Three Gangsters Love Part-07

0
3751

#Three_Gangsters_Love.
#Sumaiya_Moni.
#Part_7.

দুই দিন পর….

থ্রি গ্যাংস্টার হাউস……

আকাশ আজ পরিষ্কার । বাহিরে রৌদ্দে চার দিক চিকচিক করছে মনে হচ্ছে । ধীমি ধীমি বাতাস বইসে। না গরম লাগছে,না ঠান্ডা! এই আবহাওয়া বেশ মন মুগ্ধগর বলা যায়। কিন্তু চৌধুরী হাউসের আবহাওয়াটা আজ একটু বেশিই রুক্ষ্য,থমথমা মনে হচ্ছে । তা অবশ্য হবারি কথা। রুদ্র,অভ্র,শুভ্র দাঁতে দাঁত চেপে রাগ কন্ট্রোল করে এক সাথে মিশে দাঁড়িয়ে আছে। আলতাফ চৌধুরী শুভ্রের মাথা চিরুনি দিয়ে আঁচড়িয়ে দিচ্ছে । সাব্বির ও ফাহিম কোনো রকম পেটের মধ্য হাসিটা আটকে রেখেছে। হাসলেই যে গুলি খেয়ে দুনিয়া ছাড়তে হবে এটা ভালো করেই যানে। আলতাফ চৌধুরী মাথা আঁচড়ানো শেষ করে মৃদ মুচকি হেসে বলে,
-“এবার ঠিক আছে! তোমরা একদম রেডি।”
কথাটা বলেই আয়নার সামনে থেকে সরে দাঁড়াল। ওদের তিন জনের সামনে বড় একটি আয়না রাখা ছিল। সেই আয়নায় নিজেদের চেহারা দেখে রাগে চোখ বন্ধ করছে,আবার খুলছে। ঢিলাঢালা শার্ট তার মধ্যে মনে হয় আরেকজন মানুষ ঢুকতে পারবে। ঢোলা জিন্সেট প্যান্ট । মাথায় মনে হয় এক পোয়া সরিষার তেল দেওয়া হয়েছে। চেহারায় হালকা কালো রঙের কালি মাখান। পায়ের জুতো জোড়া দু বেল্টের। দেখতে পুরাই ক্ষেতের মতো লাগছে ওদের তিন জনকে।

রাগী মুড নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে আলতাফ চৌধুরী বলল,
-“কী হয়েছে? তোমাদের চেহারা এমন কেন দেখাচ্ছে?”

-“হোয়াট ইট’স দিস দাদু?”শার্ট ধরে কিছুটা ক্ষুপ্ত কন্ঠে বলে রুদ্র।

-“দিস ইজ নট ফেয়ার।” নাকমুখ ফুলিয়ে বলে অভ্র।

ওদের দু’জনের মন্তব্য শুনে আলতাফ চৌধুরী শুভ্রের দিকে তাকায়।বলে,
-“তোমার কিছু বলার আছে? থাকলে তুমিও বলো?”

-“দাদু! দেখো আমাকে বোকার মতো দেখাচ্ছে ।” কিছুটা করুন স্বরে বলে শুভ্র।

-“সেটাই তো চাই আমি। ওরা যাতে তোমাদের চিনতে না পারে। দেখাক বোকা বা ক্ষেতের মতো। তাতে সমস্যা নেই।” আলতাফ চৌধুরী দু হাত পিছনের দিকে নিয়ে বলে।

-“কিন্তু দাদু! এভাবেই কী ওদের সামনে যেতে হবে? এ ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।” বিরক্তি স্বরে বলে রুদ্র।

-“না নেই! আর হ্যাঁ! আরেকটা কথা। ভুলেও তোমাদের আসল নাম কিন্তু ওদের কে বলবে না।”

