you are only my queen part-6+7

0
3892

#you_are_only_my_queen
Faria Siddique
Part 6

রাতে

আমি,রুশা আর মেহেক আমরা সারাদিন অনেক মজা করলাম।আমরা তিনজনে বাড়ির ১২ টা বাজিয়ে দিয়েছি।আমরা তিনজন এখন সোফায় বসে চিপস খাচ্ছি আর কার্টুন দেখছি।
ঠিক এমন সময় আমার কল আসলো। দেখলাম আমার বড়ভাইয়া ভিডিও কল করেছে।।আমি কল ধরলাম
আমিঃহাই ভাইয়া।কেমন আছ?
ভাইয়াঃভালো।তুই কেমন আছিস টুকু??
আমিঃভালো। ছোটভাইয়া কই?
ছোটভাইয়াঃআমি এখানে মিস্টি।
আমার সাথে রুশা আর মেহেক ও বসে ছিল তাই ভাইয়ারা ওদেরকেও দেখছে।
বড়ভাইয়াঃওই মেয়ে গুলা কে টুকু??
আমিঃভাইয়া ওরা আমার ফ্রেন্ড। দাঁড়াও দেখাচ্ছি।
এই বলে আমি মেহেকের সামনে মোবাইলটা ধরলাম।
আমিঃমেহেক আমার বড়ভাইয়া।
মেহেকঃমোবাইলের দিকে তাকিয়ে সালাম দিল তারপর আবার কার্টুন দেখা শুরু করে দিল।আমি বুঝতে পারলাম মেহেকের এখন শুধুই কার্টুনের দিকে মনোযোগ।
তাই আমি ভাইয়ার সাথে কথা বলতে লাগলাম।
আমিঃকেমন দেখলে ভাইয়া?
আমার এই কথাটা রুশা খেয়াল করেছে।তাই আমার দিকে ভ্রু কুচকে জিজ্ঞাসার চোখে তাকিয়ে আছে।
আমি ইশারায় বললাম পরে সব বলছি।
বড়ভাইয়াঃকি কেমন দেখলাম?
আমিঃমেহেককে?
বড়ভাইয়াঃভালোই।
এই কথাটা বলেই মুচকি হাসল।
আমিঃতার মানে আমার ভাইয়াও কোনমেয়েকে খেয়াল করল!(দুস্টু হেসে)
বড়ভাইয়াঃবাদ দে।এখন বল তোর দিনকাল কেমন চলছে?
আমিঃভালোই। তা ছোটভাইয়ার কাছে দাও তো।
বড়ভাইয়াঃএই নে।
আমিঃকি কর ছোটভাইয়া??
ছোটভাইয়াঃমিস্টি আমি আর ভাইয়া তোর সাথে একটু পরে কথা বলি কারন কালকে একটা মিটিং আছে।প্লিজ রাগ করিস না।আমরা একটু পরে তোকে কল করছি।
আমার খুব রাগ হলো।
আমিঃতোমাদের আর কল করা লাগবে না।
এই বলেই কল কেটে দিলাম।
রুশাঃকি হলো
আমিঃকিছু না।চল আমরা খেয়ে শুয়ে পরি।অনেক রাত হয়ে গেছে।রহিম চাচাও অনেকবার খেতে ডাকল।
মেহেকঃহুম চল।
এই বলে আমরা তিনজন খেয়ে রুমে চলে আসলাম।
এসে আমরা সবাই শুয়ে পরলাম।আমি আর রুশা সাইডে আর মেহেক মাঝখানে শুলো।
আমি মন খারাপ করে শুয়ে আছি।ভাইয়ারাও অনেক বার কল করেছে ধরি নাই।
আমি কান্না করতে করতে ঘুমিয়ে গেলাম।

