আয়নায় বন্দী পরী পর্ব-০৪

0
333

#আয়নায়_বন্দী_পরী
#লেখক_আকাশ_মাহমুদ
#পর্ব_৪

আকাশকে সবাই অলৌকিক ভাবে বেঁচে যেতে দেখেছে।কিন্তু তাঁকে কে বাঁচিয়েছে,এবং তার পিছনে কে দাঁড়িয়ে তাঁকে জড়িয়ে ধরে রক্ষা করেছে,সেটা কেউ এই দেখতে পাচ্ছে না।সবাই এখনো চোখ পাকিয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে!এর মধ্যেই আনহা আকাশের গালে কোষে একটা থাপ্পড় লাগিয়ে দেয়।যেই থাপ্পড়”টা খাওয়ার পরে আকাশ নিজের তালগোল হারিয়ে ফেলে।তখনি সেই বড় গাড়ির ড্রাইবার সামনে একটা জায়গায় গাড়ি সাইড করে রেখে আকাশের কাছে আসে।তারপর তাঁকে বলে….

–ভাই আপনি ঠিক আছেন তো?
আমি দূর থেকে আপনাকে ফলো করেছি।আপনার হাবভাব দেখে আমি বুঝে গিয়েছিলাম আপনি খারাপ কিছু করতে চাচ্ছেন।তাই আমি গাড়ি সেভাবে চালাচ্ছিলাম,যাতে করে আপনাকে সাইড দিয়ে চলে যেতে পারি।কিন্তু আপনি হুট করেই আমার একদম গাড়ির সামনে চলে আসেন।যার দরুন আপনার উপরে গাড়ি তুলে দিয়েছি আমি।তবে কথা হচ্ছে আপনি ঠিক আছেন কি করে?এতো বড় গাড়ির নিচে পড়লে তো যে কোনো মানুষ এই শেষ হয়ে যাবে।কিন্তু আপনি সেখানে সক্ষম অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছেন!কি অলৌকিক কান্ড ঘটলো ভাই আপনার সাথে এটা?
.
আকাশ গাড়ির ড্রাইভারের কথার তেমন কোনো উত্তর দেয় না।কারন সে আনহার হাতে থাপ্পড় খেয়ে কিছু বলার অবস্থায় নেই।তাই সে ছোট্ট করে একটা কথা বলে ড্রাইভারকে…

–আমি জানি না কি ভাবে কি হয়েছে!
তবে আমি চললাম এখন।এই বিষয় নিয়ে বেশি কিছু বলার অবস্থা আমার নেই।
.
তারপর আকাশ সেখান থেকে চলে আসে।আর তার পিছনে পিছনে আনহাও আসে।আকাশ যখনি লোকালয় ছেড়ে কিছুটা নির্জন জায়গায় আসে,তখনি আনহা তার কলার চেপে ধরে।আর তাঁকে বলে…

–এই কি সমস্যা তোর হ্যাঁ?
কি জন্য মরতে গিয়েছিলি তুই?

–ইচ্ছে করেছে তাই গিয়েছি।

–তোর ইচ্ছের গুষ্টি মারি আমি।তুই কি ভেবেছিস আমি কিছু জানি না?অনামিকাকে অন্য আরেকজনের সাথে দেখে তোর অন্তর জ্বলেছে।তাই তুই মরতে গেছিস।

–জানেন এই যখন তাহলে আবার জিগ্যেস করেন কেন?

–একশো বার জিগ্যেস করবো।কারন তোর কিছু হলে সব চাইতে বড় ক্ষতিটা আমার হবে।

–আমি মরলে কিসের ক্ষতি হবে আপনার?

