শুধু তোমারই জন্য পর্ব-০৭

0
703

#শুধু_তোমারই_জন্য
#পর্ব_৭
#Ornisha_Sathi

কেটে গেছে বেশ কয়েকটা দিন। আনিতা আদৃতকে এতটাই ভালোবেসে ফেলেছে যে ওকে ছাড়া একটা মূহুর্ত নিজেকে ভাবতে পারে না। এতদিনেও আদৃত একবারের জন্য নিজেকে দেখায়নি। আনিতাও আর ইচ্ছে করে দেখতে চায়নি আদৃতকে। একটা ছেলেকে না দেখেই পাগলের মতো ভালোবেসে যাচ্ছে আনিতা। আনিতার ভাষ্যমতে, চেহারা দেখেই কি ভালোবাসা হয়? না দেখে কি ভালোবাসা যায় না? মন থেকে ভালোবাসাটাই তো আসল।

আদৃতকে আনিতা ভালোবাসে। ওর মনটাকে ভালোবাসে। আদৃতের ফেসটাকে না। তাই আদৃত যতদিন না নিজে থেকে ওর সামনে আসবে ও চাইবে না একবারের জন্যও আদৃতকে দেখতে। সবাই তো দেখে ভালোবাসে। আনিতা না হয় না দেখেই ভালোবাসলো। সবাই তো ভালোবাসার মানুষটাকে সামনে পায়। কাছ থেকে ছুঁতে পারে। আনিতা না হয় কল্পনাতেই ওর ভালোবাসার মানুষটাকে ছুঁবে। কল্পনাতেই তার ছবি নিজের মনে আঁকবে।

আদৃতের সাথে রিলেশনের প্রায় বিশ দিন পরের কথা। সেদিন দুপুরে আনিতা আরোহীদের বাসায় যায়। আনিতা ওদের ঘরে গিয়েও আরোহীকে না পেয়ে ওর ছোট বোনকে ডেকে আরোহীর কথা জিজ্ঞেস করাতে ও বলে,

–“আপু তো রান্নাঘরে রান্না করছে।”

আনিতা ঘর থেকে বেরিয়ে রান্না ঘরে যায়। আরোহী তখন তরকারি রান্না করছিলো। পাশেই একটা ছোট মোড়া রাখা ছিলো। আরোহী সেটা আনিতার দিকে এগিয়ে দিয়ে বলে,

–“বস।”

আনিতাও নিঃশব্দে বসে। কিছুক্ষণ দুজনে অন্যান্য বিষয়ে টুকিটাকি কথা বলে। আনিতা ভাবছে কি করে আদৃতের কথাটা আরোহীকে বলবে। আরোহী যদি জানতে পারে রিলেশন এর বিশ দিন পর এসে ওকে বলছে তাহলে নিশ্চিত আনিতাকে আস্ত রাখবে না। আরোহী আনিতাকে অনেকটা সময় যাবত কিছু ভাবতে দেখে বলে,

–“কিছু বলবি?”

–“না মানে____”

–“এভাবে আমতা আমতা করছিস কেন? কিছু বলার হলে বল।”

আনিতা বেশ কিছুক্ষণ নিজেই নিজের হাত মোচড়ামুচড়ি করে। আরোহী সেদিকেও লক্ষ্য করে কিন্তু কিছু বলল না। আনিতা আমতা আমতা করে বলে,

–“বলতে পারি একটা শর্তে।”

–“কি শর্ত?”

–“কথাটা শুনার পর আমাকে কিছু বলতে পারবি না।”

–“আচ্ছা।”

–“আদৃতকে তো চিনিস।”

–“হ্যাঁ কি হয়েছে?”

–“ওর সাথে রিলেশনে গিয়েছি আমি। ভালোবাসি ওকে।”

আনিতার কথায় আরোহী তীক্ষ্ণ চোখে একবার ওর দিকে তাকালো শুধু। তারপর আবার রান্নায় মনোযোগ দিয়ে শান্ত গলায় বলে,

–“কতদিন হলো?”

–“এই তো বিশ দি______”

–“কিহ? কি বললি তুই হারামী? বিশ দিন যাবত তুই একটা রিলেশনে আছিস অথচ আমাকে আজকে জানাচ্ছিস?”