রাত ৩ঃ৩০

আজকেও লোকটা এসেছে।আমি ঘুমের মধ্যেও বুঝতে পারলাম।তাই চোখ খুললাম।
আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে আছি।কারন লোকটার আর আমার মধ্যে একচুলেরও ফাক নাই।লোকটার গরম নিঃশ্বাস আমার মুখের ওপর পরছে।আমি লোকটার চোখের দিকে তাকিয়ে আছি।লোকটার চোখগুলা দেখলেই কেমন জানি একটা ঘোর লেগে যায়।আমি তারাতারি করে চোখ নামিয়ে নিলাম।
আমিঃআপনি আজকেও এসেছেন?(ফিসফিস করে)
লোকটা আমার ফিসফিস কথা শুনে হেসে দিল।
তারপর লোকটাও ফিসফিস করে বলল
লোকঃকি করবো তোমাকে দেখতে ইচ্ছা করছিল।তাই চলে এলাম।
আমিঃদেখুন আপনি এখান থেকে যান।আমি সহ্য করতে পারি না আপনাকে।যান প্লিজ এখান থেকে।আর কোনদিনও আমার সামনে আসবেন না প্লিজ।
আমি এই কথাগুলা বলে লোকটার দিকে তাকালাম।লোকটার মুখ দেখা না গেলেও চোখগুলা লাল হয়ে আছে।
আমার কেমন জানি ভয় হতে লাগলো।
আমি কিছু বলতে যাবো তার আগেই লোকটা আমার ঠোটে তার ঠোট ডুবিয়ে দিল।
আমার চোখ দুটো বড় হয়ে গেলো। আমি প্রানপন চেষ্টা করছি ছুটার কিন্তু আমার মতো শুটকির কি আর এই ক্ষমতা আছে যে আমি এই বডিবিল্ডার বজ্জাতের কাছ থেকে ছুটতে পারবো। অনেকক্ষন চেষ্টা করার পরও পারলাম না।আমার শক্তি সব শেষ হয়ে গেছে।তাই আমি থেমে গেলাম।
প্রায় ১০ মিনিট পর আমাকে ছাড়ল।
আমি হাপাতে লাগলাম।
আমিঃআপনি কি মানুষ? বজ্জাত লোক একটা (রেগে হাপাতে হাপাতে)
লোকঃআর যদি কোনদিন আমাকে এসব কথা বলেছ তাহলে এর চেয়ে কঠিন শাস্তি পাবে।
এই বলে চলে যেতে লাগলো। কি ভেবে যেন আবার ফিরে এলো।
লোকঃআজকে তোমার ফ্রেন্ডদের জন্য আমি তোমার কাছে থাকতে পারলাম না।কিন্তু কালকে যদি এমন কর তাহলে কিন্তু তোমার খবর আছে।আমার ঘুম হারাম করে তুমি শান্তিতে থাকতে পারবা না ময়নাপাখি।
বলেই চোখ মেরে চলে গেল।
আমি হা হয়ে তাকিয়ে আছি।আমি ঘুমাতে যাবো ঠিক তখনি
রুশাঃকে ছিল লোকটা?
আমি ঠাস করে উঠে বসে গেলাম।আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে আছি।রুশাও উঠে বসল।
রুশাঃমেহেক ঘুমিয়ে আছে।এখন বল লোক টা কে?
আমিঃআমি জানি না।
রুশাঃকি!!!!!!
আমিঃহুম।
তারপর আমি রুশাকে সব বললাম।রুশা শুনে হাসতে হাসতে শেষ।
আমিঃআমার জান যাচ্ছে আর তুই হাসচ্ছিস?(রেগে)
রুশাঃতার মানে আমাদের ফারি ও কাউকে ভয় পায়।
এটা বলেই আবার হেসে দিল।
আমিঃহয়েছে এবার ঘুমা।
রুশাঃহুম।
এই বলে আমি আর রুশা ঘুমিয়ে গেলাম।

In london

বড়ভাইয়াঃকিরে তোর হলো?
ছোটভাইয়াঃহুম শেষ চল।
বড়ভাইয়াঃটুকু যদি একবার জানতে পারে তাহলে কথা বলাই বন্ধ করে দিবে।
ছোটভাইয়াঃতার জন্যই তো এতো চকলেট নিয়েছি।
বড়ভাইয়াঃআচ্ছা তারাতারি চল।
ছোটভাইয়াঃ হুম চলো।
এই বলে আমার দুইভাই বের হয়ে গেলো এয়ারপোর্টে যাওয়ার জন্য। কারন আমাকে সারপ্রাইজ দেয়ার জন্য ওরা বাংলাদেশে আসছে।
এরজন্যই কালকে আমার সাথে এমন করলো।
তারা দুইজনে ফ্লাইটে উঠে গিয়েছে।আর মাত্র কিছুক্ষন পর ওরা আমার কাছে চলে আসবে।

চলবে………..

