অপেক্ষিত প্রহর পর্ব-০১

0
928

#অপেক্ষিত_প্রহর
#আফসানা_মিমি
|১ম পর্ব |

কখনো কি শুনেছেন কাজি অফিসে বিয়ে না হয়ে কলেজের কালচারাল অনুষ্ঠানে বিয়ে হতে! আমার হচ্ছে। শহরের নামকরা কণ্ঠশিল্পী ফারদিন ইফাজের সাথে। আজ আমার এই অনুষ্ঠানে আসা-ই ঠিক হয়নি।

যথা সময়ে কাজি এসে আমাদের বিয়ে পড়িয়ে রেখে বিদায় নিয়ে চলে গেলো। আমাদের বিয়ের সাক্ষী আমাদের কলেজের প্রিন্সিপাল স্যার আর বাংলা বিভাগের ফাহাদ স্যার। আমি কখনও ভাবতে পারিনি আমার প্রিয় দুই শিক্ষক আজ আমার কাছ থেকে এভাবে মুখ ফিরিয়ে নিবে। এই বিয়েতে না আমি খুশি, না শিল্পী ইফাজ। আশ্চর্যজনক কথা হলো ইফাজ বিয়ের শুরু থেকে শেষ অব্ধি কোন কথা বলেনি। ইফাজ আমাকে তখন দেখেছে কি না জানি না কিন্তু আমি এখনো ইফাজকে দেখিনি। যতই শহরের নামকরা কণ্ঠশিল্পী হোক না কেন আমি কখনোই টেলিভিশনের পর্দায় দেখিনি। কেন দেখিনি তার উত্তর জানা নেই আমার। ফুপিয়ে কেঁদে যাচ্ছি সেই তখন থেকে। সব দোষ এই শিল্পীর। কে বলেছিল ছেলে হয়ে আগ বাড়িয়ে আমার সাথে দেখা করতে যেতে? আমি কি বলেছিলাম যে আসেন শিল্পী মানুষ আমার চাঁদ মাখা মুখখানা দেখুন আর ঝামেলা করে আমাকে বিয়ে করুন? বলিনি তো! তাহলে কেন এমন হলো আমার সাথে! ইচ্ছে করছে এই বদ শিল্পীর হাতে তারকাটা ঢুকিয়ে সেই হাতে গিটার বাজাতে।

ইফাজ ফোনে কার সাথে যেন রাগারাগি করছে। ইফাজের এক একটা ধমকে আমিই কেঁপে কেঁপে উঠছি। ইফাজের কথার মাঝেই মনে করতে লাগলাম কিছুদিন আগের কথা।

প্রিন্সিপাল স্যারের খুব আদরের ছাত্রী আমি। যখনই স্যারের সাথে দেখা হয় তখনই স্যার আবদার করে বসতেন যেন স্যারকে একটা গান গেয়ে শোনাই। পুরো কলেজ জানে আমার গানের গলা সুন্দর। প্রিন্সিপাল স্যার চেয়েছিলেন যেন কালচারাল প্রোগ্রামে স্যারের জন্য হলেও একটা গান গাই। স্যারের কথা ফেলতে পারিনি তাই রাজি হয়ে যাই গান গাওয়ার জন্য।
আমার গান গাওয়ার পর পরই আরো একজন নাকি গান গাইবেন আর তিনি হচ্ছেন ফারদিন ইফাজ। কলেজের সকলেই অনেক আনন্দিত হয়েছিল ফারদিন ইফাজ গান গাইবে এজন্য। আমিও আশ্চর্যিত হয়েছিলাম! কারণ, কলেজের সকল মেয়েদের মুখে যদি গান ব্যতীত কারোর নাম শোনা যায় তা হচ্ছে ফারদিন ইফাজ। ইফাজের গাওয়া গান সকল গান শুনতে শুনতে তিক্ত হয়ে গিয়েছিলাম। ফলে ইফাছকেও বিরক্ত লাগতো। একপ্রকার সহ্য করতে পারি না এই শিল্পীটাকে।

