লালগোলাপ❤ Part-09 +10

0
3670

লালগোলাপ❤
Part-09 +10
Writer-Moon Hossain

শীতল নামাজ পড়তে পাচ্ছেনা শরীরে থাকা ঔষধের জন্য। পুরো শরীর লাল হয়েছে গরম পানির তাপে আর কিছু কিছু জায়গায় ফোসকা পড়েছে । ডক্টর শীতলের শশুর কে বলে দিয়েছে এখন চিন্তার কোন কারণ নেই। মেডিসিন খেলে ঠিক হয়ে যাবে। তবে কিছু জায়গায় দাগ থেকে যাবে। দাগ গুলো ততটা বোঝা যাবে না। চিন্তার কোন কারণ নেই।সময় মতো হাসান বুদ্ধি করে মেডিক্যালে আনার সময় শীতলের শরীরে পানি ঢেলেছিল। নয়ত সারা শরীরে ফোসকা পড়ে যেতো। লেডি ডক্টর শীতল কে একটু আগে ঔষধ খাইয়ে দিয়েছে।
রাজ শীতল কে জরিয়ে ধরে ঘুমিয়ে পড়েছে।
– আপনার স্বামী অনেক ভালোবাসে আপনাকে মিসেস শীতল।
– আমার সৌভাগ্য ডক্টর!
– আল্লাহ যা করে তা ভালোর জন্য করে। মানুষের সাথে যা হবে তা যদি মন্দ হয় তাহলে বুঝতে হবে তার অত্যন্ত ভালো দিকও আছে।
-জ্বি ঠিক বলেছেন। আল্লাহর উপর ভরসা করলে কখনো ঠকবেন না। আল্লাহ সবচেয়ে ভালো বুঝবে কোনটা আপনার জন্য ঠিক।
আল্লাহ আপনার জন্য কোনটা ঠিক হবে আর কোনটা ভুল হবে তা তিনিই বুঝবেন।
– আপনার স্বামী একদিন ভালো হয়ে যাবে। স্বাভাবিক হয়ে যাবে। তখন দেখবেন কতটা সুখী আল্লাহ আপনাকে করে।
– আমার স্বামী কে কখনো অস্বাভাবিক ভাবি না আমি। উনার মধ্যে কোন ত্রুটি দেখিনা আমি। উনি স্বাভাবিক থাকায় না থাকায় আমার কিছু যায় আসেনা। আমাদের
সম্পর্কে এতোটুকুও আঁচড় আসবে না উনার অসুস্থতায়। আমার আল্লাহ জানে আমি উনার জন্য কি অনুভব করি।
কখনো এতোটুকুও অবহেলা করিনি। উনাকে সবাই যখন পাগল, উন্মাদ বলে তখন আমার খুব কষ্ট লাগে, দুঃখ হয়। উনি পাগল নন। একটু অবুঝ শুধু। কেউ যেন উনাকে এসব আজেবাজে কথা না বলে তাই আমি আল্লাহর কাছে আমার প্রতিটি ইবাদতের নেকির বিনিময়ে উনার সুস্থতা কামনা করি। এছাড়া আমার জীবনে কোন চাওয়া-পাওয়া নেই।
-যদি কখনো মিঃ রাজ সুস্থ না হন!
-আমি শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত উনার সেবা করতে রাজি। এতে কোন রকম আক্ষেপ নেই আমার।
আমার আল্লাহ জানে উনি আমার সমস্ত জুড়ে।উনার সেবা করে জীবন কাটিয়ে দেব।
-আল্লাহ তায়ালা আপনার আর আপনার স্বামীর ভালো করবেন। আপনাদের তিনি সুখে রাখবেন। আমিন। আপনারা যেন জান্নাতে এক সাথে যেতে পারেন এই দোয়া করব সবসময়।
শীতল বলল –
“তুমি জান্নাত চেওনা বরং তুমি দুনিয়াতে এমন কাজ কর যেন জান্নাত তোমাকে চায়।” _________ হযরত আলী (রাঃ)
রাজ ঘুমিয়ে আছে এখনো।
মেডিক্যাল একেবারে নিস্তব্ধ হয়ে আছে। মাঝে মাঝে করিডরে ডক্টর দের পায়ের আওয়াজ শোনা যায়। লেডি ডক্টর আর দুটো নার্স বারান্দায় বসে আছে শীতলের শশুরের আদেশে। কড়া নির্দেশ দেওয়া আছে যেন, সবসময় শীতলের সাথে একজন ডক্টর আর নার্স থাকে।
ক্যাবিনের জানালা খোলা। বাহির থেকে হালকা হাওয়া আসছে। রাজ কেঁপে কেঁপে উঠছে আর আরও শক্ত করে
