স্রোতস্বিনী পর্ব-১২

0
124

#স্রোতস্বিনী
#মুগ্ধতা_রাহমান_মেধা
পর্ব ১২ (বিয়ে)

দিনটা শুক্রবার।সকাল থেকেই দু’বাড়িতে আনন্দের ঢল নেমেছে।সবাই আজ সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে পড়েছে।কত কাজ!স্রোতকে সাজানোর জন্যে আজ পার্লার থেকে লোক আসবে।স্রোত প্রথমে নাকোচ করে দিলে তার মামী এসে তাকে বুঝিয়ে বলে,
“স্রোত মা দেখো আজকের দিনটা কত সুন্দর।আজ তোমার বিয়ে, আমরা সবাই কত খুশী দেখো।এই দিনটা নিয়ে প্রতিটা মেয়ের কত স্বপ্ন থাকে।আজই তো সাজগোজ করার দিন।আজই তো মন ভরে তুমি সাজবে।এই দিন আর আসবে না,মা।আজ সবথেকে বেশি তোমাকে সুন্দর লাগতে হবে।তুমি নিষেধ করো না।”

মামীর কথা শুনে স্রোত রাজি হয়, তবে বলে দেয় ভারী সাজ যেনো না দেয়।তারপর মামী সবাইকে বলে স্রোতের রুম খালি করে দিয়েছে,এখন একটু একা থাকা প্রয়োজন।

স্রোত দরজা বন্ধ করে বসে আছে।সে ভাবছে মাত্র কয়েকদিনেই তার জীবন কতটা পরিবর্তন হয়ে গিয়েছে।কখনো বিয়ে করবে না বলে ঠিক করে রাখা মেয়েটার আজ বিয়ে।তার ভয় ছিলো। তার মায়ের সাথে যা হয়েছে, তা হওয়ার ভয়।কিন্তু মেহরাদকে দেখে তার মন সায় দিয়েছে যে এমন কিছু হবেনা,সে লোকটাকে ভরসা করে দেখতে চায়।
তবুও তার মনটা আজ ভীষণ খারাপ।মা নেই বলে,মায়ের কত স্বপ্ন ছিলো মেয়েদের বিয়ে নিয়ে।আজ বিয়ে অথচ মা নেই।স্রোতের চোখ দিয়ে এক ফোঁটা জল গড়িয়ে পড়লো।তখনই সে দেখলো,তার বারান্দাটা ঘুটঘুটে অন্ধকার হয়ে গিয়েছে,অন্ধকারের মধ্যে সাদা ধোঁয়া ঘিরে ফেলেছে জায়গাটাকে।এই অন্ধকার থেকে এক শাড়ী পরিহিত মানবী তার দিকে এগিয়ে আসছে।স্রোত বুঝার চেষ্টা করছে কে এটা।আবছা মানবী যখন স্রোতের অনেকটাই কাছে চলে এসেছে স্রোত তখন উঠে দাড়ালো।সে আবছা মানবী হাসছে,তার চোখেমুখে আনন্দের ছোঁয়া।স্রোত অস্ফুটস্বরে ডেকে উঠলো,
“আম্মু…….”
স্রোত তখন দৌড়ে মানবীকে জড়িয়ে ধরতে যায়,কিন্তু পারে না।সে যত এগোয়,মানবী তত পেছনে যায়।স্রোত কাঁদতে কাঁদতে হাঁটু ভেঙ্গে মাটিতে বসে পরে।মানবী মুখে হাসি রেখেই জিজ্ঞাসা করে,
“কাঁদছিস কেনো স্রোত?”
“আ…মি তোমাকে ধরতে পারছি না কেনো আম্মু?” কাঁদতে কাঁদতেই বলে স্রোত
“আমাকে তো এখন ধরা যাবে না,আমি যে ধরা-ছোয়ার বাইরে।”
“আম্মু জানো আজ আমার বিয়ে?আমি বিয়েটা করতে চাইনি। আমি তো দেখেছি তুমি কি কি সহ্য করেছো।কিন্তু.. ”
“জানি,আমি সব জানি।পা গল মেয়ে আমার,সবাই কি এক হয় বল?তোর বাবা বদ মেজাজী ছিলেন।”
“আম্মু তুমি খুশি তো বিয়ে নিয়ে?”
“খুশি, খুবই খুশি।তুই ভালো থাকবি মা,অনেক ভালো থাকবি।”
“তোমার কত ইচ্ছে ছিলো বিয়ে নিয়ে!অথচ তুমি পৃথিবীতেই নেই।”
“কে বলেছে আমি নেই?আমি আছি,আমি তোদের মাঝেই আছি।মনে রাখবি সবসময় মা তোদের আশেপাশেই আছে।”