কালচারাল প্রোগ্রামের দিন মানে আজকে, বন্ধুবি হেনার সাথে কালচারাল প্রোগ্রামে এসেছিলাম। আজ আমার আসার কোন ইচ্ছে ছিলো না। সকাল থেকে বাবার শরীর ভালো না। দোকানেও যায়নি আজ। হেনা জোড় করে নিয়ে এসেছে।
কলেজে আসতেই প্রিন্সিপাল স্যার ডেকে পাঠান আমাকে। কলেজের সকল মেয়েদের মেকআপ করা দেখে বুঝতে পারলাম যে শিল্পী সাহেবের আগমন ঘটেছে। আমি আর সেদিকে পাত্তা দিলাম না। প্রিন্সিপাল স্যারের কাছে চলে গেলাম। আমাকে দেখে প্রিন্সিপাল স্যার হাসিমুখে বলল,

– এই তো চলে এসেছে আমার আহিবা মা! তা কেমন প্রস্তুতি নিয়েছো শুনি?

স্যারের কথায় মুচকি হাসলাম। স্যার আমাকে ছাত্রী কম মেয়ে ভাবেন বেশি। আমাকে মা বলা ছাড়া ডাকেন-ই না।

– আলহামদুলিল্লাহ প্রিপারেশন খুব ভালো স্যার। আপনার এবং আমাদের গ্রামের এই ছোট্ট কলেজের সম্মান আমি রাখবো-ই রাখবো।

আমার কথা শুনে প্রিন্সিপাল স্যার বিস্তর হাসলেন। আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দোয়া করে দিলেন।

যথা সময়ে আমার নাম এনাউন্সম্যান্ট করা হলো। খুব সুন্দর করে একটা রবীন্দ্রসংগীত গাইলাম স্টেজে। স্টেজ থেকে চলে আসতে নিলে সকলের অনুরোধে আরো তাহসানের আলো আলো গান গেয়ে শোনাই। আমার গান শুনে সকলেই প্রশংসা করে। একসাথে দুই দুইটা গান গেয়ে গলা শুকিয়ে যায় আমার। হেনাকে বসতে বলে কমন রুমে আসি পানি পান করার জন্য চলে আসি।
শাড়ির কুঁচি ঠিক করতে করতে রুম থেকে বের হবো এমন সময় কারোর সাথে ধাক্কা লাগে যার ফলে আমার কপালে সামান্য ব্যথা পাই আর শাড়ির কুঁচিগুলো এলোমেলো হয়ে যায়। ধাক্কা দেয়া লোকটাকে না দেখেই বকতে বকতে শাড়ির কুঁচি ঠিক করছি এমন সময় আমাদের কলেজের আয়া ফরিদা খালা চিৎকার করে উঠেন। আমার মুখের উপর থু থু ফেলে বলতে লাগলেন,

– তোমারে ভালা মনে করছিলাম। কিন্তু তুমিও শহরের মাইয়াগোর মতন হইলা! শহরের মাইয়ারা যেমন নিজেগোর নাম কামানোর লাইগ্গা দেহ বিলাইয়া দেয় তুমিও তেমন। আইজ আমি তোমার সকল আকাম ফাঁস করে দিমু। এহনই প্রিন্সিপাল স্যারের কাছে নালিশ করমু তোমার নামে।

কয়েক সেকেন্ডের ভিতর কি হয়ে গেল বুঝতে পারলাম না। এমনকি ফরিদা খালা কি দেখলো যার জন্য এমন বাজে রিয়েক্ট করলো তাও বুঝতে পারলাম না। ফরিদা খালা আমাকে বকতে বকতে কোথায় যেন চলে গেল। কিন্তু আমি এখনো বুঝতে পারছি না যে ফরিদা খালা কি এমন দেখলো আমার মাঝে! আচমকা পিছনে কারো কণ্ঠস্বর শুনতে পেলাম। কেউ আমাকে ডেকে বলছেন।

