আয়নায় বন্দী পরী পর্ব-০৬

0
314

#আয়নায়_বন্দী_পরী
#লেখক_আকাশ_মাহমুদ
#পর্ব_৬

আনহা আকাশের দিকে অগ্নি দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।কারন আকাশ অনামিকার কথা চিন্তা করায় আনহার জেলাসি হচ্ছে।অন্যদিকে আকাশের কল্পনাতেও নেই যে আনহা এবার তাঁকে আস্তো গিলে খাওয়ার প্লান করছে।তখনি আনহা আকাশের দুই গালে কোষে দুইটা থাপ্পড় লাগিয়ে দেয়।আনহার হাতে থাপ্পড় খেয়ে আকাশের হুঁশ জায়গা মতন চলে আসে।তাই সে আনহাকে জিগ্যেস করে…

–কি হলো মারলে কেন তুমি আমায়?

–মারবো না তো কি করবো?তুই আবারো সেই অনামিকার কথা কেন চিন্তা করছিস?

–আসলে নিজের অজান্তেই অনামিকার কথা মাথায় চলে আসে।

–তার মানে তুই এখনো নিজের অজান্তেই সেই মেয়েকে ভালোবাসিস?

–নাহ আনহা এমনটা নয়।আমি বর্তমানে তোমাকে নিয়েই আমার মনের সমস্ত কল্পনা জল্পনা করি।কিন্তু তার দেওয়া আঘাত টা মাঝেমধ্যে মনের ভিতরে নাড়া দিয়ে উঠে।তাই নিজের অজান্তেই সেসব কথা মনে পড়ে যায়।যার দরুন সে আমার কল্পনায় চলে আসে।

–দেখ আকাশ আমি চাই তুই সেই মেয়ের কথা একদম চিরতরে ভাবা বাদ দিয়ে দে।কারন সে তার নিজের স্বার্থের জন্য তোকে ছেড়ে দিয়ে চলে গেছে।কিন্তু আমি পরী-হয়েও তোর সঙ্গ দিচ্ছি বর্তমানে।আমার সঙ্গ দেওয়ার পরেও যদি তুই তাঁকে নিয়ে কল্পনা জল্পনা করিস,তাহলে আমি চিরতরে পরী-পালকে চলে যাবো।জমিনে আর কখনোই নামবো না।

–আনহা আমার ভুল হয়ে গেছে।প্লিজ এতো অভিমান করে না।

–আকাশ মানুষ থেকেও পরীদের অভিমান অনেক বেশি হয়।পরীরা যদি একবার কারোর উপরে অভিমান করে,তাহলে সে এই জন্মে আর ক্ষমা পায় না।আর বর্তমানে তোর আচরণে আমি অনেক কষ্ট পেয়েছি।তাই তোর উপরে আমার অভিমান হচ্ছে খুব।

–তার মানে কি তুমি আমায় ছেড়ে চলে যাবে?

–নাহ সে এখন যাবো না।কারন আমার রাগ অভিমান আমি তোর সাথে তুই তুকারি করে কমাবার প্রয়াস করছি।কিন্তু এই তুই শব্দটা ব্যবহার করে বেশিদিন হয়তো নিজের ক্রোধকে শান্ত করতে পারবো না।তাই প্লিজ আগামীতে ঐ মেয়ের কথা আর মনে আনবে না।
কারন বেশিদিন এক জিনিস দিয়ে কিন্তু কারোর ক্রোধ দমন হয় না।

–ঠিক আছে আনবো না।কিন্তু একটা কথা বলো আমায়…

–কি কথা?

–নিজের অনিচ্ছায় যদি তাঁকে নিয়ে চিন্তা ভাবনা আসে তাহলে কি করবো?কারন সে তো আমার অতীত।তার কথা তো মনে পড়বেই কোনো না কোনো কারনে।

–তাহলে সঙ্গে সঙ্গে আমাকে জানিয়ে দিবি তুই।

–ঠিক আছে।

–আচ্ছা এবার সরি…

–ওমাহ হটাৎ সরি কেন আবার?

