অপেক্ষিত প্রহর পর্ব-১৪

0
254

#অপেক্ষিত_প্রহর
#আফসানা_মিমি
|১৪তম পর্ব |

সোফার রুমে পিনপতন নীরবতা। আমি আর বাবা যেই সোফায় বসে আছি তাঁর অপরপাশের সোফায় ইফাজের সৎ মা এবং উনার পাশে হুইলচেয়ারে ইফাজের বাবা বসে আছেন। ইফাজের বাবাকে এই অবস্থায় দেখে আমার বাবা খুবই আফসোস করলেন। ইফাজদের বাসাটার চারপাশটায় নজর ঘুরিয়ে যাচ্ছি। চারপাশে পর্যবেক্ষণ করে ইফাজের সৎ মায়ের দিকে আমার দৃষ্টি গেল। ইফাজের সৎ মা তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে আমার পানে তাকিয়ে আছেন হিংস্র বাঘিনীর ন্যায়। যেন আমাকে একা পেলে আস্ত চিবিয়ে খাবেন কিন্তু আমি সেদিকে তোয়াক্কা করছি না। আমি চোখ ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে বাড়ির সবকিছু পর্যবেক্ষণ করছি। এখানে আনাচে-কানাচে আমার ইফাজের চলাচল, ইফাজির স্পর্শ রয়েছে। সবকিছু পর্যবেক্ষণ করছি আর মনে মনে ভাবছি,” কোথায় আমার ইফাজ? কখন যে আসবে! আজ কেন যেন নিজের মধ্যে অনেক সাহস সঞ্চার হয়েছে। মনে হচ্ছে, সিংহ আমার সামনে আসে তো এক ঘুষি মেরে নাক, গাল ফাটিয়ে দিতে পারব।”

– তা কেন এসেছেন আপনারা? কি উদ্দেশ্য নিয়ে এসেছেন, মেয়েকে ভুলিয়ে-ভালিয়ে আমার ছেলের সাথে বিয়ে দিয়ে গলায় তো বেঁধে দিয়েছিলেন। কিন্তু আমার ছেলে শুধুমাত্র আমার কথা শুনে। আমি একবার বলাতে আপনার মেয়েকে ছুঁড়ে ছেড়ে দিয়ে চলে এসেছিল এখানে।

চারপাশে নজর বুলাতে বুলাতে হঠাৎই ইফাজের মায়ের কথায় চমকে গেলাম। মহিলাটা বলে কি! তাঁর কথায় ইফাজ আমাকে রেখে আসার মানে? মহিলাটির কথার প্রতুত্তরে বাবা বললেন,

– মানে! কি বলতে চাচ্ছেন আপনি?

– বলতে চাচ্ছি যে, আমার ছেলে খুব শীঘ্রই আপনার মেয়েকে ডিভোর্স দিয়ে দিবে এবং সে আমার পছন্দ করা মেয়েকে বিয়ে করবে।
মহিলাটির কথা শুনে কেন যেন খুব হাসি পাচ্ছে। আমি যতটুক জানি আমার ইফু আমার পাগল। আমাকে ছাড়া অন্য কোন মেয়েকে গ্রহণ করতেই পারবে না। হয়তো পরিস্থিতির চাপে পড়ে আমাকে ছেড়ে চলে এসেছিল শহরে, কিন্তু আমার দৃঢ়বিশ্বাস ইফাজ এমন কিছু করবে না যেন তার হিবারাণী কষ্ট পায়।

– এসব কেমন কথা? আমার মেয়েকে ডিভোর্স দিবে মানে? বিয়ে কি ছেলেখেলা পেয়েছেন নাকি! যে ইচ্ছে করলে আপনার ছেলে আমার মেয়েকে বিয়ে করবে আবার ইচ্ছে করলে ডিভোর্স দিয়ে দিবে! আমরা ডিভোর্স চাই না। ইফাজ আজ কোথায়, আমরা ইফাজের সাথে সরাসরি কথা বলতে চাই।

