অদ্ভুদ ভালোবাসা পর্ব-৭+৮+৯

0
514

#অদ্ভুদ_ভালোবাসা
#সুমাইয়া_সুমু
পার্টঃ০৭
,
বারান্দায় দাড়িয়ে আছি। মন অনেক খারাপ।কান্না করতে ইচ্ছা করছে। কিন্তু কেনো সেটা জানি না। একটু আগে উনারা বাসায় এসে ছিলেন। কিন্তু উনাদের সাথে একটা মেয়েও এসেছিলো। পরিচিত হয়ে দেখলাম মেয়েটা উনার ফুফাতো বোন। মেয়ে টা কে দেখে মনে চাচ্ছিলো মাথা ফাটিয়ে দেই। কিভাবে আমার জামাইর সাথে চিপকা ছিলো। এসব ভাবছিলাম তখন ঘরে মুরাদ আসলো। এসেই আমাকে বললো-
,
মুরাদঃ কি হয়েছে বউ তোমার মন খারাপ কেনো?
হায়াতঃ আচ্ছা মাইশা কি আপনাকে ছোটো বেলায় পছন্দ করতো।
,
মুরাদঃ শুধু ছোট বেলায় না। এখন ও পছন্দ করে। আমাকে বিয়ে করতে চাচ্ছিলো কিন্তু আমি না করে দিছি কারন আমি তো তোমাকে ভালোবাসি।
হায়াতঃ ওহ্ আচ্ছা!!
,
মুরাদঃ কিন্তু এখন মনে হয় ওর না করে ভুল করেছি!
হায়াতঃ কেনো মনে হয় না করে ভুল করেছেন।
,
মুরাদঃ কারন আমার বউ আমাকে একটু ও ভালো বাসে না।
হায়াতঃ 😒
,
মুরাদঃ আমি যাচ্ছি মাইশার কাছে। আমি ওর কাছে গেলে ও অনেক খুশি হবে+ আমি ওর কাছে যা চাইবো তাই দিবে।
,
কথাটা বলতেই উনি চলে যেতে নিলেই আমি উনার শার্ট এর কলার ধরে কাছে টেনে নিয়ে উনার ঠোঁটে ঠোঁট ডুবিয়ে দিলাম। ৫ মিনিট পর ছেড়ে দিতেই উনি বললেন-
,
মুরাদঃ ইশ!! আমার বউ কতো রোমান্টিক।
হায়াতঃ আপনি আর ওই শাঁকচুন্নির কাছে যাওয়ার কথা বলবেন না।
,
মুরাদঃ শাঁকচুন্নি টা আবার কে😳??
হায়াতঃ ওই যে মাইশা। আপনার এক্স প্রেমিকা।
মুরাদঃ ওহ্ আমার প্রেমিকা কবে থেকে😳?
হায়াতঃ উফ্ এতো কিছু জানি না যা বলছি তাই করবেন।
,
(মেয়েদের যা করে আর কি জামাইর নামে কিছু শুনলে সেটা ১০ লাইন বাড়াইয়া দেয়😅)
,
মুরাদঃ ওকে আচ্ছা যাবো না। কিন্তু না যাওয়ার জন্য তো আমার কিছু চাই?
হায়াতঃ কি চাই??
,
কথাটা বলতেই উনি আমার কোমড় ধরে উনার কাছে নিয়ে গেলেন। অতঃপর আমার ঠোঁটে হাত রেখে বললেন।
,
মুরাদঃ আজ তোমাকে চাই বাবুইপাখি।
,
কথাটা বলেই মুরাদ আমার ঘারে মুখ ডুবিয়ে দিলেন। আর আমি লজ্জায় নুয়িয়ে গেলাম। উনি আবার বলে উঠলেন–
,
মুরাদঃ কি হলো বাবুইপাখি। হবে না আমার?
