লাল গোলাপ পর্ব-০৩

0
266

#লাল_গোলাপ
পর্বঃ ০৩

এমন তো হওয়ার কথা ছিল না। রুমি যেন পাথর হয়ে গিয়েছে। হঠাৎই নিশান আবার রুমির সামনে এসে বসে আর হাসতে থাকে। রুমি নিঃশব্দে কাঁদছে আর নিশানের দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। নিশান হাসতে হাসতে বলে,

– আহহা কাঁদছ কেন!! আমি মজা করেছি। আসলে দোষটা আমার। তুমি আমাকে সরি বললেও আমি সেদিন তোমার সাথে খারাপ ব্যবহার করেছি। যা একটা মেয়ের পক্ষে মেনে নেওয়া সহজ না। হয়তো আমি মাতাল ছিলাম আমার ফ্রেন্ডদের জন্য কিন্তু তাও খারাপ তো আমি তোমার সাথে করেছি তাইনা। আসলে আমিই সরি। তুমি আমাকে মাফ করে দেও। সেদিনের জন্য আর এখানের জন্য।

রুমি নিশানের সুন্দর মুখখানার দিকে অপলক দৃষ্টিতে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। রুমি এই মানুষটাকে বুঝতেই পারছে না। এত্তো ভালো অভিনয় করে যে কোনটা আসল আর কোনটা নকল বুঝতেই পারা যায় না। কিন্তু ওর মনে হচ্ছে এখন কথাগুলো সব আসল। নিশান রুমির নিস্তব্ধতা দেখে আবার বলে,

– রাগ করেছ?? আচ্ছা সরি। প্লিজ আর কেঁদো না। তোমার মতো মিষ্টি মেয়েকে কান্নায় মোটেও মানায় না। কাঁদলে মনে হয় বাঁশ বাগানে পেত্নী বসে কাঁদছে। হাহা।

রুমি আর না হেসে পারলো না। পেত্নী বলেছে বলে রাগ করবে নাকি যেভাবে বলেছে তার জন্য হাসবে। রুমি হাসিটাকেই বেছে নেয়। আর কান্নামিশ্রিত হাসি দিয়ে বলে,

– আমাকে বাঁশ বাগানের পেত্নী লাগে?? আপনি দেখেছেন কখনো পেত্নী??

– হ্যাঁ এই যে আমার সামনে বসে কাঁদছে। তুমি কাঁদছ বলেই তো তোমাকে পেত্নী লাগছে। এমনিতে তো খুব মিষ্টি লাগে।

– হয়েছে আর পাম দিতে হবে না। আপনি খুব ভালো অভিনয় করেন। আমাকে কাঁদিয়েই ছাড়লেন।

– আচ্ছা বাবা সরিইই। বলো কি খাবে??

– আপনার মাথা।

– ওকে। এই মামা…আমার মাথাটা ফ্রাই করে দেওতো।

– এইই কি বলছেন…আপনিও না। হাহা।

– আমার মাথা খাবে বললে না তাই ওর্ডার দিলাম।

– ধুর!! আপনি খুব মিশুক তাই না??

– উমমম…হয়তো। যাদের আমার ভালো লাগে আমি তাদের সাথে মন খুলে কথা বলি।

– আপনার এই কথা বলা আমার পিঠে পড়বে জানেন??

– কেন কেন??(অবাক হয়ে)

– আশেপাশে একটু দেখুন তো।

নিশান আশেপাশে তাকিয়ে দেখে অনেকগুলো মেয়ের তীক্ষ্ণ চোখ শুধু ওদের দিকে তাকিয়ে আছে। মনে হচ্ছে এখানে বিশেষ কিছু হচ্ছে। নিশান বলে,

– আসলেই তো। ব্যাপারটা খুব চিন্তনীয়। আচ্ছা তোমার বিএফ কই?? তাকে দেখছি না যে??

রুমি লজ্জা পেয়ে মাথা নিচু করে আস্তে করে বলে,

– আমার কোন বিএফ নেই। কাউকে ওভাবে পছন্দ হয়নি। আপনার জিএফ??

– ছিল একটা।

রুমি মাথা তুলে প্রশ্নসূচক চাহনি দেয়। নিশান বলে,

– চিট করেছে আমার সাথে। খুব ভালোবাসতাম। কিন্তু ও আমাকে কোনদিন ভালোই বাসে নি। ও ভালোবেসেছে আমার টাকাকে। আমার সাথে সম্পর্ক থাকা অবস্থায় অন্য একটা ছেলের সাথে ডেটে যেত। কিন্তু একদিন আমার ফ্রেন্ডরা ওকে ধরে ফলে।

– সরি। আপনাকে কষ্ট দিয়ে ফেললাম। সেদিন নেশা করে আমাকে সে ভাবেছিলেন। আর উল্টা পাল্টা বলছিলেন। খুব ভালোবাসতেন তাইনা??

