মন গহীনে পর্ব-০৬

0
326

#মন_গহীনে

#পর্বঃ৬

#দোলন_আফরোজ

এভাবেই চলছে তাদের দিনকাল। কাব্য কিছুদিন যাবৎ ব্যস্ত সময় পার করছে। তিথী কে সকালে স্কুলে পৌঁছে দিতে পারলেও দুপুরে আর বাড়ি নিয়ে যাওয়া হচ্ছে না। ওভাবেই কাব্যর লোকেরা পাহারা দিয়ে নিয়ে যাচ্ছে তিথী বাড়ি পৌঁছানো পর্যন্ত। কিন্তু বিকেলে হাজার ব্যাস্ততার মাঝেও তিথীকে কোচিং এ নিয়ে যায়। আর নিয়েও আসে। কোচিং শেষ হয়ে ফিরতে প্রায় সন্ধ্যা হয়ে যায়, ততক্ষণ কাব্য পাশের চায়ের দোকান টাতে আড্ডা মারে।
আবির অবাক হয় এতে। যেই তিথীকে সে নিজেই কি*ড*ন্যা*প করালো এখন সেই তার বডিগার্ড হয়ে গেলো?🙄
আর সবচেয়ে আশ্চর্যের কথা যেই কাব্য মেয়েদের দিকে ফিরেও তাকায় না সেই একটা পিচ্চি মেয়েকে এতো গুরুত্ব দিচ্ছে। সব রকম বিপদ থেকে মানুষের কটু কথা থেকে আগলে রাখার চেষ্টা করছে। অনেক বার জিজ্ঞেস করেও কাব্যর থেকে কোনো উত্তর পায়নি সে।পরে ভেবেছে হয়তো অপরাধ বোধ থেকেই করছে এসব।

এদিকে কাব্য তানিয়া বেগম আর তারেক রহমান এর সাথে কথা বলেছে আবিরের ব্যাপারে।
চাচা আবির আমার বন্ধু, আমি ক্লাস ৬ থেকে আবির কে চিনি আর সে আমার জীবনের একটা বড় অংশ জুড়ে আছে। নিজের বন্ধু বলে বলছিনা, আবির সত্যিই খুব ভালো ছেলে। আর সব চেয়ে বড় কথা আবির তমাকে ভালোবাসে। আমি বলছিনা আমার বন্ধু বলেই তোমার আবিরের সাথে তমাকে বিয়ে দাও। শুধু এটা বলছি আবিরের ব্যাপারে খুঁজ খবর নিয়ে দেখতে পারো। আর আবিরের ফ্যামিলিটা নিঃসন্দেহে খুবই ভালো ফ্যামিলি।

তারেক রহমান উত্তরে বলেন, আসলে আমরা খুবই দুঃখিত যে আমার মেয়ের জন্যই ছেলেটা মরতে বসেছিলো। আমরা ছাপোষা মানুষ, মেয়েদের এসব ব্যাপার সব সময় এড়িয়ে চলার শিক্ষা ই দিয়েছি। তাই আমার মেয়ে হয়তো রিফিউজ করেছে ছেলেটাকে আর এই জন্যই হয়তো ছেলেটা এতো বড় একটা ভুল সিদ্ধান্ত নিতে দ্বিতীয় বার ভাবেনি।
মেয়ে যেহেতু হয়েছে বিয়ে দিয়েই হবে। ওদের পরিবারের যদি আগ্রহ থাকে তবে আমরাও খুঁজ খবর নিবো।

আচ্ছা আমি আহনাফ আংকেল এর সাথে কথা বলবো।
এভাবেই আরো কিছুক্ষণ কথা বলে তারা।

এদিকে কাব্য কে তিথীর মোটেও পছন্দ না। একে তো একটা কিডন্যাপার, তার উপর তার বাবা মা খুব বেশিই গুরুত্ব দেয় তাকে। আরো উঠখো ঝামেলা তো আছেই প্রতিদিন স্কুল কোচিং এ আনা নেয়া। এই কাবির সিং টার জন্য বান্ধবীদের সাথে একটু আড্ডা ও মারা যায় না।
তিথী শুধু ভাবতে থাকে কিভাবে একে জব্দ করা যায়। কিভাবে পিছু ছাড়া যায় এই গুন্ডাটার।

