আয়নায় বন্দী পরী পর্ব-১৪

0
250

#আয়নায়_বন্দী_পরী
#লেখক_আকাশ_মাহমুদ
#পর্ব_১৪

আনহার জাদুই লাঠির আঘাতে রূপন্তী ব্যথা পেয়ে চিৎকার দিয়ে কান্না করতে আরম্ভ করে।রূপন্তীর কান্নার আওয়াজ শুনে আকাশ থতমত খেয়ে বসা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে যায়!তখনি সে দেখতে পায় আনহা হিংস্র পশুর মতন তাঁদের দুজনের দিকে তাকিয়ে আছে!
এবং তার হাতের জাদুই লাঠিটা আবারো রূপন্তীর গায়ে ছুঁড়ে মারার প্ল্যান করছে।যেটা দেখে আকাশ রূপন্তীকে রেখে তাড়াতাড়ি আনহার কাছে আসে।আনহা তো রেগেমেগে আগুন হয়ে আছে।আকাশ আনহার কাছে এসে তাঁকে শান্ত করার চেষ্টা করছে।কিন্তু আনহাকে সে কোনো মতেই শান্ত করতে পারছে না।আনহা তার রাগের প্রতিক্রিয়া দেখাতে ব্যস্ত।সে তার জাদুই লাঠিটা আবারো ঘুরিয়ে রূপন্তীর দিকে ছুঁড়ে মারবে,ঠিক সেই মূহুর্তে আকাশ তাঁকে এমনটা করতে বাঁধা দেওয়ার জন্য খপ করে আনহাকে জড়িয়ে ধরে।এবং রূপন্তীকে বলে…

–এই রূপন্তী তুমি তাড়াতাড়ি এখান থেকে চলে যাও।আমি আনহাকে দেখছি।
.
আকাশের কথায় রূপন্তী কান্না করতে করতে উড়ে সেখান থেকে চলে যায়।অপরদিকে আনহা আকাশকে অলৌকিক শক্তি মাধ্যমে ঝাঁকি দিয়ে দূরে সরিয়ে দেয়।এবং উড়াল মেরে রূপন্তীকে গিয়ে পাকড়াও করে।পরে রূপন্তীকে পাকড়াও করে টেনে হেঁচড়ে নিচে নামিয়ে দ্বীপের পাথরের মধ্যে সজোড়ে ছুঁড়ে ফেলে।যেটাতে রূপন্তী আরো বেশি ব্যথা পায়।এবং কান্নার মাত্রা আরো বাড়িয়ে দেয়।রূপন্তীর কান্নায় আনহার মন কোনো মতেই গলছে না।সে আজকে রূপন্তীকে শেষ করেই শান্ত হবে এমন মনোভাব নিয়ে আসে সে।তার জন্য আবারো তার হাতের জাদুই লাঠিটাকে ছুরির আকৃতিতে কনভার্ট পরে।তারপর সেটা দিয়ে যখনি রূপন্তীকে মারতে যাবে,তখনি আকাশ পিছন থেকে দৌড়ে গিয়ে আবারো আনহাকে জড়িয়ে ধরে।যার ফলে আনহার কার্যক্রম বিফল হয়।তাই সে আকাশের উপরে চেঁচাতে শুরু করে…

–এই জমিনের নরাধম তুই ছাড় আমাকে।আজকে এই শয়তান পূজারীকে জন্মের মতন শিক্ষা দিয়ে ছাড়বো আমি।ওর কত্তবড় সাহস,যে সে আমার জিনিসের উপরে নজর দেয়।

–আনহা প্লিজ তুমি শান্ত হও।সে তোমার জিনিসের উপরে নজর দেয়নি।তোমার জিনিস তোমারই আছে।

–এই নরাধম চুপ একদম।তুই ওর হয়ে আর একটা কথাও যদি বলতে আসিস,তাহলে তোর খবর আছে।

–আচ্ছা আর বলবো না যাও।কিন্তু প্লিজ তুমি শান্ত হও।

–না আমি শান্ত হবো না।আগে এই মেয়ের সমাধি করবো,পরেই আমি শান্ত হবো।সো তুই আমাকে ছাড়।