-“তাতেও কী প্রব্লেম? ” অভ্র বলে।

-“হ্যাঁ! প্রব্লেম! রুদ্র তোমার নাম রাফি আহমেদ । অভ্র তোমার নাম ওমর আহমেদ। আর শুভ্র,তোমার নাম নীল আহমেদ । রাফি,ওমর,নীল। মনে থাকে যেনো নাম তিনটি।”

-“ইয়েস দাদু।” অন্য দিকে তাকিয়ে বিরক্তি স্বরে বলে অভ্র।

-“এবার তোমরা যাও! রিক্সা করে যাবে। এই নেও ঠিকানা।”একটি কাগজ শুভ্রের দিকে এগিয়ে দিল। তাতে ঠিকানা লেখা আছে।

শুভ্র হাতে নিয়ে একবার চোখ বুলালো। রুদ্র টেবিলের উপর থেকে ওর আই ফোনটি হাতে নিতেই আলতাফ চৌধুরী ফোনটি ওর হাত থেকে নিয়ে বলে,
-“নো,নো! ফোন নিতে পারবে না। তোমাদের জন্য আমি নিউ ফোন অর্ডার করেছি। সাব্বির ফোন গুলো নিয়ে আয়।”

-“ওকে দাদু।” সাব্বির হেঁটে আলতাফ চৌধুরীর রুমে গেল। তারপর ফিরে আসে তিনটি ফোন নিয়ে। তারপর আলতাফ চৌধুরীর সামনে এসে বলে,
-“নেও দাদু।”

আলতাফ চৌধুরী সাব্বিরের হাত থেকে বাটোন ফোন তিনটি নিয়ে ওদের তিন জনের হাতে দিল ।
ওরা তিন জন ভ্রু জোড়া কুঁচকে ফোনের দিকে তাকিয়ে আছে । দেখেই মনে হচ্ছে ওরা খুশি না।

-“তোমাদের ভালো লাগুক বা না লাগুক। এই ফোন তোমাদের চালাতে হবে। আর শোনো, ওরা যাই বলুক না কেন,তোমরা কিন্তু রাগ ও ওদের সাথে খারাপ ব্যবহার করবে না। সান্ত ভাবে ওদের সাথে কথা বলবে। ঠিক আছে?”

অভ্র বিরক্তি মুখে বলে,
-“ওকে।”

-“এখন যাও তোমরা। আর ওদের নাম কিন্ত মনে রেখো রিমি,সিমি,নিধি।” কিছুটা চিল্লিয়ে বলে আলতাফ চৌধুরী ।

ওরা পিছনে ফিরে কিছু বললো না। বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেল। বাড়ি থেকে বের হয়ে কিছু দূর হাঁটার পর লোকজন ওদের দিকে তাকিয়ে মুখ চেপে হাসছে। যেটা দেখে ওরা বুঝতে পেরেও সান্ত হয়ে দাঁতে দাঁত চেপে নিজেদের রাগ কন্ট্রোল করছে। ওরা তিন জন তিনটি রিকশায় ওঠে দাদুর দেওয়া ঠিকানায় যেতে লাগলো।

রুদ্র,শুভ্র,অভ্র বাড়ি থেকে বের হতেই সাব্বির, ফাহিম পেটে হাত দিয়ে সোফায় শুয়ে হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাচ্ছে । হাসারি কথা! যে ছেলেরা কি না সামান্য নক কাটতেও পার্লারের ছেলেদের বাড়িতে নিয়ে আসে। আজ তারা ক্ষেত সেজেছে । মেকআপ আর্টিস ওদের প্রিয় দাদু!
আলতাফ চৌধুরীও ওদের সাথে হাসছে। কী করবে? তিনিই এমন ভাবে ওদের সাজাবে সেটা তারিই জানা ছিল না।

-“ওরে ভাই মোরে ধরেন,মুই আর হাসতে পারি না। চাপা-চোপা বেদনা(ব্যথা) করতাছে।” ফাহিন দু’গালে হাত রেখে বলে।