জরিয়ে শীতলের গলায় মুখ গুজে ঘুমুচ্ছো।
বারান্দা থেকে ডক্টর, নার্সদের টুকটাক গল্প শোনা যাচ্ছে। মাঝে মাঝে মৃদু হাসির শব্দ শোনা যাচ্ছে।
পরিবেশটা মনোরম। আর এই অবুঝ ছেলেটা ঘুমিয়ে আছে।
শীতলের এখন কথা বলতে ইচ্ছে করছে কারও সাথে।
-আসসালামু আলাইকুম শ্রেয়সী!
-ওয়ালাইকুম আসসালাম।
ঘুম কেমন হয়েছে?
রাজ চোখ একবার বন্ধ করছে তো আরেকবার খুলছে।
হাই তুলে বলল- আমি নিজেও জানিনা।
-ক্ষিদে পেয়েছে?
-ইয়েস!
-কিছু খাবেন?
-ইয়েস!
শীতল শোয়া থেকে উঠে বসতে চাইলে গলা থেকে আহ! বের হলো।
-তোমার কি ব্যথা লাগছে?
-নাতো। আপনি বসুন। আমি খাবার এনে দিচ্ছি।
শীতলের গালে হাত দিয়ে রাজ বলল- তুমি বসো। আমি নিয়ে আসছি। তোমার ব্যথা লাগবে ডক্টর বলেছে।
বাবা কে আমি কথা দিয়েছি, আমি তোমার খেয়াল রাখব।
শীতল স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললো।
রাজ কে শীতল তার জন্য আনা স্যুপ খাইয়ে দিচ্ছে।
-আমি তোমাকে খাইয়ে দিই?
– আপনার ইচ্ছে।
– হা করো।
-আপনি তো দেখছি খাওয়াতেও পারেন।
রাজ হাসলো।
রাজ তার কাঁপা কাঁপা হাতে শীতল কে চামিচ দিয়ে স্যুপ খাইয়ে দিচ্ছে। শুধু এতোটুকু নয়, রাজ প্রথমে চামিচে স্যুপ নিয়ে ফু দিচ্ছে তারপর তার প্রাণ প্রিয় শ্রেয়সীর মুখে দিচ্ছে।
রাজের শরীর আর হাত মাঝে মধ্যে হালকা কেঁপে কেঁপে উঠে। শীতল তখন রাজ কে খুব শক্ত করে জরিয়ে ধরে স্বাভাবিক করে।
রাজের হাত থেকে কিছু টা স্যুপ চাদরে পড়ে গেলো আর কিছুটা শীতলের পোশাকে।
– আমি মুছে দিচ্ছি। রাজ খুব সুন্দর ভাবে টাওয়াল দিয়ে মুছে দিলো।
-আপনি তো দেখছি মোছামুছির কাজও পারেন।
-তোমার স্বামী সব পারে।
– আদর করা ছাড়া সব পারেন।
– কিছু বলেছো তুমি?
– কই নাতো।
সকালে রাজ নিজ হাতে শীতল কে নাশতা করিয়ে দিলো। যদিও রাজের হাত কাঁপছিল আর খাবার পড়ে যাচ্ছিল বার বার তবুও শীতল এতেই নিজেকে মহা সুখী ভাবছে।
– আমার কপাল মুছে দাও তোমার শাড়ি দিয়ে।
-কেন?
– আমি কত কাজ করছিনা তোমার! কাজ করলে স্ত্রীরা স্বামীর কপাল মুছে দেয়। কারণ কাজ করলে স্বামীদের কপালে ঘাম হয়।
– কোথায় দেখি দেখি, ঘাম কোথায় দেখি।
-দেখ আমার কপালে নির্ঘাত অনেক ঘাম বের হচ্ছে।
-আহা! আমার স্বামীর কপালে তো ঘাম নেই।
-কি বলছো?
– সত্যি বলছি। আপনার শ্রেয়সী কখনো মিথ্যে বলে?
-নো, নেভার।
– ঘাম নেই তো কি মুছে দেব?
রাজ অভিমানের সুরে বলল- একটু মিছেমিছি মুছে দিলে কি হয়? আমাকে সান্ত্বনা দিলেই হয়।
– তো কি হয়েছে? আমিও আপনার কত কাজ করেছি। এখন আপনি আমার কাজ করুন। শোধবোধ করুন।
আমাকে দিয়ে এতোদিন অনেক খাটিয়েছেন। সময় এসেছে আমার আপনাকে খাটানোর।
এমন খাটানো খাটাবো আপনাকে, কাজ করাতে করাতে শরীরের যত ঘাম আছে তা এমনিতেই ঝরে যাবে। এই যে, পানি খাব। পানির গ্লাস টা দিন তো।
-আচ্ছা।
রাজ মন খারাপ করে পানি এনে দিলো শীতল কে।
