তোর উঠানে বিকাল ছায়া পর্ব-১৩

0
609

#তোর_উঠানে_বিকাল_ছায়া🥀
১৩তম খন্ড
#লেখিকা-লামিয়া রহমান মেঘলা

ওয়াসরুমের দরজা ফাঁকা করে দেখতে চাইছি ঘরে কেউ আছে কি না।
মরনের মরন শাড়ি আনতে ভুলে গেছি।
তার উপরের মরন ভালো এক মানুষের সাথে বিয়া দিছে মায়ে শাড়ি না পরলে নাকি হবে না।
এমনি পিচ্চি একটা মানুষ তার উপর শাড়ি চাপায় দিছে।
আমি উকিঝুকি মারছিলাম সেই তখনি হটাৎ নির্ঝর আমার মুখের সামনে জামা ধরলো।
–নপও শাড়ি পরতে হবে না কষ্ট করে জামাই পরো। আর জলদি বাইরে এসো পড়ালেখা করতে হবে।
নির্ঝর গম্ভীর গলায় কথাটা বলল।
আমি একটু মুখ বের করে তাকিয়ে জামাটা নিয়ে আবার দরজা লাগিয়ে দিলাম।
–ভালো হোক মন্দ হোক সে ত আমারি।
★★★
ছায়া কথাটা বলে জামা পরে নিলো।
কিছুক্ষণ পর বেরিয়ে এলো,
নির্ঝর চুপচাপ বসে আছে।
–হলো তোমার।।
–হুম৷

