ভালোবাসি বুঝে নাও ৩ পর্ব-২+৩

0
468

#ভালোবাসি_বুঝে_নাও
#সিজন-৩ পর্ব_২+৩
#সুমাইয়া_সুলতানা_সুমী
,
মেহরাব ভাই সব সময় আমার সাথে এমন করে আমি বুঝি না আমাকে কষ্ট দিয়ে ওনি কি লাভ পাই ওনার কোন পাকা ধানে মই দিয়েছিলাম কে জানে কত কষ্ট করে শাড়ি পরে সাজলাম সবার সাথে বেড়াতে যাবো বলে কিন্তু ওনার জন্য হলোই নাহ।, একা একা কথা বলতে বলতে বাড়ির দিকে যাচ্ছিলো মাহি আসলে মেহরাবদের বাসা থেকে মাহিদের বাসা বেশি দূরে নয় হেঁটেই যাওয়া যায়। মাহি ভালো করে হাঁটতে পারছে নাহ পায়ের সাথে শাড়ি শুধু বেঁধে যাচ্ছে তাই এক হাতে শাড়ির কুঁচি ধরে রেগে ধাপধুপ পা ফেলে হেঁটে যাচ্ছিলো রাস্তা দিয়ে বাইকে করে জোড়ায় জোড়ায় প্রেমিক প্রেমিকা যাচ্ছে সেদিকে একবার তাকিয়ে আবার হাঁটা শুরু করলো তখনি ওর সামনে একটা বাইক এসে থামলো মাহি রেগে কিছু বলতে যাবে তখনি উপরে তাকিয়ে দেখলো এ আর কেউ নয় বরং মেহরাব। তাই কিছু বলতে গিয়েও থেমে গেলো।

এভাবে হেঁটে কোথায় যাচ্ছিস তাও আবার রাস্তার মাঝ খান দিয়ে? আচ্ছা বাদদে বাইকে উঠ।

খুব করে বলতে ইচ্ছে হলো কেনো তখন তো খুব বলছিলেন যে আমি গেলে নাকি আপনি যাবেননা সবার সামনে আমাকে ধমক দিয়ে না নিয়ে চলে গেলেন তাহলে এখন আবার নিতে আসছেন কেন? কথাগুলো বলার প্রবল ইচ্ছে থাকলেও বললাম না অনেক কষ্টে কথাগুলো গিলে নিয়ে বললাম,, আমি যাবো নাহ।

দেখ এভাবে রাস্তার মাঝে সিনক্রিয়েট না করে ভালোই ভালোই বাইক এ বস সবাই অপেক্ষা করছে।

তখন তো আমায় না নিয়েই চলে গেলেন তাহলে এখন আবার আসছেন কেনো?

মেঘলা তোকে ছাড়া যাবে না বলছে আর ওখানে গিয়ে মুখ গোমরা করে বসে আছে আমার সাথে অনেক ঝগড়া করছে তাই বাধ্য হয়ে তোকে নিতে এলাম।

কেনো যানি ওনার কথা আমার বিশ্বাস করতে মন চাইছে না ওনাকেও কেউ বাধ্য করতে পারে? হয়ত আমার ওতো ভেবে লাভ কি আমি যেতে পারলেই হলো এখন যদি ভাব দেখিয়ে বলি যে যাবো না ওনি হয়ত আমাকে রেখেই চলে যাবে আর আমি এই দিনটা রুমে বসে বোর হতে চাই না তারচেয়ে বরং ওনার সাথে যাই, মনে মনে কথাগুলো বলে আমি ওনাকে বললাম,, আমরা যাবো কিসে?

কেনো তোর চোখে কি এই এতোবড় বাইকটা চোখে পরছে নাহ?