এখন প্রায় প্রায় ই কাব্য তিথীকে দুপুরে নিতে যেতে পারে না। এই সুযোগেই তিথী একটু আড্ডা মারতে পারে। আবার ফুচকার দোকানেও দেড়ি করতে পারে।

এদিকে ক্লাসের মেয়েরা যখন জেনেছে কাব্য তিথীর ভাই হয়, তখন থেকেই তিথীর কদর মেয়েদের কাছে বেড়ে গেছে।কেউ কেউ অবশ্য কটু কথা বলতেও ছাড়ে না তিথী হারিয়ে যাওয়ার পর থেকে। তিথীও যেই বদরাগী মেয়ে, সেও পালটা জবাব দিয়ে দেয়।

সেদিন স্কুল ছুটির পর কাব্য বাইকে হেলান দিয়ে স্কুলের বাইরে দাঁড়িয়ে আছে। তখনই চোখে পরে তিথী একটা ছেলের সাথে খুব হেসে হেসে কথা বলে স্কুল থেকে বেরুচ্ছে। কথা বার্তা শেষে ছেলেটার সাথে হাই ফাইভ করে হ্যান্ডশেক করে বেরিয়ে যায়।

এটা দেখে হুট করেই কাব্যর মেজাজ খারাপ হয়ে যায়। ইচ্ছে করছে ছেলেটাকে এক্ষুনি মাটিতে পুতে ফেলতে। আর তিথীকে…

তিথী দেখে কাব্য দাঁড়িয়ে আছে। সে জানেই ঔ দানব টার সাথেই তার যেতে হবে। তাই আর কিছু না ভেবে এগিয়ে যায় ওদিকেই।

এমা একি অবস্থা!
আপনার চোখ এতো লাল কেনো? কি হয়েছে আপনার?

কোনো কথা না বলে শুধু ইশারা করে বাইকে উঠতে।
তিথীও আর কোনো কথা না বাড়িয়ে চুপচাপ বাইকে উঠে যায়।
কাব্য অনেক চেষ্টা করছে নিজের রাগ টাকে কন্ট্রোল করার। বার বার শুধু চোখের সামনে হ্যান্ডশেক করার দৃশ্যটাই ভাসছে।তবুও নিজেকে বুঝানোর চেষ্টা করছে, ক্লাসমেট হতে পারে। এটা স্বাভাবিক। কিন্তু মন কিছুতেই মানতে পারছে না। টিনেজার ছেলে মেয়েদের কখন কাকে ভালো লেগে যায় তা বলা মুশকিল। তিথীর ভালো চাইতে গিয়ে তো সে নিজের ভালোবাসাটাও প্রকাশ করতে পারছে না। আর এমন কোনো ব্যবহার ও এই পর্যন্ত করেনি যে তিথীর তাকে ভালো লাগতে পারে।
বাই এনি চান্স তিথীর যদি ঔ ছেলেটাকে ভালো লেগে যায়। ওহহ আর ভাবতে পারছি না কিছু। মাথা কাজ করা বন্ধ করে দিচ্ছে। ভাবতে ভাবতেই বাইকের স্পিড অনেক বাড়িয়ে দেয়। ভয়ে তিথী বলে কি হয়েছে আপনার?
প্লিজ স্পিড কমান, ভয় লাগছে আমার। ভয়ে তিথী কাব্যর কোমড় জড়িয়ে ধরে। হঠাৎ ই যেনো কাব্যর সব রাগ পানি হয়ে যায়।

এই প্রথম প্রেয়সীর ছোঁয়া পেয়েছে সে। সারা শরীরে যেনো কারেন্ট বয়ে যাচ্ছে। হিম হয়ে আসছে হাত পা। চোখ দুটো যেনো বুজে আসছে আবেশে।ঠোঁটের কোণে ফুটে উঠে এক চিলতে হাসি। মনে হচ্ছে সময় টা এখানেই স্থির হয়ে যাক। প্রিয় মানুষ টা এভাবেই জড়িয়ে থাকুক সব সময়। আসতে আসতে স্পিড কমে আসে বাইকের।
তিথীও স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে কাব্য কে ছেড়ে দেয়।
আবারো চোখ মুখ শক্ত হয়ে যায় কাব্যর। মনে হয়ে যায় সেই তিক্ত দৃশ্য। ওহ তাহলে ভয়েই জড়িয়ে ধরেছিলো তিথী? চোখ দুটো আবারো আগ্নি বর্ণ ধারণ করে।