– ইফাজকে দিয়ে আপনাদের কি কাজ? যা কথা বলার আমি বলে দিবো। আমি যা সিদ্ধান্ত নিবো তাই ইফাজ মাথা পেতে মেনে নিবে। আর ইফাজ এখন আমার হবু বউমাকে নিয়ে শপিং করতে গিয়েছে। আপনাদের ডিমান্ড থাকলে বলে দিতে পারেন। আমরা পরিশোধ করে দিবো। আমার ছেলের উপর আপনার মেয়েকে চাপিয়ে দিবেন না।

এই মহিলাকে আমার ভালো ঠেকছে না। এই মহিলা কখনও ইফাজকে ছেলে ভাবে নি। ভেবেছে টাকার বস্তা। এই মহিলা এমন একজন মহিলা যে, তাঁর নিজের স্বার্থের জন্য সবকিছু করতে পারে। নিজের ছেলেকেও বলিদান দিতে পারে। মহিলাটির কথায় আমি ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে রইলাম। আমার তাকানো দেখে ইফাজের মা কঠোর কণ্ঠস্বর বললেন,

– এভাবে কি দেখছো? খেয়ে ফেলবে নাকি! আমার চোখের দিকে তাকিয়ে আছো কেন? তুমি জানো, আমি কে?

মহিলাটির কথা শুনে ঘুম আসছে রীতিমতো।ইফাজের মাকে এখন আমার কাছে বাংলা সিনেমার রিনা খানের মতো লাগছে। যে কি না সব সিনেমায় ভিলেন শাশুড়ি থাকে। বর্তমানে আমার কাছে মহিলাটিকে মনে হচ্ছে ভিলেনের নানী। যাইহোক আমি আমার শাশুড়ি মায়ের নতুন নাম রাখলাম,” রিনা খান” রিনা খানকে যতটুকু বুঝলাম, এই মহিলা যতদিন বেঁচে আছে যতদিন ইফাজ আমার হবে না। কিন্তু আমার তো ইফাজ কে চাই। কি করব, কি করব, কি করলে ইফাজকে পাবো পাবো ভাবছি বসে বসে।

এতক্ষণ ইফাজের বাবা মুখ খুললেন,

– ইসহাক দেখো, ভাগ্যের লীলাখেলা! সে কত বছর আগে আমাদের সম্পর্ক নষ্ট হয়ে গিয়েছিল গ্রাম ছেড়ে চলে আসার কারনে। ভেবেছিলাম তোমাকে আর দেখতে পাবো না কিন্তু আমাদের ছেলে মেয়ে আমাদেরকে আবার নতুন সম্পর্কে জড়িয়ে আমাদের দেখা করাতে সুযোগ করে দিলো।

– সত্যিই বলেছো। আমি ভাবতে পারিনি ইফাজ তোমার ছেলে হবে। প্রথম দিন যখন জানতে পারলাম যে এই ইফাজ তোমার ছেলে আর আমাদের ছোট্ট ইফু সেদিন আনন্দে কেঁদে দিয়েছিলাম। আহিবার মা তো শুধু পারেনি ইফাজকে মাথায় তুলে রাখতে। আর যখন শুনতে পারলাম যে ইফাজ আমার মেয়েকে বিয়ে করেছে পরিস্থিতি চাপে পড়ে তখন খুব রাগ হয়েছিল কিন্তু পরক্ষনে যখন বলল যে সে তার ছোট্ট আহিবাকে আগলে রাখতে চায়, শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত ভালবাসতে চায়। তখন আমাদের আর কোন অমত ছিল না। আমরা জানতাম, ইফাজ একমাত্র ব্যক্তি যে আমার মেয়েকে খুব ভালবাসে এবং ভবিষ্যতে ভালবাসবে এতে কোন সন্দেহ নেই।

দুই বন্ধুর কথোপকথনের মাঝে রিনা খান বাম হাত ঢুকিয়ে দিয়ে বলল,

– আপনাদের দুজনের কথা ভুল। এই মেয়েকে ইফাজ ভালোবাসে না। শুধু আমার পছন্দ করা মেয়েকে ইফাজ ভালোবাসবে এবং বিয়ে করবে। আর কিছুক্ষণের মধ্যে তাঁরা চলে আসবে তখন না হয় আপনারা সরাসরি ইফাজকে জিজ্ঞেস করবেন। আর সবচেয়ে বড়ো কথা! আপনাদের দেখতে আমার বিরক্ত লাগছে কখন যে এরা বিদেয় হবে!