কিন্তু আপনার তো বাইক নেই তাহলে বাইক কোথায় পেলেন আর বাইকে গেলে সবাই দেখে উল্টো পাল্টা ভাববে।

তোর এতো ভাবতে হবে না চুপচাপ বাইকে উঠে বস আর হ্যাঁ ভালো করে ধরে বসবি নয়ত আবার পড়ে গিয়ে হাত পা ভেঙে বসে থাকবি।

ওনি বাইকে চড়ে চোখে চশমা দিয়ে ভাব নিয়ে সামনে হা দিয়ে ব্রেক ধরে রেখেছে আমি মনে মনে ওনাকে কয়েকটা বকা দিয়ে ওনার পিছনে গিয়ে উঠে বসলাম আর শক্ত করে ওনার ঘাড় চেপে ধরলাম। , আস্তে ধর এমন ভাবে ধরেছিস যেনো আমার ঘাড় মটকে দিবি।

ওনার কথায় আমি কিছু বললাম না শুধু মুখটা বাঁকিয়ে আমার শক্ত হাতে ধরে রাখা ওনার কাঁধটা একটু ঢিলে করে দিলাম। ওনি বাইক নিয়ে সোজা রবীন্দ্র সরোবরে চলে আসলো আমি বাইক থেকে নেমে দাঁড়িয়ে চারপাশে দেখলাম অনেকেই এখানে এসেছে প্রায় সবাই শাড়ি পড়ে এসেছে আর সবাই জোড়ায় জোড়ায় ওনি বাইক থামাতেই চিকনা করে চোখে চশমা পড়া একটা ছেলে দৌড়ে ওনার কাছে আসল,, এই নে রিফাদ তোর বাইক।

ভাই হঠাৎ করে আজকে বাইক নিলেন যে ও আচ্ছা ভাবি বুঝি বাইকে চড়তে পছন্দ করে? ছোট মানুষ তো তাই ভাবি ভালো আছেন?

আমি আশেপাশে তাকালাম ওনি ভাবি বলছে কাকে আমি কিছু বলার আছেই মেহরাব ভাই রিফাদ নামের ছেলেটার কাঁধে একটা চাপড় মেরে বলল, বড্ড বেশি কথা বলিস তুই যা এখন। ওনার বলার সাথে সাথে ছেলেটা হাওয়া হয়ে গেলো আমি কমরে হাত রেখে ওনার দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করলাম, আচ্ছা ওনি ভাবি বলল কাকে?

সেটা জেনে তুই কি করবি আয় আমার সাথে, ওনি আমার হাত ধরে সামনে হাঁটতে লাগল আমি শুধু চারপাশে তাকিয়ে মেয়েদের দেখছি কি সুন্দর সুন্দর মেয়ে কত সুন্দর করে শাড়ি পরেছে ওনি আমায় নিয়ে লেকের পাশে দাঁড়ালেন।

আচ্ছা মেঘলা আপুরা কই? ওনাদের কাউকেই তো দেখতে পাচ্ছি নাহ।

আছে হয়ত কোথাও আমি মেঘকে ফোন করে বলে দিয়েছি আমরা এখানে আছি চলে আসবে এখনি কিছু খাবি?

নাহ খাবো নাহ আমার এখানে অনেক ভালো লাগছে। আমরা ওখানে গিয়ে প্রায় ঘন্টা খানেক হাঁটা হাঁটি করলাম ওনার সাথে ঘুরে ঘুরে সবকিছু দেখছিলাম কিন্তু এর মধ্যে ওনাকে নিমনত কতবার যে জিগাস করছি যে মেঘলা আপুরা আসছে না কেনো কিন্তু ওনি উত্তরে শুধু একটা কথায় বলে আসবে একটু পর কিন্তু ওনার এই একটু পর হচ্ছেই নাহ।
আমরা দাঁড়িয়ে আছি তখনি পিছন থেকে কেউ আমার কাঁধে হাত রাখল আমি চমকে পিছনে তাকিয়ে দেখি মেঘলা আপু।

কিরে তুই এখানে কি করছিস? আর কার সাথে এসেছিস?