বাসায় পৌঁছে যায় তারা। বাসায় পৌঁছেই তিথী ওর রুমে চলে যায়, আর কাব্য ড্রয়িং রুমে ফ্যান টা চালু করে বসে। মাথা থেকে যেনো আগুন বেরুচ্ছে। কাব্য কে দেখে তানিয়া বেগম এক গ্লাস লেবুর শরবত নিয়ে আসে। এসে ছেলের চোখ মুখ দেখে উনি ভয় পেয়ে যান।

কিরে কি হয়েছে বাবা? শরীর খারাপ লাগছে তোর?এমন দেখাচ্ছে কেনো তোকে?

-কিছু হয়নি। সোফাতে মাথা এলিয়ে দিয়ে।
-শরবত টা খেয়ে নে বাবা। ভালো লাগবে।আর আমি খাবার দিচ্ছি খেয়ে রেস্ট নিবি। এখন কোথাও যাবি না।

-শরবত টা খেয়ে। আর কিছু খাবো না চাচী। আমি একটু তিথীর রুমে যাচ্ছি। আর যদি খুব বেশি প্রয়োজন না থাকে তবে আজ ওর কোচিং এ যাওয়ার দরকার নেই।

-খুব বেশি শরীর খারাপ লাগছে তোর? কান্না মিশ্রিত কন্ঠে।
-উহুম।
-তিথীর জন্য তোর ঝামেলা আরো বেড়ে গেলো। এমনিতেই তুই ব্যস্ত মানুষ।
– মোটেও না। ওসব চিন্তা তোমার করতে হবে না।আমি একটু তিথীর রুমে যাচ্ছি। বলেই উঠে যায়।

তিথী মাত্রই শাওয়ার নিয়ে বেরিয়েছে। পরনে ব্লু কালার প্লাজু আর পিংক টি শার্ট। চুল থেকে টুপটুপ করে পানি পরছে। ড্রেসিং টেবিলের সামনে গিয়ে চুল মুছতে মুছতেই আয়নাতে চোখে চোখ পরে যায় কাব্যর।

এই রুপে তিথীকে আরো স্নিগ্ধ, আরো কোমল লাগছে। ফর্সা গোলগাল মুখ। নীল বর্ণ চোখ, গাল দুটো যেনো পাকা টমেটো, ঠোঁট দুটো যেনো সদ্য ফুটা গোলাপ। ভিজা ছোট চুল গুলো কপালের উপর অগোছালো হয়ে পরে আছে। দেখতে পুরাই একটা এলোমেলো বার্বি লাগছে। সত্যিই তুমি আমার পুতুল বউ। (মনে মনে)

ইচ্ছে করছে এক্ষুনি ঔ নরম কোমল ঠোঁটে ডুবে যেতে।

একি আপনি এখনো যাননি?
-হুস ফিরে কাব্যর। শুকনো ঢোক গিলে গিলে চিন্তা করে কি আগে বাজে ভাবনা ভাবছিলো সে।
আবারো মনে হয় সেই কথাটা। আসতে আসতে তিথীর দিকে এগুতে থাকে সে।
এগুনোর ধরন মোটেও ভালো ঠেকছে না তিথীর। কারণ মুখে মুহূর্তেই আবার সেই আগের কাঠিন্য ভাব। ভয়ে তিথী পিছাতে থাকে। কাব্য এক পা এগুচ্ছে তিথী এক পা পিছাচ্ছে। এভাবেই এক সময় দেয়ালের সাথে মিশে যায় তিথী। নিজেকে আবিষ্কার করে কাব্য ঠিক ২ ইঞ্চি দূরত্বে। কাব্যর ৫’১১ ফিট শরীরের সামনে তার ৫’২ শরীর টা নেহাৎ ই ছোট। তার মাথাটা কাব্যর বুকের কাছে।মুখ তুলে কাব্যর দিকে তাকিয়ে ভয়ে শিউরে ওঠে সে। চোখ দুটো অসম্ভব রকম লাল।