স্রোত অশ্রুসিক্ত চোখে মানবীর দিকে চেয়ে রইলো।মানবী আবার বললেন,
“আজ আসি,ভালো থাকিস।”
কথাটা বলেই মানবী হাওয়ায় মিলিয়ে গেলেন।সেই অন্ধকার, সাদা ধোঁয়া সব মিলিয়ে গেলো।স্রোত চিৎকার করে উঠে,
“আম্মু যেও না,আম্মু।”

স্রোতের চিৎকার শুনে সবাই ওর ঘরের সামনে চলে এসেছে।দরজা ধাক্কাচ্ছে।এক পর্যায়ে স্রোতের ধ্যান ভাঙ্গলে সে বুঝতে পারে সে তার মাকে কল্পনা করছিলো।দরজার ধাক্কানোর আওয়াজ শুনে সে চোখ মুছে মেঝে থেকে উঠে দাড়ায়।নিজেকে সামলে দরজা খোলে সামনে সবাইকে দেখে অবাক হলেও শান্ত ভঙ্গিতে জিজ্ঞাসা করে,
“কি হয়েছে?সবাই এখানে কেনো?”
মান্ধবী বলে,
“তুই আম্মু আম্মু বলে চিৎকার করছিলি কেনো?”
“এমনি।” দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলে স্রোত।
সবাই চুপ হয়ে যায়।স্রোতের মামী এসে মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বলে,
“মায়ের কথা মনে পড়ছে?পড়বেই।তুমি গোসল সেরে ফেলো।পার্লার থেকে মেয়েরা চলে এসেছে।তোমার অপেক্ষা করছে।”
স্রোত “আচ্ছা” বলে ভেতরে চলে যায়।
সবাই ওর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকে।তারপর সবাই যার যার কাজে চলে যায়।এসবই সিরাজ সাহেব দূর থেকে দেখছিলেন।বুকভরা নিঃশ্বাস নিয়ে তিনিও চলে যান।

স্রোতকে সাজানো শেষ।মান্ধবী খুশিতে বলে,
“আপুউউউ তোকে একদম রূপকথার রাণী লাগছে,পুরাই লাল টুকটুকে বউ।”
স্রোত এক দৃষ্টিতে আয়নার দিকে চেয়ে রইলো।সে মেহরাদের জন্য বউ সেজেছে, মেহরাদের বউ।

স্রোতকে সাজানো শেষ হলে সবাই চলে যায় নিজেরা তৈরী হতে।স্রোত রুমে একা,তখনই ফোনটা টুংটাং শব্দে বেজে উঠে।ফোনটা নিতেই দেখতে পায় মেহরাদের মেসেজ।

“আপনাকে বধূ বেশে দেখার তৃষ্ণায় আমি তৃষ্ণার্ত, স্রোতস্বিনী। বুকটা যেনো ফেটে যাচ্ছে।”

মেসেজটা পড়ে স্রোতের অধর প্রসারিত হলো।সাথে সাথেই আরেকটা মেসেজ,
“একটু কল দিবেন?”
স্রোতের কল দেখে মেহরাদ খুশি হয়ে রিসিভ করলেও কেউ কোনো কথা বলছে না,তারা নিরব,সময় নিরব,পরিবেশ নিরব। এই নিরবতাটাও যে প্রেমময়,শান্তির।
এক সময় মেহরাদ শান্বভাবে বলে উঠলো,
“কি করছেন স্রোতস্বিনী?”
“অপেক্ষা। ”
“কার?”
“আপনার।” ভণিতা ছাড়াই বলে স্রোত।মেহরাদ হাসলো, অদ্ভুত এক হাসি,সেই হাসিতে সুখ আছে,ভালোবাসা আছে।