আমি মেঘলা আপুকে দেখে আপুকে জরিয়ে ধরলাম আর খুশিতে বললাম কেনো তুমি জানো না আমিতো মেহরাব ভাই এর সাথে এসেছি তুমিই তো আনতে বলেছো আমায়।

আমার কথায় যেনো আপু অবাক হলো আর অবাক হয়েই মেহরাব ভাইকে কিছু বলতে যাবে তার আগেই মেঘ ভাইয়া ওনাকে বলল,, মেহরাব তুই তো আমায় বললি মেঘলাদের নিয়ে ধানমন্ডি লেক এর পাড়ে যেতে তাহলে তুই রবীন্দ্র সরোবরে আসলি কেনো তাও আবার মাহিকে নিয়ে তুইই না বললি ওকে রেখে আসতে। মেঘ ভ্রু কুঁচকে মেহরাব কে বলল।

আসলে আমার একটা কাজ ছিলো তাই আমি গাড়ি থেকে তখন নেমে গেলাম আর তখনি আম্মু কল দিলো বলল মাহি নাকি কান্না করছে তাই আমি জানো এসে ওকে নিয়ে যাই তাই আবার বাড়ি গিয়ে ওকে নিয়ে আসলাম আর ভাবলাম আজকে লেকের পাড়ে হয়ত অনেক ভিড় হবে তাই এখানেই আসলাম আমি এখনি তোকে ফোন করতাম কিন্তু তার আগেই তুই পুরো গুষ্টি নিয়ে চলে আসলি, শেষে কথাটা মেহরাব দাঁতে দাঁত চেপে বলল।

একিরে ওনি কি মিথ্যা বাদী কতগুলো মিথ্যা কথা বলল আমি কখন কান্না করলাম আর মামী মনিই বা কখন ওনার কাছে ফোন দিলো ওনিই তো বলল মেঘলা আপুর জন্য ওনি আমায় আনতে গিয়েছেন আমি ওনার দিকে তাকিয়ে মনে মনে কথাগুলো বললাম কেননা সামনে বললে যদি আবার ধমক দেয়।

আচ্ছা অনেক কথা হয়েছে এখন চল সবাই আমরা ওদিকটাই যায় এক জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকলে নিজেকে কেমন বোকা বোকা লাগে,, মেঘলা বলল।

তুই আবার কবে থেকে নিজেকে চালাক ভাবিস তুই তো জন্ম থেকেই হাবলা। মেহরাব খোঁচা দিয়ে কথাটা বলল মেঘলাকে।

দেখ ভাইয়া আমি কিন্তু এখন মোটেও ঝগড়া কররার মুডে নেই আর যে নিজে হাবলা যে সবাইকেই হাবলা ভাবে ওকে এই চল সবাই। মেঘলা মাহিসহ বাকিদের নিয়ে অন্যদিকে গেলো আর ওখানে শুধু মেহরাব আর মেঘ দাঁড়িয়ে আছে।

আচ্ছা তুই এখানে কীভাবে আসলি?

আসলে তোর আসতে দেরি হচ্ছে দেখে আমি তোকে অনেকবার কল দিই কিন্তু তুইতো ব্যাস্ত মানুষ একবারও আমার কল রিসিভ করিসনি তখন মেঘলা বলল যে এখানে দেখার মতো কিছু নেই চলুন আমরা রবীন্দ্র সরোবরে যাই আর ওনার কথামত আমি এখানে আসলাম আর তোকে পেয়ে গেলাম।

মেঘ এর কথা শুনে মেহরাব আর কিছু বলল নাহ, আচ্ছা তাহলে চল যাওয়া যাক।

চলবে,,,,??

