তুই তারারে ভিনদেশী পর্ব-০৪+ বোনাস পর্ব

0
813

গল্পের নামঃ- #তুই_তারারে_ভিনদেশী❣️💫

লেখিকাঃ- konika islam (sanju)

পর্বঃ04 + বোনাস পার্ট

অন্ধকার ক্লাস রুমে,,,, দেওয়ালের সাথে কেউ চেপে ধরে আছে আফরিনকে। বক্তিটার প্রতিটি নিশ্বাস বলে দিচ্ছে সে প্রচুর রেগে আছে। ব্যাক্তিটা বলে

—– ইয়ামিনকে? আফরিন ভয়ের মাঝে ভেবাচেকা খেয়ে যায় এই ইয়ামিনকে আবার!!!! আফরিনকে চুপ থেকে দেখে ছেলেটা নিজের এক হাত দিয়ে আফরিনের দুই হাত ধরে। আর তার আরেক হাত দিয়ে আফরিনের দুই গালের চোয়াল চেপে ধরে বলে

—– সে সামথিং,,, কিছু জিজ্ঞেস করেছি। আফরিন ভয়ে কাঁপছে। কিন্তু একটা জিনিস আফরিন খেয়াল করেছে। সেটা হলো তার গায়ে থেকে মিষ্টি একটা পারফিউম এর স্মেল আসছে । ছেলেটা এবার আফরিনকে ধমক দিয়ে বলে

—– ইয়ামিন কে? আফরিন ভয়ে কাপছে তাও সে কি সব বলছে সেটা সেই ব্যাক্তি বুঝতে পারছে না। তাই সে আফরিনের গাল থেকে হাত সরিয়ে নেয়। আফরিন ভয়ে ভয়ে বলে

—— আম,,আমি কোনো ইয়ামিনকে চিনি না। ছেলেটা এবার রেগে বলে

—– তাহলে তখন কেন বলছিলে। রোসগল্লা,, আর হাতের ঘড়ি কোথায়??? আফরিন এবার বেস বুঝতে পারছে এটা সেই সাইকোটা।৷ আফিরন বলে

—– কে আপনি? ঐটা তো একটা ভিডিও। আর ভাইয়া আমি আপনার কি ক্ষতি করেছি? আমার পিছনে কেন পরে আছেন আপনি? ছেলেটা বলে

—– হোক সেটা ভিডিও,,, নেক্সট টাইম এমন কিছু বলতে শুনলে। মাটিতে পুতে ফেলব তোকেও তোর ইয়ামিনকেও। আর কালকে যেন হাতে ঘড়ি দেখে। বলেই আফরিনকে অন্ধকার রুমে রেখে বেড়িয়ে যায়। আফরিন শুধু একটা আয়ুব দেখতে পারে। সম্পূর্ণ কালো গেট আপ। তখন ছুটির ঘন্টা বাজে আফরিন দৌড়ে রুম থেকে বেড়িয়ে আসে কিন্তু ব্যাক্তিটা যেন ভিরের মাঝে হারিয়ে গেছে ।

সব কিছু মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে আফরিনের। হঠাৎ অহনার ডাকে তার ঘড় কাটে।।।।। অহনা বলে

—— দোস্ত আরেকটু সময় লাগবে। বেশি না ৩০ মিনিট। আমাদের ক্লাসের আরো অনেক ছাত্র-ছাত্রীরা আছে। সামনের সপ্তাহে আমাদের ভার্সিটির ১০০ বছর পূর্ণ হবে। তাই কি কাজ করতে হবে বা কে কোন প্রতিযোগিতায় অংশ নিবে সেটা কৌশাল ভাইয়ার কাছ থেকে যেনে নিতে বলেছে।

আফরিন না চাওয়া সত্ত্বেও তার যেতে হয়। আফরিন গিয়ে দেখে হলরুম টা চকচক করছে কিন্তু কালকেই তো ময়লা ছিল। আফরিন আদিত্য কে দেখে ক্ষেপে যায়। তার তো প্রতিশোধ নেওয়া বাকি। একটা সরি অব্দি বললো না। দাঁড়াও না তোমাকে মজা দেখাচ্ছি।

