অদ্ভুদ ভালোবাসা পর্ব-১২+১৩ এবং বোনাস পর্ব

0
456

#অদ্ভুদ_ভালোবাসা
#সুমাইয়া_সুমু
পার্টঃ১২
,
দুই বছর পর,,,,,,,
,
এই দুই বছরে অনেক কিছু বদলে গেছে। এখন খুশি খান পরিবারের বড় বউ মাহিমের স্ত্রী। এখন মুরাদ ও অনেক চেঞ্জ হয়ে গেছে। সারাদিন মদ পার্টি মেয়ে নিয়ে থাকে। তা ছাড়া এখন কিছু করে না। এখন খান কোম্পানি মাহিম একা চালায়। কি কিছু বুঝতে পারছেন না তাই না। চলুন দুই বছর আগের অতীত থেকে ফিরে আসি…..
,
দুই বছর আগে হায়াত এর কিছু হয় নাই গাড়ি টা ওর কাছে আসার আগেই ওই খানে মাহিম এসে ওকে বাচাইয়া নেয়। মাহিম এর সাথে খুশি এবং হায়াত এর মামা-মামি ও ছিলো। এরপর উনারা হায়াত কে নিয়ে বাসায় চলে যায় তার কিছু দিন পর মুরাদ ডিভোর্স পেপারার পাঠায়। আর হায়াত ও সেই দিন কিছু বলে নাই না ও মুরাদ এর মুখের দিকে একবার ও চেয়েছে। তার ঠিক কিছু দিন পর মাহিম ওর বাবা মাকে জানায় ও খুশি কে পছন্দ করে। ওর বাবা মা খুশির বাবা মার কাছে প্রস্তাব পাঠালে প্রথমে তারা না করে দেয়। তারপর হায়াত উনাদের কে বুঝায়। আর উনারা হায়াত এর জোড় করা দেখে রাজি হয়ে যায়।
,
তার কিছু দিন পর হায়াত এর কলেজ থেকে একটা নোটিস আসে যে কলেজে যেকোনো ৩ জন কে স্কলারশিপ দেওয়া হবে। এবং তাদের কে আমেরিকায় গিয়ে পড়ানোর চান্স দেওয়া হবে। কিন্তু এর জন্য তাদের এক পরিক্ষা দিতে হবে। এটা শুনে হায়াত অনেক খুশি হয়ে যায় এবং বাঁচার আরেকটা আলো খুঁজে পায়। ও পরিক্ষা দেয় এবং পরিক্ষায় প্রথম হয়। এবং এখন ও একজন সফল ডক্টর। কিন্তু ওর আর খুশির বিয়ে টা এটেন্ট করা হয় নাই তার আগে ওকে চলে যেতে হয়। এমনি তে কেনো ইচ্ছা ও ছিলো না থাকার তবুও একটা কষ্ট রয়ে গেলো নিজের বোনের বিয়ে বলে কথা।
,*———————বর্তমান——*
,
এয়ারপোর্টের সামনে দাড়িয়ে আছে হায়াত। কিন্তু এখন আর সেই আগের হায়াত নেই। অনেক পরিবর্তন হয়েছে। কালো শর্ট জিন্স সাদা গেঞ্জি তাও পেট এর কিছু অংশ দেখা যাচ্ছে চোখে কালো চশমা। হায়াত দাড়িয়ে বার বার হাতের ঘড়ির দিকে তাকাচ্ছে। মুখে বিরক্ত পুরা ছাপ। বুঝাই যাচ্ছে কিছুর জন্য ওয়েট করছে।
,
খুশি রান্না ঘড়ে রান্না করছে পাশে ওর শাশুড়ী ওর হেল্প করছে। আজ খুশি অনেক খুশি কত গুলো বছর পর নিজের বোন দেশে ফিরছে তার জন্য আজ সকাল সকাল রান্না ঘড়ে এসে রান্না করছে। ওর শাশুড়ী খুশির মুখে এই হাব ভাব দেখে অনেক টা কৌতুহল হয়ে জিজ্ঞাসা করলেন—
,
মাঃ কি হয়েছে বউ মা আজ তুমি এতো খুশি কেনো?
