অদ্ভুদ ভালোবাসা পর্ব-১+২+৩

0
872

#অদ্ভুদ ভালোবাসা
#সুমাইয়া_সুমু
পার্ট-০১

বাসর ঘরে বসে আছি। অনেক সুন্দর করে সাজানো ঘরটা। কিন্তু সে দিকে আমার একটুও খেয়াল নেই আমি ভাবছি কিছু খন আগে আমার সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনা। আমি হায়াত। পুরো নাম সানা হায়াত। এবার আমি ইন্টার দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। আমার বাবা-মা অনেক আগে মারা গেছে। আমি আমার মামা-মামীর কাছে থাকি। আমার মামী আমাকে দেখতে পারে না আর মামা ভালোবাসে কিন্তু মামির সামনে প্রকাশ করতে পারে না আর আমার এক মামাতো বোন আছে নাম খুশি। এভাবে মামীর কথা শুনতে শুনতে আমার জীবন চলছে একদিন মামা মামী আর খুশি মামীর বাপের বাড়ি যায় তার ১৫ দিন পর এসে বলে আমার নাকি বিয়ে ঠিক করেছে। ছেলে টা আমার থেকে ১৫ বছরের বড়। ছেলেটা নাকি অনেক বড় লোক। আমি আর না করতে পারিনি কারন না করলে আমার ওদের আরো অত্যাচার করবে। আর কয়দিন মামা মামীর ঘাড়ে বসে খাবো। সেটা ভেবে আর না করতে পারিনি। এভাবে আমার বিয়ের দিন ঘনিয়ে আসে, কিন্তু বিয়ের দিন ঘটে আরেক বিপদ কোথা থেকে আহিয়ান এসে আমাকে নিয়ে রুমে বসে আছে। ভাবতে ও পারিনি সামান্য চড়ের বদলা এভাবে নিবে। উনি আমার সামনে নিশচিন্তায় সিগারেট টানছে। আর আমি বসে বসে চোখের পানি ফালচ্ছি। আর বাহিরে মামা-মামী ডাকা ডাকি করছে৷ কিন্তু ওনার কোনো ভাবান্তর নেই। আমার অনেক ভয় ও করছে। কিন্তু সেই ভয় উপেক্ষা করে আমি বল্লাম
হায়াতঃ কেনো করছেন এই- রকম একটা সামান্য চড়ের বদলা এভাবে নিচ্ছেন কেনো।
উনি যেনো কথা শুনেও না শোনার ভাব ধরে আছে।
সিগারেট টা শেষ করার পর উনি আমার কাছে এসে আমার লিপস্টিক টা মুছে দিলেন। আমার চুল এলোমেলো করে দিলেন। তারপর গিয়ে দরজা খুল্লেন।
দরজা খুলতে অনেক এ ভিতরে ঢুকে আমাকে যা নয় তা বলছেন।
একজন মহিলা বল্লেনঃ আমাকে তো এই মেয়েকে আগে থেকে ভালো লাগতো না এই মেয়ের চরিত্র খারাপ। ছেলে টাকে ফাঁসিয়েছে।
আরেকজন মহিলা বলেঃ হুম। আমার মনে হয় ছেলেটার কোনো দেষ নেই। এই মেয়ের চরিত্র খারাপ।
এসব শুনে আমি চোখের পানি ফেলছি।
কিছু খন পর উনি ভেতরে এলেন। এর পর যা বল্লেন তা শুনে আমি……..