_____________

আফরিনদের ক্লাসের এক ছাত্র যার নামও
(ইয়ামিন😁😁) সে বলে কৌশালকে

—– ভাইয়া আমাদের কাজ? কৌশাল বলে

—– আদিত্য জানে,, অপেক্ষা কর। আদিত্য বলে

—- তোমাদের কাজ খুব সোজা আমাদের ইস্টেজ সাজাতে হেল্প করবে। আর যারা যেই প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে চাও তারা আহানকে বলবে।

___________

তখনই আরেকটা রশ্নি নামের মেয়ে বলে

—— আহান কোথায়। আহান কোথায় কথাটা শুনে অহনার মেজাজ খারাপ হয়ে যায় । মনে হচ্ছে তার কত জনমের চেনা ,, পরিচিত কেউ । আহান পিছন কফি হাতে বলে

—– এই যে আমি। আমাকে ডেকেছে? তখনই রশ্নি বলে

—– আমি ডেকেছি আহান। আহান রেগে বলে

—– আমি তোমার ক্লাসমেট না যে আহান ডাকবে বড় ভাই ডাকবে। পরিবেশ থমথমে । আফরিন অহনার দিকে তাকিয়ে দেখে সে ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে আছে। কিন্তু মনে মনে যে জ্বলছে তা সে ভালোই যানে। হঠাৎ করেই আফরিনের মাথায় বুদ্ধি আসে। সে আদিত্যের দিকে তাকিয়ে দেখে আদিত্য তার দিকে ভ্রু-কুচকে তাকিয়ে আছে। আফরিন বলে দাঁড়াও দেখাচ্ছি মজা। সে দৌড়ে কৌশালের কাছে যায়। আর বলে

—– কৌশাল ভাইয়া তোমাকে একটা কথা বলবো নিচু হয়। কৌশাল মুচকি হাসি দিয়ে ভ্রু নাচিয়ে নিচু হয়ে বলে

—- কি? আফরিন কানে কানে বলে

—– এখন আমি আদিত্য কে শাস্তি দিব। কালকে আমার অবস্থার জন্য সে দায়ী। আর সরি অব্দি বললো না। কৌশাল বলে

—– কালকে আদিত্য,,,, আফরিন খেয়াল করে দেখে সবাই তাদের দিকে তাকিয়ে আছে। কেউ কেউ তো হাসছে। আফরিনের তাতে কিছু যায় আসে না আফরিন বরাবরই কৌশালকে ভাইয়ের চোখে দেখে। আহান তখন কফি খাচ্ছিল আদিত্য আর অন্য সবাইদের সাথে কথা বলছিল। আফরিন জোরে চিৎকার দিয়ে বলে

—– আরশোলা,,,, বলেই আহানের দিকে দৌড়দেয়
আহান বেচারাও এই আরশলা অনেক ভয় পায়। আর অন্য সব মপয়েরা তো রীতিমতো মতো ছুটাছুটি করছে (যত্তসব) আদিত্য উঠে দাড়ায় আর সাথে সাথে আফরিনও দেয় দৌড় সে ইচ্ছে করে আহানে আদিত্যর দিকে ধাক্কা দেয় ফল স্বরূপ আহানের কফি গিয়ে পরে আদিত্যর শার্টে। সেটা দেখে আদিত্য চিৎকার দিয়ে বলে

—– ইস্টপ। সবাই একসাথে দাড়াও নয়তো আমার থেকে খারাপ কেউ হবে না।

সবাই দাড়িয়ে আছে। আর আফরিন মিট মিট করে হাসছে । অহনাও সেম কারণ আরশলা কথা শুনার পর আহানের চেহারা দেখার মতো ছিল। আদিত্য আফরিনকে বলে

—- হেই ইউ ইস্টুপিট,, তুমি আরশলা কোথায় পেলে এখান? আর আমরাতো দেখলাম না!!!,

আফরিন বলে

—– হয়তো সবার দৌড়া দৌড়িতে কারো জুতার নিচে চাপা পরে মারা গিয়েছে। আদিত্য নিজের শার্ট ঝাড়তে ঝাড়তে বলে

—- আজকে সবাই যাও। কালকে সবার সাথে কথা হবে।

____________

আফরিন যদি পারেতো এখন লঙ্গি ডান্স দিতে কিন্তু সেটা তো আর পারেবে না। সবাই চলে যেতে চাইলে আদিত্য বলে

—- অহনা আর আফরিন বাদে সবাই যেতে পারো। ২ মিনিট সময়। মুহুর্তেই মধ্যেই সম্পূর্ণ রুম ফাঁক হয়ে যায়। আদিত্য বলে।

