তুমি কবে আমার হবে পর্ব-২১+২২

0
235

#তুমি_কবে_আমার_হবে
#পর্ব_২১
লেখিকা #sabihatul_sabha

এখানে দাড়িয়ে থাকবে নাকি বাসায় যাবে?বললো শান্ত।
সাফাঃ না এখন তো আমি বাসায় যাবো না।
শান্তঃ বাসায় যাবে না তো কি রাস্তায় থাকার প্লেন করেছো নাকি?
সাফাঃ আমাকে কি আপনার মতো গাধা মনে হয়।
শান্তঃ আমাকে কোন দিক দিয়ে তোমার গাধা মনে হয়..
সাফাঃ একটা কাজ করবেন। আজকে বাসায় গিয়ে আয়নার সামনে গিয়ে দাঁড়াবেন, যদি আয়নায় আপনার মুখ দিখা যায় তাহলে বুঝবেন আপনি গাধা আর যদি না দেখা যায় তাহলে আপনি গাধা না।
শান্ত কিছু সময় চুপ করে থেকে ভাবতেছে আয়নার সামমে দাঁড়ালেতো সবার মুখ দেখা যায় এটা দিয়ে গাধা প্রমান হয় কিভাবে?শান্তর ভাবনার মাঝেই সাফা একটা রিক্সা ডাক দিয়ে উঠে চলে যায় আর শান্ত শুধু চুপচাপ তাকিয়ে থাকে সাফার যাওয়ার দিকে।

——

মাত্র গোসল করে এসে বসলাম তখনি কলিং বেল বেজে উঠলো।
দরজা খুলে দেখি সাফা একগাল হেসে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
~তুই এই সময়?
সাফাঃ হুম দেখতেই তো পাচ্ছিস আমি। সর বলে আমাকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে বাসায় ঢুকে গেলো।

সাফা গিয়ে সোফায় বসেই আম্মু কে ডাকা শুরু করলো, ‘আন্টি ওই আন্টি এদিকে আসো..

আমি চোখ ছোটো ছোটো করে ওর দিকে তাকিয়ে আছি। আসলে ও করতে কি চাচ্ছে। বাসায় এসে আমার সাথে কথা না বলে আম্মুকে কেনো ডাকা হচ্ছে।

আম্মু হাত মুছতে মুছতে আসলেন, ‘আরে সাফা যে তুই তো এখন আমাদের বাসায় আসা বন্ধ করে দিয়েছিস।
~আন্টি তুমি তো জানোনা আমি কি অবস্থায় আছি।তাই তোমাকে দেখতে আসতে পারি না।
~হুম বুঝতে পারছি বিয়ে বলে কথা।
~সাফা লজ্জা পেয়ে বলে উঠলো, ‘আন্টি তুমি ও না।’এই কারনে না বিজি থাকি অন্য কারনে।
~হুম বুঝতে পেরেছি আর লজ্জা পেতে হবে না বস আমি খাবার বারি তদের জন্য।
~হুম তারাতারি রেডি করো কতো দিন হলো তোমার হাতের রান্না খাই না।
আম্মু খুশিতে গদোগদো হয়ে চলে যাওয়ার সময় সাফা বলে উঠে, ‘আন্টি আমি কিন্তু নূরকে নিতে এসেছি।’
~ওহ হে নূর কাল তোর বাসা থেকে এসে বলেছে আমাকে।
~আন্টি তুমিও চলো না প্লিজ প্লিজ।
~না মা বাসা তো একদম খালি। আমি বিয়ের দিন সকালেই যাবো আমার মেয়েটাকে দেখতে।

