ভালোবাসি বুঝে নাও ৩ পর্ব-১৩+১৪+১৫

0
410

#ভালোবাসি_বুঝে_নাও
#সিজন-৩ পর্ব_১৩
#সুমাইয়া_সুলতানা_সুমী
,
এতোক্ষণে আমার সব হিসাব মিললো তার মানে সেদিন অন্ধকার এর মধ্যে মেহরাব ভাই আমার গালে চুমু দিয়েছিলো আর আজকেও ওনিই দিলো কিন্তু ওনি আমায় চুমু দিলো কেনো? এই প্রশ্নটা ভাবতে ভাবতেই তো দেখছি আমার মাথায় চুল সব পেকে যাবে কিন্তু ওনি আমার সাথে এমন করল কেনো এটাই তো মাথায় ঢুকছে নাহ।

নেকা ষষ্ঠী কিছুই বোঝে নাহ ফিটারে গোশত খাও বাবু, এই তোকে না আমার ইচ্ছে করছে পাশের পচা পুকুর থেকে চুবিয়ে আনি,, রুমে ঢুকতে ঢুকতে বলল মেঘলা।

এটা কেমন কথা আপু আর তুমি এই ঢাকাতে পচা পুকুর কই পেলে?

আমার না মাঝে মাঝে ইচ্ছে করে কথায় কথায় শুধু তোর মাথায় গাট্টা মারি আমার ভাই তোকে এতো পরিষ্কার করে বুঝিয়ে দিলো তুই তাও বুঝতে পারছিস নাহ? এখনো ভেবেই যাচ্ছিস বোকার মতো। এবার মনে হচ্ছে আমার সব কিছু বলেই দিতে হবে নয়ত তুই আজীবন এভাবে ভেবেই যাবি কিচ্ছু বুঝতে পারবি নাহ।

কি বুঝবো বলো আপু আর ওনি আমার ভাই হয়ে আমার সাথে এমন করলো কেনো?

এমন ভাবে বলছিস যেনো ও তোর মায়ের পেটের ভাই আমিই যে কিনা নিজের ভাইয়ের প্রেমের ঘটকালি করছি, আরে গাধী আমার ভাই তোকে ভালোবাসে সেই কবে থেকে আর তুই গাধী কিছুই বুঝিস নাহ।

মেঘলার কথা শুনে মাহি বসা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে গেলো মুখে হাত রেখে বলল, বলছো কি আপু ওনি আমায় ভালোবাসে? কিন্তু এটা কীভাবে সম্ভব?

এমন ভাবে বলছিস যেনো তুই আমার ভাইকে পছন্দ করিস নাহ।

করিতো কিন্তু ওনিতো আমায় পাত্তায় দেয় নাহ কেমন করে কথা বলে তাই আমি ভেবেছি ওনি আমায় পছন্দ করেননা তেমন কিন্তু এখন তো দেখছি ওনি সত্যি আমায় ভালোবাসে, দুহাত দিয়ে মুখ ঢেকে বলল মাহি।

ওরে আমার লজ্জাবতী রে থাক আর লজ্জা পেতে হবে নাহ বাকি লজ্জা টুকু তুলে রাখ আমার ভাইয়ের সামনে গেলে প্রকাশ করিস।

কিন্তু আপু ওনি যদি আমায় সত্যি ভালোবাসে তাহলে আমার সাথে এমন করে কেনো আর আমাকে বলে না কেনো?

বাবা এতোদিন তো বুঝতেই পারছিলি নাহ আর এখন দেখছি তর সইছে নাহ। আসলে আমিও জানিনা ও কেনো বলছে নাহ কি জানি ওর মনে কি আছে তুই তো জানিসই আমার ভাই কেমন।

হুমম জানিতো এক নাম্বারের পেঁচালো আর ঘাঁড় তেড়্যা, বিরবির করে বলল মাহি।

এই তুই আমার ভাইয়ের নামে কি বললি?

কই কিছু বলি নাই তো আচ্ছা চলো নিচে যাই নয়ত তোমার ভাই এসে যদি দেখে আমরা তার রুমে বসে গল্প করছি তাহলে আবার তার মাথায় বাজ পড়বে। তারপর মাহি আর মেঘলা মেহরাব এর রুম থেকে বেরিয়ে নিচে গেলো দেখলো মেহরাব সোফার উপর চারহাত পা ছড়িয়ে দিয়ে শুয়ে টিভি দেখছে মেঘলা গিয়ে মেহরাব এর পা সোফা থেকে সরিয়ে দিয়ে সেখানে বসে বলল,, কি সব দেখছিস টিভিতে দে রিমটা দে।

আহ মেঘলা বিরক্ত করিস না তো দেশের খবর রাখিস? দেশের অবস্হা খুবি খারাপ দেখ টিভিতে কি দেখাচ্ছে একদল জঙ্গি তাদের দল নিয়ে আস্তানা বসাইছিলো আর প্ল্যান করেছিলো যে কালকে বড় শপিং মলে বোমা ফিট করে মলটাকে উড়িয়ে দেবে কিন্তু পুলিশ কীভাবে যেনো ওদের প্ল্যান ঠিক পায়ে গেছে আর আজকে ওদের উপর হামলা করেছে সবকটা তো গ্রেফতার করেছে কিন্তু কিছু পুলিশও আহত হয়েছে খুব গুরুতর ভাবে।

