অপরাজিতা ২ পর্ব-০২

0
179

#অপরাজিতা_২(অপরাজিতা গল্পের পরের অংশ)
#২য়_পর্ব
#স্নিগ্ধতা_প্রিয়তা

চেঁচামেচি শুনে রাজিতা ওখানে পৌঁছাতেই তৌফিক ওকে উদ্দেশ্য করে বলল,

–“তুমিইতো রাজিতা তাই না?”

রাজিতা কিছুই বুঝতে পারছিলো না। এসবের মধ্যে আবার ওকে কেন জড়াচ্ছে? রাজিতা মাথা নেড়ে “হ্যাঁ ” বলতেই তৌফিক বলতে শুরু করলো,

–“আচ্ছা আনান নিলাকে বিয়ে না করে তোমাকে কেন বিয়ে করলো বলোতো? ”

উনার মুখে এমন প্রশ্ন শুনে রাজিতা ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলো৷ ও কি বলবে বুঝতে পারছিলো না।
ওকে চুপ থাকতে দেখে তৌফিক আবার বলল,

–“বলো তোমার বোনের আগের বিয়েটা কেন ভেঙে গিয়েছিলো? ”

রাজিতাকে এসব প্রশ্ন করা দেখে আনান এইবার আরো রেগে গেলো। ও রাজিতাকে ওখান থেকে সরিয়ে দিয়ে তৌফিককে উদ্দেশ্য করে বলতে লাগলো,

–“আপনি ওকে কেন এসব জিজ্ঞেস করছেন? আমি বলছিতো এই ব্যাপারে নিশাদ সব জানে। আপনি শুধু-শুধু ঝামেলার সৃষ্টি করছেন।”

তৌফিকও রেগে গিয়ে বলল,

–“আচ্ছা! তুমিই তাহলে বলো নিলাকে কেন বিয়ে করোনি? তুমি উত্তর দিলেইতো ওকে আর বিরক্ত করি না। ”

–“আমিতো বলছিই, আপনি যা ভাবছেন তা নয়। আমাদের বিয়ের ব্যাপারটা একটা এক্সিডেন্ট ছিলো! এতে নিলা বা রাজিতার কোনো দোষ নেই! আর নিলার বিয়েটা আমার জন্যই হয়নি৷ ওর কোনো দোষ নেই। ও নির্দোষ। ”

তৌফিক এইবার তাচ্ছিল্যের একটা হাসি দিয়ে বলল,

–“বাহ আনান! বাহ! তোমাকে আমি নিশাদের বেস্ট ফ্রেন্ড ভাবতাম। কিন্তু তুমি যে ওকে এভাবে ঠকাবে তা ভাবতেও পারিনি! যে মেয়েকে তুমি বিয়ে করোনি, সেই মেয়েকে নিশাদের ঘাড়ে চাপানোর জন্য উঠেপড়ে লেগেছো?”

নিশাদ এতক্ষণ চুপচাপ সবার কথা শুনছিলো। নতুন বর বলে কিছু বলতে চাচ্ছিলো না। কিন্তু এইবার আর চুপ থাকতে পারলো না। ওর দুলাভাই কার থেকে কি শুনেছে তাই নিয়েই ঝামেলা শুরু করে দিয়েছে! নিশাদ আস্তে-আস্তে ওর দুলাভাইয়ের পাশে গিয়ে উনার হাত ধরে টানতে লাগলো আর বলতে লাগলো,

–“ভাইয়া আপনি কি পাগল হয়ে গেছেন নাকি! এসব কি শুরু করেছেন লোকজনের মধ্যে! নিলার বিয়ে ভেঙেছে একথা আপনাকে কে জানালো? ”

তৌফিক নিশাদের থেকে নিজের হাত ছাড়িয়ে নিয়ে বলল,

–“নিশাদ, তোকে সবাই বোকা বানাতে পারে! এই তৌফিক তালুকদারকে নয়! আমার আগেই এই মেয়ের খোজ-খবর নেওয়া উচিৎ ছিলো! আনানের আত্মীয় ভেবে আমি সব ওর উপরে ছেড়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু ও যে সব আমাদের থেকে গোপন রাখবে তা কে জানতো!”

নিশাদ এইবার কণ্ঠস্বর একটু উঁচিয়ে বলল,

–“আপনি যা জানেন না তা নিয়ে কেন কথা বলছেন! চলুন আপনি আমার সাথে৷ কথা আছে।”

নিশাদ এইবার জোর করেই তৌফিককে টেনে নিয়ে গেলো। এইবারও তৌফিক যেতো না৷ কিন্তু নিশাদের বড়বোন সিমা ওখানে এসে নিজের স্বামীকে ভাইয়ের সাথে যাওয়ার জন্য ইশারা করলো। আর সে কারণেই তৌফিক অনিচ্ছা সত্বেও নিশাদের সাথে গেলো।আনানও ওদের সাথে গেলো!

