মায়ার জালে পর্ব-১১

0
439

#গল্প::#মায়ার_জালে
#writer_পাপন
#পর্ব::১১

অনু আকাশের থেকে হাত ছাড়িয়ে রুমের দিকে যায় । রুমে ঢুকে দেখে আয়ান রুমে নেই। হঠাৎ অনুর চোখ যায় বেলকনির দিকে। দেখে আয়ান দাড়িয়ে আছে। অনু আস্তে আস্তে আয়ানের পাশে গিয়ে দাঁড়ায় ।আয়ান একমনে দাড়িয়ে আছে। অনু যে তার পাশে দাঁড়িয়ে আছে সেটা খেয়ালই করে নি। হঠাৎ অনুর কথায় আয়ানের ধ্যান ভাঙলো। অনু বললো,,,,,,,,

অনু— এখানে দাঁড়িয়ে কি করছেন?

আয়ান— তুমি কখন এলে।(অনুর দিকে না তাকিয়ে)

অনু— অনেকক্ষণ থেকে দাঁড়িয়ে আছি।

আয়ান— কোথায় ছিলে?

অনু— নিচে গিয়েছিলাম । মায়ের সাথে কথা বলতে।

আয়ান— কেন মিথ্যে বলছো অনু।

অনু— আমি মিথ্যে কি বললাম আপনাকে।(অবাক হয়ে)

আয়ান— তুমি রান্না ঘরে কি করছিলে ভাইয়ার সাথে ।

অনু— মানে। উনার সাথে আবার কি করছিলাম । আপনি বিছানায় চলুন। এভাবে অসুস্থ শরীর নিয়ে হাঁটতে হবে না।( অনু আয়ানের হাত ধরে বিছানায় নিয়ে বসায়)

আয়ান মনে মনে ভাবছে,,,, আমাকে ফাঁকি দেওয়ার কি আছে অনু। আমাকে কি তুমি মায়া দেখাচ্ছো। তুমি বলতেই তো পারো যে তোমার ডিভোর্স চাই। তুমি ভাইয়ার কাছে ফিরবে। আমার হয়তো কিছুটা কষ্ট হতো তবে আমি মানিয়ে নিতাম ।

অন্যদিকে অনু ভাবছে,,,,, উনি কি আমাকে আকাশের সাথে দেখেছেন। উনি আমাকে সন্দেহ করছেন না তো। বিশ্বাস করুন মি: আয়ান আমি যে আপনাকেই ভালোবাসি । আপনি ছাড়া যে আমি অসম্পূর্ণ ।

এদিকে আকাশ লেপটপ ইউজ করছে ঐই সময় রিতু আকাশের রুমে ঢুকলো। রিতু রুমে ঢুকে বললো,,,,

রিতু— আকাশ ভাইয়া কি করছো।

আকাশ— দেখতে পাচ্ছো না কি করছি।

রিতু— এভাবে বলছো কেন।

আকাশ— তো কি বলবো। আরে রিতু যে এসো বসো। দেখো আমি লেপটপ ইউজ করছি এভাবে বলবো।

রিতু— হুম এভাবেই তো বলবা। আচ্ছা ভাইয়া তুমি তো অনুকে ভালোবাসো তাই না । তাহলে তাকে তোমার জীবনে ফিরিয়ে আনছো না কেন।

আকাশ— অনু তো আমাকে ভুলে গেছে রে। কিন্তু আমি তো ওকে ফিরিয়ে আনবোই। আচ্ছা শোন একটা কাজ করে দিবে। তোমাকে চকলেট দিবো।

রিতু— আমি কি বাচ্চা নাকি যে চকলেট দিবা।

আকাশ — আমি তো জানি মেয়েরা চকলেট পছন্দ করে তাই বললাম ।

রিতু— আচ্ছা বলো কি কাজ।

আকাশ— আমার কাপড় গুলো ধুয়ে দিবে। না মানে কাজের লোক তো ছুটিতে গেছে। আর কাল একটা জায়গায় যাবো তো।

রিতু— আমি কেন দিবো। আমি কি তোমার বিয়ে করা বউ। আমি পারবো না।

আকাশ— প্লিজ প্লিজ প্লিজ প্লিজ প্লিজ প্লিজ প্লিজ ।

রিতু— ওকে । দিচ্ছি ।

রিতু আকাশের কাপড় গুলো ধুয়ে বাইরে এলো।

আকাশ— শেষ ।

রিতু— হুম ।।

আকাশ—- thank you….