“সময় যেনো যাচ্ছেই না স্রোতস্বিনী।আপনাকে দেখার জন্য আমার চোখ দুটো অনেক জ্বালাচ্ছে স্রোতস্বিনী।”
“ওওওওও শুধু চোখই চাচ্ছে আমাকে দেখার জন্য?আর কেউ না?” দুষ্টুমি করে বললো স্রোত।
স্রোত খেয়াল করেছে সে যখন মেহরাদের সাথে থাকে তখন তার গম্ভীর ভাব কোথায় যেনো হারিয়ে যায়,সেই পুরনো চঞ্চলা স্রোত ফিরে আসে।
স্রোতের কথায় মেহরাদ শব্দ করে হেঁসে ফেললো। বললো,

“আমি ওতো অপেক্ষা করছি,খুউউউউব অপেক্ষা করছি।এই সময় অন্যদিন কত তাড়াতাড়ি ফুরিয়ে যায়।আর আজকে সে যাচ্ছেই না, সে স্থির হয়ে গেছে।”

সময়ের বিরুদ্ধে মেহরাদের অভিযোগ মন দিয়ে শুনলো স্রোত,সে হাসলো,খুবই সামান্য হাসি,বললো,
“এখন সময়ও আপনার শ ত্রু হয়ে গেলো?”
“একদম।সময় আমার সাথে সতীনের মতো ব্যবহার করা শুরু করেছে।আপনার কাছে যেতেই দিচ্ছে না।”

মেহরাদের বাচ্চামো দেখে স্রোত স্মিত হেঁসে বলে,
“বাচ্চামো বাদ দিন।এখন রাখছি,যে কেউ চলে আসবে এখন।”
“আমার জন্য অপেক্ষা করুন স্রোতস্বিনী। আপনার এই অপেক্ষা আর আপনি আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ উপহার।”
গাঢ় স্বরে বলে ফোন রেখে দেয় মেহরাদ।স্রোত আয়নায় নিজেকে দেখতে থাকে।

অনেক সময় পার হয়।মান্ধবী এসে জানায়,ওরা চলে এসেছে।স্রোত বারান্দায় যায়,গিয়ে দেখে দু’টো গাড়ি এসে দাড়িয়েছে।ধীরে ধীরে সবাই বের হয়,স্রোত অপেক্ষা করছে কখন মেহরাদ বের হবে।স্রোত নিজেই নিজের কান্ডে অবাক।সে কেনো এমন করছে?তখনই মেহরাদ নামলো,তার পড়নে অফ হোয়াইট রঙের শেরওয়ানি। স্রোত তৎক্ষনাৎ মেজর সাহেবকে রূপকথার রাজা নামে অ্যাখ্যায়িত করলো। সেই রাজা আর রাজ্যের রাণী হতে চলেছে সে।
মেহরাদ গাড়ি থেকে নেমেই উপরের দিকে তাকাতেই স্রোতের চোখে চোখ পড়ে যায়।সে যেনো জানতো স্রোত এখানে তার অপেক্ষায় থাকবে।স্রোত সাথে সাথে রুমে চলে যায়,মেহরাদ তা দেখে হাসে।

মেহরাদ সোফায় বসে আছে,সামনে কাজী সাহেব বসা।এখন স্রোতকে আনার পালা।মান্ধবীর সাথে রায়হানের দেখা হয়েছে।রায়হান অনেকবার কথা বলতে চাইলেও মান্ধবী যথাসম্ভব এড়িয়ে চলেছে।

স্রোতকে যখন মেহরাদের পাশে এনে বসানো হয় তখন দু’জনের কেউই কোনো প্রতিক্রিয়া দেখায় নি।স্রোতের সামনে সে যতই পা গ লামী করুক,সবার সামনে সে অন্যরকম।তবে মনে মনে ঠিকই বলেছে,
“মাশাআল্লাহ, আমার চোখ দুটো হয়তো জানতো না তাদের অপেক্ষার ফল এতো বেশিই মিষ্টি হবে।”