এই বলে আরোহী তরকারির কড়াইটা চুলো থেকে নামিয়ে আনিতাকে তাড়া করলো। আনিতা এক দৌড়ে আরোহীদের বাসা থেকে ওদের বাসায় চলে আসে। আরোহী ওদের বাসায় থেকেই চিৎকার করে বলে,

–“নেহাৎ এখন রান্না করছি নয়তো তোর আজকে নিস্তার ছিলো না।”

–“ওকে পরেরটা পরে দেখে নিবো।”

আরোহী চলে যায় রান্না করতে। আনিতাও রুমে গিয়ে কাবার্ড থেকে জামা বের করে গোসল করতে চলে যায়।

বিকেলে আরোহী আনিতাদের বাসায় আসে। আনিতার রুমে গিয়ে দেখে আনিতা ঘুমোচ্ছে। আরোহী ওর ওড়নার মাথার এক কোনা কিছুটা পেচিয়ে চিকন বানিয়ে আনিতার কানে সুড়সুড়ি দিতে থাকে। কয়েকবার আনিতা নড়েচড়ে উঠে। আবারো আরোহী একই কাজ করতে থাকে। আনিতা এবার লাফিয়ে উঠে। আরোহীকে সামনে বসে থাকতে দেখে আনিতার দুপুরের কথা মনে পড়ে যায়। ভয়ে একটা শুকনো ঢোক গিলে আনিতা। আরোহী আনিতার হাত চেপে ধরে বলে,

–“এবার ভালোই ভালোই সব বল বলছি নয়তো তোর কি হাল করবো তুই ভাবতেও পারবি না।”

–“ওয়েট সবে মাত্র ঘুম থেকে উঠলাম। তুই ছাদে যা আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি।”

এই বলে আনিতা ওয়াশরুমে চলে গেলো ফ্রেশ হতে। আরোহী ছাদের দিকে পা বাড়ালো। আনিতা ফ্রেশ হয়ে এসে দু মগ কফি বানিয়ে ছাদে চলে গেলো। ছাদে গিয়ে আনিতা এক মগ কফি আরোহীর দিকে এগিয়ে দিলো।

কফি খেতে খেতে আনিতা আরোহীকে সবটা জানালো। আরোহীও আর বেশি কিছু বলেনি। তবে আরোহী এটা বেশ বুঝতে পেরেছে যে আদৃতকে আনিতা অনেকটা ভালোবেসে ফেলেছে। সন্ধ্যার আগ অব্দি দুজনে ছাদে দাঁড়িয়ে আড্ডা দেয়। সন্ধ্যার ক্ষানিকটা আগেই আরোহী চলে যায় ওদের বাসায়। আনিতাও নিচে নেমে পড়তে বসে।

আধ ঘন্টা বাদে মেসেঞ্জারে আওয়াজ হতেই আনিতা ফোন হাতে নেয়। আনিতা মেসেঞ্জারে গিয়ে দেখে গ্রুপে ম্যাসেজ করছে সকলে। আনিতা সিন করে গ্রুপ থেকে বের হয়ে যায়। ফোনটা রেখে দিবে তখনই আদৃত ম্যাসেজ করে,

–“পড়াশুনো নেই? এসময় অনলাইনে কি করছো?

–“এইতো পড়ছিলাম। মাত্রই ফোনটা হাতে নিলাম।”

–“ফোনটা আবার আগের জায়গায় রেখে মন দিয়ে পড়াশুনো করেন আপনি।”

–“উমম আদৃত শুনো না।”

–“হুম শুনছি বলুন।”

–“বলছিলাম কি….”

–“হ্যাঁ বলুন না। আপনার কথা শুনার জন্যই আমি অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি।”

–“একটু কথা বলি? তারপর আবার পড়তে বসবো।”

–“উঁহু একদম না। আগে পড়াশোনা তারপর কথা বলা।”

–“বেশি না জাস্ট দশ মিনিট।”

–“দশ মিনিটা কেন? এক মিনিটও না।”

–“আদৃত____”

–“আদৃত বলে কিচ্ছু হবে না। এখন পড়তে বসবে একদম দশটা বাজে উঠে ডিনার করে তারপর আমাকে ম্যাসেজ করবা ওকে?”

আদৃতের ম্যাসেজ দেখে মূহুর্তেই আনিতার মন খারাপ হয়ে গেলো। দশটা মিনিট কথা বললে কি এমন হতো? আনিতা মুখ ভার করেই রিপ্লাই করলো,

–“তুমি যদি তখন অনলাইনে না থাকো?”