নিলাতো আনানের উপরে রেগে ভুত হয়ে আছে! এই ছেলেটার জন্য এর আগেও ও মানুষের কথা শুনেছে। আবার আজকে নিশাদের সাথে ওর বিয়েটা ভাংতে বসেছে! এই আনানের ছেলেমানুষির জন্য ওর জীবনটা একটা খেলা হয়ে গেছে। সবাই নিজেদের ইচ্ছেমতো খেলছে! নিলাতো আর জানেনা যে, আনান এই খেয়ালীপনা কেন করেছিল! তাহলে হয়তো আনানকে ক্ষমাই করতো না! সেই রাজিতাকেই যদি বিয়ে করবে ওর সাথে বিয়ের নাটক করার কি দরকার ছিলো!

তৌফিককে বোঝানো অতোটাও সহজ ছিলো না। সে একবুলি বারবার আওড়াচ্ছে যে, যেই মেয়েকে আনান নিজে বিয়ে করেনি সেই মেয়েকে নিশাদ কেন বিয়ে করবে! নিশ্চয়ই মেয়েটার কোনো সমস্যা আছে! শর্টকাটে নিশাদ উনাকে পুরোটা জানাতেই উনি একটু শান্ত হয়ে বলল,

–“তারমানে রাজিতা দেখতে আনানের এক্স গার্লফ্রেন্ড এর মতো দেখতে? এইজন্যই আনান ওকে বিয়ে করেছিলো?”

নিশাদ এইবার একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে বলল,

–“হ্যাঁ, আর এই কারণেই সেদিন আনান নিলাকে বিয়ে করতে পারেনি! কিন্তু উনারা কেউ এটা জানেনা। আর নিলার বিয়ে নিলা নিজেই ভেঙেছিল! আনান ওকে ফেলে যায়নি! এইবারতো বুঝতে পারলেন! আনান যাকে রিজেক্ট করেছে আমি তাকে বিয়ে করছি না! বরং আনানকে যে মেয়ে রিজেক্ট করেছে আমি তাকে বিয়ে করেছি!”

তৌফিক এইবার কিছুটা শান্ত হয়ে বলল,

–“ওহ আচ্ছা এই ব্যাপার! কিন্তু লোকজন এমনভাবে বিষয়টা বলছিলো! আমিতো ভাবলাম কি না কি হয়েছিল! এই লোকজন পারেও বটে!”

আনানকে আরকিছুই বলতে হলো না। নিশাদ সুন্দর মতো তৌফিককে সবটা বুঝিয়ে দিলো। তৌফিক সবার সামনে গিয়ে সবার কাছে ক্ষমা চেয়ে নিলো। তারপর সব ঝড়-ঝাপটা শেষে নিরবভাবে নিলা আর নিশাদের বিয়েটা সম্পন্ন হলো।

নিলার মুখ থেকে বিষাদের কালো মেঘ সরে হাসি ফুটে উঠেছে৷ নিয়ন, ওর বাবা-মা, রিমি সবাই হাফ ছেড়ে বাঁচলো যেন। মুহূর্তের জন্য সবাই ভয় পেয়ে গিয়েছিলো যে, আদৌ বিয়েটা হবে কিনা!

নিলাকে বিদায় জানিয়ে রাজিতারা বাসার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিলো। যদিও ওর চাচা-চাচি জোর করছিলো আজ ওদের ওখানেই থেকে যাওয়ার জন্য । কিন্তু রাজিতার শশুর-শাশুড়ী যেখানে চলে যাবে ওরা কি করে থাকে! আর এমনিতেও নিলাদের বাসায় অন্বক লোকজন আছে। সবাইকে বিদায় জানিয়ে রাজিতারাও বাসার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিলো।

বাসায় এসেই রাজিতা নিজের বিছানার উপরে গা এলিয়ে শুয়ে পড়লো। আনান বাথরুমে যেতে লেগেছিলো, রাজিতাকে ওভাবে শুয়ে পড়তে দেখে ওর হাত ধরে টানতে লাগলো আর বলতে লাগলো,

–“তোমার এই অভ্যেসটা কবে যাবে বলোতো! বাইরে থেকে এসে ফ্রেস না হয়েই বিছানায় শুয়ে পড়ো! আরে ভাই ফ্রেস হয়ে তারপর রেস্ট নাও! তোমাকে কেউ মানা করেছে নাকি!”