–কারন একেতো তোমায় মেরেছি,তার উপরে তুই তুকারিও করেছি।তাই সরি।

–এই একদম সরি টরি বলবে না।কারন তোমার জেলাসি হওয়া স্বাভাবিক ব্যবহার।সো সরি টরির দরকার নেই।আর তুমি এখন এখান থেকে পরী-পালকে ফিরে যাও।পরে আবার এসো।

–সরি টরি না হয় নাই বললাম,কিন্তু পরী-পালকে ফিরে যাবো কেন?

–কারন তুমি আমার স্পর্শে এসেছো।সো তুমি এখন ফিরে না গেলে দারোয়ানরা সমস্যা করবে।

–আরেহ বোকা সেই বিষয় নিয়ে আপাতত ভয় পাওয়ার কিছুই নেই।কারন তোমার শরীরে এখন সুপারন্যাচারাল পাওয়া আছে।যার দরুন পরী-পালকে আর কম্পন হবে না।

–সুপারন্যাচারাল পাওয়ার মানে বুঝলাম না!

–মানে হলো আমার সোল তোমার শরীরে যাওয়ার সাথে সাথে আমার সুপারন্যাচারাল শক্তি তোমার শরীরে চলে গিয়েছে।কিন্তু তুমি পরবর্তীতে আমাকে আমার সোল ফিরিয়ে দিলেও আমার অলৌকিক শক্তির অনেক কিছুই তোমার মাঝে প্রকট হয়েছে।যার দরুন তুমি মানুষ থেকে অনেকটা আলাদা হয়ে গিয়েছো।এবং তোমার মাঝে নর্মাল মানুষ থেকেও অনেক বেশি শক্তি এসে গেছে।তাই আপাতত এখন আর কম্পন হবে না।

–কি বলো এসব….

–হুম সত্যিই বলছি।কারন তোমায় বুকের উপরে বসার পরেও পরী-পালকে কোনো ধরনের কম্পন হয়নি।তাই আমার আসল রহস্য আর বুঝতে বাকি নেই।

–আনহার কথা শুনে অবাক হয়ে গেলাম!
তার উপরে সত্যি বলতে নিজের শরীরটাও নিজের কাছে কেমন যেনো অদ্ভুত রকমের লাগছে!আনহার শরীর থেকে সুপারন্যাচারাল পাওয়ার যে আমার শরীরের মধ্যে কনভার্ট হয়েছে,তা আমি নিজেই ফিল করতে পারছি।আচ্ছা আনহা আমার মধ্যে কি কি সুপারন্যাচারাল পাওয়ার এসেছে?

–আকাশ তা আমি বলতে পারবো না!কারন তুমি মানুষ আর আমি পরী।আমরা অলৌকিক ক্ষমতা নিয়েই জন্মাই।কিন্তু তোমরা মানুষ জাতি সাধারণ ভাবেই জন্ম নাও।তোমাদের মধ্যে কোনো অলৌকিক ক্ষমতা থাকে না।কিন্তু এখন আমার সোল কিছু সময় তোমার শরীরে থাকার ফলে কি ধরনের অলৌকিক শক্তির উৎপত্তি হয়েছে,তা আমার নিজের ও অজানা।তবে এটা বলতে পারি তুমি বাকি মানুষদের থেকে আলাদা হয়ে গেছো।এবং তোমার মধ্যে ভিন্ন এক শক্তির উৎপত্তি হবে।
তবে সেই ভিন্ন শক্তিটা কি,তা আমি বলতে পারি না।

–কিহহহ!

–হুম।
আচ্ছা শুনো আমি এখন চলে যাচ্ছি।
কারন আজ তোমার উপরে অনেক ধকল গেছে।তাই তোমার ঘুমের প্রয়োজন।তাই তুমি ঘুমিয়ে পড়ো।
আর হ্যাঁ শক্তির প্রয়োগ কিন্তু জায়গা দেখে করবে।না হয় সমস্যার মুখে পড়বে তুমি।

–ঠিক আছে..

–এবার আমি চললাম….

