গল্পের নামঃ- #তুই_তারারে_ভিনদেশী❣️💫
লেখিকাঃ- konika islam (sanju)
পর্বঃ09
অন্যা অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।। আফরিন ইশারায় বলে প্রপোজ করতে,, অন্যা বলে
—- অন্য কিছু দিলে হয় না? আফরিন বলে
—- মানবো না মানছি না। কৌশাল ভ্রু-কুচকে হাসছে। হয়তো সে এটার জন্য প্রস্তুত ছিল। অন্যা বলে
—- প্রপোজ করতে গোলাপ লাগে। সেটা কোথায় পাবো। আফরিন আদিত্যর দিকে তাকিয়ে একটা বাঁকা হাসি দিয়ে বলে।
—– ভাইয়া আমার পার্সটার পাশে। ফুলদানিতে প্লাস্টিকের গোলাপ ফুল আছে সেখান থেকে একটা ফুল দেন।
অন্যা বুঝতে পারছে তার আর আজ কোনো বাহানা কাজ করবে না। মনে মনে সেও কৌশালকে ঠিকই লাইক করে কিন্তু তার অতিরিক্ত খেয়াল জিনিসটা অন্যার পছন্দের না। সে খোলা পাখির মতো মুক্ত আকাশে ডানা মেলে উড়তে চায়। অন্যা ফুল নিয়ে কৌশালের সামনে হাটু গেড়ে বসে বলে
—– আই লাভ ইউ। বাট আমি এই বাধ্য নিয়মে জড়াতে চাই না। আমার উপর বিশ্বাস রাখতে হবে। আর দায়িত্বটা সমান ভাবে। কারণ আমার জন্য যেমন অনেক ছেলে আছে আপনার জন্যও অনেক মেয়ে উপস্থিত আছে। আর আগের জন্য সরি।
কৌশাল ফুলটা নিয়ে বলে
—- হ্যা আমি রাজী। কিন্তু একটা জিনিস বাইরের কোনো ছেলের সাথে কথা বলতে পারবে না। অন্যা বলে
— ঠিক আছে। আফরিন বলে
—- কৌশাল ভাইয়া,, মানে আপনি এতো ভালো কিভাবে? না মানে আমিও তো প্রপোজ করেছিলাম। আপনার এই লম্বা এনাকন্ডার তালগাছ নামক বন্ধু টা আমাকে কি শাস্তি টাই না দিল। আর আপনি? আচ্ছা আদি ভাইয়া আপনিতো কৌশাল ভাইয়ার কিছু শিখতে পারেন। আদিত্যর হাতে ছিল সোফার কুশন সেটা সে আফরিনের দিকে ছুড়ে মারলো আর বলে
— আমি আদি কৌশাল না,, আর কৌশাল কৌশাল আদি না। সবাই এক না হোক সেটা কেরেক্টারের দিকে বা সম্পর্কের দিকে মাইন্ড ইট,, ইস্টুপিট। আফরিন চোখ রাঙিয়ে বলে
— খবিশ হুতুম পেঁচা একটা। আদিত্য রেগে উঠে দাড়ায় আর বলে
— কি বললা?? আবার বলো। আফরিন উঠে দাঁড়িয়ে কিচেনের একটা দৌড় দিয়ে বলে
—- কফি খাবে তোমারা? দাঁড়াও এখনি নিয়ে আসছি বলেই দৌড়। আদিত্য বলে
—- ওকে তো,,,,, তোরা থাক আসছি। আদিত্য যাওয়ার পরই সবাই হুহু করে হেসে দেয়। আহান বলে
— আদিত্যর জন্য আফরিনই ঠিক। অহনা বলে
—- হুম আফরিনের সাথে যখন আদিত্য ভাইয়া থাকে এরোগেন্ট,, এগ্রিসিভ ভাবটা খুবই কম থাকে। কৌশাল বলে
