হিয়ার টানে পর্ব-০৪

0
310

#হিয়ার_টানে
#৪র্থ_পর্ব
#স্নিগ্ধতা_প্রিয়তা

অভীক ভাইয়াকে কথাটা না জানানো পর্যন্ত আমার শান্তি হচ্ছিলো না। অভীক ভাইয়াকে হিমার কথা জানাতেই অভীক ভাইয়া রাগান্বিত স্বরে বলল,

–“হিয়া তোমার কমনসেন্স নেই? অন্যের চিঠি তুমি কেন লিখবে? আর হিমাকে জানিয়ে দিও, ওকে শুধুমাত্র আমার ছোটবোন ভাবি! এর বাইরে কিছুই নয়।”

আমি ভয়ে-ভয়ে উত্তর দিলাম,

–“ভাইয়া কথাটা আপনি নিজে হিমাকে জানিয়ে দিলে খুশি হতাম।”

–“ওকে, আর আমি তোমাকে পছন্দ করি এটাতো এখন তুমি জেনেই গেছো! তোমার মতামত যখন খুশি জানিয়ে দিও। আমি আশায় থাকবো তোমার উত্তরের!এখন পড়াশোনার সময়৷ এসব নিয়ে ভাবতে হবে না!”

–“ভাইয়া আসলে আমি আপনাকে আমার বড় ভাই হিসেবেই মানি। তাই….”

–“ওকে, আমার জন্য তোমার চিন্তা করতে হবে না৷ ভেবো না যে, তুমি না করায় আমি কষ্ট পাবো! কেননা তোমাকে আমার ভালো লাগে। জাস্ট এটুকুই! ব্যাপারটা এখানেই শেষ হয়ে গেলো! ভালো হয়েছে। কোনো জিনিস নিয়ে বাড়াবাড়ি আমার একদম পছন্দ নয়।আর এইসব কথাগুলো কাউকে জানানোর প্রয়োজন নেই। কাজিনদের মধ্যে কোনো ভুল বুঝাবুঝির সৃষ্টি হোক সেটা আমি চাইনা!”

–“আচ্ছা।”

–“তুমি কি আমাকে ভয় পাও?”

–“না, আসলে…”

–“প্লিজ কিছু মনে করো না। আমি এভাবে কথাগুলো বলতে চাইনি৷ কিন্তু…”

–“ইটস ওকে ভাইয়া৷ আপনি শুধু হিমাকে একটু বুঝিয়ে বলবেন। তাহলেই হবে!”

–“আচ্ছা। সরি হিয়া, সত্যিটা না জেনেই আমি তোমাকে…”

–“থাক না, এসব আর না বলাই ভালো। ”

তারপর অভীক ভাইয়া কল কেটে দিতেই আমি যেন হাফ ছেড়ে বাঁচলাম।

একটু পরেই হিমা মন খারাপ করে আমার রুমে আসলো। তারপর আমাকে জড়িয়ে ধরে কান্না করতে লাগলো কারণ অভীক ভাইয়া ওকে সবটা বলেছে। আর সেটা শুনেই ওর এই অবস্থা!

–“অভীক ভাইয়া সবকিছু পেয়েছে বলে এত অহংকার থাকতে হবে? আমি কি দেখতে এতটাই খারাপ? পড়াশোনায় না হয় একটু কাঁচা! তাই বলে এভাবে সরাসরি মুখের উপর না করে দিতে পারলো!”

আমি ওর পিঠে হাত বুলিয়ে শান্ত হতে বললাম।তারপর ওকে বুঝালাম যে, অভীক ভাইয়ের থেকে আরো ভালো ছেলে পাবে ও। অভীক ভাইয়া আমাকে পছন্দ করে এটা ওর থেকে গোপন রাখাই ভালো! তাই ও বিষয়ে আরকিছু বললাম না।

কেটে গেছে কয়েকটা মাস! আমি আবির ভাইয়ার সাথে আর একদিনও কথা বলিনি। সেতো তার প্রিয় মানুষের সাথেই আছে! আমার সাথে কেন কথা বলতে হবে! আমিও ভার্সিটিতে পড়ব! আর প্রেম করে আবির ভাইয়াকে দেখিয়ে দিবো!

