অদ্ভুদ ভালোবাসা পর্ব-৪+৫+৬

0
590

#অদ্ভুদ_ভালোবাসা
#সুমাইয়া_সুমু
পার্টঃ০৪
,
আনি ওনাদের বাসায় গিয়ে আরো অবাক হলাম কেনো না ওনাদের বাসা অনেক সুন্দর করে সাজানো ওনার মা আগে থেকে সোফায় বসে ছিলো। মনে হয় উনি কারোর অপেক্ষা করছিলেন। আমরা ভিতরে ঠুকতেই উনি আমার কাছে এডে আমার থুতনি ধরে বল্লেনঃ বাহ্ আমার মুরাদ এর বউ তো অনেক সুন্দর। উনার কথা শুনে আমি তো মনে হয় আকাশ থেকে পড়লাম। তার মানে উনারা আগে থেকে জানতেন উনি বিয়ে করে আজ বাড়িতে আসবেন। কিন্তু মুরাদ এর বাবা কে কোথাও দেখলাম না। অতঃপর আমরা ভিতরে ঢুকলাম। ভেতরে ঢুকতেই মুরাদ এর বড় ভাই মাহিম এসে বল্লেনঃ কিরে ভাই! নিজের বড় ভাই এর বিয়ে হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে পারলি না। তার আগে বিয়ে করে বউ নিয়ে আসলি। কথাটা বলে উনার পিঠে একটা ঘুষি মারলেন। তারপর আমার কাছে এসে বল্লেনঃ আমি মাহিম মুরাদ এর বড় ভাই।
হায়াতঃ আসসালামু আলাইকুম ভাইয়া।
মাহিমঃ আলাইকুম সালাম। আমার ভাই তো দেখি তোমার জন্য পাগল। হুম। তা নাহলে যে ছেলে মেয়েদের থেকে ১০০ হাত দুরে থাকে সে হঠাৎ করে বিয়ে করে আনলেন।অবশ্য আমরা জানতাম না যদি আমাদের ফোন দিয়ে না বলতো।
ওহ্ আমি এবার বুঝতে পারছি তখন উনি বাহিরে কেনো গিয়ে ছিলেন। অতঃপর উনার ভাই উনাকে নিয়ে গেলেন আর আমাকে বল্লেনঃ আমার ভাই কে তো তৈরি হবে নাকি হু। না তৈরি করে বাসর ঘরে পাঠাবো না। মাহিম ভাইয়ার কথা শুনে কেনো জানি অনেক লজ্জা পেলাম। অতঃপর মা আমাকে একটা দুধের গ্লাস হাতে দড়িয়ে দিয়ে বল্লেনঃ মা! আমার ছেলে টাকে দেখে রেখো ও অনেক রাগি কিন্তু ওর মন অনেক ভালো।
আমি মাথা দুলিয়ে সম্মতি দিলাম। অতঃপর ঘরের ভিতরে ঢুকলাম। ঢুকে দেখলাম ঘড় অনেক সুন্দর করে সাজানো। মামনি আমাকে বসিয়ে উনি বাহিরে চলে গেলেন। আর আমি বসে ঘটে যাওয়া ঘটনা ভাবতে লাগলাম। আমার সাথে কি থেকে কি হয়ে গেলো। কিন্তু আমার একটা কথা অনেক ভাবাচ্ছে উনার বাবা কে কোথাও দেখলাম না কেনো। এসব ভাবতেই দরজা খুলার আওয়াজ পেলাম। দেখলাম মুরাদ এসেছে। ওনাকে দেখতে অনেক সুন্দর লাগছে লাল পাঞ্জাবিতে। উনি এসে কতখন দাড়ালেন তারপর বলতে লাগলেনঃ আমার কপালে বউর সালাম নেই। আমি ওনার কথার মাঝে থাকিয়ে দিয়ে বল্লামঃ আচ্ছা আপনার বাবা কোথায়?
মুরাদঃ আসলে বাবা কিছু কাজের জন্য বাহিরে গিয়েছে ২ দিন এর মধ্যেই চলে আসবেন। তোমার বাবার কথা চিন্তা করতে হবে না বাবুই পাখি। তুমি শুধু আমার কথা চিন্তা করো। কথাটা বলে উনি আমার কাছে এসে আমার ঘাড়ে মুখ গুজে দিলেন। ওনার স্পর্শে আমি একটা ঘোরের মাঝে চলে গিয়ে ছিলাম। হঠাৎ উনি আমার ঘাড় থেকে মুখ তুলে বল্লেনঃ যাও ফ্রেশ হয়ে আসো। আর কতখন এই ভুতের মতো সেজে বসে থাকবা। উনার কথা শুনে আমি অনেক লজ্জা পেলাম আর ভাবতে লাগলাম একটু আগে আমার কি হয়ে ছিলো।
মুরাদঃ কি হলো যাও।
হায়াতঃ আমি তো কোনো জামা আনিনি তো কি পড়বো?
মুরাদঃ আলমারি খুলে দেখো ওখানে অনেক শাড়ি আছে।
আমিও তাই করলান আলমারি খুলে একটা শাড়ি বের করে ফ্রেশ হয়ে পড়ে নিলাম। ওয়াশরুম থেকে বের হতেই দেখলাম,,,,,,,

