নবপ্রণয় পর্ব-০১

0
200

#নবপ্রণয় ( সূচনা পর্ব)
#হৃদিতা_রহমান

চার মাসের সন্তান পেটে নিয়ে বাসর ঘরে বসে আছে রুহি। কিন্তু, তারচেয়ে বড় কথা হলো বিয়েটা হলো নিজের দেবরের সাথেই। প্রথম কথাটা কোনো রকমে মানা গেলেও দ্বিতীয় কথাটা শুনার সাথে সাথে আমাদের সমাজ চোখ বাকিয়ে তাকাবে। নেতিবাচক কথা বলার জন্য মানুষ লাইন ধরে দাড়াবে। এরকম লাইন হয়ত দশ টাকা কেজি চাউল নেওয়ার জন্য টিসিবির গাড়ির পেছনেও হয় না। কিন্তু, কে কি বললো বা কে কেমন চোখে দেখলো তাতে রুহির কিছুই যায় আসে না। জিবনটা তার, সমাজে বসবাস করা মানুষদের নয়। সেদিন এই বিয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় রুহির মনে হলো,হঠাতই যেনো বয়স দশ বছর বেড়ে গেলো। মনটা হয়ে গেলো বড্ড কঠিন প্রকৃতির। মূলত দুইটা কারনে, এরকম সিদ্ধান্ত নিতে হলো রুহিকে। প্রথমত,আবিদকে দেওয়া কথা রাখা। দ্বিতীয়ত, অনাগত সন্তানের জন্য। সে যেনো দুনিয়ায় এসে বুঝতে না পারে সে এতিম।

রুহি রুমের দেওয়ালে টাঙানো দেওয়াল ঘড়ির দিকে চাইলো। ঘড়িতে রাত ১২ টা। রুহির খুব ঘুম পাচ্ছে। শুধু শুধু আবিরের জন্য বসে থাকার কোনো মানে নেই। রুহির মনে হচ্ছে আবির আজ রুমে আসবে না। বিয়ের সময় কবুল বলেই উদাও হয়েছে সে। তারপর আর দেখা নেই। হাই তুলতে তুলতে রুহি মনে মনে বললো,” ছেলেটার সাথে কথা বলা দরকার।” বিছানায় পিঠ দেওয়ার সাথে সাথে ঘুমে চোখ বন্ধ হয়ে গেলো রুহির। আবিদের বাধানো ছবিটা বুকে নিয়ে ঘুমিয়ে পড়লো সে।

” বউমাকে বাসর ঘড়ে একা রেখে এত রাতে ছাদে কি করছিস? ”

বাবার কণ্ঠ কানে আসতেই আবির চমকে উঠে পেছন দিকে তাকালো। বাসর ঘড়ে যাবে না বলেই ছাদে এসে বসে আছে সে। কি করে যাবে বাসর ঘরে, যেখানে বউ সেজে বসে আছে আপন ভাবী। আবির তারাতাড়ি করে উঠে দাড়িয়ে বললো,
” কিছু করছি না বাবা,এমনিতেই বসে ছিলাম। আচ্ছা, রুমে যাচ্ছি । ”

আবির বাবাকে পাশ কাটিয়ে যেতে নিলেই জামান সাহেব ছেলেকে ডাক দিলেন। আবির থামলো, কোনো কথা না বলে বাবার দিকে তাকিয়ে রইলো। এক মুহূর্ত পর জামান সাহেব আবিরের কাধে হাত রেখে বললেন,
” সব ঠিক হয়ে যাবে। আমরা তো আছি। তাছাড়া,আমি মনে করি তুই যথেষ্ট বড় হয়েছিস, বুঝতে শিখেছিস। রুহিকে কখনো কষ্ট দিবি না, এটা আমার অনুরধ নয়,আর্দেশ।”