#you_are_only_my_queen
Faria Siddique
Part 7

সকালে
আমি,রুশা আর মেহেক ঘুম থেকে উঠতে উঠতে ৮ঃ০০ টা বেজে গেছে।
আমরা তিনজনই উঠে ফ্রেশ হয়ে নিলাম।
রহিম চাচা আমাদের খেতে ডাক দিল।
আমরা রেডি হতে লাগলাম।

আজকে আমি কালো কালারের চুরিদার পরেছি।চুলগুলা মাঝখান দিয়ে সিতা করে দুইপাশে ছেড়ে দিলাম। হাতে বড়ভাইয়ার দেওয়া প্লাটিনামের ব্রেসলাইট পরলাম।চোখে একটু কাজল আর হালকা লিপস্টিক দিলাম।

রুশা আজকে সাদা কালারের লং জামা পরেছে। কয়েকটি চুল পিছনে ক্লিপ দিয়ে আটকে বাকি গুলা ছেড়ে দিল।চোখে কাজল আর লিপস্টিক।

মেহেক আজ জাম কালারের থ্রিপিস পরেছে আর হালকা সেজেছে।

ব্যাস আমরা তিনজনই রেডি হয়ে গেলাম।
আমরা সিড়ি দিয়ে নামছি।রহিম চাচা,চাচি সহ সবাই আমাদের দিকে হা করে তাকিয়ে আছে।
আমিঃকি হলো চাচা,চাচি এভাবে হা করে তাকিয়ে আছ কেন?(অবাক হয়ে)
রহিম চাচাঃতোমাগো তিনজনরে খুবি সুন্দর লাগতাছে।
চাচিঃহ আম্মা তোমারে তো সবচেয়ে সুন্দর লাগতাছে।
রুশাঃএটা কিন্তু ঠিক না চাচি। (কান্নার সুরে)
মেহেকঃএকদম….
আমি,চাচা আর চাচি ওদেরকে দেখে হেসে দিলাম।
চাচিঃতোমাগোও সুন্দর লাগতাছে।
রহিম চাচাঃতোমরা তারাতারি খাইয়া লও।আমি গাড়ি বাহির করতে কইতাছি।
আমিঃঠিকাছে চাচা।
তারপর আমি,রুশা আর মেহেক খেয়ে আমরা গাড়ি নিয়ে বের হয়ে পরলাম।

In bangladesh airport

আমার দুইভাই এইমাত্র বাংলাদেশে এসে পৌছালো।আমার দুইভাইয়ের জন্য কতোগুলা গার্ডস আর গাড়ি অপেক্ষা করছে।আমার দুইভাইকে রিসিভ করার জন্য অনেক গার্ডস আসলো।আমার ভাইয়ারা হাটছে তার পিছনে পিছনে অনেকগুলা গার্ডস।

বড়ভাইয়া আজকে সাদা প্যান্ট আর কালো শার্ট,হাতে সাদা আর কালো কালারের একটা ব্লেজার,পায়ে শু,হাতে ঘড়ি আর চুলগুলু একসাইডে স্পাইক করা।

আর ছোটভাইয়া নীল কালারের শার্ট আর সাদা কালারের প্যান্ট,হাতে সাদা আর নীল কালারের একটা ব্লেজার, পায়ে শু আর চুলগুলা ওপর দিকে স্পাইক করা,হাতে ঘড়ি।

আমার দুইভাইয়ের দিকে পুরা এয়ারপোর্টের সবাই হা করে তাকিয়ে আছে।বিশেষ করে মেয়েরা।
আমার ভাইয়ারা এয়ারপোর্ট থেকে বের হয়ে কালো কালারের BMW গাড়িতে উঠল।আর সামনে পিছনে অনেক গুলা কালো গাড়ি।

গাড়িতে উঠে বড় ভাইয়া গার্ডসদের বলল
বড়ভাইয়াঃটুকুর ভার্সিটিতে চলো।
ভাইয়ার কথা অনুযায়ী সব গাড়ি আমার ভার্সিটির উদ্দেশ্যে রওয়ানা হল।
বড়ভাইয়াঃছোটু চকলেটগুলা নিয়েছিস তো?
ছোটভাইয়াঃহুম।মিস্টির পছন্দের সব চকলেট নিয়েছি।তাও আবার বক্স পুরা।
বড়ভাইয়াঃযদি রাগ না ভাংগে তাহলে তোর খবর আছে।
ছোটভাইয়াঃরাগ অবশ্যই ভাঙবে।দেখে নিও।
বড়ভাইয়াঃভাঙলেই ভালো না হলে তোর খবর আছে।