–সেসবের উত্তর তোকে পরে দিব।কিন্তু এখন তুই আমাকে এটা বল যে,যে তোকে ছেড়ে দিয়ে অন্যের সাথে ভালো আছে।তুই তার জন্য মরতে যাচ্ছিস কেন?
তোর কথা কি সে একবারো চিন্তা করে?বল করে?
আমার মতে যদি করতো,তাহলে জীবনেও তো তোকে ছেড়ে যেতো না।আর তুই সেই মেয়ের জন্যই নিজের প্রাণ দিয়ে অন্য আরেকজনকে কষ্ট দিতে চাচ্ছিস?

–সে আমার কথা চিন্তা না করলেও আমার মনে সে আছে।তাই তার সাথে কাউকে দেখলে আমার সহ্য হয়না।ইচ্ছে করে নিজের প্রাণ দিয়ে দেই।আর আমি মরলে কষ্ট পাবে,এমন মানুষ এই পৃথিবীতে এখনো পয়দা হয় নাই।আমার মতন হতভাগার জন্য এখনো কারোর মনে এতোটা ভালোবাসা পয়দা হয়নি,যে সে আমার জন্যা কান্না করবে।
.
আকাশ এসব বলতে বলতে চোখের পানি ছেড়ে দেয়।যার কারনে আনহার রাগান্বিত ভাবটা চলে যায়।তাই আনহা আকাশকে আবারো জড়িয়ে ধরে।তারপর তাঁকে বলে…

–আকাশ নিজেকে সামলে নেওয়াটাই বুদ্ধি কাজ তোমার জন্য।কারন সে তোমার নেই আর।আর তাছাড়া তোমার কেউ না থাকলেও আমি আছি।হ্যাঁ হতে পারে আমি পরী।আর আমি এই জমিনের বাসিন্দা নয়।কিন্তু কথা দিচ্ছি কোনোদিন তোমায় ছেড়ে যাবো না।একবার তুমি আমার উপরে বিশ্বাস করে দেখো,যেই সত্তা তোমায় আর আমায় বানিয়েছে,তিনার জমিনের বুকেই দাঁড়িয়ে বলছি কোনোদিন ঠকাবো না তোমায়।আজীবন আগলে রাখবো।
.
আনহা আকাশকে জড়িয়ে ধরায় তার ভিতর থেকে সমস্ত অস্থিরতা মুহূর্তের মধ্যেই কোথায় যেনো গায়েব হয়ে যায়!তবে আনহার বলা গুলো শুনে তার ভিতরে একটা প্রশ্নের উদঘাটন হয়।তাই সে আনহাকে বলে…

–আপনি আমায় ছেড়ে যাবেন না মানে বুঝলাম না!
একটু বুঝিয়ে বলেন তো প্লিজ।আমি আপনার কথার আগামাথা বুঝে উঠতে পারছি না।

–আকাশ তুমি চাইলে তোমার প্রেমিকা বানিয়ে নিতে পারো আমায়।আমি সব সময় তোমার দেখাশোনা করবো।সব সময় তোমার সাথে মিশে থাকবো।আমার এই দেহ অন্য কেউ কোনোদিন স্পর্শ করতে পারবে না।তোমার জন্য দরকার হয় পরী-পালক ত্যাগ করে দিয়ে চলে আসবো আমি।মানুষের মতন সংসার করবো তোমার সাথে।কোনোদিন তোমায় ছেড়ে কোথাও যাবো না।
.
আকাশ আনহার মুখে এসব কথা শুনে বড়সড় একটা শকট খায়!কারন এই দুনিয়ার বুকে তার সামনে এসে কখনো কোনো মানুষ তার জন্য এতোটা ভালোবাসা বা সহানুভূতি দেখায়নি।সে সব সময় অনামিকার কাছে এমনধারা ভালোবাসার এই তালাশ করতো।সে সব সময় অনামিকার কাছে এই ধরনের ভালোবাসাই খুঁজে বেড়াতো।কিন্তু অনামিকা তাঁকে ঠিকিয়েছে।তাই সে অবাক দৃষ্টিতে আনহার দিকে তাকিয়ে আছে।আকাশের অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকা দেখে আনহা তাঁকে প্রশ্ন করে…

–আকাশ একটা সুযোগ কি দিবে তুমি আমায়?
বললাম তো কখনো তোমার হাত আমি ছাড়বো না।

–আনহা দেখো,সরি ভুল করে তুমিটা মুখ থেকে বেরিয়ে গেছে।

–সমস্যা নেই।তুমি আমায় তুমি করেই ডাকো।এতে করে আমি আরো খুশি হবো।

–ঠিক আছে।
কিন্তু আমাকে কয়েকটা কথা তোমার দিতে হবে।

–কি কথা?