ঘড়িতে রাত দেড়টা,
আবির রুমের সামনে এসে দাড়ালো। বুকের মধ্যে ধুকপুক করছে তার। নিজের রুমে ঢুকতেই কেমন যেনো অসস্তি হচ্ছে আজ। তিন ঘন্টা আগে যে মানুষটা সম্পর্কে ভাবী ছিলো এখন সে সম্পর্কে স্ত্রী। বড় ভাবীর চোখে দেখা আসা মানুষটাকে হঠাৎকরে স্ত্রীর চোখে দেখবে কেমন করে সে? মিনিট কয়েক দাড়িয়ে থেকে মনের সমস্ত দ্বিদা-দন্দ ভুলে দরজা ঠেলে রুমে পা রাখলো আবির। রুমে লাইট জ্বালিয়েই রুহি ঘুমিয়ে পড়েছে। আবির বিছানার পাশে এসে দাড়ালো, বাচ্চাদের মত জরসর হয়ে ঘুমিয়ে আছে রুহি। পরনে এখনো বিয়ের শাড়ি। রুহির পাশেই বিছানায় পড়ে আছে একটা বাধানো ছবি।ছবিটা আবিদের, মুখে মুচকি হাসি জোরা ভ্রুর মাঝখানে মায়াবী এক জোরা তীক্ষ্ণ চোখ, গায়ে সামরিক বাহিনীর পোশাক, কাধে ক্যাপ্টেনের ব্যাজ। আবির একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললো। তারপর রুমের লাইট নিভিয়ে সোফায় এসে শুয়ে পড়লো।দিনটা নানা কাজে, নানা ভাবে ব্যাস্ততার মধ্যেই কেটে গেলো।মাথাটা ফ্রি হতেই হাজারো চিন্তা এসে ভীর করলো মাথায়।

জিবন নাটকের চেয়ে নাটকিয়, সিনেমার চেয়ে সিনেমাটিক। দুনিয়া কারো নিয়মে চলে না। প্রকৃতির নিয়মে মানুষকে চলতে হয়। আর এই চলার পথে আমাদের জিবনে আসে হাসি-কান্না,সুখ-দুঃখ, প্রেম-ভালোবাসা ইত্যাদি। আমাদের নিজের বলে কিছু নেই, সবই প্রকৃতির। প্রকৃতি চাইলে আমাদের জিবনে আনন্দ আসে আমরা তখন হাসি, আবার প্রকৃতিই আমাদের দুঃখ দেয় আমরা তখন কাদি। এই হাসি -কান্না আর অজানা ভবিষ্যৎ নিয়েই আমাদের জিবন।

মানুষের জিবনে সবচেয়ে বড় বড় ঘঠনা গুলো কখনো নিয়ম বা প্লান মোতাবেক ঘঠে না। অনাকাঙ্ক্ষিত ভাবে ঘঠে যায়৷ তারপর সেই ঘঠনার ফলাফল আমাদের হয় সুখি করে নয়ত দুখি। এর বেশি কিছু না।

এক বছর আগেও আবির যানতো না কতটা দুঃখ অপেক্ষা করছে তার বা তার পরিবারের জন্য। শেষ বার যখন আবিদের সাথে দেখা হলো আবির যানতো না এটাই ভাইয়ার সাথে শেষ দেখা। আবির কখনো কল্পনাও করে নি ভাবিকে তার বিয়ে করতে হবে। একের পর এক ঘঠনা ঘঠছে, সব গুলো ঘঠনাই অনাকাঙ্ক্ষিত। এবং দুঃখজনক।

সকালে রুহির ডাকে আবিরের ঘুম ভাঙ্গলো। আবির চেখ খুললো,রুহি বিয়ের শাড়ি বদলে ফেলেছে। পরনে সাধারন একটা শাড়ি। গোলাপি রঙের শাড়িতে অপৃর্ব লাগছে রুহিকে। গোসল করেছে মনে হয়। চুলের আগা থেকে পানি পড়ছে ফোটা ফোটা। রুহির দিকে এভাবে চেয়ে থাকার জন্য আবির নিজেই লজ্জা পেলো। তারাতারি চোখ ফিরিয়ে নিলো সে। রুহি বললো,
” আর কত ঘুমাবে? সকাল হয়ে গেছে, উঠো এখন। ”

রুহির কথাবার্তা, ব্যবহার একদম স্বাভাবিক। রুহি আবিরকে ডেকে তুলে রম থেকে বেরিয়ে গেলো। আবির ফ্রেশ হয়ে, ভার্সিটিতে যাবার জন্য রেডি হয়ে নাস্তার টেবিলে এসে দেখে সবাই আছে। আবির বসে চুপ চাপ খাওয়া শুরু করলো। আবিদা বেগম আবিরকে জিজ্ঞেস করলেন,
” ভর্সিটিতে যাবি?”