জগ থেকে বার বার পানি পড়ে যাচ্ছিল ।
– আমি তোমার সব কাজ করব। আমি অনেক খাটবো। আমার কপালে যদি ঘাম না থাকে তবুও তুমি মুছে দিও শ্রেয়সী।
শীতল হাত দিয়ে রাজের কপাল মুছে দিলো।
রাজের গলায় দুই হাত ঝুলিয়ে বলল – আপনি এতো অবুঝ কেন? এতো ভালো কেন? আপনাকে দিয়ে কখনো কাজ করাব আমি বেঁচে থাকতে?
আপনাকে খুশি রাখাই আমার কাজ।
শীতলের শশুর অনেক চেষ্টা করেও রাজ কে মেডিক্যাল থেকে নিয়ে যেতে পারবে না।
রাজ বার বার শীতল কে জরিয়ে ধরাতে শরীরের অনেক জায়গায় মলম উঠে জ্বালা করছে খুব।
শীতল কাঁদতে না চাইলেও চোখ থেকে পানি পড়ছে ব্যথার জ্বালায়।
-মিসেস শীতল। আপনাকে বলেছিলাম। এর মাশুল দিতে হবে। আপনার স্বামীর কারণেই আপনার চিকিৎসার ব্যাঘাত ঘটছে।
এভাবে চললে তো কখনো ফোসকা গুলো ভালো শুকাবে না। মাঝখান থেকে ব্যথা জ্বলবেন আপনি।
ব্যথায় কাঁদতে কাদঁতে শীতলের মাথা ব্যথা করছে।
-তোমার কি হয়েছে?
শীতল কথা বললো না।
-শ্রেয়সী তোমার কষ্ট হচ্ছে?
– আপনি কাছে থাকলে কষ্ট কে কষ্ট মনে হয়না।
-কোথায় ব্যথা হচ্ছে তোমার?
আমি হাত বুলিয়ে দিচ্ছি। দেখবে সব ব্যথা দূর হয়ে যাবে।
রাজ শীতলের ব্যথা গুলো তে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে।
-একটা কথা বলব?
-অনেক গুলো বলো!
-আমাকে একটু আদর করবেন?
-বাট হোয়াই?
-আদর করলে সব কষ্ট দূর হয়ে যাবে আমার।
-তাহলে তোমাকে অনেক অনেক আদর করব।
রাজ এক হাত দিয়ে শীতলের গালে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে, আর এক হাতে চুলে বিলি কাটছে।
শীতলের কপালে একটা চুমোও দিলো।
আদর বলতে রাজ এগুলো বুঝে।
রাজ শীতলের চোখের পানি মুছে দিলো।গালে একটা চুমো দেওয়ার সময় শীতল ইশারা করে দেখালো ঠোঁটে।
-বাট তোমার ঠোঁটে তো ব্যথা লাগেনি।
-তবুও। এখানে আদর করলে ঔষধের মতো কাজ করবে।
– আচ্ছা। ঠোঁটেও আদর করব আগে গালে করে নিই। ঠোঁটে তো এতো ব্যথা লাগেনি। পরে আদর করলেও চলবে।
শীতল সহ লেডি ডক্টর গুলোও হেঁসে দিলো।
.
-মিঃ রাজ আপনি পারবেন তো?
-ইয়েস।
– আপনার স্ত্রীর গায়ে হালকা স্পর্শ করবেন। একটু খোঁচা লাগলেই ব্যথা পাবেন।
-আচ্ছা। মনে থাকবে। শ্রেয়সী কে ব্যথা দেব না। আদর করে করে মলম লাগাবো।
শীতল রাজের কপাল হাত দিয়ে মুছে বলল- আহা! দেখ দেখ, কত ঘাম বের হচ্ছে। কত কাজ করছে আমার স্বামী।
রাজ লজ্জা পেয়েছে এমন ভাব করলো।
শীতলের গায়ে রাজ কাঁপা কাঁপা হাতে মলম লাগালো তুলো দিয়ে। মলম লাগানোর সময় শীতলের চেয়ে রাজ বেশি বেশি কাঁদছিলো।
চোখের পানি পাঞ্জাবির হাতা দিয়ে মুছতেই আবার চোখ ভিজে উঠেছে।
শীতল রাজের চোখের পানি মুছে দিয়ে বলল – কাঁদছেন কেন?
-আমি নিজেও জানিনা।
-ছেলেদের চোখের পানি ফেলতে নেই। ছেলেদের কঠিন হতে হয়।
-ছেলেদের চোখের পানি কেন ফেলতে হয়না? ছেলেদের কি কষ্ট হয়না?
– এই প্রশ্নের উওর জানা নেই আমার। সবাই বলে তাই বললাম।
