#হৃদমাঝারে_শুধুই_তুই
#লেখনীতে:মিথিলা মাশরেকা
পর্ব-৬
বিশাল বটগাছের মুলের উপর রাহাতের মুখ চেপে ধরে বসে আছি।ভয়ে শ্বাসপ্রশ্বাস দ্রুত চলছে আমার,যা সচরাচর হয় না।আর এর কারনও ওই একজন!ওপাশে সব আদিবাসী মেয়েরা একসাথে গান গাচ্ছে,ঘুরে ফিরে নাচছে,শিমুলও আছে ওখানেই।আর আমি?আমি ওই এক কদুর ভয়ে রাহাতকে নিয়ে গাছের পিছনে লুকিয়ে আছি আর দোয়াদরুদ পড়ে চলেছি।যা হয়েছে তা যেনো ভয়ানক কিছু না হয় আর যেটার ভয় পাচ্ছি সেটা যেনো না হয়!
•
আগেরদিন বিকেলে আরমান আদিব ভাইয়াকে ওভাবে নিয়ে যাওয়ার পর প্রচন্ড রাগ হয় আমার।ছেলেগুলো টানা হেচড়া করছিলোই।নিজেকে শক্ত করে একটা জোরে শ্বাস ফেললাম।অনেক হয়েছে রঙ তামাশা!এবার সবটা সহ্যসীমার বাইরে।মিথিকে এভাবে জবরদস্তি করার চেষ্টা তাইনা?
অন্যহাত খালি ছিলো।হাটতে হাটতেই পা দিয়ে নিচে পরে থাকা একটা মোটা ডাল তুলে হাতে নিলাম।সর্বশক্তি দিয়ে বারি লাগালাম ছেলেটা যে হাতে আমার হাত ধরেছে।ও তৎক্ষনাৎ হাত সরিয়ে নিলো।বাকি দুটো এগুতে আসলেই একটাকে ডাল দিয়ে লাগালাম,আরেকটাকে লাথি দিয়েছি।দুটোই পরে গেলো।তারপর এলোপাথারি বারি দিতে লাগলাম।তিনজনই গড়াগড়ি খাচ্ছে মাটিতে,আর চেচিয়ে বলছে ছেড়ে দিতে।আমি রাগ মেটাতে ব্যস্ত।মোটা ডালটাও ভেঙে গেলো এক পর্যায়ে।
আরেকটা লাঠি খুজে সবে মার শুরু করবো ওদের একজন হাত জোর করে বললো,
-ভুলটো হইন গেছে রে!ছেড়েটো দে!উ নেসাটো করে বাজে বুকে ফিলেছিক!
-নেশা কেটে গেলে মারটাও তো ভুলে যাবি।
-লা!ইকদমই লা।ভুলবোক লাই।ছেড়েটো দে।তুয়ার সাথে আর ইমনটো কুরবোক লাই।
সাথে সাথে একটা চড় মেরে দিয়ে বললাম,
-আমার সাথে কেনো?আর কারো সাথেই না,এইটা বল!
-হু হু!আর কারো সাথেই লা।
একটু শান্ত হলাম।ওরা উঠে দাড়াতে লাগলো।বললাম,
-এরপর থেকে রাস্তায় মেয়ে দেখলে সাইড দিয়ে চলবি,আর কোনো মেয়ের দিকে যদি বাজে ভাবে তাকিয়েছিস এবারতো আমি মারলাম,পরেরবার মামাকে বলে জেলের থার্ড ডিগ্রি দেখাবো তোদের।মনে থাকে যেনো!
ওরা ঘাড় নেড়ে খোরাতে খোরাতে চলে যাচ্ছিলো।বললাম,
-একটা মেয়ের হাতে মার খেয়েছিস!কথাটা যেনো বাইরে না যায়,তোদেরই মানইজ্জত যাবে।
ওরা আশ্চর্য হওয়ার লুক দিলো।আমি লাঠিটা উচিয়ে বললাম,
-আবে যাবি?নাকি সোজা জাহান্নামে ল্যান্ড করাবো?