আবির খেতে খেতেই জবাব দিলো,
” হুমম”

” আজ না গেলে হয় না? ” জিজ্ঞেস করলেন আবিদা বেগম। আবির বললো,
” যাবো না কেনো? ”
” না মানে, বিয়ের পরদিন কোথাও না যাওয়াই ভালো ”

রুহি শ্বাশুড়ির দিকে তাকিয়ে বললো,
” আম্মা বিয়ের পরদিন বলে তো খাওয়া থেমে নেই, দিন তো দিনই। বিয়ের দিন বলে একটা কথা যদিও থাকে কিন্তু বিয়ের পরদিন বলে কিছু নেই। প্রতিদিনই সমান। সো,আবির ভার্সিটিতে যাক। ”

জামান সাহেব বললেন,
” রুহি ঠিকই বলেছে, আমিও বিয়ের পরদিন আসামী ধরতে বেরিয়েছিলাম। তোমার মনে আছে? তখন বান্দরবান থাকতাম…

আবিদা বেগম স্বামীকে থামিয়ে দিয়ে বললেন,
” তুমি থামো, সেই গল্প অনেক শুনেছি।আর শুনতে চাই না। ”

” ভালো কিছু তো শুনতে চাইবে না। ”

বাবা মায়ের কথা কাটাকাটির মাঝখানে আবিরের খাওয়া হয়ে গেলো। আবির উঠে দাড়াতেই জামান সাহেব আবিরের দিকে কিছু টাকা বাড়িয়ে দিয়ে বললেন,
” নে ধর রেখে দে তোর কাছে। কাজে লাগবে।”

বাবার কাছ থেকে আবির কখনো টাকা পয়সা নেয় নি। এর আগে কবে বাবার হাত থেকে টাকা নিয়েছিলো মনেই পড়ে না। সারা জিবন এই মানুষটার সাথে দূরত্ব বজায় রেখে চলেছে। ছোট বেলা থেকেই আবির বাবাকে ভয় পায়। যত যাই দরকার হোক আবির হয় মা, না হয় ভাইয়ার কাছ থেকে নিতো। আবিরের জিবনে বাবা একটা শব্দ ছিলো মাত্র। বাবার সাথে আবিরের এই দুরত্বের কারন, বাবার মনমত পড়াশোনা না করা,মন মত রেজাল্ট করতে না পারা। জামান সাহেব অবঃ এসপি। রাগী মেজাজের জন্য ডিপার্টমেন্টে তার নাম ছিলো । সেটা সুনাম নাকি বদনাম বুঝা যায় না। পুলিশের চাকরি জিবনে তিনি ছিলেন অত্যান্ত কড়া। কখনো কোনো কিছুতে এক চুল ছাড় দেয় নি। সারা জিবন ন্যায়ের পথে ছিলেন এবং অসংখ্য ভালো কাজ করেছেন। ভাইয়াও ছিলো বাবার মন মত পাত্র। সে পড়াশোনা, খেলাধুলা সব কিছুতেই ছিলো সেরাদের সেরা। এই কারনে বাবার সমস্ত আদর, স্নেহ, ভালোবাসা আবিদ পেতো। তবে এই বিষয় নিয়ে আবিরের কখনো মন খারাপ হতো না, কারন ভাইয়া তাকে অসম্ভব ভালোবাসতো। কিন্তু ভাইয়া মারা যাবার পর থেকে আবির লক্ষ্য করছে, বাবা কেমন যেনো পরিবর্তন হয়ে গেছে। আগের মত রাগ,তেজ কোনোটাই নেই। সবার সাথে মিশতে চাইছে,কথা বলছে, গল্প করছে। আবির আমতা আমতা করে বললো,
” টাকা লাগবে না বাবা। আমার কাছে টাকা আছে। ”