–“থাকার চেষ্টা করবো, তারপরও যদি না থাকি আমার নাম্বারে একটা ম্যাসেজ করবা নয়তো মিসডকল দিবা ওকে?

–“আচ্ছা। রাখি তাহলে।”

এই ম্যাসেজটা সেন্ড করে আনিতা ফোন রেখে পড়ায় মনোযোগ দিলো। আদৃতও আর রিপ্লাই করে নি। আনিতা অফলাইন তাই আদৃতও গ্রুপে “বাই” বলে অফলাইন হয়ে গেলো।

রাতের খাবার খেয়ে আনিতা বিছানায় শুয়ে আছে। অপেক্ষা করছে অনিমা কখন ঘুমোবে। আদৃত যদি অনলাইনে থাকতো তাহলে ম্যাসেজ করতে কোনো সমস্যা হতো না। কিন্তু ওর সামনে তো কথাও বলা যাবে না। এর মাঝেই আদৃত ফোন করে আনিতাকে। আনিতা ফোন কেটে দিয়ে ম্যাসেজ করে,

–“অনিমা ঘুমোলে আমি ফোন দিচ্ছি। এখন ফোন দিও না। সম্ভব হলে অনলাইনে এসো।”

আদৃত আর রিপ্লাই না করে অনলাইনে এসে মেসেঞ্জারে নক করলো। বেশ কিছুক্ষণ ম্যাসেজ করার পর আদৃত বলে,

–“আনি একটু ওয়েট করো তো। আসছি কিছুক্ষণের মাঝেই।”

এই বলে আদৃত অফলাইন হয়ে যায়। আনিতাও পালটা আর কিছু জিজ্ঞেস করার সময় পায়নি। ম্যাসেজ সেন্ড করে সাথে সাথেই আদৃত অফলাইন হয়ে যায়। আনিতার মুড কিছুটা খারাপ হয়ে যায়।

মুড ভালো করার জন্য আনিতা গ্রুপে নক করে সবাইকে। সবাই অনলাইন ছিলো তাই সবাই গ্রুপে রিপ্লাই করে। মূহুর্তেই আনিতার একটুখানি মনখারাপ ভাবটা নিমিষেই উধাও হয়ে যায়। পাঁচ জনে মিলে গ্রুপে হাসি ঠাট্টা করছে। আর পিছে লাগার জন্য রাতুল তো আছেই। রাতুল শুধু আনিতার পিছনেই না আরো একজনের পিছনে লাগে। সে হলো জেরিন। রাতুল প্রায়শই জেরিনের পিছনে লাগে। সাথে আনিতা তো ফ্রি। তবে আমিরার পিছনে একদমই লাগে না। আমিরা রাতুলকে ভাই বলেই ডাকে। আর রাতুলও আমিরাকে বোনের নজরেই দেখে। গ্রুপে অনেক বেশি কথা বলে আনিতা রাতুল জেরিন আমিরা। আদৃতও বলে তবে সেটা ওদের চারজনের তুলনায় কম। আর আরহান অনেক কম কথা বলে। আর আদৃত তো অনলাইনে থাকার বেশিটা সময় আনিতার সাথেই ইনবক্সে কথা বলে।

একটু আগেই আনিতা গ্রুপে বাই বলল৷ দেড় ঘন্টা হতে চলল এখনো আদৃতের আসার কোনো নাম নেই। নাম্বারে ম্যাসেজও করেছিলো আনিতা কিন্তু ওপাশ থেকে আদৃত কোনো রিপ্লাই করেনি। ফোনও করেছিলো একবার সেটাও রিসিভ করেনি আদৃত।