–নাহ আমি তোমায় ছাড়বো না।তুমি যতো যাই বলো না কেন,আমি তোমাকে এবার ছাড়বোই না।

–আকাশ আমার কিন্তু জঘন্য পরিমাণে রাগ উঠছে বিশ্বাস কর।এই মেয়ে আমার ভালোবাসার উপরে নিজের ভাগ বসাতে এসেছে।এই মেয়ে আমার প্রিয় মানুষের শরীরে স্পর্শ করেছে।এই মেয়েকে শেষ না করা পর্যন্ত আমার এই ক্রোধ জীবনেও শান্ত হবে না।

–আরেহ আনহা আমি বললাম তো সে এমন কোনো কিছুই করতে আসেনি।আর সে তোমার জিনিসে স্পর্শ ও করেনি।আমি তোমার ছিলাম,তোমার আছি,তোমার এই থাকবো।নাও তুমি আমাকে স্পর্শ করো।

–আমিই তো তোকে স্পর্শ করবো।কিন্তু সেটা পরে।
এখন তুই আমাকে ছাড়।আমি এই মেয়েকে শেষ করবো।এটাই আমার ফাইনাল কথা।

–আনহা এমনটা আমি তোমাকে করতে দিব না।
তোমাকে আঁটকে রাখবো আমি।

–কোনদিন ও তুই আমাকে আঁটকে রাখতে পারবি না।
আমি শক্তির প্রয়োগ করে তোর থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিব।

–আনহা তুমি সে যাই করো না কেন,তুমি আমার থেকে ছুটতে পারবে না।কারন তোমায় কি ভাবে জড়িয়ে ধরেছি আমি,সেটা তুমি একবার লক্ষ্য করো।দেখো ভালোবাসা দিয়ে তোমাকে নিজের শরীরের সাথে একদম লেপ্টে ধরেছি।সো তুমি কখনোই ছাড়া পাবে না আমার থেকে।হি হি…

–এই ছেলে একদম নেকামো করবি না।আমার কিন্তু রাগ উঠছে অনেক বেশি।ভালো চাস তো আমাকে ছেড়ে দে…

–আনহার রাগ কোনো মতেই কমাতে পারছি না।
তবে আমি জানি এবার সে আমার থেকে ছুটতে পারবে না।কারন তার শরীর যে ভাবে নিজের শরীরের সাথে লেপ্টে ধরেছি,এভাবে জড়িয়ে ধরলে কারোর পক্ষেই সম্ভব না মুক্তি পাওয়া।তবে আনহার কাছে যেহেতু সুপারন্যাচারাল পাওয়ার আছে,তাই সে আমার থেকে হয়তো নিজেকে মুক্ত করে নিতে পারে।তাই তাঁকে কৌশলে শান্ত করার প্ল্যান করলাম।প্রথম কৌশল টা কিছুটা কাজে লেগেছে।তার শরীর আমার শরীরের সাথে লেপ্টে ধরেছি,এটা তাঁকে মনে করিয়ে দিতেই কিছুটা শান্ত হয়ে গেছে সে।তবে পুরোপুরি শান্ত হয়নি।তাই এবার অন্য আরেকটা কৌশল অবলম্বন করলাম।
আনহাকে এক হাত দিয়ে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে তার ঠোঁটের সাথে নিজের ঠোঁট মিশিয়ে দিলাম।আর অপর হাত দিয়ে রূপন্তীকে ইশারা করে বললাম এই সুযোগে চলে যেতে।রূপন্তী আমার হাতে ইশারায় চলে গেলো।রূপন্তী চলে যাওয়ার কিছুক্ষণ পর আনহাকে ছেড়ে দিলাম।তখনি সে আমায় বলে উঠলো…

–দেখ আকাশ এবার তো তুই আমাকে দমিয়ে দিয়েছিস,কিন্তু পরবর্তীতে যদি তোর দিকে কেউ চোখ তুলেও তাকায়,তাহলে তার চোখ আমি উপড়ে ফেলবো।কারন তুই খালি আমার।তোর শরীর থেকে নিয়ে শুরু করে সমস্ত কিছুতেই শুধু আমি অধিকার খাটাবো।আমার এই অধিকারের মধ্যে এসে যদি কেউ নিজের বা’হাত বাটে,তাহলে কিন্তু তার খবর আছে।তোর জন্য আমি পুরো দুনিয়ার সাথে লড়াই করতে রাজি।কিন্তু তোর ভাগ আমি কাউকে দিতে রাজি না।দরকার পড়লে সমস্ত কিছু তসনস হয়ে যাবে,কিন্তু তুই খালি আমার থাকবি।

