সাঁঝেরবেলায় তুমি আমি পর্ব-১০+১১

0
462

#তাসনিম_তামান্না
#সাঁঝেরবেলায়_তুমি_আমি
#পর্ব_১০_ও_১১

🍁🍁🍁

আজ সাব্বিরের হলুদ সন্ধ্যা যুবক-যুবতী, মধ্যেবয়সক্যরা সবাই হলুদ-সবুজ রংয়ে নিজেকে সাজিয়েছে। ছোটরা দৌড়া-দৌড়ি করে খেলছে। কেউ কেউ গল্প করছে কেউ বা কাজ করছে। এই ক দিনে কেউ দম ফেলার সময় টুকু পেয়ে উঠেনি সবাই কোনো না কোনো কাজে ব্যস্ত ছিল। বিয়ে তো চারটি খানি কথা না বিয়ে মানেই কাজের শেষ নাই তার মধ্যেও আলাদা মজা পাওয়া যায় সকলে মিলে কাজ করলে কঠিন কাজ টাও সহজ মনে হয়। সাব্বিরদের বাগানে স্ট্রেস করা হয়েছে। সাব্বিরের কাজিনরা মিলে অনেক দুষ্টাম করছে বড়রাও বাদ যাচ্ছে না সাব্বির বেচারা লজ্জায় লাল, নীল, বেগুনি হয়ে বসে আছে। আরমানও সাব্বিরকে পচ্চাছিলো হঠাৎ সামনের দিকে চোখ যেতেই আরমান অবাক+মুগ্ধ অক্ষিজোড়া দিয়ে তাকিয়ে রইলো প্রমির দিকে।

প্রমিও আজ শাড়ি পড়েছে নিজ থেকে পড়ে নি নিশির জেদের কাছে হার মেনে পড়তে হয়েছে। হলুদ শাড়ি সবুজ পাড়, মুখে হালকা মেকাপ, মাথায় হিজাব দেওয়া এতেই অপরূপ সুন্দর লাগছে প্রমিকে। প্রমি চুল ছেড়ে এতো মানুষের সামনে আসে নি তাই হিজাব পড়ে আসছে এটাতে নিশি কোনো আপত্তি করে নি। নিশি বকবক করছিলো আর প্রমি শাড়ির কুচি ঠিক করতে করতে আসছিলো। তখনই আরমানের চোখ প্রমির দিকে আটকে যায়। সাব্বিরের ধাক্কায় আরমান একটু নড়েচড়ে বসে। নিশি আর প্রমি হাসি মুখে সাব্বিরের সামনে দাড়িয়। প্রমি সাব্বিরকে হলুদ ছুয়িয়ে মিষ্টি খাইয়ে স্টেজ থেকে নেমে দাড়ালো। নিশি সাব্বিরকে হলুদ মাখিয়ে ভুত বানিয়ে দিলো। প্রমি জানতো নিশি এমনটাই করবে এই কদিনে নিশি নামক সহজ সরল মেয়েটাকে মুখুস্ত করে ফেলছে প্রমি।
কিছুক্ষণ পর নিশি, সাব্বিরের কাজিনরা, আর ফেন্ডরা নাচ গান করতে লাগলো সাথে বড়রাও যোগ দিয়েছে। প্রমি এসব দেখে মুচকি হাসছে। প্রমির ও লোভ হয় একটা পরিবারের যেখানে নিজের বলে কেউ থাকবে মন খুলে কথা বলতে পারবে হাসতে পারবে সেখানে থাকবে না কোনো বাঁধা কিন্তু এটা আদেও সম্ভব না তাই তো কথাগুলা ভাবলে দীর্ঘ শ্বাস ছাড়া কিছু আসে না। প্রমি মনযোগ দিয়ে নাচ গান করা দেখছিলো নিজের পাশে কাউকে অনুভব করতে পেরে তাকিয়ে দেখলো আরমান। প্রমি মুখে হাসি এনে বলল

-কিছু বলবেন ভাইয়া (প্রমি)