–দেখো আসলে মানুষ যখন কোনো মুসিবত পড়ে,তখন সে কারোর সাহায্যের আশা করি।আমিও কিন্তু বর্তমানে মুসিবতে আছি।আর এই অসময়ে তুমি এসে আমার পাশে দাঁড়িয়ে আমাকে সাপোর্ট করছো।তাই আমি তোমার কোলেই আশ্রয় নিব।তবে তুমি কিন্তু আমায় কখনো ছেড়ে যেতে পারবে না।আমার মরণ পর্যন্ত আমার সাথে জুড়ে থাকতে হবে তোমার।

–আকাশ এই ওয়াদা তোমার আমাকে করাতে হবে না।আমি নিজেই তো তোমার কাছে এই ওয়াদা করেছি।
সো নিশ্চিন্তে থাকো তুমি।এই আনহা কখনো তোমার হাত ছাড়বে না।

–সত্যি তো?

–হুম সত্যি…

–যাক এবার তাহলে উঠে দাঁড়াতে পারবো আমি আবার আগের ন্যায়।

–অবশ্যই এবার তুমি উঠে দাঁড়াবে।আর আমি তোমাকে উঠে দাঁড়াতে সাহায্য করবো।তবে এখন তুমি আমাকে কি ভাবে গ্রহণ করবে তাই বলো?আমি কি পরী-পালক ত্যাগ করে দিয়ে তোমার কাছে একেবারে চলে আসবো আমার বর্তমান মানুষের রূপটা নিয়ে?

–নাহ তার কোনো প্রয়োজন নেই।কারন জমিনের মানুষজন অনেক নিকৃষ্ট।তারা সব সময় খালি স্বার্থ খুঁজে বেড়ায় অপর মানুষের কাছ থেকে।তাই তোমার পরী-পালক ত্যাগ করার দরকার নেই।না হয় তুমিও নিকৃষ্ট হয়ে যাবে তাঁদের মতন।

–আকাশ তোমার এই কথার উত্তরে আমারো কিছু বলার ছিলো।

–কি কথা?

–দেখো জমিনের মানুষের মতন আমিও তোমার কাছে স্বার্থের চাহিদা করতে এসেছি।তবে সত্যি বলতে তার তোমাকে আমি ভালোবাসি।কারন বহুকাল আগে বাবার সাথে জমিনে নেমে এসেছিলাম।তখন আমার বয়স বারো কি তেরো।তখন তোমায় স্কুলের ব্যাগ নিয়ে স্কুলে যেতে দেখি।তখনি তোমার উপরে আমার মন বসে যায়।তাই তোমার কাছে ছুটে এসেছি।তবে বিশ্বাস করো স্বার্থটা আমার ভালোবাসার কাছে ফিকে পড়বে।

–সমস্যা নেই,তোমার কোনো চাহিদা বা স্বার্থ থাকলে সেটা আমি পূরণ করার চেষ্টা করবো।কিন্তু তুমি আমাকে কোনোদিন ও ছেড়ে যেতে পারবে না।

–নাহ কোনোদিন ও যাবো না।
আচ্ছা এবার চলো বাসায় যাবে তুমি।আর আজ থেকে আমি আগের চাইতেও বেশি জমিনে নেমে আসবো।
কারন তুমি নামক কোনো একজনের দেখাশোনা যে আমার করতে হবে।