– অনেক। নিজের চেয়েও বেশি। এই চারটা ফ্রেন্ড না থাকলে হয়তো আমিও আজ থাকতাম না। ওরা দিন রাত এক করে আমাকে সামলে রেখেছে। নাহলে হয়তো..আচ্ছা বাদ দেও। তোমার সম্পর্কে বলো।

– আমি রুমি। একটা ছোট ভাই আছে। কলেজ পড়ে। বাবা বিজনেস ম্যান। আপনি লুমানা গার্মেন্টস এর নাম শুনেছেন??

– হ্যাঁ। বেশ নামকরা।

– ওটা আমার বাবার। লুমানা আমার নানীর নাম। তার নামেই।

– ওয়াও। খুব ভালো। আন্টি কি করে??

– মা বাসায়ই থাকে। সবার খেয়াল রাখে।

– বাহ।

– আপনার??

– আমি আর আমার ছোট বোন মিলা। মিলাও কলেজে পরে। এবার পরীক্ষা দিবে। বাবা মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানির মালিক। তার বিজনেস অনেক বড়। আর আমার মাও তোমার মায়ের মতোই।

– বাহ আমাদের অনেক কিছুই সেইম।

– হ্যাঁ। তা বললে নাতো কি খাবে??

– না এখন আর কিছু খাবো না। চলুন উঠি। অনেক কথা হলো। নাহলে মানুষ উল্টা পাল্টা ভাববে। হাহা।

– তাতে কি। অন্যদের কাজ তো শুধু ভাবাই। ভাবুক তারা।

– আহহা চলুন তো।

– আচ্ছা। চলো।

নিশান আর রুমিকে দেখে ফারহান বলল,

– কিরে সব ঠিক হলো??

রুমি মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ বলে। ফারহান হাসি দিয়ে বলে,

– যাক ভালোই হলো। আমিতো ভাবলাম আবার কিছু হয় কিনা।

নিশান বলে,

– আবার কি হবে!!

– না না কিছু না। তা রুমি কাল তো অনুষ্ঠান আছে তুই আসবি না??

– হ্যাঁ আসবো তো ভাইয়া। আপনারা আসবেন??

– হ্যাঁ আমাদের তো আসতেই হবে।

– আচ্ছা ভাইয়া আসি তাহলে। আমার যেতে হবে মা টেনশন করেছি। আসি ভালো থাকবেন। (নিশানকে উদ্দেশ্য করে)

– আচ্ছা। (নিশান)

রুমি চলে গেলে ফারহান নিশানকে বলে,

– রুমি মেয়েটা অনেক ভালো তাই না দোস্ত?? খুব মিষ্টি একটা মেয়ে। খুব মায়াবী। তোর পছন্দ হয়েছে দোস্ত??

নিশান চুপ করে থেকে বলে,

– জানি না। চল বাসায় যাবো। কাজ আছে।

– এত্তো সুন্দরী একটা মেয়ে দেখেও বলিস জানি না। হায়রে…তোর যে কি হয়েছে আমি বুঝতেই পারছিনা।

– বুঝা লাগবে না। বাকি গুলো কই??

– ওরা শয়তানি করতে গেছে নতুন গুলোর সাথে।

– এই তিনটা কি আর ভালো হবে না দোস্ত??

– কি বলবো বল৷ বাচ্চা স্বভাবটা রয়ে গেছে ওদের। চল আমরা যাই।

– হুম। একটা কাজ করিসতো।

– কি??

-.রুমির নাম্বারটা পাঠিয়ে দিসতো রাতে।

ফারহান বোকা হয়ে যায় নিশানের কথা শুনে। যে লোক একটু আগে ইন্টারেস্টই দেখাচ্ছিল না সে আবার নাম্বার চাচ্ছে। নিশান বলে,

– কিরে চুপ মারলি ক্যান??

– তুইতো একটু আগে ওকে পাত্তাই দিলিনা। এখন আবার নাম্বার!!

– তুই বুঝবি না। রাতে নাম্বারটা পাঠিয়ে দিস। তুই গাড়ি এনেছিস??