রাজিতা আনানের হাত থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে আরো আরাম করে শুয়ে পড়লো। তারপর বলল,

–“অভ্যেস কি আর অতো সহজে চেঞ্জ হয় মিস্টার! সময় লাগবে! বাইরে থেকে আসার পর রেস্ট না নিলে আমার নড়াচড়া করার ক্ষমতা থাকেনা! তুমি যাও ফ্রেস হয়ে আসো। আর চিন্তা করোনা বেডশিট তোমাকে চেঞ্জ করতে হবে না৷ আমিই করে দেবো! ”

আনান জানে যে রাজিতা এখনি বিছানা থেকে উঠবে না। তাই ওকে আর উঠতে না বলে বলল,

–“আরে বাবা আমি কি বেডশিট চেঞ্জ করার কথা বলেছি নাকি! ফ্রেস হলে তোমার নিজের-ই ভালো লাগবে! সারাদিনের স্ট্রেসটা কাটিয়ে উঠতে পারবে! তুমি সবসময় উল্টোটা বুঝো!”

বলেই বাথরুমের দিকে চলে গেলো। রাজিতা ওকে উদ্দেশ্য করে জোরেশোরে বলতে লাগলো,

–“তোমারতো শুধু ওইদিকেই খেয়াল! এদিকে আমার ক্ষুধা লেগে জীবন শেষ! সেদিকে কি কারো খেয়াল আছে!”

আনান বাথরুম থেকে মুখটা বের করে বলল,

–“আসার সময় খেয়ে আসোনি কেন? তোমাকে না কতবার করে রিমি ডাকলো খাওয়ার জন্য!”

–“তখন কি জানতাম যে, বাসায় এসেই ক্ষুধা লেগে যাবে। কেন তোমার বুঝি ক্ষুধা পায়নি! আমার কাছেতো এখন দুই প্লেট বিরিয়ানিও কিছুইনা! কি আর করার! অমনিই থাকতে হবে! আমাকে নিয়েতো আর কারোর মাথা-ব্যাথা নেই!”

–“তোমার মতো আমি অতো পেটুক না!”

কথাটা বলেই বাথরুমের দরজাটা লাগিয়ে দিলো আনান। আর রাজিতা আরামসে শুয়ে রইলো!

নিলার শশুরবাড়িতে এসে কেমন যেন অস্বস্তি লাগছে। চারপাশে অচেনা মানুষে ভর্তি! নিশাদের রুমে ওকে বসিয়ে রেখেছে৷ আর ওর পাশেই নিশাদের ছোটবোন রিমা আর ওর আরোকিছু কাজিনরা বসে আছে। বউ দেখে সবাই অনেক খুশি হয়েছে৷ নিলা চুপচাপ বসে আছে। আর আড়চোখে চারপাশটা দেখার চেষ্টা করছে৷ এমন সময় তৌফিক এসে রিমাকে উদ্দেশ্য করে বলল,

–“রিমা তোরা একটু বাইরে যাতো। আমি নিলার সাথে একটু কথা বলব। ”

উনার কথা শুনে সবাই বাইরে চলে গেলো। কিন্তু নিলার বুকের ভেতরটা ঢিপঢিপ করছে। তৌফিক ওকে কি এমন বলবে যে, সবাইকে বাইরে বের করে দিলো! আবার সেই বিয়ে ভাঙা নিয়ে কথা বলবে নাতো! ভয়ে ওর মুখটা শুকিয়ে গেলো৷ হাত-পা গুটিয়ে বসে রইলো৷ তৌফিক আমতা-আমতা করে বলল,

–“সরি নিলা৷ আমি তোমাকে ভুল বুঝেছিলাম! আমার জন্য এতো ঝামেলা হলো। কিছু মনে করো না৷ এখন থেকেতো আমরা পরিবার! তাই আমি চাইনা যে, পরিবারের মধ্যে কোনো ভুল বুঝাবুঝি থাকুক!”

নিলা যেন হাফ ছেড়ে বাঁচলো। তারপর স্বাভাবিক গলায় বলল,

–“না ভাইয়া, সরি বলতে হবে না। যা হওয়ার হয়ে গেছে৷ ওই নিয়ে আর কিছু বলতে হবে না। এখনতো সব ঠিক হয়ে গেছে। ”

তৌফিক কিছু বলতে যাচ্ছিলো৷ তখনি উনার বউ সিমা রাগান্বিত ভাবে রুমে ঢুকেই স্বামীর উপর চেঁচাতে লাগলো,

–“তুমি আবার এখানে এসেছো! ওই বাড়িতে রং-তামাশা করে সাধ মেটেনি! তোমাকে বারবার বারণ করেছিলাম যে, আমার ভাইয়ের বিয়েতে কোনোরকম ঝামেলা করতে পারবে না! আর তুমি সেটাই করলে! আচ্ছা তোমার কি ঝামেলা না করলে পেটের ভাত হজম হয়না! চলো আমার সাথে! নিশাদ বাইরে অপেক্ষা করছে আর তুমি নতুন বউয়ের সাথে গল্প জুড়ে দিছো! নাকি আবার ঝামেলা পাকাচ্ছো কে জানে!”