মলম লাগানো শেষ হয়েছে।
-আপনি মলম লাগাতেও জানেন জানতাম নাতো।
-তোমার স্বামী সব পারে।
-আসল কাজ পারেন না।
-কি কাজ?
-ভালোবাসতে, আদর করতে পারেন না।
রাজ মাথা চুলকিয়ে বলল- আই লাভ ইউ।
-কি?
রাজ লজ্জা পেয়ে শীতলের কোলে মুখ গুজে শুয়ে পড়লো।
.
মলম লাগানোর পর।
শরীর জ্বালা করছে শীতলের।
কাঁদতেও পাচ্ছে না ভালো করে রাজের জন্য।
শীতল কে বার বার কাঁদতে দেখলে রাজের মাথা ঠিক থাকবে না।
-আমাকে জরিয়ে ধরে থাকুন। তাহলে সব কষ্ট সহ্য করতে পারব। শীতল কে জরিয়ে ধরাতে শীতলের গায়ের ঔষধ কিছু টা রাজের গায়েও লেপ্টে আছে।
-আমি চুলে বিলি কেটে দিচ্ছি তুমি ঘুমাও শ্রেয়সী।
দিন গুলো কেটে যাচ্ছে শীতলের ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে।
সব সময় ইনজেকশন দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে রাখা হয় শীতল কে, কেননা গায়ের ফোসকা গুলো খুব জ্বালা করে যখন মলম লাগানো হয়।
রাজ সারাক্ষণ শীতলের পাশে বসে থাকে। মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়, গালে ছুঁয়ে আদর করে।
শীতলের সকল কাজ জোর করে সে করে থাকে।
শীতল যখন ঘুমিয়ে ছিলো। তখন রাজ জেদ করে প্রেসক্রিপশন হাতে নিয়ে বাহিরে যায় ঔষধ আনতে।
-মিঃ রাজ আপনি পারবেন না।
-ডক্টর আমি পারব।
-আমাদের লোক আছে। তারা এনে দেবে ঔষধ।
– আপনারা কি ঔষধ খাওয়াচ্ছেন ওকে? সুস্থ হচ্ছে না কেন?
-সময় লাগবে।
-আমি ঔষধ আনলে একদিনেই সুস্থ হয়ে যাবে শ্রেয়সী। দেখে নিবেন।
তারপর আমরা নিজেদের বাড়ি গিয়ে খেলব। কতদিন আমরা খেলাধুলা করিনা। আপনাদের বাড়িতে আর থাকবো না আমরা।
রাজ প্রেসক্রিপশন নিয়ে বাহিরে গেলো ডক্টরের কাছ থেকে টাকা নিয়ে।
লেডি ডক্টর একটা ওয়ার্ড বয় কে পাঠালো রাজের পেছনে।
রাজ সেটা টের পেয়ে লুকিয়ে পড়লো।
শীতলের ঘুম ভাঙার পর রাজ কে খুজতে শুরু করলো তার চোখ জোড়া।
– ডক্টর, কথা কেন বলছেন না?
কোথায় আমার স্বামী?
-আসলে ম্যাডাম। ওই আর সরি। মিঃ রাজ জেদ করে ঔষধ আনতে গিয়েছিলেন মেডিক্যালের বাহিরে।
– এখন কোথায় উনি?
-খুঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা। লোক পাঠিয়েছি খুঁজে আনতে। ফার্মেসি গুলো তে মিঃ রাজ কে দেখা যায়নি।
শীতলের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়লো।
-আপনারা কেন আমার কাছ থেকে উনাকে দূরে পাঠালেন? উনি স্বাভাবিক নয়, কতটা অবুঝ তা জেনেও কেন বাহিরে যেতে দিলেন। আমার জন্য অপেক্ষা করতে পারলেন না?
উনার মাথা মাঝে মধ্যে কাজ করেনা। আমার এই অবস্থা। এখন যদি আবার আত্মহত্যার প্রবণতা দেখা দেয় উনার মধ্যে।
-ম্যাডাম শান্ত হন। আপনার শরীরের পক্ষে ভালো হবে না।
ফোসকা গুলো এখনো শুকায়নি।
রাত হয়েছে তবুও রাজ কে কোথাও খুজে পাওয়া গেলো না।
❤অর্থসহ আল্লাহর ৯৯ টি নাম এর পরের দুটি নাম(আরবী,বাংলা)❤