–হুম…
তারপর আনহা চলে গেলো।আর আমি আনহাকে নিয়ে ভাবতে ভাবতে ঘুমের রাজ্যে হারিয়ে গেলাম।
.
আকাশ ঘুমিয়ে গেছে।অপরদিকে আনহা পরী-পালকে গিয়ে মায়াকাল আয়নায় সামনে দাঁড়িয়ে নিজের চাহিদা টা করে….

–হে মায়াকাল আয়না,কেউ আমায় সারাজীবন পাওয়ার আশায় নিজের চাহিদা পোষণ
করে গেছে তোমার সামনে।তুমি সেই মানুষটার চাহিদা কখনোই পূরণ করবে না।যদি কোনোদিন আমি সেই মানুষটাকে নিজ থেকে আপন করতে চাই,তখনিই যেনো তার চাওয়া পাওয়া পূরণ হয়।এছাড়া যেনো সেই মানুষটা আমাকে কখনোই আমাকে আপন করতে না পারে।তুমি সেই মানুষটার চাহিদা আপাতত ঝুলিয়ে রেখে দাও।
.
আনহার চাহিদা মায়াকাল আয়না গ্রহণ করে নেয়।
তারপর আনহা রাজ দরবারে চলে যায়।আনহা জমিনে আকাশকে বলে এসেছে,সে মায়াকাল আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে তার যেই একটা চাহিদা বাকি আছে,সেটা দিয়ে সে আকাশের জন্য চাকরির চাহিদা করবে।কিন্তু সে পরী-পালকে এসে আকাশের চাহিদা টাকেই তুচ্ছতাচ্ছিল্য বানিয়ে দিয়েছে।যার দরুন আকাশের চাহিদা কখনোই গ্রহণ যোগ্যতা পাবে না।যদি কখনো আনহা নিজ থেকে আকাশকে চায়,সেদিন এই আকাশের চাহিদা গ্রহণ যোগ্যতা পাবে।তবে সেটা আকাশের চাহিদা নয়।সেটা হবে আনহার চাহিদা।কারন আনহা আকাশের চাহিদা পরিবর্তন করে সেখানে নিজের চাহিদা পোষণ করেছে।তাই সে চাহিদা করলে তার চাহিদাটাই পূরণ হবে।অন্যদিকে আকাশ শান্তির ঘুম ঘুমাচ্ছে।তার কল্পনাতেও নেই,যে আনহা তার সমস্ত আশা-আকাঙ্ক্ষা শেষ করে দিয়েছে।ভোর সকালের আকাশের ঘুম ভাঙ্গে।সে ঘুম থেকে উঠে রেডি হয়ে কলেজের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়।তখনি মাঝপথে কয়েকজন লোক মুখে কালো কাপড় বেঁধে আকাশের পথ আঁটকে তাঁকে জোরজবরদস্তি গাড়িতে তুলে অচেনা একটা জায়গায় নিয়ে আসে।তারপর তাঁকে গাড়ি থেকে নামিয়ে একটা ঘরের মধ্যে আনে।যেই ঘরটা গ্লাস দিয়ে চারপাশ থেকে ডিজাইন করা।যার কোনো দেওয়াল নাই।চারপাশে লাগানো গ্লাস গুলাই ঘরের দেওয়াল।পরিশেষে তারা আকাশকে একটা চেয়ারের সাথে শক্ত শিকল দিয়ে বেঁধে তার মধ্যে তালা লাগিয়ে দেয়।আকাশ তাঁদের এইরূপ কর্মকান্ড দেখে থতমত খেয়ে যায়!সে লোক গুলোর দিকে অবাক চোখে তাকিয়ে আছে!তখনি সেই ঘরের মধ্যে সুট বুট পড়া একটা লোক প্রবেশ করে।আকাশ তাঁকে দেখে জিগ্যেস করে…

–আপনারা কারা।আর আপনাকে আমাকে এখানে কেন উঠিয়ে এনেছেন?আমি আপনাদের কি ক্ষতি করেছি?

–সমস্ত কিছুর উত্তর তুমি পেয়ে যাবে।তার আগে একটা পরিক্ষা দিতে হবে তোমার।

–কেমন পরিক্ষা?