——

আমি আর সাফা দাড়িয়ে আছি ওদের বাসার সামনে।কলিং বেল টিপ দিতেই একটা মেয়ে এসে দরজা খুলে দিলো।মেয়েটাকে দেখে সাফা গিয়ে জরিয়ে ধরলো।
সাফাঃ দিয়া আপু কেমন আছো? কখন আসছো তুমি?
দিয়াঃ এইতো কিছুক্ষন আগে আসলাম।
সাফাঃ আবির ভাইয়া আসছে?
দিয়াঃ হুম এসেছে।
সাফা আমার দিকে তাকিয়ে বললো,’দিয়া আপু আমার বেস্ট ফ্রেন্ড নূর,বলে আমার সাথে পরিচয় করিয়ে দিলো। ‘
~হায় আমি দিয়া।কেমন আছো?
~হ্যালো, আমি নূর। আলহামদুলিল্লাহ ভালো,আপনি কেমন আছেন?
~এইতো ভালে এসো ভেতরে এসো।
আমি ভালো করে আপুটার দিকে তাকালাম,”বেশি লম্বা ও না আবার খাটো ও না, গোলগাল চেহারা,ফর্সা দেখতে খারাপ না।অনেকটাই সুন্দরী।

ভেতরে এসে আন্টির সাথে কথা বলে নিলাম। আন্টি তো অনেক খুশি আঙ্কেল এখনো অফিসে।
আমি আন্টির সাথে কথা বলে দরজার দিকে তাকিয়ে থমকে গেলাম, আমি পলকহীন দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি স্যারের দিকে।বুঝতে পারিনি উনি কখন আমার দিকে তাকিয়েছেন।সাফার ধাক্কায় আমার পলক পরলো।লজ্জায় এখন আমার মাটির সাথে মিশে যেতে ইচ্ছা করছে। ইসস নির্লজ্জের মতো কিভাবে তাকিয়ে ছিলাম।
রুদ্র আর চোখে এক বার তাকিয়ে উপরে নিজের রুমে চলে গেলো।
রুদ্র চলে যেতেই সাফা দিয়ার দিকে তাকিয়ে বললো, ‘দিয়াপি তোমার আশিক তো চলে এসেছে।যাও গিয়ে একটু খাতিরযত্ন করো।
দিয়া লজ্জা পেয়ে নিচের দিকে তাকিয়ে আছে।
আমি কিছু না বুঝে ওদের দিকে তাকিয়ে আছি।

——

সাফা রুমে এসেই ভাবছে রুদ্রকে ও কোনো মতেই বিয়ে করবে না। দরকার হলে ও পালাবে তাও বিয়ে করবে না।অনেক কিছু ভেবে মেঘ কে কল দিলো,
মেঘ ফোন রিসিভ করেই বললো,’সাফা তুই কি জানিস আমি এখন কি করছি?
~তোর ভাই এক গাধা তুই আরেক গাধা।আমি কি তোর সাথে আছি যে জানবো তুই এখন কি করছ।
~ওই আমার ভাই কে তোর কোন দিক দিয়ে গাধা মনে হয় হা। আর আমি গাধা মানে তুই জানোস আমার কতো গুলা গার্লফ্রেন্ড আছে। আর আমি এখন খুব টেনশনে আছি।
~তোর আবার কিসের টেনশন।এতোগুলা গার্লফ্রেন্ড থাকলে আবার কিসের টেনশন।
~আরে গার্লফ্রেন্ড নিয়ে টেনশন না। টেনশন তো তোদের বিয়ে নিয়ে।
~সাফা খুশিতে বলে উঠলো, কেনো রে তোর ভাই কি বিয়ে করবে না বলে দিয়েছে।
~তুই সব সময় এক লাইন বেশি বুঝিস কেনো।আমার টেনশন হলো আমি কি বর পক্ষ হবো নাকি কন্যে পক্ষ এই নিয়ে খুব টেনশন আছি।
~মেঘের কথা শুনে সাফার মন চাচ্ছে মেঘের চুল গুলো খুলে ওর হাতে ধরিয়ে দিতে।এটা টেনশনের কি হলো।
~সাফা শুন আমি তোর বিয়েতে নাচবো বলে ডান্স প্রাক্টিস করছি।দেখিস সব মেয়েরা আমার নাচ দেখে ফিদা হয়ে যাবে।
~খবরদার মেঘ তুই আমার বিয়েতে নাচবি না। দেখা যাবে তোর নাচ দেখে লোকজন বিয়ে না দেকে পালাবে।ভাববে পাবনার পাগল ভুল করে পথ হারিয়ে বিয়েতে চলে এসেছে।
~মেঘ মন খারাপ করে বললো,এভাবে বলতে পারলি আমি তোর বেস্ট ফ্রেন্ড এখন আবার একটা মাত্র দেবর। আচ্ছা রাখি কাল আমার অনেক কাজ ভাইয়ের গায়ের হলুদ বলে কথা। সব তো আমাকেই করতে হবে।
~আচ্ছা মেঘ একটা সুন্দর জায়গার নাম বলতো।
~বাব্বাহ! সাফা তুই তো ভিষন এডভান্স। বিয়ের কথা শুনতেই হানিমুনের প্লেন করে ফেলতেছোস।
~সাফা রেগে দাঁত কটমট করে ফোন রেখে দিলো।

