বেনে বৌ পর্ব-০৬ এবং শেষ পর্ব

0
162

#বেনে বৌ
অন্তিম পর্ব

নিজের চেনা ঘর চেনা বিছানা অথচ অচেনা এক অনুভূতি নিয়ে বসে আছে কবিতা।তার গায়ে জড়িয়ে আছে লাল রঙের শাড়ি।শাড়িটা শাফিনের কিনে দেওয়া। তাদের বিয়ের দিন পড়েছিল।পুনরায় স্মৃতিগুলো মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। গলার মাঝে আটকে থাকা কান্নাগুলোকে সে জমিয়ে রেখে করেছে কেবল শ্বাস ভারী। যখন কবিতা বুঝতে পেরেছিল শাফিন মা’রা গেছে তখন প্রথমে ভেবেছিল এটা মিথ্যে কিংবা নিছক অভিনয় করছে ছেলেটা।তার শিরদাঁড়া বেয়ে নেমে যাওয়া ঠান্ডা স্রোত কিংবা হাত পা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছিলো। গত রাতেও হাসপাতালের কেবিনে শাফিন তাকে বুকে নিয়ে ঘুমানোর আবদার করেছিল।কবিতা স্মিত হেসে বলেছিল,

“যখন তখন ডাক্তার, নার্স আসে।তারা দেখলে কি বলবে?আর মা তো রাতে থাকবে।”

“মাকে বলে বাড়ি পাঠিয়ে দিবো বৌ।আমার কেমন যেন অস্থিতিশীল লাগছে নিজেকে। তুমি এই শেষ বারের মতো বুকে মাথা রেখে ঘুমাও। আমি আর আবদার করবো না।”

শাফিনের বলা শেষ বারের মতোন কথাটা তীরের ফলার মতোন বিধেছিল কবিতার মনে।মেকি ধমকেও দিয়েছিল।কিন্তু স্বামীর আবদার ফেলে দেয়নি সে। ক্যানোলা করা হাতটা অধিকাংশ সময় তার পিঠে ছিল। সে রাতে দুজনের কত গল্প।সুস্থ হলে একটা বার সমুদ্র দেখতে যাবে।পাহাড়ে সূর্যাস্ত দেখবে কিংবা কবিতার জন্য নতুন একটা মোবাইল ফোন ও তো নিতে হবে।দুই কামড়ার বাসাটা বদলে একটা বড় বাসা নিতে হবে।শাফিনের ইনকাম ধীরে ধীরে বাড়ছে।নতুন একটা প্রাণ এবার তাদের মাঝে আসার সময় হয়েছে। কবিতা চাকরি করবে না।ক্লান্ত শাফিন যখন বাসায় ফিরবে তখন কবিতা নালিশ করবে তাদের মেয়ের নামে।শাফিন তখন মেয়ের পক্ষ নিবে। এমন হাজারো স্বপ্ন তারা দুজন সেই রাতে দেখেছিল।শাফিনের চোখের ঘুম ছিল না।কিন্তু কবিতার চোখে ছিল রাজ্যের ঘুম। কে জানতো শাফিন চিরতরে ঘুমাবে? না হলে কবিতা সে রাতে কখনোই ঘুমাতো না।শাফিনের সব কথা শুনতো।তার সব আবদার রাখতো।হাসপাতাল থেকে তাকে নিয়ে পালিয়ে যেত দূরে কোথাও। যেখানে শাফিনের শ্বাস নিতে কোনো কষ্ট হতো না। কোনো কষ্টই না।

কিন্তু কবিতা পারে নি।সে ঘুমিয়ে গিয়েছিল। ঘুম থেকে উঠার পরেও শাফিনের মুখে কেমন স্নিগ্ধতা ছিল।কবিতা বুঝলো শাফিন বুঝি সুস্থ হয়েই গেল। ডাক্তারকে বলে আজকেই তাকে নিয়ে বাসায় ফিরে যাবে।

