তুই তারারে ভিনদেশী পর্ব-০৬

0
657

গল্পের নামঃ- #তুই_তারারে_ভিনদেশী❣️💫

লেখিকাঃ- konika islam (sanju)

পর্বঃ06

সকাল বেলা ঘুম থেকে আফরিন উঠে দেখে ২০০+ কল আর ৫০ টার মতো মেসেজ। কি মরার মতো ঘুমিয়েছে। আফরিন ঘুম থেকে উঠে ব্রাশ করতে করতে বারান্দায় গেলো। পরনে মিকি মাউস এর গেন্ঞ্জি আর টাউজার তাও একটা বেশ খানিকটা উপরে তোলা। চুলগুলো মেসি বান করা। রাতে চুলখুলা রেখে ঘুমিয়েছিল তাই তাড়াতাড়ি করে মেসি বান করেছে। ব্রাশ করতে করতে বারান্দায় রাখা ফুলের গাছগুলোতে পানি দিচ্ছে আফরিন। তখনই অনু রুমে প্রবেশ করতে করতে বলে

—– আপি একটু হেল্প করবি ক্রশবেল বাঁধতে। আফরিন ভ্রু-কুচকে ইশারায় বলে

—-, আম্মু কোথায়?? অনু বলে

— আম্মু ব্রেকফাস্ট বানাচ্ছে জলদি করে দাও নয়তো লেট হবে। আফরিন । ব্রাশটা মুখে রেখেই অনুর হেল্প করে । সময় মতো আফরিন পৌঁছে যায় ভার্সিটি। প্রতিদিনের মতো সেই কাঙ্ক্ষিত জায়গায় পায় তার প্রাণের দুই প্রাণের বান্ধবীকে।

আহান অহানর সাথে কথা বলার জন্য মৌমাছির মতো ভুনভুন শব্দ করছে । আহান বলে

—– অহু,,, আমার কাকের গলার কুহু কুহু বলা কুহু। মাইনা যা মা আমার,, আর জীবনে ইগনোর করব না…

অহনা বলে

—- রাতে কল দিব একটা রিং হওয়ার সাথে সাথে যদি ফোন ধরেন তাহলে সারাজীবনের জন্য ব্রেকআপ।

আহান বলে

—– এত্তগুলা লাভ ইউ জান। ঐ কইরে তোরা তোদের আজকে পার্টি দিমু। আল্লাহর কাছে বলছিলাম অহনা মাফ করে দিলে ফকির মিসকিন খাওয়ামু আয়।

আদিত্য আর কৌশাল দাড়িয়ে ছিল গাছের নিচে দুজনেই ব্যাস্ত ছিল নিজেদের মতো। হঠাৎ করে আহানের কথায় হুস আসে। আদিত্য শার্টের হাতা উঠাতে উঠাতে বলে

—– কালকের ভিডিও টা তুই অহনাকে দেখা কৌশাল। আর আমি এই চান্দুকে দেখাচ্ছি। আহান বলে

—- ভাই জীবনে কিছু কইতাম না। অহনা পিছন থেকে বলে

—- কিসের ভিডিও? আহান বলে

—- আরে কিছু না ক্লাসে যাও।
___________

দূর থেকে এতখন দাড়িয়ে আহান, আদিত্য আর কৌশালকে দেখছিল আফরিন। কি করছে তারা। ভার্সিটি শেষে,, মাঠ পেরিয়ে ক্যান্টিনের দিকে হাটছে।

অহনা,আফরিন আর অন্যা। অন্যা বলছে

—– হায়রে ভাবতেই অবাক লাগে আমি বউ সাজবো। আমারও হাসবেন্ড হবে। আফরিন বলে

—– কৌশাল ভাইয়াকে বলবো? তোর বিয়ে বিয়ে পাচ্ছে? । অন্যা বলে

—– ঠাডায় দিমু একটা থাপ্পড়,,,, কৌশাল কোথায় থেকে আসলো? অহনা নিজের মতো চিপস খেতে খেতে বললো

—- দাঁড়া ভাইয়াকে বলে দিব তুই এইসব বলছিস। অন্যা বলে

—– তোর ভাইয়াতো আমাকে দেখতেই পারে না। বোইন না ভালো আমি তো মজা করতে ছিলাম। আফরিন বলে

—– কেমনে দেখব?? এমনি তো রিলেশন করিস নাই যখন কৌশাল ভাই প্রপোজ করল রাজি হয়ে আবার তারপরের দিন কল দিয়া বলছ ভাইয়া আমাকে মাফ করেন আমি রিলেশন রাখব না। তো তোমাকে কি করব!! মাথায় করে রাখব? অন্য বলে

—– জানোছ রাতে আমারে ঘুমায়তে দেয় নাই সারারাত কথা বলছে আর সারা দিন এটা করবা না ঐটা করবানা। ভাইরে ভাই তাই বারণ করে দিয়েছি।। আফরিন কিছু বলতে যাবে তখনই ওদের সিনিয়র একটা মেয়ে এসে আফরিনকে বলে

—–আফরিন আমার সাথে একটু আসবা কাজ আছে। প্রথম দিকে না যেতে চাইলেও পরে রাজি হয়ে যায়। মেয়েটা আফরিনকে লেকের পাশে নিয়ে যায় সেখানে আদিত্যদের সাথে পরে আলফাজ দাড়িয়ে আছে পিছনে তার চেলা পেলা। আফরিনকে দেখে আলফাজ এগিয়ে আসে আর হাতটা ধরে হাতে রিং পরিয়ে দেয় আর বলে