——

আমি নিচে আন্টির সাথে আর দিয়া আপুর সাথে এতোক্ষন আড্ডা দিলাম। আপুটা খুব মিশুক এই কিছু সময়ের মধ্যে একদম মিশে গেছে।
আপু আপুর রুমে চলে গেলো, আন্টি গেলো রান্না ঘরের দিকে। আমি উঠলাম আমার আর সাফার রুমের দিকে যাওয়ার জন্য। পিছন ফিরতেই চেয়ারের সাথে লেগে পরে যাচ্ছি লাম। সামনে কাওকে দেখে আশ্রয় হিসেবে তার শার্টের কলার চেপে ধরলাম।শার্টের কলার ধরার কারনে বুকের উপরের বোতাম ছিঁড়ে যায়।

আমি ভয়ে উপরের দিকে তাকিয়ে দেখি রুদ্র স্যার। ভয়ে ভয়ে স্যার কে বললাম,’প্লিজ স্যার বকবেন না। আমি ইচ্ছা করে ছিঁড়িনি। আমি আপনাকে আরেকটা শার্ট কিনে দিবো।

রুদ্র চুপচাপ ক্ষীন দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে বললো,’আম্মু আমার রুমে কফি পাঠাও বলে আবার নিজের রুমে চলে গেলো।
আমি এখনো ভয়ে আছি। যাক কিছু বলেনি এটাই অনেক।
পেছনে ফিরে দেখি দিয়া আপু রুম থেকে দৌড়ে বের হয়ে রান্না ঘরে গিয়ে আন্টিকে বললো,মামুনি আমাকে দাও আমি দিয়ে আসি।
~তুই দিয়ে আসবি এই নে। ধমক খেলে কিছু আমার কাছে এসে ভ্যাঁ ভ্যাঁ করে কান্না করতে পারবি না।
~আচ্ছা করবো না। বলেই কফি নিয়ে ছুটলো রুদ্রের রুমের দিকে।

আমি পিছনে ফিরতে নিয়ে কার সাথে যেনো বারি খেয়ে নিচে পরে গেলাম।
নিচে পরেই বলতে লাগলাম,শালার কপালটাই খারাপ যেদিকে যাই সেদিকেই ধাক্কা খেয়ে পরে যাই।আজ কি সবাই ভেবেই নিয়েছে আমাকে ধাক্কার উপরে রাখবে।

চলবে…..