—- আফরিন তুমি এটা ইচ্ছে করে করেছ না? আফরিন নিজের ব্যাগ থেকে চকলেট বের করে খেতে খেতে বলে

—– হুটা দ্যা ফালতু কথা। আমি কেন করব? আদিত্য বলে

—– কালকের জন্য সরি। আফরিন বলে

—– কৌশাল ভাইয়া আমাকে ধর আমি সেন্স হারামু। আর আদিত্য সাথে সাথে বেড়িয়ে যায় । সাথে বাকি সবাইও। আহান হঠাৎ করে অহান সামনে দাড়িয়ে যায়। অহনা পাশকাটিয়ে চলে যেতে চাইলে আহান অহানর হাত ধরে বলে

—– এমন কেন করছ? অহনা কোনো কথা বলে না নিজের হাত ছাড়িয়ে নিয়ে বলে

—– আফরিন বাসায় চল লেট হচ্ছে । আফরিনও কিছু বলতে চেও বললো না

—– কারণ এটা ওদের পারসোনাল লাইফ। তারপর দুই বান্ধবী মিলে টুকিটুকি পায়ে আফরিনদের বাসায় উদ্দেশ্য হাটতে লাগে। কৌশাল বাইকে উঠতে উঠতে বললো

—– বাহ বাহ আদি এখন সরিও বলে। আদিত্য বাইকের হেলমেট লাগাতে লাগাতে বললো

—– ভুলটা আমার ছিল তাই বলেছি। আহান বলে

—– হইছে,,,, তোমাদের। তোমাদের তো কোনো প্যারা নাই ঐদিকে দিকে আমার মিষ্টি অহনা ঝাল অহনা হয়েগেছে। রাগ ভাঙাতে হবে। তাড়াতাড়ি চল। তিন জন তাদের বাইক নিয়ে বেড়িয়ে পরে তাদের গন্তব্যে।

__________

রাতের বেলা অহনা আর আফরিন খেয়ে দেয়া বসে বসে গল্প করছে বারান্দায়। তখনই অহনার ফোন বেজে উঠে দেখে আহান কল দিয়েছে। কথা বলতে ইচ্ছে করলেও ফোন কেটে দেয়। তারপর আবার ভুলে রিসিভ হয়ে যায়। আহান বলে

—- কল কাটলে সোজা বাসায় চলে আসবো আফরিনদের। নিচে তাকাও। অহনা নিচের দিকে তাকায় দেখে রোডে লেখা সরি। আর ওদের সব বন্ধুরা সেড ইমোজি বানিয়ে দাড়িয়ে আছে। অহনার রাগ গলে পানি কিন্তু না তাও একটা শিক্ষা দিতে হবে। তাই সে আহানকে বলে

—– অনেক রাত হয়েছে বায়। বলেই কল কেটে দেয়৷

অহনা বলে

—– আফরিন তুই অনুষ্ঠানে কি পরবি শাড়ী? আফরিন বিছানায় বসতে বসতে বলে

—– শাড়ীকে আমার অজগর সাপের মতো মনে হয়। প্রথম পেচাবে পরে খেয়ে ফেলবে দরকার নেই আমার। আমি নরমাল কিছু পরবো।

_________
সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠতে লেট হয়ে যায় আফরিন আর অহানর অন্যা কল না আসলে ওদের হয়তো ঘুমই ভাঙতো না। আফরিনের আজ আর তেমন টাইম নেই কোনো রকম শাওয়ার নিয়ে আসে। লাল ড্রেসে গোল্ডেন ইস্টোন বসানো। আফরিনকে অনেক মানিয়েছ। কমড় অব্দি লম্বা চুলগুলো খোলা হালকা হালকা পানি ঝড়ছে। কোনো কিছু মুখে না দিয়ে ভার্সিটির জন্য দৌড়। আফরিনের মা তাদের খেতে বললে ওরা বলে ক্যান্টিন থেকে খেয়ে নিবে। ভার্সিটিতে আজ প্রথম এভাবে এসেছে আফরিন। আফরিনকে দেখে মাত্র এক জোড়া চোখ আটকে গিয়েছে। প্রশান্তির দোলা বয়ে যাচ্ছে আরেক মনে। এক সাথে দুজনের মনে জেগে উঠেছে এক নতুন অনুভূতির দোলা,,,,,,

চলবে ।