সে এবং আমরা পর্ব-০২

0
211

#সে_এবং_আমরা(২)
**********************
আমার ভীষণ অস্বস্তি হচ্ছে। লিমার সঙ্গে কী কথা বলব, বুঝতে পারছি না। কথা বলতে চাইলে অনেক কথাই বলা যায়; কিন্তু আমার কেন জানি তার সঙ্গে কোনও কথাই বলতে ইচ্ছা করছে না। এইরকম পরিস্থিতিতে আমি আগে কখনও পড়িনি। সজল বাসায় ঢুকে লিমাকে দেখে কেমন প্রতিক্রিয়া জানাবে, ও কী চিৎকার, চেঁচামেচি করবে? অথবা ও যদি হেসে হেসে কথা বলে, সেটা আমি সহজভাবে নিতে পারব তো? উহ, অসহ্য লাগছে সবকিছু! এই কারণেই সজলকে বলেছিলাম, ফোনে কথা শেষ করতে। সে আমার কথা শেষ করতে না দিয়েই লাইন কেটে দিল!

আচ্ছা, আমি কী ভয় পাচ্ছি? আমি এত ভয় পাচ্ছি কেন? তিন বছর আগে ওদের ডিভোর্স হয়ে গেছে। আমাদের বিয়ের বয়সও প্রায় আড়াই বছর। এর মধ্যে সজল কোনোদিন, লিমাকে নিয়ে একটা কথাও বলেনি। একবার শুধু বলেছিল, ‘দুইজনেরই হয়ত কোনও দোষ ছিল না, দুজনেই হয়ত ভালোমানুষ; কিন্তু তারপরও অনেক সময় দুইজন মানুষ একসঙ্গে থাকতে পারে না। তাদের চাওয়া-পাওয়াগুলোর মিল না-ও হতে পারে। ডিভোর্স মানেই যে সবসময় চারিত্রিক দোষত্রুটি থাকবে, এমন তো নয়। আরও অনেক কারণ থেকেই মাঝপথে এসে দু’জন মানুষ, একে অন্যের হাতটা ছেড়ে দেয়। মনের মিল না হলে, ভাবনার মিল না হলে, সরে যাওয়াটাই তো শ্রেয়, তাই না?’

আমি সজলকে জিজ্ঞেস করতে চেয়েছিলাম, তাদের মধ্যে ঠিক কিরকম সমস্যা ছিল? তাদের কী মনের মিল হয়নি? তাদের ভাবনাগুলোর কী মিল ছিল না? কিন্তু জিজ্ঞেস করতে পারিনি। নিজের কৌতুহল দমন করেছিলাম। সজল চমৎকার করে কথাগুলো বলেছিল। এরপর যদি ওকে এই বিষয়ে কোনও প্রশ্ন করতাম, তাহলে হয়ত সে অস্বস্তিবোধ করত। লিমাকে নিয়ে কিছু বলার থাকলে, তো সে নিজ থেকেই বলত। নিজ থেকে যেহেতু বলেনি, তারমানে সে আমাকে এরচেয়ে বেশি কিছু বলতে চায়নি। সেদিন সজলের প্রতি আমার ভালোলাগা আরও বেড়ে গিয়েছিল। কারণ, তাদের যে কারণেই বিচ্ছেদ হোক না কেন, লিমাকে নিয়ে সে একটাও বাজে কথা বলেনি।

আমি এযাবতকালে যতগুলো বিচ্ছেদের কাহিনি শুনেছি, সিংহভাগ কাহিনিতেই নারী চরিত্রটা দুশ্চরিত্রের ছিল! ভীষণ অদ্ভুত, তাই না? আমরা হয়ত তাদের সম্পর্কের ভেতরের কোনও ঘটনাই জানি না। মেয়েটার সম্পর্কেও কিছুই জানি না; কিন্তু চোখ বন্ধ করে একবাক্যে বলে ফেলি, মেয়েটার চরিত্র খারাপ ছিল। সমাজও এই কথাটা খুব সহজে বিশ্বাস করে।