ভুলত্রুটি মার্জনীয়।

#তুমি_কবে_আমার_হবে
#পর্ব_২২
লেখিকা #Sabihatul_Sabha

আমি উপরের দিকে তাকিয়ে দেখি আমার দিকে এক হাত বারিয়ে আছে একটা ছেলে ভালো করে ছেলেটার চেহারা দেখে আমি তো অবাক।এই ছেলেটাকে তো আমি কলেজে দেখেছি। আমাদের সিনিয়র ভাই হয়।

~হা করে তাকিয়ে না থেকে হাতটা ধরে উঠো।
~আমি আবারো লজ্জা পরে গেলাম। আজ কি আমার তাকিয়ে থাকার রোগ হইছে নাকি।উনার হাত না ধরেই আমি দাঁড়িয়ে গেলাম।
উনি আমাকে কিছু বলতে যাবে তখন সাফা এসে উনাকে জরিয়ে ধরে বললো,’আবির ভাইয়া কেমন আছো?’
আবিরঃএই তো নাপার বিয়ে আর আমি ভালো থাকবো না তা কি হয়।
সাফা যতো টুকু খুশি হয়ে আবিরের কাছে এসে ছিলো তার থেকে দ্বিগুণ রেগে গেলো। সব সময় আবির সাফা কে নাপা বলে খেপায় আজো যাবে তখন একটা বিকট শব্দ হলো সবাই দুই তালার দক্ষিন রুমের দিকে তাকালো।ওই রুমটা রুদ্রের।তাকিয়ে দেখে দিয়া আপু গালে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে চোখে পানি টলমল করছে যেনো এখনি টুপ করে পরে যাবে।
সাফা বলে উঠলো, ‘এটা নতুন কিছু নয়। দিয়া আপু যখনি ভাইয়ার রুমে যাবে একটা না একটা ভুল করবে আর ভাইয়ার হাত আপুর গালে চলে যাবে।

আপু নিচে নেমেই কারু সাথে কিছু না বলে নিজের রুমে চলে গেলো।(দিয়ার রুম নিচে,।সাফার রুম রুদ্রের রুমের পাশে।আর আবিরের রুম সাফার রুমের পাশে।দিয়া কফি নিয়ে রুদ্রের রুমে নক না করেই চলে যায়।তাই রুদ্র দিয়া কে এক পা উপরে তুলে কানে ধরে দাঁড়িয়ে থাকতে বলে। দিয়া এক পা উপরে তুলে দারানোর সময় পরে যায় রুদ্রের উপর। রুদ্র ওকে উঠতে বললে, দিয়া ভুলে মুখ ফস্কে বলে ফেলে,’ভাইয়া তুমি কি পারফিউম ব্যাবহার করো।মন চায় তোমাকেই টুপ করে খেয়ে ফেলি। সাথে সাথেই রুদ্রের হাত দিয়ার গালে,তারপর রুম থেকেই ভের করে দেয়।)

——

সাফা ভালো করে বাসাটা একবার দেখলো কেউ জেগে আছে কি না।তারপর আসতে আসতে বাসা থেকে বেরিয়ে গেলো। সাথে কিছুই নেয়নি শুধু কিছু টাকা নিয়েছে।বাসার হাব ভাব বুঝে বাসায় আসবে। যত যাই হয়ে যাক সে এই বিয়ে করবে না।
পাঁচ মিনিট হেঁটে বাসা থেকে কিছুটা দূরে চলে আশে।কিন্তুু তার আর সামনে যাওয়ার সাহস হলো না।নিজের হাতে নিজেই চিমটি কাটলো না সত্যি শান্ত ওর সামনে দাড়িয়ে আছে। শান্ত এমন ভাবে দাঁড়িয়ে আছে যেনো তারা দুইজন এক সাথেই পালাবে।সে সাফার জন্য অপেক্ষা করছে। গাড়িতে হেলান দেওয়া অবস্থায় শান্ত একবার সাফার দিকে তাকিয়ে আবার ঘড়িতে সময় দেখে নেয়।তারপর সাফার সামনে এসে বলে,
~ মাত্র সাড়ে এগারোটা বাজে। পালানোর জন্য এটা সঠিক সময় না।
সাফার ভয়ে একবার এদিকে আরেক বার ওদিকে তাকাচ্ছে। তারপর মিনমিন সুরে বললো, ‘কোথায় আমি পালাচ্ছি।
~ওমা তুমি পালাচ্ছ না!!।তাহলে এখানে কি করতে এসেছো?ওহহ বুঝতে পেরেছি আমাকে মিস করতে ছিলে বুঝি।আহা তোমার কষ্ট করে আসার কি দরকার ছিলো আমাকে ফোন করতে তাহলে তোমার কাছে চলে আসতাম।
সাফা দাঁতে দাঁত চেপে বললো, ‘আপনি এখানে কি করছেন?
~শশুর বাড়ির সামনে মানুষ কি করতে আসে?
~আমি কিভাবে জানবো কি করতে আসে।আমার কি আরো চারটা জামাই আছে যে জানবো কি করতে আসে।
~তুমি তো একটা জামাই না না হবু জামাইর ভয়ে পালাচ্ছ। আরো চারটার স্বপ্ন দেখো কিভাবে!!!!