প্রমির মুখে ভাইয়া ডাক শুনে আরমান বিরক্ত হলো আজ কাল ‘ভাইয়া’ ডাকটা শুনলে বিরক্ত ছাড়া কিছু আসে না। তাই যতসম্ভব নিজেকে সামলিয়ে গম্ভীর কণ্ঠে বলল

-না (আরমান)

-ও আচ্ছা… (কিছুক্ষণ পর) ভাইয়া একটা কথা বলি? (প্রমি)

-বলো (আরমান)

-অনুষ্ঠান কখন শেষ হবে? মানে আর কতক্ষণ এখানে থাকবে সবাই? (প্রমি)

-ঠিক নাই সারারাতও হতে পারে! (আরমান)

প্রমি ছোট করে উত্তর দিলো

-ওহ (প্রমি)

কিছুক্ষণ পর অস্বস্তি নিয়ে প্রমি আবার আরমানকে বললো

-ভাইয়া আমি ঘরে যায় তাহলে যায়? (প্রমি)

আরমান প্রশ্নবোধক চাহনি দিয়ে বলল

-কেনো? (আরমান)

-আসলে এতো শব্দে মাথা ব্যাথা করছে (প্রমি)

আরমান অস্থির লাগতে লাগলো মিনমিনে ভাবে বললো

-বেশি খারাপ লাগছে (আরমান)

-না না বেশি না একটু (প্রমি)

-আচ্ছা যাও (আরমান)

প্রমি আর কথা না বলে রুমে এসে হাফছাড়লো। ফ্রেশ হয়ে শাড়ি চেঞ্জ করে নিয়ে বিছানায় শুতেই ঘুমের রাজ্যে পাড়ি জমালো। সারাদিনের ক্লান্তিতে প্রমির শরীর আর পেরে উঠছে না। কিছুক্ষণ পর মাথা ঠান্ডা হাতের অস্তিত অনুভব করলো প্রমি কিন্তু ঘুমে চোখ খুলতেই পারছে না। ওটা আর কেউ-ই নই আরমান! প্রমির মথা ব্যাথা করছিলো বলেন ঔষধ নিয়ে আসছিলো আশাকে বলতে চাইছিলো কিন্তু আশা কাজের মধ্যে আর নিশিও অনুষ্ঠানে তাই আরমানই নিয়ে আসলো এসে প্রমিকে ঘুমান্ত মুখ দেখে প্রমিকে আর ডাকতে ইচ্ছে করে নি। তাই মাথায় হাত দিয়ে দেখছিলো জ্বর আছে কি না? আরমান আরও কিছুক্ষণ প্রমির পানে তাকিয়ে বেড়িয়ে আসলো রুম থেকে। বিয়ে বাড়িতে লোকের অভাব নেই এখন যদি কেউ দেখে ফেলে অবিবাহিত ছেলে মেয়ে এক রুমে তাহলে তাকে তিল থেকে তাল বানাতেও দু’সেকেন্ড ও লাগবে না তাই তো সাবধানে বেড়িয়ে গেলো আরমান।
রাত ২টার দিকে ক্লান্ত হয়ে হলুদ অনুষ্ঠান শেষ করলো সবাই যে যেখানে পেড়েছে শুয়ে পড়েছে ফ্লোরও বাদ যায় নি।

আজ সেই কাঙ্ক্ষিত দিন আজ সাব্বিরের বিয়ে সারাবাড়ি সবাই হইচইপূর্ণ ছেলে মেয়েরা সবাই সাজগোছ করতে ব্যাস্ত। সাজগোছ প্রায় শেষের দিকে যার যার গোছানো হয়ে যাচ্ছে তারা গাড়িতে গিয়ে বসছে।
আরমান ব্লাক পাঞ্জাবি পড়ে গাড়িতে হেলান দিয়ে ফোন টিপছে। সাব্বিরের ফুফাতো ভাই এসে আরমানের কাঁধে হাত রেখে বলল