মন খারাপ করে নিউসফিড স্ক্রল করছিলো আনিতা। তখনই একটা রিকুয়েষ্ট আসে। আনিতা রিকুয়েষ্ট চেক করে দেখে আহিয়ান ফ্রেন্ড রিকুয়েষ্ট দিয়েছে ওকে। কি মনে করে যেন আনিতা রিকুয়েষ্ট এক্সেপ্ট করলো। রিকুয়েষ্ট এক্সেপ্ট করার মিনিট দশেক পরেই আহিয়ানের ম্যাসেজ। বেশ অবাক হলো আনিতা। যাওয়ার মাস খানেক পর সাহেবের আনিতার কথা মনে পড়েছে।
সেটাই ভাবছে আনিতা মনে মনে। ফাইয়াজ তন্ময় এর সাথে কথা বলার সময় আনিতা দু চারবার আহিয়ানের সাথেও কথা বলতে চেয়েছে কিন্তু আহিয়ান বলতে চাইতো না। তাই আনিতাও আর কথা বলতে চায়নি কখনো। হুট করেই আজকে রিকুয়েষ্ট আবার ম্যাসেজ দেখে তাই একটু অবাক হয়ে গেলো আনিতা।

আনিতার রিপ্লাই না পেয়ে আহিয়ান আবারো ম্যাসেজ করলো,

–“হেই মিস ধানী লঙ্কা___”

–“এই এই আপনাকে কতবার বলেছি আমি যে আমাকে ধানী লঙ্কা বলে ডাকবেন না।”

–“টেল মি হুয়াট টু ডু? আই রিয়েলি লাইক দিস নেম ফর ইউ।”

–“আর একবার যদি এই নামে ডেকেছেন তো নেক্সট টাইম আমাদের এখানে আসলে একদম জানে মেরে ফেলবো বলে দিলাম।”

–“দিস ইজ ওয়ান অফ দ্যা রিজন, হুয়াই আই কল ইউ ধানী লঙ্কা।”

–“উফফস আবারো?”

–“উয়েল, আই’ম নট সেয়িং। ইউ আর নাউ হ্যাপি?”

–“ইয়েস, আই’ম হ্যাপি।”

–“তো কেমন আছেন ম্যাডাম?”

–“যাওয়ার এক মাস পর বুঝি মনে হলো আমার কথা?”

–“আসলে বুঝোই তো জিএফ এর অভাব নেই। একটার পর একটা ফোন দিতেই থাকে। সো খুব বেশিই বিজি থাকি।”

–“একজনকে ভালোবাসা যায় না?”

–“এই দুনিয়ায় সত্যিকারের ভালোবাসা কেউ বুঝে না। যারাই সত্যিকার অর্থে ভালোবেসেছে দিনশেষে তারাই তার ভালোবাসার মানুষের কাছ থেকে ঠকেছে।”

–“ভালোবেসেছিলেন কাউকে?”

–“বলতে চাচ্ছি না।”

–“সরি জিজ্ঞেস করার জন্য।”

–“ইট’স ওকে।”

–“তারপরও বলছি, এতদিন যা করেছেন তা এখন বাদ দিন। যে কোনো একজনকেই ভালোবাসুন। খুউব ভালো থাকবেন। আপনার মতো একজন মানুষকে কেউ ঠকানোর কথা কল্পনায়ও চিন্তা করবে না। একবার কাউকে ভালোবেসে দেখুন সে মানুষটাও আপনাকে খুব বেশিই ভালোবাসবে।”

–“কে ভালোবাসবে আমাকে?”

–“আপনার সাথে সম্পর্কে আছে এমন অনেক মেয়েই আপনার জন্য পাগল। তাদের থেকে যার জন্য আপনার মন থেকে ফিলিংস আসে তাকেই ভালোবাসুন। আর বাকী সবাইকে ছেড়ে দিন।”

–“মন থেকে কারো জন্যই ফিলিংস আসে না আমার।”

–“অন্তত চেষ্টা তো করে দেখুন। আর তাছাড়া আপনার মতো একজন মানুষকে সবাই ভালোবাসবে। খুব ভালো একটা মানুষ আপনি। শুধু এই একটা দিকই খারাপ। তাছাড়া সব দিক দিয়েই পারফেক্ট আপনি। যে কেউই আপনাকে ভালোবাসতে চাইবে।”

–“আচ্ছা শুধরে নিলাম নিজেকে। সবার সাথে সব সম্পর্ক শেষ করে দিবো। তুমি ভালোবাসবে আমাকে?”