সাফার রাগে মন চাচ্ছে নিজের চুল নিজেই ছিরতে।যাক ভালোই হয়েছে সাথে জামা কাপড় কিছুই আনেনি। আনলে তো সেই লেভেলের ধরা খেতো।

শান্ত বললো,’অনেক রাত হয়েছে বাসায় যাও।আর হে পালানোর কথা ভুলে যাও। তুমি চাও বা না চাও আমাকেই বিয়ে করতে হবে তোমার।শেষের কথা গুলো বলার সময় শান্তর চোখ মুখ লাল করে বললো।

সাফা বাসায় চলে আসলো। এসেই আমাকে জরিয়ে দরে ঘুমিয়ে গেলো।সাফা কখনো রাত জাগতে পারে না। যত যাই হোকনা কেনো ও চুখ বন্ধ করলেই ঘুম।

——
সকালে উঠে নামাজ পড়ে নিলাম আমি আর সাফা। তারপর বাগানে গেলাম দু’জন হাটতে।কিছুক্ষন পর আবির ভাইয়া আর দিয়া আপুও এসে জোগ হলো আমাদের সাথে।
আবির ভাইয়া কে দেখে সাফা বললো,’ভাইয়া তোমার সাথে তো নূরের পরিচয় করাইনি।নূর আমার বেস্ট ফ্রেন্ড আর নূর এই হলো আমার কিউউট আবির ভাই বলে আবির ভাইয়ার গাল ধরে টানা শুরু করলো।আর আমাদের সিনিয়র । ওই দিন তো তুই কলেজ আসিস নি মেঘা এসেছিলো ভাইয়ার সাথে দেখা হয়। তারপর মেঘার সাথে ভাইয়ার পরিচয় করিয়ে দেই।

আরো কিছু সময় হাঁটা হাঁটি করে রুমে চলে আসি।

——
আসতে আসতে বাসায় আত্মীয় স্বজনরা চলে আসছে। বাসায় এখন সাফার ফুপিমণি, দাদু, কাকিমা উনাদের ছেলে মেয়ে, সাফার নানু বাড়ির লোকজন সব মিলিয়ে বাসা একদম গিজগিজ করছে মানুষে।

——

মেঘা হলুদের মধ্যে লাল পারের শাড়ি পড়ে আর চুল খোঁপা করে নেয়। প্রথম বার সে শাড়ি পরেছে।কোনো অনুষ্ঠানেই মেঘা কখনোই শাড়ি পরে না।আজ পড়ার কারণ হলো আবির।মেঘা জানে আজ আবির আসবে৷ আর সেই জন্যই শাড়ি পরা। আবির সব সময় সর্ট পাঞ্জাবি পরতে দেখা যায়। তাই সে মিল রেখে শাড়ি পরেছে।

