you are only my queen Special Part

0
3664

#you_are_only_my_queen
Faria Siddique
part: new year special

আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে আছি।আমার মনে হচ্ছে আমি স্বপ্ন দেখছি।
দেখলাম আমার ভাইয়ারা আমার দিকে হাসি দিয়ে তাকিয়ে আছে।আমি নিজেকে চিমটি কাটলাম।না ওরা সত্যিই এসেছে।
আমি দৌড়ে গিয়ে ভাইয়াদের জড়িয়ে ধরলাম।
সবাই আমার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে।
ঠিক তখনি আমার কালকের রাতের কথা মনে পরে গেল।আমি তাদেরকে ছেড়ে ক্যান্টিনে চলে গেলাম।
আমার ভাইয়ারা বুঝতে পারলো।
বড়ভাইয়াঃটুকু শুন।টুকু
ছোটভাইয়াঃমিস্টি।
দুইজনেই আমার পিছনে পিছনে আসতে লাগলো।
আর এইদিকে আমার ভাইয়াদের দেখে সব মেয়েরা হা হয়ে তাকিয়ে ছিলো।
সবাই আমার ভাইয়াদের ওপর ক্রাশ খাইছে।
রুদ্ররা সবাই দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখতে লাগলো।
আকাশঃ এরা কারা?একজন হইলে বুঝতাম যে ফারিয়ার বয়ফ্রেন্ড কিন্তু এরা তো দুইজন।
রুদ্রঃচল ক্যান্টিনে গিয়ে পুরা কাহিনী টা দেখি।
এই কথা বলার সাথে সাথে সবাই অবাক হয়ে রুদ্রের দিকে তাকিয়ে আছে।
রুদ্রঃকি হলো?
রাজঃএই কি আমাদের সেই রুদ্র যে কোন মেয়ের দিকে তাকাতো না?কোন মেয়েকে পাত্তাই দিত না?
আকাশঃযাই বল মেয়েটার কিন্তু সেই রাগ আর জেদ।
রুদ্রঃহয়েছে এবার চল।
মেহেক আর রুশাও ক্লাস শেষ করে ক্যান্টিনে আসলো।

