা বলে মাহিরের কাজ থাকায় মাহির আগে ভার্সিটি আসে অতঃপর নীর আর শ্রাবনী আসে মাহির ওদের পেছন পেছন আসছে হঠাৎ কোথথেকে একটা ছেলে এসে শ্রাবণীর সামনে হাঁটু গেড়ে বসে চিল্লিয়ে বলে

I LoVe YoU, Do YoU LoVe Me

আচমকা এমন হওয়ায় মাহির ভ্যাবাচ্যকা খেয়ে যায় নীর আর শ্রাবনী থতমত খেয়ে একে অপরের দিকে তাকায় শ্রাবণী পেছন ফিরে মাহির কে দেখে ছেলেটার দিকে তাকিয়ে একটা মুচকি হাসি দিয়ে চলে যায়। শ্রাবণীর হাসি দেখে ছেলেটা হ্যাঁ ধরে নেয় ছেলে টা দাঁড়িয়ে খুশিতে লাফিয়ে মাহিরের কোলে উঠে যায় মাহির এবার পুরো আহাম্মক বনে যায় ছেলে টা মাহিরকে জড়িয়ে ধরে বলো

_ ওহ নো আমি ভাবতেও পারিনি শ্রাবনী রাজি হয়ে যাবে মাহির ভাইয়া তোমাদের সবাই কে আমি ট্রিট দেবো

ছেলেটার কথায় এবার মাহির বিস্ময়ের চূড়ায় পৌঁছায় ওরই সামনে ওর বউকে প্রপোজ করে ওকেই ট্রিট দেবে ভাবা যায়।

চলবে,,,,,,

( ভুলক্রটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন, ধনিয়াপাতা)