– এই যে মিস, আপনি কি কিছুক্ষণ আগে গান গেয়েছিলেন? আপনার কণ্ঠস্বর কিন্তু খুবই সুন্দর। এত সুন্দর কন্ঠস্বর আপনার তাহলে এই গ্রামে পড়ে আছেন কেনো? শহরে চলে যান! সেখানে গেলে আমি মনে করি আপনি যে কোন রেকর্ডিংয়ে গেলেই আপনি ভালো রেসপন্স পাবেন। শিল্পীও হতে পারবেন অনায়েসে। শুধু শুধু এখানে এই গ্রামে পড়ে আছেন কেন?

পেছনের লোকটার কথা শুনে ভ্রু যুগল কুঁচকে আসলো। চেনা নাই জানা নাই একজন লোক আমার সম্পর্কে এত কিছু বলে ফেলল! ইচ্ছে করছে লোকটার মুখের উপর কত গুলো কথা শুনিয়ে দিতে, ‘ আমি আমার গ্রামকে খুবই ভালোবাসি। এই গ্রামের মানুষগুলো আভার প্রিয়। এই গ্রাম ছেড়ে আমি কোথাও যাব না। শহরেও না।’ কিন্তু তা আর বলা হলো না। এর আগেই ফরিদা খালা প্রিন্সিপাল স্যার এবং বাংলা বিভাগের ফাহাদ স্যারকে নিয়ে এখানে চলে আসেন।

প্রিন্সিপাল স্যার এসে ঘৃণিত কণ্ঠস্বরে আমার উদ্দেশ্যে বললেন,

– আমি কখনো ভাবতে পারিনি তুমি এমন একটা কাজ করবে। যার কারণে আমার কলেজের মান সম্মান নষ্ট হয়ে যাবে। তুমি না সকালেও বলেছো যে আমার কলেজের মান রাখবে! এই তোমার মান রাখা? সকলের সামনে তুমি ভালো সেজে থাকো আর ভেতরে এমন কিছু করো। ছি! আমার ভাবতেও ঘৃনা লাগছে যে তোমাকে কোন একদিন মেয়ে বলে ডেকেছিলাম।

আচমকা কি হয়ে গেল তা বুঝতে পারছি না আমি। কিছুক্ষণ আগে ফরিদা খালা আর এখন প্রিন্সিপাল স্যার, দুজনের কথা মিলে বুঝতে পারলাম যে আমি বড়ো কোন অপরাধ করেছি নিজের অজান্তে যার জন্য এখন কথা শুনতে হয়েছে। প্রিন্সিপাল স্যার এবার আমার পিছনের লোকটাকে উদ্দেশ্য করে বললেন,

– আর ফারদিন ইফাজ, শুনেছি আপনি এ গ্রামের একজন বাসিন্দা ছিলেন কোন একসময়। আজ আপনার জন্য আমার কলেজের সম্মানহানি হলো। আপনাকে নিয়ে আসা হয়েছিল আমাদের কলেজের সুনাম হওয়ার জন্য কিন্তু হল বিপরীত, এখন আপনি বলবেন? কি করব আমরা?

প্রিন্সিপাল স্যারের কথা শুনে এবার ইফাজ চিৎকার করে উঠল,

– আপনার মাথা ঠিক আছে স্যার? আমি এমন কি করলাম, যার জন্য আপনার কলেজের সম্মানহানি হলো? আর কিছুক্ষণ আগেই আসলাম কলেজে আর এসে এখানে এই মেয়ের সাথে দেখা করতে আসলাম। কিছুক্ষণ আগেই মেয়ে গান গেয়েছিল স্টেজে। মেয়েটার গান শুনে মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম তাই আমার এখানে আসে। আপনাদের কিছু শিক্ষকদের বলে এখানে দেখা করতে এসেছি তো! কেন আপনার শিক্ষকেরা কি কিছু বলেনি আপনাকে?