ফিরেছিল কিন্তু শাফিনকে হারিয়ে। এক মুহুর্তে পরিচয় বদলে সে হয়ে গেল আবিদের স্ত্রী। আজ সন্ধ্যেবেলা মোবাইলে ভিডিও কলে বিয়ে হয়েছে তাদের।আবিদের দিকে তাকানোর সাহস করেনি সে। আজ অবধি তার কোনো ছবিও দেখেনি।শাফিনের কাছে শুনেছিল ছবি তুলে রাখাটা পছন্দ করতেন না শাফিনের দাদী। তাই প্রয়োজন ছাড়া কারোর ছবি তোলাও হয়নি। কবিতার তাকে দেখার আগ্রহ অবধি হয়নি।যে মানুষটার নামটা কেবল চাই তার,বেঁচে থাকার জন্য কেবল একটা নামের প্রয়োজন সেই মানুষ নিয়ে কোনো আগ্রহ দেখানোর ইচ্ছে হচ্ছে না এই মুহুর্তে।

বিছানায় শাড়ি পরিহিত অবস্থায় গা এলিয়ে দিলো সে।পাশের ঘর থেকে লোক জনের কানাঘুষা শুনতে পেল। কেউ একজন বলছে,

“বৌ আগেরটাই তো আনলা ভাবী দেইখো আবার কপাল যেন সেই আগের টাই না হয়।পোলা যায় তোমার যায়,পোলার বৌয়ের অঙ্গে কোনো শোক নাই।”

তার শ্বাশুড়ি কি জবাব দিলো সে শুনতে পেল না। তার ফোনের স্ক্রীণের দিকে তাকিয়ে বলল,

” তোমাকে হারানোর শোক আমার সারা অঙ্গে হোক।”

পরক্ষণেই স্ক্রিনে আবিদের নাম ভেসে উঠতেই ফোন কেটে দিলো সে। আজ পুরো রাত সে শাফিনের স্মৃতিতে কাটাতে চায় সেখানে বর্তমানের কোনো স্পর্শ চায় না।

অতীত যতোই ধোঁয়াশায় থাকুক অতীত মানুষকে বাঁচতে প্রেরণা দেয়।বর্তমানের ক্ষতবিক্ষত আঘাতে মানুষ অতীতেই ডুব দেয়। অথচ লোকে বলে অতীত ভুলে যাও।যে অতীত ভুলে যেতে পারে সে অতীতকে কখনো ভালোই বাসেনি। নিছক অভিনয় করেছিল।

পরদিন ভোরে ঘুম ভাঙলো কবিতার। ডান হাতটা তার ভীষণ ব্যথা করছে।গতরাতে শাফিনকে সে স্বপ্ন দেখেছে।যে স্বপ্নে শাফিন ছিল তার হাতের নাগালে।চলে যাওয়ার পূর্বে কেবল বলে গেল,

“কবিতা তুমি আমার বড়ো আহ্লাদের মানুষ আমার বৌ। আমার জন্য তুমি আমার পরিবারের খেয়াল রাখবে না?”

একই ভাবে সে বলতো যখন সে জীবিত ছিল।কবিতা তখনো তাকে কথা দিয়েছিল এবং স্বপ্নেও তাকে কথা দিয়ে বলল,

“আমি খেয়াল রাখবো কিন্তু তুমি কথা দাও, তুমি ফিরবে!”

শাফিন উঠে যেতে যেতে বলল,

“তুমি হয়তো খেয়াল করোইনি। আমি ফিরেছি যে।”

সকালের নাস্তা বানাতে রান্নাঘরে পা দিতেই কবিতার শ্বাশুড়ি তাকে বলল,
“আমি বানিয়ে নিচ্ছি।আমরা মানুষ মাত্র তিন জন। তিন দ্বিগুণে ছয়টা রুটি লাগে আমাদের।তোমার কষ্ট করতে হবে না।”

“কষ্টের কিছুই নেই মা।আপনি না হয় রুটি সেঁকে নিন আমি বানিয়ে দিচ্ছি।”

কবিতা কেবল রুটি নয় সাথে ডিম পোচ এবং শশাও কেটে নিলো।নাস্তার টেবিলে বসে শাফিনের বাবা বলল,