৩. ﺍﻟْﻤَﻠِﻚُ আল-মালিক অধিপতি
৪. ﺍﻟْﻘُﺪُّﻭﺱُ আল-ক্বুদ্দূস পূতঃপবিত্র, নিখুঁত
.
.
চলবে……

#লালগোলাপ
Writer-Moon Hossain
Part-10
-টেনশন করো না মা।
তোমার স্বামী কে আমি সহী সালামত ভাবে ফিরিয়ে নিয়ে আসব।
-বাবা আমার খুব ভয় লাগছে। উনি আমার দায়িত্বে ছিলেন। আমি দায়িত্ব পালন করতে পারিনি। যদি না ঘুমাতাম তাহলে উনাকে যেতে দিতাম না।
-খোঁজা হচ্ছে ওকে। থানা থেকে লোক পাঠিয়েছি খুঁজতে।
-রাত ১০ টা বাজে। উনার ঔষধ খাওয়ার সময় পার হয়েছে কয়েকবার। নিশ্চয়ই ক্ষিদে পেয়েছে। কোথায় আছেন না জানি।
-বৌমা শান্ত হও।
-কিভাবে শান্ত হবো? কোথাও মারামারি করছে নাতো?
-বৌমা কিছু হবে না।
হঠাৎ ফোন এলো রাজের বাবার ফোনে।
-কি নিউজ?
ওআচ্ছা। কাজ চালিয়ে যাও।
-বাবা উনাকে পাওয়া গিয়েছে?
-জলদি পাওয়া যাবে।
শীতল উঠে দাঁড়ালো বাহিরে যাওয়ার জন্য।
-বৌমা কি করছো?
তুমি এতো রাতে বাহিরে যেতে পারবেনা।
ডক্টর বলল- মিসেস শীতল, আপনি এখনো সুস্থ হন নি। ঠিক ভাবে হাঁটতে পারেন না। মাথা ঘুরে পড়ে যান। আপনি শুয়ে থাকুন।
-আমি ঠিক আছি।
আমি নিজে উনাকে খুঁজে আনব।আমি গেলে অবশ্যই খুঁজে পাবো উনাকে।
-তার আর দরকার হবেনা।
-বড় আপা!
-শপিং মলে তোমার উনি শপিং করতে গিয়েছিলো।
-কোথায় উনি?
-এই তো আসছে। সূচনা সেন্টারে কসমেটিকের স্টলে ছিলো।
রাজ হাসি হাসি মুখ নিয়ে ক্যাবিনে ঢুকলো।
– শ্রেয়সী,আসসালামু আলাইকুম।
-ওয়ালাইকুম আসসালাম।
রাজ পকেটে থেকে এক সেট কাঁচের চুড়ি বের করলো।
-এই যে দেখ, কি এনেছি তোমার জন্য।
– কি আছে?
-হাত দাও।
রাজ সবুজ কাঁচের চুড়ি দুই হাতে পরিয়ে দিলো শীতলের হাতে।
সবাই তাকিয়ে রাজের কান্ড দেখছে। রাজ এতোক্ষণ ফেরেনি সেটা যেন কিছুই না। রাজ একাই ফেরত এসেছে মেডিক্যালে।
রাফিয়া রাজ কে জিজ্ঞেস করতেই বলল – আমি সূচনা সেন্টারে শ্রেয়সীর জন্য চুড়ি কিনতে গিয়েছিলাম।
রাজের হাতে থাকা দুটো প্যাকেট থেকে একটা প্যাকেট ডক্টরের হাতে দিয়ে বলল- আমার শ্রেয়সীর ঔষধ।
আরেকটা প্যাকেট শীতলের হাতে দিলো।
শীতল প্যাকেট খুলে অবাক।
হরেক রংয়ের চুড়ি আছে প্যাকেটে।
শীতল রাজের কোমরে জোরে একটা চিমটি দিলো।
রাজ কে জরিয়ে ধরে বলল- আপনি আসলেই একটা পাগল। একা একা এতোক্ষণ বাহিরে কেউ থাকে।
সেই সকালে বের হয়েছিলেন আর এখন এসেছেন রাত ১০ টায়।
আমাকে টেনশনে ফেলে, কষ্ট দিয়ে খুব মজা লাগে আপনার।
-আমি তো তোমার জন্য ঔষধ কিনতে গিয়েছিলাম।
-কেন গিয়েছেন? কে বলেছে?
-হাসব্যান্ড তার ওয়াইফের জন্য ঔষধ কিনে আনতে হয়, তাই আমিও গিয়েছি। বিকোজ আই এম ইউর হাসব্যান্ড।এন্ড ইউ আর মাই ওয়াইফ।
-তাই? এগুলো কোথা থেকে মাথায় ঢুকেছে?
-তুমি ঘুমুচ্ছিলে যখন, তখন আমি এই রুম থেকে ঘুরতে গিয়েছিলাম। পাশের রুমে ডক্টর বলছিলো, এই মেয়েটির হাসব্যান্ড কে?
তখনই একটা মোটা লোক বলল- আমি ওর হাসব্যান্ড।
-এই নিন আপনার ওয়াইফের প্রেসক্রিপশন। যান ঔষধ নিয়ে আসুন।
-এজন্য আপনিও ঔষধ আনতে গিয়েছেন?
-ইউ আর রাইট। আফটার অল আই এম ইউর হাসব্যান্ড।
শীতল রাজ কে জরিয়ে ধরে বলল- হাসব্যান্ডের ওয়াইফের কাছে থাকতে হয়। সব কাজ পরামর্শ করে করতে হয়। এখন থেকে কিছু করার আগে আমাকে জিজ্ঞেস করবেন। আফটার অল আই এম ইউর ওয়াইফ।