আহিয়ানের এই ম্যাসেজ দেখে আনিতা চমকে উঠলো। কি বলে লোকটা? আনিতা হা করে এখনো ম্যাসেজ এর দিকে তাকিয়ে আছে। আহিয়ান মৃদু হাসলো। আহিয়ান জানতো আনিতা আর রিপ্লাই করবে না। ওর ধারনাটাও ঠিক হলো। আহিয়ান ঠোঁটের কোনে মুচকি হাসি রেখে আবারো ম্যাসেজ করলো আনিতাকে,

–“জানতাম এর উত্তর তোমার কাছে নেই। আসলে জানো কি? বলতে সবাই পারে। কিন্তু সেই একই কাজটা নিজে কখনো করতে পারে না কেউ।”

–“রাখছি পরে কথা হবে।”

ম্যাসেজটা সিন করে আনিতা ফোনটা রেখে দিলো। আহিয়ান আনিতার ম্যাসেজ দেখে মুচকি হাসলো। পরবর্তীতে আহিয়ানও আর রিপ্লাই করেনি।

রাত বারোটা চুয়াল্লিশ মিনিট। আনিতার চোখে ঘুম নেই। আদৃত এখনো অনলাইনে আসেনি। আনিতা আবারো আদৃতের নাম্বারে ডায়াল করলো। দুবার রিং হওয়ার পরই আদৃত ফোন কেটে দিলো। মূহুর্তেই আনিতার মন বিষাদে ভরে গেলো।

মিনিট দুই বাদেই আনিতার ফোন বেজে উঠলো। আনিতা ফোন হাতে নিয়ে দেখে আদৃত ফোন করেছে। মূহুর্তেই যেমন মন বিষাদে ভরে গিয়েছিলো আবার ঠিক তেমনি চোখের পলকেই আনিতার মন ভালো হয়ে গেলো। খুশি মনে ফোন হাতে নিলো। কিন্তু মনে আবার অভিমান জেগেছে খুব। আদৃত কিছুক্ষণের কথা বলে পুরো আড়াই ঘন্টা পার করেছে। আনিতা এসব ভাবতে ভাবতেই ফোন কেটে গেলো। আবারো বেজে উঠলো ফোন। এবার আনিতা ফোন রিসিভ করে কানে নিতেই ওপাশ থেকে আদৃত বলে,

–“সরি আনি একটু ব্যস্ত হয়ে গিয়েছিলাম। তখন অফিস থেকে ফোন এসেছিলো। আর্জেন্ট একটা কাজ ই-মেইল করেছিলো। সেটাই কমপ্লিট করতে করতে এতটা লেট হয়ে গেলো। আ’ম সরি আনি।”

–“হইছে আর সরি বলতে হবে না।”

–“আমার পাখিটা বুঝি রাগ করেছে?”

–“আমি কেন রাগ করবো হুম? রাগ করার অধিকার আমার আছে নাকি?”

আনিতার কথা শুনে আদৃত দাঁত দিয়ে ঠোঁট কামড়ে ধরে নিঃশব্দে হাসলো। পিচ্চিটা রাগ করেছে অথচ তবুও মুখে স্বীকার করছে না। আদৃত খানিকটা শব্দ করে হেসে দিলো। আদৃতের হাসি শুনে আনিতা মুখ ফুলিয়ে বসে রইলো। কিছুই বলল না। আদৃতও কিছুটা সময় চুপ করে থেকে হঠাৎই ফিসফিস করে বলে উঠলো,

–“ভালোবাসি বউ।”

মূহুর্তেই আনিতা জমে বরফ হয়ে গেলো। রাগ অভিমান সব গলে পানি হয়ে গেলো। কি বলল আদৃত ওকে? সেটাই ভাবছে আনিতা। বউ? বউ বলল আদৃত ওকে? সারা চোখমুখ লজ্জায় লাল হয়ে গেলো আনিতার। বুকটা দুরুদুরু করে কাঁপছে আনিতার। জোরে জোরে নিঃশ্বাস নিচ্ছে আনিতা। কোনো কথাই বলছে না।

বউ শুনেই আনিতার এই অবস্থা এটা ভেবে আদৃত মৃদু হাসলো। আসলেই মেয়েটা পুরাই পিচ্ছি। শুধুমাত্র আমার পিচ্ছি। পিচ্ছি বউ আমার। মনে মনে এসব ভেবেই আবারো নিঃশব্দে হাসলো আদৃত।



চলবে।

[ ভুলত্রুটি ক্ষমার চোখে দেখবেন। আর গল্পটা কেমন হচ্ছে অবশ্যই জানাবেন। হ্যাপি রিডিং🥰 ]