হায়াতঃ হু।🙈🙈
,
কথাটা বলতেই উনি আমাকে কোলে তুলে নিলেন। আর আমি লজ্জায় উনার বুকে মুখ লুকালাম। অতঃপর,,,,,,,,,
,
(যান ভাগেন আপনারা কি দেখেন হু। এতো কিছু দেখাইলাম এর পরেও আরও দেখতে চান,😒)
,
সকালে জানালা ভেদ করে সূর্যের আলো মুখের উপর পড়তেই ঘুম ভেঙ্গে গেলো। ঘুম থেকে উঠে দেখি উনি আমাকে কি শক্ত করে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে আছেন। আজ কে উনাকে অনেক সুন্দর লাগছে। শুনেছি বউ স্বামীর সংস্পর্শে এলে সুন্দর হয়। কিন্তু আমার বেলায় দেখি তার উল্টো।
হঠাৎ করে কে জানি দরজায় নারা দিলো,,,,,
,
চলবে,,
,
#অদ্ভুদ_ভালোবাসা
#সুমাইয়া_সুমু
পার্টঃ০৮
,
যেই না উঠতে যাবো তখন ঘটলো আরেক বিপত্তি। কারন উনি আমাকে যেই ভাবে ধরে আছে উঠতেও পারবো না। হঠাৎ করে দরজা খুলে গেলো। দরজার ওইপাশে মাইশা আপু দাড়ানো। কি মেয়েরে বাবা লজ্জা বলতে কিছু নাই। আমাদের পার্সোনাল টাইমে এন্ট্রি না করলে হয় না উনার। হঠাৎ করে উনি ওই দিকে তাকিয়ে বললেন-
,
মাইশাঃ তোমাদের এই সময়ে আসার জন্য সরি! আসলে মামা আসছে তো আর উনি নতুন বউর সাথে দেখা করতে চাইছে।
,
কথাটা বলে মাইশা আপু চলে গেলেন। উনার চোখের ভিতরে আমি এক রকম কষ্ট দেখতে পেয়েছি।
,
আমি আবার উঠতে নিলে উনি আমাকে আরো শক্ত করে ধরলেন। এবার আমি উনাকে এক ধাক্কা দিলাম। আফসোস উনি সরে গেলে কাজ ই হতো। কিন্তু উনার মতো বিশাল দেহি লোকের সাথে আমি পারি নাকি। উনাকে ধাক্কা দিতেই উনি আমাকে বললেন-
,
মুরাদঃ উফ্ বাবুইপাখি! এমন করছো কেনো। একটু ঘুমাতে দেও। রাতে তো ঠিক মতো ঘুমাতে পারি নাই।
,
উনার কথায় আমি লজ্জায় লাল নিল হচ্ছি উফ এই লোক টা এমন কোনো সারাদিন আমাকে লজ্জা দিতে থাকে। এবার আমি ধাক্কা দিয়ে উনাকে বললাম-
,
হায়াতঃ আপনি ঘুমান আপনাকে মানা কে করছে হু। কিন্তু আমাকে যেতে দিন। শুনেছি বাবা এসেছে।
মুরাদঃ তোমাকে আবার কে বললো?
হায়াতঃ মাইশা আপু এসে বলে গেছে।
মুরাদঃ মাইশা এসেছে আমাকে বলবা না।
হায়াতঃ 😒 কেনো মাইশা আপু কে দিয়ে কি করবেন?
মুরাদঃ তোমাকে আর আমাকে এই অবস্থায় দেখে কি ভাবলো মেয়েটা।
হায়াতঃ আজিব তো!!! যা ভাবার ভেবেছে তাতে আপনার কি?
মুরাদঃ কিছু না তুমি যাও।
,
আমাকে ছেড়ে দিয়ে কথাটি বললেন। অতঃপর আমি উঠে ফ্রেশ হয়ে নিচে গেলাম। নিচে যেতেই মা আমাকে বললেন বাবা কে সালাম দিতে আমিও তাই করলাম। বাবা আমার দিকে তাকিয়ে বললেন–
,
বাবাঃ বাহ্ আমার বউমা তো দেখি চাঁদের টুকরো।
,
বাবার কথায় আমি অনেক টা লজ্জা পেলাম। মাইশা আপুর দিকে তাকিয়ে দেখি উনি রাগে ফুসছে। কিন্তু কারন টা তো আমি জানি। এবার তোকে বুজাবো মাইশা ডাইনি আমার জামাইর দিকে তাকানোর ফল। কথাটা মনে মনে বলে বাকা হাসলাম। এর মাঝে বাবা বলে উঠলেন।
,
বাবাঃ কি তোমার গুনোর ধর ছেলে কই? (মাকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন কেও আবার ভাববেন না আমাকে উদ্দেশ্য করে বলেছে😒)
,
হায়াতঃ আসলে বাবা উনি এখন ও ঘুমাচ্ছে।
বাবাঃ যাও তো বউমা মুরাদ কে ডেকে নিয়ে এসো তোমাদের সাথে আমার গুরুত্বপূর্ণ কথা আছে।
,
আমিও লক্ষী মেয়ের মতো উনাকে উপরে গিয়ে ডেকে নিয়ে আসলাম। উনাকে উঠাতে যে আমার কতো যুদ্ধ করতে হয়েছে বলে বুঝাতে পারবো না।
,
অতঃপর বাবা যা বললেন তা শুনে আমার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়লো,,,,,
,
“বাবা এমন কি বললো যা শুনে হায়াত শেষ? বলুন তো দেখি বলতে পারেন নাকি”
,
চলবে,,,,,,,,
,
#অদ্ভুদ_ভালোবাসা
#সুমাইয়া_সুমু
পার্টঃ০৯
,
বাবা মাকে উদ্দেশ্য করে বলেলেন যে-
,
বাবাঃ তোমাকে আমি যা বলেছি তা মনে আছে তো?
