#লেখেনী-আরোহী ইসলাম
#গোধূলি বেলায়
#পর্বঃ৪
আরিফুল ভয়ে ভয়ে বললো
‘ স্যার রায়হানকে মাটি দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।আপনার এখন যাওয়া উচিত।’
‘ না আমার একটু কাজ আছে। শুনো আরিফুল চোখ কান খুলা রাখবে ওকে।
সিফাত বললো।
‘ আচ্ছা স্যার।’
আরিফুল বললো।
তারপর সিফাত ওইখান থেকে বের হয়ে নিজের অফিসের দিকে যেতে লাগলো। সিফাত গাড়ি চালাচ্ছে হঠাৎ মেসেজ আসলো।
সিফাত ফোন হাতে নিয়ে দেখে অচেনা মেয়েটার মেসেজ সিফাত মেসেজ দেখে অবাক হলো কারন মেসেজে লিখা রাত দশটায় ** এই জায়গাই আসবে। শুধুমাত্র তুমি আর কেউ যেনো না আসে। আর একদম চালাকি করবে না তাহলে কিন্তু এর ফল খুব খারাপ হবে।
সিফাত মেসেজ দিলো আচ্ছা, আমি কাউকেই নিয়ে আসবো না। তারপর সিফাত অফিসে এসে পুরোনো ফাইলগুলো দেখতে লাগলো।
সিফাত একজন বিজনেস ম্যান তার পাশাপাশি আড়ালে সিফাত বড় বড় সন্ত্রা’সী’দে’র ধরে পুলিশে দেয়। সিফাত ফাইলগুলোর মধ্যে একটা ফাইল দেখে সিফাত মুচকি হেসে বললো তোকে এইবার কেউ আমার হাত থেকে বাচাঁতে পারবে না বলে সিফাত ফাইলটা নিয়ে গাড়িতে রাখলো।
এদিকে
অন্ধকারের মধ্যে অচেনা মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে। মেয়েটা ফোন বের করে একটা পিকের দিকে তাকিয়ে ভেজা কন্ঠে বললো প্রিয় আমি তোমার সাথে করা অন্যায়ের শা’ স্তি দিবো। তোমাকে যারা আমার কাছ থেকে কে’ড়ে নিয়েছে তাদেরকে এক এক করে শা’ স্তি দিবো।
তারপর মেয়েটা রুম থেকে বের হয়ে গাড়ির কাছে আসলো। মেয়েটা গাড়ি ড্রাইভ করে নিজের গন্তব্যস্থলের দিকে রওনা দিলো।
‘ সাইমা ড্রয়িং রুম থেকে রুমে এসে মন খারাপ করে বসে আছে। হঠাৎ সাইমা কি মনে করে যেনো আলমারির চাবি খুজেঁ সিফাতের আলমারি খুললো। সাইমা এই বাড়িতে আসার পর সিফাত সাইমাকে আলাদা আলমারি দিয়েছে। এই রুমে এখন দুটো আলমারি।
সাইমা সিফাতের আলমারি খুলে দেখে জামাকাপড় সব অগুছালো। সাইমা বিরবির করে বললো কি এমন আছে যে ওনি আলমারি কাউকেই খুলতে দেয় না। আজ খুলেছি যখন তখন না হয় সব গুছিয়ে রাখি এই বলে সাইমা আলমারি গুছাতে লাগলো।
সাইমা জামা কাপড় বের করতেই হঠাৎ দেখতে পাই একটা পিক অনেক পুরোনো। সাইমা হাত দিয়ে পিকটা মুছে পিকটা দেখে চমকে গিয়ে শব্দ করে বলে উঠে আরবিন আহমেদের সাথে ওনি কিন্তু এটা কিভাবে সম্ভব?