-আরমান তুমি আজ যে লুক দিয়েছ কোনো মেয়ে তো আর আমাদের দিকে তাকাবে না সব তোমার দিকে তাকাবে (রশিদ)

-কি যে বলেন ভাইয়া? শুধু আমারটা আমার দিকে তাকালে হবে! অন্যদের দরকার নাই (আরমান)

-মানে তোমার গালফেন্ড আছে? আগে শুনি তো (রশিদ)

-ইট’স টপ সিক্রেট ভাইয়া (আরমান)

-বাহ বাহ ছোট ভাই প্রেম করে বড় ভাই সিংঙ্গেল এ মানা যায় না এটা ঘোর অন্যয় আজই গালফেন্ড পটাবো (রশিদ)

রশিদ কথা গুলা বলতে বলতে চলে গেলো। রশিদের কথা শুনে আরমান না হেসে পারলো না। আরমান আবার ও নিজ মনে ফোন টিপায় মন দিলো।

-ভাইয়া আমাদের দু’জনকে কেমন লাগছে বলতো? (নিশি)

নিশি কন্ঠ শুনে আরমান চোখ তুলে তাকাতেই চোখ স্থির হয়ে গেলো প্রমির ওপর প্রমিও ব্লাক গর্জিয়াস থ্রি পিসের সাথে হিজাব ও হালকা মেকাপ একটুতেই প্রমিকে সব কিছুতে ভালো লাগে। নিশি পিংক কালারে লেহেঙ্গা পড়েছে আরমানকে দেখানোর জন্য লেহেঙ্গা ধরে গোল হয়ে ঘুরছে। আরমানের মুখ দিয়ে অস্পষ্ট সরে বেড়িয়ে এলো।

-মা শা আল্লাহ (আরমান)

নিশি ঘুরতে ঘুরতে বলল

-আই নো, আই নো (নিশি)

নিশির কথায় আরমান ঘোর থেকে বেরিয়ে এসে গলা ঝেড়ে বলল

-কি আই নো, আই নো তোকে তো পুরা কালা পেত্নীর মতো লাগছে (আরমান)

আরমানের কথা শুনে নিশি ঘোরা বন্ধ করে রেগে বলল

-তুই কালা, তোর বউ কালা পেত্নী, তোর চৌদ্দ গুষ্টি কালা পেত্নী আবার আমাকে বলতে আসে চাল ফুট (নিশি)

কথাগুলা বলে নিশি প্রমিকে নিয়ে অন্য গাড়িতে উঠে বসলো। আরমান মাথা চুলকে লাজুক হেসে সাব্বিরের পাশে বসলো।

-বাহ ভালোই তো প্রেম চলে দেখছি (সাব্বির)

-শুধু দেখলে হবে খরচা আছে (আরমান)

-মানে কি কিসের খরচা? (সাব্বির)

-মানে হলো বড় ভাই হয়ে ছোট ভাইয়ের প্রেম দেখতে লজ্জা লাগে না (আরমান)

-এআআ আইছে তোর লজ্জা লাগে না বড় ভাইয়ের সামনে প্রেম করতে বেহাইয়া, লুইচ্চা আবার আমারে কয় (সাব্বির)

-তুই ডাক্তার হয়ে কিসব লেংগুয়েস ইউস করতেছিস (আরমান)

-চুপ যা (সাব্বির)

-যা আজকের মত ছেড়ে দিলাম (আরমান)