মেঘা আমাদের দেখেই এসে জরিয়ে ধরলো।

~মেঘা তকে তো একদম হলুদ পরি লাগছে রে।
মেঘাঃ এই প্রথম শাড়ি পরেছি আমি,মনে হচ্ছে খুলে যাবে খুলে যাবে।
~আরে প্রথম তো এই জন্য এমন মনে হয়। আসতে আসতে ঠিক হয়ে যাবে।
সাফা এসেই মেঘা কে দেখে বললো,’ওরে বাব্বাহ তরে তো সেই লাগছে। আজ কতো ছেলে যে হার্ট মিস করে আল্লাহ জানে।
মেঘা মনে মনে বললো,কেউ করা লাগবে না শুধু তোর ভাই আবির করলেই চলবে।

——

মেঘার অসীম আনন্দের সুযোগ দিয়ে সেম কালারের পাঞ্জাবি পরে আবির।
আবির,রুদ্র, মেঘ সবাই হলুদ পাঞ্জাবি পরেছে। গায়ের হলুদের দিন তাই সবাই সেম কালার।
রুদ্রকে দেখে মনে হচ্ছে কারু জন্য অপেক্ষা করছে। সাথে খুব চিন্তিত লাগছে তাকে।
রুদ্র মনে মনে ভাবছে এখন যে আসবে তাকে দেখে নূরের রিয়াকশন কি হবে।নূর কি রাগ করবে নাকি কষ্ট পাবে। আবার মনে হচ্ছে খুশি হবে সব মিলিয়ে রুদ্র খুব টেনশনে আছে। এদিক সেদিক দেখতে দেখতে হটাৎ সামনে তাকিয়ে যেনো থমকে গেলো রুদ্র।

এদিকে,মেঘা মনে হয় খুশিতে মরেই যাবে।আবির কে যতক্ষন দেখা যায় মেঘা শুধু তাকিয়েই থাকলো।আবিরের হাসি দিলে মন চায় টুপ করে খেয়ে ফেলি।এতো কিউট কেনো আপনি।ইসস কতো মেয়ে তাকিয়ে আছে মন চাচ্ছে সব গুলার চোখে মরিচের গুঁড়ো ছিটিয়ে দিতে।আবিরের কপালে কালো টিপ দিয়ে আসতে।যেনো কুনজর না পরে। আবার নিজে নিজেই ভাবছে এভাবে তাকিয়ে থাকলে তো নিজের নজরি লেগে যাবে।

মেঘ এদিক ওদিকে তাকাচ্ছিলো আর মেয়েদের সাথে যত দরনের ফ্লার্ট করা যায় তা নিয়েই বেস্ত।যত যাই হোক একমাত্র বেয়াই বলে কথা।

রুদ্র মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে আছে, ‘হলুদ শাড়ি, খোলা চুল, চোখে কাজল,ঠোঁটে মেরিন কালার লিপস্টিক,এক হাতে চুরি অন্য হাতে ঘড়ি।অপুর্ব সুন্দরী লাগছে মেয়েটাকে। আমি রুদ্র স্যারের দিকে তাকাতেই উনি অন্য দিকে ফিরে গেলেন।

দিয়াও হলুদ শাড়ি,দুই হাত ভর্তি চুরি,চোখে মোটা করে কাজল,ফর্সা মুখ।খুব সুন্দর লাগছে।
দিয়া এদিক ওদিকে রুদ্র কে খুঁজে চলেছে।আজ যদি দশটা থাপ্পড় ও খায় তাও সে আজকে রুদ্র কে তার ভালোবাসার কথা বলবে।

সাফা হলুদ শাড়ি,হাতে, গলায়,মাথায় ফুলের গয়না,হালকা সাজে অপূর্ব সুন্দর লাগছে সাফা কে।আজ যদি শান্ত একবার দেখতো সাফা কে হয় তো কয়েক বার হার্ট মিস করে ফেলতো…

চলবে…

ভুলত্রুটি মার্জনীয়।