–আরেহ বাবা আমি তোমার আছি।আর তোমারই থাকবো।তোমার ভাগ কেউ তোমার থেকে কেঁড়ে নিতে পারবে না।

–মনে থাকে যেনো।

–হুম মনে থাকবে।

–তোর জন্যই খালি এবার সে বেঁচে গিয়েছে।
তার উপরে তোর হাতের ইশারায় যে সে চলে গেছে,সেটাও আমার অজানা নয়।তবে আমি কিছু বলি নি।কিন্তু তার এই সুযোগটা প্রথম বারের মতন ছিলো মাথায় রাখিস।

–হুম থাকবে থাকবে।এবার তো টপিক টা পরিবর্তন করো।

–আচ্ছা নে টপিক পরিবর্তন করলাম।তুই আমাকে কোলে করে জমিনে নিয়ে চল।আমি জমিনে যাবো।
আর সারারাত তোর শরীরের সাথে লেপ্টে শুয়ে থাকবো।

–বাপ’রেহহহ এখনো ঝাঁজালো ভাবটা কমেনি তোমার।

–কমলে কমুক না কমলে নাই।আমি টপিক পরিবর্তন করেছি তোর কথা মতন।বাকিটা তুই আমার কথা মতন এই করবি।সো নিয়ে চল তাড়াতাড়ি আমাকে।

–আচ্ছা চলো..
তারপর আনহাকে কোলে করে জমিনে নিয়ে আসলাম।
জমিনে নিয়ে এসে রুমের মধ্যে শুয়ে আছি।আর সে তার কথা মতন আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে আমার বুকের মধ্যে মাথা রেখে শুয়ে আছে।মেয়েটার কান্ড দেখে ব্যাপক হাসি পাচ্ছে!কারন এক কথায় বলতে গেলে পুরো সাইকো মেয়েটা।রূপন্তীর কাঁধে মাথা রাখায় তার যেই ভয়ংকর রূপটা সে আজকে দেখালো,তা আজীবন মনে থাকবে আমার।আমি এই জীবনে আর কোনো মেয়ের কথাই চিন্তা করবো না।
না হয়তো আনহার হাতে মারা পড়তে হবে আমার।
এসব নিয়ে ভাবছিলাম,তখনি আনহা আমার শরীরে ঝাঁকুনি দিয়ে বললো…

–যেমনটা কল্পনা করেছো এখন,তেমনটাই হবে।
আর দুঃখিত আমি তুই তুকারি করার জন্য।

–উফফ আল্লাহ!
এই মেয়েকে নিয়ে আর পাড়া গেলো না।

–এই তোমার পাড়ার গুষ্টি মারি।তুমি আগে আমার সরি এক্সেপ্ট করো।

–আচ্ছা আচ্ছা করলাম।

–হুম এবার ঠিক আছে এবার ঘুমাও তুমি।আমি সকাল পর্যন্ত তোমার বুকের মধ্যেই থাকবো।

–আচ্ছা…
তারপর আনহাকে বুকে নিয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম।
ভোরের আজান হতেই আনহা আমায় ডেকে দিলো।
ঘুম থেকে উঠে আনহাকে পরী-পালকে দিয়ে আসলাম।আনহাকে পরী-পালকে পৌছে দিয়ে এসে রান্না ঘরে চলে গেলাম কিছু খানা পিনা রেডি করার জন্য।কিন্তু রান্না ঘরে যেতেই দেখি আনহা নাস্তা পানি আগ থেকেই রেডি করে আমার জন্য।যাক নাস্তা বানানোর প্যারা থেকে বেঁচেছি।আনহার বানানো নাস্তা খেয়ে বিছানায় শুয়ে শুয়ে ফোন টিপতে আরম্ভ করলাম।তারপর কলেজের সময় হতেই রেডি হয়ে কলেজের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়েছি।রিক্সা করে কলেজে যাচ্ছি।কিন্তু মাঝ পথেই দেখি রিক্সার সামনে দাঁড়িয়ে অনামিকা আমার পথ আঁটকেছে।আমি অবাক দৃষ্টিতে অনামিকার দিকে তাকিয়ে আছি!তখনি সে আমাকে বললো…