-হোপ (সাব্বির)
.
.
কমিউনিটি সেন্টারে এসে প্রমি সাব্বিরের (দিশা সেও একজন ডক্টর) বউয়ের সাথে দেখা করেছে। ফোনে আগে কথা বলছিলো ওরা আজ সামনা-সামনি কথা হলো। কিছুক্ষনের মধ্যে বিয়ে কার্যক্রম শুরু হলো ‘কবুল’ বলার সময় দিশা তার মা-বাবাকে জড়িয়ে ধরে কান্না করছিলো তখন প্রমির চোখেও পানি জমে ছিলো। সে মুহুর্তটা খুব সুন্দর ছিলো। ‘কবুল’ শব্দটা তিন অক্ষরের ছোট শব্দ হলেও এটার মান অনেক। যখন সঠিক সময় আসে ‘কবুল’ বলার তখনি শব্দটা ভারী লাগে। শব্দটা বলার পরে নিজে পর পর মনে হয় দমবন্ধ হয়ে আছে। এতদিন যে বাড়িতে বড় হলো সেই বাড়িতেই কিনা তাকে অতিথির তম আচার করা হবে। যারা দের সাথে এতদিন থাকলো কত সৃতি তাদের সাথে কত মায়া জড়িয়ে আছে তাদেরকে ছেড়ে চলে যেতে হবে। অন্য বাড়িতে সেখানে অপরিচত মানুষেরা হবে আপন সেখানে সব কিছু মানিয়ে নিতে হবে। সেখানে বাবার রাজকন্যা আর রাজকন্যা থাকবে না সেখানে পরিচিত হবে অন্যর বাড়ির মেয়ে, বউ সেখানে নিজের জেদ চলবে না হুকুমদারি চলবে না সেখানে কথা বললেই বলবে মেয়ের বাসা থেকে কিছু শিখাই নি আরও কত কি। কিন্তু কেউ মেয়েদের মনটা বোঝার চেষ্টা করে না মেয়ে হয়েও বোঝে না যে তারও এমন দিন এসেছিলো বা আসবে। তারা ভুলে যায় নিজের দিনের কথা।
.
.
নিশি ওয়াসরুমে গেছে আর প্রমিকে একটা কোনে দাঁড় করিয়ে রাখেছে আর যাওয়া সময় বলে গেছে। ‘এখান থেকে কোথাও যাবা না আমি এক্ষুনি আসছি’ সেই থেকে দাঁড়িয়ে আছে প্রমি নিশির আসার নাম নাই। প্রমি এদিক ওদিক তাকিয়ে দেখছে সব কিছু। আচমকা আরমান এসে প্রমির হাত শক্ত করে ধরলো। প্রমি আরমানের দিকে তাকিয়ে দেখে আরমান রেগে আছে মুখ লাল হয়ে আছে। আরমান প্রমির হাত শক্ত করে ধরায় একটু ব্যথা পেয়ে ‘আহ’ শব্দ করলো। প্রমির ব্যাথাতুর মুখ দেখে হাত ঢিলা করে দিলো কিন্তু ছাড়লো না। প্রমি বুঝতে পারছে না হঠাৎ আরমানের কি হলো? এমনই বা করছে কেনো? আর কিছু ভাবতে পারলো না তার আগে আরমান দাঁতে দাঁত চেপে বলল

-এখানে দাড়িয়ে আছ কেনো? (আরমান)

প্রমি পিটপিট করে তাকিয়ে শুকনো ঢোক গিলে ভয়ে ভয়ে বলল

-নিশি ক কই যে নো গিয়েছে আমাকে এখানে থাকতে বলছে (প্রমি)

-চলো (আরমান)

আরমান প্রমিকে কোনো কথা বলার সুযোগ না দিয়ে হাত ধরে হাঁটা দিলো। আশা কয়েকটা মহিলার সাথে কথা বলছিলো সেখানে গিয়ে আরমান বললো

-আম্মু আমি প্রমিকে নিয়ে যাচ্ছি (আরমান)

আরমানের কথায় আশা আরমানের দিকে তাকালো। ওদের হাতের দিকে তাকাতেই চোখ বড়বড় হয়ে গেলো আশার কি বলবে বুঝতে পারছে না। বাকি মহিলা গুলাও তাকিয়ে আছে। আশা পরিবেশ ঠিক করার জন্য মুখে হাসি টেনে বললো

-আচ্ছা যা সাবধানে হ্যাঁ (আরমান)

আরমান আর কিছু শুনলো না আবার হাটা দিলো। একটা বাইকের সামনে এসে প্রমির হাত ছেড়ে দিয়ে বাইক স্টাট দিয়ে বলল