মেহরাব এর কথা শুনে মেঘলার সবার আগে মেঘ এর কথা মনে পড়ল কেনো যেনো বুকের ভিতর ধক করে উঠল ভিতর থেকে কেও যেনো বলছে মেঘের কিছু হয়নিতো মেঘলার হাসি হাসি মুখটা নিমিষেই কাউকে হারানোর ভয়ে চুপসে গেলো।মাহি দৌড়ে টিভির সামনে গিয়ে বলল,, আচ্ছা মেঘ ভাইয়াও তো পুলিশ ওনার কিছ হয়নি তো?

হুম এটাও ভাবার বিষয় কিন্তু আমিতো কিছুই বুঝতে পারছি নাহ,, মেহরাব আরো কিছু বলবে তার আগেই ওর ফোনে কল আসলো মেহরাব ফোনটা রিসিভ করেই ওপাশ থেকে কিছু শুনতেই তড়িঘড়ি করে সোফা থেকে উঠে রুমের দিকে চলে গেলে। কিছুক্ষণ পর চেঞ্জ করে নিচে নেমে বেরিয়ে যেতে যেতে বলল,, মেঘলা মাকে বলে দিস আমি একটু বেরোচ্ছি আসতে রাত হবে।

মেহরাব এর এভাবে বেরিয়ে যাওয়া দেখে মেঘলার জান যেনো শরীলে নেই তবুও ভয়ে কাঁপা কাঁপা গলায় বলল,, কেনো ভাইয়া তুই কোথায় যাচ্ছিস?

আরে মেঘ এর নাকি গুলি লেগেছে তাই হসপিটালে যাচ্ছি বললো তো চিন্তার কিছু নেই তবুও গিয়ে দেখতে হবে থাক তো আমি আসছি। কথাটা বলেই মেহরাব বেরিয়ে গেলো আর মেঘলা সোফায় ধপ করে বসে পড়ল।

কি হয়েছে আপু তুমি এভাবে বসে পড়লে কেনো? খারাপ লাগছে?

মাহি আমায় নিয়ে চল ওনার কাছে আমিও ওনাকে দেখতে যাবো প্লিজ আমায় নিয়ে চল মাহি প্লিজ আমার একটুও ভালো লাগছে নাহ আমি শ্বাস নিতে পারছি নাহ প্লিজ আমায় নিয়ে চল, মাহির হাত ধরে ঝাঁকাতে ঝাঁকাত বলল মেঘলা।

কিন্তু আপু মেঘ ভাইয়াকে কোন হসপিটালে ভর্তি করেছে আমিতো সেটা জানিনা, আচ্ছা দাঁড়াও আমি দেখছি, মাহি একটু দূরে এসে মেহরাব কে ফোন দিলো কিন্তু প্রথমবারে ফোন রিসিভ করলো নাহ কেটে গেলো মাহি দ্বিতীয় বার কল দিতেই মেহরাব কল কেটে দিয়ে রিসিভ করে বলল,, কিরে কিছু হয়েছে? কল দিস কেনো?

ভাইয়া আপনি কোথায় আপনি কি হসপিটালে পৌঁছে গেছেন?

কেনো?

আসলে বলছিলাম কি আমরাও যাবো মেঘ ভাইয়ার জন্য অনেক খারাপ লাগছে তাই প্লিজ আমাদের নিয়ে যান।

ইডিয়ট তো এখন বলছিস কেনো আমি যখন বেরোলাম তখন বললে কি হতো, আচ্ছা আমি অনেকদূর চলে আসছি এখন আর ফিরে যাওয়া সম্ভব নয় আমি হসপিটালে যাচ্ছি একটু পরে রিফাত যাবে তোরা ওর সাথে চলে আয়।

রিফাত কে?

সেটা তোর জানতে হবে নাহ যেটা বললাম চুপচাপ সেটা কর বেশি কথা বলা আমি মোটেও পছন্দ করি নাহ ওকে, কথাটা বলেই মেহরাব ফোন কেটে দিলে।
,,,,,,,
মাথায় আর হাতে ব্যান্ডেজ নিয়ে বেডে চোখ বন্ধ করে শুয়ে আছে মেঘ মেহরাব আসার পর মেঘের মাকে আর বাবাকে বাড়ি পাঠিয়ে দিয়ছে বলেছে ফ্রেশ হয়ে বিকেলে আসতে। মাহিরা এসেও মেঘের সাথে দেখা করে মেহরাব এর সাথে বাইরে গেছে কিছু ঔষুধ আর খাবার কিনতে এখন মেঘের কাছে শুধু মেঘলা আছে। মেঘলা গুটিগুটি পায়ে মেঘের মাথার কাছে গিয়ে দাঁড়ালো মেঘ চোখ বন্ধ করে শুয়ে আছে মেঘলা এক ধ্যানে মেঘের মুখের দিকে তাকিয়ে আছে তখনি হঠাৎ করে মেঘ চোখ খুলে তাকালো মেঘ এর এভাবে তাকাতে দেখে মাহি তড়িঘড়ি করে চোখ ফিরিয়ে নিলো, এমন ভাব যেনো চুরি করতে এসে ধরা পড়ে গেছে।

