তবু কেন এত অনুভব পর্ব-০৯

0
334

#তবু_কেন_এত_অনুভব🕊
#written_by_Liza
#৯ম_পর্ব

ইনানের কথায় সকলের মুখে তালা পড়ে গেছে,সবাই এক এক করে রুমে এসে বসে,ইনান মনে মনে বলে
” নে ব্যাটা শিক্ষা হো, অনেক চাপা মারলি। তোদের চাপার জন্য এই ওষুধ যথার্থ ”

ইভা রাফির দিকে তাকিয়ে ইশারা দিয়ে বলছে ” কত বড় ফাজিল দেখলি? কিভাবে আমাদের হেনস্তা করলো ”

______________________

ক্লিনিকে সবাই বসে আছে বেঞ্চিতে, ওটিতে শুয়ে আছে পিওর মা। মুখে অক্সিজেন লাগানো। তানাফ ওটিতে ঢুকে পিও’র মাকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। পিও’র মায়ের কোনো সারাশব্দ নেই। একটু পর পর শ্বাস নেয় জোরে।

তানাফ পিও’র মায়ের মাথায় হাত রেখে বিড়বিড় করে বলে ” নিশ্চয় ঐ জঘন্য লোকটা আপনাকে কিছু করেছে তাই না আন্টি? সে আমার কাছে এসেছিলো আপনাকে মেরে ফেলার জন্য। আমিও দাবার পাশা উল্টো খেলছি। চিন্তা করবেন না আপনি খুব শীঘ্রই সেরে উঠবেন ”

নাদিম শেখ টাকা নিয়ে ওটির বাহিরে হাজির, ওটির ভেতর থেকে তানাফকে বের হতে দেখে নাদিম শেখ ভ্রু কুঁচকে ফেলে, তানাফ নাদিম শেখ’কে এড়িয়ে ডক্টর রুমে গিয়ে বসে। নাদিম শেখ পিছু পিছু গিয়ে তানাফের সামনে দাড়ায়। তানাফ কিছু বলতে যাবে তার আগেই নাদিম শেখ চেয়ারে বসে টাকার বান্ডিল ছুড়ে মারে। নাদিম শেখ বলতে থাকে
” যত চেয়েছো তার চেয়ে ডাবল আছে। এবার কাজটা করে দাও। ”

তানাফ কথা না বলে টাকা বান্ডিল ড্রয়ারে রেখে দেয়, নাদিম শেখের মনে খচখচ করছে খানিকটা নাদিম শেখ কাঁচুমাচু করে তানাফকে বলে
” ওর জ্ঞান আসছে? কেন গেছো ওখানে? ”

তানাফ টেবিলের উপর হাত দিয়ে নাদিম শেখের উপর ঝুঁকে রহস্যময় হাসি দিয়ে বলে ” ডক্টর কে? আমি না আপনি? আপনার রাইট নেই আমাকে এভাবে জিজ্ঞেস করার। নেক্সট টাইম কথা বলার আগে ভেবে বলবেন। ”

নাদিম শেখ মনে মনে বলে ” মানে মানে কাজটা হয়ে যাক, এরপর তোর এত গরম কিসের তা আমি দেখে নেবো ”

নাদিম শেখ কথা না বাড়িয়ে চলে যায়। নার্স এসে তানাফকে বলছে ” স্যার পেশেন্টের জ্ঞান ফিরেছে। ”

আচ্ছা শুনুন। এটা কেউকে বলবেন না। আমি যাচ্ছি, যতক্ষণ না আমি আপনাকে কিছু বলতে বলবো,ততক্ষণ তার আগে কিছু বলবেন না কেউকে (তানাফ)

নার্স মাথা নাড়িয়ে নিজের কাজে চলে যায়, তানাফ তড়িঘড়ি হাতে ফোন নিয়ে ওটির দিকে ছুটছে, সবাই তানাফের এমন তাড়াহুড়ো দেখে দাড়িয়ে যায়। তানাফ সবাইকে উপেক্ষা করে ওটিতে ঢুকে পড়ে।

এদিকে নাদিম শেখ খিলখিল করে হাসছে একপাশে আর বলছে বিড়বিড় করে ” মনে হয় আপদ বিদেয় হয়েছে। শালার ব্যাটার এক্সপ্রেশন বলে দিচ্ছে কাজ খারাপ। হা হা হা ”