চলবে……

#অদ্ভুদ_ভালোবাসা
#সুমাইয়া_সুমু
পার্টঃ০৫
,
ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে দেখলাম উনিও জামা-কাপড়র চেঞ্জ করে নিয়েছেন। আমি ওনার সামনে গিয়ে দাড়ালাম। উনি মাথা উঁচু করে আমার দিকে তাকালেন।
মুরাদঃ কি এভাবে খাম্বার মতো তাকিয়ে আছো কেনো হুম?
হায়াতঃ আমি ঘুমাবো।
মুরাদঃ তো আমাকে বলছো কেনো। গিয়ে ঘুমাও।
হায়াতঃ আমি আপনার সাথে এক বিছানায় ঘুমাবো না। (নাইকার অনুমতি ছাড়া বিয়ে করলে বাসর রাতে যা হয় তাই হচ্ছে আর কি😷)
মুরাদঃ তো কি আমার বুকের ওপর ঘুমাবা। আগে বল্লেই পারতা। আসো বউ আমার বুকে আসো। ওনার এই শরীর জ্বালানো কথা শুনে মাথা টাই গরম হয়ে গেলো। আমি কিছু বলতে যাবো তার আগে উনি আমার হাত ধরে টান দিয়ে উনার উপর ফেলে দিলেন। অতঃপর আমার মাথা উনার বুকে চেপে ধরলেন। তারপর বল্লেনঃ শুনতে পারছো বাবুইপাখি আমার বুকের মাঝে যেই ধুকধুকানি হচ্ছে তার আওয়াজ। এতো ভালোবাসলাম তাও কেনো অন্য কারোর হতে যাচ্ছিলে।
হায়াতঃ এটা আপনার ভালোবাসা না। ভালোবাসলে সবার সামনে আমাকে ছোট করতে পারতেন না। যাকে ভালোবাসা যায় তাকে কখনো নিচা দেখানে যায় না। এটা আপনার মোহ মুরাদ শুধু কিছু দিনের মোহ। কথাটা বলতে দেরি কিন্তু ওনার রাগ উঠতে দেরি নাই। উনি উঠে আমাকে গাল চেপে ধরে বল্লেনঃ কেনো আমার ভালোবাসা বুঝোনা? কেনো। কেনো বার বার আমাকে রাগানোর মতে কথা বলো। কেনো প্রতিবার আমার ভালোবাসা ফিরিয়ে দেও। আমি আমার গাল থেকে ওনার হাত সরিয়ে বল্লামঃ যা বলেছি সত্যি বলেছি এটা আপনার ভালোবাসা….. কথাটা পুরো বলতে পারলাম না তার আগে উনি উনার ঠোঁট দিয়ে আমার ঠোঁট চেপে ধরলেন। ডিপ কিস করছেন। ৫ মিনিট পর আমাকে ছেড়ে দিয়ে। আমাকে কোলে তুলে নিলেন। আমি বলদ এর মতো ওনার দিকে তাকিয়ে আছি একটু আগে রাগ এ কি অবস্থা আর এখন এতো রোমান্টিক। আচ্ছা উনি কি সত্যি কি আমাকে ভালোবাসেন। ভালোবাসলেও ওনার এই #অদ্ভুদ_ভালোবাসা সয্য করবো কিভাবে। এভব ভাবছি আর তখন উনি আমাকে খাটে সুয়ে দিয়ে আমার পাশে সুয়ে শক্ত করে আমাকে জড়িয়ে ধরে আমার ঘাড়ে মুখ গুঁজে দিলেন।
মুরাদঃ ঘুমিয়ে পড়ো বাবুইপাখি। আর আমাকেও শান্তি মতো ঘুমাতে দেও।
কথাটা বলে উনি ঘুমিয়ে পড়লেন কিন্তু আমার চোখে ঘুম নেই। আমি ওনার দিকে তাকিয়ে আছি। কি নিষ্পাপ মুখ। কেউ দেখলে বলবে এই ছেলে রাগলে হিংস্র হয়ে যায়। হঠাৎ করে আমার কি জানি হলে আমি ওনার কপালে চুমু দিলাম। হঠাৎ করে মুরাদ বলে উঠলোঃ বাবুইপাখি এখন ঘুমাও জামাই তো তোমারি পরে ভালো বাসতে পারবে। ওনার কথা শুনে আমি লজ্জায় লাল নিল হচ্ছি। কিন্তু পরক্ষনে নিজেকে সামলে নিয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম।
,
সকালে পাখির কিচিরমিচির আওয়াজ সাথে সূর্য মামার আলোয় ঘুম ভেঙে গেলো। পাশে তাকিয়ে দেখি উনি এখনো ঘুমিয়ে আছে। উনার সামনে আসা চুল গুলো আসতে আসতে সরিয়ে দিলাম। তারপর উঠে ফ্রেশ হয়ে নামাজ পড়ে নিলাম নামাজ পড়ে উনাকে ঢাকতে লাগলাম।
হায়াতঃ এই যে শুনচ্ছেন?
মুরাদঃ কি হয়েছে কি?
হায়াতঃউঠুন নামাজ পড়তে যাবেন না।😒
মুরাদঃএকটু পর উঠি। কথাটা বলতে দেরি কিন্তু আমার পানি এনে ঠেলে দিতে দেরি নাই। উনি উঠে আমাকে……
,
চলবে…….