—- টম এন্ড জ্যারির নিউ ভারশন। অন্যা বলে
—- চলো আমারাও যাই দেখে আসি। কৌশাল বলে
— চুপচাপ এখানে বস। আমি মুভি সিলেক্ট করছি হেল্প কর। অন্যা বলে
— ঠ্যাকা পরছে? কৌশাল বলে
—- অন্যা তোমাকে বানিয়ে দিব বন্যা। অন্যা বলে
—- সেই বন্যা ভাসিয়ে নিয়ে যাবো। তোমাকে সহ তোমার এই এলোমেলো কথা। অহনা বলে
—- তোরা চুপ করবি? নয়তো এই ফুলদানি টা আহানের মাথায় ভাঙবো। আহান ধরফরিয়ে উঠে দাড়ায় আর বলে
—- ইন্না-লিল্লাহ,,,, আমাকে কেন মারবা আমি কি করেছি? অহনা হাসি দিয়ে বলে
—- কৌশাল আমার ভাই আর অন্যা হবু ভাবী,, তাই আর আমি ওদের মারতে পারবো না। কারো উপর না কারো উপর রাগ দেখাতে হবে। সেটা নাহয় তোমার সাথেই দেখাই। আহান বলে
—- মাথায় তুলে দিব এক আছাড়,, ফাজিল মাইয়া। কৌশাল এখানে আয় মুভি সিলেক্ট করি আর তোমরাও হেল্প কর। অহনা আর অন্যাও তাদের হেল্প করতে লাগে।
_______________
অপর দিকে কিচেনে গিয়ে। আফরিন দম নিয়ে বলে।
—- লা ইলাহা ইল্লা আংতা, সুবহানাকা ইন্নি কুংতু মিনাজ জ্বালিমিন। আল্লাহ বাঁচাও আর জীবনে রাগাইতাম না।
আফরিন এই বলে ফ্রিজ খুলতে যাবে। তখনই কেউ তাকে ধরে টান দেয় সে গিয়ে পরে তার বুকে। কিন্তু আফরিনের সেই দিকে খেয়াল নেই। তার কাছে পারফিউম এর স্মেইল টা খুব চেনা চেনা লাগছে। তার হুশ আসে তখন যখন আদিত্য তার চোখের মানে তুড়ি বাজায়। আফরিন দেখে আদিত্য রাগী চোখে তাকিয়ে আছে। আফরিনের জান যায় যায় অবস্থা। তার মাথায় থেকে পারফিউম এর ভুত পালিয়েছে। আদিত্য বলে ।
— কি যেন বলছিলে,, এনাকন্ডার তালগাছ,, হুতুম পেঁচা,, খবিশ!! আফরিন বলে
—- আই এম দুঃখিত,, আর জীবনে বলতাম না। বাঁচ্চদের মতো মুখ করে। এতো কিউট করে কেউ বললে রেগে থাকা যায়? আাদিত্য বলে
—- নেক্সট টাইম,, আফরিন বলে।
—- নো, নেভার। নাক্কো। জীবনে না। মানে বলতাম না ।
আদিত্য হঠাৎ করে আফরিনের খোঁপায় গুজা কাঠিটা খুলে নিল। পলকের মাঝেই সিল্কি চুলগুলো কমড় ছাড়িয়ে এলেমেলো হয়ে গলো। বর্ষাকাল হয়তো ঝড় হবে। কিচেনের জানলা খুলা রাখাতে বাতাসটা বেশ তিব্র ভাবে কিচেনে প্রবেশ করছে সাথে ধুলো ফ্রি। আফরিন তা দেখে দৌড়ে গিয়ে জানলা লাগাতে যায় কিন্তু ধুলোর কারণে সে চোখে দেখছেনা চুলগুলো তো আরো জালাচ্ছে। আদিত্য ধীর পায়ে গিয়ে জানলা লাগাতে সাহায্য করে আফরিনকে। আফরিন ধীরে ধীরে চোখ খুলে। হঠাৎ বিদ্যুৎ চমকায় বেশ জুড়ে। আদিত্য ভেবেছে হয়তো এখনই চিৎকার দিবে। ধারণা তার ঠিক কিন্তু ভয়ে না আনন্দে। আফরিন বলে