–ধৈর্য ধরো কয়েক মিনিটের মধ্যেই দেখতে পাবে।
.
তারপর লোকটা একজনকে বলে চতুর্পাশ থেকে পানির কল ছেড়ে দিতে।লোকটার কথা মতন একজন গিয়ে অনেক কয়টা পানির কল ছেড়ে দেয়।যেটা দেখে আকাশের মাথা আরো ঘোলাটে হতে থাকে!তাই সে লোকটাকে আবারো জিগ্যেস করে….

–এই আপনি কি করতে চাচ্ছেন আমার সাথে?

–অনেক কিছুই করতে চাচ্ছি।এ যে নাও চাবির তোড়া।
এখানে সত্তুর খানা চাবি আছে।তোমার হাতে সময় আছে খালি এক মিনিট।এই এক মিনিটের মধ্যে এই চাবিরতোড়া থেকে আসল চাবি বের করে সেটা দিয়ে তোমার হাতে তালা খুলে রুম থেকে বের হতে হবে।না হয় এক মিনিটের মধ্যেই এই রূমটা পানি দ্বারা ভরপুর হয়ে যাবে।আর তুমি পানিতে ডুবে মরবে।সো তোমার টাইম শুরু হচ্ছে এখন থেকে…
.
আকাশের হাতে চাবির তোড়াটা দিয়ে সবাই রুম থেকে বের হয়ে অন্যরুমে চলে যায়।সবাই অন্যরুম থেকে আকাশকে ফলো করছে।আর পানি আস্তে আস্তে রুমের মধ্যে পুড়তে আরম্ভ করছে।কিন্তু আকাশ এখনো চুপচাপ বসে আছে।তাই সেই সুট বুট পড়া লোকটা অপরপাশের রুম থেকে আকাশের রুমে লাগানো স্পিকার দ্বারা তাঁকে সতর্ক করে বলে…

–আকাশ সময় নষ্ট না করে নিজের প্রাণ বাঁচানোর প্রয়াস করো।না হয়তো সত্যিই তুমি মারা পড়বে।তোমায় কিন্তু কেউ বাঁচাতে আসবে না।
.
আকাশ লোকটার কথা শুনে এবার পুরোপুরি ঘাবড়ে যায়!তার উপরে পানি তার হাঁটু পর্যন্ত চলে এসেছে।তাই সে তাড়াতাড়ি করে চাবি দিয়ে তালা খুলতে আরম্ভ করে।সে প্রায় পনেরো থেকে আঠারোটা চাবি দিয়ে তালা খোলার ট্রাই করে।কিন্তু সে সফল হয়না তালা খুলায়।এর মধ্যে পানি তার বুক পর্যন্ত চলে এসেছে।সে আবারো ট্রাই করতে আরম্ভ করে।এবারো সে অসফল হয় তালা খোলায়।যার কারনে তার প্রচন্ড রাগ উঠে যায়।তাই সে শরীরের সমস্ত শক্তি দিয়ে শিকল টাকে সজোড়ে এক টান মারে।যার ফলে তালা অটো হয়ে নিচে পড়ে যায়।এবং শিকলের প্রতিটা পার্ট তার জয়েন্ট থেকে ছুটে যায়।আর রুমের মধ্যে বিশাল বড় একটা বিস্ফোরণ হয়ে পানি বন্ধ হয়ে যায়।গ্লাসের অপরপাশ থেকে লোকটা আকাশের এইরূপ কর্মকান্ড দেখে তাজ্জব হয়ে যায়!তাই সে চটজলদি আকাশের কাছে আসে।আকাশ এবার তার উপরেও ক্ষেপে যায়।তাই সে লোকটার দিকে এগোতে থাকে রাগান্বিত ভাব নিয়ে।তখনি লোকটা কোমর থেকে পিস্তল বের করে আকাশের দিকে তাক করে ধরে।যা দেখে আকাশ জায়গায় মধ্যে দাঁড়িয়ে যায়।সে আর সামনের দিকে অগ্রসর হয় না।কারন প্রাণ হারানোর ভয় সবারি আছে।তখনি লোকটা পিস্তল নিচে নামিয়ে আকাশকে জিগ্যেস করে…