জামান সাহেব বললেন,
” না লাগলেও নে, রেখে দে কাছে। যখন দরকার হয় তখন খরচ করিস। ”

আবির বাবার হাত থেকে টাকা নিয়ে বেরিয়ে এলো। ভার্সিটিতে এসে ক্লাসে ভালো লাগলো না, বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতেও ইচ্ছে করলো না। এদিকে বাড়িতে ফিরতেও অস্বসতি লাগছে। বাড়িতে গেলেই ভাবীর সাথে দেখা হবে। ভাবীর কাছ থেকে যতটা সম্ভব দূরে থাকতে চায় সে। বিকালে বাসায় ফিরলো আবির।

রাত নয়টা,
আবির বারান্দায় দাড়িয়ে ছিলো৷ রুহি ডাক দিলো তাকে। আবির রুমে যেতেই রুহি চোখের এশারায় বিছানা দেখিয়ে বললো,
” বসো।”

আবির বসলো, রুহি বললো
” তুুমি কি কোনো কারনে অস্বস্তি ফিল করছো? আমার সাথে এক রুমে থাকতে। ”

” আরে নাহ।”

” তাহলে সব সময় দুরত্ব রেখে চলছো কেনো? আগে তো আমার পেছনে ছায়ার মত লেগে থাকতে। তোমার সাথে তো বিয়ের আগেই কথা হয়েছে আমার। সব কিছু যেনে, শুনেই আমাদের বিয়ে হয়েছে। আবিদ কে হারিয়ে তুমি যতটা কষ্ট পেয়েছো ঠিক ততটা কষ্ট আমিও পেয়েছি। তারপরও হাসছি, স্বাভাবিক আছি কেনো যানো? বাবা মার জন্য। তারা তাদের ছেলেকে হারিয়ে কল্পনাতিত দুঃখ পেয়েছে। আমি তাদের দুঃখ ভুলিয়ে তাদের মুখে একটু খানি হাসি ফোটাতে চাই। তারা যেনো আবারো আগের মত হাসি খুশিতে মেতে উঠে।এটাই চাই আমি। হ্যা এটা সত্য যে, আমি তোমরা জিবনটা নষ্ট করে দিলাম। কিন্তু তুমিও যানো আমার কিছু করার ছিলো না। আবিদকে হারিয়ে বাবা মা প্রায় পাগল হয়ে গিয়েছিলো অনেক কষ্টে আমি তাদের স্বভাবিক করতে পারছি। আবিদ তো নেই, এখন আমিও যদি চলে যেতাম তাহলে বাবা মার কি হতো ভেবে দেখেছো? বাবা এক সপ্তাহের মধ্যে আমাকে নিয়ে যেতো। আমি যেতে চাইনি। আর সে কারনেই….

থামলো রুহি। এক মুহূর্ত পর আবার বললো,
” তুমি কোনো টেনশন করো না। মন দিয়ে পড়াশোনা করো। একটা চাকরি করো তারপর সুন্দর একটা মেয়ে দেখে বিয়ে করবে। আমি নিজে বাবা মা কে বুঝিয়ে বলবো। তোমার সামনে অনেক সময়,পুরো ভবিষ্যতে পড়ে আছে। মাত্র তো জিবনের শুরু। কিন্তু ততদিন এমন কোনো ব্যবহার করবে না যাতে বাবা মা কষ্ট পায়। আমাদের বিয়ের কথা মাথা থেকে ফেলে দাও। আমাদের মধ্যে যেনো কিছুই হয় নি। আমরা এখনো আগের মতই আছি। আমি চাইলে অন্য রুমে থাকতে পারি, কিন্তু এতে বাবা মায়ের মন খারাপ হবে। আমি চাই, তারা কোনো চিন্তা না করুক আমাদের নিয়ে। বাবা মায়ের নতুন করে চিন্তার কারন হতে চাই না। তাদের সামনে আমরা স্বাভাবিক থাকি। আমাদের দেখে তারা একটুখানি শান্তনা পাক। এটুকুই চাই তোমার কাছে। তুমি যেমন আমাকে ভাবী ছাড়া অন্য কোনো চোখে দেখতে পারবে না, আমিও পারবো না তোমাকে কখনো আবিদের জায়গায় ভাবতে।