-“তুই আমারে ধর রে ফাহিম্মা। আমার হাসি কেডা থামাইবো? ভাই গো চেহারার কথা মনে পড়লেই ঢেইলা হাসি পায়।” হাসতে হাসতে সোফায় শোয়া অবস্থায় বলে সাব্বির ।

-“দাদু! তুমি একেবারে চেহারাই পালটাইয়া দিছো ভাই গো।” ফাহিম হেসে বলে ।

-“এটা সারা আর কোনো উপায় ছিল না যে। সাব্বির ব্লুটথ আর ল্যাপটপ নিয়ে আয়।”

-“কেন দাদু?”

-“আরে ওদের ফোনে আমি মাইক ডিবাইস সেট করে দিয়েছি। ওরা যা বলবে আমি সব শুনতে পারবো।”

-“ওওও,ক্যামেরা লাগাও নি কেন? ”

-“ক্যামেরা লাগালে ওরা বুঝতে পারত। তারপর আমার উপর সন্দেহ করতো। তাই লাগাই নি।”

-“ওহ! আচ্ছা নিয়া আইতাছি।”
.
.
.
রিমি,সিমি,নিধি ওরা তিন জন রেডি হয়ে বেরিয়ে পরেছে বাসা থেকে । রিকশা নিয়ে সোজা ক্যাফেতে চলে আসে। আজও তিনজনে একি রঙের থ্রিপিস পড়েছে। হিজাব তো আছেই। রিকশা থেকে নেমে দাঁড়িয়ে আছে ক্যাফের পাশে। কারণ,ওরা চিনে না ওমর,রাফি,নীলকে। আলতাফ চৌধুরীও ওদের ছবি দেয় নি। চিনবেই বা কী করে?

-“এখন কী করব বল? ওদের কে তো আমরা চিনি না।” রিমি বলে ।

-“সেটাই তো! আচ্ছা চল ভিতরে গিয়ে বসি।” সিমি বলে।

-“ভিতরে গিয়ে বসবি…..আচ্ছা চল।” নিধি বলেই হাঁটা ধরলো। রিমি,সিমিও ওর পিছু পিছু ক্যাফের ভিতরে প্রবেশ করলো।
ওরা ভিতরে যাওয়ার পর পরি রুদ্র,শুভ্র,অভ্র দের রিকশা এসে থামল। টাকা দিয়ে এক পাশে দাঁড়াল। তখনো ওদের দেখে অনেকেই অদ্ভুত দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে । যেন মনে হচ্ছে চিড়িয়াখানার বাদর দেখছে। রাগ হচ্ছে ওদের।

-“ভিতরে যাবি নাকি এখানে দাঁড়িয়ে থাকবি?” রুদ্র এক রাশ বিরক্ত ও রাগ নিয়ে বলে।

-“ভিতরেই চল।” অভ্র বলে বিরক্তস্বরে ।

-“হুম!” বলেই শুভ্র আগে আগে হাঁটতে লাগলো । ওর পিছনে ওরা দু’জন আছে। ভেতরে প্রবেশ করে চার দিকে একবার চোখ বুলিয়ে নিলো। তখনি রুদ্র ওদের বলে,
-“আমি যদি ভুল না করি তাহলে ওই দেখ! ওরাই সেই মেয়ে।”

-“হুম! চিনতে পেরেছি ।”শুভ্র বলে।

-“কী যেনো নাম বলেছিল ওদের?” মনে করার চেষ্টা করে অভ্র।

-“সেটা ওদের কাছ থেকেই জানতে পারবো। এখন ওদের কাছে চল।” রুদ্র বলে।

-“হুম।”

রুদ্র,অভ্র,শুভ্র হেঁটে ওদের সামনে এসে দাঁড়ায়।রিমি, সিমি,নিধি কথা বলছি। হুট করে ওদের সামনে তিনজন যুবককে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে ওদের কথা থেমে যায়। ভ্রু কুঁচকে তাকায় ওরা। রিমিরাও কিছু বলছে না। রুদ্ররাও কিছু বলছে না। রিমি আঙুল তুলে ভ্রু কুঁচকে বলে,
-“আলতাফ রহমান এর নাতি আপনারা?”