নিলার সামনে সিমার এসব বলা শুনে তৌফিক একটু লজ্জা পেলো৷ তারপর বলল,

–“তুমি আমাকে বলবে বলো৷ কিন্তু নতুন বউয়ের সামনে আমাকে নিয়ে কথা না বললেই নয়! চলো যাচ্ছি আমি! আমিতো নিলার কাছে সরি বলতে এসেছিলান!”

ওদের দুজনের কথা শুনে নিলা মিটিমিটি হাসছে৷ কিছুই বলছে না। সিমা তৌফিককে নিয়ে বের হয়ে যেতেই নিশাদ রুমে ঢুকে দরজা লাগিয়ে দিলো।
নিলা গুটিশুটি হয়ে বিছানার একপাশে বসে ছিলো৷ নিশাদ আসতেই ওকে সালাম দিলো৷ নিশাদ সালামের উত্তর দিয়ে ওর পাশে বসতে-বসতে বলল,

–“সরি নিলা, আমার দুলাভাইয়ের ব্যবহারে আমি খুব দুঃখিত! আসলে উনি তোমার ব্যাপারে কিছুই জানতেন না৷ তাই ওমন রিয়্যাক্ট করেছিলেন।”

নিলা কিছুটা হেসে বলল,

–“যা হওয়ার হয়ে গেছে। ওই বিষয় নিয়ে আরকিছুই শুনতে ভালো লাগছে না। আমার জীবনের ওই অধ্যায়টা আমি ভুলে যেতে চাই! তারপরেও কেন যে সবাই….আর তৌফিক ভাইয়াও সরি বলেছেতো।দ্যাটস এনাফ!”

এটুকু বলেই নিলা থেমে গেলো৷ নিশাদ বুঝতে পারলো যে, নিলা ওসব শুনতে চায়না। তাই নিশাদ ওই বিষয়ে আরকিছু না বলে অন্যকথা বলা শুরু করলো।

কথার এক পর্যায়ে নিলা নিশাদকে উদ্দেশ্য করে বলল,

–“জানেন রাজিতার বিয়ের পরদিন আনানকে দেখে আমার আফসোস হচ্ছিলো যে, আনানের সাথে আমার বিয়ে কেন হয়নি! কিন্তু আজ বুঝতে পারছি কেন হয়নি।”

নিশাদ ওর কথা শুনে কিছুটা মন খারাপ করে বলল,

–“কেন হয়নি?”

–“কারণ আনান আমার ভাগ্যে ছিলই না! আর আমার আজ আনানকে খুব ধন্যবাদ জানাতে মন চাচ্ছে। কেন জানেন?”

–“কেন?”

–“কারণ আমি আপনাকে পেয়েছি৷ আনান আমাকে বিয়ে করে নিলে আপনাকে কোথায় পেতাম বলুন?”

–“হুম৷ তাহলেতো আমার আনানকে ডাবল থ্যাংকস জানাতে হবে?”

নিলা হেসে বলল,

–“কেন? আপনি আনানকে থ্যাংকস কেন জানাবেন?”

–“কারণ ও সেদিন তোমায় বিয়ে করেনি!”

বলেই দুজনে হাসতে লাগলো। তারপর নিশাদ নিলার দিকে তাকিয়ে বলল,

–“তুমি কি জানো যে,হাসলে তোমাকে আরো বেশি সুন্দর লাগে। মনে হয় পৃথিবীর সব সুখ তোমার পায়ের তলায় এসে ধরা দিয়েছে! কি নির্মল তোমার হাসি!”

নিলা কিছুটা লজ্জা পেয়ে বলল,

–“কেউ কখনো এভাবে বলেনিতো, তাই জানিনা! আজ জানলাম!”

–“তাই বুঝি!”

–“হুম! আসলে জন্ম আর মৃত্যুর মতো বিয়েতেও আমাদের মানুষের কোনো হাত নেই তাইনা? আল্লাহ যার জন্য যাকে বেছে রেখেছেন তাকে তার কাছেই পৌঁছে দিবেন। আমাকে আল্লাহ আপনার জন্যই তৈরি করেছিলেন!”

–“হুম! আর আমি চাই সারাজীবন তোমাকে আমার করেই রাখতে! কি হবে না আমার?”

নিলা লজ্জা পেয়ে আরকিছু বলতে পারেনা। আসলেই ও অনেক খুশি নিশাদকে ওর জীবনে পেয়ে। এ কয়দিনেই ভীষণ ভালবেসে ফেলেছে ছেলেটাকে! ওর মধ্যে এমন একটা মায়া আছে যা নিলাকে মোহিত করে দেয়!

চলবে….?