-আচ্ছা। জানতাম না আগে। এখন জানলাম।
সবাই হেঁসে দিলো।
-ইশশ, গায়ে কত ধূলাবালি।
মুখ শুকিয়ে এইটুকু হয়েছে। ঔষধ আনতে এতো সময় লাগলো কেন?
অসুস্থ বৌ কে রেখে নির্ঘাত পার্কে কোন মেয়ের সাথে দেখা করতে গিয়েছিলেন। রেস্টুরেন্টে খেয়েছেনও কোন বান্ধবীর সাথে। সূচনা সেন্টারে শপিং করে দিয়েছেন ।
-আমি তোমার জন্য চুড়ি কিনতে গিয়েছিলাম সূচনা সেন্টারে। কোন মেয়ে কে নিয়ে পার্কে যাইনি আমি। তোমার হাত ছাড়া আমি কি কখনো খেয়েছি নাকি! ট্রাস্ট মি, আমি রেস্টুরেন্টে যাইনি। আমার কোন বান্ধবী নেই। ঔষধ কেনার পর তোমার জন্য চুড়ি কিনতে গিয়েছিলাম।
তুমি আমাকে বলেছিলে চুড়ি কিনে দেওয়ার কথা। তোমার কথা কি কখনো শুনিনি আমি? বলো তুমি?
শীতল চোখের পানি মুছে দিয়ে বলল- তাহলে এতো লেট হলো কেন? হাসব্যান্ডরা লেট করলে ওয়াইফেরা এমন ডাউট কথাবার্তা বলে।
-আমি গাড়ি করে গেলে সূচনা সেন্টার চিনব না। তাই হেঁটে হেঁটে গিয়েছিলাম।
-পায়ে ব্যথা করছে না? এতোটা রাস্তা কেউ হেঁটে যায়? আপনি আমার কথা শোনার জন্য এতো কষ্ট করলেন?
-তুমি কি রাগ করেছো?
শীতল চুপ হয়ে আছে।
-আচ্ছা আর কখনো তোমাকে না বলে কোথাও যাব না। ওয়াশরুমেও তোমাকে বলে যাব।
শীতল রাজের ঠোঁটে আঙুল দিয়ে বলল- হুঁশশ, কোন কথা নয়। আপনি আমাকে এতো ভালোবাসেন কেন?
-আমি নিজেও জানিনা।
শীতল রাজের কোমরে জোরে চিমটি কেটে বলল – তাহলে কে জানে? ঐ পাড়ার লোক জানে?
-সেটাও জানিনা।
-আচ্ছা সব রেখে এতো দূর সূচনা সেন্টারে কেন গেলেন আপনি? এখানেও তো আশেপাশে চুড়ির দোকান ছিলো।
-একদিন গাড়ি করে যাওয়ার সময় তুমি সূচনা সেন্টার দেখিয়ে বলেছিলে, দেখুন এইখানে আমরা চুড়ি কিনতে আসতাম নেত্রকোনা থেকে।
-সেই কবেকার কথা, এখনো মনে রেখেছে মাথায়?
-ইয়েস। তোমার হাসব্যান্ড সব মনে রাখে।
-দেখো, দেখো, কত ভালোবাসে আমাকে। এতোটা ভাগ্যবতী হওয়ার সৌভাগ্য দন করেছেন আল্লাহ তায়ালা আমাকে।
– তোমার চুড়ি গুলো পছন্দ হয়েছে?
– এই চুড়ি গুলো সমস্ত হিরা, পান্না, মূল্যবান অলংকারের থেকেও দামী। আমার বুকের মাঝে আগলে রাখব চুড়ি গুলো।
-আর আমাকে?
-আপনি আমাকে আপনার বুকের মাঝে আগলে রাখবেন এভাবে।
শীতল কে মেডিক্যাল থেকে ডিসচার্জ করে দেওয়া হয়েছে। রাজ সমস্ত গোছগাছ করে নিলো একাই। ডক্টরের থেকে শীতলের সব ঔষধ পত্র বুঝে নিয়েছে রাজ।
-ডক্টর। আমা কে সব লিখে লিখে দিন।
-হোয়াই?
-আমার মাথায় মাঝে মাঝে প্রবলেম দেখা দেয়। তাই সবকিছু ভুলে যাই। শ্রেয়সী কখন কোন ঔষধ খাবে তা লেখা থাকলে আমার মনে থাকবে।
-এক্সিলেন্ট আইডিয়া মিঃ রাজ। মিসেস শীতল আপনার হাসব্যান্ড খুব ইন্টেলিজেন্ট।
-দেখতে হবে না হাসব্যান্ড কার?
-আমি কি হেল্প করব?
-তুমি শুয়ে থাক। তোমার হাসব্যান্ড সবকিছু গোছগাছ করে পারে।
রাজ শীতল কে বাড়ি এনে কাথা দিয়ে শুইয়ে দিলো।
গায়ে মলম লাগিয়ে দিলো।
ঔষধ খাইয়ে নিজ হাতে খাবারও খাইয়ে দিলো।
-আমি কি কোন কাজ করতে পারব না?
-নো, নো, তুমি অসুস্থ। তোমার হাসব্যান্ড সব কাজ করবে।
– শুয়ে থাকতে থাকতে আমার পা ব্যথা করছে।
-দেখি, দেখি পা টিপে দিই।
-মানে?
-পা দাও। টিপে দিলে ব্যথা করবে না।
-আপনি আমার পা টিপে দেবেন? মাথা পুরোপুরি নষ্ট হয়নি আমার।
দূরে যান।