তিথী জিভ দিয়ে শুকনো ঠোঁট জোড়া ভিজিয়ে জিজ্ঞেস করে, কি হয়েছে আপনার? সে কখন থেকে দেখছি কেমন অন্যরকম লাগছে আপনাকে।

কাব্য তিথীর দু পাশে দেয়ালে দুই হাত রেখে, ওর দিকে ঝুকে মুখ টা ওর মুখের খুব কাছে নিয়ে চোখের দিকে তাকায়।
একে অপরের নিশ্বাস অনুভব করছে তারা।তিথীর ভিতর টা কেমন যেনো কেঁপে ওঠে। হাত পা যেনো অবশ হয়ে আসছে।চোখ দুটো বুজে নেয় সে।
অন্য সময় হলে হয়তো কাব্য ও তিথীর কাছে আসাটা গভীর ভাবে অনুভব করতো। কিন্তু এখন পারছে না সে।কন্ঠে কাঠিন্য ভাব রেখেই জিজ্ঞেস করে ছেলেটা কে??

চোখ খুলে তিথী। অবাক চোখে চেয়ে জিজ্ঞেস করে কোন ছেলে?

যার সাথে হ্যান্ডশেক করলে।

বুঝতে পেরে তিথীও রাগ দেখিয়ে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেয় কাব্য কে। কিন্তু এক ইঞ্চি ও নড়াতে পারে না।
ওভাবে থেকেই আরো জোরে ধমক দিয়ে বলে, কি জিজ্ঞেস করছি উত্তর দাও। কে ছিলো ছেলেটা?

আপনাকে কেনো বলতে হবে?

কে ছিলো?😡

বলবো না আমি। আরো রাগ করে।যেই থাকুক আপনাকে বলতে বাধ্য নয় আমি। আর আপনি আমার ব্যাপারে মোটেও নাক গলাতে আসবেন না। আব্বু আম্মু আপনাকে এতো গুরুত্ব দেয় বলে একেবারে মাথা কিনে নিয়েছেন নাকি? আমি আপনাকে কিচ্ছু বলবো না। আর আপনি ও দয়া করে আমার পিছনে এমন গার্ড এর মতো লেগে থাকবেন না। আপনি আসার আগে আমার জীবনে কোনো সমস্যা ছিলো না। আর আপনি না থাকলেও আবার কোনো সমস্যা থাকবে না। আর তখন আমার কোনো সিকিউরিটির ও প্রয়োজন নেই। সো আপনি আমার জীবনে ইন্টারফেয়ারে করা বন্ধ করুন।

হুট করেই যেনো কাব্যর রাগ টা ৫ গুণ বেড়ে গেছে।
এক হাতে তিথীর দু চোয়াল শক্ত করে ধরে বলে, আজ বলেছো বলেছো। নেক্সট যদি আর কখনো এমন কথা শুনেছি আমার ভয়ংকর রুপ টা দেখতে পারবে তখন। ( চোখ দুটো দিয়ে যেনো আগুন বেরুচ্ছে) এটুকু বলেই বেরিয়ে যায় কাব্য।

তিথী দুহাত দিয়ে মুখ চেপে ধরে। আয়না দিয়ে দেখে লাল হয়ে গেছে। হাজার টা গালি দেয় কাব্য কে। গুন্ডা একটা। আমি যার তার সাথে কথা বলি এতে উনার কি। আজব তো।আর আমি কেনোই বা উনাকে কৈফিয়ত দিতে যাবো। হুহ। মোটেও বলবো না আমি উনাকে। আর বলতে বাধ্য ও নই।

এদিকে কাব্য সোজা বেড়িয়ে যায় ওদের বাড়ি থেকে। তানিয়া বেগম পিছন থেকে অনেক ডাকেন। খেয়ে যা বাবা। এই দুপুর বেলা এভাবে বেরুতে নেই না খেয়ে। কিন্তু আর পিছু ফিরে তাকায়নি কাব্য।

তানিয়া বেগম মেয়েকে এসে জিজ্ঞেস করেন কি হয়েছে, কাব্য এভাবে বেরিয়ে কেনো গেলো? তার এক উত্তর তোমার আদরের ছেলেকে গিয়ে জিজ্ঞেস করো। আমি কিছু জানি না।
সেদিন আর কোচিং এ যেতে দেয়নি তানিয়া বেগম তিথীকে।