আমি নিজের চোখে আমার এক মামাতো ভাইয়ের ডিভোর্স হতে দেখেছি। সমবয়সী হওয়ার কারণে এবং একই এলাকায় থাকার দরুন ভাবীর সঙ্গে আমার খুব ভালো সম্পর্ক ছিল। আমি সবসময় ঐ বাসায় যেতাম। ভাবীর সঙ্গে ঘন্টার পর ঘন্টা গল্প করতাম। ভাইয়া-ভাবীর ছিল প্রেমের বিয়ে। মামী শুরু থেকেই ভাবীকে মেনে নিতে পারেননি। আমি দেখতাম, মামী দিনের পর দিন কতটা নোংরা ব্যবহার করে, ভাবীকে বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে যেতে বাধ্য করেছিলেন। নোমান ভাইয়ার মনের মধ্যে তিনি ভাবীকে নিয়ে এতটাই বিষ বুনতে পেরেছিলেন, যে শেষের দিকে নোমান ভাইয়া, ভাবীর সঙ্গে এক রুমে থাকা তো দূরের কথা, কথা বলাও বন্ধ করে দিয়েছিল। বিচ্ছেদই ছিল এই সম্পর্কের একমাত্র পরিণতি।

সম্পর্কের এতটা অবনতি হওয়ার পর, কোনও আত্মসম্মান বোধসম্পন্ন মানুষের পক্ষে এমন সংসারে থাকা সম্ভব না। ভাবীও পারেনি ঐ সংসারে থাকতে। নিজের বাড়িতে ফিরে গিয়ে ডিভোর্স লেটার পাঠিয়ে দিয়েছিল। ডিভোর্স হওয়ার চারমাস পরই ভাবী আবারও বিয়ে করে কানাডায় চলে গেল। এরপর মামী সবার কাছে বলে বেড়াতেন, তাঁর ছেলের বউয়ের চরিত্র খারাপ ছিল। প্রেমিকের সঙ্গে বিদেশ পালাবে বলেই, তাঁর ছেলেকে ডিভোর্স দিয়ে চলে গেছে। আমি একবার প্রতিবাদ করায়, মামী আমার চৌদ্দ গুষ্টি উদ্ধার করে দিয়েছিলেন। এরপর থেকে আমি ঐ বাড়িতে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছি।

অস্বস্তিকর পরিবেশ থেকে বাঁচতে টিভি চালালাম। লিমাকে টিভির রিমোট এগিয়ে দিয়ে বললাম, ‘আপনি চাইলে, পছন্দের অনুষ্ঠান দেখতে পারেন।’

‘অনেক ধন্যবাদ। আমার টিভি দেখার নেশা নেই। মানে, আমি আসলে ওভাবে টিভি দেখি না। অন্য কেউ হয়ত টিভি দেখছে, তখন তাদের পাশে বসে একটু দেখি; কিন্তু নিজের হাতে রিমোট নিয়ে চ্যানেল পালটে টিভি দেখা হয় না।’

‘কেন, টিভি দেখা কী খারাপ?’

‘না, না। খারাপ কেন হবে? আমার ভালো লাগে না, তাই আমি দেখি না। আপনার যা দেখতে মন চায়, আপনি দেখুন না।’

আমারও টিভির নেশা নেই। আমাদের নতুন সংসারে আমি টিভি ঢোকাতে চাইনি; কিন্তু সজলের জন্য টিভি কিনতে হয়েছে। সজলের মারাত্মক টিভির নেশা। রাত-বিরাতে জেগে থেকে দুনিয়ার যেখানে, যত খেলা চলে, সে সবই দেখে। আমি নিউজ চ্যানেলগুলোয় কিছুক্ষণ ঘোরাঘুরি করে, টিভি অফ করে দিয়ে জিজ্ঞেস করলাম, ‘আপনি তো তখন একটা বিস্কুটও খাননি। চা করে আনি?’