“তুমি আমার মেয়ে হয়েই থাকো এ বাড়িতে।আবিদ কবে ফিরবে সেটা কিছু বলেনি।যতদূর বুঝলাম তুমিও তার কাছে যেতে এখন ইচ্ছুক না।আমরা তোমাকে আর জোর করবো না। তোমার মা জেদ ধরেছিল তোমাকে নিজের কাছে নিয়ে আসার তাই নিয়ে এলাম।কিন্তু মা একটা কথা মাথায় রাখতে হবে। যে কোনো সম্পর্ক হচ্ছে বীজ তলার মতোন।তুমি বীজ রোপন করে কীভাবে তার যত্ন নিবে সেটার উপর নির্ভর করবে চারা গাছের ভবিষ্যৎ। তুমি যত্ন নিলে চারা গাছ থেকে একদিন বৃক্ষ হবে কিন্তু যত্ন না নিলে অঙ্কুরিত হতে হতেও নষ্ট হয়ে যেতে পারে।তোমারদের দুজনের এই একটা সম্পর্কের সাথে আমাদের দুটো পরিবারের কয়েক জন মানুষের মানসিক অবস্থার সম্পর্ক রয়েছে। তোমাদের জন্য আমরা সব সময় আছি।”

কবিতা কিছু না বলে মাথা নিচু করে রইল।সেই মুহুর্তে তার শ্বাশুড়ি বলে উঠলো,

“এই সমাজ ভয়ং’র মা। আগুনের মতো দাউ দাউ করে জ্বা’লিয়ে শেষ করে দিবে।এই সমাজে বিধবা মেয়েদের কেউ গ্রহণ করতে চায় না।অল্প বয়স হলে তার দিকে গ্যাসোলিন হাতে এগিয়ে আসে।”

কবিতা নিজেও জানে কথাগুলো কিন্তু শাফিনের জায়গা কাউকেই দিবে না।আবিদের ও প্রেমিকা আছে সেটা সে জানে তাই এদিক থেকে সে নিশ্চিন্ত। এর পরের দিনগুলো বেশ ভালো যাচ্ছিলো কবিতার।শাফিনের স্মৃতি একটু একটু করে জিইয়ে রাখতে আপ্রাণ চেষ্টা করে সে।দুই বাবার অনুরোধে পুনরায় লেখাপড়াও শুরু করেছে।দেখতে দেখতে শাফিনের মৃত্যুর একটা বছর হয়ে এলো।সেদিন নিজ হাতে রান্না করে এতিম বাচ্চাদের খাইয়েছে সে।দূর থেকে তার কবর দেখে নানান কথা বলার সময় হুট করেই মনে পড়ে যায় শাফিন সমুদ্র দেখতে চেয়েছিল। এরপরের সপ্তাহে শ্বশুর এবং শ্বাশুড়িকে নিয়ে বাবার বাসায় গিয়ে ভাইকে জানালো সে সমুদ্র দেখতে যাবে। আপত্তি করলো না কেউ।

সমুদ্র পাড়ে দাঁড়াতেই কবিতা খেয়াল করলো তার পাশে শাফিন দাঁড়িয়ে আছে।সেই চুল,চোখ এবং ঠোঁটে হাসি।পাশাপাশি দাঁড়িয়ে স্মিত হেসে ছেলেটা কিছু বলতে চাইলো। কবিতা জানে যে শাফিনকে কল্পনায় দেখে কিন্তু নিজের এই ভুলটা কখনোই সে ভাঙ্গতে চায় না।সে চায় অন্তত কল্পনায় সুখী হোক। সমুদ্রের পানি ছুঁয়ে যায় তার পা দুখানি। শিউরে উঠে সে। সমুদ্রের পাড়ের তীব্র বাতাসের বুকে মুখ ডুবিয়ে সে ফিসফিস করে বলে,

” তুমি আমার আজন্মকালের সুখ। তোমায় আমি ভালোবাসি না। তোমায় আমার মাঝে নিয়ে আমি বসত করি।”