–হুম…

–এবার চলো বাসায়।তোমায় আমি বাসায় পৌঁছে দিয়ে পরী-পালকে যাবো।

–হুম চলো….
আনহার সাথে কথা বলতে বলতে বাসায় চলে আসলাম।বাসার দরজার সামনে থেকে আনহা তার পরী-পালকে ফিরে গেলো।আর আমি দরজায় বাড়ি দিব দরজা খোলার জন্য,তখনি ঘরের ভিতর থেকে চিৎকার চেঁচামেচির শব্দ শুনতে পেলাম।গলার কন্ঠস্বর শুনে বুঝে গেলাম বাবা, মায়ের উপরে চিল্লাচ্ছে।তাই দরজায় আড়ি পেতে শুনলে লাগলাম।অপরপাশে বাবা, মাকে বলছে….

–তোমার ছেলেকে তুমি মাথায় তুলে একদম নষ্ট করে ফেলেছো।আমি যে সারাদিন রোদে পুড়ে এখনো সবার জন্য রোজকার করি,এই জিনিসটা নিয়ে দেখি কারোর কোনো মাথাব্যথা নাই?তোমার ছেলে কি পারে না পড়ালেখার পাশাপাশি কিছু একটা করে সংসারের হাল ধরতে?আর ক’বছর এভাবে আমার রক্ত মাংস চুষে খাবে তোমরা সবাই?

–আকাশের আব্বু প্লিজ আস্তে বলো।আকাশের আসার সময় হয়ে গিয়েছে।ছেলেটা এসে এসব শুনলে অনেক বেশি মনে কষ্ট পাবে।

–ওহ তোমার ছেলের কষ্ট নিয়ে এতো মাথাব্যথা তোমার,কিন্তু আমি যে রোদে পুড়ে কষ্ট করে রোজকার করে এনে তোমাদের খাওয়াই,সেটা নিয়ে কারোর এই কোনো মাথাব্যথা নাই।আসলেই তোমরা মা-ছেলে অনেক নিষ্ঠুর।আমার জন্য কারোর এই কোনো মাথাব্যথা নাই।ঠিক আছে এখন থেকে আমি আমার মতন চিন্তা ভাবনা করে চলবো।কামাই করবো সেই টাকা হিসাব মতন খরচ করবো।বাসায় শুধু বাজারের প্রয়োজন সেটাই করবো।এর বাহিরে আর কাউকে কোনো টাকা পয়সাই আমি দিব না।তোমার ছেলের পড়ার খরচ কি ভাবে চলবে সেটা তুমি আর তোমার ছেলেই জানো।তবে মেয়ের দায়িত্ব সব সময় আমার কাঁধে থাকবে।তাঁকে কখনো পিছু দিব না আমি।কিন্তু তোমার ছেলেকে আগামীতে একটা কানা কড়িও আমি দিব না।দেখি কতোদিন চলতে পারো তোমরা এভাবে।
.
তারপর আকাশের বাবা রেগেমেগে নিজের রুমে চলে যায়।অপরদিকে আকাশ দরজার বাহিরে দাঁড়িয়ে থেকে সব কিছুই শুনে।যার কারনে তার প্রচন্ড পরিমাণে মন খারাপ হয়।কারন তার জন্যই তার বাবার কাছ থেকে তার মা আজকে অনেক কথা শুনেছে।আকাশ অনেকটা সময় দরজার বাহিরে দাঁড়িয়ে থাকে।তারপর নিজেকে শান্ত করে দরজায় বাড়ি দেয়।ভিতর থেকে কেউ আশার শব্দ পেয়ে আকাশের মা এসে দরজা খুলে দেয়।আর আকাশ ঘরের ভিতরে প্রবেশ করে।তখনি আকাশের মা আকাশকে বলে…