রাজ জোর করে শীতলের পা নিজের হাটুর উপরে রেখে টিপতে শুরু করলো।
শীতল পা সরিয়ে বিছানা থেকে উঠে পড়লো।
-খবরদার। আমার কাছে আসবেন না। রাফা দরজায় দাড়িয়ে ভাই ভাবির ভালোবাসা দেখে হেঁসে পুরো বাড়ি ভাসাচ্ছে।
-ছোট আপা আমাকে হেল্প করুন। বাঁচান আপনার ভাইয়ের কাছ থেকে।
-আমি একটা উপন্যাস লিখব। তোমাদের দুজনের লাইলি মজনুর প্রেম অবলম্বনে।
রাফা মনে মনে ঠিক করেও নিলো সে উপন্যাস লিখবে তার ভাইয়া ভাবির জীবন নিয়ে।
-আমার কাছে আসবেন না।
আমাকে টাচ করবেন না।
-তুমি দৌড়াদৌড়ি করছো কেন? কাছে এসো প্লিজ। তোমার পা টিপে না দেওয়া পর্যন্ত আমার শান্তি লাগবেনা।
-এই শান্তি কখনো আসবেনা আপনার৷
-এই তো ধরেছি।
রাজ শীতল কে ধরে কোলে তুলে বিছানায় নিয়ে গেলো।
-এই গরমে চাদর কেন?
-অসুস্থ থাকলে চাদর গায়ে দিতে হয়।
-আমি সুস্থ আছি। আপনার কেয়ারে আমি অসুস্থ হয়ে যাচ্ছি।
-পা ব্যথা ভালো হয়েছে?
শীতল ভ্যাঁ ভ্যাঁ করে কেঁদে দিলো।
– আমাকে ছেড়ে দিন। আর লাগবে না। আর কখনো বলব না আমার পা ব্যথা করছে।
রাজ সেদিন সারা বিকেল শীতলের পা টিপে দিলো।
কেউ রাজ কে থামাতে পারেনি।
রাতে শীতল কঠিন চোখে রাজের দিকে তাকিয়ে আছে।
শীতল কে এই গরমে মোটা কম্বল দিয়ে ঢেকে রেখেছে রাজ।
– শ্রেয়সী এখন আর ঠান্ডা লাগবে না।
আমি অসুস্থ হলে তুমি তো কম্বল দিয়ে দাও আমার গায়ে।
শীতলের ইচ্ছে করছে কম্বলে আগুন লাগিয়ে দিতে।
-শ্রেয়সী এসো মাথায় হাত বুলিয়ে ঘুম পাড়িয়ে দিই।
রাজ শীতলের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। যেগুলো শীতলের করা দরকার সেগুলো রাজ এখন করছে।
-আর কোথায় ব্যথা করছে?
-এখানে।
শীতল হাত দিয়ে বুকের বাম পাশ দেখালো।
-বুকে ব্যথা?
-জানেন, এখানে খুব ব্যথা। আপনাকে পুরোপুরি পাওয়ার জন্য ব্যথায় আকুল হয়ে আছে আমার হৃদয়।
-আগে বলবে তো। এখুনি গরম তেল নিয়ে আসছি। মালিশ করতে হবে।
শীতল ভ্যাঁ ভ্যাঁ করে কেঁদে দিলো।
-আমি কি হাসবো না কাঁদবো?
-কেঁদো না শ্রেয়সী। আমি তো আছি। গরম তেল মালিশ করে দেব। ব্যথা ভালো হয়ে যাবে। রাজ শীতলের মাথায় হাত বুলিয়ে শান্তনা আর শীতল কাঁদছে।
শীতল ভোরে নামাজ পড়ে অনেক্ষণ কোরআন তেলওয়াত করলো।
রাজও শীতলের আঁচল নিজের হাতে বেঁধে শীতলের পাশে বসে ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে তেলওয়াত শুনছে।
-লাইলি ভাবি কি করছো?
-ভালো হচ্ছে না কিন্তু। লাইলি আবার কে?
-শোন, ভাইয়া তোমার প্রেমের মজনু, মজনুর প্রেমিকা লাইলি।সো মজনু ভাইয়ার লাইলি তো তুমি৷
-রাফা তুমি দেখছো না এখানে প্রাইভেট মিটিং চলছে?
এখন তুমি যাও।
-ব্যাস, ভাইয়া তোমাদের লাইলি মজনুর প্রেমের প্রাইভেট মিটিং শেষ হলে একটু খেতে দিও। খুব ক্ষিদে লেগেছে।
-ঠিক আছে তুমি যাও।
তোমার ভাবির সাথে এখনো কথা বাকি আছে।
-যাচ্ছি বাবা যাচ্ছি।
.
-এটা এই নিয়মে করো।
-ভাবি অনেক হয়েছে। আজ আর অংক করব না। মজনু
ভাইয়া তার লাইলি কে খুজবে ঘুম থেকে উঠেই।তুমি যাও।
-তুমি বড্ড ফাঁকি বাজ।
-আচ্ছা ভাবি তুমি সব সময় ঠোঁটে বিরবির করে কি পড়ো?
-আয়াতুল কুরসি।
-আয়াতুল করসি পড়লে কি হয়? অনেকে দেখি পড়ে। হাসান ভাইয়া বিরবির করলে তাক জিজ্ঞেস করলে সেও বলে আয়াতুল কুরসি পড়ছি।
– আয়াতুল কুরসির ফজিলতঃ