অন্যদিকে

আমি ক্যান্টিনে গিয়ে একটা টেবিলে বসে আছি। রাগ যেন বেড়েই চলেছে।এই ক্যান্টিনটা অনেক বড় তাই প্রায় সব মেয়েরা এসে বসে আছে শুধু মাত্র এখানে কি হয় তা দেখার জন্য।
আমি বসে আছি। আমার ভাইয়ারা আমার পাশে গিয়ে বসলো। আমি মুখ তুলে তাকালাম।আমার মুখ দেখে ভাইয়ারা ভয় পেয়ে গেলো কারন অতিরিক্ত রাগের ফলে আমার মুখ লাল হয়ে গেছে।
বড়ভাইয়াঃকি হয়েছে টুকু?
আমিঃতোমরা এখানে কেন এসেছো?
ভাইয়ারাঃসরি প্লিজ রাগ করে থাকিস না।তোকে সারপ্রাইজ দেয়ার জন্যই এতো কিছু।
আমি কিছু বললাম না।
ঠিক এমন সময় রুশা আর মেহেক এলো।
ওরা এসে কোন কথা না বলে চুপ করে দাঁড়িয়ে আছে।
ছোটভাইয়াঃকি হয়েছে বলবি তো?
আমিঃআমার অনেক রাগ উঠতাছে কেন তা আমি নিজেও জানি না।
বড়ভাইয়াঃওকে ওয়েট।ছোটু এই ক্যান্টিনের সব কাচের গ্লাস নিয়ে আয়।
সবাই অবাক হয়ে ভাইয়ার কথা শুনছে।
ছোটভাইয়া আর দেরি না করে গার্ডসদের বলল।মুহুর্তের মধ্যে সব গ্লাস আমার সামনে আনা হলো।
বড়ভাইয়াঃনে টুকু এবার একটা একটা ভাঙ।
ছোটভাইয়াঃহুম ভাইয়া ঠিক বলেছে।মিস্টি তোর যতগুলা ইচ্ছা ততগুলা ভাঙ।
সবাই এবার অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে।
ক্যান্টিনের দায়িত্বে যিনি আছেন তিনি এসে বললেন।
ক্যান্টিনের পরিচালকঃএখানে কি হচ্ছে এগুলা।(রেগে)
ছোটভাইয়াঃআওয়াজ নিচে।(চিল্লিয়ে)আমার বোনের সামনে কেউ উচা গলায় কথা বললে আমি তাকে লাশ করে দিব।
ভাইয়ার চিল্লানিতে সবাই কেপে উঠে।
রুদ্ররা একজায়গায় দাঁড়িয়ে সব কিছু দেখতে থাকে।
বড়ভাইয়াঃছোটু ঠান্ডা হ।আর এই যে আপনি। আপনি জানেন আমরা কে?গিয়ে আপনার প্রিঞ্চিপালকে খবর দিন।গিয়ে বলুন লন্ডন থেকে ফারদিন সিদ্দিকী শুদ্ধ আর ফারহান সিদ্দিকী স্রোত এসেছে।
ভাইয়া আর কিছু বলতে পারলো না আমি গ্লাস ভাঙা শুরু করলাম।কারন আমার যেন কমছেই না।গ্লাস ভাঙতে ভাঙতে আনার হাত দিয়ে কাচ ডুকে গেলো।
আমিঃআহহ।
ছোটভাইয়াঃএইইই মিস্টি কি হয়েছে তোর?(চিল্লিয়ে কান্নার সুরে)
বড়ভাইয়াঃচল তারাতারি হসপিটালে নিয়ে চল।
রুশাঃহসপিটালে নেয়া লাগবে না আমাদের এখানেই অভিজ্ঞ ডাক্তার আছে।
ছোটভাইয়াঃতাহলে বসে আছো কেন ডাকো তারাতারি।(ধমক দিয়ে)
ভাইয়ার ধমকে রুশাসহ সবাই কেপে উঠে।
তারপর রুশা গিয়ে ডাক্তারকে ডেকে আনলে উনি এসে আমার হাত ব্যান্ডেজ করে দেয়।
আমিঃব্যাথা আমার লেগেছে তোমাদের না।এমন করছো যেন ব্যথা আমার না তোমাদের লাগছে।
বড়ভাইয়াঃএতো কেয়ারলেস কেন তুই?একটু আস্তে আস্তে ভাঙবি তো..
ছোটভাইয়াঃরাগ কমেছে?
আমিঃহুম কিছুটা..
বড়ভাইয়াঃও শিট আমি কি করে ভুলে গেলাম!।
ছোটভাইয়াঃকি ভুলে গেলে?
বড়ভাইয়াঃএখন তো টুকুর পিরিয়ড টাইম তাই ওর মুড সুইং হচ্ছে।আমি এতটা কেয়ারলেস কি করে হলাম।
ক্যান্টিনের সবাই হা হয়ে আমাদের দেখছে।কেউ কেউ বলছে
-এ কেমন মেয়ে যে পিরিয়ডের কথা ভাইয়াদেরকে বলে!
ভাইয়ারা এসব কথা শুনতে পেল।কিন্তু আমি ইশারায় মানা করলাম কিছু না বলতে।তাই ভাইয়ারা কিছু বলল না।
আমিঃছোটভাইয়া তুমি রুশার সাথে মিসবিহেভ করেছে ওকে সরি বলো।
ছোটভাইয়াঃফারহান সিদ্দিকী তার ভাই আর বোন ছাড়া কাউকে সরি বলে না।
আমি কিছু বলতে যাবো তার আগেই বড়ভাইয়া বলল
বড়ভাইয়াঃরুশা আসলে তুমি কিছু মনে কর না ও এরকমি একটু রাগি।
মেহেকঃএকটু!!!উনি একটু না অনেক খানিই রাগি।
বড়ভাইয়া এবার মেহেকের দিকে খেয়াল করলো।ভাইয়া অনেকক্ষন তাকিয়ে থেকে তারপর মুচকি হেসে বলল
বড়ভাইয়াঃপিচ্ছি পাগলি।
আমি আর ছোটভাইয়া ছাড়া আর কেউ শুনতে পায় নি।আমরা দুইজন বাকা চোখে ভাইয়ার দিকে তাকালাম।
বড়ভাইয়া কাশি দিয়ে উঠলো। ঠিক তখনি প্রিঞ্চিপাল আসলো।
প্রিঞ্চিপালঃআরে স্যার আপনারা কখন আসলেন?(উত্তেজিত হয়ে)
বড়ভাইয়াঃ১ ঘন্টা হলো। তো আপনাকে যে জন্য ডেকেছি তা হলো আমাদের বোন আপনার ক্যান্টিনের সব গ্লাস ভেঙে ফেলেছে।আমি একটা চেক লিখে দিচ্ছি সব আবার কিনে নিবেন।
প্রিঞ্চিপালঃআরে না না লাগবে না।
ছোটভাইয়াঃভাইয়া আপনাকে জিজ্ঞাসা করে নাই।ভাইয়া যা বলছে তাই করেন।তারাতারি চেকটা নেন।
প্রিঞ্চিপাল ভয়ে ভয়ে চেকটা নিল।
প্রিঞ্চিপালঃআমার রুমে চলেন ওখানে……
আর কিছু বলার আগেই ভাইয়ারা ইশারায় থামিয়ে দিল আর যেতে বলল।
প্রিঞ্চিপাল চলে গেলো।