#অদ্ভুদ_ভালোবাসা
#সুমাইয়া_সুমু
পার্টঃ০৬
,
পানি ঠেলে দিতেই উনি সাথে সাথে উঠে গেলেন।আর আমার দিকে রাগি চোখে তাকিয়ে থেকে বললেন-
,
মুরাদঃএটা কি হলো? আমার উপর পানি কেনো ঠাললে।
আমি ডোন্ট কেয়ার ভঙ্গিতে বল্লাম,
হায়াতঃআপনাকে সুন্দর মতো ঢেকে ছিলাম আপনি উঠে ছিলেন,
মুরাদঃ এর জন্য তুমি পানি ঠালবে?
হায়াতঃহু
,
কথাটা বলতেই উনি আমাকে টান দিয়ে উনার ওপর ফেলে দিলেন। আমি উঠার চেষ্টা করতেই আমাকে শক্ত করে চেপে ধরলেন।
,
মুরাদঃ উফ্!! আজ আমার বউ কে কত সুন্দর লাগছে?
হায়াতঃ ছারুন কেউ এসে পড়বে!
মুরাদঃ তোমার সমস্যা কোথায় তোমকে ধরে রেখেছি নাকি?
হায়াতঃ আপনার মাথা খারাপ নাকি?
মুরাদঃ হু আমার বউ কে দেখে আমি পাগল হয়ে গেছি।
,
কথাটা বলে আমার ঠোঁটে চুমু দিলেন। (ইসস আমার বলতে লজ্জা করছে🙈) আর আমি বেআক্কল এর মতো ওনার দিকে তাকিয়ে আছি। উমি উঠে ওয়াশরুমে চলে গেলেন। আর আমি সেখানে এখন ও দাড়িয়ে আছি। আগে কথাটা টা মাথায় আসতেই লজ্জায় লাল হয়ে গেলাম। “উম আমি কোনো লজ্জা পাচ্ছি আমি তো উনাকে ভালোবাসি না তাহলে আমি বাধা দিলাম না কেনো উনাকে” কথাটা ভাবতে ভাবতে নিচে চলে এলাম। নিচে এসে দেখি মাহিম ভাইয়া নাস্তা করছে আর মামনি উনাকে নাস্তা বেরে দিচ্ছেন। এখন নিজের প্রতি নিজের অনেক রাগ হচ্ছে। আজ এই বাড়িতে প্রথম দিন আর আজ কিনা এতো দেরি হলো আসতে। অবশ্য এতে আমার কোনো দোষ নেই। সব ওনার দোষ উনি তখন এস না করলে দেরি হতো না। তখন কার কথা মনে আসতেই আবার লজ্জায় মথা নিচু করে নিলাম। আমাকে লজ্জা পেতে দেখে মামনি বললো-
,
মামনিঃ কিরে মা এতো লজ্জা পাচ্ছিস কেনো রে?
হায়াতঃ ও কিছু না মামনি।
,
আমার এরুপ উত্তর শুনে মামনি আর কিছু বললেন না। তারপর সিড়ির উপর দিকে তাকিয়ে দেখি উনি নিচে নামছেন। নিচে এসে সোজা মামনি কে বললেন-

মুরাদঃ মা খাবার দেও! অনেক খুদা লাগছে।
মামনিঃ হ্যা দিচ্ছি এই নেও,
,
অতপর মাহিম ভাইয় আর উনি নাস্তা করে অফিসের দিকে চলে গেলো। বাবা নাই দেখে যেতে হচ্ছে তা নাহলে অফিসের দিক কে সামলানে উনি ঘরে থাকলে।
,
এভাবে সারাদিন মামনির সাথে মজা করতে করতে কেটে গেলো এর মাঝে মামনি একবা বাবা কে ফোন দিয়ে সব বলেছেন। শুনে প্রথমে রাগ করলেও আমাকে দেখে রাগ চলে গেছে। মামনি বলেছে-
,
মামনিঃ বাবা আসলে আমাদের বউ ভাত অনেক বড় করে করাবে।
,
আমি কিছু বলি নাই শুধু মাথা নাড়িয়েছি। তারপর উনারা রাত ১০ টায় বাড়ি ফিরলেন।
,
চলবে,,,,,,,,