১। আয়াতুল কুরসি পড়ে বাড়ি থেকে বের হলে ৭০,০০০
ফেরেস্তা চর্তুদিক থেকে তাকে রক্ষা করে।

২। এটি পড়ে বাড়ি ঢুকলে বাড়িতে দারিদ্রতা প্রবেশ
করতে পারেনা।

৩। এটি পড়ে ঘুমালে সারারাত একজন ফেরেস্তা
তাকে পাহারা দেন।

৪। ফরজ নামাযের পর পড়লে তার আর বেহেস্তের মধ্য
একটি জিনিসেরই দূরত্ব থাকে; তা হলো মৃত্য। এবং
মৃত্য আযাব এতই হালকা হয়; যেন একটি পিপড়ার কামড়।

৫। ওজুর পর পড়লে আল্লাহর নিকট ৭০ গুন মর্যাদা বৃদ্ধি লাভ করে।(সহীহ হাদিস)

৬। জান্নাতের দরজা: আবু উমামা রা. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল নুরে মুজাসসাম রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি প্রতি ফরয নামায শেষে আয়াতুল কুরসী পড়ে, তার জান্নাতে প্রবেশ করতে মৃত্যু ছাড়া কোনো কিছু বাধা হবে না। [নাসায়ী]

৭। হজরত আলী রা. বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সা.-কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি প্রত্যেক ফরজ সালাতের পর আয়াতুল কুরসী নিয়মিত পড়ে, তার জান্নাত প্রবেশে কেবল মৃত্যুই অন্তরায় হয়ে আছে। যে ব্যক্তি এ আয়াতটি বিছানায় শয়নের সময় পড়বে আল্লাহ তার ঘরে,প্রতিবেশির ঘরে এবং আশপাশের সব ঘরে শান্তি বজায় রাখবেন। [সুনানে বায়হাকী]

৮। মর্যাদাসম্পন্ন মহান আয়াত: আবু জর জুনদুব ইবনে জানাদাহ রা. রাসূল সা.-কে জিজ্ঞেস করেছিলেন, হে আল্লাহর রাসূল সা. ! আপনার প্রতি সবচেয়ে মর্যাদাসম্পন্ন কোন আয়াতটি নাজিল হয়েছে? রাসূল সা. বলেছিলেন, আয়াতুল কুরসী। [নাসায়ী]

৯। উবাই বিন কাব থেকে বর্ণিত, রাসূল সা: উবাই বিন কাবকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, তোমার কাছে কুরআন মজীদের কোন আয়াতটি সর্ব মহান? তিনি বলেছিলেন, (আল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা হুআল্ হাইয়্যূল কাইয়্যূম) তারপর রাসূলুল্লাহ্ নিজ হাত দ্বারা তার বক্ষে আঘাত করে বলেন: আবুল মুনযির! এই ইলমের কারণে তোমাকে ধন্যবাদ। [সহীহ মুসলিম]

১০। যে দোয়া পড়লে মৃত্যুর আযাব হবে পিপড়ার কামড়ের সমান।।
-ভাবি এতোকিছু জানতাম নাতো। আমিও শিখব।

.
বিকেলে শীতলের সেই চাচি শাশুড়ী এলেন। একা না তার সুন্দরি মেয়ে কে নিয়ে এলেন।
-আসসালামু আলাইকুম চাঁচি মা।
-ওয়ালাইকুম আসসালাম। থাক থাক আর বলতে হবে না। নাশতা দেবে নাকি একেবারে ডিনার করিয়ে কাজ সারবে।
-ভুল হয়েছে। মাফ করবেন। টেবিলে নাশতা দিয়েছি। চলুন চাঁচি মা।
-আমার মেয়ে, শাকিলা।
ওকে দেখেছো মনে হয় আগে।
-হ্যাঁ দেখেছি। আপা আপনিও চলুন।
– তুমি আমার থেকে দূরে থাকবে। তোমার শরীরে এসব কি কুষ্ঠ রোগীদের মতো?
আমার কাছে থাকলে আমারও হয়ে যাবে।
-মাফ করবেন। বুঝতে পারিনি। এগুলো ছোঁয়াছে না।
আসলে গরম পানি…
-হয়েছে হয়েছে। সাফাই না দিয়ে টেবিলে নিয়ে চলো।
শাকিলা বলল- রাজ ভাইয়া কোথায়? আমি তার কাছে যাব।
– উনি ঘুমুচ্ছেন। আমি আপনাকে নিয়ে যাচ্ছি নাশতা খেয়ে নিন।
-তোমাকে নিয়ে যেতে হবে না। আমি একাই যেতে পারি। তুমি তোমার কাজ করো।
চাঁচি মা নাশতা খেয়েছে খুব তৃপ্তি করে।
সেমাই খেয়ে মনে হচ্ছে, সেমাইয়ের জন্য অস্কার শীতলকেই দিয়ে দেবে সবাই।
চাঁচি মা বলল-এটা কি সেমাই? এতো চিনি কম কেন? আমাকে ডায়াবেটিসের রোগী মনে হয়?
-মাফ করবেন। আমি বুঝতে পারিনি। এখুনি চিনি দিচ্ছি।
চিনি দেওয়ার পর চাঁচি বলল- আমাকে মেরে ফেলতে চাও?
– এমন বলছেন কেন চাঁচি মা?
-এতো মিষ্টি হয়েছে যে, আমার চ্যাকআপ করাতে হবে ডায়াবেটিস হয়ে গেলো নাকি!
শীতল চাঁচি কে আপ্যায়ন শেষে কামরায় এসে দেখলো।
শাকিলা রাজের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে।
শাকিলা খুব আল্টা মর্ডান মেয়ে। যে কাউকে তার রুপে ঘায়েল হতে পারে।
❤আল্লাহ তায়ালার ৯৯ টি নামের দুটি নাম ❤
৫. ﺍﻟﺴَّﻠَﺎﻡُ আস-সালাম শান্তি এবং নিরাপত্তার উৎস, ত্রাণকর্তা
৬. ﺍﻟْﻤُﺆْﻣِﻦُ আল-মু’মিন জামিনদার, সত্য ঘোষণাকারী
.
চলবে…….