—– আই লাভ ইউ। আফরিন সাথে সাথে রিংটা খুলে ফেলে দেয় আর বলে

— সরি ভাইয়া আমি এই সবে নেই। বলেই চলে আসতে চাইলে আলফাজ আবার আফরিনের হাত ধরে বলে

—- আরে বেইবি। শুনো তোমাকে দেখে আমার মন বলছে। বুক চিনচিন করছে হায় মন তোমায় কাছে চায়। আফরিন এবার একটা চড় বসিয়ে দেয় । আলফাজ একটু দূরে সরে যায়। আফরিন
আর বলে,,,,,

—– একদম আমাকে টাচ করার চেষ্টা করবি না জানে মেরে ফেলবো।

আলফাজ রেগে গিয়ে এসে আফরিনের গালে চড় বসিয়ে দেয়। আফরিন তাল সামলাতে না পেরে নিচে পরে যায়। আলফাজ আবার গিয়ে আফরিনকে দাড় করিয়ে চোয়াল চেপে ধরে বলে

—– তোর সাহস কিভাবে হলো আমাকে মারা। তোকে তো আজ বলেই ধাক্কা দিয়ে নিচে ফেলে দেয়। আর সেই মেয়েটা ভয়ে দৌড়ে পালায়। আলফাজ এগিয়ে যায় আফরিনের দিকে আফরিন পিছনে যাচ্ছে সেই ভাবেই উল্টো হামাগুড়ি দিয়ে
তখনই একটা লাথি এসে লাগে আলফাজের বুকে। আর সাথে সাথে আলফাজ মাটিতে পরে যায়। মেঘলা আকাশ চারদিকে বাতাস সুসু করে বইছে। আলফাজের ছেলের মধ্যে একজন এসে আদিত্যকে মারতে আসলে কৌশাল ধরে ফেলে। আহান আর ওদের গ্রুপের সবাই এসে হাজির। আদিত্য গিয়ে আলাফজকে দাড় করায়। আর নাক বরাবর ঘুসি মেরে দেয়। এতখনে খবর বাতাসের মতো সারা ভার্সিটিতে পৌঁছে গিয়েছে। আদিত্য আলফাজের হাত মুচরে ধরে। আর মারছে। বাতাসের সাথে তাল মিলিয়ে উড়ছে আদিত্যর চুলগুলো। চোখে মুখে অসমম্ভ রাগ,,, অহনা আর অন্যা এসে আফরিনকে জড়িয়ে ধরে। আফরিনের সব কিছু মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে । এই পর্যন্ত তাকে এমন কোনো কিছুর সমক্ষীন হতে হয়নি। আফরিন আর পারেনা চোখ বুঝে নেয়। ধাক্কাটা সে সামলাতে পারে নাই। অহনা চিৎকার দিয়ে বলে

—– কৌশাল ভাইয়া,,, আফরিন আফরিন সেন্স হারিয়ে ফেলেছে। কৌশাল দৌড়ে আসে।

___________

আদিত্য যেন নিজের মাঝে নেই। এই যেন এক হিংস্র পশুর রূপ ধারণ করছে। গায়েল সিংহ। ইচ্ছে মতো মারছে আলাফজ কে। আলফাজের বুকে পারা দিয়ে বলে

—– তোকে জানে মেরে ফেলবো। কত মেয়েদের জীবন নষ্ট করবি তুই? আমার বোনের জীবনটাও তুই নষ্ট করেছিস। তোর জন্য আমি ওকে আমার থেকে দূরে রেখেছি,, তোর জন্য একটা মেয়ের জীবন নষ্ট হয়েগেছে,, মেয়েটা সুসাইড করতে চেয়েছে। তুই ভালো হবি না আর আজ আজ আম,,, তোকে আমি তখনই আহান এসে থামায় আদিত্য কে। এতোটা সময়ে সব টিচারে রা এসে জড় হয়ে গিয়েছে। কিন্তু কেউ কিছু বলার সাহস জুগিয়ে পাচ্ছে না। আদিত্য যে সহজে রেগে মারামারি করার ছেলে না সবাই জানে৷

( আসুন আলফাজ সম্পর্কে জানি। বড়লোক বাবার বখাটে ছেলে। দলবল নিয়ে আসে। আর জামা কাপড়ের মতো গার্লফ্রেন্ড বদলায়। তার নজর পরে আদিত্যের বোন রাবিনার উপর। রাবিনা একবার ভার্সিটি দেখতে এসেছিল তখনই আলফাজের নজর পরে,,, আর আদিত্য যখন জানতে পারে রাবিনাকে দেশের বাইরে পাঠিয়ে দেয়। আলফাজ কত মেয়ের লাইফ নষ্ট করেছে তা ধারনার বাইরে)

আহান বলে

—– আদিত্য,,, আফরিন,,,। আদিত্য চমকে যায় আর বলে

—- আফরিন কি? আদিত্য দৌড়ে যায় আফরিনের কাছে। অহনা অন্যা আফরিনকে অনবরত ডেকে চলছে কিন্তু আফরিনের খবর নেই। আদিত্য দেখে আফরিনের ঠোঁটের কোনে রক্ত যমে আছে। সে কিছু সময় এক মনে তাকিয়ে থেকে রক্তটা নিজ হাতের বৃদ্ধা আঙ্গুল দিয়ে রক্তটা পরিষ্কার করে দিয়ে কোলে তুলে নিল আমাদের আফরিনকে। সবাই সাইড হয়ে দাঁড়ায়। আদিত্য আফরিনের মুখের দিকে তাকিয়ে সামনের দিকে হাটছে আর তার পিছন পিছন অহনা, কৌশাল বাকি সবাই৷। অন্যদিকে ব্যাথায় কাতরাচ্ছে আলফাদের ছেলে পেলে।

——–
আফরিন যাওয়ার পর আদিত্যদের সাথে দেখা হয় অহনা আর অন্যার তখনই

চলবে

বিদ্রঃ রিচেক করিনি।