খুশিঃ ওহ্ মা আপনাদের বলতে ভুলে গেছি আজ হায়াত কত গুলো বছর পর দেশে ফিরছে। কত গুলো দিন পর নিজের বোন কে দেখবো।
,
তখন মুরাদ ওই খান দিয়ে যাচ্ছিলো। খুশির কথা শুনে ওর পা দুটো থমকে যায়। কত বছর পর আজ ওর বাবুইপাখি দেশে আসবে।
,
চলবে,,,,,,,
,
#অদ্ভুদ_ভালোবাসা
#সুমাইয়া_সুমু(আমি)
পার্টঃ১৩
,
খান বাড়ির সামনে দাড়িয়ে আছে হায়াত। একদিন এই বাড়ি থেকে অপমান হয়ে বেরিয়ে গিয়েছিলো। আজ আবার সেই বাড়ির সামনে দাড়িয়ে আছে। কিন্তু এবার বউ হয়ে না এই বাড়ির অতিথি হয়ে। এই বাড়িতে আসার কোনো ইচ্ছে হায়াত এর ছিলো না কিন্তু খুশির জন্য আসতে হয়েছে। অতঃপর আর কিছু না ভেবে হায়াত ভিতরে চলে গেলো।
,
ভিতরে যেতে দেখে ওর বোন খাবার পরিবেষণ করছে মনে হলো ওর জন্যই এতখন ওয়েট করে ছিলো। হায়াত গিয়ে ওর খুশি কে জড়িয়ে ধরে বলে-
,
হায়াতঃ কেমন আছিস আপু?
,
খুশিঃ ভালো তুই কেমন আছিস? আগে থেকে কতো পাল্টে গেছিস রে।
,
হায়াতঃ পাল্টাতে হয় কিছু কিছু মানুষকে দেখিয়ে দিতে হয় যে আমরাও চাইলে পাল্টাতে পারি।
,
খুশিঃ হয়েছে থাক এবার খেতে বস দেখ তোর জন্য কত রকন আইটেম রান্না করেছি।
,
খুশি কথাটা বলে সিড়ির উপরের দিকে তাকিয়ে দেখে মাহিম মুরাদ নামছে। মাহিম এসে দেখে হায়াত আর খুশি দাড়িয়ে আছে। মাহিম তো হায়াত কে দেখে পুরো অবাক। মাহিম হায়াত এর কাছে গিয়ে বললো-
,
মাহিমঃ কি শালিকা কেমন আছেন আপনি?
,
হায়াতঃ জি জিজু ভালো আছি। তুমি কেমন আছে।
,
মাহিমঃ ভালো চলো বসা যাক।
,
হায়াতঃ হু বাট আসলে আপু আমি না এসব খাই না এগুলো অনেক ওয়েলি ফুট। আচ্ছা আন্টি আর আংকেল কোথায়।
,
খুশিঃ মা রুমে আর তুই আমাকে বলবি না তুই এসব খাস না আচ্ছা তুই একটু ওয়েট কর আমি তোর জন্য অন্য কিছু রান্না করে আনছি।
,
হায়াতঃ না আপু আজকে থাক আমি অন্য একদিন আবার আসবো আর এখন আমাকে হসপিটালে যেতে হবে অনেক ইমারজেন্সি আছে। বাই। বাই জিজু।
,
কথাটা বলে হায়াত চলে গেলো। এতখন মুরাদ বিষম্মিতো হয়ে হায়ার এর দিকে তাকিয়ে ছিলো। কথাটা বলার ভাষা হারিয়ে ফেলে ছিলো। হায়াত যখন চলে গেলো তখন ওর হুস ফিরলো। ও তখন ও অবাক চোখে হায়াত এর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছে। হায়াত যেতেই খুশি বলে উঠলো–
,
খুশিঃ তোমরা বসো আমি খাবার বেরে দিচ্ছি।
,
মাহিমঃ আজ থেকে মুরাদ ও আমার সাথে অফিসে যাবো।
,
খুশিঃ ভালো।
,
কথাটা বলে খুশি রান্না ঘরে চলে গেলো। আর মাহিম আর মুরাদ নাস্তা করে অফিসের দিকে চলে গেলো।
,
অফিসে বসে মুরাদ ভাবছে এতো টা চেঞ্জ হায়াত এর মধ্যে। তখনি দরজা খুলে ভেতরে একটা মেয়ে প্রবেশ করলো সে আর কেউ না আমাদের মাইশা শাক চুন্নি মানে মাইশা। মাইশা এসে মুরাদ এর গলা জড়িয়ে ধরে নেকা কন্ঠে বললো–
,