এই আপনি কিপ্টে কেনো বললাম দুইটা আইসক্রিম কিনে দেন কিন্তু না আপনি সেই একটাই কিনে দিলেন কিপ্টা লোক একটা। কথাটা বলেই মাহি কোণ আইসক্রিম টা খুলে ওতে কামড় বসালো।

মাহি তোর কিন্তু দিন দিন অনেক সাহস বেড়ে যাচ্ছে আর বেশি আইসক্রিম খেতে নেই ঠান্ডা লাগবে,, মেহরাব একহাত ঔষধ এর ব্যাগ আর আরেক হাতে মাহির হাত শক্ত করে ধরে সামনে হেঁটে যেতে যেতে বলল।

সাহস তো হবেই কেননা আমি জেনে গেছি আপনি আমায় ভালোবাসেন তাই এখন তো একটু নয় সাহস অনেক বেশিই বেড়ে গেছে, মেহরাব এর পিছনে পিছনে হাঁটতে হাঁটতে মনে মনে বলল মাহি।

চলবে,,,,??

#ভালোবাসি_বুঝে_নাও
#সিজন-৩ পর্ব_১৪
#সুমাইয়া_সুলতানা_সুমী
,
কি হলো এমন চোরের মতো করছো কেনো? তোমার হাবভাব দেখে মনে হচ্ছে তুমি চুরি করতে এসে ধরা পড়ে এখন মুখ লুকাতে চাইছো, মেঘ শোয়া থেকে উঠে বসতে বসতে বলল।

ম মোটেও নাহ আপনি শুধু এক লাইন বেশি বুঝেন আমি চোরের মতো করবো কেনো আজব আসলে কি বলুন তো আপনার মাথায় আঘাত লেগে এখন সব আবুল তাবুল বলছেন,, আমতা আমতা করে বলল মেঘলা।

হুম আমিতো সব সময় আবুল তাবুলই বলি তা তুমি ওভাবে দাঁড়িয়ে আছো কেনো বসো নাকি ভয় পাচ্ছো সেদিনের মতো আবার যদি চুমো দিয়ে দিই।

আমি মোটেও ভয় পাচ্ছি নাহ ওকে আর আমিতো আপনার নামে ভাইয়ার কাছে বিচার দেবো আপনি অসুস্থ তাই এখনো কিছু বলিনি তবে সুস্থ হওয়া মাত্রই বিচার দেবো।

তাই নাকি তা কি বিচার দেবে শুনি মানে মেহরাব কে কি বলবে?

কি বলবো আবার বলবো যে আপনি আমায় চু,, এই টুকু বলে মেঘলা থেমে গেলো লজ্জায় মাথা নিচু করে পায়ের দিকে তাকিয়ে পাশের বুড়ো আঙুল মেঝের সাথে ঘষছে তাই দেখে মেঘ মুচকি হেসে বলল,, এখানে কেউ নেই তাই কথা বলতে তুৃমি লজ্জায় লাল নীল হচ্ছো আবার তুমি নাকি মেহরাব কে বিচার দেবে।
,,,
মাহি ওর মুখটা ফুলিয়ে বেলুনের মতো করে মেহরাব এর সাথে সাথে হাঁটছে আর মেহরাব সে যেনো তার হাসিই থামাতে পারছে নাহ সেই কখন থেকে হেসেই যাচ্ছে হাসতে হাসতে মেঘ এর কেবিনে ঢুকলো মেহরাব কে ঢুকতে দেখেই মেঘলা মেঘের বেডের থেকে সরে এসে একটু দূরে গিয়ে দাঁড়ালো। কিরে কি এমন হয়েছে যে আমার গোমরা মুখ ওয়ালা বন্ধু টা এতো বেশি হাসতেছে, মেহরাব কে হাসতে দেখে বলল মেঘ।

একি মাহি তুই এমন গোমরা মুখ করে আছিস কেনো? কি হয়েছে? আর ভাইয়া তুই এভাবে হাসছিস কেনো সত্যি করে বল মাহির সাথে কি করেছিস।

আরে আজব তো আমি আবার ওর সাথে কি করবো আর ও যে নেকু, শোন আমি মাহির সাথে কিছুই করিনি ও আইসক্রিম খেতে চাইলো তাই আমি ওকে আইসক্রিম কিনে দিলাম কিন্তু ও সেটা যদি আকাশের দিকে তাকিয়ে খেতে খেতে মুখ থুবরে নিচে পড়ে আইসক্রিম খাওয়ার বদলে সেটা সারা মুখে মাখায় তাহলে আমি কি করতে পারি, মেহরাব গাছাড়া ভাব নিয়ে বলে মেঘ এর বেডের এক কোণে হাত পা ছড়িয়ে দিয়ে শুয়ে পড়ল।