ইদানীং আমার পড়াশোনা দেখে মাতো ভীষণ অবাক! আর বাবাও ভীষণ খুশি যে আমি পড়াশোনায় মন দিয়েছি। সত্যি বলতে ইদানীং পড়াশোনা করতে আমার ভালই লাগে৷ আর সবথেকে মজার ব্যাপার হচ্ছে, পড়াশোনায় ডুবে থাকলে আবির ভাইয়ার কথাও বেশি মনে পড়ে না!কলেজে এখন আর যেতে হয়না। শুধু প্রাইভেট আর কোচিং।ভালই যাচ্ছে দিনকাল!

আজ আমার একমাত্র ফুপুর বড় মেয়ের গাঁয়ে হলুদের অনুষ্ঠান । ফুপুর শুধু দুই মেয়ে কোনো ছেলে নেই। বড় মেয়ে নিশি আর ছোট মেয়ে মিশি। মিশি এবার ক্লাস নাইনে পড়ে। ফুপুর বাড়ি আমাদের বাড়ি থেকে বেশি দূরে না হলেও বেশি যাওয়া হয়না ওখানে।

আজ ফুপুর বাড়িতে যাওয়ার কোনো ইচ্ছে আমার ছিলো না। কিন্তু হিমা যখন জানালো যে, আজ নিশি আপুর গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানের জন্য আবির ভাইয়া আসবে তখন কেন জানি আমার যেতে মন চাইলো! কতদিন আবির ভাইয়ার ওই মুখটা দেখি না!কিন্তু সেতো অন্যকাউকে ভালবাসে! কথাটা মনে হতেই আবার আমার মনটা খারাপ হয়ে গেলো৷ কিন্তু আমি না গেলে হিমাও যাবেনা! হিমার জিদের কাছে হেরে অবশেষে রাজি হলাম!

সবার সাথে আমিও হলুদ শাড়ী পড়েছি। আর আমার চোখদুটো শুধু বারবার আবির ভাইয়াকে খুঁজছে! কখন যে আসবে!হিমা সবার সাথে মজা করছে কিন্তু আমি একপাশে দাঁড়িয়ে আবির ভাইয়াকে খুঁজার চেষ্টা করছি, এমন সময় কেউ একজন আমার পেছন থেকে বলে উঠলো,

–“এক্সকিউজ-মি, কেশবতী!”

আমি পিছনে তাকাতেই দেখতে পেলাম যে, একটা ছেলে দাঁড়িয়ে আছে। ছেলেটা দেখতে কিছুটা অভীক ভাইয়ার মতোই৷ আমি প্রথমে দেখেই কিছুক্ষণ হাঁ করে তাকিয়ে ছিলাম যে, অভীক ভাইয়াতো আসার কথা নয়! তাহলে এই ছেলেটা কে? আর আশেপাশেতো কেউ নেই! কেশবতী বলে কাকে ডাকছে!

–“এই যে মিস! হ্যাঁ আপনাকেই বলছি! আমি জানি আমি দেখতে অনেক সুন্দর! তাই বলে ওভাবে তাকিয়ে থাকতে হবে!”

উনার কথা শুনে রাগে আর লজ্জায় আমি চোখ নামিয়ে নিয়ে বললাম,

–“এই যে মিস্টার হনুমান! সুন্দর হয়েছেন বলে খুব অহংকার তাইনা? এই সৌন্দর্য কি আপনি নিজে তৈরি করেছেন নাকি? আল্লাহ আপনাকে এত সুন্দর করে তৈরি করেছেন বলেই না আপনি এত সুন্দর হয়েছেন! আর আপনি আমাকে কেশবতী কেন বলছেন?”

উনি মুচকি হেসে আরেকটু ভাব নিয়ে বললেন,

–“মেনেই যখন নিয়েছেন যে, আল্লাহ আমাকে সুন্দর করে বানিয়েছেন। তাহলে হনুমান বলে আপনি সেই সৌন্দর্যের অবমাননা করতে পারেন কি?”