–আকাশ তুমি এটা করলে কি করে?
এতো মোটা শিকল তুমি টান দিয়ে সব কয়টা কড়া জয়েন্ট থেকে আলাদা করে ফেলছো।আর তাছাড়া চেয়ারটাও ভেঙ্গে ফেলেছো তুমি।

–সেসব জেনে আপনার লাভ নাই।আপনি আমায় কেনো উঠিয়ে এনেছেন সেটার উত্তর দিন।আর আপনি আমার নাম জানলেন কি করে সেটার বিষয়েও খোলাসা করেন।

–দেখো এতো উত্তেজিত হওয়ার কিছুই নেই।তুমি খালি আমার প্রশ্নের উত্তর দাও।তারপর তোমার সব কয়টা কথার উত্তর আমি দিচ্ছি।আকাশ তুমি কি ভাবে এমনটা করেছো?

–কি ভাবে করবো আবার?নিজের শক্তি দিয়ে করেছি।

–আকাশ আমি সত্যিই বিশ্বাস করতে পারছিনা,যে তুমি নিজের শরীরের শক্তি দিয়ে এমনটা করেছো।

–বিশ্বাস না হলে কিছুই করার নেই আমার।সো আপনি এবার আমার প্রশ্নের উত্তর দিন।
.
লোকটা কিছুটা সময় আকাশের দিকে অদ্ভুত ভাবে তাকিয়ে থাকে!কিছুক্ষণ এভাবে চেয়ে থেকে নিজেকে শান্ত করে আকাশকে বলে….

–দেখো আমি কে সেই পরিচয় আমি তোমাকে দিব না।তবে তোমাকে এখানে উঠিয়ে এনেছি কেন,সেটা ক্লিয়ার করছি।আসলে দেখো আমরা প্রায় এভাবে অনেকে ছেলেকে টার্গেট করে উঠিয়ে এনে তাঁদের মেধা নির্বাচন করি।কোনো ছেলে যদি আমাদের পরিক্ষায় পাশ হয়,তাহলে তার একটা স্বপ্ন আমরা পূরণ করি।তবে যদি পাশ না করে,তাহলেও তাঁকে আমরা মারি না।কিন্তু শুরুতে মৃত্যুর ভয় অবশ্যই দেখাই।তাই সেই ভাবে আমার লোকজন তোমাকে অনেক কয়দিন ধরে ফলো করে তোমার বিষয়ে ইনফরমেশন নিয়েছে।সব কিছুর পরিশেষে জানতে পারলাম তোমার পরিবার চলে তোমার বাবার দিনমজুরি টাকা দিয়ে।তাই তোমাকে উঠিয়ে এনেছি আমরা এখানে।যাতে করে তুমি আমাদের পরিক্ষায় পাশ করে কিছু একটা করতে পারো।কিন্তু তুমি আমাদের পরিক্ষায় শুধু পাশ এই করোনি,বরং আমাদেরকে তুমি বেশ অবাক ও করে দিয়েছো।সো তোমার একটা চাহিদা করো তুমি….

–লোকটার কথা শুনে বেশ তাজ্জব হলাম!এই ভাবে মেধা তালিকা নির্বাচন করতে জীবনের প্রথম কাউকে দেখতে পেলাম!কি আজব মানুষরে বাবা!লোকটাকে নিয়ে ভাবছিলাম,তখনি সে আবার প্রশ্ন করলো…

–কি হলো কোনো চাহিদা করবে না তুমি?