আমি মোটেও আকাশের দিকে তাকিয়ে খাইনি ওকে আর জানো আপু তোমার ভাই ইচ্ছে করে এমন করেছে ওনি ইচ্ছে করলেই আমাকে ধরতে পারতো পরা থেকে বাঁচাতে পারতো কিন্তু তাও ধরেনি।

কেনো ধরবো তোকে আমায় কি তোর বাপ বিনা পয়সার বডিগার্ড রেখেছে নাকি।

মাহি রেগে মেহরাব কে কিছু বলবে তার আগেই একটা ছেলে হুরমুর করে ভিতরে ঢুকে মেঘকে উদ্দেশ্য করে বলল ভাইয়া তুই ঠিক আছিস তো কিছু হয়নি তো সরিরে আমার আসতে একটু লেট হয়ে গেলো।

একটু নয় তুই অনেকটাই লেট করে ফেলেছিস হাফ পুলিশ।

মেহরাব ভাই তুমি এখন আর আমাকে হাফ পুলিশ বলতে পারবে নাহ আর মাত্র একমাস তারপরেই তোমাকে আমায় ফুল পুলিশ বলতে হবে কেননা আমার ট্রেনিং প্রায় শেষের দিকে তারপর আমিও আসছি একদম ফুল পুলিশ হয়ে তোমাদের মাঝে হেসে বলল নেহাল।

মাহি আর মেঘলা হা করে ওদের দুজনের দিকে তাকিয়ে আছে কেননা ওরা দুজনের একজন ও এই হঠাৎ আগমন এই ছেলেটাকে চিনতে পারছে নাহ তাই হা করে একবার নেহাল তো আরেকবার মেহরাব এর দিকে তাকাচ্ছে, ওদের এভাবে তাকানো দেখে মেহরাব বলল, কিরে তোরা দুজনে ওভাবে হা করে কি দেখেছিস?

আমার মনে হয় ওরা নেহাল কে চিনতে পারেনি আচ্ছা আমি পরিচয় করিয়ে দিচ্ছি মেঘলা ও নেহাল আমার ছোট ভাই আমার আর নেহাল ও হলো মেঘলা মেহরাব এর ছোট বোন আর ওর পাশে,, মেঘকে বলতে না দিয়ে নেহাল বলল, আরে ভাইয়া তোর এতো পরিচয় করিয়ে দিতে হবে নাহ এসব কিউট মেয়েদের সাথে আমি নিজেই পরিচিত হতে পারবো। নেহাল মেঘলা আর মাহির সামনে গিয়ে ভাব নিয়ে দাঁড়িয়ে বলল, হাই গালর্স আমি নেহাল নাম তো সুনায় হোগা।

নাহ ওরা কেউই তোর নাম শোনেনি আর তোকে আগ বাড়িয়ে শোনাতেও হবে নাহ, মেঘলা মাহিকে নিয়ে বাড়ি যা আমার আসতে দেরি হবে আমি রিফাতকে বলে দিয়েছি ও নিচে আছে তোরা যাহ।

কেনো মেহরাব ভাই ওরা যাবে কেনো আর আমি তো এখনো ভালো করে পরিচিতই হতে পারলাম নাহ।

কিরে কথা কানে যায়নি আমি তোদের যেতে বলেছি, চোখ গরম করে ধমকে বলল মেহরাব। মেহরাব এর ধমক শুনে মাহি আর মেঘলা তড়িঘড়ি করে কেবিন থেকে বেরিয়ে গেলো। আর মাহিতো কেবিন থেকে বেরিয়েই মেহরাব এর নামে মেঘলার কাছে বিচারের ঝুলি খুলে দিয়েছে কিন্তু মেঘলা চুপচাপ হেঁটে নিচে নেমে দেখলো দূরে রিফাত দাঁড়িয়ে আছে। মাহি আর মেঘলা কে দেখতেই ওদের কাছে এসে বত্রিশ পাটি দাঁত বার করে বলল, আরে ভাবি আপনারা চলে এসেছেন আসুন ওই যে সামনে রিকশা।

এই একমিনিট আপনি ভাবি কাকে বলছেন। মেঘলা জিগাস করল।

আরে আমিতো ওনাকে ভাবি বললাম আর বেশি দেরি না করে চলুন নয়ত ভাই আবার রাগ করবে সন্ধ্যা হতে চলল।

আপনি আমায় ভাবি বললেন কেনো? আর আপনার ভাইই বা কে আর আপনার ভাই যেই হোক না কেনো আমি কোনো ভাবেই আপনার ভায়ের বউ হবো না বুঝলেন,, মাহি রেগে বলল।

