অভিমানী প্রেয়সী পর্ব-১০

0
229

#অভিমানী প্রেয়সী
#মিশকাতুল
পর্ব:১০

অবশেষে ঝিল চুল বেধে নেহার সাথে নিচে গেছে।ঝিলের বাবার পাশাপাশি চেয়ারে বসে আছে তন্ময়।

রায়হান: তোমাকে একটা কথা বলার ছিলো।

তন্ময়: জানি কি বলবেন।তবে এটাও জেনে নিন আপনি যা জানতে চাইবেন তা আপনি জানতে পারবেন না।

রায়হান: কিন্তু আমার জানা প্রয়োযোন।

তন্ময়: আমি ঝিল কে ভালোবাসি।দেবেন ঝিল কে আমায়??

রায়হান: তার বিনিময়ে তুমি আমার ভালোবাসা আমাকে দিবে? ফিরিয়ে দিবে তাকে? এত দিন সবাই যা জেনে এসেছে সব ভুল ছিলো। তুমি তো জানতে! হেলেনাকে আমি বিয়ে করিনি।কোন পরিস্থিতির কারনে আমি তাকে বউ হিসাবে ঘরে এনেছিলাম।অন্তত তুমি জানতে আমি তাকে কতটা আগলে রাখতাম।

তন্ময়: জানি। কিন্তু আপনি কি জানতেন? সেদিন হস্পিটালে আমি না গেলে কি হয়ে যেতো? আপনার কি মনে হয় সেই হেলেনা আপনার কারনে বাসা ছেড়েছে? তাহলে ভুল।আমি যেতে বাধ্য করেছিলাম। আমার ঝিল কে বাসা থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার অপরাধে আমি তার হাত ভেংগে দিয়েছি।আমি তার চিকিৎসা করেছি। অত:পর সে চলে গেছে তার নিজ অবস্থানে।আমি আপনাকে আপনার আমানত ফিরিয়ে দেব। কিন্তু তার জন্য আমার চাওয়াটাও পাওনা করে দিন।

রায়হান: কিন্তু এখন তো ঝিলের স্বাভাবিক অবস্থান নেই। আগে ঝিল সুস্থ হয়ে যাক আমি বিয়ের ব্যাবস্থা করে দেব।

তন্ময়: ওকে শশুর মশাই আপনিও ততদিন সিংগেল থাকুন আমার মতো।

রায়হান: তন্ময়!! মুখে লাগাম লাগাও। এই কয়েক বছরে তুমি খুব পাল্টে গেছ।যেন আমাকে সন্মান করতেই ভুলে গেছো।

তন্ময়: কুল। আব্বা জান।আমি আসছি।আপনার মেয়ের আবার পাখনা গজাচ্ছে দেখছেন না কেমন করে ওই ছেলেটার সাথে গল্প করছে।আমাকে যেতে হবে না হলে আমার সর্বনাশ করে ফেলবে এই মেয়ে।

রায়হান: আর হ্যাঁ। শুধু বলে যাও আমার ঝিনুক কোথায় আছে?আর সেদিন কেন মরে যাওয়ার কথা বলেছিলে? তার লাশ কেন দেখাতে চাওনি?

তন্ময়: যে মরেই যায় নি তার লাস কিভাবে দেখাবো? তবে হ্যাঁ আপনার বন্ধু যথেষ্ট চেষ্টা করেছে তাকে শেষ করে দেওয়ার।।


কিরে ঝিল এখানে কি করছিস?

ঝিল: ওই যে এই ভাইটার সাথে কথা বলছিলাম।

তন্ময়: তা কি নিয়ে কথা বলছিলি?

ঝিল: আসলে যানতে চাইছে যে আমি প্রেম করি কিনা? কিন্তু আমি ত……..

তন্ময়: করিস।তুই তো প্রেম করিসই আমার একটা মাত্র গার্লফ্রেন্ড তুই।

নাইম:এয়া??

ঝিল: না……..

তন্ময়: আর কত রাগ করে থাকবি তুই? চল এখন আমি তোকে নিয়ে পাশা পাশি চলবো চল।

ঝিল: নাইম ভাইয়া আসলে কি……..

তন্ময়: কিছু মনে করবেনা কেমন? ও আসলে রাগ করেছে। আমি ওকে নিয়ে যাচ্ছি।

ঝিল: আমি নেহাকে বলে দেব হ্যাঁ। আপনি থাকুন।
পরে কথা হবে।আপনাকে আমার ভালোই লেগেছে এইবার শুধু…………..

তন্ময়: তুই চল আমার সাথে(ভালো লাগা দেখাচ্ছি।টানতে টানতে নিয়ে গেছে ঝিল কে তন্ময়)

ঝিল! কি বলছিলি তখন এসব?