– হ্যাঁ। যা তাহলে। আমার একটু কাজ আছে।

– হুম। শোন, মিলার কলেজ ছুটি হয়েছে অনেক আগেই। শালাবাবু আপনি লেইট করেছেন।

– কি বলিস!!! আল্লাহ!! আজকে আমার খবর আছে। দোস্ত যাই যাই আমি।

– সাবধানে যাস…আমার বোনটাও কি একটা মেয়ে। এইটুকু মেয়ে এত্তো বড় ছেলেকে কীভাবে কন্ট্রোলে রেখেছে। বাঙালি মেয়ে আফটার অল। বাহ। জিও বোন জিও। হাহা।

নিশান হাসতে হাসতে গাড়িতে করে বাসায় চলে যায়। অন্যদিকে রুমি বাসায় গেলে ওর মা বলে,

মাঃ কিরে মামনি তোর ক্লাস কেমন চলছে?? ফারহান হেল্প করছে তো??

রুমিঃ হ্যাঁ মা। ফারহান ভাইয়া আর তার ফ্রেন্ডরা অনেক ভালো। আমাকে অনেক হেল্প করছে। তুমি চিন্তা করো না।

মাঃ চিন্তা তো করতে চাই না। কিন্তু আমার মামনিটা তো অনেক সুন্দরী। তাই চিন্তাটাও অনেক বেশি হয়। মায়ের চিন্তা তুই বুঝবি না। যা রুমে গিয়ে ফ্রেশ হ। আমি খাবার দিচ্ছি। রুমি খাবার খেয়ে একটা ঘুম দিয়ে পড়ে এখন কফি হাতে বসে আছে।

ঘড়িতে এখন রাত ১১.৪৩ মিনিট। ভার্সিটির কাজ অল্প কিছু বাকি তাই রুমি কফি খেয়ে একটু নিজেকে ফ্রী করছে। যাতে ঘুমটা কেটে যায়। কফির মগে চুমুক দিচ্ছে আর রুমি নিশানের কথা ভাবছে।

– লোকটা এমন কেন?? তাকে বুঝা খুব দায়। একেক সময় একেক রকম থাকে। মাথা ঘুরায় ওনার কাছে গেলে। কিন্তু লোকটা আবার ভালো আছে। তিনি কি সুন্দর বলে দিলেন, আমার যাকে ভালো লাগে আমি তার সাথে ফ্রী ভাবে কথা বলি। তাহলে কি উনার আমারকে ভালো?? লাগে হয়তো। লাগবেই না ক্যান?? আমি কি কম সুন্দর নাকি?? অন্য দশটা মেয়ের চেয়ে অবশ্যই আমি সুন্দর। কারণ আমি তাদের মতো মেকআপ করে আমার আসল ফেইসটাকে লুকিয়ে রাখিনা। হয়তো তাদের হেবি মেকআপে অপ্সরা লাগে। আমি তো মেকআপ ছাড়াই অপ্সরা। আমার বড় বড় ভাসানো মায়াবী চোখ, সুন্দর নাক আর ঠোঁট। আমার ঠোঁটটা কি নরম আর সুন্দর। মাঝে মাঝে নিজেই ছুয়ে অবাক হয়ে যাই। তারপর আবার এই ছোট্ট তিলটা তো কত ছেলেকে ঘায়েল করে দিল। অবশ্য শুনেছি ঠোঁটের কোণায় তিল থাকলে নাকি প্রেম করে বিয়ে হয়। কে জানে আমারও তাই হয় নাকি। আহা আমার কেশের কথা আর কি বলব। এত্তো বড় আর ঘনকালো চুল আর কারো আছে বলে মনে হয়না ভার্সিটিতে। সবাই কি রঙ করে চুপের আসল সৌন্দর্য্যটাই শেষ করে দিয়েছে। আরে আল্লাহ তোমাকে এত্তো সুন্দর বানিয়েছে তার উপর কেন তোমার মডিফাই করতে হবে। আমিতো বেশ খুশী। আমার গোলগাল মায়াবী মুখখানা আর আকর্ষনীয় স্লিম ফিগার দেখে কত ছেলে লাইন ধরে ছিল। কিন্তু এই নিশান বেটার ভিতরে আমার প্রতি কোন টানই দেখলাম না। কেমন ছেলে একটা। পঁচা। এহহ আমাকে আবার পঁচা বলে। নিজে এত্তো হ্যান্ডসাম দেখে আমার যেন কোন দামই নাই। আমিও কম সুন্দরী না। হুহ ভাব কতো তার। নাহ ভাব নেয় না। বলেছে আমাকে নাকি মিষ্টি লাগে। ধুর আমার পেত্নীও বলেছে। এএএ…শয়তান একটা। নিশান আমি তোর নিশানায়ায়ায়া….