কিন্তু ভাই যে বলল।

চুলোয় যাক আপনার ভাই আমি বলছি তো আমি আপনার ভাবি নয় আর ভুলেও আমাকে ভাবি ডাকবেন নাহ ওকে।

জি ভাবি।

আবার ভাবি বলে আপনাকে তো,, মেঘলা মাহিকে আর বলতে না দিয়ে বলল, আহ মাহি কি হচ্ছে কি এভাবে রাস্তায় দাঁড়িয়ে ঝগড়া করছিস কেনো আর ওনি তোকে কেনো ভাবি বলল সেই রহস্য পরেও উদঘাটন করতে পারবি এখন বাড়ি চল সন্ধ্যা হয়ে আসছে ভাইয়া যদি জানে আমরা হসপিটাল থেকে বেরিয়ে বাসয় না গিয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে গল্প করছি তাহলে আমাদের দুইজনেই খবর আছে।

শুধু আপনাদের দুইজনের নাহ আমার ও খবর করে দেবে আর আমিও সেই কখন থেকে ভাবিকে এটাই বোঝানোর চেষ্টা করছি যে জলদি চলুন নয়ত ভাই রাগ করবে কিন্তু ভাবি তো আমার কথা বোঝেই নাহ উল্টো ঝগড়া করে সময় নষ্ট করলো।

আসলে কি বলুন তো আপনার ভাবির মাথার তাড় ছেঁড়া তাই জন্যই এমন করলো এখন চলুন যাওয়া যাক।
,,,,,
এর মধ্যে চলে গেছে আরো অনেকগুলো দিন মেহরাব এর ফাইনাল পরিক্ষা শুরু হয়ে গেছে তাই সে এখন আপাতত পড়াশুনা নিয়ে ব্যাস্ত।আজকে মেঘলা ভার্সিটিতে যায়নি তাই মাহিকে একায় যেতে হচ্ছে। রাস্তা দিয়ে বিরবির করে হেঁটে চলেছে মাহি আজকে ইচ্ছে করেই রিক্সা নেয়নি কেননা আজকে ওর উদ্দেশ্য প্রথম ক্লাস মিস করা তাই এমন পিঁপড়ার মতো হাঁটছে কিন্তু হঠাৎ করেই ওর সামনে কেউ বাইক থামালো মাহি ভেবেছে মেহরাব কেননা পহেলা ফাল্গুন এর দিনতো মেহরাব এভাবেই এন্ট্রি করেছিলো হয়ত আজকেও মাহির অভিমান ভাঙাতে এসেছে কেননা মেহরাব এই কয়দিন মাহিকে একদম সময় দিতে পারিনি তাই মাহি এক বস্তা অভিমান করে আছে।

মাহি হাসি মুখে উপরের দিকে তাকাতেই সামনের মানুষ টা হেলমেট খুলে মাহির দিকে তাকালো মাহির হাসি মুখটা মুহুর্তের ফ্যাকাসে হয়ে গেলো হাজারও মন খারাপ নিয়ে বলল, আপনি?

চলবে,,,?

#ভালোবাসি_বুঝে_নাও
#সিজন-৩ পর্ব_১৫
#সুমাইয়া_সুলতানা_সুমী
,
হুম আমি সেদিন তো পরিচিত না হয়েই চলে আসলে তোমার ভাই তোমাকে পাঠিয়ে দিলো সে যাকগা ওসব কথা আজকে আমি চলে যাচ্ছিলাম তখন দেখলাম তোমায় রাস্তা দিয়ে যাচ্ছো তাই পরিচিত হতে আসলাম।

কেনো? আপনার এতো আমার সাথে পরিচিত হতে হবে কেনো? আর আপনি তো আমায় চিনেন নাহ তাহলে প্রথম দেখায় তুমি করে বলছেন কেনো? আপনি তো বড় বেশি অভদ্র।

বাবা তুমি অনেক গুছিয়ে কথা বলতে পারো। আর তুমি আমার মোটেও অচেনা নয় ভাইয়ার থেকে শুনেছি তুমি হলে মেহরাব ভাই এর ফুপাত বোন মাহি রাইট?

আপনি যা ইচ্ছে শুনে থাকুন তাতে আমার কি আপনি আমার সামনে থেকে সরুন তো আমার কলেজের দেরি হয়ে যাচ্ছে। আর আপনার সাথে এভাবে মাঝ রাস্তায় দাঁড়িয়ে কথা বলছি আমার চেনা কেউ দেখলে খারাপ মেয়ে ভাববে আমায়। দেখি সরুন আমায় যেতে দেন৷ নেহালকে পাশ কাটিয়ে মাহি চলে গেলো।

হুম ছোট হলে কি হবে অনেক রাগী মনে হচ্ছে তবে আমার রাগী মেয়ে ভীষণ পছন্দ। মাহির যাওয়ার দিকে তাকিয়ে কথাগুলো মনে মনে বলে নেহাল হেসে বাইক নিয়ে নিজের গন্তব্যে চলে গেলো।