ঝিল: আচ্ছা তুই বল নাইম ভাইয়া দেখতে সুন্দর না?

তন্ময়: না। বাজে দেখতে একটা ছেলে।

ঝিল: কি বলছিস এসব? আমার কাছে তো ভালোই লাগলো।

তন্ময়: তন্মময়ের রাগ আরও যেনো বেড়ে যাচ্ছে এর এমন কথা বার্তা শুনে।
আচ্ছা বল সুন্দর হলে ক করবি?

ঝিল: কি আবার বিয়ে।

তন্ময়: কি বললি?

দ্বিপ : করে তোরা দুজনে এখানে দাঁড়িয়ে কি নিয়ে ঝগড়াঝাটি করছিস? চল সবাই অপেক্ষা করছে এক্ষুনি আবার ছেলের বাসায়ও যেতে হবে।

ঝিল: ওয়াও। এক্ষুনি যাব আমরা?

তন্ময়:এত খুশি হওয়ার কিছুই নেই আমরা সবাই যাব তুই যাবি না।
দ্বিপ :কি বলছিস এসব ও যাবেনা মানে?

তন্ময়:হ্যাঁ । ও যাবেনা।এক্ষুনি আমার সামনে ও বিয়ের কথা বলেছে। আর একটু একা থাকলেই বিয়ে করেই ফেলবে।

দ্বিপ :এত খুশির খবর তোদের বিয়েও দিয়ে দিই।

ঝিল:সত্যি? তাহলে নাইম কে বলি?

দ্বিপ :কেন ওকে বলে কি হবে?

ঝিল:আরে বোকা নাকি তুই?তুই জানিস না?নাইম ভাইয়া বিয়ে করতে চাইছে?

দ্বিপ :আমার ফ্রেন্ড আমি জানবোন?

ঝিল:তাহলে নেহার সাথে বিয়ে দিয়ে দে।

তন্ময়:কিহ??? নেহার সাথে মানে?

ঝিল:উফ তুই তখন থেকে বলছি বুঝতে পারছিস না? নাইম ভাইয়া নেহা কে পছন্দ করে।আর বিয়েও করতে চায় শুধু নিশি আপুর বিয়ের জন্য বলতে পারছিলো না।আর আজকে দ্বিপ কে বলতে চেয়েছিলো। তা নাইম ভাইয়া বললেন যে তাকে নাকি কেউ পছন্দ করবেনা নেহার জন্য।তাই একটু ভালো করে দেখলাম আর কি?

তন্ময়:ওহ আচ্ছা এই ব্যাপার?



নিশির বিয়ের আর মাত্র একটা দিন। সকাল হলেই বাসায় বিয়ের জন্য আমেজ লেগে যাবে।নেহা অনেক খুশি।এইবার তার আর নাইমের বিয়ে নিয়ে আর কারো দ্বিমত নেই।

তন্ময় থানায় গেছে। ঝিলের এক্সিডেন্ট যে করেছিলো আজ তাকে ধরে ফেলা হয়েছে এত দিন তার খবর পাওয়া যাচ্ছিলো না।তন্ময় আর রিস্ক নিতে চায় না যে ঝিল কে মারার চেষ্টা করেছিল সে আবার করতে পারে তাই খুব শিঘ্রই এর শেষ করে দিতে চায়।এমনিতেই ঝিনুক কে যারা মেরে ফেলার চেষ্টা করেছিলো তাদের এখনো খুজে পাওয়া যায় নি।ঝিনুকের রক্তে আর কোন সমস্যা নেই এত দিন তন্ময়ের নাগালেই ছিল তার ফুফি।যেদিন সে আমেরিকা গিয়েছিলো সেদিনই সাথে করে তাকে নিয়ে গিয়েছিলো আর তার বেড এর উপর কাগজে লিখে গিয়েছিল,

আজকের পর সবাই জানবে ঝিনুক বেচে নেই কারন তার মৃত্য কাছে এসে পরে গেছে আর তার লাশ কেউ খুজেও পাবেনা। তাই এ নিয়ে মাথা না ঘামালেই চলবে।

একবার ঝিনুক সুস্থ হলেই যানা যাবে সেদিন কেন ঝিলের বাবাকে কেউ হুমকি দিয়ে ঝিনুক কে মেরে ফেলতে চেয়েছিলো।

অনেক চেষ্টার পর তন্ময় সেদিন ঝিনুককে বাচাতে পারে।সেদিন রায়হান ভেবেছিলো তাকে যারা থ্রেট দিয়েছে তারাই হয়তো ঝিনুক কে তুলে নিয়ে মেরে ফেলেছে।কিন্তু এখন তিনি যানেন ঝিনুক তিন্ময়ের কাছেই আছে।

চলবে??