ওরা তাড়াহুড়ো করে চলে গেলো।আমি পথ খুজতে লাগলাম ওখান থেকে বেরোনোর।বেশ কিছুক্ষন ঘুরে জঙ্গলের একটু বাইরে তাবু টানানো দেখলাম।এগিয়ে যথতেই দেখি আদিব ভাইয়া আর ওই বদমাইশ লোকটা উল্টোদিক দিয়ে এসে তাবুর ভিতরে ঢুকলো।বুঝলাম এরা এখানেই থাকে।আশপাশটা লুকিয়ে চুরিয়ে ঠিকমতো স্ক্যান করে পথ খুজে বের করতে লাগলাম।রাস্তাটা পেতেই দ্রুতপায়ে মামাবাসায় ফিরলাম পেছনদিক দিয়ে ছাদ বেয়ে।এসে দেখলাম মামা ফেরেন নি এখনো।জোরে শ্বাস নিয়ে কাপড়টা পাল্টে ফ্রেস হয়ে নিলাম।তবে আরমানের কাজে ওনার প্রতি রাগটা পুরোপুরি ছিলো।একবার ক্যামেরাটা হাতে পাই,ওনাকে আমি ছাড়বো না!
সকালবেলা শিমুল এসে জানালো ওদের নাকি আজ সারাদিন কিসের এক অনুষ্ঠান আছে।ছেলেমেয়েরা নাচানাচি করবে।আসার পর তো একবারও দেখার কপাল হয় নি।তাই এক্সাইটেড হয়ে ওদের মতো সেজে বেরিয়ে পরছিলাম।মামী পাউরুটিতে জ্যাম লাগাতে লাগাতে বললো,
-যাচ্ছো বুঝি?
-হুম।
-এই সাজ?
-আসলে,,,
-না না কৈফিয়ত চাচ্ছি না।ভালো লাগছে তোমাকে।
-থ্যাংকস্।ভালো লাগছে বলছো?এজন্যই তো পরা।একটা আদিবাসী ছেলে পটিয়ে ফেলি,কি বলো মামী?
মামী হেসে দিয়ে বললো,
-পারোও তুমি।
-আচ্ছা,আসছি।
-মিথি,শোনো।
-হুম?
-তোমার মামা তো আজ আরো সকালে বেরিয়েছে,এমনিতেও মানা করতো না তোমাকে।যাই হোক,আজ রাহাতের কোচিং নেই।ওই বাদরটাকেও নিয়ে যাওনা।নইলে সারাদিন ভিডিও গেইমস্ খেলবে আর রান্নার সময় আমাকে জ্বালিয়ে একসা করবে।আজ তো শিমুলও থাকবে না।
মামীর কারনগুলো শুনে আমি মানা করার আর কারন খুজে পেলাম না।ওকে নেয়ার ইচ্ছা ছিলো না আমার কারন সবার মধ্যে ওকে দেখতে আলাদা লাগবে আর যেহেতু ও আমার সাথে থাকবে,আমার জন্যও ব্যাপারটা আজব দেখাবে।তবুও মুখ কালো করে রাহাতকে নিয়েই বেরিয়ে পরলাম।
নাচগানের অনুষ্ঠানটা একটা বিশাল বটগাছের নিচে হচ্ছিলো।রাহাতকে একজায়গায় বসিয়ে দিয়ে হাতে মোবাইলটা দিয়ে বললাম,
-এখানে বসেই নাচগান দেখবি।আর ভালো না লাগলে ক্যান্ডিক্রাশ খেলবি।শুধুশুধু ডাকবি না আমাকে আর একচুলও নড়বি না।মনে থাকবে?
ও অলরেডি মোবাইল ঘাটতে শুরু করেছে।মোবাইলটা কেড়ে নিয়ে রাগী গলায় বললাম,
-কি বললাম তোকে?
ও গরগর করে আমার বলা কথাগুলোই বললো।অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলাম।ও বললো,
-সব মনে থাকবে।তুমি যাও।
ফু দিয়ে মুখ দিয়ে হাওয়া বের করে নিজেকে হালকা করে নিলাম।শিমুলের সাথে দাড়িয়ে প্রথমে ছেলেদের লাঠিয়াল খেলার পর্বটা দেখছিলাম।মনটা ভালোই ছিলো।হঠাৎই মনে হলো পাশেই কেউ একজন দেখে চলেছে আমাকে।পাশ ফিরতেই চোখ আটকে গেলো আমার।কালো জিন্সটা পায়ের গিটের উপর অবদি ভাজ দিয়ে গুটানো,খালি পা,সাদা চেইকের ফুলহাতা কালো শার্ট,হাতাটাও ফোল্ড করা,সে হাতে কালোই একটা ঘড়ি,কলারে সানগ্লাস ঝুলানো,চুলগুলো কপালে পরে আছে আবার মৃদ্যু বাতাসে উড়ছে।পকেটে দুহাত গুজে ঠোট টিপে হাসছেন আরমান।একহাতে কপালের চুলগুলো উল্টে পিছনে দিয়ে বললেন,
-আমি জানি আমি একটু বেশিই হ্যান্ডসাম।কেয়া কারু মে,,,
আমার দিকে ঝুকে বললেন,
-শাদী কারলু???