সাইমা মনে মনে বললো
‘ আরবিন আহমেদ ওনাকে তো ছয় মাস আগে কারা যেনো খুব বাজে ভাবে খু’ন করেছে। আমি তা শুনে তো সিফাতকে জিজ্ঞেস করেছিলাম একজন ভালো পুলিশ অফিসার কিভাবে খু’ন হলো আপনি কি জানেন?
সে সময় তো ওনি বলেছিলো
‘ না আমি ওনাকে চিনি না। কিন্তু ওনার সঙ্গে আরবিন আহমদের পিক। সাইমার মাথা ঘুরতেছে। সাইমা পিকটাকে নিজের কাছে রেখে আলমারি বন্ধ করে রাখলো। সাইমা রুমে বসে ভাবতেছে ঠিক সে সময় লিনা নিচ থেকে চিৎকার করে বললো সাইমা
সাইমা লিনার কন্ঠ শুনে তাড়াতাড়ি করে নিচে এসে দেখে চাচি শাশুড়ি আর লিনা রেগে আছে। সাইমা বললো কি হয়েছে?
‘ আমার সোনার চেইন পাচ্ছি না। এই বাড়ির সব কাজ তো তুই করিস আর আমার রুমও তুই ঝাড়ু দেস তার মানে চেইনটা তুই চু’রি করেছিস?
খেঁ’ কিয়ে উঠে বললো লিনা।
সাইমা লিনার কথা শুনে পাথর হয়ে আছে। শেষে কিনা চুরির অ’প’বা’দ দিলো।
‘ দেখ গিয়ে চুরি করে বাপের বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছে নাকি। শেষ মেশ কিনা সাইমা তুমি এই বাড়ির বউ হয়ে চুরি করলে।
ফোড়ন কেটে বললো চাচি শাশুড়ি।
সাইমা এতোক্ষন চুপ ছিলো কিন্তু আর চুপ থাকতে পারলো না।
‘ আমি গরিব হতে পারি কিন্তু আমার বাবা মা কখনো চু’রি করার শিক্ষা দেননি। লিনা তুমি এতোদিন ছোট ভেবে ক্ষমা করে এসেছি কিন্তু আর পারছি না। তোমার প্রতি আমার যেটুকু ভালোবাসা ছিলো সেইটুকু ঘৃণায় পরিনত হলো।
কাটকাট জবাব দিলেন সাইমা। সাইমা আবার বলে উঠলো
‘ এই পরিবারের যেইদিন থেকে এসেছি সেই দিন থেকে আমি তোমার থেকে সম্মান পাইনি কারন আমি গরিবের মেয়ে আমার বাবার তোমাদের মতো এতো টাকা নেই। টাকাটাই কি আসল আমিও তো একজন মানুষ কত সহ্য করবো।’
সাইমার কথায় চাচি শাশুড়ি আর লিনা রাগে ফুসফুস করতেছে।
‘তোমাকে এতো জ্ঞান দিতে হবে না চুরি করে এখন আবার বড় বড় কথা বলতেছো। তোমাদের মতো মেয়েদের চেনা আছে আমার।’
মুখ বাকা করে বললো চাচি শাশুড়ি।
‘ সিফাত ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে রাত দশটা বাজে। লিনাকে মেসেজ করে দিয়েছে আজ সে বাড়িতে আসবে না।
সিফাত অচেনা মেয়েটার বলা জায়গার কাছে আসলেন। সিফাত দেখে সামনে একটা জঙ্গল সিফাত ভ্রু কুচকে বললো সামনেই তো জঙ্গল যাব কিভাবে এইগুলো ভাবতেছে ফোনে আবার মেসেজ আসলো। সিফাত মেসেজ অন করে দেখে অচেনা মেয়েটা দিয়েছে জঙ্গলের বা পাশে একটা রাস্তা পাবে ওইখান দিয়ে সামনে আসলেই একটা বাড়ি দেখতে পাবে বাড়ির ভিতরে এসে ডান পাশে একটা রুম দেখতে পাবে। সিফাত মেসেজটা পরে সেইখানে যেতে লাগলো।
কিছুক্ষণ পর সিফাত সেই বাড়ির সামনে এসে ভিতরে রুমে আসলো। সিফাত দেখে রুমটা অন্ধকার। সিফাত ফোনের লাইট অন করে বললো কোথায় তুমি?