ইফাজের কথা শুনে প্রিন্সিপাল স্যার পাল্টা আরো হুঙ্কার দিয়ে বলে উঠলেন,

– এসব আমি কিছুই বুঝিনা। আপনার কারণে বাহিরে সমালোচনা হচ্ছে সুতরাং এর দায়ভার আপনি বহন করবেন। এখানে এসে এই মেয়েটার সাথে অসভ্যতামি করার জন্য আমি আপনাকে পুলিশে দেবো। এর চেয়ে ভাল অপশন আমার কাছে আর নেই।

প্রিন্সিপাল স্যারের কথা শুনে ফাহাদ স্যার বলে উঠলেন,

– স্যার পুলিশকে দিলে ইফাজের কিছুই হবেনা বরঞ্চ সে কিছুদিন জেল খেটে বাহিরে চলে আসবে। এর চেয়ে ভালো এমন কিছু করি যার জন্য আমাদের কলেজের বদনাম না হয় এবং এই মেয়ের সম্মান হানীও না হয়।

তিনজন মানুষের মধ্যে কথা চলছে। আর আমি কেঁদে যাচ্ছি আমার নামে মিথ্যা অপবাদ দেয়ার জন্য। একজন মেয়ের সবকিছু সইতে পারে কিন্তু তার সম্মান নিয়ে মিথ্যা অপবাদ সইতে পারে না। আমার অবস্থাও তাই।

ফাহাদ স্যার আবারও বলে উঠলেন,

– আহিবাকে আপনার বিয়ে করতে হবে মিস্টার ইফাজ।

– আমি কখনোই মেয়েকে বিয়ে করব না। চিনিনা জানিনা কেন মেয়ে মেয়েকে বিয়ে করব? আর আমার তো এখানে কোন দোষ নেই।

ইফাজের কথা শেষ হতেই ফরিদা খালা ব্যঙ্গ করে বলতে লাগল ,

– দোষ নেই বললেই হলো? এই যে মেয়েটার চোখের কাজল ল্যাপ্টে গিয়েছে, ঠোঁটে লিপস্টিক গালে ভরে গিয়েছে, শাড়ির কুঁচি অগোছানো হয়ে আছে। এসব দ্বারা কি প্রমাণ হয় যে তুমি সাধুবাবা? একদম না আমি শহরের ছেলেদের খুব ভালো করেই চিনি। তারা গ্রামের সহজ সরল মাইয়া পাইলে খুবলে খেয়ে দুই দিন পর ছেড়ে দেয়। কিন্তু আমি তা হতে দিবো না তুমি বিয়া করবা এবং এক্ষুনি তাইলে এই মাইয়ার সন্মান হানী হবে না। আর আমাদের গ্রামের কলেজের সম্মানহানি হবে না।

ফরিদা খালার কথা শুনে কান্না থামে স্তব্ধ হয়ে গেলাম। আমার আজকে বিয়ে তাও আবার ইফাজের সাথে? যেই মানুষটিকে আমি সহ্য করতে পারিনা যে মানুষটাকে আমি কখনো দেখিনি তাকে কিভাবে বিয়ে করব?

কিছুক্ষণ পর প্রিন্সিপাল স্যার আমাকে নিয়ে বাহিরে আসেন ততক্ষণে কালচারাল প্রোগ্রাম শেষ করে দিয়েছেন কলেজের কর্তৃপক্ষরা। পুরো কলেজ ফাঁকা। হয়তো আমাদের জন্যই ফাঁকা করে দিয়েছেন স্যার!