আবিদের সাথে এই মুহুর্তে তার নামে মাত্র কথা হয়।আবিদ ইচ্ছে করেই কবিতার ফোনে কল দেয় যাতে তার মায়ের সন্দেহ না হয় যে তাদের মাঝে কোনো কিছু ঠিক নেই। কবিতার ফোনে মা কথা বলার পর দীর্ঘ সময় কবিতা নিজের রুমে অবস্থান করে কিংবা কোনো কোনো দিন আগেই কল দেয় আবিদ। দুই পাশে দুই জনের নীরবতা।আধ ঘন্টা কিংবা এর বেশি সময় পার হলে কবিতা বলে উঠে মায়ের কাছে নিয়ে যাচ্ছি, মায়ের সামনে দুটো কথা বলে ফোন দিয়ে চলে আসে।ঈদে কিংবা বিশেষ দিনে আবিদ উপহার পাঠাতে ভুলে না। ইদানীং সবাই বেশ খুশি হয় কবিতার সুখ দেখে।নিরালায় বসে কবিতা ভাবে মানুষ কি বোকা! লোক দেখানো সুখেই অন্যকে সুখী ভেবে বসে।

দেখতে দেখতে পার হলো দুটো বছর। আজ আবিদের দেশে আসার দিন। অহেতুক ভয়ে সিঁটিয়ে আছে কবিতা নামের মেয়েটা।লোকের সামনে আবিদ তার স্বামী। রাতের আঁধারে সেই স্বামী নামের পুরুষ যদি অধিকার চেয়ে বসে?নানান চিন্তায় ঘুম হয়নি তার কয়েক দিন। অমনোযোগী ভঙ্গিতে রান্নাঘরে রান্না করছিল যখন তার শ্বশুর তাকে ডেকে বলল,

“মারে বাইরে আয়, আমার বাপজানে আসছে।”

আজ হাজার চাইলেও শাফিনকে কল্পনায় আনতে পারছে না কবিতা।শাফিন যেন উবে গেছে হুট করে।ধীর পায়ে দরজায় এসে দাঁড়ালো সে। আবিদের হাতের দিকে দৃষ্টি পড়লো।চমকে উঠেছে সে। শাফিনের মতো আবিদের হাতের শিরা উপশিরা গুলো স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে যে। রাতের খাবার খাওয়ার পর দ্রুত নিজের রুমে ফিরে এলো কবিতা।আবিদ নামের মানুষটাকে কখনো ও ভাবে সে দেখেনি।একদিন ঝাপসা দৃষ্টিতে দেখেছিল।কিন্তু সেই সময়ের কোনো স্মৃতি তার মনে নেই।বিছানায় উঠে কাথা মুড়ো দিয়ে শুয়ে পড়লো সে।নাহ সিরিয়ালের মেয়েদের মতোন হাতে কিছু রাখেনি।আবিদকে আঘাত করার ইচ্ছেও নেই।কারণ এই কয়েক বছরে কবিতা তাকে যতোটা চিনেছে সেটা হলো আবিদ একজন সুপুরুষ। আর সুপুরুষরা নারীকে সম্মান করতে জানে।

ভোরবেলা এক ফালি রোদ যখন জানালা দিয়ে উঁকি দিলো তখন আবিদ ঘুমিয়ে আছে কবিতার পাশেই।তাদের দুজনের মাঝে এক আসমান দূরত্ব। কবিতা ঘুম ভেঙ্গে আধ বুজা চোখে দেখতে পেল তার পাশে শাফিন ঘুমিয়ে আছে।সে ভাবলো শাফিন বুঝি কল্পনায় এসেছে। কিন্তু ঘুমন্ত মানুষটার মুখশ্রীতে স্পর্শ করতেই তার ভুল ভেঙ্গে গেল।ভূত দেখার মতো চমকে উঠেছে সে।দৌড়ে রুম থেকে বেরিয়ে গেল।শাফিন তার সামনে শেষ শ্বাস ত্যাগ করেছে।তবে এ কে?