চলবে,,,,,,,

#অদ্ভুদ_ভালোবাসা
#সুমাইয়া_সুমু
পার্টঃ০২
,
মুরাদ এসে সবার উদ্দেশ্য করে বল্লো উনি উনার স্ত্রীর সাথে একা কথা বলতে চান। (কালকে অনেকে আমাকে বলেছেন যে আমি রাইটার মিমি আপুর গল্প কপি করছি। আচ্ছা বলুন তো একটা গল্পের সাথে আরেকটা গল্প একটু হলেও মিল থাকবে এটা স্বাভাবিক, তার মানে এই না যে আমি কারোর গল্প কপি করছি। হ্যা নায়কের নাম টা কপি করেছি কারন তখন কোনো ভালো নাম মাথায় আসতে ছিলো না এজন্য। তার জন্য আমি অনেক দুঃখীত। আর আগে পুরো গল্প পড়বেন তারপর বলবেন কারোর গল্প কপি করছি।যাদের ভালো লাগবে না তারা ইগনোর করুন।)
,
,
আমি ওনার দিকে অবাক নয়নে তাকিয়ে আছি। শুধু আমি কেনো রুমে যারা যারা উপস্থিত সবাই অবাক নয়নে তাকিয়ে আছে।সবাই কে চুপ থাকতে দেখে মুরাদ আবার ও বলে উঠেঃ কি হলো আপনারা শুনেননি আমি আমার স্ত্রীর সাথে একান্ত কথা বলতে চাইছি।
এবার কথা বলার সাথে সাথে সবাই রুম থেকে বের হয়ে গেলো। অতঃপর উনি আমার কাছে এসে আমার চুল গুলো কানের পিছনে গুজে দিয়ে বলে উঠলেনঃ কি দেখলে তো আমার কথা না শোনার পরিনাম?
হায়াতঃ কেনো করছেন এইরকম? একটা থাপ্পড়ের বদলা এভাবে কেনো নিচ্ছেন?
মুরাদঃ তুমি বুজেও সব সময় না বুজার ভান ধরে কেনো থাকো বলোত!
হায়াতঃ আপনি কি বলতে চান আপনি আমাকে ভালোবাসেন! না মিঃ মুরাদ এটা ভালোবাসা না এটা আপনি আমার উপর প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য করছেন!
মুরাদঃ ওহ্! বাবুইপাখি হুস! এতো কথা কেনো বলো তুমি। এখন যদি তুমি বাহিরের সবাইকে গিয়ে না বলো যে তুমি আমার স্ত্রী তাহলে……!
হায়াতঃ তাহলে কি করবেন?
মুরাদঃ বেশি কিছু না তোমার মামাকে রাস্তায় নামাবো!
হায়াতঃ না প্লিজ! এই রকম করবেন না! আপনি যা বলবেন আমি তাই করবো!
মুরাদঃ এই তো গুড গার্ল!
কথা টা বলে উনি আমার গালে একটা চুমু দিলেন! অতঃপর বাহিরে গিয়ে সবাইকে বল্লাম যে আমি ওনার স্ত্রী এটা শুনে মামী নেকা কান্না জুড়ে দিলেন-
মামীঃ হায় খোদা এই অলক্ষী মেয়ে আমার মান সম্মান কিছু রাখলো না! তুই যদি আগে বিয়ে থাকতি তো আমাকে বলতে পারতি! ওনার কথার মাঝে মামা বলে উঠলঃ আহ্ চুপ করো তো!
তখন মুরাদ বল্লোঃ দেখুন আমি আমার স্ত্রী কে নিজের সাথে নিয়ে যেতে চাই তাও আজ কে এই মূহুর্তে! ওনার কথা শুনে আমি অবাক হয়ে ওনার দিকে তাকালাম। আর ভাবতে লাগলাম উনি বলছেন টা কি? আমাদের তো বিয়ে হয় নাই ওনার সাথে আমি গিয়ে করবো টা কি? ঠিক তখনি মামী বলে উটলেনঃ হ্যা বাবা! তোমার বউ তুমি নিয়ে যেতেই পারো। আমাদের মেয়ে টাকে একটু দেখে রেখো ও এখন ও বাচ্চা। মামির কথা শুনের ওনার দিকে তাকিয়ে আছি! যে কি না আমাকে দেখতে পারতো না সে আমার নামে কতো ভালো কিছু বলছে তাও আমার মিথ্যা স্বামীর কাছে।
(ওহ্ আর হ্যা আপনাদের তো নায়কের পরিচয় দিতে ভুলে গেছি পুরো নাম মুরাদ খান একজন টপ বিজনেস ম্যান ওনার পরিবারে ওনার বাবা মা আর একটা বড় ভাই আর ছোট বোন আছে এই পর্যন্ত যেনে রাখুন বাকি সব পড়ে বলবো)
অতঃপর আমি আর উনি সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে ওনার বাড়ির উদ্দেশে রওনা হলাম। আসার সময় অনেকে অনেক কটু কথা বলেছে। আমি চুপচাপ শুনে চোখের পানি ফেলেছি
,
চলবে……..

