অভিমানী প্রেয়সী পর্ব-১১

0
222

#অভিমানী প্রেয়সী
#মিশকাতুল
#পর্ব :১১

তন্ময়ের সাথে দ্বিপ গেছে।বাসায় এখন সকাল থেকেই বিয়েতে কে কি পরবে? কে কিভাবে সাজবে সে নিয়েই বাচ্চাদের আলোচনা।

নেহা নিশিকে জড়িয়ে ধরে কাদঁছে।আজকে তার বোন নিজের বাসা থেকে চলে যাবে।সেই সাথে ঝিল এসেও যোগ দিয়েছে।তারও আপন নিশি।নিশির মা ডাকতে এসে সেও কান্নায় ভেংগে পরেছে।দ্বিপালি বেগম আসছে না দেখে আমেনা খুজতে এসে সেও কান্নায় যোগ দিয়েছে।এদের আহাজারি শুনে নিচ থেকে তন্ময়ের বাবা আর চাচা তারাও এসে কান্নায় ভেংগে পরেছে।

অত:পর রুমে এসেছে দ্বিপ আর তন্ময়।

দ্বিপ ও মা বোনের এই অবস্থা দেখে তারও চোখ বেয়ে জল পরছে।

তন্ময়:তুই আবার কেন কাদঁছিস?

দ্বিপ :কাদবঁনা?

আমার এক মাত্র বড় বোন এভাবে চলে যাবে বাসা থেকে?

তন্ময়: এমন ভাবে বলছিস যেনো আর ফিরবে না?
নেকা কান্না তুই কাদিস না।তোর চোখে কান্না মানায় না।

ঝিল:কাকে কি বলছিস দ্বিপ ভাই।ও এসবের কি বোঝে?? ওর জীবনে কি মায়া বলতে কিছু আছে?

তন্ময়: ওহ বলতে চাচ্ছিস আমি নিশি আপুকে ভালোবাসি না?

ঝিল: না।

তন্ময়:কাদলেঁই ভালো বাসা প্রকাশ পায়? জানতাম না। আর তোমরাও কি পাগল হয়ে গেছ.? কিসের কান্না শুরু করে দিয়েছ? বের হও এই রুম থেকে ওকে একটু একা থাকতে দাও।

আমেনা: তন্ময়।দেখ মেয়েটা কেমন করে কাদছে? আর তুই নেকা কান্না বলছিস?

তন্ময়: আপু প্লিজ কাদিস না।আজ না তোর বিয়ে? বিয়েতে কাদঁলে কি হবে? আনন্দ কে করবে? চলো ওঠো।

ঝিল: বড় মামী তুমি তোমার ছেলের বিয়ে দিয়ে দাও তাহলেই বুঝবে ও।আ্যাাাাাায়য়াাা।😭

তন্ময়: কি.?

ঝিল: একবার বিয়ে হলেই বুঝবি!! বিয়ের দিন কত কান্না পায়।

তন্ময়: আরেএ…….

ঝিল: তুই দেখিস তোর বিয়েতে যখন কাদবিঁ আমরা কেউ তোর পাশে এসে বসবোও না।

তন্ময়: আজব। আমি কেন বিয়ের দিন কাদতে যাব?ছোটমা চলো মেয়ের বিয়ের শাড়ি দেখেবে।

দ্বিপালি: আমি আসছি।
নিশি মা আর কাদিঁসনা।পাশাপাশি
শহরে আমাদের বাসা মন চাইলেই আসতে পারবি।

নিশি:আম্মুউউউউউউ




পাগল করে ফেলবে এই মেয়ে। এখন আবার কই গেছে কে যানে? এদিকে যে ওহি কি করছে কে যানে?

(সেদিন ওহি এসেছিলো গাড়ি নিয়ে।আর ওহিই ইচ্ছে করে সেদিন মেরে ফেলার চেষ্টা করেছিলো। এখন ওহিকে থানায় রাখা হয়েছে।আর খুব শিঘ্রই তাকে বিচারের জন্য আদালতে তোলা হবে।).

তন্ময় ঝিল কি এবার আমাদের সাথে এই বাসায়ই থাকবে?

তন্ময়: তুমি কি চাও?

আমেনা: আমি।?
না বুঝে না জেনে এত দিন ঝিলের সাথে ভুল আচারন করেছি।ওকে ক্ষনে ক্ষনে ব্যাথা দিয়েছি।ওর সামনে দাঁড়িয়ে থাকতেও আমার লজ্জা কাজ করে।কিভাবে এমন করলাম আমি? ক্ষমা চাইব কি করে?

তন্ময়: আম্মু।

আমেনা! আমি আর কোন ভুল করতে চাই না।তন্ময় আমি জানি তুই ঝিল কে ভালোবাসিস।ঝিল কে আমি আমার ছেলের বউ করেই ঘরেই রাখতে চাই বাবা।তুই শুধু একবার আমায় ঝিলের সাথে সহজ করে দে।

তন্ময়: এখন না আম্মু। ঝিল এখন সুস্থ নেই আগে ও সুস্থ হোক তারপর ওহির হেস্তনেস্ত করে আমি ওকে আমার বউ করে নেব।শুধু তাই নয়।ঝিনুক ফুফির শত্রুকেও খুজতে হবে আমায়।

আমেনা: ঝিনুক বেচেঁ আছে?