পুরো দিন বার বার এই মানুষটার দিকে তাকিয়ে ছিল কবিতা।শেষ অবধি কথার ছলে জানতে পারলো আবিদ এবং শাফিনের চেহারায় ভীষণ ভীষণ মিল রয়েছে। দূর থেকে নয় অনেক সময় কাছ থেকে দেখলেও তাদের একই মনে হতো।অথচ দুজনের বয়সের তফাৎ দুই বছরের বেশি। কবিতা বার বার ওই চেহারার দিকে তাকিয়ে থাকে। আবিদ তাকালেই চোখ ফিরিয়ে নেয়। আবিদ স্মিত হাসে।মেয়েটার ব্যতিব্যস্ত হওয়ার অভিনয় তাকে বেশ আনন্দ দিচ্ছে। একদিন ভোর বেলা কবিতা বসে ছিল রাস্তার ধারে। লাল রঙা শাড়ি, হাতে দুগাছা সোনার চুড়ি এবং নাকে নাকফুলে তাকে নতুন বৌয়ের মতোন লাগছিল।এখান থেকে শাফিনের কবর দেখা যায়।আবিদ ফিরে এসে তার কবরে পুনরায় মাটি দিয়ে উঁচু করেছে।কবিতা এখানে বসে নীরব দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে আবার কিছু বলে।দূর থেকে আবিদ তাকে দেখে এগিয়ে এসে তার পাশে বসে বলল,

“জানো তো আমার একটা প্রেমিকা ছিল।”

“ছিল কেন?”
“কারণ তোমাকে বিয়ে করার পর আর ইচ্ছেই হলো না।মনে হচ্ছিলো আমি তোমাকে ঠকাচ্ছি।”

“আমার কোনো আপত্তি তো ছিল না।”

“কিন্তু আমার ছিল।আমাদের সম্পর্কটা অদ্ভুত হলেও আমরা একটা সম্পর্কে জড়িয়েছি কবিতা। এটাকে আমি সম্মান করি।”

“জানেন?শাফিন নেই আজ তিন বছরের বেশি সময়।আমি ওকে নিজের মাঝে নিয়ে বেঁচে আছি।”

“জানি।তুমি শাফিনকে অনেক ভালোবাসো।”

“সেদিন সকালে আপনাকে দেখে ভেবেছিলাম শাফিন। অদ্ভুত তাই না?হয়তো তার দেহের শেষ অংশটাও মাটির সাথে মিশে যাচ্ছে।”

“ও আমার ভাই ছিল।তুমি আমার স্ত্রী।আমার দায়িত্ব। তুমি না চাইলেও আমাকে তোমার পাশে সারাজীবন পাবে।”

“আমি তো চাই না।আমাদের মাঝে কথা হয়েছিল।”

“আমি তোমার জন্য অপেক্ষা করবো।না হয় পুরোটা জীবন অপেক্ষা করবো।আমি অপেক্ষায় থেকে থেকে তোমার প্রেমে।পড়বো।তোমায় আগলে নিবো এবং ভালোবাসবো।”

কবিতা নিশ্চুপে তাকিয়ে রইল শাফিনের কবরের দিকে হুট করেই সে অনুভব করলো তার কল্পনার শাফিনকে।যে হাত ইশারায় ধরতে বলছে আবিদের হাত।কবিতা উঠে দাঁড়ালো। শাফিন বা আবিদের এই আবদার সে কোনো দিন মানবে না।

অথচ সে নিজেকে ভুল প্রমাণিত করলো যেদিন আবিদের ছোটো একটা বাইক দূর্ঘটনা ঘটলো।কান্নাকাটি করে সে অস্থির হয়ে ছুটে গেল হাসপাতালে। আবিদের সামান্য উ শব্দে রাগ করলো নার্সদের সাথে।আবিদ ইশারায় নার্সদের থেকে তখন মাফ চাইতে ব্যস্ত।কেবিন ফাঁকা হতেই আবিদ তাকে প্রশ্ন করলো,

“আমায় ভালোবাসলে কবে আমার বেনে বৌ?”

“আমি ভালোবাসিনি তো।আমি কেবল মায়ায় পড়েছি আপনার।আজন্মকালের মায়ায়।”

(সমাপ্ত)