আমি একটু থতমত খেয়ে বললাম,

–“সেটাতো আপনার অহংকার দেখে বলেছি। কিন্তু আপনি আমাকে…”

এটুকু বলতেই উনি আমাকে থামিয়ে দিয়ে বললেন,

–“কারণ আমিতো আপনার নাম জানতাম না! শুধু আপনার চুলগুলোই দেখছিলাম৷ আর এত সুন্দর চুলের অধিকারী যে তাকে কেশবতী বলে ভুলতো কিছু করিনি…’চুল তার কবেকার অন্ধকার বিদিশার নিশা’ কবিতার এই লাইনটা আপনার জন্যই যেন কবি লিখেছিলেন!”

–“আচ্ছা আপনি কে বলুনতো? আমার সাথে এসব ফাউল পেচাল কেন শুরু করেছেন? আর আমিই বা এতক্ষণ আপনার সাথে কেন কথা বলছি! ”

কথাটা বলেই আমি ওখান থেকে চলে আসছিলাম। তখন উনি পিছন থেকে আবার বলে উঠলেন,

–“আরে সরি! আপনাকে যেজন্য ডাকছিলাম তাইতো শোনা হয়নি! এখানে আশেপাশে কোনো ফুলের দোকান আছে? মিশি আমাকে ফুল কিনে আনতে বলেছে, কিন্তু আমি এখানে তেমন কিছুই চিনিনা। আপনাকে দেখে ভাবলাম যে, জিজ্ঞেস করে নেই!”

আমি নিজের হাসিটাকে চেপে রেখে বললাম,

–“মিশি আর কাউকে পায়নি ফুল কেনার জন্য! আপনার মতো একটা গাধাকে পাঠিয়েছে! আর আপনিও আমাকেই পেলেন জিজ্ঞেস করার জন্য? আশেপাশে কোনো ছেলের অভাব আছে নাকি! মেয়ে দেখলেই কথা বলতে মন চায়! লুইচ্চা!”

আমার কথা শুনে উনি রেগে গেলেন। তারপর একটু চেঁচিয়ে বলতে লাগলেন,

–“আপনি আশেপাশে আর কাউকে দেখতে পাচ্ছেন? এখানে শুধু আমি আর আপনিই আছি! আর শুনুন আপনি আমাকে গাধা! হনুমান! এসব কেন বলছেন! আমারতো সুন্দর একটা নাম আছে নাকি! শাহিল শাহরিয়ার নাম আমার। নেক্সট টাইম মাথায় রাখবেন! আর উপকার না করলে না করেন! উল্টাপাল্টা কথা বলবেন না!”

আমি কিছু বলতে যাবো ঠিক তখনি আবির ভাইয়ার আগমন ঘটলো। সাথে একটা মেয়ে। আমাকে শাহিলের সাথে কথা বলতে দেখে আবির ভাইয়া এগিয়ে এসে শাহিলকে উদ্দেশ্য করে বলল,

–“কি ব্যাপার! কি হয়েছে? আপনি কি হিয়াকে চিনেন?”

আবির ভাইয়ার মুখে আমার নাম শুনে শাহিল একটা বিজয়ীর হাসি দিয়ে বলল,

–“ওহ আচ্ছা! আপনার নাম তাহলে হিয়া! চেহারার মতো নামটাও খুব মিষ্টি! ”

শাহিলের এই কথাটা শুনেই আবির ভাইয়া রেগে গেলো। তারপর আমার দিকে কটমট করে তাকিয়ে বলল,

–“কিরে তুই এই ছেলেটাকে চিনিস নাকি?”

আমি ভয়ে-ভয়ে না সূচক মাথা নাড়াতেই আবির ভাইয়া শাহিলের দিকে এগিয়ে গিয়ে বলল,

–“একা একটা মেয়েকে পেয়ে বিরক্ত করছেন লজ্জা করছে না আপনার? দেখেতো ভদ্র ঘরের ছেলে বলেই মনে হচ্ছে! ব্যাবহার দেখেতো তা মনে হচ্ছেনা!”