‘না, না। আমি এখন কিছু খাব না। আপনি ব্যস্ত হবেন না, প্লিজ।’

কলিংবেলের শব্দে আমার দমবন্ধ ভাবটা আপাতত কেটে গেল। লিমা উঠে দাঁড়ালে, আমি বললাম, ‘আপনি উঠলেন কেন? আপনি বসুন। আমি দেখছি।’

দরজা খুলতেই সজল বলল, ‘লিফটটা এখনও ঠিক হল না।’

আমি কথা না বলে, সরে দাঁড়িয়ে ওকে ভেতরে আসতে দিলাম। সজল ভেতরে ঢুকে ফয়ারে রাখা শু-কেবিনেটের ওপর হাতে থাকা প্যাকেটগুলো নামিয়ে রেখে জিজ্ঞেস করল, ‘লিমা আছে এখনও?’

‘সে তো তোমার সঙ্গে দেখা না করে যাবে না। তখনই তো বললাম। প্যাকেটে কী?’

‘এই তো কিছু ভাজাভুজি আনলাম।’

আমি প্যাকেটগুলো তুলে নিয়ে ডাইনিং এর দিকে যেতে যেতে বললাম, ‘লিভিংরুমে বসে আছে।’

আমি যেতে যেতে বুঝতে পারলাম, সজল লিভিংরুমে ঢুকল। আমি এই সময়টায় ওখানে থাকতে চাই না। ডাইনিং টেবিলের ওপর প্যাকেটগুলো রেখে, চেয়ার টেনে নিয়ে ওখানেই বসলাম। মনে হচ্ছে হঠাৎ করেই আমার হার্টবিট বেড়ে গেছে। সেই টিনএজ সময়ের মতো, যখন কিছু একটা ঘটলেই বুকের ভেতর ধড়াস, ধড়াস করত। আমি এখানে বসে আছি ঠিকই; কিন্তু অবচেতন মনে কান পেতে আছি লিভিংরুমের দিকে। সজল এতটাই আস্তে কিছু একটা বলল, যে কথাটা আমি বুঝতেই পারলাম না। মিনিটখানেক ওখানে বসে নিজেকে সামলে নিলাম। মনকে বোঝালাম, এটা এমন কোনও বড়ো ঘটনা না, যার কারণে আমাকে এভাবে রিয়েক্ট করতে হবে। একজন মানুষ তার সাবেক জীবনসঙ্গিনীর কাছে কোনও একটা কাজে আসতেই পারে। কাজ শেষ করে সে চলে যাবে। সে তো আমাদের সংসারে থাকতে আসেনি।

আমি দ্রুত হাতে খাবারগুলো সাজিয়ে ফেললাম। যত তাড়াতাড়ি খেতে দেবো, তত তাড়াতাড়ি সে বিদায় হবে। কিচেনে এসে চুলা থেকে তরকারির হাঁড়ি নামিয়ে, চায়ের পানি চড়িয়ে দিলাম। এখান থেকেই সজলের ডাক শুনতে পেলাম, ‘তরী, একবার এদিকে আসবে?’

আমি ড্রইংরুমের দরজায় এসে দেখি সজল তখনও দাঁড়িয়ে আছে। আমাকে দেখে বলল, ‘এসো।’

আমি সজলের কাছে গিয়ে দাঁড়ালে, সে আমাদের পরিচয় করিয়ে দিল, তরী, ও হচ্ছে লিমা। লিমার কথা তো তোমাকে বলেছিলাম। লিমার দিকে তাকিয়ে বলল, ‘ও হচ্ছে, তরী। বুঝতেই তো পারছ…..’

আমি লিমাকে বললাম, ‘আপনি নিজের পরিচয় দিলেন না যে? শুধু বললেন, আপনারা একই গ্রামের মানুষ।’

লিমা আমার কথার উত্তর না দিয়ে শুধু হাসল। আমি সজলকে বললাম, ‘তুমি বসো। তোমরা কথা বলো, আমি নাস্তার ব্যবস্থা করছি।’

ডাইনিংরুমে এসে বাকি কাজ শেষ করলাম। ওদেরকে ডাকতে যাব, তখনই মনে হল, খাবারগুলো লিভিংরুমে নিয়ে যাই। তাকে বাড়ির ভেতরে ঢোকাতে ইচ্ছা করছে না। যেখানে বসে আছে, খেয়েদেয়ে ওখান থেকেই বিদায় হোক।