নিমেষেই চাওনি বদলে গেলো আমার। কটমটে চোখে তাকালাম ওনার দিকে।কাল অতোবড় একটা বিপদে হেল্প করেনি আমাকে,এখন নির্লজ্জের মতো এসব বলছে?কিছু বলে ওঠার আগেই উনি চোখের ইশারায় পাশে তাকাতে বললেন আমাকে।আমি তা অনুসরন করতেই আতকে উঠলাম।আদিব ভাইয়া রাহাতের সাথে কথা বলছেন!ওহ্ শিট!ও কি বলে দিলো আমি কে?একমুহুর্ত দেরি না করে শিমুলের কাছে গিয়ে রাহাতকে নিয়ে আসতে বললাম।সবার আড়ালে ওকে টানতে টানতে নিয়ে এসে বটগাছের পিছনটাতে এভাবে লুকিয়ে গেলাম।জানি না কি কি কথা হলো আদিব ভাইয়া আর রাহাতের মধ্যে!যদি উনি বা আরমান জেনে যায়,আমি আদিবাসী নই,তবে নির্ঘাত আবারো নাগরশাল যাওয়া নিয়ে কথা তুলবে!উফ্!কি যে এক জ্বালা হয়েছে না আমার!
•
-উম্ মমম্ উমম্!
-এই চুপ!তোকে তো আজ,,,
রাহাত আমার হাতে কামড় লাগিয়ে দিলো।আমি আহ্ বলে তাড়াতাড়ি ওর মুখ থেকে হাত সরিয়ে নিলাম।ও চুপচাপ আবারো ফোন টিপতে লাগলো।কি সাংঘাতিক ছেলে রে বাবা!আমি একটু শান্ত হয়ে ধীর গলায় বললাম,
-ওই লোকটা তোকে কিছু বলেছে?
-কোন লোকটা?
-যার সাথে কথা বললি এতোক্ষন।
-আরে ওই ভাইয়াটা বলছিলো এটা কার ফোন।আমি বললাম আমার।তারপর আর কিছু বলেনি।
অবাক হয়ে বললাম,
-ব্যস?এটুকোই?
-না।আরো আছে!
চোখ বড়বড় করে বললাম,
-কি?
-সে জিজ্ঞাসা করেছে মোবাইল কিভাবে আবিষ্কৃত হলো,তার ইতিহাস বলো।
-মানে?
-মানে,ওটুকো সময়ে আর কি বলবে সে?ওই শিমুল আপু আগে ধরলো,তারপর তুমিই তো নিয়ে আসলে আমাকে।
-তারমানে বলছিস আর কিছু বলেনি?
-না।
হাফ ছেড়ে বাচলাম আমি।রাহাতকে বললাম,
-শোন,তুই এখান থেকে সরবি না।তোকে কেউ কিছু বললে কোনো কথাও বলবি না।তাহলে তোকে নিয়ে আমি ভিডিও গেইমস্ খেলবো।
এতোক্ষন চোখটা ফোনের স্ক্রিনে থাকলেও এবার আমার দিকে তাকালো ও।আমি মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ বুঝালাম।ও ওকে বলে আবারো গেইমস্ খেলায় মনোযোগ দিলো।নিশ্চিন্ত হয়ে আমি আস্তে আস্তে বেরিয়ে এলাম ওখান থেকে।
কিন্তু যেইনা শিমুলদের দিকে এগিয়ে যাবো,কেউ হেচকা টানে আমাকে কিছুটা দুরে সরিয়ে এনে কোনো এক গাছের সাথে লাগিয়ে ফেলে।মানুষটা এবারও আরমানই ছিলেন।নিজেকে ছাড়াতে ব্যস্ত হয়ে পরলাম।মুচড়ামুচড়ি করছি,তবে ছাড়াতে পারছি না নিজেকে।চেচানোর আগেই একহাতে আমার মুখ আটকে দিলেন আরমান।বললেন,
-লিসেন!যদি চেচাও,তবে কোনো লাভ নেই,কেউ শুনবে না।ওখানে তোমার গলার চেয়েও আরো বেশি আওয়াজ হচ্ছে।কিন্তু লস আছে,কজ আমি আর তখন তোমাকে ছাড়বো না।না চেচালে তাড়াতাড়ি ছাড়বো।চুজ ওয়ান এনি অফ দিস টু!