-উঠো (আরমান)

প্রমি কিছু বলতে যাবে তার আগে আরমান আবার বললো

-নো মোর টক (আরমান)

প্রমি আর কিছু বলার সুযোগ পেলো না। ভয়ে ভয়ে গাড়িতে উঠে বসলো।
.
এবার আরমানের রাগের কারণে আসি।
আরমান সাব্বিরের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলো তখন একটা মহিলা আরমানকে ডাকলো। আরমান কৌতুহল বসত মহিলা কাছে যায়।

-জী আমাকে বলছেন আন্টি (আরমান)

-হ্যাঁ শুনো বাবা তুমি ছেলের বাড়ির না?

-হ্যাঁ আন্টি (আরমান)

এবার মহিলাটা প্রমিকে দেখিয়ে বলল

-ঔ মেয়েটা কি তোমাদের সাথে আসছে?

আরমান ভ্রু কুচকে প্রমির দিকে তাকিয়ে মহিলাটার দিকে তাকিয়ে বলল

-হ্যাঁ কিন্তু কেনো? (আরমান)

মহিলাটা আরমানের প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে নিজেই আবার প্রশ্ন করলো

-ওর নাম কি? বরের কি হয় মানে কেমন বোন টোন নাকি?

-আন্টি আপনি ওর সম্পর্কে এতো কিছু জেনে কি করবেন? বলবেন প্লিজ! (আরমান)

-মেয়েটাকে ভালো লাগছে। আর আমার ছেলের জন্যও মেয়ে খুঁজছিলাম। বুঝতেই তো পারছো! আমার ছেলে অনেক ভালো বড় কোম্পানি আছে আমার ছেলের…..

মহিলাটির কথা শুনে আরমানের খুব রাগ লাগছে তাই নিজের রাগটাকে দমিয়ে রেখে। আরমান মহিলাটিকে আর কিছু না বলতে দিয়ে আরমান বলল

-আন্টি আপনার কোথায়ও ভুল হচ্ছে মেয়েটা আমার উটবি বউ হয় মানে ফিওন্সি আমাদের এনগেজমেন্ট হয়ে গেছে (আরমান)

-ও আচ্ছা আফসোস তাহলে কি ওর বোন টোন আছে নাকি

আরমান মুখে জোর পূর্বক হাসি এনে ‘না’ বলে ওখান থেকে সাব্বিরের কাজিনের কাছ থেকে গাড়ির চাবি নিয়ে প্রমির কাছে যায়।

তারপর জানেনই তো…
.
আরমান কমিউনিটি সেন্টার থেকেই সোজা বাসায় আসছে। আরমান প্রমিকে দেখে সাবিনা অবাক হয়ে বলল

-কি রে তোরা এতো তাড়াতাড়ি চলে আসলি যে (সাবিনা)

প্রমিকে কোনো কথা বলার সুযোগ না দিয়ে আরমান বলল

-আসলে মনি ভাইয়ার রুম সাজাতে হবে আর প্রমির শরীর খারাপ লাগছিলো বললো তাই ওকে নিয়ে আসছি আরগুলা ফুল কিনে আনছে (আরমান)

আরমান আর দাড়ালো না নিজের রুমে চলে গেলো। আরমানের কথা শুনে প্রমি বোকা বনে গেলো ও কখন বললো ওর শরীর খারাপ সেটাই বুঝতে পারছে না। আরমানের মাথা খারাপ হয়ে গেছে প্রমি ভেবেই নিলো।

-ওমা সে কি খুব খারাপ লাগছে না কি ডাক্তার ডাকবো কি হইছে সেটা বল আগে (সাবিনা)

সাবিনাকে ব্যস্ত হতে দেখে। প্রমি বলল

-মামনি শান্ত হও আমার তেমন কিছুই হয় নি জাস্ট মাথা ব্যাথা রেস্ট নিলেই ঠিক হয়ে যাবে (প্রমি)

-আচ্ছা তুই রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নে আমি তোর জন্য চা আর ঔষধ পাঠাছি (সাবিনা)