রুদ্রঃবাহ বাহ বোনের জন্য এতকিছু!!!!
নিলাঃআর ও ওর ভাইয়াগুলার মতই কিউট হইছে।
আকাশঃফারিয়া যে এতো বিগ ফ্যামিলি থেকে বিলং করে তা আমরা এতোদিন কেউ বুঝতে পারি নাই।
রাজঃএই মেয়ের নাকের ডগায় রাগ থাকে আর রিধি আর সাদ কিনা গেছে ওর সাথে লাগতে।
অনিলঃতোদের ভাগ্য ভালো ফারিয়া তোদের কথা কিছুই তার ভাইয়াদেরকে বলে নাই।
তখনি রুশা পিছন থেকে বলে উঠে
রুশাঃরিধি আপু আর সাদ ভাইয়ার জন্য ফারিয়া একাই যথেষ্ট।
রুদ্রঃতুই এখানে বাড়ি যাস নাই?
রুশাঃযাবো।
রুদ্রঃদাড়া এবার থেকে আমি তোকে নিয়েও আসবো আর বাড়িতে নিয়েও যাবো।
রুশাঃসত্যিইইইই।
রুদ্রঃহুম রে পাগলি।
এই বলে রুশা আর রুদ্র চলে গেলো।
মেহেকঃআজ আমার কোন ভাই নাই বলে।
তখনি আমি পিছন থেকে বলে উঠলাম।
আমিঃকে বলেছে নাই?আমার ভাইয়ারা তো তোরই ভাইয়া।(দুস্টু হেসে বড়ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে)
আমার কথা শুনে বড়ভাইয়া কাশতে শুরু করলো।
ছোটভাইয়াঃআমার কোন সমস্যা নাই।আমি রাজি।আমার মনে হয় ভাইয়াও রাজি।তাই না ভাইয়া?(বাকা হেসে)
বড় ভাইয়া কিছু না বলে আমাদের দিকে অসহায়ভাবে তাকিয়ে আছে।
মেহেকঃতাহলে তো ভালোই।আমি দুইটা ভাইয়া ফেলাম।
ওর এই কথা শুনে আমি আর ছোটভাইয়া ফিক করে হেসে দিলাম।
বড়ভাইয়াঃবাড়ি যাওয়া যাক। আর মেহেক তুমিও বাড়ি যাও।
মেহেকঃআচ্ছা।
এই বলে মেহেক চলে গেলো। আমরাও চলে আসলাম আমাদের বাড়ি।

বাড়িতে ডুকতেই রহিম চাচা দৌড়ে আসল।
রহিম চাচাঃতোমাগো আসতে কোন কস্ট হয় নাই তো আব্বারা?
ভাইয়ারাঃনা চাচা।(হালকা হেসে)
আমিঃওয়েট ওয়েট তার মানে সবাই জানতো শুধু মাত্র আমি ছাড়া!!
এই বলে আমি রাগ করে সোফায় গিয়ে বসে পরলাম।
ছোটভাইয়াঃসরি সরি সরি
বড়ভাইয়াঃসরি সরি সরি টুকু। তোকে সারপ্রাইজ দেয়ার জন্যই এতো কিছু।
আমিঃকোন কথা বলবা না।
ছোটভাইয়াঃকিন্তু আমি যে ৪ বক্স কিটকেট,সেলিব্রেশান চকলেট এনেছি ওইগুলা কি করবো?(চিন্তিত হয়ে)
বড়ভাইয়াঃটুকু যেহেতু কথাই বলবে না তাহলে আর কি করবি ফেলে দে।
আমিঃএই না না কে বলেছে আমি রাগ করেছি?আমি একদমি রাগ করি নাই।কই আমার চকলেট গুলা দাও।
আমার কথা শুনে ভাইয়ারা হেসে দিল।তারপর আমার দুইগালে দুইজনে একসাথে চুমু দিয়ে চকলেটগুলা দিল।
আমিও চকলেটগুলা পেয়ে ওদেরকে চুমু দিলাম।
আমাদের এসব কান্ড দেখে রহিম চাচা,চাচি হেসে দিল।
রহিম চাচাঃতোমরা গিয়া ফ্রেশ হইয়া আইয়ো আমি আর তোমাগোর চাচি খাবার দিতাছি।
আমরা তিনজন একসাথে বললাম
-আচ্ছা।
বড়ভাইয়াঃ দেখবো কে আগে ফ্রেশ হয়ে আসতে পারে।
আমি আর ছোটভাইয়াঃআমি আগে আসবো।
এই বলে আমরা তিনজনই দৌড় দিলাম নিজেদের রুমের দিকে।
আমাদের এসব কান্ড দেখে সবাই হাসতে হাসতে শেষ।

In khan vila

সবাই খেতে বসেছে।রুদ্র,রুশা,নিহাল, কথা আর তাদের দাদুভাই।
নিহালঃআজ নাকি লন্ডন থেকে ফারদিন আর ফারহান সিদ্দিকী আসছে?
রুদ্রঃহুম বাবা।
কথাঃফারহান সিদ্দিকী স্রোত আর ফারদিন সিদ্দিকী শুদ্ধ ওরা নাকি!!
রুশাঃহুম মা।ওরা ওদের বোনের জন্য এসেছে।
দাদুভাইঃওদের বোন!!!!!
রুশাঃহুম দাদুভাই….ফারিয়া সিদ্দিকী সৃষ্টি.
কথাঃওই যে মেয়েটাকে আমি দেখলাম ওই মেয়েটা??
রুশাঃহুম মা।
কথাঃকিন্তু মেয়েটার মধ্যে একদমি অহংকার নাই!!
রুশাঃহুম মা ও খুবই ভালো মেয়ে।
দাদুভাই আর কিছু না রুদ্রের দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলো

চলবে………