#ভালোবাসি_বুঝে_নাও
#সিজন-৩ পর্ব_৩
#সুমাইয়া_সুলতানা_সুমী
,
সূর্য মামার তীব্র আলোর রশ্মি চোখে পরতেই আমার চোখ থেকে ঘুমটা ছুটে পালিয়ে গেলো শুয়া থেকে উঠে বসে বিছানায় থম মেরে বসে আছি এটা আমার নিত্যদিনের অভ্যাস আর বাইরে থেকে আম্মুর গলার স্বর পাচ্ছি হয়ত প্রতিদিনের মতো আজকেও আমার গুষ্ঠির ষষ্ঠী পূজো করছে করুক তাতে আমার কি আমার এক কান দিয়ে ঢুকবে আর এক কান দিয়ে বের করে দেবো। পিঠের উপর পরে থাকা লম্বা এলোমেলো চুল গুলো খোপা করার বৃথা চেষ্টা করলাম কিন্তু ফলাফল শূন্য চুলের পিছন ছেড়ে সোজা হেঁটে বাথরুমে গেলাম ওখান থেকে ব্রাশে পেষ্ট নিয়ে ব্রাশটা মুখের মধ্যে পুরেই বাইরে চলে গেলাম। রাতে ঢোলা পিলাজু আর ছোট হাতার লম্বা গেঞ্জি পরে ঘুমিয়ে পরেছিলাম ওটা পরেই বাইরে চলে আসছি শুধু একটা উড়না বুকের উপর দিয়ে।

এতোক্ষণে তোর আসার সময় হলো তা এতোকষ্ট করে উঠতে গেলি কেনো ওভাবেই থাকতি রান্না হলে একেবারে না হয় ভাতটাও তোর সামনে দিয়ে আসতাম। রান্না ঘর থেকে চেঁচিয়ে বলল আম্মু।

সোফার দিকে তাকিয়ে দেখি মনির (ছোট ভাই) বই খুলে হা করে টিভির দিকে তাকিয়ে আছে আমি ওর মাথায় একটা গাট্টা মেরে অপর সোফায় বসে থাকা আব্বুর পাশে গিয়ে বসে জিগাস করলাম, কি হয়েছে আব্বু আম্মু সকাল সকাল এতো রেগে আছে কেনো?

তোকে তো বলায় হয়নি মেহরাব এর ছোট খালার মেয়ের বিয়ে ঠিক হয়ছে কালকে এসে দাওয়াত দিয়ে গেছে আমি তোর মাকে ভালো বুঝে বললাম যে তোমরাই যাও আমি আর যাবো না এতদূরে সেই সিলেট শুধু শুধু এতো মানুষ গিয়ে কি লাভ তারচেয়ে বরং তোমরাই যাও আমি বাড়িতে থাকবো ব্যাস তাতেই হয়ে গেলো। আমি নাকি তোর মামা মামীদের দেখতে পারি না তারা এতো ভালোবেসে দাওয়াত দিলো আমি হিংসে করে যাচ্ছি নাহ আমার ভাই কিংবা বোন এর মেয়ের বিয়ে হলে ঠিকি যেতাম আরো কতকি শুনতে হচ্ছে।

আব্বুর কথা শুনে আমার হাসি পেলেও আমি মোটেও হাসলাম না সোফা থেকে উঠে রান্না ঘরের সাথে লাগোয়া ভেসিন এ গিয়ে কলটা ছেড়ে দিতেই মা বলল,, মুখ ধুয়ে জামা পালটে এটা ওবাড়ি দিয়ে আয়।