—– ওয়াও,,,,, উফফ কি যে ভালোলাগে,, এই শব্দটা। মন চায় রিংটোন দিয়ে রাখি। আদিত্য যেন অবাকের শীর্ষে অবস্থান করছে। আদিত্য বলে
—- তুমি একটা আনরোমান্টিক মেয়ে। আফরিন বলে
— আমি যা খুশি তাই আপনার কি? আদিত্য বলে
— আমারইতো সব,,,, কারণ তুমি আমার সাথে আবার বেয়াদবি করছো। রাগী চোখে তাকিয়ে। আফরিন বলে
—- ভাইয়া আপনি এতো দজ্জালের মতো তাকান কেন? আমার জান যায় যায় অবস্থা। আচ্ছা ভাইয়া আমার একটা কথা ছিল। আদিত্য এক ভ্রু উঁচু করে বলে
—- কি? আফরিন ফ্রিজ থেকে পানি বের করে খেয়ে বললো
—- আমি যখন ভার্সিটিতে মানে ছাঁদে থেকে নাম ছিলাম তখন আপনি সেখানে কি করছিলেন? আদিত্য আফরিনের হাত থেকে গ্লাসটা নিয়ে পানি ঢেলে খেয়ে বলে
—- প্রেমিকার সাথে দেখা করতে গিয়েছিলাম। আফরিন অবাক হয়ে বলে
—- আপনার জিএফ আছে। ওহে বালিকা তুমি ধন্য। আদিত্য ভ্রু-কুচকে বলে
—- বেশি না বুঝলে হয় না? আফরিন বলে
—- আপনিই তো বললেন। আদিত্য বলে
—- মাথামোটা। মজা করছিলাম। আফরিন আড়চোখে তাকিয়ে বলে
— আপনি মজা করতেও জানেন? আদিত্য বাঁকা হাসি দিয়ে বলে
—- খুব ভয়ংকর ধরনের মজা করতে পারি। তোমার ধারণার বাইরে।
আফরিন বলে
—- থাক থাক হয়েছে হয়েছে। বুঝছি। আচ্ছা এখন চলেন। আদিত্য বলে
—- কেন তুমি না কফি বানাবা? আফরিন বলে
—- ঐটাতো আপনার হাত থেকে বাঁচার একটা ছোট চেষ্টা ছিল। আদিত্য এবার ভবন কাঁপিয়ে হাসতে লাগে। আফরিন এক মনে তাকিয়ে আছে। এতো সুন্দর করে কেউ হাসতে পারে জানাছিল না। চোখ গুলো ছোট হয়েগিয়েছে। আদিত্যর বডি বেশ সুন্দর হয়তো প্রতিদিনই জিমে যায়। ফর্সা হাতে নীল রগ গুলো যেন তার সৌন্দর্য বাড়িয়ে দিয়েছে। গালে খোঁচা খোঁচা দাঁড়ি,,, হয়তো সেভ করা হয়নি। কালো শার্ট -পেন্ট,,,,, যেটা কৌশালেরই। তিন বন্ধুই সেম তিনজনই জিমে যায়। । এই ছেলেটার প্রতি যেকোনো মেয়ে ফিদা হয়ে যাবে। কিন্তু ভয়ে তার ধারের কাছেই যেতে পারে না। আজব তাই না? আফরিন যেন নিজের মাঝে নেই। ডুবে যেতে ইচ্ছে করছে তার আদিত্যর মাঝে। কিন্তু পরক্ষণেই নিজেকে সামলে নেয়। তখনই আদিত্য
চলবে।