অভ্র ছোট করে উত্তর দেয়,
-“জি!”

-“বসুন!” সিমি মৃদ হেসে বলে।

ওরা তিন জন সময় বিলম্ব না করে বসে পড়ে। এবার রিমি,নিধি,সিমি ওদেরকে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখতে লাগলো। ওদের তিন জনকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে রুদ্রদের রাগ+বিরক্ত দুটই হচ্ছে ।

রিমি আস্তে করে সিমির কানে কানে ফিসফিস করে বলে,
-“কী দেখতে পাচ্ছিস সিমি?”

-“তিনটি বলদ!” আস্তে করে বলে রিমিকে।

রিমি ওর বাম পাশে থাকা নিধিকে আস্তে করে বলে,
-“দেখে কী মনে হচ্ছে? ”

-“ধান ক্ষেত থেকে ওঠে আসা তিনটি গরু। না,না বলদ।” আস্তে রিমির কানে কানে বলে নিধি ।

-“রাইট!”

রুদ্র,শুভ্র,অভ্র ওদের ফিসফিস দেখে আরো রাগ হচ্ছে । কিন্তু কিছু বলতে পারছে না। রিমি গলা খাকুনি দিয়ে বলে,
-“আমরা পরিচিত হলে ভালো হতো।”

-“হ্যাঁ ।” জোর করে মৃদ হেসে উত্তর দেয় রুদ্র।

-“আমার নাম রিমি । আপনার?”

-“আমার নাম রু…..রাফি আহমেদ ।”বলেও ঘুরিয়ে নেয়। রুদ্র আবার বাম পাশে থাকা অভ্রকে দেখিয়ে বলে,
-“ওর নাম ওমর । আর ওর নাম নীল।”

-“ওহ! আচ্ছা । ওর নাম নিধি,আর ওর নাম সিমি ।” বামে,ডানে দেখিয়ে বললো।

-“ও।”

ঠিক মতোই বসেছে ওরা। রুদ্র ওয়েটার বয়কে ডেকে কফি ও নাস্তার অর্ডার দিল। নাস্তা খেতে খেতে ওদের মাঝে কথা হয়। রিমি,সিমি,নিধি ওরা বুঝতে পারে এই তিনজন ক্ষেত কে ওদেরি ঠিক করতে হবে। ওদের কাছে এটাও মনে হয় ওরা খুব সান্ত,নরম প্রকৃতির লোক। টুক টাক কথা হয় ওদের মাঝে। তারপর রুদ্র,শুভ্র,অভ্র কাজের বাহানায় তাড়া দিয়ে বলে বাসায় যাবে। রিমি রা কিছু বলে না। তবে পরশুদিন আবার রমনা পার্কে আসতে বলে ওদের। ওরা কাজের বাহানা দেয়। কিন্তু রিমিরা একটু ফোস করার পরি ওরা হ্যাঁ বলে। রিমি,সিমি,নিধি রিকশা নিয়ে বাসায় চলে আসে। ওরা যাওয়ার পর পরি ওদের নিতে গাড়ি আসে। ওরা গাড়িতে উঠে বাসায় চলে আসে। তবে একটা অবাক কাণ্ড হচ্ছে ওদের তিন জনের হাতে ‘ফেয়ার এন্ড হ্যানসাম’ ক্রিম । যা একটু আগে রিমি,সিমি,নিধি কিনে ওদের হাতে ধরিয়ে দিয়ে গেছে। ওরা তেমন কিছু না বললেও ওরা ভালো করেই বুঝতে পেরেছে ওদের কে দেখে ওরাও বলদ,ক্ষেত মনে করেছে । রাগ হচ্ছিল খুব,যখন ওরা এটা কিনে এদের হাতে দেয়। উপরে প্যাকেট করা ছিল। গাড়িতে বসে যখন খুলে তখন এটা দেখে রেগেমেগে আগুন হয়ে যায়। রাগী দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে ক্রিমের দিকে । কেউ কারো সাথে কথা বলছে না।
.
.
-“এমন ক্ষেতও এখনো আছে ওদের না দেখলে বুঝতামি না।” বলেই হাসতে লাগলো রিমি।