আমিও ভদ্র মেয়ের মতো মাথা ঝাঁকিয়ে হ্যাঁ বলে মুখটা ধুয়ে রুমে চলে আসলাম তারপর জামা পাল্টে চুলটা আঁচড়ে পরিপাটি হয়ে ডাইনিং টেবিলের উপর থেকে প্লেট দিয়ে ঢেকে রাখা বাটি টা নিয়ে চললাম ও বাড়ির উদ্দেশ্য। ওড়না টা ভালো মতো মাথায় দিয়ে রাস্তা দিয়ে হাঁটছি মেহরাব ভাইদের বাসার সামনে এসে কলিং বেল বাজানোর একটু পরেই দরজা খুলে দিলো আমি সামনে তাকিয়ে দেখি মেহরাব ভাই একটা থ্রী কোয়ার্টার প্যান্ট আর গেঞ্জি পরে আমার সামনে তালগাছের মতো করে দাঁড়িয়ে আছে। কি হলো সামনে থেকে সরুন আমি ভিতরে যাবো।

কত মনযোগ দিয়ে খেলা দেখছিলাম জানিস? তুই বেল বাজানোর জন্য আমাকে খেলা দেখা বাদ দিয়ে দরজা খুলতে আসতে হলো এটা তুই ঠিক করিসনি তোর বেলটা আরো একটু পরে বাজানো উচিত ছিলো তাই শাস্তি স্বরূপ তুই এখানে দাঁড়িয়ে থাকবি।

আরে আমি কীভাবে জানবো যে আপনি ভিতরে খেলা দেখছিলেন আর আপনার পড়াশুনা নেই সামনেই তো অর্নাস ফাইনাল মামুর অফিসের একটু কাজ করলেই নিজেকে বড় মনে করে। আফসোস যদি কথাশুনো ওনার সামনে বলতে পারতাম কিন্তু না বলবো না কেননা ওনি চমর পর্যায়ে একটা ঘাড় তেড়্যা আমি এই কথাগুলো বললে ওনি আরো কথা বলবে আর তখন কথায় কথা বাড়বে। দেখুন আমার ভালো লাগছে না সকাল থেকে এখনো কিছু খাইনি ক্ষিদেই পেটের মধ্যে চোঁ চোঁ করছে এটা মামী মণি কে দিয়েই আমি বাড়ি চলে যাবো।

আমার কথায় হয়ত মহাশয়ের একটু দয়া হলো আমার উপর ওনি দরজা থেকে সরে দাঁড়ালো আমি ভিতরে ঢুকেই দেখলাম মামী মণি রান্না করছে আমি বাটিটা ডাইনিং টেবিলের উপর রেখে মামী মণির কাছে গেলাম। কি রান্না করছো?

তুই কখন এলি আয় এসেছিস ভালো হয়েছে শোন কালকে আমরা সবাই সিলেট যাবো আর কয়দিন পরেই তো বিয়ে তাই আমরা আগেই যাবো আর আমাদের সাথে তুইও যাবি।

কিন্তু আব্বু রাগ করবে তোমরা বরং যাও আমরা তো বিয়ের দিন যাবোই।

তোর বাপের সাথে আমি কথা বলবো তোকে কথা বলতে হবে নাহ।

আচ্ছা মামী মণি আমি তাহলে যাই ও হ্যাঁ আম্মু বাটিতে কি যেনো পাঠিয়েছে সেটা দিতেই এসেছিলাম ওই যে বাটিটা ডাইনিং এ রেখেছি। কথাগুলো বলে আমি মামী মণি কে কিছু বলতে না দিয়েই চলে আসছিলাম তখনি মেহরাব টিভি দেখতে দেখতে বলল,, আম্মু ওকে খেয়ে যেতে বলো নয়ত ওর বাপ আবার বলবে যে আমার একমাএ মেয়ে সকাল সকাল ও বাড়ি গেলো ওরা খাইয়েও দিলো নাহ।

শুনুন আমার আব্বু মোটেও এরকম বলবে নাহ ওকে আমি বাড়িতে গিয়েই খাবো৷ কিন্তু তা আর হলো কই ওনার আর মামী মণির জন্য আমাকে শেষ পর্যন্ত খেয়েই আসতে হলো মেঘলা আপু ভার্সিটিতে গেছে তাই আর ওর সাথে দেখা হলো নাহ।