–আকাশ রিক্সা থেকে নামো।তোমার সাথে আমার অনেক জরুরী কথা আছে।

–সরি আমার কলেজের টাইম প্রায় হয়ে এসেছে।আমার তাড়াতাড়ি কলেজে যেতে হবে।আমার হাতে এখন সময় নেই।

–আকাশ প্লিজ একটু কথা বলো আমার সাথে।আমি তোমার বেশি সময় নষ্ট করবো না।যাস্ট দুই মিনিট সময় নিব তোমার।

–ওকেহ…
এই রিক্সা ওয়ালা মামা আপনি একটু দুই মিনিট সামনের একটা সাইডে গিয়ে দাঁড়ান।আমি উনার সাথে একটু কথা বলে আসছি।

–ঠিক আছে মামা।

–রিক্সা ওয়ালা সামনে গিয়ে আমার জন্য অপেক্ষা করতে লাগলো।আর আমি রিক্সা থেকে নেমে অনামিকাকে জিজ্ঞেস করলাম,কি প্রয়োজন বলেন?
আর এতোদিন পর হুট করে আমার প্রয়োজন পড়লো কেন আপনার?

–আকাশ আমি তোমার লাইফে আবার ফিরে আসতে চাই।প্লিজ তুমি আমাকে গ্রহণ করে নাও।

–ওমাহ এটা কি কথা শুনালেন আপনি!আমার মতন ছোটলোকের লাইফে আপনার মতন নামীদামী মানুষ কামব্যাক করতে চায় এটা কি করে সম্ভব?

–আকাশ তোমায় ছেড়েছিলাম শুধু টাকার জন্য।
কিন্তু তোমায় ছেড়ে আমি একদম ভালো ছিলাম না।টাকার ইচ্ছা তো সবাই পূরণ করেছে,তবে তার সাথে আমার ইজ্জৎ ও লুটে নিয়েছে সবাই।আমি তোমার পর অনেক ছেলের জীবনেই পা রেখেছি টাকা প্লাস শান্তির জন্য।কিন্তু কেউ আমায় এই দুটো একত্রে দিতে পারেনি।সবাই খালি আমাকে ব্যবহার করেছে।আমি পরিশেষে বুঝতে পেরেছি,যে টাকার লোভ মানুষের জীবন টাকে নড়ক বানিয়ে দেয়।যেমন আমার জীবনটা এখন নড়কে পরিণত হয়ে গেছে।

–তো এখন আমার কি করার আছে?

–প্লিজ তুমি আমাকে ফিরিয়ে নাও।আমি তোমার লাইফে আবারে ফিরে আসতে চাই।কারন তোমার মতন করে আমায় কেউ ভালোবাসে নি।তোমার মতন করে কেউ আমার ফিলিংসের মূল্য দেয়নি।সবাই খালি আমাকে লুটে গেছে।কিন্তু একমাত্র তুমিই ছিলে,যার কাছে কিনা আমিই সব ছিলাম।যার কাছে কিনা আমার মূল্যই সব চাইতে বেশি ছিলো।সো প্লিজ তুমি আমাকে আবার গ্রহণ করে নাও।আমি তোমার সাথে থাকতে চাই…

–হা,হা,এতোদিন পর এসে কিনা উপলব্ধি করতে পেরেছেন আমার কথা?কিন্তু আমি তো আর আপনাকে গ্রহণ করবো না।কারন আপনি আমাকে শুধু ব্যবহার এই করেছেন।ব্যবহার করার পরিশেষে আমার থেকে ভালো কাউকে পেয়ে ছেড়ে চলে গেছেন আমায় নানানরকম ভাবে অপমান করে।সো আপনাকে গ্রহণ করা আমার পক্ষে আর সম্ভব না।

–আকাশ আমি তোমার দু’টো পায়ে পড়ছি।প্লিজ তুমি আমাকে গ্রহণ করে নাও।আমি তোমায় ছেড়ে আর কোনোদিন ও যাবো না।