হঠাৎই রুমির ফোন বেজে উঠে। রুমি দেখে আননোন নাম্বার। রুমি স্বাভাবিক ভাবেই ফোনটা রিসিভ করে না। আবার কল আসে। রুমি রিসিভ করে না। এতো রাতে বারবার কে কল দিচ্ছে রুমি তাই ভেবে পাচ্ছে না। আবার কল আসলে রুমি রিসিভ করে।

– কি ঘুমাচ্ছেলে?? নাকি আমার কথা ভাবছিলে??

– কে আপনি?? যে আপনার কথা ভাববো??

– আমি এমন একজন যারে এক নজর দেখিলে তোমার দিন চলে যায়।

– ফাজলামি করছেন?? এতো রাতে একটা মেয়েকে ফোন দিয়ে এসব বলতে আপনার লজ্জা করে না??

– না করে না। তুমি জানো আমি কে??

– আজব তো!!! প্রথমেই তো জিজ্ঞেস করলাম আপনি কে??

– তার মানে তুমি সত্যি জানো না আমি কে??

– না জানি না। বলুন আপনি কে??

– আমি একটা ভূত। যারা রাত জাগে তাদের ভয় দেখাই। লাইট অফ করে ঘুমিয়ে পড়ো। নাহলে কিন্তু ফোন থেকে বেড়িয়ে আসবো। হাহা।

বলেই ফোন কেটে যায়। অসহায় ভীতু রুমি আস্তে আস্তে আশেপাশে তাকিয়ে দেখছে। ও ভূতে বিশ্বাস করে না। আগে খুব মজা করে ভূত এফএম শুনতো। কিন্তু ওর সাথেই যে এমন হবে ও ভেবেই পাচ্ছে না। হঠাৎই রুমির ফোনে ম্যাসেজ আসে ওই নাম্বার থেকে,

– ঘুমাও। কাল অনুষ্ঠান আছে না সকালে উঠতে হবে তো বোকা মেয়ে। গুড নাইট। – ভূত।

রুমি দ্রুত রুমের লাইট অফ করে বিছানায় শুয়ে পড়ে। রুমি সিউর এটা ভূত না। কারণ ভূত হলে সে কীভাবে জানলো কাল ওর অনুষ্ঠান। নিশ্চয়ই পরিচিত কেউ। যে আমার কেয়ার করে। কে হতে পারে?? নিশান ভাইয়া?? সে ছাড়া আর কে হবে?? অন্য কেউও হতে পারে। কাল দেখবো। এখন ঘুমাই। রুমি এসব চিন্তা ভাবনা করে ঘুমিয়ে পড়ে।

পরদিন সকালে,

আজ রুমিদের ভার্সিটিতে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ছিল। মেয়েদের ড্রেস কোড ছিল শাড়ী আর ছেলেদের পাঞ্জাবি। রুমি ওর শাড়ীর কালেকশন বের করে বসে রয়েছে। কিন্তু কোনটা যে পরবে ভেবেই পাচ্ছে না। রুমি ওর মাকে ডেকে নিয়ে আসে।

– মা আজ তো অনুষ্ঠান ভার্সিটিতে। ড্রেস কোড শাড়ী। কোনটা যে পরবো বুঝতে পারছি না। হেল্প করো না একটু।

– আচ্ছা দাঁড়া। আজ আমি তোকে সাজিয়ে দিব। দেখবি পুরো ভার্সিটি শুধু তোকেই দেখবে।

– সত্যিইইই। ইয়েএএএ…

– বাচ্চা মেয়ে একটা। আয় সাজিয়ে দি।

– আমিতো বাচ্চাই। বড় হলাম কবে। হিহি।

– হ্যাঁ তুই ছোটই। পাগলি।

অন্যদিকে নিশান ওর পছন্দের কালার নীল পাঞ্জাবি পরেছে। পাঞ্জাবিটায় খুব সুন্দর কাজ করা। বেশ দামী একটা পাঞ্জাবি। বাইরের দেশ থেকে আনা। অসম্ভব সুন্দর লাগছে নিশানকে। নিশান ভার্সিটিতে নামতেই সব মেয়েরা হা করে তাকিয়ে আছে। সত্যিই নিশানকে অসম্ভব সুন্দর লাগছে। ফর্সা মুখটায় কালো সানগ্লাস, চাপ দাঁড়ি আর নীল পাঞ্জাবি। হাতে রোলেক্সের ঘড়ি। পায়ে নাগড়া। কয়েকটা মেয়ে এসেতো নিশানকে সোজা প্রপোজই করে দেয়। নিশানের ফ্রেন্ডরা অনেক কষ্টে তাদের বুঝিয়ে পাঠিয়ে দেয়। নিশান আর ওর বন্ধুরা আড্ডা দিচ্ছে। নিশান ফারহানকে বলে,

– কিরে তোর বোন কই??