তানাফ ওটিতে ঢুকে লম্বা সালাম দেয় পিও’র মাকে, পিও’র মা ঝাপসা চোখে পানি ঝড়ছে। তানাফ ধীর পায়ে পিও’র মায়ের দিকে এগিয়ে আসে, পিও’র মা অস্ফুট আওয়াজে পিও বলে ডাকছে।
তানাফ চেয়ার টেনে পিওর মায়ের সামনে বসে। পিওর মায়ের হাত টুকু ধরে বলে ” আন্টি কেমন লাগছে এখন? আমি একটু কথা বলতে এসেছি। ”

পিওর মা তানাফের হাতের দিকে তাকিয়ে আছে, তানাফ পিও’র মায়ের হাত শক্ত করে ধরে আছে আর বলছে ” নাদিম লোকটা আপনার স্বামী রাইট? আপনার এই অবস্তা সে করেছে তাই না? ”

তানাফের কথা শুনে হাত ছাড়িয়ে মুখ ফিরিয়ে নেয় পিও’র মা। তানাফ বুঝতে পেরেছে তাকে এড়িয়ে যেতে চাইছে। তানাফ এত সহজে ছাড়ার পাত্র না। তানাফ হতাশ হয়ে বলে ওঠে ” লুকিয়ে লাভ নেই আন্টি, আমি সব জানি। চিন্তা করবেন না আমি আপনার ক্ষতি হতে দেবো না। ”

পিও’র মা ছলছল চোখে ফুপিয়ে কেঁদে ওঠে, তানাফ মাথায় হাত বুলিয়ে শান্ত স্বরে বলে ” বলুন আন্টি কেন এমন করেছে লোকটা, কিসের এত ক্ষোভ। কিছু লুকোবেন না প্লিজ৷ আমি কেউকে কিছু বলবো না, আমাকে সব বলুন ”

এবার আস্তে আস্তে পিও’র মা বলতে শুরু করে, তাকে তার ভাসুরের সম্পত্তি আত্মসাৎ করতে বাধা দেওয়াতে এভাবে মেরেছে।
তানাফ কিছু বলার ভাষা পাচ্ছে না। তানাফ শুনে যাচ্ছে একের পর এক সব ঘটনা।

পিও’র মা আবারো বলে ওঠে ” আমার ভাসুর আজীম শেখ, ছোট দেবর আলিফ শেখ। ছোট দেবর সম্পত্তি বড় ভাসুরের নামে লিখে দিয়ে বাহিরে চলে গেছে। আমার হাসবেন্ড লোভী, এই লোভ তাকে পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন করে রেখেছে। সে চাইছে আমার ভাসুরকে মেরে সম্পত্তি নিজের করে নেবে। ”

কথাগুলো বলে পিও’র মা কাঁশতে শুরু করে, তানাফ পিও’র মায়ের দিকে এক গ্লাস পানি এগিয়ে দিয়ে বলে ” আন্টি নিন। আপনার ভাসুরের ছেলেমেয়ে নেই? তারা কিছু বলে না কেন? ”

পিওর মা ঢকঢক করে পানিটুকু খেয়ে লম্বা শ্বাস ছাড়ে আর বলে ” ভাসুরের একটা মাত্র মেয়ে,নাম দোয়া। সে যদি ছেলে হতো আমার চিন্তা ছিলো না। সে একাই লড়াই করতো। আজ মেয়ে হওয়াতে আমার ভাসুরকে মারা প্লান করছে। ”

দোয়া নাম শুনে তানাফের হার্টবিট ফাস্ট হতে লাগলো, তানাফ উত্তেজনা স্বরে বলে ” তারপর, তারপর কি হয়েছিলো আন্টি বলুন ”

পিওর মা বলতে শুরু করে ” রাতে রিভলবার নিয়ে আমার ভাসুরকে মারতে গিয়েছিলো,আমি বাধা দেওয়াতে দেয়ালে ধাক্কা দেয়। আর কিছুই জানিনা মনে পরছে না। আমি কীভাবে তাদের রক্ষা করবো আমি জানিনা।আমি শেষ মুহূর্ত অব্দি চেষ্টা করবো। দোয়াকে একটা ভালো ছেলের হাতে তুলে দিতে পারলে চিন্তামুক্ত হতাম। দোয়ার হাসবেন্ড পরিবারটাকে আগলে রাখতো ”

তানাফ সবটা বুঝতে পেরে দীর্ঘশ্বাস ফেলে, তানাফ পিও’র মাকে বলে ” আন্টি আপনি চিন্তা করবেন না,আমি আপনার হাসবেন্ডকে তখন দেখেই কিছুটা আঁচ করতে পেরেছি। এটা আমার কার্ড, এখানে নাম্বার আছে, কাজে লাগতে পারে আপনার। ”