মাইশাঃ ওহ্ বেবি তুমি অফিয় জয়েন করেছো আমাকে বলবে না আগে। ভালোই করেছো। আর শুনলাম তোমার ওই এক্স বউ মানে হায়াত এসেছে দেশে। আসলেই মেয়েটা বেহায়া জানো। ও তো আার জানে না ওই দিন তুমি আমার কথাটা শুনে এসব করেছিলো। মেয়েটা আসলেই নির্লজ্জ।
,
কথাটা বলে মুরাদ কে কিস করতে গেলেই। মুরাদ উঠে ওকে,,,,,,,,,
,
চলবে,,,,,,

#অদ্ভুদ_ভালোবাসা
#সুমাইয়া_সুমু(আমি)
বোনার্স পার্ট
,
মাইশা মুরাদ কে কিস করতে গেলেই মুরাদ উঠে মাইশা কে এক থাপ্পড় দেয়। মাইশা তাল সামলাতে না পেরে মেঝেতে গিয়ে পড়ে। মাইশা উঠে মুরাদ এর দিকে রাগি চোখে তাকিয়ে আছে। অতঃপর মাইশা রাগি চোখে তাকিয়ে বলে উঠে-
,
মাইশাঃ তোমার এতো বড় সাহস তুমি আমাকে থাপ্পড় দেয়।
,
মুরাদঃ তোকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করিনি সেটা তোর কপাল ভালো দেখে।
,
মাইশাঃ মুরাদ আমি কিন্তু হায়াত কে মেরে ফেলবো।
,
মুরাদঃ আমি জানি তুমি হায়াত কে মারবে না কারন হায়াত কে মারলে তুমি আমাকে পাবে না সেটা আমি সেদিন রাতে বুঝতে না পারলেও এখন বুঝতে পারছি।
,
মাইশাঃ দেখে নিবো আমি তোমাকে।
,
কথাটা বলে মাইশা চলে গেলো। মাইশা চলে যেতেই মুরাদ আগের কথা ভাবতে লাগলো।
,
যেদিন রাতে মুরাদ আসতে লেট করে ওই দিন এ ঘটনা টা ঘটে। আসলে ওইদিন মাইশা মুরাদ কে শপিং মলে যাওয়ার কথা বলে একটা নিরিবিলি জায়গায় নিয়ে যায়। আর বলে-
,
মাইশাঃ মুরাদ আমি তোমাকে ভালোবাসি আর সেটা তুমি জেনেও ওই লো ক্লাস মেয়েকে বিয়ে করেছো। মুরাদ এখন ও সময় আছে আমার কাছে চলে আসো ও তোমাকে যতটা সুখ দিয়েছে আমি তার দিগুন দিবো।
,
মুরাদঃ ছিঃঃ মাইশা তুমি এসব কি বলছো আমি আমার বাবুইপাখি কে অনেক ভালোবাসি আর আমি তোমাকে আগেও বলেছি আমি তোমাকে ভালোবাসি না তারপরেও তুমি আমার কাছে কেনো আসো।
,
মাইশাঃ প্লিজ আই রেয়েলি লাভ ইউ। ওকে ছেড়ে দেও ওর থেকেও আমি বেশি সুন্দরী ওর থেকে যথেষ্ট টাকা আছে আমার বাবার আর ওর মতো অনাথ মেয়েকে কোনো ভালোবাসো।
,
মুরাদঃ জাস্ট সেট আপ মাইশা। আমি ভেবেছিলাম তুমি ভালো হয়ে গেছো কিন্তু না তুমি ভালে হও নাই আগের মতো আছো।
,
মাইশাঃ তুমি যদি হায়াত কে ডিভোর্স না দেও তাহলে আমি হায়াত কে মেরে ফেলবো।
,
অতঃপর মাইশা যা ভিডিও দেখায় সেটা দেখতে মুরাদ অনেক ভয় পেয়ে যায়। কারন ভিডি ও টাতে দেখাচ্ছে একজন লোক হায়াত এর দিকে বন্ধুক তাক করে আছে। আর এটা দেখে মুরাদ ভয় পেয়ে যায় আর মাইশা যা যা বলে তাই করে। ও মাইশার কথায় হায়াত কে ডিভোর্স দেয়।
,
হায়াত হসপিটালে বসে রুগি দেখছে আজকে অনেক রুগি এসেছে। আসলে হায়াত বিদেশে থাকতেই কাজের জন্য এপ্লাই করে। আর ওর এসএম একটা হসপিটালে এপ্লাই হয়ে যায়। ও মাঝে মাঝে অবাক হয়ে এই অক্ষর দিয়ে কার নাম হতে পারে। এসব ভাবছে আর রুগি দেখছে তখনি এর দরজায় কড়া নারে কে জানি। হায়াত বলে উঠে-
,
হায়াতঃ কামিং
,
ঠিক তখনি যে আসে তাকে দেখে হায়াত এর মেজাজ খারাপ হয়ে যায়। কারন এসেছে,,,,,
,
চলবে ,,,,,,,