সময় তো আর কারো জন্য বসে থাকে নাহ দেখতে দেখতে আরো অনেকগুলো দিন পাড় হয়ে গেলো এর মাঝে মেহরাব এর ও পরিক্ষা শেষ হয়ে গেছে আর মীরার ও ছুটি থাকায় ব্যাগ গুছিয়ে চলে এসেছে মেহরাবদের বাসায়। মেঘলা মাহি মীরাসহ আরো মেহরাব এর কিছু কাজিন মিলে জোট বেঁধেছে যে মেহরাবদের বাড়ির পিছনে বাগানে পিকনিক করবে গান টান বাজিয়ে হই হুল্লোড় করবে যেহেতু সবার এখন ছুটি পড়ার তেমন কোনো পেড়্যা নেই তাই। সবাই এক জোট হয়ে মেহরাব এর মায়ের কাছে গিয়ে প্রাস্তাবটা রাখল।

হুম বাড়িতে পিকনিক করবি সেটা তো সবাই মিলে আনন্দ করবি এতে আবার নিষেধ করার কি আছে করবি পিকনিক।

মেহরাব এর মায়ের অনুমতি পেতেই সবাই হইহই করে উঠল লাফিয়ে চেঁচিয়ে উঠল সবাই। সবার চেঁচানো শুনে উপর থেকে মেহরাব চোখ ডলতে ডলতে সিঁড়ি বেঁয়ে নিচে নামতে নামতে বলল, কি ব্যপার বাড়ি টাকি মাছের বাজার হয়ে গেলো নাকি এতো সর গোল কিসের?

মাছের বাজার হবে কেনো? সবাই কি তোর মতো বেলা বারোটা অবধি পড়ে পড়ে ঘুমাবে নাকি? মনে হচ্ছে আমাদের পরিক্ষা শেষ হয়না তাই বলে কি আমরা এভাবে দীন দুনিয়া ভুলে ঘুমায়? মেঘলার কথা শুনে মেহরাব সোফায় বসে হেলান দিয়ে মাথার পিছনে দুহাত রেখে বলল, হ্যাঁ সবাই তো তোর মতো হবে কেনো একটু ছুটি পেলেই খালি ঘুরাঘুরি করবে আর থাল থাল খাবি কয়দিন পর শশুর বাড়ি পাঠিয়ে দিলে কি করবি কাজ কাম কিছু শেখ।

ভাইয়া খরবদার খাওয়ার কথা বলবি নাহ তুই যখন গামলা গামলা খাস তার বেলায়? আর মেঘলাকে কিছু বলতে না দিয়ে মাহি বলল, আরে আপু এভাবে ঝগড়া করলে হবে? আমাদের তো গুছাতে হবে পিকনিক এর কথা ভুলে গেলে নাকি ?

কিরে তোরা দুটো মিলে কি গুজরগুজর ফুসুরফাসুর করছিস জঙ্গিদের মতো দেশটাকে উড়ানোর প্ল্যান করছিস নাকি?

হ্যাঁ সবাই তো আপনার মতো সব সময় এক লাইন বেশি বুঝে ও মামী মণি তুমি বলতো ওনাকে আমরা কি প্ল্যান করেছি আমরা বললে আবার ওনি আমাদের পচাঁবে। মাহির কথা শুনে মেহরাব এর মা বলল, ও হ্যাঁ মেহেরাব তোকে তো বলায় হয়নি ওরা সবাই মিলে প্ল্যান করেছে যে আজকে বিকেলে বাড়ির পিছনে পিকনিক করবে আর সাথে গান টান বাজাবে এই আর কি৷

হুম ওদের মাথায় তো এই আজাইরা প্ল্যানই ঘুরবে সবকটা গাধীর দল একটা কোনো পিকনিক টিকনিক হবে নাহ।

আম্মু দেখেছো তোমার ছেলে কি বলছে ওকে বলে দাও আমরা পিকনিক করেই ছাড়বো সবসময় শুধু আমাদের কাজে ব্যাকড়া দেয় বান্দর একটা। মেঘলার কথায় তাল মিলিয়ে মাহি বলল, হ্যাঁ মামী মণি তুমি ওনাকে বলে দাও পিকনিক তো আমরা করেই ছাড়বো৷

মেহরাব ভাই সবসময় ঠিকি বলে কিন্তু আজকে তোমার কথার সাথে আমি একমত হতে পারলাম নাহ আমরা সবাই মিলে পিকনিক করবো অনেক মজা হবে প্লিজ মেহরাব ভাই হ্যাঁ বলো। মীরা বলল।

সবাই মিলে মেহরাব কে হ্যাঁ বলতে বলল, কিরে মেহরাব তুই এভাবে জেদ করছিস কেনো ওরা তো আর অন্য কোথাও যেতে চাইছে না শুধু বাড়িতেই একটু আনন্দ করবে আর তোর বাবাও অনুমতি দেবে কিন্তু তুই এভাবে না বললি কেনো বলত? মেহরাব ওর মায়ের কথা শুনে বলল, আম্মু তুমিও ওদের মতো কথা বলছো কেনো ওরা নাহয় সব কটা গাধী তাই এমন বলছে৷ সবাই কলেজ ভার্সিটি অফ কোথাও দূরে কোথাও যাবো তা না বাড়ির মধ্যে ছোটদের মতো কি সব পিকনিক টিকনিক করবে গাধীরা।

মেহরাব এর কথা কেউ বুঝতে পারলো না তাই সবাই ওর দিকে জিগাসু দৃষ্টি তে তাকিয়ে থাকল তারপর মেহরাব এর মা বলল, মানে কি বলতে চাইছিস তুই?