” আমি কোনো চিন্তা করছি না ভাবী। ভাইয়ার জন্য তো নিজের জিবনও দিয়ে দিতে পারি। সেখানে এটা কিছুই না। আর তোমাকে কে বলেছে আমি বিয়ে করতে চাই? আসলে, তুমি কিভাবে নিচ্ছো ব্যপারটা এটা নিয়ে চিন্তায় ছিলাম। তোমার সাথে এক রুমে থাকা, মানে সব কিছু মিলিয়ে তোমার কথা ভেবে খারাপ লাগছিলো। একটা সম্পর্ক থেকে হুট করে অন্য একটা সম্পর্কে যাওয়া যায় না। সময় লাগবে। কিন্তু, এখন আর কোনো চিন্তা নেই। আমাকে তুমি আগের মতই স্বাভাবিক অবস্থায় পাবে।”

রুহি একটুখানি হাসলো। তারপর ভ্রু নাচিয়ে বললো,
” তুমি আমাকে ভাবী ডাকো কবে থেকে? আগে তো বড় বউ ডাকতে। ছোট বউ কি বারণ করলো নাকি বড় বউ ডাকতে?”

রুহির কথায় আবির লজ্জা পেলো। রুহি আবিরকে লজ্জা পেতে দেখে শব্দ করে হেসে ফেললো। রুহি বললো,
” জিবনের প্রথম তোমায় লজ্জা পেতে দেখলাম। এমনিতেই তুমি বেলজ্জার হাড্ডি।”

আবির কৃত্রিম রাগী কণ্ঠে বললো,
” অপমান করলে মনে হয়? ”

” আরে না, প্রসংসা করেছি। ”

আবির উঠে দাড়াতেই রুহি বললো
“কই যাও?”

“সোফায়”

” শুনে, বিছানাতেই ঘুমাও। কাল আমি ঘুমিয়ে পড়েছিলাম তাই সোফায় ঘুমাইছো। এমনিতেই ফুটবল মাঠের মত বড় বিছানা। আমার দুই হাত জায়গাও লাগবে না।”

আবির রুমের লাইট অফ করে টেবিল ল্যাম্প জ্বেলে বিছানার এক পাশে শুয়ে পড়লো। অনেকক্ষণ চোখ বন্ধ করে থাকলেও চোখে ঘুম মিললো না। রুহি একটা দীর্ঘ শ্বাস ফেললো। বিয়ের পর থেকেই আবির তাকে এড়িয়ে যাচ্ছিলো। এখন কথা বলে অনেকটাই ফ্রি হয়ে গেলো। আবির আবার আগের মত হয়ে যাক,হাসি খুশিতে মেতে থাকুক এটাই তো চায় সে। বাচ্চা, একটা ছেলে অথচ কতবড় একটা ঝড় গেলো তার উপর দিয়ে। রুহির মনে হলো,আবিরটাও যেনো গত কয় মাসে অনেক বড় হয়ে গেছে।

আবিরের ঘুম আসছিলো না। মানুষ যতই বলুক কারো জন্য জিবন থেমে থাকে না। কিন্তু, কিছু মানুষের জন্য জিবন থেমে না থাকলেও বড্ড বেশি এলোমেলো হয়ে যায়। যা কখনো আগের মত গুছিয়ে নেওয়া সম্ভব হয় না । সেই ইচ্ছেও করে না। আবির রুহিকে ডাক দিলো,
” ঘুমাইছো? ”

” না” ছোট্ট করে জবাব দিলো রুহি। আবির বললো,
” তুমি এত ভালো কেনো? অনেক অনেক ভালো।”

রুহি আবিরের দিকে পাশ ফিরে বললো,
” এই তোমার মতলব কি বলো তো? পটাতে চাইছো, না?”

রুহির কথা শেষ হবার সাথে সাথে আবির ফুঁপিয়ে কেদে উঠলো।

চলবে…..?