–যা গিয়ে ব্যাগ রেখে ফ্রেশ হয়ে খেতে আয়।
.
আকাশ তার মায়ের কথা মতন ফ্রেশ হয়ে নিচে আসে খাওয়ায় জন্য।আকাশের মা তাঁকে খাবার বেড়ে দিচ্ছে।
কিন্তু আকাশের খাওয়ার কোনো মুড নেই।কিছুক্ষণ আগে তার বাবা তার মাকে বলা সমস্ত কথা শুনে আকাশের খাবারের ইচ্ছে মরে গেছে।তবুও সে তার মায়ের কথায় খেতে আরম্ভ করে।তখনি আবার তার মা তাঁকে আস্তে আস্তে করে বলে…

–বাবা এবার একটা কিছু কর না তুই।তুই তো দেখছিস এই সংসারের অবস্থা কেমন।তোর বাবা আজ কত বছর ধরে দিনমজুরি করে সংসার সামলাচ্ছে।এবার তুই একটু সাহায্য কর না বাবা তোর বাবাকে।লোকটা তো আর কয়দিন পর টেনশনে এমনিতেই মারা যাবে।ভাগ্যিস কোনো না কোনো ভাবে তোর বাবা ভাঙ্গাচুরা দোতলা একটা বাড়ি করেছে।না হয়তো আজ আমাদের পথে পথে থাকতে হতো।

–মা কি করবো তুমিই বলো?
এই অবস্থায় কে চাকরি দিবে আমায়?
এখন চাকরি নিতে গেলেই মামা,চাচা ধরে আট দশলাখ টাকা খরচ করতে হয়।বাবা তো আমায় এক টাকাও দিবে না চাকরির জন্য।তাছাড়া এমনিতে টাকা ছাড়া চাকরি করতে গেলে দেখা যাবে সারাদিন কুকুরের মতন খেটে চার-পাঁচ হাজার কামাই করবো,কিন্তু এতে কোনো ফায়দাই হবে না।বরং দেখা যাবে সেসব চাকরির ধান্দায় আমার পড়ালেখাটাই লাটে উঠেছে।

–বাবা এসব চিন্তা-ভাবনা করে বসে থাকলে তো চলবে না।অন্তত কিছু তো একটা কর।যাতে করে তোর বাবার কিছুটা আহসান হয়।

–মা আমি চেষ্টা করছি।
তুমি টেনশন করো না।

–হুম একটা কিছু করার চেষ্টা কর।

–হুম…
তারপর খেয়ে দেয়ে নিজের রুমে এসে মনমরা হয়ে হেলান দিয়ে বসে আছি।কারন সামনে কোনো পথ এই খুঁজে পাচ্ছি না আমি।কিছু একটা যে করবো,তেমন কিছুই চোখে দেখছি না।শুয়ে শুয়ে ভাবছি কি করবো…
তখনি আনহা প্রকট হলো আমার সামনে।সে প্রকট হয়েই আমাকে এসে জড়িয়ে ধরে বলতে লাগলো…

–কি সাহেব মন খারাপ তোমার?
বাবা কি অনেক বেশি কথা শুনিয়েছে আজকে?

–হুম…

–কি বলেছে বাবা?

–কেন তুমি জানো না?
আমার সব কিছুই তো তুমি বলতে পারো।তাহলে বাবা কি বলেছে সেসব তো জানার কথা।

–নাহ তুমি বাদে অন্যে কারোর কথাই আমি জানতে পারবো না।কারন তোমার সাথেই খালি আমি যুক্ত হয়েছি।তাই তোমার টাই জানার ক্ষমতা আছে আমার।
কিন্তু বাকি মানুষের টাও জানতে পারবো,যদি তুমি আমার সামনে বাকি মানুষের কথা চিন্তা করো।কিন্তু বর্তমানে তুমি চিন্তা করছো চাকরি নিয়ে।তাই কি হয়েছে পুরোপুরি ভাবে বলতে পারছি না।সো বলো কি হয়েছে।

–বাবাকে সাহায্য করি না,সংসারের হাল ধরি না।তাই এটা নিয়ে মা’কে অনেক কথা বলছে আজকে বাবা।
তাই মন খারাপ।

–আরেহ তুমি টেনশন করিও না।তোমার একটা কিছুর ব্যবস্থা ঠিকই হয়ে যাবে।তোমাকে আমি মায়াকাল আয়নার সামনে নিয়ে যাবো।তুমি সেটার সামনে গিয়ে কিছু একটার ইচ্ছা পোষণ করিও।তখন সেই ইচ্ছাটা পূরণ হয়ে যাবে তোমার।

–আচ্ছা…
কিন্তু কি করে নিয়ে যাবে?
আর তোমাদের পরী-পালকে গেলে সমস্যা হবে না কোনো?