In varsity

আমি একটা ক্লাস করে ক্যান্টিনে চলে এলাম কারন আমার ভালো লাগছে না।ভাইয়াদের ওপর খুব রাগ হচ্ছে।
আমি একটা টেবিলে বসে আছি।আমার প্রচুর রাগ উঠতাছে কেন আমি নিজেই বলতে পারবো না।
আমার এখন কান্না করতে ইচ্ছা করতাছে।
আমি কোনমতেই আমার রাগ কন্ট্রোল করতে পারছি না।
এমন কেন হচ্ছে আমি নিজেই বলতে পারবো না।
আমি চুপ করে বসে নিচের দিকে তাকিয়ে বড় বড় শ্বাস নিয়ে রাগ কামানোর চেষ্টা করছি।কিন্তু পারছি না।
ঠিক তখনি রুদ্র আর তার দলবল ক্যান্টিনে ডুকল।
তারা ঠিক আমার পাশের টেবিলে বসল।রুদ্র ঠিক আমার সোজাসোজি বসল।
রুদ্র আমার দিকে হা করে তাকিয়ে আছে।
রুদ্রঃএই মেয়েটা এতো সুন্দর কেন?(মনে মনে)
আর রিধি আমার দিকে রাগিভাবে তাকিয়ে আছে।
রিধিঃএখনি আমি আমার চড়ের বদলা নিব।
আকাশঃদরকার কি হুদাই ঝামেলা করার!
নিলাঃএকদম ঠিক।
রিধিঃরুদ্র তুমি কি বলো?(নেকা সুরে)
রুদ্রঃদরকার কি ঝামেলা করার।
সাদঃদরকার নাই মানে!এই চল রিধি আমিও যাবো তোর সাথে। থাপ্পড় ও আমাকেও মেরেছে।
এই বলেই দুইজন আমার কাছে আসলো।
আমি দেখেও না দেখার ভান করলাম।কারন আমি জানি এখন আমি কি করব আমি নিজেও জানি না।
রিধিঃএই মেয়ে তোমার সাহস তো কম না তুমি ওইদিন আমার আর সাদের গায়ে হাত তুলেছো?(রেগে)
আমিঃ…………….
রিধিঃকথা বল কথা বলিস না কেন?
আমি…………..
সাদঃমনে হয় ভয় পেয়ে গেছে?
এই বলেই তারা দুইজন হাসতে থাকে।
আমি আর পারলাম না।আমি দাঁড়িয়ে এক জগ পানি রিধির মাথায় ঢেলে দিলাম।তারপর সাদকে একটা জোরে থাপ্পড় মেরে বের হয়ে মাঠে চলে আসলাম।
রুদ্ররা এবার রিধি আর সাদের কাছে আসলো।
রুদ্রঃএতো বড় সাহস আমার ফ্রেন্ডদের গায়ে হাত তুলে। চল তো।
এই বলে তারা সবাই আমার পিছন পিছন মাঠে আসতে লাগলো।
আমি মাঠের এককোণায় বসে কান্না করতে লাগলাম।জানি না কেন।
রুদ্ররা আমার কাছে আসলো।রুদ্র আমাকে কিছু বলতে যাবে তার আগেই গেইট দিয়ে সা সা করে ১০ টার মতো গাড়ি ডুকল।
তারপর একটা BMW গাড়ি ডুকলো।

আমি মাঠের মাঝখানে চলে আসলাম।
সবাই অবাক হয়ে গাড়িগুলার দিকে তাকিয়ে আছে।
আকাশঃকোন মন্ত্রি এলো নাকি।
নিলাঃজানি না।
রুদ্রঃদেখা যাক কে বের হয়।
অনিলঃযেই বের হোক তারা মনে হয় হেব্বি বড়লোক।
রাজঃহতে পারে তাদের কোন রিলেটিভ এইখানে পড়ে।
রুদ্রঃহতে পারে।কিন্তু আমাদের কলেজ এ এতো বড়লোক কেউ পড়ে আর আমরাই জানি না।
আমি তাকিয়ে আছি কান্না বন্ধ করে।
দেখলাম BMW গাড়ি থেকে আমার ভাইয়ারা নামল।
আমি কিছু না ভেবে মুর্তির মত দারিয়ে আছি।আমার মনে হচ্ছে আমি স্বপ্ন দেখছি।

চলবে………