পিও’র মা কার্ড নিয়ে পাশে রেখে দেয়, একটু পর নার্স এসে ইঞ্জেকশন পুস করে। তানাফ ওটি থেকে বেরিয়ে দোয়ার মায়ের সামনে গিয়ে দাড়ায়।দোয়ার মা তানাফের দিকে তাকিয়ে আছে, তানাফ সালাম দিয়ে বলে ” পেশেন্টের সেন্স ফিরেছে এখন ভালো আছে,আমি চাইছি পেশেন্ট এখানে দুই একটা দিন স্টে করুক৷ ”

বাড়ি নিয়ে যাওয়া যাবে না? (দোয়ার আম্মু)

আসলে বাড়িতে যাওয়াটা রিস্ক,এখানে থাকুক দুই একদিন। পরিপূর্ণ সুস্থ হলে তবে নিয়ে যাবেন৷ (তানাফ)

আচ্ছা ঠিক আছে বাবা, আমি দোয়ার আব্বুকে বলছি তাহলে! (দোয়ার আম্মু)

না এখন বলবেন না,আপনাকে কিছু জানাতে এসেছি যাতে আপনি পেশেন্টের আশেপাশে থাকতে পারেন। পেশেন্টের সেন্স ফিরেছে জানলে, পেশেন্টের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা আছে। (তানাফ)

মানে,কি বলতে চাইছো বাবা। কিসের ক্ষতি? (দোয়ার আম্মু)

পেশেন্টকে মেরে ফেলার চেষ্টা করছে তার হাসবেন্ড। আমাকে টাকা অফার করেছে যাতে পেশেন্টের কিডনি নিয়ে ফেলি। ডিল করতে চায় নাদিম শেখ। আমি এই কথাটা পেশেন্টের কাছ থেকে লুকিয়ে গিয়েছি। এখন যা অবস্তা এসব বললে ব্রেইনে প্রেশার পরবে পেশেন্টের,তাই বলিনি। আপনাকে বলেছি আপনি পেশেন্টের খেয়াল রাখবেন। আর এসব কথা কেউকে জানাবেন না, আমি ব্যবস্থা নিচ্ছি। চিন্তা করবেন না। নিজেদের খেয়াল রাখুন। (তানাফ)

তানাফের কথা শুনে আৎকে ওঠে দোয়ার আম্মু। চোখ দিয়ে অঝোরে ঝড়ছে পানি। তানাফ বুঝিয়ে শুনিয়ে চলে আসে।

নাদিম শেখ আড়াল থেকে সব দেখে৷ নাদিম শেখ তানাফের কাছে গিয়ে বলে ” ভাবী কাঁদছে কেন? কি বলেছো তুমি? ”

বলেছি, পেশেন্টের অবস্তা ভালো না। আশা ছেড়ে দিতে। যেকোনো সময় অঘটন ঘটতে পারে। আর হ্যাঁ পেশেন্ট এখানে থাকবে কিডনি না নেওয়া পর্যন্ত। আর বিরক্ত করবেন না। কাজ হয়ে যাবে আপনার (তানাফ)

নাদিম শেখের মুখে বিচ্ছিরি হাসির রেখা ফুটে ওঠে,নাদিম শেখ খুশিতে গদগদ করছে।

তানাফ নাদিম শেখকে এড়িয়ে চলে যায় নিজের কাজে। তানাফ ইনানকে ফোন করে বলে ” দোয়া কী জেগে আছে? ”

জ্বী স্যার, দোয়া ম্যাডাম দোয়া-কালাম পড়তেছে। পেটে মনে হয় ইদুর দোড়াচ্ছে তার,নড়াচড়া করতেছে। (ইনান)

মজা করো না তুমি, কি করছে ও? জিজ্ঞেস করো তো পিও নামের ওর কোনো কাজিন আছে কি-না (তানাফ)

আচ্ছা স্যার আপনিও দোয়া করবেন আমার জন্য যাতে আমি বকা না শুনি। (ইনান)

ইনান ফোন হাতে নিয়ে দোয়ার কাছে গিয়ে বলে “দোয়া ভাবী আপনার কাজিন এর নাম কি পিও?”