রিতু—- আমার চকলেট দিলেই হবে।

আকাশ— আচ্ছা দিবো।

রিতু চলে যায় আকাশের রুম থেকে । অন্যদিকে আয়ান ঘুমিয়ে পড়েছে আর অনুর যেন ঘুম আসছে না।কি করবে বুঝতে পারছে না। হঠাৎ অনুর মাথায় একটা দুষ্টু বুদ্ধি এলো। সে তাড়াতাড়ি করে বিছানা থেকে নেমে মেকআপ বক্স নিয়ে আসে। তারপর ঘুমন্ত আয়ানের মুখটা মেয়েদের মতো সাজাতে থাকে। অনু আয়ানকে সাজাচ্ছে আর মুচকি মুচকি হাসছে। মাঝে মাঝে আয়ানের গালে কিস করছে তো ঠোঁটে করছে। আয়ান তো ঘুমের সাগরে পাড়ি দিয়েছে। অনু আয়ানকে সাজিয়ে সেও ঘুমিয়ে পড়ে ।

/

সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসছে। আয়ানের ঘুম ভেঙে যায় । সে ঘুম থেকে উঠে দেখে অনু তার পাশে গুটিশুটি মেরে ঘুমিয়ে আছে। আয়ান অনুর দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে ওয়াশরুমে যায় ফ্রেশ হতে। ওয়াশ রুমে ঢুকে আয়নার দিকে তাকাতেই আয়ান থমকে যায় । পুরো ভুত সাজিয়ে দিয়েছে। কিন্তু আয়ান বুঝতে পারছে না করলো টা কে। আয়ান ফ্রেশ না হয়ে ওয়াশ রুম থেকে বের হয় । গিয়ে অনুকে ডেকে তোলে। ঘুম ঘুম চোখে অনু আয়ানের দিকে তাকাতেই ভয় পেয়ে যায় । অনু জোরে চিৎকার করে দেয়। অনুর চিৎকার শুনে আয়ানের মা আর রিতু দৌড়ে রুমে আসে।

আয়ানের মা—- কি হলো অ,,,, আআআআআআআ

আয়ানের মা আর রিতুও আয়ানকে দেখে ভয়ে চিৎকার করে দেন।

আয়ানের মা— আয়ান তুই এভাবে সেজেছিস কেন। শরীর খারাপ হয় নি তো তর।

আয়ান— আরে মা আমি জানি না কে সাজিয়েছে।

আয়ানের মা— অনু তুমি তো রুমে ছিলে। দেখতে পাওনি ।

অনু— আসলে মা আআমি সাজিয়েছি।(আমতা আমতা করে বললো)

আয়ানের মা আর রিতুও হাসতে হাসতে চলে যান। আয়ান তো রেগে ফায়ার হয়ে আছে। যেন অনুকে ধরতে পারলে খেয়ে ফেলবে। অনু বিছানার অন্যপাশে দাড়িয়ে আছে।

আয়ান— অনু তুমি আমাকে এভাবে সাজালে কেন। ভালোয় ভালোয় বলছি সামনে এসো। নয়তো ধরতে পারলে খেয়ে ফেলবো ।

অনু— আমি আসলে ইচ্ছে করে করিনি।

আয়ান— এখন তুমি আমাকে ফ্রেশ করিয়ে দিবে।

অনু— আচ্ছা । ( অনু যেন মেঘ না চাইতে বৃষ্টি পেয়ে গেলো।)

অনু আয়ানের মুখ ধুয়ে দিচ্ছে আর আয়ান কিছুক্ষণ পর পর অনুর মুখে পানি ছিটাচ্ছে। অনু বিরক্ত হয়ে আয়ানকে ধাক্কা দিতে নিলেই হোঁচট খায়। পড়ে যেতে নিলেই আয়ান অনুকে শক্ত করে ধরে। আয়ানের এক হাত অনুর কোমরে আর অন্য হাত অনুর একটা হাত ধরে আছে। আয়ান ধীরে ধীরে অনুকে কাছে টেনে নেয় । অনু আয়ানের ঠোঁটে কিস করে তাড়াতাড়ি ওয়াশ রুম থেকে বেরিয়ে আসে। আয়ান তো দাঁড়িয়ে আছে। আর ভাবছে,, অনু কি সত্যিই আমাকে ভালোবাসে। আয়ান ফ্রেশ হয়ে বাইরে এসে দেখে অনু বিছানায় বসে আছে। আয়ান অনুর দিকে আড়চোখে তাকাচ্ছে আর চুল ঠিক করছে। অনু বললো,,,,,

অনু— নিচে চলুন খাবারের জন্য মা ডেকেছেন।

আয়ান— হুম চলো।

তারপর দুজনে নিচে যায় । সবাই মিলে খাওয়া দাওয়া শেষ করে । আয়ান উপরে চলে যায় । আর কাজের লোক ছুটিতে থাকায় অনু আয়ানের মাকে কাজে একটু হেল্প করে। কাজ শেষ করে অনু উপরে যায় । রুমে ঢুকে দেখে আয়ান ঘুমিয়ে গেছে। অনুও গিয়ে আয়ানকে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে পড়ে,,,,,,,,,,,

চলবে,,,,,,,,,,