কথায় আছে না! “ফকিন্নির আবার তল বিছানা” আমার কাছে এই মহিলাকে তেমনই মনে হচ্ছে। পঁচা ডোবা থেকে উঠে এসে মানুষ যতই শরীরকে ধুয়ে-মুছে পবিত্র করুক না কেন সেই শরীর থেকে দুর্গন্ধ বের হবেই হবে। এই মহিলাটি তেমনই খারাপ; যতই শরীরে আতর গোলাপ জল মেখে বড়লোক হওয়ার চেষ্টা করুক না কেন এর মন মানসিকতা নিম্ন এবং অহংকারে পরিপূর্ণ।

ইফাজের মার কথা শেষ হতেই ইফাজের আগমন ঘটে। ইফাজ এতক্ষণ রাগান্বিত হয়ে ঘরে ঢুকছিল আমাকে খেয়াল করেনি। যখন আমাকে দেখলো। আমাকে খেয়াল করে তখন অবাক হয়ে যায়।
ইফাজকে দেখে যতটুক আনন্দিত হয়েছিলাম তাঁর চেয়ে বেশি রাগান্বিত হলাম ইফাজের পিছনে কানিজকে দেখে। এই মেয়ে তো দেখছি গ্রামেও আমাকে শান্তি দেয়নি এখানেও শান্তি দেবেনা। আমার চোখে কানিজের চোখ পড়তেই কানিজ আমাকে দেখিয়ে দেখিয়ে ইফাজের এক হাত আঁকড়ে ধরল। এদিকে ইফাজের সৎ মা হাসিমুখে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছে কানিজকে আমাদের সাথে,

– এইতো আমার ছেলের হবু বউ কানিজ শেখ। শহরের নামকরা পপ সিঙ্গার। আমার ইফাজ যেমন শিল্পী তেমন কানিজও শিল্পী। আসলে বলেন তো কি! আজকালকার জেনারেশনে স্ট্যাটাসে স্ট্যাটাস মিল খেতে হয়। কোথায় আপনার মেয়ে আর কোথায় আমার ইফাজ। আমি তো আমার মনের মতন বউ পেয়েছি আমার ইফাজের জন্য। এই তো সামনের সপ্তাহে ইফাজ আর কানিজের আংটি বদল হবে। আর সেদিনই বিয়ের কথা পাকা করা হবে। চিন্তা করবেন না আপনার মেয়ের ডিমান্ড থাকলে তাহলে বলতে পারেন আমরা পরিশোধ করে দিবো।

ইফাজের মায়ের কথা শুনে আমি ইফাজের পানে ভ্রু কুঁচকে তাকালাম। আজ আমি ইফাজের চেহারায় অসহায়ত্ব দেখতে পাচ্ছি। এই ইফাজের চোখজোড়া যেন আমাকে কিছু বলতে চাইছে। কিন্তু কি বলতে চাইছে ইফাজ? এমন তো নয় যে ইফাজ বাধ্য হয়ে কানিজের সাথে চলাচল করছে! যেই ইফাজ আমাকে আঘাত করা কারণে এই মেয়েকে থাপ্পড়ের উপর থাপ্পড় মেরেছে আজ সেই মেয়ের হাতে হাত ধরে ঘুরছে বিষয়টা অবিশ্বাস্যকর। কেন যেন মনে হচ্ছে এখানে গন্ডগোল আছে।

আমার ভাবনার মাঝে রিনা খান আবারও বলে উঠে,
-আশা করি এবার আপনারা বুঝতে পেরেছেন। এবার আপনারা চলে যান আমার এখন আমাদের পারিবারিক সময়। আমরা এখন একান্তে কিছু আলাপ আলোচনা করব আপনারা আসতে পারেন।