আবির ভাইয়া খুব রেগে গেছে দেখে আমি আবির ভাইয়াকে থামানোর জন্য বললাম,

–“ভাইয়া প্লিজ, আপনি যা ভাবছেন তা নয়!আসলে…”

আবির ভাইয়া আমাকে থামিয়ে দিয়ে বলল,

–“তুই চুপ থাক! একদম কথা বলবিনা! দিনদিন তোর সাহসটাও বেড়ে যাচ্ছে।”

আমি কি বলব না বলব বুঝতে পারছি না। আবির ভাইয়া রেগে গেছে বুঝতে পারলাম। আর আবির ভাইয়ার এই ব্যবহারের কারণে শাহিলও রেগে গেছে। শাহিলও এইবার আবির ভাইয়ার দিকে এগিয়ে গিয়ে বলল,

–“আপনাকেওতো ভদ্র ঘরের ছেলে বলেই মনে হচ্ছে। না জেনেশুনে কথা বলতে এসেছেন কেন?”

ওদের চেঁচামেচি শুনে ফুপা এগিয়ে এসে আবির ভাইয়াকে লক্ষ্য করে বললেন,

–“আবির কখন আসলি? আর এখানে কি হয়েছে?….শাহিল? তুমিও এখানে? কি হচ্ছেটা কি এখানে?”

আমি আবির ভাইয়ার হাত ধরে টেনে ওখান থেকে নিয়ে যেতে-যেতে বললাম,

–“না ফুপা কিছুই হয়নি! আসলে আবির ভাইয়া আমাকে খুঁজে পাচ্ছিলো না তাই!”

ফুপাকে দেখে দুজনেই চুপ হয়ে গেলো। ফুপা শাহিল ভাইয়াকে দেখিয়ে আমাদেরকে উদ্দেশ্য করে বলল,

–“এ শাহিল, আমার এক চাচাতো বোনের ছেলে। এই প্রথম আমাদের গ্রামে এসেছে। আবির, ওকে নিয়ে গ্রামটা ঘুরে দেখাস।….আর ওই মেয়েটা কে হিয়া?”

ফুপার কথায় এতক্ষণে সবার আবির ভাইয়ার সাথে আসা মেয়েটির দিকে নজর পড়লো। আমি কিছু বলার আগেই আবির ভাইয়া আমার হাত থেকে নিজের হাত ছাড়িয়ে নিয়ে মেয়েটার পাশে গিয়ে বলল,

–“এ নিশি! আমার বান্ধবী! কখনো গ্রামের বিয়ে দেখেনি, তাই নিশি আপুর বিয়েতে আসতে চাচ্ছিলো। তাই….”

ফুপা একগাল হেসে বললেন,

–“ভালই হয়েছে, নিয়ে এসেছিস। তা তোরা সবাই এখানে দাঁড়িয়ে আছিস কেন? ভেতরে যা! সবাই ভেতরে।”

বলেই ফুপা ওখান থেকে চলে গেলো৷ তারপর আবির ভাইয়া একবার শাহিলের দিকে আর একবার আমার দিকে দেখছিলো। আর আমি নিশিকে দেখছিলাম। আবির ভাইয়া কি করে পারলো মেয়েটাকে বাড়ি অব্দি নিয়ে আসতে! ভেবেই আমার মনটা ভেতর থেকে কেঁদে উঠলো। আমি ওখান থেকে অতিদ্রুত চলে আসলাম। শাহিল ভাইয়াও আবির ভাইয়ার দিকে কটমট করে তাকিয়ে থেকে চলে গেলো। আবির ভাইয়া আর তার সেই নিশি ওখানে দাঁড়িয়ে রইলো!

আমি ওখান থেকে সোজা বাড়ি চলে আসলাম।বাড়িতে কেউ নেই এখন৷ সবাই ওই বাড়িতে। তাই আমি পুকুরপাড়ে বসে-বসে কান্না করছিলাম। এমন সময় পেছনে কারো পায়ের আওয়াজ শুনে ওদিকে তাকাতেই আবির ভাইয়াকে দেখে চমকে উঠলাম।
আবির ভাইয়া নিঃশব্দে আমার পাশে বসে বলল,

–“সেদিন কেন আমায় মিথ্যে বলেছিলি?সত্যিটা বললে কি এমন হতো? আমি কি তোর অভীক ভাইয়াকে তোর থেকে কেড়ে নিতাম? নাকি খেয়ে ফেলতাম?”