দোয়া পিও’র নাম শুনে ইনানকে বলে ” জ্বী আপনি কি করে জানলেন? ”

তানাফ স্যার জিজ্ঞেস করতে বললো (ইনান)

ইনান ফোনে তানাফকে বলছে ” হ্যাঁ স্যার দোয়া ম্যামের কাজিন এর নাম পিও৷ কিন্তু আপনি জানলেন কী করে? আপনি চেনেন? তার মানে রাফি ভাইয়ার কথা ঠিক! আপনি ছোটবেলায় হাফ প্যান্ট পরে ঘুরতেন স্যার? হায় আল্লাহ আপনাকে হাফ প্যান্টে কেমন লাগবে স্যার ভাবতেছি ”

হোয়াট ননসেন্স, যতটুকু বলেছি ততটুকুর উওর দাও। কিসব যা তা বলছো তুমি (তানাফ)

ইনান চুপসে যায় ধমক খেয়ে,ইনান তানাফকে বলে “রাফি ভাইয়া বললো স্যার আপনি হাফপ্যান্ট পরে ঘুরতেন,আমি রেকর্ড করে রেখেছি।ম্যাসেঞ্জারে পাঠিয়ে দেবো শুনিয়েন।”

তানাফের মন ভালো নেয় আজ,তানাফ ফোন রেখে দেয় তাড়াহুড়ো করে,
ইনান ফোনের দিকে তাকিয়ে বিড়বিড় করে বলছে
” যাহ বাবা বউয়ের জন্য ফোন দিলো, এদিকে আমি একা এতগুলা জন্তু নিয়ে একটা রুমে আটকা আছি সেটার কোনো খেয়াল নেই স্যারের। দুনিয়া বহুত ক্যারেক্টকারলেস। মিনিটে মিনিটে রং পাল্টায় দুনিয়া,”

এদিকে তানাফ মাথায় হাত দিয়ে বসে আছে, ভাবছে কীভাবে নাদিম শেখ’কে শিক্ষা দেওয়া যায়। মুহুর্তেই তানাফের মনে পড়ে গেলো ডক্টর রুমের সিসি টিভি ফুটেজের কথা। তানাফ রহস্যময় হাসি দিয়ে বিড়বিড় করে বলছে ” সাপ ও মরলো লাটি ও ভাঙ্গলো না। ”

ফজরের আজান পরছে,চারদিকে মিটমিট অন্ধকার, তানাফ বেরিয়ে পরেছে। তানাফ সোজা রুমে গিয়ে দোয়াকে কোলে করে তার নিজের পার্সোনাল রুমে নিয়ে আসে। দোয়া তানাফের বুকে ঢলে পরেছে। গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন দোয়া। সারারাত জেগে থাকার ফলে ঘুম ঝেঁকে বসেছে দোয়ার।

তানাফ দোয়াকে বিছানায় শুইয়ে দিয়ে ফ্রেস হতে চলে যায়। তানাফ ফ্রেস হয়ে এসে দোয়ার মাথার পাশে বসে, দোয়ার মাথায় হাত বুলিয়ে দোয়ার নিষ্পাপ ঘুমন্ত মুখটা দেখছে। তানাফ রহস্যময় হাসি দিয়ে মনে মনে বলছে ” আল্লাহ্ যা করেন ভালোর জন্যই করেন। আপনাকে হারিয়ে ফেলার ভয় আমাকে ভেতরে ভেতরে শেষ করে দিচ্ছিলো মিস দোয়া, হয়তো আমার ভাগ্যে আপনিই আছেন তাই হারাতে হারাতে ফিরে পেয়েছি। এবার যে করেই হোক আপনাকে আমার করবো। আপনি আমাকে ভালোবাসুন বা ঘৃণা করুন এতে কিছুই যায় আসে না আমার। আমি আপনাকে আমার করে নেবো এটাই ডক্টর তানাফ আজমী এর চ্যালেঞ্জ। ”

দোয়া চোখ মেলে দেয়, চোখের সামনে তানাফকে দেখতে পেয়ে যেই না চিৎকার করবে অমনি তানাফ দোয়ার মুখ চেপে ধরে।

তানাফ দোয়াকে বলে ” উসস আওয়াজ চাই না৷ চুপচাপ তৈরি হয়ে নিন। আমরা বেরোবো ”

দোয়া ভয়ে ঢোক গিলে বলে তানাফের কথায়,
” কোথায় যাবো আমি? আমি বাড়ি যাবো। আমায় ছেড়ে দিন ”

তানাফ দোয়ার উপর ঝুকে দোয়ার গাল চেপে ধরে বলে
” বেশি কথা শুনতে চাইনি। সোজা তৈরি হয়ে নিন।আমি যেখানে নিয়ে যাবো সেখানেই যাবেন আপনি। এর বেশি আরেকটা কথা বললে খুব খারাপ হবে। ”