#অদ্ভুদ_ভালোবাসা
#সুমাইয়া_সুমু
পার্টঃ০৩
,
জীবনে ভাবতে পারিনি যাকে কখনো ভালোবাসি নি তার বউ হতে হবে। এতখন ভাবতাম আমি ওনার মিথ্যা বউ। কিন্তু একটু আগে সত্যি বউ হয়ে গেলাম।
,
কতখন আগে,
,
আমি আর উনি গাড়িতে বসে আছি, কিন্তু উনি ওনার বাড়ির দিকে না নিয়ে গিয়ে যেখানে নিয়ে গেলো। সেখানে যাওয়ার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না। উনি আমাকে নিয়ে কাজি অফিসে এসেছে, আমি ওনার দিকে বিস্মিত চোখে তাকিয়ে আছি। কিন্তু ওদিকে উনি পাত্তা না দিয়ে আমাকে নিয়ে ভেতরে ঢুকলেন। পাশে কয়েকজন লোক কে দেখলাম। একজন কে দেখে মনে হচ্ছিলো উনি কাজি। হঠাৎ উনি কাজি কে বলে উঠলেন-
মুরাদঃ কাজী সাহেব তারাতাড়ি বিয়ে পড়ানো শুরু করেন।
এবার আর আমি চুপ থাকতে পারলাম বা। কপাটে রাগ দেখিয়ে বল্লামঃ কিসের বিয়ে হ্যা? আমি আপনাকে বিয়ে করতে পারবো না? আমার কথা মনে হয় ওনার কান পর্যন্ত পৌছায় নি? উনি কাজি কে আবার বল্লোঃ কি হলো আপনি বিয়ে পড়ানো শুরু করেন?
হায়াতঃ আমি আপনাকে বিয়ে করতে পারবো না?
মুরাদঃ তুমি বিয়ে করবে তোমার ঘাড় ও করবে? চুপচাপ যা বলছি তা করো?
হায়াতঃ আমাকে আপনার কেনা পুতুল মনে হয় আপনি যা বলবেন তাই করবো?
মুরাদঃ নাহ! তুমি তো আমার বউ বাবুইপাখি! আর চুপচাপ ভালো মেয়ের মতো বিয়ে করে নেও! তা না হলে আমাকে বিয়ে আগে বাসর করতে হবে!
কথাটা উনি আমার কানে কানে বলছেন এজন্য উপস্থিত কেউ শুনতে পান নি। শুনতে পেলে জেনে যেতো উনি কতটা জঘন্য। আমি কান্নার সুরে বল্লামঃ কেনো করছেন এই রকম আমার সাথে?
মুরাদঃ উফ্ বাবুইপাখি! তুমি জেনেও না জানার ভাব ধরে কেনো থাকো বলোতে?আমি যা বলছি চুপচাপ তা করো! আমিও আর কিছু বল্লাম না চুপচাপ ওনার সাথে বিয়ে টা করে নিলাম। এছাড়া আর কোনো উপায় ছিলো না আমার। বিয়ে সম্পূর্ণ হওয়ার ওর উনি আমাকে নিয়ে গাড়ি তে উঠালেন।
ওনার বাড়িতে গিয়ে আমি আরও অবাক হলাম….

চলবে……