———

এরপরের কাহিনী তো আপনারাই জানেন।
বর্তমানে আমি স্তব্ধ হয়ে বসে আছি অফিস রুমের চেয়ারে। আমার পাশে দাঁড়িয়ে কিছুক্ষণ আগে তিন কবুল বলার স্বামী কাউকে ফোনে বকে যাচ্ছেন। আচমকা ফোন দেয়ালে ছুড়ে মেরে আমার কাছে এসে আমার দুই বাহু শক্ত করে ধরে আমার উদ্দেশ্যে চিল্লিয়ে বলতে শুরু করলেন,

– এই মেয়ে তোমার মুখ ছিলনা! যখন আমাদের বিয়ের কথা বলেছে তখন বলতে পারলে না যে, আমাদের মাঝখানে এমন কিছু হয়নি! তুমি বলতে পারলে না, সেটা শুধু একটা অ্যাক্সিডেন্ট ছিলো! মুখ কোথায় ছিল তোমার? নাকি নামকরা শিল্পীকে বিয়ে করার কথা শুনে তুমি অন্যান্য মেয়েদের মত পাগল হয়ে গিয়েছিলে! উত্তর দাও আমাকে? যত্তসব।

পিটপিট চোখে তাকিয়ে আছি শিল্পী সাহেবের দিকে। এই প্রথম ইফাজকে দেখলাম আমি। সাদা বর্ণের অধিকারী শিল্পী সাহেব রেগে নাক মুখ লাল হয়ে আছে। চোখ জোড়া থেকে যেন আগুনের ফুলকি বের হচ্ছে এতটাই রক্তিম হয়ে আছে। ইফাজ আমার পানে কিছুক্ষণ দৃষ্টিপাত করে চোখ সরিয়ে নিলেন। আমার উদ্দেশ্যে কঠোর স্বরে বললেন,

– দেখো মেয়ে, আজকের জন্য আমাকে দায়ী করতে পারবে না তুমি। তোমাকে আমার সহ্য-ই হচ্ছে না। আমারই দোষ। কেন যে তোমার কন্ঠস্বর শুনতে গেলাম! আর কখনো গাইবে না তুমি। এই কন্ঠস্বর শুনে আজ আমার জীবন শেষ হয়ে গেল। আমার তো ইচ্ছে করছে গলা টিপে তোমাকে মেরে ফেলি। উফ আমার জীবন, আমার হিবারাণী!

শিল্পী সাহেব প্রথমে কথাগুলো জোড়ে জোড়ে বলছিলো কিন্তু আমার কোন প্রতিক্রিয়া না দেখে আমাকে ছেড়ে দূরে গিয়ে বিড়বিড় করে কি যেন বলল।
আমার কোন ইচ্ছে নেই এমন অহংকার শিল্পীর বউ হতে। দুই হাতে চোখের পানি মুছে রাগী স্বরে বললাম,

– এই যে শিল্পী সাহেবের বাচ্চার বাপ! আমার কোন শখ নেই আপনার বউ হতে বুঝেছেন? আপনার মত অহংকারের বস্তাকে আমি বয়কট করলাম। বয়কট, বয়কট, বয়কট!
আপনি যদি আর কোনদিন আমার চোখের সামনে পড়েন তো জ্যান্ত গলা টিপে দিবো। বেটা খচ্চর! আমাকে ভয় দেখায়! এই আতিয়া আহিবাকে! আপনি কি আমাকে ছেড়ে দিবেন! আমি অপনাকে চেড়ে চলে গেলাম। এক তালাক, দুই তালাক, বাইন তালাক দিয়ে চলে যাচ্ছি। গুড বাই খচ্চর শিল্পী।

আহিবা চলে যেতেই ইফাজ ক্যাবলাকান্তের ন্যায় থম মেরে দাঁড়িয়ে রইলো। ইফাজ বিড়বিড় করে বলছে,

‘ সুখের দিন শেষ হয়ে দুঃখের দিন শুরু!
বাঁচতে হবে সঠিকভাবে,
মেয়েটা যে নাটের গুরু।

চলবে………