মেহরাব উঠে ওর মায়ের পাশে বসে ওর মায়ের কাথে হাত রেখে বলল, আরে আম্মু আমরা তো কতদিন তোমার শশুর বাড়ি যায় না তাই চলো আমরা তোমার শশুর বাড়ি ঘুরে আসি তাহলে কি হবে বলতো তোমার শশুর বাড়ি ঘুরা হবে আব্বুর আর ফুপির বাবার বাড়ি ঘুরা হবে আর আমার মেঘলার দাদা বাড়ি ঘুরা হবে আর মাহির নানা বাড়ি ঘুরা হবে। সাথে সবার গ্রাম দেখাও হবে। এবার বলো আমার প্রস্তাবটা তোমাদের কেমন লাগল।কথাটা বলে মেহরাব আবার সোফায় হেলান দিয়ে বসল।

মেহরাব এর কথা শুনে সবাই চেঁচিয়ে উঠল মেঘলা দৌড়ে গিয়ে মেহরাব এর চুল টানতে টানতে বলল, ওরে ভাইয়া তোর মাথায় কি বুদ্ধি রে অনেক ভালো প্রস্তাব আমরা সবাই রাজি ডিল ফাইনাল।

মেহরাব মেঘলার থেকে চুল ছাড়িয়ে নিয়ে বলল,এই গাধী চুল ছাড় তোকে কতবার বলেছি আমার চুল ধরে টানবি নাহ ওফ সব চুল তুলে নিয়েছে। তাহলে এবার শিকার করলি তো যে তোরা সবকটা গাধী তোদের মাথায় ভালো কোনো বুদ্ধি আসেই নাহ। চুল ঠিক করতে করতে বলল মেহরাব।

এটা তো কখনো ভেবে দেখেনি মেহরাব তুই ঠিকি বলেছিস আমরা সবাই বরং ওখানেই যাবো রাতে তোর আব্বু আসলে আমি বলব।

তাহলে আমরা কবে যাচ্ছি। মাহির কথা শুনে মেহরাব বলল,আজকে তো আর যাওয়া হবে নাহ অনেকটা পথ যেতেও অনেক সময় লাগবে আমরা বরং পরশু দিন যাবো এর ভিতর সবাই প্যাকিং করে নে। মেহরাব এর কথায় সবাই খুশি হয়ে হইহই করতে করতে চলে গেলো আর মেহরাব সবার আড়ালে মাহিকে চোখ মেরে দিলো আর মাহিতো হা করে চোখ বড় বড় করে চারিদিকে দেখছে কেউ দেখে ফেলল কি না।

আচ্ছা ঠিক আছে তাহলে এই কথায় রইল আমরা পরশুদিন গ্রামের বাড়ি যাচ্ছি ইয়ে।
,,,,,,,,
সবাইমিলে যাবে তাই ছোটখাটো একটা বাস ভাড়া করা হয়েছে যেহেতু কালকে যাওয়া হবে তাই আজকেই বাস ভাড়া করে রাখল মাঝখানে একটা দিন চলে গেছে আর আজকে রাত পাড় হলেই আমরা গ্রামে উফ আমার তো ঘুমই আসছে নাহ কতদিন যায়নি সেই ছোট বেলায় গিয়েছিলাম। আচ্ছা আম্মু তোমাদের গ্রামটা কি অনেক সুন্দর?

মাহির কথাশুনে মাহির মা হেসে ব্যাগে জামা ভরতে ভরতে বলল,হুম অনেক সুন্দর গ্রাম একদম ছবির মতো সুন্দর জানিস আমরা ছোট বেলায় কি করতাম ? আমরা সব সই মিলে নদীতে সাঁতার কাটতাম আর আমিতো সারাদিন শুধু গাছে চড়ে বেড়াতাম বাবার একমাত্র মেয়েতো বড্ড দুষ্ট ছিলাম। তাই জন্য আমার দাদী কত যে রাগ করেছিলো। আমাদের একটা পেয়ারা গাছে ছিলো পুকুর পাড়ে আর আমি প্রায় সব সময় ওই গাছে চড়ে বসে থাকতাম তো একদিন আমার দাদী গাছের গোড়ায় কাঁটা দিয়ে রাখছিলো যাতে আমি গাছে উঠতে না পারি আমি তাও উঠতাম কিন্তু একদিন গাছ থেকে পড়ে গিয়ে পা ভেঙ্গে গেলো তারপর থেকে আর ভয়ে উঠতাম নাহ। আসলে দুই ভাই এর ছোট একটায় বোন ছিলাম তো তাই কেউ কিছু বলত নাহ অনেক আদরের ছিলাম।