দোয়া তানাফের কথামত ফ্রেস হতে চলে যায়, তানাফ রুমে গিয়ে সবাইকে ঘুম থেকে ডেকে তুলে আর বলে ” গাইস তোমরা বাড়ি যেতে পারবে, আর হ্যাঁ রাফি আপনি আমার সাথে আসুন একটু ”

রাফি তানাফের কথায় ভয়ে মনে মনে বলছে ” মাবুদ আমার বা*ম তো নেই উঠাই নিছো। এখন যদি আবারো চাটনি দেয় মনে হয় না আমি বাচমু। মাবুদ রক্ষা কইরো। এই দুইদিন যা ক্যালানি খাইছি বিগত বাইশ বছরে এত ক্যালানি আমার বাপেও দেয় নাই। রক্ষা কইরো মাবুদ। আজ যদি বাইচা যায় তাইলে আমি ১০টাহা গরীবরে দান করমু। ”

বিড়বিড় করতে করতে রাফি তানাফের সাথে গেলো,তানাফ রাফিকে সব খুলে বললো দোয়ার ব্যাপারে। রাফি তানাফের কথা শুনে বাকরুদ্ধ। রাফি তানাফকে বলে
” আগে কইবেন না ভাই। তাইলে আমি ঐ ব্যাটারে ধোলাই দিতাম। ঠিকাছে আমি নজর রাখমু ”

তানাফ রাফির কাঁধে হাত রেখে বলে ” আশা করি আমার কথা রাখবেন। সবকিছু ভুলে যান। এখন একটা লক্ষ্য আসল সত্য বের করার। দোয়ার উপর আর দোয়ার ফ্যামিলির উপর যেনো কোনো আঁচ না আসে সেই খেয়াল রাখা। বিভিন্ন ইনফরমেশন দেবেন তাদের ব্যাপারে। তার বদলে আমি আপনাকে খুশি করবো। ”

রাফি হেসে বলে ” আরে ভাই ওসব লাগবো না৷ দোয়া আমার বেস্টফ্রেন্ড ওর লাইজ্ঞা এইটুকু বন্ধু হইয়া করতেই পারি ”

রাফি তানাফ দোয়ার আম্মু ও পিও’র আম্মু একদল হয়ে গেছে। টার্গেট অনুযায়ী সব চলছে।

এদিকে ভোর ফুটে গেছে, আজীমকে নাদিম শেখ বলছে ” মেয়ে মানুষকে এত আশকারা দিতে নাই ভাইজান। কাল থেকে দোয়া নিখোঁজ। মেয়ে মানুষ এভাবে বাহিরে রাতবেরাতে বান্ধবীর বাসায় থাকা শোভা পায় না। তার উপর বিবাহযোগ্য মেয়ে।
মানুষ কথা রটাবে। বিয়ে হবে না। আমি বলছিলাম যে ভাইজান,আমার দেখা একটা ভালো পাত্র আছে৷ ছেলে আমেরিকান। মেয়েকে নিয়ে আমেরিকায় শিফট করবে। তুমিও চাইতে মেয়ে ভালো ঘরের বউ হোক৷ আমার মতে এটাই সুযোগ আমাদের দোয়াকে বিয়ে দিয়ে দেওয়া। চঞ্চল মেয়ের সাথে শান্ত ছেলে। ”

আজীম শেখ কিছুটা চিন্তায় পরে গেলেন। আজীম শেখ মনে মনে বলছে ” নাদিম তো ঠিক কথায় বলেছে। বিয়েটা দিয়ে দেওয়া উচিৎ। আমি আর ক’দিন’ই বা বাঁচবো ”

আজীম শেখ স্বস্তির শ্বাস নিয়ে বলে ” পিও’র মা সুস্থ হোক এরপর ছেলের মা-বাবার সাথে কথা বলবো। ”

নাদিম শেখ রহস্যময় বিচ্ছিরি হাসি দিয়ে চলে গেলো।
দোয়ার মা এসে আজীম শেখ’কে বলছে ” নাদিম কি বলে গেলো গো? কি কথা বললে তোমরা? ”

আমাদের দোয়ামনির জন্য ভালো সম্মন্ধ দেখেছে নাদিম, পিও’র মা সুস্থ হোক এরপর এই ব্যাপারে আগাবো (আজীম শেখ)

দোয়ার মা মুহুর্তে বলে ওঠে ” না আমি কোথাও বিয়ে দেবো না,”

আজীম শেখ ধমক দিয়ে বলে
” আহ নাদিম দোয়ার ভালো চায়। সবকিছুতে বাড়াবাড়ি করো না তো ”

চলবে…..