আমি থামলাম।উনি মুখ থেকে হাত সরিয়ে আমার দুহাতই তার হাতের আঙুলের ভাজে আটকে দিলেন।শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি হয়েছে আমার।এতোটা কাছে কেনো আসলেন উনি?কি চান কি উনি?নিশ্বাস ভারি হয়ে আসছে আমার।চোখ নামিয়ে মুখ অন্যদিক ফিরে তাকিয়ে বললাম,
-মুকে যেতেটো দিন!
আমার কথাকে সম্পুর্ন অগ্রাহ্য করে উনি তার মুখ একদম আমার কানের কাছে নিয়ে আসলেন।তার উষ্ণ নিশ্বাসে কেমন যেনো জমে যাচ্ছি আমি।উনি শীতল কন্ঠে বললেন,
-বলো,তুমি কে?
শরীর কাপছে আমার।কথা বেরোচ্ছে না মুখ দিয়ে।শুকনো ঢোক গিলে বললাম,
-ন্ নুড়ি!
উনি ওভাবে থেকেই বললেন,
-মিথ্যেবাদী!
আমি অবাক হয়ে চোখ মেললাম।উনি কি তবে জেনে গেছেন আমি এখানকার কেউ নই?আরমান আকুতির স্বরে বললেন,
-একবার!শুধু একটাবার বলো,তুমিই আমার সে যামিনী,পৃথিবীর সব সুখ এনে দিবো তোমাকে।
নাহ্!আর পারছি না মেনে নিতে তার এতোটা কাছে আসা।আবারো নড়াচড়া শুরু করে দিলাম ছাড়া পাওয়ার জন্য।আরমান হুট করেই আমার কানে তার ঠোট স্পর্শ করালেন।শ্বাস থেমে গেছে আমার।আটকে পাথর হয়ে গেছি একদম।চোখ খিচে বন্ধ করে আছি।উনি বললেন,
-কেনো পালাই পালাই করছো তুমি?এমন কেনো করছো?আমার জীবনে এভাবে এসে সবটা উলোটপালোট করে দিয়ে কেনো নিজেকে সরিয়ে নিতে চাইছো?হোয়াই?
…….
-বলোনা!একটাবার স্বীকার করো,এই তুমি এই তুমি নও।তুমি আমার সেই তুমি!
…….
-এতো রাগ কেনো তোমার?এতো জেদ কেনো?
একপলক তার দিকে তাকালাম।কিন্তু তাকিয়ে থাকতে পারলাম না।আবারো চোখ সরিয়ে নিয়ে অস্ফুট স্বরে বললাম,
-ছ্ ছাড়ুন!
উনি আমার হাত ছেড়ে দিয়ে পিছিয়ে দাড়ালেন।ছাড়া পেয়ে কিছুক্ষন মাথাটা কাজ করা বন্ধ করে দিলো যেনো,মাথা খালি লাগছিলো আমার।চুপচাপ পা বাড়াতেই উনি বলে উঠলেন,
-আদিবাসী মেয়েদের এতো রাগ আর জেদ থাকে না।
আমি কপাল কুচকে তাকালাম ওনার দিকে।উনি বললেন,
-এখানকার সব মেয়েরাই গান জানে।তুমি জানো?
ভ্রুকুচকে তাকালাম।এসব কি বলছেন উনি?তাহলে কি উনি কিছু সন্দেহ করছেন আমাকে নিয়ে?নাহ্!এটা তো থাকতে দেওয়া যাবে না।শক্ত গলায় বললাম,
-পারবোক লাই ক্যানে?মুও পারি!
উনি বুকে হাত গুজে ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে বললেন,
-ডেমো দাও!
রাগ নিয়ে গটগট করে শিমুলের কাছে আসলাম।ও আমাকে দেখে কিছুটা ব্যস্ত হয়ে বললো,
-কুথায় ছিলি তু?
-জাহান্নামে।
-মানেহ্?