-“ক্ষেত বলছিস কী! বলদ বল বলদ।” হেসে হেসে বলে সিমি।

-“আল্লাহ্! তাদের দেখে এমন হাসি পাচ্ছিল আমার,কোন রকম ভাবে হাসি আটকে রেখেছিলাম।”বিছানায় শুয়ে হাসতে হাসতে বলে নিধি ।

-“ফেয়ার এন্ড হ্যানসাম দেখে নিশ্চয় বুঝতে পেরেছে আমরা কী বুঝাতে চেয়েছি। আর যদি তাতেও না বুঝে, তাহলে তো বুঝবো তারা পুরাই আবুল।” রিমি উঁচু স্বরে হেসে বলে।

-“হুমম।”
.
.
থ্রি গ্যাংস্টার হাউস…..

রুদ্র,অভ্র,শুভ্র দের হাতে ‘ফেয়ার এন্ড হ্যানসাম’ ক্রিম দেখে এবার আর সাব্বির,ফাহিম স্থির থাকতে পারল না। ড্রইংরুমে বসেই খিল খিল করে হাসতে হাসতে দু’জন দু’জনার গায়ে ঢলে পড়ছে।
আলতাফ চৌধুরীরও ভীষন হাসি পাচ্ছে। কোন রকম মুখ চেপে হাসি থামিয়ে রেখেছে। রুদ্র,অভ্র,শুভ্র রাগে ফোস ফোস করছে। গাড়িতে বসে স্বাভাবিক থাকলেও এখন ওদের হাসে দেখে নিজেদের রাগ কন্ট্রোল করা দায় হয়ে যাচ্ছে ।
রুদ্র চিৎকার করে বলে,
-“সাব্বির আমার পিস্তলটা নিয়ে আয়।”

হাসি থেমে যায় সাব্বিরের,সাথে ফাহিমেরও। সাব্বির প্রশ্ন করে,
-“কেন ভাই?”

রুদ্র চেঁচিয়ে চিবিয়ে চিবিয়ে বলে,
-“তোদের দুটো কে খুন করব।”

এই কথাটা মাত্রই সাব্বির আলতাফ চৌধুরী কাছে দৌঁড়। আর ফাহিম ফট করেই রুদ্রের পা ধরে কান্না করতে করতে বলে,
-“সারি ভাই,সারি,মোরে মাফ কইরা দেন। মুই জম্মের সারি। মুই আর হাসমু না। হেরপরও(তারপর) মোরে মাইরেন না।”

-“সারি!”অভ্র ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞেস করে।

-“হ ভাই সারি!” ফাহিম নাক টেনে বলে।

সাব্বির তখনি ফট করেই বলে ওঠে,
-“গাঁধা,ওটা সারি না স্যরি হবে ।”

রুদ্র,শুভ্র,অভ্র এটা শুনেই ফিক করে হেসে দিল। রাগ গেলো উধাও হয়ে। ফাহিম বোকা হয়ে আছে। আলতাফ চৌধুরীও হাসতে লাগলো। রুদ্র হেসে হেসে ফাহিমকে বলে,
-“পা ছাড়,ওঠ?”