স্রোতকে ফিসফিসিয়ে বললো,
“আপনার স্নিগ্ধতায় আমার সব তেষ্টা মিটে গেছে স্রোতস্বিনী।তবে বুকটা একটু বেশি খা খা করছে।”

স্রোত নিচের দিকে তাকিয়ে ছিলো।মেহরাদের কথা শুনে সে হাসলো,অদ্ভুত সে হাসি।

কাজী সাহেব যখন স্রোতকে কবুল বলতে বলে,তখন সে সময় নেয়।কেনো যেনো কথাগুলো আটকে যাচ্ছে,বলতে পারছে না।মেহরাদ তখন শক্ত করে স্রোতের হাতটা মুঠোবন্দি করে।স্রোত চকিতে ওর দিকে তাকায়।মেহরাদের চোখ যেনো বলে দিচ্ছে,
“আমাকে ভরসা করুন স্রোতস্বিনী।এই যে হাত ধরলাম,আর কখনো ছাড়বো না।বিশ্বাস করুন আমায়।”

স্রোত মেহরাদের চোখের দিকে তাকিয়েই কবুল বলে ফেলে।মেহরাদের মনে হয় সে এমন সুমিষ্ট ধ্বনি আর কখনো শোনেনি।প্রশান্তিতে তার চোখ বুঝে আসে।চোখে-মুখে পূর্ণতার ঝলক।
মেহরাদকে কবুল বলতে বললে,সে স্রোতের দিকে তাকিয়ে স্রোতের হাতটা আরো শক্ত করে মুঠোবন্দি করে এক নিঃশ্বাসে কবুল বলে ফেলে।এ যেনো মেহরাদের চাওয়ার পরিণয়।
সবাই “আলহামদুলিল্লাহ” বলে উঠে।

মেহরাদ যে স্রোতের হাত ধরে ভরসা দিয়েছে সবটাই সিরাজ সাহেব দেখেছেন।উনার ভেতরে প্রশান্তির আনন্দ,উনার মেয়ে ভালো থাকবে,সঠিক মানুষের হাতেই তিনি কন্যাদান করেছেন।

বিয়ে পড়ানোর সময় রায়হান মেহরাদের আর মান্ধবী স্রোতের পেছনে দাঁড়িয়ে ছিলো।রায়হান আজ অনেক চেষ্টা করলেও মান্ধবীর সাথে কথা বলতে পারে নি।তখনই ফিসফিসিয়ে বলে,
“আজকে তোমাকে খুব সুন্দর লাগছে।এক বছর আগে প্রেমে পড়িনি তবে এই একটা বছর ভালোবেসেছি,অপেক্ষা করেছি।এবার নাহয় প্রেমে পড়বো।নতুন ভালোবাসার ইতিহাস গড়বো।আগে ভালোবাসা তারপর প্রেম।”
মান্ধবী বিস্ময় দিকে তাকালে রায়হান হেঁসে চোখ মারে তাকে।

কন্যা বিদায়ের পালা।বিয়ের এতো এতো আনন্দ যেনো এক নিমিষেই শেষ হয়ে যায়, সব রঙ যেনো ফিকে হয়ে যায় কন্যা বিদায়ের সময়।বাতাসে করুণ বাঁশীর সুর,মনের ভেতরে মন খারাপেরা তখন উতালপাতাল ঢেউ হয়ে বয়।সবার চোখে জল আর কোনো একজনের মনে সব ছেড়ে ছুঁড়ে যাওয়ার বেদনা।কি জানি কি হয়,নতুন জীবনে নতুন পরিবারের মানুষ কেমন জানি হয়!কত হাজার রকমের চিন্তা তখন মাথায় আসে।
মান্ধবীর চোখ ঝাপসা হয়ে আসছে।কিন্তু যার বিয়ে তার কোনো ধ্যান নেই,সে চুপচাপ শান্ত দৃষ্টিতে দেখছে।তার মতে,মেয়েরা এতো কেনো কান্নাকাটি করে?সে কাঁদবে না,একটুও না।তার সাথে কান্না করা যায় না,মানায় না তাকে।
স্রোত সাহেলা বেগমকে বলেছে,
“সংসারটা এতোদিন যেভাবে সামলেছো,এভাবেই সামলিয়ো।”
মান্ধবীকে কান্না করতে দেখে জড়িয়ে ধরে বলেছে,
“কান্না করছিস কেন?তুই তো বলেছিলি বিয়ে করে নিতে!এখন কাঁদছিস কেনো?”
মান্ধবী হিচকি তুলতে তুলতে বলে,
“ও তুই বুঝবি না,পা ষা ণ মহিলা কোথাকার।”
বোনের কথায় স্রোত হাসে খানিকটা,তারপর বাবার দিকে ইশারা করে শক্ত কন্ঠে বলে,
“উনার দিকে খেয়াল রাখিস।”
বলে স্রোত গাড়িতে উঠে বসে।