এসো পড়তে বসো অনেক দিন হলো কিছুই পড়ালেখা হয় না কলেজ বন্ধ এখন পড়ালেখা করতে হবে আমার কাছে সামনে মেডিকেল পরিক্ষা দিতে হবে।
–আপনি পড়াবেন আমাকে (এক্সাইটেড হয়ে)
–বাবা পড়ার জন্য এক্সাইটেড কি।
–না পড়ার জন্য কি কেউ এক্সাইটেড হয় নাকি।
আপনি পড়াবেন তাই এক্সাইটেড।
–আচ্ছা তাই নাকি।
এসো তাহলে বসো।
নির্ঝর ছায়াকে পড়তে বসায়।
ছায়া বেশ অনেকটা সময় স্টাডি করে
যেহেতু তারা পড়ালেখা করছে তাই তাদের রুমের দরজা টা খোলা।
তমা নিজের রুম থেকে বেরিয়ে এদিক ওদিক হাটাহাটি করছিল।
কিন্তু তখনি সে দেখতে পায় নির্ঝর আর ছায়ার রুমের দরজা খোলা।
তমা তাদের রুমের দরজার সামনে এসে লুকিয়ে দাঁড়ায়।
ছায়া নিচু হয়ে লেখা করছিল। একটা প্রশ্ন।
নির্ঝর ছায়ার মাথা নিচু থাকায় দেখতে পেল বাইরে থাকা তমাকে।
নির্ঝর কিছু না বলে ছায়াকে তুলে হটাৎ তার উপর উবু হয়ে শুয়ে তার ঠোঁট আঁকড়ে ধরলো।
হটাৎ এমন কিছু হবে তা ছায়া কল্পনা করতে পারে নি।
কি হলো তাই বুঝতে পারে নি কিছু সময়ের মধ্যে ।
তমা নির্ঝর এর এমন কাজ দেখে চোখ বড়ো বড়ো করে তাকিয়ে পরে।
রাগে হাতের কাছে থাকা ফুলদানি ফেলে দেয়।।
বাইরে শব্দ হওয়ায় ছায়া হাত মুচাড়াতে থাকে ছাড়ার জন্য কিন্তু নির্ঝর আরও আঁকড়ে ধরে ছায়াকে।
ছায়া পুরাই ফ্রিজ৷
তমা এগুলা দেখে রেগেমেগে চলে গেল।
তমা যেতে নির্ঝর ছায়াকে ছেড়ে দেয়।
ছায়া জলদি তড়িঘড়ি করে উঠে যায়।
নির্ঝরের হাসি পাচ্ছে কিন্তু তাও গম্ভীর গলায় বলল,
–সরি লেখো প্রশ্ন টা লেখো।
ছায়া নিশ্চুপ।
চুপচাপ নির্ঝর থেকে একটু সরে পড়তে বসে।
নির্ঝর তা বুঝতে পেরে হেঁসে দেয়।
ছায়া চুপচাপ পড়া করে দেয়।
বেশ অনেকটা সময় পড়ালেখা করে নির্ঝর ছায়াকে পড়া দিয়ে ছেড়ে দেয়।
ছায়া উঠে বাইরে চলে আসে।।
বেশ অনেকটা সময় পড়ালেখা করাতে একটু রেস্ট দরকার।
ছায়া বাইরে এসে নিচে চলে আসে।
নয়লা বেগম বসে আছে সোফায়।
–আসসালামু আলাইকুম মা।
–ওয়া আলাইকুম সালাম।
কি খবর ছায়া।
–এই ত মা ভালো আপনি কই ছিলেন এই দুই দিন৷
–আমি তোমার এক আন্টির বাসায় গেছিলাম।
–আন্টির বাসায়!
–হ্যাঁ।। —
–কিন্তু আপনার যে কোন বোন নাই।
–হ্যাঁ নাই ও আমার খুব কাছের এক বান্ধবী।
–ওহ আচ্ছা।
–কিরে ছায়া বাইরে চলে এলি যে।
–কেন?
–না ঘরে ত ভালোই কাজ করছিলি (কিছুটা ঠ্যাস মেরে)
–আমি পড়াছিলাম আপু ওনার কাছে।
–কি তুই পড়ালেখা করছিলি!
–তুই এমন বলছিস কেন সত্যি আমি পড়তেছিলাম।
–তুই,
–তমা তুমি কি শুরু করেছো।
–মা আমি কি শুরু করলাম।
–কি না শুরু করলে যাও আবিরের কাছে যাও ওর কিছু লাগবে কি শুনো।
শাশুড়ী মায়ের ধমকে তমা রুমে চলে যায়।
আর ছায়া ভ্যাবলার মতো তাকিয়ে রয় কি হলো কিছুই বুঝতে পারছে না সে।
এদিকে উপরে পকেটে এক হাত গুজে নিচের সব দৃশ্য দেখছিল নির্ঝর।। তমা চলে যাওয়াতে একটা বাঁকা হাসি দিয়ে ছায়াকে ডাক দেয়,
–ছায়া।
উপর থেকে নির্ঝর এর কন্ঠ পেয়ে ছায়া উপরে তাকায়।
–জি।
–দুই কাপ কফি নিয়ে এসো।
–দুই কাপ কেন।
–প্রশ্ন করো কেন যা বলি তাই করো যাও।
নির্ঝর এর কথায় ছায়া গিয়ে কফি বানাতে বসে।
গিয়ে দুই কাপ কফি বানিয়ে উপরে আসে।
কিন্তু রুমে নির্ঝর নাই।
বেলকনিতে উকি দিয়ে দেখে নির্ঝর পকেটে হাত দিয়ে বাইরের দিকে তাকিয়ে।
ছায়া গিয়ে পেছন থেকে নির্ঝর কে কফির কাপ দেয়।
নির্ঝর ছায়ার থেকে কফিটা নিয়ে একটা চুমুক বসায়,
–অন্য টা তোমার।।
–আচ্ছা।
ছায়া নির্ঝর এর পাশে দাঁড়িয়ে বাইরের দিকে তাকিয়ে আছে।
বাতাসে ছায়ার চুল গুলো উড়ে একটা দুটো নির্ঝর এর মুখে লাগছে।
নির্ঝর এর তাতে ভিশন ভালো লাগছে।
ছায়াকে এভাবে পাশে পেতে চায়।
এভাবে কাছে রাখতে চায়।
চায় না হারাতে এতো ভালোবাসা।
শুধু নির্ঝর ই না পৃথিবীর কেউই চাইবে না এমন ভালোবাসাকে হারাতে।
সত্যি ভিশন ভালোবাসে নির্ঝর ছায়াকে।
–ছায়া।
–জি!
–ভালোবাসো আমায়?
–ভালোবাসি বই শুধু না অন্য দের থেকে একটু বেশি।
ছায়ার মুখে এমন উত্তর শুনে নির্ঝর সত্যি কাঁদো চোখে ছায়ার দিকে তাকায়।
পৃথিবীতে এই এক মাত্র ছায়াই তার সঙ্গী।
–তুমি জানো ছায়া তোমার মুখে এই উত্তর টা আমার কাছে সব থেকে বড়ো পাওয়া।
–সত্যি!
–হুম প্রথম যখন ইন্টারনির এক বছর পর সব থেকে ভালো ডক্টর হিসাবে নাম পেয়েছিলাম তখন এতো খুশি লাগে নি।
ছায়া নির্ঝর এর দিকে তাকিয়ে আছে,
–এভাবে তাকিয়ে কি মেরে ফেলবে।
কফির মগ রেখে ছায়াকে পাজকোলে করে কথাটা বলল নির্ঝর।
–কি করছেন নামান।
–নদহ এখান আর চান্স নাই।
কথাটা বলে এক চোখ মেরে রুমে চলে এলো নির্ঝর।
,
,
,
–ছায়া ছায়া ছায়া কি ভিশন ভালোবাসি জানো তুমি।
সেই কতো বছর আগে থেকে তোমার দিকে আমার নজর।
বিয়ে করব আমি তোমায় তা না বিয়ে হলো ওই নির্ঝর এর সাথে তোমার।
কেন হলো ছায়া তুমি কেন হলো।
একের পর এক ড্রিংক করছে আর মাতাল কন্ঠে কথাগুলো বলছে আদনান।

–গার্ডস,
–জি স্যার।
চলবে,