-“না আগে কন সারি মানছেন!” ফাহিম রুদ্রের পা আরেকটু জোরে ধরে বলে।

-“হ্যাঁ! তোর সারি মেনে নিলাম। এবার পা ছাড়।” এক গাল হেসে বলে রুদ্র।

ফাহিম‌ও এক গাল হেসে পা ছেড়ে দেয়।আলতাফ চৌধুরী ওদের তিন জনকে প্রশ্ন করে,
-“ওদের কে কেমন লাগলো তোমাদের কাছে?”

-“সেই উত্তর আমার কাছে নেই।”কথাটা বলেই বসা থেকে ওঠে দাঁড়ায় রুদ্র। তারপর উপরে যেতে লাগলো ।

-“আমার কাছেও নেই দাদু।” গম্ভীর কন্ঠে বলে অভ্রও চলে যেতে লাগলো ।

-“সেম দাদু।” শুভ্রও চলে যায় উপরে।

-“এটা কী হলো দাদু?” সাব্বির বলে।

-“বুঝবি না তুই বোকা।” বাকা হেসে বলে আলতাফ চৌধুরী ।
___________________________

রাতে….

-“রিমি ওই নীল বলদ টাকে একটি কল দেবো?” সিমি ফোন হাতে নিয়ে বলে।

-“তোর ইচ্ছা। আমি কী জানি?” রিমি দু কাধ উঁচু করে বলে।

-“একটা মিস কল দেই ওই ওমর বলদটাকে।” নিধি এক ভ্রু উঁচু করে বলে ।

-“ওয়েট,ওয়েট! কল দিস না। ওরা মনে করতে পারে ওদের প্রতি আমাদের আকর্ষণ আছে। তাই থাক কল দেওয়ার দরকার নেই।” রিমি বলে।

-“আচ্ছা ঠিক আছে দেবো না।” কথাটা বলে সিমি শুয়ে পড়ে।
ওর সাথে রিমি ও নিধিও শুয়ে পড়ে।
.
.
থ্রি গ্যাংস্টার হাউস……..

হল রুমে রুদ্র,অভ্র,শুভ্র দাঁড়িয়ে আছে। ওদের সামনে চল্লিশ,পঁঞ্চাশ জন বডিগার্ড রা মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে। ইম্পর্ট্যান্ট কথা বলার জন্য সব বডিগার্ড দের ডাকা হয়েছে । সাব্বির,ফাহিমও‌ সেখানে দাঁড়ান ছিল।

রুদ্র এদিক,সেদিন পায়চারি করে গম্ভীর গলায় বলে,
-“সব খানে পুলিশ ফোর্স লাগানো আছে। কিন্তু তারপরও তোমাদের চোখ,কান খোলা রাখতে হবে। সেদিন তালুকদারের দশজন লোককে মেরেছো। তাই বলে এটা ভেবো না তালুকদার চুপ থাকবে। তালুকদার ছদ্মবেশে সিলেট থেকে ওদের লোক ঢাকায় ঠিকিই পাঠাবে। তাই,পুলিশ দের সাথে তোমরাও পাহারা দিবে।”

সবাই এক সাথে বলে,
-“জি স্যার ।”

-“কোনো ইনফরমেশন পেলে?” অভ্র প্রশ্ন করে বডিগার্ড দের।

-“স্যার এখনো কোনো ইনফরমেশন পাওয়া যায় নি।”একজন বডিগার্ড মাথা নিচু রেখেই বলে ।

-“আচ্ছা,ঠিক আছে তোমরা যাও।” শুভ্র বলে।

বডিগার্ড রা চলে যেতে লাগলো। এতক্ষণ আলতাফ চৌধুরী করিডোরে বসে বডিগার্ড দের বলা কথা গুলো শুনছিল। তিনি ভ্রু কুঁচকে কিছু একটা ভাবলেন। তারপর দীর্ঘনিঃশ্বাস ছেড়ে তার রুমে চলে গেলেন।
.
.
.
.
.
Continue To……..