– আসছে হয়তো।

– এতোক্ষন লাগে আসতে??

– ব্যাপার কি বলতো?? তোর কি ওকে পছন্দ হয়েছে নাকি??

মিহান আর ওমি বলে উঠে,

– হয়তো হয়েছে। নাহলে জিজ্ঞেস করবে কেন বল।

– মোটেও না। কি আছে ওর মধ্যে যে ওকে পছন্দ করবো??(নিশান)

– কি আছে না। পিছনে ঘুরে দেখ কে আসছে। (ফারহান)

নিশান পিছনে ঘুরে তাকিয়ে যেন পুরো “থ”। শুধু ও না পুরো ভার্সিটি “থ”। রুমিও খুব সুন্দর কাজ করা নীল শাড়ী পরেছে। অসম্ভব সুন্দরী লাগছে রুমিকে। ছেলে মেয়ে সবাই হা করে আছে ওকে দেখে। রুমিকে ফারহান ডাক দেয়। রুমি ওদের কাছে আসে। ফারহান নিশানকে কানে কানে বলে,

– মুখ বন্ধ কর দোস্ত।

নিশান দ্রুত মুখ বন্ধ করে। রুমি তা দেখে মুচকি হাসে। রুমি মনে মনে বলছে,

– ওয়াও উনিও দেই নীল পরেছে। উফফ কি সুন্দর টাই না লাগছে ওনাকে। পুরো হিরো। একটা মানুষ এত্তো সুন্দর হয় কীভাবে?? তাও ছেলে হয়ে??বুঝলাম আমি মেয়ে বলে সুন্দরী। উনি ছেলে হয়ে এতো সুন্দর হলে হবে। ধুর কি যে বলছি আমি। বেটা কি শয়তান। এত্তো সুন্দর করে সেজে আসলাম তাও একটু প্রশংসা করছে না। আসলেই একটা পঁচা লোক।

রুমি নিশানের প্রশংসার অপেক্ষা করছে। কিন্তু নিশান চুপচাপ বসে আছে। ফারহান বুঝতে পেরে বলে উঠে,

– রুমি তোকে তো আজ পরী লাগছে বোন। সব মেয়ের চেয়ে তোকেই অসম্ভব সুন্দর লাগছে। মাতিয়ে দিয়েছিস একদম আজ তোরা দুজনে।

– হুম..থ্যাঙ্কিউ ভাইয়া।

রুমি নিশানের দিকে তাকিয়ে কিছু শোনার অপেক্ষা করছে কিন্তু নিশান কিছু না বলায় রুমি রাগ করে চলে যায় ওর বান্ধবীদের কাছে। রুমি গেলে ফারহান বলে,

– কিরে তুই কিছু বললি না কেন?? মেয়েটা তুই কিছু বলবি সেই অপেক্ষায় ছিল। এখন রাগ করে চলে গেল।

– যাক। তুই বুঝবিনা। চল ওদিকে যাই। তোরাও আয়।

রুমির বান্ধবীরা,

– রুমি বান্ধপী তোমাকে যা লাগছে না। উফফ তুইতো আমাদের ছাড়িয়ে গেলি। এতো সুন্দর করে সাজলি কি করে??

– মা সাজিয়ে দিয়েছে। (খুশী হয়ে)

– ওয়াও৷ আন্টির কাছ থেকে তাহলে আমাদেরও সাজতে হবে।

– হাহা। আচ্ছা আসিস। তোরা একটু দাঁড়া আমি আসছি।

– ওকে।

রুমি ওয়াশরুমে গিয়ে ওর শাড়ীটা ভালোভাবে ঠিক করে নেয়। তারপর বাইরে বেড়িয়ে আসতে নিলেই হঠাৎ কে যেন ওকে টান মেরে একটা ক্লাসের ভিতর নিয়ে যায়। ওকে দেয়ালের সাথে চেপে ধরে ওর মুখটা হাত দিয়ে চেপে ধরে। রুমি তাকিয়ে যাকে দেখে ও কল্পনাও করে নি সে এমন কিছু করবে। কারণ তার একটা হাত রুমির মসৃন নরম কোমড়ে বিচরণ করেছে। রুমি ছুটার চেষ্টা করছে কিন্তু পারছে না। রুমি ওর হাত দিয়ে তার হাতটা সরানোর চেষ্টা করছে কিন্তু পারছে না। সে অনবরত রুমির কোমড়ে ছুয়েই যাচ্ছে। লোকটা হঠাৎই রুমিকে…

চলবে….