আম্মু তার ছোট বেলায় কথা বলছে আর আমি মুগ্ধ হয়ে তা শুনছি আম্মু কে আজকে কেনো যেনো সেই গ্রামের কিশোরি মেয়ে লাগছে। সত্যি মেয়েদের বিয়ের পর সবটা কেমন অচেনা হয়ে যায়। আম্মু কতদিন বাবার বাড়ি যায় নাহ কালকে যাবে তাই হয়ত এতোটা প্রফুল্ল লাগছে। আর এই সবটা সম্ভব হয়েছে মেহরাব ভাইয়ের জন্য আপনি অনেক ভালো মেহরাব তাই জন্যই তো আপনাকে আমার এতোটা ভালো লাগে।
,,,
ফজরের আযান দিতেই আম্মু ডাকাডাকি শুরু করলো আমি যেনো উঠে রেডি হয়ে নিই আমি ঘুম ঘুম চোখে বললাম, কি হয়েছে আম্মু বাবা বাড়ি যাবা বলে কি ঘুমাতে পারছো নাহ? কেবলি তো ঘুমালাম এখনি ডাকছো কেনো? তোমার ঘুম না আসলে আব্বুর সাথে বসে গল্প করো যাও।

পাজি মেয়ে মেরে হাড় গুড়ো করে দেবো সকাল হয়ে গেছে উঠ বলছি আমি রান্না করছি যলদি উঠে পড় খেয়ে সবকিছু গুছাতে হবে।কথাগুলো বলে আম্মু চলে গেলো আর আমি ওভাবেই শুয়ে আবার ঘুমিয়ে গেলাম। যখন ঘুম ভাঙ্গল তখন দেখি চারপাশে ভালোই আলো ফুটে গেছে বাড়িটা কেমন যেনো নীরব আজব তো বাড়ির সবাই হঠাৎ করে কোথায় চলে গেলো? আমি বিছানা থেকে নেমে রুমের বাইরে এসে দেখি বাড়িতে কেউ নেই আর গুছিয়ে রাখা ব্যাগ ও নেই। মেন দরজা টাও হালকা করে ভিড়ানো আমি ওড়নাটা ভালো করে গায়ে জড়িয়ে ঘরে পায়ে দেওয়া স্যান্ডেলটা পায়ে দিয়ে বাইরে বেরিয়ে আসলাম। বাইরে এসে তো আমি রীতিমত শকড কেননা সব ব্যাগ গাড়িতে তুলা হচ্ছে আর সবাই একেবারে রেডি কয়েকজন আবার বাসে ওঠে গিয়ে কিছু সিটও দখল করে নিয়েছে। মেহরাব ভাই শার্টের হাতা কনুই পযন্ত তুলে আব্বুর হাতে হাতে সব ব্যাগ গাড়িতে তুলছে বেচারা ঘেমে গেছে। পাশেই মীরা আপু ছোট আয়নায় বার করে মুখের ফেস পাওডার ঠিক করতে ব্যাস্ত আসলে গরমে সব গলে গলে পড়ে যাচ্ছে। আমাকে হা করে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে দূরে বাসের কাছে দাঁড়িয়ে থাকা মেঘলা আপু চেঁচিয়ে বলল, কিরে তুই এখনো রেডি হসনি কেনো? যাওয়ার ইচ্ছে নাই নাকি?

এবার সবাই আমার দিকে তাকালো আমি ভয়ে কাচুমাচু করে চোখ ডলতে ডলতে আম্মুর দিকে তাকালাম আম্মু আমার তাকানো দেখে বলল, নারে মেঘলা ওকে নেবো নাহ ও বাড়ি পাহাড়া দিবে সবাই চলে গেলে বাড়িতে থাকবে কে তাই ভেবেছি ওকেই রেখে যাবো।

আমি একা থাকবো নাহ আমিও যাবো তোমাদের সাথে।

তোকে আমার মাঝে মাঝে মন চাই মেরে হাত পা ভেঙ্গে বসায়ে রাখি কখন ডেকেছি তোকে? এখন তোর উঠার সময় হলো? সবাই তো রেডি এখন সবাই গাড়িতে উঠবে সকাল সকাল বেরোনোর কথা ছিলো তাও গুছাতে গুছাতে নয়টা বেজে গেলো ঘাটে আবার জ্যাম আছে কি কে জানো আর তুই এখনো রেডিই হসনি?

আহ ওকে বকছো কেনো মাহি যা যলদি ভিতর থেকে রেডি হয়ে আয় তারপর ঘরে তালা দিয়ে আমরা গাড়িতে উঠবো।

যাক অবশেষে আব্বুর জন্য এযাত্রায় বেঁচে গেলাম আমি আর দাঁড়িয়ে না থেকে দৌড়ে ভিতরে চলে গেলাম রেডি হতে।

চলবে,,,,,?