সিফাতের কন্ঠের স্বর শুনে মেয়েটা খুশি হয়ে বললো
‘ এসে গেছো তাহলে মিস্টার সিফাত আহমেদ তোমার জন্যই অপেক্ষা করছিলাম।’
‘ তুমি কি সেই মেয়ে?
সিফাত বললো।
‘ হুম।আমি তোমাকে এইখানে আসতে বলেছি আর তুমি কত বোকা কিছু না ভেবেই এইখানে চলে আসলে।
মেয়েটা উচ্চস্বরে হেসে বললো তুমি এসেছো নিজের ইচ্ছাতে কিন্তু যাবে আমার ইচ্ছাতে।’
‘ আমি তো তোমার সব কথা শুনতে রাজি হয়েছি সাইমাকে ডি’ভো’র্স দিতে চেয়েছি তারপরও কেনো তুমি এইখানে ডাকলে?
সিফাত শান্ত কন্ঠে বললো।
‘ তুমি সাইমাকে ডি’ভো’র্স দিতে পারবে না কারন আমি দেখেছি তুমি সাইমাকে কতটা ভালোবাসো। কিন্তু তোমাদের ভালোবাসা কে আমি বাঁচতে দিবো না। তুমি শুধু যানো যে তুমি যাদেরকে বিনা কারনে শাস্তি দিয়েছো আমি তাদের মধ্যে কেউ কিন্তু তুমি যানো না যে আসলে আমি কে আমাকে দেখার অনেক ইচ্ছা তোমার তাই না? ‘
মেয়েটা রেগে বললো।
মেয়েটার মুখে মাক্স পরা যার জন্য সিফাত দেখতে পারতেছে না। সিফাত বললো আমি কাউকে বিনা কারনে শা’স্তি দেয়নি। কে তুমি মুখ দেখাও?
মেয়েটা বললো আমাকে দেখে তুমি নিজেকে সামলাতে পারবে তো?
সিফাত আহমেদ কোনো কিছুইতেই ভয় পাই না।’
সিফাত বললো।
মেয়েটা বাকা হেসে মুখ থেকে মাক্স খুললেন। সিফাত মেয়েটাকে দেখে চমকে গিয়ে বললো আলিয়া তুমি?
‘ কি হলো চমকে গেলে তো বলেছিলাম না। তুমি আমার কাছ থেকে আরবিনকে কে’ড়ে নিয়েছো। আরবিন তো তোমার ফ্রেন্ড ছিলো তাহলে কেনো তুমি ওকে খু’ন করলে? কেনো আমার কাছ থেকে আমার ভালোবাসা কে কে’ড়ে নিলে। তুমি কি ভেবেছো আমার ভালোবাসা কে কে’ড়ে নিয়ে তুমি সাইমার সাথে সুখে সংসার করবে এটা তো আমি কখনোই হতে দিবো না।’
চিৎকার করে বললো আলিয়া।
‘ আলিয়া হলো আরবিনের গার্লফ্রেন্ড। সিফাত আর আরবিন ফ্রেন্ড ছিলো’
সিফাত সব শুনে বললো
‘ Stop..! তুমি কি জানো? কিছু না জেনেই আমার উপর দোষ দিচ্ছো? আরবিন আমার বন্ধু ছিলো আমি কিভাবে ওকে খু’ন করবো।
‘ তুমি এখন আমাকে মিথ্যা বলতে এসো না আমি সব জানি।
আলিয়া কিছুটা রেগে বললো।
সিফাত ঝাঝালো কন্ঠে বললো,,
#চলবে….