আবির ভাইয়ার কথাগুলো শুনে আমি নির্বাক হয়ে গেছি। তারমানে আমার ধারণাটাই ঠিক ছিলো। আবির ভাইয়া আমাকে ভুল বুঝেছিলো। আমিও হেয়ালী করেই বললাম,

–“আমিতো কোনো মিথ্যে বলিনি। আর আপনি যে আপনার হৃদয়ের টুকরোটাকে রেখে আমার সাথে গল্প করতে এসেছেন এটা কি ঠিক?”

আমার প্রশ্নটা শুনে আবির ভাইয়া শুকনো একটা হাসি দিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে বলল,

–“তুই কি নিশির কথা বলছিস? ও আমার হৃদয়ের টুকরো কেন হবে?কথা ঘুরাচ্ছিস কেন? খুব কথা ঘুরাতে শিখেছিস দেখছি!”

আমি চোখের জলগুলো মুছে আবির ভাইয়ার দিকে তাকাতেই আবির ভাইয়া হেসে দিলো৷

–“হঠাৎ এমন হাসছেন কেন? ”

–“তোর মুখ দেখলে যে কেউ ভয় পেয়ে যাবে।পুকুরে গিয়ে আগে মুখটা ধুয়ে আয়। আর কান্না করছিলি কেন? ওই শাহিল কিছু বলেছে? কি হয়েছিলো?”

আমি শাড়ীর আঁচল খুঁজে সেটা দিয়েই মুখ মুছতে শুরু করলাম। আবির ভাইয়া আমার হাত থেকে শাড়ীর আঁচল কেড়ে নিয়ে বলল,

–“এভাবে মুছলে মুখে লাগবে। যা আগে মুখটা ভালো করে ধুয়ে আয়। ”

আমি শাড়ী পড়ে এমনিই হাটতে পারছিনা! তার উপর পুকুরের পানি দিয়ে মুখ ধুতে বলছে! আমি রেগে গিয়ে বললাম,

–“এই অবস্থায় আপনি আমাকে পুকুরপাড়ে যেতে বলছেন? আমিতো আপনার নিশি নয় যে, সবকিছুতে পারফেক্ট হবো! আমি বাড়ি যাচ্ছি। এগুলো ধুয়ে আসছি। ”

বলেই আমি বেঞ্চি থেকে উঠতেই আবির ভাইয়া আমার হাত টেনে আবার বেঞ্চিটাতে বসিয়ে দিলেন। তারপর রেগে গিয়ে বললেন,

–“তুই বারবার নিশির নাম নিয়ে কি প্রমাণ করতে চাইছিস বলতো? আমি বললাম না নিশি আমার ফ্রেন্ড। আর কিছুই নয়! আর ও অলরেডি বিবাহিত! ”
নিশি বিবাহিত! এই কথাটা শুনতেই খুশিতে আমার লাফাতে মন চাচ্ছিলো! কিন্তু আবির ভাইয়াকে সেটা বুঝতে না দিয়ে বললাম,

–“সত্যি? নিশি আপনার গার্লফ্রেন্ড নয়? আর উনি বিবাহিত? তাহলে সেদিন রাতে…”

এটুকু বলেই আমি থেমে গেলাম। আবির ভাইয়া অবাক দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে বলল,

–“কোনদিন রাতে? তুই কবেকার কথা বলছিস?”

আমি আমতা-আমতা করে বললাম,

–“কিছুনা! আসলে আপনি আমাকে ভুল বুঝেছিলেন। সেদিন অভীক ভাইয়ার জন্য আমি চিঠি লিখিনি। আসলে…”

–“আমি নিজে দেখলাম ওটা তোর হাতের লেখা ছিলো। আর তুই এখনো মিথ্যে বলছিস? ”

–“আসলে চিঠিটা আমি লিখেছিলাম। তবে আমার জন্য নয়। ওটা….”

এটুকু বলেই আমি থেমে গেলাম। হিমার নাম জানতে পারলে আবির ভাইয়া যদি রেগে যায়? যদি হিমাকে বকাবকি শুরু করে? সবাইকে বলে দিলেতো কেলেঙ্কারি কান্ড হয়ে যাবে! আমি এখন কি করব? সত্যিটা কি আবির ভাইয়াকে বলে দিবো? আর সত্যিটা না বললেতো আবির ভাইয়া আমাকে ভুল বুঝবে! কি করব এখন আমি?

চলবে…….