মাঃ হ্যা মনে আছে।
,
অতঃপর মা উনার রুমে গিয়ে একটা বাক্সতে কি যেনো আনলেন। তারপর আমার কাছে এসে সেটা আমার হাতে দিয়ে বললেন-
,
মাঃ এইখানে একটা হার আছে মা এটা আমার শাশুড়ীর এটাকে কখনো হাড়িয়ে ফেলো না না। এটা আমার শাশুড়ী আমাকে দিয়েছিলো এখন আমি তোমাকে দিলাম।
হায়াতঃহু।
,
অতঃপর বাবা আমাদের দিকে উদ্দেশ্য করে বললেন-
,
বাবাঃ তোমাদের যে বিয়ে হয়েছে এটা তো আত্মীয় শজন কেও জানে না সো আমি ভাবছি তোমাদের রিসেপশন পার্টি টা একটু বড় করে দিবো।
,
রুমে বসে আছি অনেক আনন্দ লাগছে। বাবা বলেছে কালকে আমাদের রিসিপশন অনুষ্ঠান হবে। হঠাৎ করে মাইশা আপু রুমে ঢুকলো দেখে মনে হচ্ছে অনেক রেগে আছে আমি উনার দিকে অবাক চোখে তাকিয়ে আছি উনি আমার কাছে এসে বললেন-
,
মাইশাঃ কি দিয়ে আমার মুরাদ কে বশ করেছো তোমার ওই শরীর দিয়ে। তা নাহলে তোমার মধ্যে আমি এমন কিছুই দেখতে পারছি,,,,,,
,
আমি মাইশা আপু কে থামিয়ে দিয়ে বললাম-
,
হায়াতঃ চুপ করুন আপু ছেলেদের শরীর দেখানো আপনাদের মতো মেয়ের কাজ আমার না বুঝছেন।
মাইশাঃ বাহ্ এসেই দেখি তেজ বেরে গেছে শুনে রাখো তোমার কাছ থেকে আমি মুরাদ কে ছিনিয়ে নিবো আর তুমি তা চেয়ে চেয়ে দেখবে জাস্ট ওয়েট এন্ড ওয়াচ।
,
কথাটা বলেই মাইশা আপু চলে গেলেন। কিন্তু আমার মনের ভিতর একটা ভয় কাজ করছে। উনি যা বললেন তা কি সত্যি করবেন নাকি। তখনি দরজার ঢেলে ভিতরে মুরাদ ভেতরে প্রবেশ করলো আর আমার কাছে এসে বললো-
,
মুরাদঃ তোমার জন্য একটা সারপ্রাইজ আছে বউ।
আমি উনাকে জড়িয়ে ধরে বললাম-
হায়াতঃ আপনি আমাকে ছেড়ে যাবেন না তো?
মুরাদঃ সেটা সময় বলবে বউ।
হায়াতঃ মানে?
মুরাদঃ কিছু না। আজকে বিকেলের সারপ্রাইজ এর জন্য প্রস্তুত থেকো।
হায়াতঃ হু।
মুরাদঃ আর শুনো তোমার মামা-মামী কেও বলেছি আসতে বুঝছো
হায়াতঃ এতো সুখ কপালে থাকবে তো
মুরাদঃ কে বলতে পারে নাও থাকতে পারে।
হায়াতঃ মানে কি বলতে চাচ্ছেন আপনি?
মুরাদঃ ওহ্ কিছু না। আজকে তুমি অনেক সুন্দর করে সাজবে ওকে।
,
কথাটা বলে মুরাদ চলে গেলো আর আমি উনার দিকে অবাক চোখে তাকিয়ে আছি। উনি এতোখন কি বুঝাতে চাইছিলেন আমাকে। তখনি ফোনে একটা ফোন আসলো। ফোনটা হাতে নিয়ে দেখি খুশি ফোন করেছে। কল টা রিসিভ করতেই ওই পাশ থেকে খুশি বলে উঠলো–
,
খুশিঃ কিরে শশুর বাড়ি বাড়ি গিয়ে আমাদের ভুলে গেলি নাকি?
হায়াতঃ তেমন কিছু না আপু।
খুশিঃ হুম বুঝি বুঝি।
,
এভাবে কিছু খন আপুর সাথে কথা বললাম। অতঃপর ফোন রেখে রান্না ঘরে গিয়ে মার রান্না কাজে সাহায্য করলাম। কিন্তু অবাকের বিষয় হচ্ছে মাইশা আপুকে কোথাও দেখলাম না মাকে জিজ্ঞেস করতেই বললেন মুরাদ আপুকে নিয়ে একটু বাহিরে গেছেন মনে মনে ভয় হতে শুরু করলো। কিন্তু ওতোটা পাত্তা দিলাম না কারন উনি তো আমাকে অনেক ভালোবাসে উনি আমাকে ছেড়ে যাবে না। অতঃপর মার সাথে মজা করতে করতে সারাদিন কেটে গেলো। রাতে বসে আছি খাবার নিয়ে কিন্তু উনি আসার কোনো নাম গন্ধ নেই।
,
চলবে,,,,,,,,