,, পরদিন,,,

আব্বু তো আমাকে ছাড়বেই না এতোটা দূরের পথ তার উপর এভাবে আমার যাওয়া মোটেও ঠিক দেখায় নাহ তবুও মেহরাব আর মামা বলায় আব্বু রাজী হয়েছে আমরা মেহরাব একটা বড় মাইক্রো ঠিক করেছে কেননা মেহরাবদের কারে এতো মানুষ আটবে নাহ তাই মাইক্রো করেই যাবো ড্রাইভার এর সাথে মামা বসেছে আর তার পিছনে মামী আর দুইজন মহিলা আমি তাদের চিনি নাহ মেঘলা আপুদের আত্মীয় হবে হয়ত আর সব থেকে পিছনের সিটে আমি আর মেঘলা আপু। মেঘলা আপু জানালার পাশে বসেছে আর আমি মেঘলা আপুর পাশে হঠাৎ মনে হলো আমার পাশে কেউ বসলো তাকিয়ে দেখি মেহরাব হাত দিয়ে চুল টা ঠিক করে শার্টের বোতাম লাগিয়ে আমার দিকে তাকালো। কিরে এভাবে হা করে তাকিয়ে আছিস কেনো?

আপনি এখানে কেনো আপনার না মামার সাথে বসার কথা ছিলো।

হ্যাঁ তো? সামনে দুইজন বসার সিট সেখানে তিনজন কীভাবে বসব গাধী কোথাকার,, কথাটা বলেই ওনি কানে ইয়ারফোন গুজে ফোন টিপতে ব্যাস্ত হয়ে গেলেন।

এই মেঘলা আপু তুমি একটু আমার জায়গায় বসবে?

কেনো তোর ওখানে বসতে কি সম্যসা হচ্ছে? আর তুই জানিস না আমি জার্নি করতে পারি নাহ বমি পায় সেই জন্যই তো জানালার পাশে বসছি যাতে একটু বাতাস লাগে আর ভাইয়াকে চিনিস না ও জানে আমি বমি করি তাই আমি ওখানে বসলে আমার মুখে টেপ লাগিয়ে দেবে।

আমি হতাশ হয়ে ওদের দুজনের মাঝে বসে থাকলাম গাড়ি চলছে আপন গতিতে এখনো কতটা রাস্তা বাকি একজন তো বাইরের বাতাস খাচ্ছে আর একজন ফোনে ব্যাস্ত আমি আর কি করবো একটু ফোন নিয়ে ঘাটাঘাটি করলাম আমার আবার জার্নিতে ভীষণ ঘুম পায় তাই এখানেও তাই হলো কখন ঘুমিয়ে গেছি বুঝতেই পারিনি যখন ঘুম ভাঙ্গল তখন দেখি আমি মেহরাব ভাই এর বুকে ভালোই জায়গা করে নিয়ে হাত পা ওনার উপর তুলে দিয়ে ওনাকে জড়িয়ে ধরে আরামসে ঘুমাইছি। গায়ের উপর ভারি ভারি লাগছে ওনার বুক থেকে উঠে দেখি ওনার জ্যাকেট আমার গায়ের উপর আর ওনি জানালার সাথে মাথা দিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে আর মেঘলা আপুও আমার মতো হা করে ঘুম পারছে।

এতোক্ষণে মহারানীর ঘুম ভাঙ্গল আমার বুকটাকে তো ভালোই বিছানা বানিয়ে নিয়েছিলি তা ঘুম হয়েছে নাকি আরো ঘুমাবি।

আমি ওনাকে ছেড়ে দিয়ে সোজা হয়ে বসলাম ততক্ষণে গাড়ি থেমে গিয়েছে হয়ত পৌঁছে গেছি বাইরেও ভালোই অন্ধকার তখনি একটা মেয়ে এসে মাইক্রোর দরজা খুলে ভিতরে ওঠে আসলো।

চলবে,,,,??