মেহরাদ জানে স্রোতের বাবার সাথে স্রোতের সম্পর্ক ভালো না।মেহরাদ সিরাজ সাহেবের কাছে গিয়ে উনার হাত ধরে ভরসা দিয়ে বলে,
“আপনি কোনো চিন্তা করবেন না,আঙ্কেল।আজ থেকে আপনি জানবেন আপনার একটা বড় ছেলে আছে যে আপনাদের সবার ভরসা হতে চায়।আমি সব ঠিক করে দিবো।”
খুশিতে সিরাজ সাহেবের চোখ দিয়ে কয়েক ফোঁটা জল বেরিয়ে আসে।সে মেহরাদের পিঠে হাত বুলিয়ে বলে,
“বিশ্বাস আর ভরসা দুটোই করলাম।আশা করি মর্যাদা রাখবে।”
বিপরীতে মেহরাদ হাসি উপহার দেয়।তারপর গাড়িতে উঠে পড়লে, গাড়ি চলতে থাকে নিজ গন্তব্যে।

গাড়ি যখন ব্যস্ত রাস্তায় তখন পড়ন্ত বিকেল।এই গাড়িতে স্রোত মেহরাদ,রিহানা আর ড্রাইভার ছাড়া কেউ নেই।রিহানা ড্রাইভারের পাশের সিটে বসে মোবাইলে ব্যস্ত।স্রোত বাহিরের দিকে তাকিয়ে আছে আর মেহরাদ স্রোতের দিকে তাকিয়ে আছে।মেহরাদ যে তার দিকে অপলক তাকিয়ে আছে সেটা স্রোত ভালোভাবেই বুঝতে পারছে,তার কেমন জানি অস্বস্তি হচ্ছে।একসময় যে মেহরাদের দিকে ঘুরে বসে জিজ্ঞাসা করে,
“কি দেখছেন এমন করে?”
“আপনাকে।” মা তা ল করা সেই কন্ঠস্বর।
“আগে দেখেননি?”
“এই রূপে তো নয়।”
“এতোক্ষণ কি করছিলেন?”
“সবার সামনে মন ভরে দেখতে পারি নি স্রোতস্বিনী।”
এবার যেনো স্রোত লজ্জা পেলো খানিকটা।সে চুপ রইলো।

মেহরাদ স্রোতের হাত টা নিজের মুঠোবন্দি করে বললো,
“জানেন স্রোতস্বিনী বিশ্বাসই হচ্ছে না আপনি আমার হয়ে গেছেন,সম্পূর্ণভাবে।এ যেনো একটা স্বপ্ন,ঘুম ভেঙ্গে গেলেই শেষ। খুব করে চাচ্ছি ঘুম না ভাঙ্গুক,এই স্বপ্ন শেষ না হোক।”

স্রোত চুপ করে মেহরাদের কথা শুনছে।স্রোতের হাতটা দিয়ে নিজের গালে স্পর্শ করে রাখে মেহরাদ।আর বলে,
“আমাকে বিশ্বাস করে নিজেকে আমার নামে লিখে দেওয়ার জন্য আমি কৃতজ্ঞ আপনার কাছে স্রোতস্বিনী।”

স্রোত হাতটা ছাড়ায় না,ইচ্ছে করছে না।তার এই মুহুর্তটা ভাল্লাগছে,একটু বেশিই ভাল্লাগছে।মনে প্রাণে চাচ্ছে সময়টা এখানেই থমকে যাক,এই ভালোলাগা সারাজীনন থাকুক।

#চলবে….