এদিকে কাব্য ভাবছে সত্যিই কি তবে ঔ ছেলের সাথে কিছু আছে তিথীর? সোজা করে উত্তর দিলো না কেনো?মাথার যন্ত্রণায় মাথাটা ফেটে যাচ্ছে। নাহ এর একটা বিহিত করতেই হবে।
দুপুরে বাড়িও ফিরেনি সে। তাই খাওয়াও হয়নি। খোঁজ নিয়ে জানতে পারে তিথীর কোচিং এই পড়ে ছেলেটা। কোচিং ছুটির আগেই গিয়ে হাজির হয় সেখানে। আজ সত্যিই তিথী আসেনি। আর কাব্য ও আজ তিথীর জন্য আসেনি এখানে।

কোচিং ছুটির পর ঔ ছেলেটাকে হাতে ইশারা করে ডাকে কাব্য। ওর সাথে আরো ৩টা চেলা। ছেলেটা ওদের দেখে ভয়ে চুপসে যায়।

ভয়ে ভয়ে কাছে যায় ওদের। কাঁপা কাঁপা গলায় বলে, ডেকেছেন ভাইয়া??

আরেহ ছোট ভাই, ভয় পাচ্ছো কেনো তুমি? তোমায় তো এমনি ডেকেছি। এতো ভয় পাওয়ার কিছু নেই।কাব্য অভয় দেয়াতে কিছুটা স্বাভাবিক হয় ছেলেটা।

কাব্য ছেলেটার কাঁধে হাত রেখে জিজ্ঞেস করে, নাম কি তোমার।
জ্বি জ্বি ভাইয়া, ফাহিম।।
-তো ফাহিম, তিথীকে তুমি কি করে চিনো?
– আমার ক্লাসে পড়ে ভাইয়া।
– পছন্দ করো ওকে?
– না ছিঃ ছিঃ ভাইয়া।
– ছিঃ ছিঃ কেনো? তিথী কি দেখতে এতোটাই খারাপ?
– এই না না ভাইয়া। তিথীতো আমাদের ক্লাসের সবচেয়ে কিউট মেয়ে।
– তো?
– ও যা বদরাগী, যেই প্রপোজ করে তার ই নাক ফাটিয়ে দেয় ও। কিছুদিন আগেই আমাদের ক্লাসের পলাশের নাক ফাটিয়েছে। আরো কজন কে যে থাপ্পড় দিয়েছে। আর প্রিন্সিপাল এর কাছেও বিচার দেয়। তাই সবাই ভয় পায় তাকে।

মনে মনে হাসে কাব্য। তাহলে থাপড়া থাপড়ির অভ্যাস টা ম্যাম এর খুব ভালোই রপ্ত।
তো হ্যান্ডশেক করলো যে তখন তোমার সাথে?

ও আমার কাছে ম্যাথস এর কিছু নোটস চেয়েছে।কয়েকদিন গ্যাপ দিয়েছিলো তো ও,তাই মিস করে গেছে ওগুলো। আমি বলেছি ওগুলো ওকে দিবো আর বুঝিয়েও দিবো। তাই হাই ফাইভ করেছিলো।

ওহ আচ্ছা এই ব্যাপার। আর আমি কি না কি ভেবে নিচ্ছিলাম।( মনে মনে)

আচ্ছা যাও ছোট ভাই। দূরে দূরে থাকবা ওর থেকে। আর কোন চ্যাপ্টার এর নোটস চেয়েছে?

ছেলেটা বলার পর, চলে যেতে বলে ওকে, আর বলে কোনো নোটস দেয়ার দরকার নেই।

কাব্যর বাড়ি ফিরতে ফিরতে রাত ৯ টা বেজে যায়।
ফ্রেশ হয়ে এসে ভাবতে থাকে তুই শেষ পর্যন্ত একটা ক্লাস টেন এর ছেলেকে জেলাস ফিল করছিস কাব্য। মাথা কি পুরোই গেছে তোর?

যাই হোক, আমার পুতুল বউ নিয়ে কোনো রিস্ক নিতে পারবো না আমি।




চলবে…