আমি চোখ দিয়ে আরমানকে দেখিয়ে বললাম,
-এ এখানে কেনো?
-ই অনুষ্ঠান তো সবার লাগি আছেক।ইকে কেউ আটকাবেক ক্যানে?
আমি বুকে হাত গুজে চুপ থাকলাম।ও বললো,
-উকে লিয়ে তোর ইত্তো রাগ কিসের?
-জ্বালায় কেনো আমাকে?
-ঝর্নাটোতে বাচিয়েছিলোক তুয়াকে।
-বলেছিলাম আমি?
-হু,বেসটো হুতো!পরেটো গিয়ে হাত পা ভেঙে ঘরটো থাকতিক,নাগরছাইলটো না দেখতিক,ঢাকাতে চুলে যেতিস ইটো ভালো হুতোক!
সরুচোখে তাকালাম ওর দিকে।ও বললো,
-দিখ!আনন্দটো কুরতে এসেছিস,নাচ,গা মজাটো কর!উয়াকে লিয়ে কিসের লাগি পরেছিস?
কথাটা ভুল বলেনি ও।আর তাছাড়াও আমি স্বাভাবিক না থাকলে ওই লোকের সন্দেহ বাড়বে।তাই মুখে হাসি ফুটালাম।নিজেকে স্বাভাবিক করে শিমুলের সাথে নাচের দলের মেয়েদের কাছে এগিয়ে গেলাম।ওদের দলের গানটা শেষ হতেই আমি গেয়ে উঠলাম,
🍂
আল কিনারে নাহড় গাছে বগা বগা ফুল
সে ফুলরে দেখিয়া ছুড়ি ধ্যাচাকে চামড়াইল
আরে গাছের মুধ্যে তুলোসি,বাটার মুধ্যে পান
সাদা সাহেব ফাকি দিয়ে পলাইনলি আসাম
মনে করি আসাম যাবো জোড়া পাঙ্খা টাঙাইবো(ii)
বাবু বলে কাম কাম,সাহেব বলে দড়ি আন
সর্দার বলে লিবো পিঠের চাম
ও যদুরাম,ফাকি দিয়া পলাইনলি আসাম(ii)
আরে শিশিরে কি ফুটে ফুল বিনা বরিষনে
চিঠিতে কি ভুলে মন বিনা দরিষনে
মন বলে আসাম যাবো,আসাম গিয়ে নোকরি নিবো(ii)
বাবু বলে…….আসাম
বানাই দিলি কামিন কুলি
টাঙাইল দিলি পিঠে ঝুলি
ঝুলি টাঙাইল ভিখারি বানাইলি
নিঠুরোসাম
জনমে জমনে কান্দাইলি
আম পাতার সিরে সিরে কাজলেরই রেখা
কুন পথেতে গেলে পাবো তুয়ারই দেখা
মনে করি আসাম …….পলাইনলি আসাম
আল কিনারে……চলাইনলি আসাম
🍂
গানের তালে ছেলেগুলো ঢোল বাজাচ্ছিলো।ওদের মিউজিক্যাল ইন্স্ট্রুমেন্টগুলোও অনেক স্পেশাল হয়।ঢোল,বাশি,টানা তার,ঘুঙুরের তাল,ওগুলোতেই আমার গানে বেশ সুন্দর একটা সুর উঠেছিলো।মেয়েগুলোর সাথে কোমড় ধরে,হাত ধরে গোল,অর্ধচাদ নানাভাবে দাড়িয়ে নাচগানের পর্ব শেষ করলাম।মনটা ভালো হয়ে গেলো একদম।
বেশ অনেকটা সময় পর মনে পরলো আরমানের কথা।উকিঝুকি দিয়ে এদিক ওদিক তাকিয়ে এককোনে খুজে পেলাম তাকে।পকেটে দুহাত দিয়ে এক অসম্ভব সুন্দর তৃপ্তির হাসি হাসছেন উনি।চোখাচোখি হয়ে গেলো আমাদের।আর তাতে আরো বাকা হলো ওনার ঠোট।সে হাসিতে আবারো যাতে না হারিয়ে যাই তাই তাড়াতাড়ি চোখ সরিয়ে নিলাম অন্যদিক।তবে ওনার চলে যাওয়াটাও চোখে পরেছিলো আমার।অনুষ্ঠান শেষে রাহাতকে আবারো আকাশ কুসুম বুঝাতে বুঝাতে বাসায় ফিরলাম।
#চলবে…