-না না মামনি সে সববের কোনো দরকার নাই এমনিতেই ঠিক হয়ে যাবে (প্রমি)

সাবিনা কঠিন চোখে তাকিয়ে বলল

-আমি তোর কাছে কিছু শুনছি যা রুমে যা (সাবিনা)

প্রমি আর কিছু না বলে রুমে এসে ফ্রেশ হয়ে নিয়ে রুমে এসে দেখলো টেবিলে চা রাখা। সেটা হাতে নিয়ে নিশির বেলকনিতে গিয়ে দাড়ালো আজ আকাশটা মেঘলা কোনো রোদ নাই। মৃদু বাতাস বইছে আর হাতে চা মোমেন্টটা ভালো লাগছে প্রমির কাছে। নিশির বেলকনিতে ফুলের ঘ্র্যনটাও আসছে। প্রমি চা শেষ করে। আরও কিছুক্ষণ ওভাবে দাঁড়িয়ে নিচে আসলো সাবিনার কাছে। এর মধ্যে সাব্বিরের আরো কয়েকটা কাজিন ফেন্ড ফুল কিনে নিয়ে রুম সাজানোর কাজে লেগে পড়েছে।
.
.
বউ নিয়ে এসেছে কিছুক্ষণ হলো আবার হইচই বেঁধে গেছে। বাসায় এসে নিশি একবার ও প্রমির সাথে কথা বলে নি প্রমি কথা বলতে গেলেও ইগনোর করে চলে গেছে। প্রমি কষ্ট পেলেও কিছু বলেনি। দিশাকে রুমে নিয়ে যাওয়ার সময় নিশি প্রমির একহাত ধরে টেনে নিয়ে গেছিলো সাথে মুখ ভেঙ্গছি দিয়ে ছিলো এতেই প্রমির কষ্ট হাওয়া হয়ে গিয়ে মুখে হাসি ফুটলো।
কিছুক্ষণ ধরে সবাই সাব্বিরের কাছ থেকে টাকা বের করার জন্য জোরাজোরি করছে কিন্তু সাব্বির টাকা বের করছে। আরো কিছুক্ষণ জোরাজোরি করার পর সাব্বির হার মেনে টাকা দিয়ে দিলো। আর রেগে বলল

-আমারও দিন আসবে তখন দেখিস (সাব্বির)

-তোমার দিন কোনো দিন ও আসবে না কজ তুমি সবার বড়

-বড় বলে যাবো না মনে করেছিস হাহ অবশ্যই যাবো কেনো যাবে না (সাব্বির)

-আচ্ছা দেখা যাবে তুমি কেমব যাও আর তুমি তো যাবাই তোমার তো লজ্জা লাগবে না

-কিসের লজ্জা তোদের লজ্জা লাগে না বড় ভাইয়ের বাসরঘরে এসে টাকা চাইতে… (সাব্বির)

-টাকা চাইছি ঘর সাজাই দিছি তাই

-এইটুকু সাজিয়ে ১০০০০ টাকা নিছিস ওর থেকে লোক দিয়ে সাজাই নিলে কম টাকা নিতো (সাব্বির)

-তুই কিপ্টে জানতাম হার কিপ্টে তা আগে জানতাম

-এখন জানছিস ভালো হইছে এবার যা (সাব্বির)

কথাটা বলে সাব্বির দরজা ধরাম করে বন্ধ করে দিলো। সবাই দরজার এপাশ থেকে পিন্চ মারা কথা বলে ধীরে ধীরে যার যার রুমে চলে গেলো।
.
নিশি প্রমি রুমে এসে বলল

-নিশি আমি সরি হ্যাঁ আমি আসলে…. (প্রমি)

-জানি আপু মনি বলছে আমাকে আমি তোমার ওপরে রেগে নেই ওগুলা এক্টিংছিলো (নিশি)

নিশির কথা শুনে প্রমি হেসে উঠলো।

#চলবে
#Tasnim_Tamanna