মহিলাটির কথা শেষ হতেই আমি সোফা থেকে দাঁড়ালাম। ইফাজ আগের চেয়ে আরো বেশি অসহায় চোখে তাকালো আামার পানে। আমি হেঁটে হেঁটে ইফাজের সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম। একদম কাছে, সেখানে আমার নিঃশ্বাস ইফাজের বুকের উপর বারি খাচ্ছে। আমার এত নিকটে আসে দেখে ইফাজ আশ্চর্যিত হয়ে গিয়েছে। ইফাজের ধারণা ছিল আমি এখনো সেই আগের মত রয়েছি। একদম বোকা। কিন্তু ইফাজ তো জানে না যে ইফাজ চলে আসার পর এই দেড় বছরে অনেকটা বদলে গিয়েছি। ইফাজের থেকে দৃষ্টি সরিয়ে কানিজের পানে তাকালাম।
কানিজ এখনও ইফাজের হাত ধরে আছে। কোন দিকে না তাকিয়ে ইফাজের হাত থেকে কানিজের হাত সরিয়ে চোখ বন্ধ করে একের পর এক থাপ্পড় দিতে লাগলাম। এদিকে আমার কান্ড দেখে বাবা আর রিনা খান দাঁড়িয়ে গেলেন। রিনা খান তো সমান তালে চিল্লিয়ে যাচ্ছে,
_এই মেয়ে কি করছো! মারছো কেন মেয়েটাকে? তোমার সাহস তো কম না আমারই সামনে আমার ছেলের বউকে মারা হচ্ছে! এই ইফাজ কিছু বল! মেয়েটাকে মারতে মারতে তো একদম মেরে ফেলবে। এই সিকিউরিটি, দারোয়ান! কে কোথায় আছো এদের বাড়ি থেকে বের করো।

আমিতো কানিজকে একের পর এক থাপ্পড় দিয়ে যাচ্ছি। থাপ্পড়ের সাথে সাথে আমার মুখের ভাষা ফ্রী,

– বজ্জাত মাইয়া, ময়লা গোডাউনের বস্তা, টিকটিকির ছানা, গন্ডারের চামড়া! এ তোর শরীর কি গন্ডারের চামড়া দিয়ে তৈরি নাকি রে! সেবারের কথা ভুলে গিয়েছিস? ইফাজ যে তোকে থাপ্পড় মেরেছিল আমাকে আঘাত করার জন্য! আজ আমি তোকে মারব মারতে মারতে শেষ করে ফেলবো। আমার ইফাজকে বিয়ে করা বের করছি বজ্জাত মেয়ে। যতক্ষণ না পর্যন্ত আমার মনের জ্বালা মিটবে ততক্ষণ পর্যন্ত মারব। আমার স্বামীর হাত ধরা তাই না! আমি তোর সেই হাতগুলো ভেঙে গুরো করে ফেলব।
এদিকে আমার কান্ড দেখে ইফাজের মা এসেছিল আমাকে আঘাত করবে বলে কিন্তু সে সময়ে ইফাজ তাঁর মাকে থামিয়ে দেয় এবং রাগান্বিত কন্ঠস্বরে বলে,

– অনেক সহ্য করেছি আপনার অত্যাচার। এত বড়ো শিল্পী হয়েও আপনাকে ভয় পাই শুধুমাত্র আপনি আমার বাবার ক্ষতি করবেন এইভেবে। কিন্তু ভাববেন না যে আমি দুর্বল। আমি কিন্তু অনেক খারাপ। আপনাকে সম্মান করি বিধায় আঘাত করিনি এতদিন। কিন্তু না! আপনি ভাল মানুষ না। আপনি ভাল মানুষ হবেন না। আমাকে আঘাত করবেন ভালো কথা কিন্তু আমার বউকে আঘাত করার চিন্তাভাবনা করবেন না ভুলেও।
আমি আমার হিবারাণীকে ভালবাসবো, আমিই আঘাত করব তারপর আমিই সেই আঘাতের উপর মলম লাগাবো। সব করব আমি কিন্তু ভুলেও অন্য কেউ আমার হিবারাণীর দিকে হাত বাড়ানোর চেষ্টা করলে তো তাঁর হাত কেঁটে ফেলবো আমি। একদম জ্যান্ত কবর দিবো আমি।