ট্রে হাতে আমাকে রুমে ঢুকতে দেখে সজল বলল, ‘এখানে কেন? নাস্তা ডাইনিং টেবিলেই দিতে।’

‘সমস্যা নেই। এখানেই খাও।’

সজল গিয়ে বাকি খাবাগুলো নিয়ে এল। আমি রুম থেকে বেরিয়ে যাচ্ছিলাম। সজল বলল, ‘তুমি যাচ্ছ কেন? এখানে বসো।’

‘তোমরা কথা বলো। আমি কিচেনের কাজগুলো শেষ করি।’

সজল আমার হাত ধরে বলল, ‘কাজ পরে করা যাবে। এখানে বসো।’

আমি বসতে বসতে বুঝতে পারছিলাম, সজল, লিমার সঙ্গে একা থাকতে কিছুটা অস্বস্তিবোধ করছে। সে চাচ্ছে আমি যেন এখানে থাকি। বিষয়টা আমার ভালো লাগল।

আমি প্লেটে খাবার তুলে ওদেরকে দিলাম। সজল বলল, ‘তুমি নাও।’

‘উঁহু। আমি শুধু চা খাব। তোমরা খাও।’

লিমা কোনও কথা বলছে না। চুপচাপ খাচ্ছে। সজল ওকে এটা-ওটা জিজ্ঞেস করছে। ওদের দুজনের কিছু পরিচিত মানুষের কথা জিজ্ঞেস করল, যাঁদের কাউকেই আমি চিনি না। তাঁরা এখন কে কোথায় আছে, কার বাচ্চারা কত বড়ো হয়েছে, এইসব আরকি। আমি অপেক্ষা করে আছি লিমার জরুরি কথাটা শোনার জন্য, যা বলার জন্য সে বসে ছিল; কিন্তু সে তেমন কিছু তো বলছে না। তাহলে কী তার কোনও কথা নেই? সে কী সজলের সঙ্গে দেখা করার জন্য এখানে এসেছে? সজলকে দেখতে চাইলে তো সে বাইরেই দেখা করতে পারত। সেটা ওর জন্য আরও সহজ হতো। সেখানে আমিও থাকতাম না। ওরা এত অস্বস্তিতেও পড়ত না।

কী সব উলটাপালটা ভাবছি! মাথাটা কিছুক্ষণ যাবত একটু বেশিই ভাবাভাবি করছে। ওরা কেন বাইরে দেখা করবে? তারচেয়ে এই-ই ভালো, সে সরাসরি বাসায় চলে এসেছে। যা হওয়ার, আমার সামনেই হচ্ছে।

আমি লিমাকে জিজ্ঞেস করলাম, ‘আপনার বোনের বাসা কোথায়?’

‘আমার বোনও ঝিকরগাছায় থাকে।’

‘আপনি যে একটু আগে বললেন, আপনার বড়ো আপার বাসায় উঠেছেন?’

‘ওহ, আচ্ছা। উনি আমার কাজিন। আপার বাসা শাহজাহানপুরে।’

‘ওহ। ঢাকায় কয়দিন থাকবেন?’

‘কিছু কাজ আছে। ওগুলো শেষ হলেই চলে যাব।’

‘আচ্ছা। আপনি তো মিষ্টি নিলেন না?’

‘আমি মিষ্টি খাই না।’

সজল বলল, ‘তুমি তো আগে অনেক মিষ্টি খেতে। ছেড়ে দিয়েছ কেন?’