তন্ময়: হ্যাঁ মা।




দুপুরের দিকে পার্লার থেকে কয়েকজন মেয়ে এসে নিশিকে সাজাচ্ছে।ও দিকে নেহা আর ঝিল নিজেদের রুমে পরে পরে ঘুমাচ্ছে।এই দুপুরে দুজনের ঘুমের আবির্ভাব হয়েছে।

দ্বিপ কয়েকবার উঠে দিয়ে গিয়েছে দুজনকে কিন্তু ঘুমের শেষ হচ্ছেনা।

অবশেষে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে খাবার খেতে নিচে এসেছে।

নেহা:আম্মু খাবার দাও।।

দ্বিপালি: এখন এসেছিস খাবার খেতে?
আরেকটু অপেক্ষা কর। বাগানে রান্না করা হচ্ছে।সকালের সব খাবার বাচ্চারা খেয়ে শেষ করে ফেলেছে।

ঝিল:কিহ? এখন আমার কি হবে?

নেহা:কি আবার হবে? থাক তোর জন্য কাল রাতেও না খেয়ে ঘুমাতে হয়েছে।

ঝিল: দেখ তুই সব দোষ আমায় দিবিনা।

তন্ময়: সে না হয় নাই দিলাম এখন এখানে আয় তোদের জন্য আমি আলাদা করে খাবার রেখেছি।

নেহা:ওহ ভাজ্ঞিস ঝিল তুই না খেয়ে ছিলি।না হলে দেখতি আমি একা আর খাবারই পেতাম না।

ঝিল: নে খাওয়া।

খাবার শেষ করে দুজনে বিয়ের জন্য রেডি হচ্ছে।বাকি সবার রেডি হওয়া শেষ। বাগানের সকল জায়গা জুরে লোকজন দিয়ে ভর্তি।

তন্ময়:ঝিল!! সাবধানে থাকবি সবার মাঝে। নেহার সাথে সাথে থাকবি।

নেহা:হাহ ভাইয়া কাকে কি বলছিস? ও শুনবে তোর এই বাড়ন? দেখবি নিচে গিয়েই কেমন লাফালাফি শুরু করে দেয়।

তন্ময়: হ্যাঁ। সেই জন্য আমি আছি না? দেখবি পা ভেংগে রেখে দিয়েছি।

নেহা:আচ্ছা। ঝিল এখন চল।

ঝিল তন্ময়ের দিকে মুখ বাকিয়ে চলে গেছে।।।

তন্ময় কাজের চাপে আর ঝিলের সাথে দেখা করতে পারেনি।আজ বিকালে একবার ঝিল কে নিয়ে হাস্পাতালে গিয়ে দেখা করতে বলেছে।কিন্তু সময় ই হয়ে উঠছে না।

বেশ খানিকক্ষণ পর। নিশির বিয়ে হয়ে গেলে। তন্ময় খাবার খেতে যায়।আর গিয়েই দেখে ঝিল সোফায় বসে কাদছে। আর নেহা ঝিলের পায়ে বরফ লাগাচ্ছে।

তন্ময়: কি হয়েছে ওর?

নেহা: পা নাকি মুচকে গেছে।

তন্ময়:ওর তাই যাবে।কমেছে ব্যাথা?

ঝিল: না।……..এয়ায়ায়ায়ায়া…….

তন্ময়: হুহ। তুই আর বড় হলিনা!!

ঝিল: কথা না বলে আমার পায়ে মালিশ করে দে।

তন্ময়: দিচ্ছি।নেহা যা তো আমার রুম থেকে ক্রিম নিয়ে আয় একটা।

নেহা:হুম।

………………….

তন্ময়: তা কি কাজ করতে গিয়ে পা ভাংগলি?

ঝিল………….

তন্ময়: বল!!

ঝিল: তাহলে বকা দিবি না তো?

তন্ময়: না বল।

ঝিল: আসলে আমি না তোকে পেছন থেকে ধাক্কা দিতে গিয়ে নিজেই উল্টে গেছিলাম।

তন্ময়:ওহ আচ্ছা। তাই তো বলি!! আমার পেছনে অমন ধপাশ কেন শব্দ হয়েছে? তা কি করেছিলাম আমি?

ঝিল: তুই ওই মেয়ে গুলির সাথে অমন হেসে হেসে কথা বলছিলি কেন?

তন্ময়: কেন? বলা যাবে না?

ঝিল: না……….

তুই শুধু আমার ভাই।তুই অন্য মেয়েদের সাথে কথা বলতে পারবি না।আমি যেখানে যাব আমার পাশে পাশে যাবি।আমার সাথেই হেসে হেসে, ধমকে ধমকে কথা বলবি কিন্তু অন্যদের সাথে না।

তন্ময়: ঝিল তুই আমায় ভালোবাসিস? বিয়ে করবি?

বিয়ে????????

চলবে??