এদিকে ইফাজের কথা শুনে দেড় বছরের কষ্টের কথা মনে পড়ে গেল আমার। কানিজকে ছেড়ে দিয়ে ইফাজের কাছে এলাম। ইফাজের বুকে অনবরত কিল ঘুষি মারতে লাগলাম।

-ব্যাটা বদ শিল্পী, এখন আমার প্রতি দরদ দেখানো হচ্ছে! আমার সামনে এখন ভালো সাজা হচ্ছে! এতদিন তো মায়ের আঁচলই ছাড়িস নাই তাহলে আজ কেন বউয়ের এত টান বেড়েছে? কই এতদিন তো আমার একটা খোঁজ খবর নিস নি। তাহলে আজ কেন এত টান শুনি! আর ঐ মেয়ের সাহস কতো! তোর হাত ধরা তোর গায়ের সাথে মেশা! এত সাহস দিয়েছিস কেন? আজ আমি তোকে মেরে ফেলবো তোকে মেরে আমি জেলে ঢুকবো।

আমার এমন পাগলামি দেখে ইফাজ নিঃশব্দে হাসল। বাবা দিকে ইশারা করে বলল,

_ আপনার মেয়েকে আমি কি আমার সাথে নিয়ে যেতে পারি? আপনার মেয়েটা পাগল হয়ে গিয়েছে একটু মাথা ঠান্ডা করে নিয়ে আসি।

ইফাজের কথা শুনে বাবা বললেন,

– হ্যাঁ নিয়ে যাও সমস্যা নেই। আমার মেয়ের অভিমান কিন্তু অনেক বেশি। দেখবে অভিমান যেন পুরোপুরি ভাঙতে পারো। যদি পুরোপুরি ভাঙ্গতে না পারো তাহলে কিন্তু আমি আমার আবার আমার মেয়েকে নিয়ে চলে যাবো আমার সাথে। আর এদিকের কথা চিন্তা করিও না আমি এত নরম মানুষ না যে আমার বন্ধুকে আঘাত করবে তার পাল্টা প্রতিরোধ করতে পারবো না। আমি এদিকে আমি সামলে নেব তুমি চলে যাও।

– ধন্যবাদ বাবা। দোয়া করবেন আমাদের জন্য।

সবার সামনে ইফাজ আমাকে কোলে করে বাহিরে নিয়ে আসলেন। আামকে গাড়ির সিটে বসিয়ে নিজেও সিটে বসে সিট বেল্ট লাগিয়ে নিলেন। গাড়ি স্টার্ট দিতেই শো শো কটে কোথায় যেন চললেন। এদিকে আমি অনবরত চিল্লিয়ে যাচ্ছি,

-এই বদ শিল্পী আমি আপনার সাথে কোথাও যাবো না। আপনাকে আমার সহ্য হচ্ছে না। আপনি ভালো না একদম ভালো না। দেড়টা বছর আমাকে ছাড়া থাকতে পেরেছেন এখনও পারবেন। আমি বাড়ি যাবো। আমার গ্রামে ভালো। শহর ভালো না সাথে আপনিও ভালো না।

আমার কথার প্রত্যুওরে ইফাজ আমার নাকু কুটুস করে কামড় দিয়ে বলল,

– এ শহর ভালো না হোক, তোমার এই বদ শিল্পী তো ভালো! আজ তোমার মান ভাঙাবো আমি। তোমাকে আজ আমার রঙে রাঙিয়ে তুলবো। প্রিয়লতা, আজ তোমার আর আমার মিলনে কোন বাঁধা আসবে না।

চলবে………