–হুম করবো।আমার একটা ভালো চাকরির দরকার।কারন আমার পরিবারের অবস্থা বেশি একটা ভালো নয়।সেটা তো আপনি জানেন এই।সো একটা চাকরি হলে আমার জন্য ভালো হয়।

–ঠিক আছে তোমার চাকরি হয়ে গেছে।এই যে নাও আমার কার্ড।যদিও কার্ডে আমার পরিচিয় নেই,তবে এই কার্ডটা দিয়ে তুমি যেখানে ইচ্ছে জব নিতে পারবে।কিন্তু আমার মতে তুমি নাসির ইন্ডাস্ট্রিতে গেলে তোমার অনেক ভালো একটা জব মিলবে।তোমার সেলারিও পঞ্চাশ হাজারের মতন পড়বে।

–ঠিক আছে তাহলে আমি গিয়ে দেখা করবো।

–গিয়ে দেখা করবে না,এখুনি গিয়ে দেখা করে এসো।
আমার লোকজন তোমাকে নাসির ইন্ডাস্ট্রির সামনে পর্যন্ত ছেড়ে দিয়ে আসবে।

–ঠিক আছে।
তারপর সেই সুট বুট পড়া লোকটার আদেশ মতন দুইজন আমাকে নাসির ইন্ডাস্ট্রির সামনে পর্যন্ত এগিয়ে দিয়ে গেলো।তারপর আমি ভিতরে ঢুকতেই দুজন মানুষ এসে নাসির ইন্ডাস্ট্রির চেয়ারম্যানের কাছে নিয়ে গেলো।
চেয়ারম্যান আমাকে দেখে জিগ্যেস করলো….

–তোমার কাগজটা দেখাও….

–আমি অবাক হয়ে পকেট থেকে কাগজটা বের করে চেয়ারম্যানের দিকে এগিয়ে দিলাম!উনি কাগজটা নিয়েই আমাকে বলললো,আগামীকাল সময় করে উনার সাথে এসে দেখা করতে।আমি উনার কথায় সম্মতি জানিয়ে সম্মানের সহিত বিদায় নিয়ে বেরিয়ে এলাম।আজ আও কলেজ যাওয়া হবে না।তাই বাসার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়েছি।বাসায় যেতে যেতে ভাবছি,এই অদ্ভুত ধরনের সমস্ত কার্যকালাপ হয়তো আনহার জন্যই হয়েছে।মেয়েটা হয়তো আমার জবের জন্য মায়াকাল আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চাহিদা করেছে।তাই হয়তো মিরাক্কেল ভাবে আমার চাকরিটা হয়ে গেছে।এসব নিয়ে ভাবতে ভাবতে রিক্সায় করে বাসায় যাচ্ছিলাম,তখনি আনহা আমার সামনে প্রকট হয়ে ইশারা করলো গাড়ি থেকে নেমে যেতে।আমি আনহার ইশারা মতন গাড়ি থেকে নেমে রাস্তার একপাশে দাঁড়িয়ে পড়লাম।রিক্সা ওয়ালা ভাড়া নিয়ে চলে গেলো।রিক্সা ওয়ালা যেতেই আনহাকে জিগ্যেস করলাম কি হয়েছে আনহা?

–তুমি কোথা থেকে এসেছো সেটা বলো তো?

–কেন তুমি জানো না?
আমার সব কিছু সম্পর্কে না তুমি অবগত হয়ে যাও নিজের অলৌকিক শক্তির দ্বারায়।

–আমি জানলেও তুমি আবার বলো,যে তুমি কোথা থেকে এসেছো।

–আনহা আমার জব হয়ে গিয়েছে।তুমি নিশ্চয় গতকাল মায়াকল আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে আমার জন্য চাহিদা করেছো তাই না?
.
আকাশের কথা শুনে আনহা পুরোপুরি তাজ্জব হয়ে যায়!কারন সে তো আকাশের জন্য চাকরির চাহিদা করেনি!তার উপরে কেন জানি সে এখন আকাশের মন পড়তে পারছে না!আনহা বড় সড় একটা শকট খায়!আর তার সাথে সাথে এটাও বুঝে যায়,যে আকাশ হয়তো তার থেকেও বেশি অলৌকিক ক্ষমতার অধিকারী হয়ে গেছে!তাই সে আকাশকে রেখে চটজলদি জমিন থেকে গায়েব হয়ে পরী-পালকে চলে যায়…..

চলবে……

গল্পের ভুল ত্রুটি গুলো ক্ষমার নজরে দেখবেন।