–আরেহ গ্রহণ এই তো করবো না,সেখানে যাওয়া না যাওয়া তো বহু পরের কথা।আমার এখনো স্পষ্ট ভাবে মনে গেঁথে আছে আপনার দেওয়া কষ্ট গুলা।সো আপনাকে আর আমার লাইফে প্রয়োজন নেই।তবে হ্যাঁ আপনি আমায় ছেড়ে যাওয়ার পরে ভাবতাম আপনি আমার জীবনে ফিরে আসলে কখনোই আপনাকে ফিরিয়ে দিব না।কিন্তু বর্তমানে সেই রাস্তা বন্ধ।কারন আমার লাইফে আমার দেখা আসমান জমিনের সব চাইতে সুন্দরী মানুষ পদার্পণ করেছে।সো সেই মানুষটাকে আমি ঠকাতে চাই না।আপনি প্লিজ আপনার রাস্তা মাপেন।
.
অনামিকা আকাশের মুখে অন্যকারোর কথা শুনে আকাশের পায়ে ধরে বসে।আর কান্না করতে করতে তাঁকে বলে…

–আকাশ প্লিজ তুমি আমাকে এতো বড় শাস্তিটা দিও না।আমি সত্যিই ভুল করেছি।

–আমি আপনাকে শাস্তি দিচ্ছি না।শাস্তি তো আপনি আমাকে দিয়েছিলেন আপনাকে ভালোবাসার কারনে।
আর আমি তো শুধু আমার লাইফে এগিয়ে গেছি।
কারন আপনার মতন মানুষকে সাজা দিয়ে নয়,সময়ের হাতে ছেড়ে দেওয়াটাই বুদ্ধি মানের কাজ ছিলো।যেটা কিনা আমি করেছি।আপনার সাথে রিলেশন চলাকালীন আমার ছিলো না কোনো জব,ছিলো না বাবার কোনো টাকা পয়সা।কিন্তু বর্তমানে আল্লাহর রহমতে পঞ্চাশ হাজার টাকার একটা জব করি।সো আপনি আমাকে ছেড়ে যাদের কাছে গিয়েছিলেন,আমি মিনতি করবো আপনি আবার তাঁদের কাছেই ফিরে যান।

–না আমি তোমার পা ছাড়বো না।আমায় যেই পর্যন্ত তুমি ক্ষমা করবে না,আমি সেই পর্যন্ত তোমার পা ছাড়বো না।আর আমি কারোর কাছেই যাবো না।আমার তোমাকে চাই…

–ঠিক আছে আমিই নিজের পা ছাড়িয়ে নিচ্ছি।
এটা বলেই নিজের জোর খাঁটিয়ে অনামিকার থেকে নিজের পা ছাড়িয়ে নিলাম।পরিশেষে তাঁকে আরো দুইটা কথা বললাম।দেখলেন লোভের তাড়নায় আজকে আপনি কোথায়।যেই মানুষটাকে আপনি টাকার জন্য ছেড়েছেন,সেই মানুষটা আপনার বয়ফ্রেন্ডের লিস্ট থেকে অনেক উর্ধে।হ্যাঁ হতে পারে তাঁদের টাকা পয়সা বেশি ছিলো,তবে সেসব কিন্তু তাঁদের বাপের টাকা।আর আমার কামাইটা একান্তই আমার নিজের মেহনত দ্বারা উপার্জন করা।সো আপনি তাঁদের কাছেই ফিরে যান।সময় আপনার থেকে রিভেঞ্জ উঠিয়ে নিয়েছে।আপনি আমায় লাথি দিয়েছেন টাকার জন্য,আর আজকে সেই আপনিই আমার পা ধরে বসে আছেন হা,হা।আচ্ছা আর উপহাস করলাম না আপনাকে নিয়ে।কারন না হয়তো দেখা যাবে খোদা আবার নারাজ হয়ে যাবে আমার উপরে।সো চললাম..
তারপর অনামিকাকে ফেলে রেখে হাঁটা দিয়ে রিক্সায় উঠে বসলাম।রিক্সা ওয়ালা মামা আমাকে কলেজে এনে পৌঁছে দিলো।মামার ভাড়া চুকিয়ে কলেজে প্রবেশ করেছি।কলেজে প্রবেশ করে প্রতিদিনের ন্যায় সব কয়টা ক্লাস শেষ করলাম।ক্লাস শেষ করে কলেজ থেকে বের হবো,তখনি দেখি কলেজের গেইটের সামনে কেউ একজন মাথা নুইয়ে দাঁড়িয়ে আছে!যাকে দেখে কিনা কলিজাটা ভয়ংকর ভাবে মোচড় দিয়ে উঠলো…

চলবে…..

গল্পের ভুল ত্রুটি গুলো ক্ষমার নজরে দেখবেন।