–নিয়ে যাওয়া নিয়ে চিন্তা নেই।চিন্তা হচ্ছে শুধু পরী-পালকে যাওয়ার পর সমস্যা নিয়ে।কারন কেউ জানতে পারলে অনেক বড় সমস্যা হয়ে যাবে।আর তাছাড়া সেখানে গেলে তুমি নিশ্বাস নিতে পারনা না।তাই কি ভাবে কি করবো ভাবছি।

–তাহলে নিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন নেই।

–নাহ নিয়ে তো আমি তোমায় যাবোই,কিন্তু কি ভাবে সেই রাস্তাটাই খুঁজে বের করতে হবে এখন আমাকে।

–এতো রিক্স নিয়ে কেন তুমি আমায় সেখানে নিয়ে যাবে?

–কারন তোমার বিশ্বাস অর্জন করা প্রয়োজন আমার।অবশ্য বিশ্বাস তো ঠিকই করেছো।কারন না হয়তো আমায় সারাজীবনের জন্য চাইতে না।তবে তোমার আগে পরে তো সেখানে যেতেই হবে।আর তার চাইতে বড় সমস্যা হচ্ছে বর্তমানে তোমার চাকরির বিষয় নিয়ে কোনো একটা সমাধানে আসা।যেটা তুমি মায়াকাল আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চাহিদা করলেই পেয়ে যাবে।

–আচ্ছা তাহলে কি ভাবে কি করা যায় দেখো।

–হুম সব কিছুর ব্যবস্থা আমি করে নিব।তুমি দুইটা দিন একটু ধৈর্য ধরো।

–ঠিক আছে।
আচ্ছা এখন আমার ঘুমানো প্রয়োজন।

–আচ্ছা ঘুমাও।
আমি সেদিনের মতন ঘুম পাড়িয়ে দিচ্ছি তোমাকে।

–আচ্ছা..
আনহা আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে।
আর আমি চোখ বন্ধ করে রেখেছি।হটাৎ এই অনুভব করলাম আমি হাওয়ায় ভাসছি।সাথে সাথে চোখ মেলে তাকালাম।চোখ মেলে তাকাতেই দেখি আনহা আমায় হাওয়ায় উড়িয়ে কোথায় যেনো নিয়ে যাচ্ছে!যেটা দেখে কলিজাটা ভয়ানক ভাবে একটা মোচড় দিলো!কিন্তু আমি কিছু বলার মতন সাহস করতে পারছি না আনহাকে!তাই চুপচাপ সেভাবেই রইলাম।কিছুক্ষণ পর আনহা আমার উড়িয়ে নিয়ে সাগরের মাঝখানে একটা বিশাল দ্বীপের মাঝে ছেড়ে দিলো।সেখানে ছেড়ে দিতেই আমার নিশ্বাস ভারী হয়ে গেলো।আমি আর নিশ্বাস নিতে পারছি না।যার কারনে হাত-পা ছুটাছুটি করতে আরম্ভ করলাম।মনে হচ্ছে যেনো এখুনি আমার প্রাণটা বের হয়ে যাবে।তখনি আনহা তার ঠোঁট জোড়া আমার ঠোঁটের সাথে মিশিয়ে দিয়ে পাম্প করতে লাগলো….

চলবে….

গল্পের ভুল ত্রুটি গুলো ক্ষমার নজরে দেখবেন।