‘এমনিতেই। মিষ্টি খাবার খাওয়া কমিয়ে দিচ্ছি। বয়স বাড়ছে তো, এখন মিষ্টি কম খাওয়াই ভালো। তোমারও তো মিষ্টি অনেক পছন্দের ছিল।’

‘আমি মিষ্টি খাই। এত তাড়াতাড়ি মিষ্টি ছাড়ছি না। আরও একটু বয়স বাড়ুক, তারপর ছাড়ার চিন্তা করব।’

খুবই সাধারণ একটা কথা; কিন্তু কথাটা শুনে আমার এত কষ্ট লাগল! সজলের, লিমার প্রতিটা জিনিস মনে আছে? লিমা তার মনের ভেতর কোথাও না কোথাও রয়েই গেছে এখনও। তাদের জীবনে নিশ্চয়ই শুধু তিক্ততাই ছিল না। তাদেরও অনেক আনন্দের স্মৃতি ছিল। সেসব এত সহজে ভোলা যায় না। কখনোই হয়ত ভোলা যায় না। আমি চা আনার কথা বলে তাড়াতাড়ি ওখান থেকে উঠে চলে এলাম।

চা নিয়ে যেতে ইচ্ছা করছে না। সজলকে ডেকে দুই কাপ চা ওর হাতে ধরিয়ে দিলাম। সজল বলল, ‘তোমার চা কোথায়?’

‘আমি একটু পরে খাব। হঠাৎ ভীষণ গরম লাগছে।’

‘তরী, তুমি ঠিক আছ তো?’

দু’জন দু’জনার দিকে গভীর দৃষ্টিতে তাকালাম আর সাথে সাথেই আমার অস্বস্তি কেটে গেল। সজল তো আমারই আছে। ও শুধুমাত্র এবং শুধুমাত্র আমারই। বললাম, ‘চা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে। নিয়ে যাও।’

সজল চা নিয়ে চলে গেলে, বেডরুমে এসে বসলাম। সাথেসাথেই আম্মার ফোন এল। মনটাকে অন্যদিকে নিতেই, আম্মার সঙ্গে অনেকক্ষণ কথা বললাম। আম্মার ফোন রেখে দেখি পৌনে দশটা বাজে। লিমা কী এখনও যায়নি? সে চলে গেলে তো সজলের রুমে আসার কথা। রুম থেকে বের হতে যাব, তখনই সজল রুমে ঢুকল। ‘তরী, একটা কথা ছিল।’

‘কী হয়েছে? লিমা চলে গেছে?’

‘না।’

‘এখনও যায়নি কেন? রাত হয়ে যাচ্ছে, এখান থেকে শাহজাহানপুর তো কাছে না। যেতে তো সময় লাগবে।’

‘একটা সমস্যা হয়ে গেছে।’

‘কী সমস্যা?’

সজল কথাটা বলতে গিয়েও বলতে পারছে না। ‘কী হল, কী সমস্যা হয়েছে, বলো?’

‘লিমা আজকের রাতটা এখানে থাকতে চাচ্ছে।’

‘কীই?’

‘আস্তে, আস্তে। শোনো, তরী কথাটা শোনো প্লিজ। ও একটা ঝামেলায় পড়ে এখানে এসেছে। রাতে থেকেই সকালে চলে যাবে।’

‘অসম্ভব। সে কেন আমার এখানে থাকবে? এটা কী ধরণের আবদার?’

‘ওর বোনের বাসায় একটু সমস্যা হয়েছে। তাই শুধু আজকের রাতটুকু….. আম্মার রুমটা তো ফাঁকা আছে। ওখানে…..’

‘না। সে এখানে থাকতে পারবে না। বোনের বাসায় সমস্যা থাকলে, হোটেলে থাকতে বলো। ঢাকা শহরে হোটেলের অভাব নেই।’

‘বলেছিলাম। সে নাকি হোটেলে গিয়েছিল; কিন্তু একা হওয়ায় কোনও হোটেলই থাকতে দিতে রাজি হয়নি।’

‘ঐসব আমি বুঝি না। তার সমস্যা, তাকে মিটাতে বলো। সে কেন আমার এখানে ঝামেলা করতে এসেছে?’

‘আমি বলেছিলাম; কিন্তু সে সত্যিই বিপদে পড়ে গেছে। প্লিজ তরী, শুধু রাতটাই তো। সকালে উঠেই ও চলে যাবে।’

রাগে আমার মাথাটা দপদপ করছে। সজল আমার অনুমতির আশায় দাঁড়িয়ে আছে; কিন্তু সজলের সঙ্গে এখন কথা বলতে ইচ্ছা করছে না।…………………